ঘর হইতে শুধু তিন পা ফেলিয়া, যেখানে যাইতে হয় হাঁটিয়া

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: সোম, ০৩/০১/২০১১ - ৩:০৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেড়ানোর সুশীল জায়গাগুলোতে অরুচি ধরে গেছে। কক্সবাজার, রাঙামাটি বান্দরবান, সেন্টমার্টিনের কথা শুনলেই গা গুলায়। এত এত মানুষের ভীড় যেন বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছি। যুতসই জায়গা খোঁজার জন্য গুগল আর্থের সহায়তা নিলাম। চট্টগ্রামের আশেপাশে হাতের নাগালে মানুষ যেখানে যায় না সেরকম অজনপ্রিয় একটা গন্তব্যের জন্য খোঁজ দ্য সার্চ লাগিয়ে প্রায় ঘরের কাছেই ৫০ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে পছন্দ করে ফেললাম দুদুটো জায়গা। তারই একটাতে গিয়ে ২০১০ সালকে বিদায় দিলাম ৩১শে ডিসেম্বর।

সেটির কথাই বলি এখন। জায়গাটা চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র ২০ কিমি দূরে পটিয়ার রিজার্ভ ফরেষ্টে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাবার পথে কর্ণফুলী নদীটা পেরিয়ে ডানদিকে আনোয়ারাকে রেখে বামদিকে আধাঘন্টা চলার পর পটিয়ার যানজটের পাল্লায়। মফস্বলের এই যানজট ঢাকাবাসীর কাছে নস্যি হলেও ভ্রু কুঁচকে উঠবে অজান্তেই। পাড়া গাঁয়ে কিসের এত যানজট! পনেরো মিনিটের সেই জট পেরিয়ে খানিকটা আরো দক্ষিনে গেলেই নির্ঝঞ্জাট পথের শুরু। শ্রীমাই খাল পেরিয়ে যাবার সময় বামদিকে সবুজ অনুচ্চ পাহাড়ের দীর্ঘ সারিগুলি ঠিক হাতছানি দেয় না, কিন্তু রহস্যপ্রিয় মানুষের কৌতুহলের যোগান দেয়। কি আছে ওই পাহাড়ের অরণ্যে?

আরো কিছুদুর গেলে কমল মুন্সির হাট। তারপর দুপাশে মেহগনি গাছের সারির ছায়ার পথ পেরিয়ে মাইলখানেক গেলেই একটা মসৃন সেতু যার তলা দিয়ে বয়ে গেছে ছোট্ট একটা পাহাড়ী ছড়া। খরনা খাল বলে জনপ্রিয় সেটি। সেতুটা পেরিয়ে দক্ষিনে আরো দুশো গজ গেলে খরনা রাস্তার মাথা। ডানদিকে আজিমপুর গ্রাম আর বামদিকে একটা ছোট্ট পিচঢালা পথ পূর্ব দিকে চলে গেছে ধানক্ষেত চিরে।

ওইপথ দিয়ে কিছুদূর গিয়ে প্রাচীন একটা বৃটিশ আমলের রেল লাইন, এখনো টেনেটুনে দৈনিক একটা ট্রেন আসে আঁকাবাঁকা লাইন দিয়ে, তার পাশেই খরনা স্টেশানের প্রাচীন জরাজীর্ন লাল কুটির। কিছু দোকানপাট আর রেল লাইন পেরিয়ে পুবে আরো আধমাইল গেলে পথ শেষ। এখানে রিকশা বা গাড়ী থেকে নেমে পায়ে হাঁটা পথ।

ঠিক সোজা নয় তবে পুব দিকে যে পথটা একে বেঁকে চলে গেছে দিগন্তের দিকে সে পথে হেলে দুলে হাঁটতে হবে। কিছুদূর পর পর লোকজন দেখলে জিজ্ঞেস করতে হবে খরনা পাহাড় কতদূর? কোন পথে যেতে হবে? উত্তর আসবে, 'ওখানে কি, কেন যাবেন?' বলতে হবে, 'বেড়াতে যাবো, পাহাড় দেখবো।'

শুনে ওরা অবিশ্বাসের দৃষ্টির সাথে ফিসফিস করে স্থানীয় ভাষায় বলবে, 'বেয়াক মিছা হতা, জাগা কিনতো আইসসেদে'। (সব মিথ্যে কথা, জমি কিনতে আসছে)

আরো কিছুদূর পেরিয়ে গেলে লোকালয় একেবারে শেষ। টুকরো টাকরা টিলা জঙ্গলের শুরু। তার আশেপাশে সবজী ক্ষেতে নিড়ানি দিচ্ছে কৃষক। নতুন লোক দেখে সবার কৌতুহলী দৃষ্টি। জিজ্ঞেস করবে 'ওবা হন্ডে যদ্দে' (কোথায় যাচ্ছো ভাই?)। বলা হবে, 'ওই পাহাড়ে যাচ্ছি, যেখান থেকে খরনা খাল নেমে এসেছে।'

