আলোর নীচে খোঁজা

হীরক লস্কর এর ছবি
লিখেছেন হীরক লস্কর (তারিখ: শনি, ২৮/০১/২০০৬ - ৯:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


বিশ্ব ইজতেমায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পত্রিকায় সেখানে র্যাবের পাহারা দেখে নাসিরুদ্দিন হোজ্জার একটি গল্প মনে পড়লো। গল্পটি সম্পূর্ণ মনে নেই। তবু সারমর্মটিই বলি।
এক লোক রাতের বেলা হোজ্জাকে দেখলো রাস্তায় কিছু একটা খুঁজছেন। তো ভদ্রলোক হোজ্জাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি কিছু হারিয়ে ফেলেছেন? হোজ্জা বললেন জি্ব, আমার ঘরের চাবিটি ঐ অন্ধকারে পড়ে গেছে। ভদ্রলোক অবাক হয়ে বললেন, চাবি যদি ঐ অন্ধকারে পড়ে থাকে তবে আপনি এই আলোর নীচে খুঁজছেন কেনো? হোজ্জা বললেন, বাহ, এ কোনো কথা হলো? অন্ধকারে কোনো জিনিস কি খুঁজে পাওয়া যায়? খুঁজতে হলে আলোতেই তো খুঁজতে হবে।
র্যাব বা পুলিশ কি সেকারণেই ইজতেমা পাহারা দিচ্ছে। এ কি আলোতে হারিয়ে যাওয়া চাবি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা?
আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো মুসলি্ল জমায়েতে বোমা ফেটেছে বলে তো খবর দেখিনি। ফাটবেই বা কি করে। বোমা তো আর নিজে নিজে ফাটে না। কেউ না কেউ ফাটায়। সরকার নিজেই স্বীকার করছে এগুলো ফাটাচ্ছে ইসলামী জঙ্গীবাদীরা। যারা বোমা ফাটিয়ে তাদের ইচ্ছামাফিক আল্লাহর শাসন কায়েম করতে চায় ।তো তারা কেনো ইজতেমায় বোমা ফাটাতে যাবে। বরং তাদের অনেকেই হয়তো ওখানে আত্মগোপন করে আছে।
সম্প্রতি বোমা ফাটলো মেহেরপুরে কীর্তনের অনুষঠানে। বোমা ফেটেছে গির্জায়। আহমদিয়াদের মসজিদে। বোমা ফেটেছে বৈশাখী মেলায়। বোমা ফেটেছে উদীচির অনুষ্ঠানে। বোমা ফেটেছে সিপিবি বা আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে। কই বোমা তো কখনো ডানপন্থী বা ইসলামী দলগুলোর অনুষ্ঠানে ফাটে নি। বোমা সিনেমা হলে ফেটেছে। কোনো মিলাদ মাহফিলে তো ফাটেনি। হঁ্যা, বোমা মাজারে ফেটেছে। সে তো ওয়াকিবহাল মাত্রই জানেন কারা মাজার ও কবর বিরোধী বক্তব্য দিয়ে থাকেন। কোন মুসলমান সম্প্রদায় জান্নাতুল বাকীর সব কবর সমান করে দিয়েছিলেন এজন্য যাতে কেউ তথাকথিত কবর-পূজা না করে। যারা দেশ শাসন করেন তাদের এসব না জানার কথা নয়। তারা জানেন। তবে তারা জানেন একটু বেশি।
এবং দেশ এখন এসব বেশি জানা অতি চালাকদের খপপরে। তারা বেশি জানেন বলেই যেখানে চাবি হারিয়েছে সেখানে না খুঁজে আলোর নীচে এসে খুঁজেন। তাদের এসব খোঁজাখুঁজি হয়তো মিডিয়ার আলোয় আসবে এই উপর চালাকি নিয়েই তারা সন্তুষ্ট। কিন্তু তারা অচিরে এই সত্যও জানতে পারবেন যে, অতি চালাকের শেষ গতি খুব সুবিধার হয়না।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।