নীরবতা পালন সম্পর্কে ওয়ালীর বক্তব্যের জবাবে

হীরক লস্কর এর ছবি
লিখেছেন হীরক লস্কর (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৯/০২/২০০৬ - ৭:০৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


নীরবতা বা পুষ্পার্পণ যেহেতু কোনো খারাপ কাজ নয় সেহেতুভিন্ন ধর্মের বা ভিন্ন সংস্কৃতির বলে একে বন্ধ করা যাবে না। এটি প্রচলিত। এখানে কাজের নিয়ত দেখতে হবে। পাশ্চাত্য নিজেই প্রাচ্য থেকে বহুকিছু শিখেছে। এমনকি আরব বিশ্বের জ্ঞান পাশ্চাত্য রক্ষা করেছে তাদের মধ্যে তারপর অন্ধকার যুগ পার হওয়ার পর আবার আরব বিশ্বকে সেই জ্ঞান দিয়েছে। একই পৃথিবীর অভেদ মানুষ আমরা। জ্ঞান বা চিন্তার উৎকর্ষেধর্মের সূত্র খুঁজে বাড়াবাড়ি করা গাধামির পরিচয়। শুধু নীরব দাঁড়িয়ে থাকতে যদি আপনার খারাপ লাগে তবে আরো অনেকের মত আপনি দরুদ পড়তে পারেন মৃতের মঙ্গল কামনা করে।

কবরে তাজা গাছের ডাল গেড়ে দেয়ার ঘটনা নবী মুহাম্মদ (দ:)-এর জীবনীতেও আছে। আরবে এত বাহারি ফুল পাওয়া গেলে নবীজি'র মত সৌন্দয্যপ্রিয় মহামানব যে ফুলেরও ব্যাপক ব্যবহার করতেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। ভালো কোনো কিছু গ্রহণ করতে পিছ পা হবেন না ওয়ালী ।পৃথিবীর কোনো ধর্মেই এতে নিষেধ নেই। কারণ তা না করলে পৃথিবীতে জীবনের জয়গান বজায় রাখা যেত না।

কেনো হাদিসে আছে, জ্ঞান অর্জন করতে প্রয়োজনে সুদূর চীন যাও; ভেবে দেখেন। সেখানে গিয়ে চৈনিকদের কাছ থেকে তাদের বিদ্যা শেখার জন্যই তো। তো তাদের কোনো বিদ্যাই তো আরব বিশ্ব দেখেনি আর মুসলমানরা অনুসরণ করেনি। তবে কি তা পরিত্যাজ্য। হাদিসের মর্মার্থ কিন্তু তা নয়। আপনার যুক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে ভালো ও খারাপ গ্রহণ করবেন। চালুনির মধ্যে ফুটো খুঁজে নিন্দা-মন্দ করার কোনো মানে নেই।

সবশেষে একটি কথা, বাঙালী কাঠমোল্লাদের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে ইসলামী চিন্তাবিদ হতে পারবেন না। নিজে পড়ুন এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলামের ভিন্নতর প্রয়োগ ও চিন্তা-ভাবনা দেখে মূল বিষয়টিকে অনুধাবন করতে চেষ্টা করুন। মানুষ দীর্ঘ গবেষণায়,সাধনায় বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেছে। সে সম্পর্কে কোনো খোঁজখবর না নিয়েই কোনো বিষয় সম্পর্কে মনগড়া বক্তব্য দিয়ে নিজের মেধা-শক্তির অপচয় করবেন না। বিভিন্ন বিষয়ে মানুষের গবেষণা লব্ধ জ্ঞানের ওপর এখন প্রচুর বই পাওয়া যায়। অন্তরে কোনো পক্ষপাত না রেখে আগে পড়ুন এবং তারপর আপনি নিজে গবেষণা করে দেখান যে আপনার পূর্ববর্তী গবেষক যা বলেছেন তা কি কারণে ভুল ছিলো। এতে পূর্ববর্তী গবেষক ছোট হয়ে যাবে না। কারণ জ্ঞান সময়ের সাথে সাথে নতুন ধ্যান, ধারণা নিয়ে পরিপুষ্ঠ হয়। ধর্ম হয়না, কারণ ধর্মকে অসাড় করে রাখা হয়েছে।
পরের লেখাটি লেখার সময় যথাযথভাবে রেফারেনস দিন। হোক তা কোরান বা হাদিসের, বা পাশ্চাত্য লেখকের বইয়ের। যতক্ষণ পর্যন্ত সে যোগ্যতা অর্জন করতে না পারেন ততক্ষণ অন্ধকার ছড়ানো বন্ধ করুন।

*উপরের মন্তব্যটুকু আমি ওয়ালীর ব্লগে করেছি। কিন্তু যেহেতু লেখাটি বড় হয়ে গেছে এবং আমার পাঠকরা ওয়ালীর ব্লগে না গেলে সেটি দেখতে পাবেন না সেহেতু এটি এখানেও দিয়ে দিলাম।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।