বলবে 'বেশীদূর ন যাইয়ু, আতি আছে এন্ডে' (বেশীদূর যাবেন না, হাতি আছে ওদিকে)।

জুতো স্যান্ডেলে চলার পথও শেষ হবে একসময়। দিগন্তে বিলীন জঙ্গলের রেখাগুলো এখন পাহাড়ের চেহারায় ধরা দেবে। বুনো গাছপালাগুলো অনেকটা স্পষ্ট এখন। রাস্তার শেষ প্রান্তে পৌঁছে দেখা যাবে কলকল শব্দে স্বচ্ছ জলের খরনা খালের ধারা বাঁক ঘুরে চলে গেছে অনেক গভীর অরণ্যে। এখান থেকেই খরনা খালের পাহাড় যাত্রা। এখান থেকেই সত্যিকারের অরণ্য ভ্রমণ শুরু। আনন্দেরও।

সম্মুখে দাঁড়ানো করলডেঙ্গা পাহাড় শ্রেনী। কর্ণফুলী নদী থেকে শংখ নদী পর্যন্ত উত্তর দক্ষিনে আঠারো মাইল বিস্তৃত বিশাল এই বনভূমি। অনুচ্চ সবুজ পাহাড়গুলো মোটামুটি ১৫০ থেকে ৩০০ ফুটের মধ্যে অবস্থিত। যার অতি সামান্য অংশে মানুষের যাতায়াত সম্ভব। পুরো এলাকাই দুর্গম। বন্য হাতির রাজত্ব বলে বাইরের মানুষেরা আসতে সাহস পায় না।

লোকালয়ের এত কাছে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের বিশাল একটা খনি এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে ভাবতেই অবাক লাগে। আট দশ মাইল দুরের পাহাড় চুঁইয়ে নেমে আসা এই ঝরনাটি আমার গ্রামের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে, অথচ একবারও যাইনি ওই পাহাড়ে। ছেলেবেলায় দূর থেকে পাহাড়ের গায়ে মেঘের ছায়া পড়তে দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। বড় হবার পর পাহাড়টা কোথাও হারিয়ে গিয়েছিল। আসলে দৃষ্টিসীমার ভেতর গ্রামের গাছপালাগুলো বেড়ে গিয়ে ঢেকে দিয়েছিল আর চাপা পড়ে গিয়েছিল পাহাড়ে যাবার বাসনাও।

অনেক বছর পেরিয়ে যাবার পর এই স্বপ্নটা সত্যি সত্যি পূরন হলো। এবারের যাত্রা ছিল পথের নিশানা চিনে আসার যাত্রা। রাত্রিযাপনের স্বপ্নটা আপাততঃ মূলতবী রইল। পরের বারে যাত্রা হবে আরো গভীরে, আরো রহস্য রোমাঞ্চের প্রতিশ্রতি নিয়ে।

সবশেষে, ফিরে আসার সময় ঝোলানো ক্যামেরায় যেমন খুশী তেমন তোল - অনির্দিষ্ট ফোকাসের তিন মিনিটের ভিডিওচিত্র। আগ্রহীরা ক্লিক করে দেখতে পারেন। এখানে কান পেতে কি অরণ্যের ডাক শোনা যায়?

আরো ছবির জন্য-
http://www.flickr.com/photos/hrrh69/sets/72157625609627663/


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

যেতে হবে, যেতে হবে।

...........................
Every Picture Tells a Story

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌আপনি আসলে তো দারুণ হবে, আসার আগে আওয়াজ দিয়েন হাসি

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ফাহিম হাসান এর ছবি

ভিডিও ক্লিক করে আপনার সাথে মিনিট তিনেক হাঁটলাম। এইসব জায়গা তৈরীর সময় ঈশ্বরের প্যালেটে মনে হয় নীল-সবুজ ছাড়া আর কোন রঙ ছিল না।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌হা হা হা, কথাটা যেন সত্যি।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভিডিওটা ন্যাটজিও-বাংলা'র মত মনে হল। এই জায়গার খবর প্রকাশের জন্য মাইনাস। মানুষরূপী জন্তুগুলো এখানে যেয়ে সব নষ্ট করে ফেলবে, চিপসের খোসা ফেলবে, ফেলবে বোতল।

...............................
নিসর্গ: বাংলার প্রকৃতি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌চিপসের খোসা আর জুশের প্যাকেট ফেলা বাঙালীর কথা একদম সত্য। আমাদের বেড়ানোর জায়গাগুলো সব একই দশা করে রেখেছে লোকজন।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কানা বাবা এর ছবি

