আহাদুলের ভুলটা তুচ্ছ হলেও ধরাটা হলো কঠিন। ঘটনাটা এরকম।
পাশাপাশি দুটি দোতলা বাড়ী। নির্জন আবাসিক এলাকা। কাছাকাছি আর কোন প্রতিবেশী নেই। দুটো বাড়ীতেই মালিক দোতলায়, ভাড়াটিয়া একতলায়। ফারজানারা এলাকায় নতুন। আহাদুলরা মোটামুটি পুরোনো।
ফারজানার সাথে চোখাচোখিটা হয়ে গেল বাড়ীতে ওঠার দিনই। আহাদুলের নজর প্রথমে ফারজানা কেড়েছে নাকি ফারজানার নজর আহাদুল কেড়েছে আমরা জানি না। আমরা কেবল জানি ফারজানা নিকটস্থ বালিকা বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনীতে পড়ে। আর আহাদুল ইন্টারমিডিয়েট শেষ করে উচ্চ শিক্ষায় ভর্তির জন্য অপেক্ষমান। পরিবেশ পরিস্থিতি অনূকুলে থাকায় ব্যাপারটা এগিয়ে গেল।
এগিয়ে গেলেও ব্যাপারটা ঠিক পাখা মেলতে পারছিল না ফারজানার বাবার হিটলারী মেজাজ এবং তাঁর কঠিন অন্তঃপুর নিয়ন্ত্রণের কারণে। যোগাযোগ প্রতিবন্ধকতা দুরীকরনে ওরা বেছে নেয় রাতের ছাদ। ছাদ দুটো সমানে সমান দশ ফুটেরও কম দুরে। সপ্তাহে অন্ততঃ তিনদিন, সমস্ত পাড়া যখন ঘুমিয়ে, ওরা তখন ছাদে। পদ্ধতিটা অভিনব । চিঠি লিখে কাগজটা পাথরে মুড়ে ছুঁড়ে দেয় একজন। লুফে নেয় অন্যছাদের আরেকজন। নিরুপদ্রপই ছিল মাঝরাতের ইনিংস।
ঝামেলা হলো সেদিনই প্রথম।
রূপালী জ্যোৎস্নার রাত। সেই আলোতে নীরবে ভাষা বিনিময় করছে দুটি হৃদয়। কিন্তু কি করে যেন আহাদুলের চিঠির ঢিলটা হাত ফসকে ছাদের কার্নিশে ঠোক্কর খেয়ে নীচে পড়ে গেলো। ঠিক সেই সময় নীচের গ্যারেজের সামনে এক চোর ফারজানাদের নির্মানকাজের পরিত্যক্ত রডগুলো দড়ি বেধে দেয়াল টপকানোর জন্য দাড়িয়ে ছিল। পাথরটা পড়বি তো পড় চোরের মাথায়। কিন্তু ধরা পড়ার ভয়ে ব্যাথা পেয়েও চোর ব্যাটা নিশ্চুপ!
সেই চোরটা ছিল পাড়ার মুখচেনা ছিঁচকে দলের একজন। যারা দিনের বেলায় অন্য কাজে থাকে, রাতের বেলা পার্টটাইম চুরি করে বেড়ায়। আহাদুল ছাদের কিনারে গিয়ে ঢিলটা কোথায় পড়েছে উঁকি দিতেই সেই চেনা চোরের সাথে চোখাচোখি। সড়ক বাতির হালকা আলোয় আহাদুল ও চোর দুজন দুজনকে দেখে চিনলো।
তবু সমস্যা হতো না যদি চোর ব্যাটা অন্য ছাদের কিনারে দাঁড়ানো ফারজানাকে না দেখতো। ফারজানাকে দেখে মনে মনে হিসেবটা মিলিয়ে পাথরটা কুড়িয়ে দেয়াল টপকে পালিয়ে গেল সে।
পরদিন সকালে সেই চোর ফারজানাদের গেটের সামনের গোবেচারা কামলা। আগাছা সাফ করছে বসে বসে। ফারজানার বাবা অফিসে বেরুবার মুখে ছুটে গিয়ে আহাদুলের চিঠিটা হাতে দিয়ে বললো, “চাচা বাড়ীর সামনে কাজ করতে গিয়ে পেলাম। দরকারী কাগজ বোধহয়।”
ফারজানার বাবা ভাঁজ খুলে চিঠি পড়ে হুংকার দিয়ে আহাদুলের বাসায় গিয়ে হাজির। আহাদুলের বাবা ঘটনা শুনে অপমানে লাল হয়ে গেল। ক্ষেপে গিয়ে ঘুমন্ত আহাদুলকে কান ধরে হিড় হিড় টেনে আনে বসার ঘরে। “অই হারামজাদা, এইটা তর চিঠি? তর লেখা? বল!!”
ভয়ে পাথর আহাদুল জানালা দিয়ে বাইরে দাঁড়ানো রাতের চোরটাকে দেখে বুঝলো ওই বদমাশটা কাল রাতে চুরি করতে না পারার প্রতিশোধ এভাবেই নিল।
তবে বিড়বিড় করেও যে কথা তার মুখ দিয়ে বেরুলো না ভয়ে তা হলো “আংকেল, কাল রাতে ওই ব্যাটা আপনাদের বাসায় চুরি করতে এসেছিল, আমিই ঢিল মেরে তাকে তাড়িয়েছি।”
বলতে পারেনি কারন সেই ঢিলকে জড়িয়ে ধরে ছিল কড়কড়ে প্রেমের পত্রটি।
মন্তব্য
এখনকার দিনে হলে এই ধরা খেতো না। ইমেইল করে দিতো, এমনকি মেমোরি স্টিকে করে ফারজানার সাথে ছবি চালচালিও হতে পারতো। বাপে ভাবতো তার ফারজানাকে আইটি শেখাচ্ছে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ফারজানার বাপে টের পাইতো যেদিন ফারজানার মাদারবোর্ড হিটে জ্বলে যেত।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ছেলেটা রামভুদাই। বলতে পারতো, তাড়া দিয়ে চোর তাড়িয়েছে। আর চিঠির কথা স্বীকার না করলেই হয়। ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে মেলাবে নাকি মেয়ের বাবা?
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
আরে আহাদুলের বাপে তো পোলার হাতের লেখা চিনে, সেটাই তো ভেজাল লাগাইছে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
রিফাত ফারজানা আপারে চিনলাম, আহাদুলটা কেডা?
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
আহাদুল হলো হুমুএরশাদের তাফাতো ভাই। দিলটা নরম তার।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ঠিক জমে উঠল না বস! কিন্তু কুনু চিন্তা নাই, ২-১ দিনের মাঝেই ইনডোর স্টেডিয়ামের মত কাপায়া দিবেন আবার!
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
এখন না জমলেও ক্ষতি নাই, শীত আসলে ঠিক জমে যাবে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ভালো লেখা, তবে আরো বেশী আশা করছি পরেরগুলোতে।
ধন্যবাদ। তার পরের গুলা বিলম্বিত হবে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
বালা...বালা...(অনুবাদঃ ভালো...ভালো)। প্রিয় নীড় সন্ধানী, আরো বড় লেখা চাই।
আমি তো ভাবলাম বালা উপহার দিলেন। অনুবাদ করার কি দরকার ছিল?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
কোনো এক লিঙ্কের সুত্র ধরে এই গল্প আগেই পড়ে ফেলেছি...
আহাদুল মানে আহাত তো বেহাতে মাল ডেলিভারি করবেই। আহা রে আহাদুল, ভুলের মাশুল দিতে হলো তোকে ছিঁড়ে দু'গাছি চুল। চুল ছিঁড়ছে ছিড়ুক, অন্য কিছু তো আর ছিঁড়ে নাই।
অনন্ত আত্মা
আপনার কাছে ছোট গল্প লেখার ধারা শিখছি। ভবিষৎে কাজে লাগবে
সাবরিনা সুলতানা
ঠিক বুঝলাম না, মানে আমি চোর হলে কিন্তু চুরিটা করতামই, আর চিঠিটা রেখে দিতাম ট্যাঁকে গুঁজে ট্রাম্প কার্ড হিসেবে, যাতে আমার নামে কখনোই কারো কাছে অভিযোগ না করতে পারে স্বাক্ষী!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
নতুন মন্তব্য করুন