ছোট বেলার কথা মনে করিয়ে দিলেন। পটিয়া আমার দাদা বাড়ি আর খরনাতে আমার এক দুঃসম্পর্কের চাচা থাকেন যারা কিনা কয়েকটি পাহাড় লিজ নিয়ে শেগুন বা মেহগনি জাতিয় কোন গাছ লাগিয়ে কোটিপতি হবার স্বপ্ন দেখছেন কিংবা এত দিনে হয়েও গেছেন হয়তো।

যাহোকে আপনরা বলা সেই খরনা ফরেস্টে গিয়েছিলাম বেশ কয়েকবার, খরনা খালের পাশের পাহাড়েও উঠেছিলাম। খালটি এঁকে-বেঁকে অনেকগুলো পাহাড়ের মাঝে দিয়ে বয়ে চলে গেছে। পাহাড় ডিঙিয়ে খাল আবার খাল ডিঙিয়ে পাহাড় - অসাধারন সৌন্দর্যময় একটা হাইক। ভিডিওটা সেভ করে রাখলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।

পাহাড়ে হাতি পারা ছাড়াও বেশ ডাসা ডাসা পেয়ারা পাওয়া যায়। সেই পাহাড়ী পেয়ারা দেশের সবচেয়ে ভালো পেয়ারা কিনা জানি না তবে মনে হয় লিস্ট করতে বসলে তালিকার উপরের দিকেই থাকবে। আর পাওয়া যায় লেবু, বিশাল আকৃতির পাহাড়ি লেবু যার স্বাদ ও গন্ধ দুটোই মন-মাতানো। একবার সেই লেবু ছিড়তে গিয়ে লাল পিপঁড়ার বাসায় পারা দিয়ে বাসা ভেঙগে ফেলছিলো আমার এক চাচা, সর পিপঁড়া তার শরীরে উঠেপড়েছিলো, তারপর আমরা বেশ আনন্দে চাচার উদ্দাম নৃত্য দেখেছিলাম।

/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

দারুণ তো, আপনি তো দেখি আমার কাছাকাছিই। লেবু আর পেয়ারার কথা সত্যি। প্রচুর পেয়ারা গাছ দেখেছি আমিও। আর ইয়া বড় বিশাল দুটো লেবুও পেয়েছি, কি জাত জানি না, কিন্তু স্বাদ গন্ধ দারুন। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম শশা জাতীয় কিছু। আপনার দাদাবাড়ী কি খরনা নাকি?

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কানা বাবা এর ছবি

আমার দাদা বাড়ি পটিয়ার হাইদগাঁ, খরনাতে বেশ কিছু আত্নীয় আছে এই যা।

/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

যেতে হবে, অবশ্যই যেতে হবে। তবে চিপসের প্যাকেট, পানির বোতল বা সিগারেটের ফিল্টার ফেলতে নয়, মন ভরে সৌন্দর্যটাকে উপভোগ করার জন্য।

===============================================
ভাষা হোক উন্মুক্ত

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌চলে আসুন, আবার যাবো হাসি

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নুর নবী দুলাল [অতিথি] এর ছবি

চট্টগ্রামে বাস করেও এমন সুন্দর একটি জায়গায় যাওয়া হলো না। ধন্যবাদ আপনাকে, যেতে হবে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আমিও জানতাম না ভেতরে এরকম সৌন্দর্যের খনি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

মাহবুব রানা এর ছবি

ভালো লাগলো।
লাঠিটাকে কি সাপ ভেবেছিলেন? হাসি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍ছোটখাট সাপের কথা ভাবি নাই, কারণ ওখানে থাকে ধেড়ে অজগর হাসি

‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কানা বাবা এর ছবি

মাহবুব রানা লিখেছেন:
ভালো লাগলো।
লাঠিটাকে কি সাপ ভেবেছিলেন? হাসি
/

ওইখানে সাপও আছে প্রচুর। তবে বেশিরভাগ মনে হয় নির্বিষ ঢোড়া সাপ।

/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বদ্দা চাটগাইয়ে ফাল্লার...

এবার ফেব্রুয়ারীর ছুটিতে চট্টগ্রাম গেলেই ঘুরে আসার ট্রাই দিবো একটা।

_________________________________________

সেরিওজা

নীড় সন্ধানী এর ছবি

জী বদ্দা। চলি আইয়ুন, আরেকবার যাইয়ুম।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

বাহ্‌! কী দারুণ!!
ভিডিওটার সাথে আপনার বিবরণের অংশটা পড়লাম ইউটিউবে। শেয়ার করছি এটা ফেসবুকে।

একটা জিনিস জানার ছিল, ভিডিও কি স্টিল ছবিতোলার ডিজিটাল ক্যামেরায় করেছেন নাকি হ্যান্ডিক্যামে? ভিডিও ক্লিপকে flv বানাতে কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করেছেন? ব্যবহার খুব সহজ কিন্তু ফ্রি আমি এমন একটা সফটওয়্যার খুজছি কনভারশনের জন্যে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌আমার ভিডিওক্লিপ সাধারন ডিজিটাল ষ্টিল ক্যামেরায় তোলা। আমি mpeg ফরমেটেই ইউটিউবে আপলোড করেছি। কিন্তু ইউটিউব যে কোন ভিডিও flv ফরমেটে কনভার্ট করে নেয় সম্ভবতঃ।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

নীড় ভাই, একটা প্রশ্ন মনে পড়ল। হাতির অভয়ারণ্যে প্রিকশন কী কী? আগাম কোন সতকর্তামূলক চিহ্ন বা সামনে হাতির পাল আছে এমনটা বোঝা যায় এমন কিছু আছে?

...............................
নিসর্গ: বাংলার প্রকৃতি

কানা বাবা এর ছবি

প্রকৃতিপ্রেমিক লিখেছেন:
নীড় ভাই, একটা প্রশ্ন মনে পড়ল। হাতির অভয়ারণ্যে প্রিকশন কী কী? আগাম কোন সতকর্তামূলক চিহ্ন বা সামনে হাতির পাল আছে এমনটা বোঝা যায় এমন কিছু আছে?

বস, হাতির জন্য আগাম সতকর্তামূলক চিহ্ন আছে কিনা জানি না, তবে হাতির পাল দেখলে বাঙালি স্টাইলে ঝাইরা একখান দৌড় দিবেন তাইলেই হইবো আশা করি। আর যদি না হয়, তাইলে আর কিছু কওয়ার নাই।

/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এইটা কী বলেন কানা ভাই, আমি তো শুনেছি হাতি মানুষের চেয়ে জোরে দৌড়ায়। আর হাতির শ্রবণশক্তি নাকি খুবই প্রখর।

মানে আমি জানতে চাইছিলাম হাতির পাল কি সহসাই সামনে পড়ে, নাকি আগে থেকে কিছু টের পাওয়া যায়।

...............................
নিসর্গ: বাংলার প্রকৃতি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌হাতি মানুষের চেয়ে জোরে দৌড়ায়, তবে হাতির সাথে পাল্লা দিতে একে বেকে দৌড় দিতে হয় বলে শুনেছি। স্থানীয়রা জানালো হাতি যখন দল বেধে আসে তখন আওয়াজ দেয়, দূর থেকে শোনা যায়। তবে সাধারণত দিনের বেলা, বিশেষতঃ সকালবেলা হাতিরা জঙ্গলের ভেতরে আড়ালেই থাকে। বিকেলের সময় থেকে নামতে শুরু করে। ওদের টার্গেট থাকে লোকালয়ের সবজী ক্ষেতগুলো। ইদানীং হাতির সংখ্যা বেড়ে যাওয়াতে পাহাড়ে খাবার সংকট হয়ে গেছে নাকি।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

কানা ভাই আর নীড় ভাইয়ের সাথে সামান্য একটু এ্যাড করি। বিভিন্ন দেশের বনে বাদাড়ে ঘুরে অভিজ্ঞ গাইডদের কাছ থেকে পাওয়া টিপস।

দলের মধ্যে কোন নবজাতক হস্তিশিশু না থাকলে দলবদ্ধ হাতি ভয়ংকর না। তবে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে একাকী হাতি, জেব্রা বা মোষ, এরা কিন্তু খুবই ভয়ংকর। আমি জীবনে দুইবার একাকী হাতির ধাওয়া খেয়েছি। একবার ইনডিয়ার চম্বলে ২০০৬ এর শুরুতে। আর একবার মালাউইর লিয়ন্ডে ন্যাশনাল পার্কে, ওই ২০০৬ সালেই। দুইবারই গাড়িতে ছিলাম এবং কোনওক্রমে পালিয়ে বেঁচেছি। আর একবার হাতির দলের ধাওয়া খেয়েছি মাসাই মারাতে ২০০৯ সালে। ওদের দলে নবজাতক বাচ্চা ছিলো। এবারও পালাতে পেরেছিলাম গাড়ি ঘুরিয়ে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ফাহিম হাসান এর ছবি

"ধাওয়া দি রান" - এই বিষয়ে পোস্ট চাই। দেঁতো হাসি

ফাহিম হাসান এর ছবি

ভাই, দৌড়টা মনে হয় না দেওয়াই ভাল। কিছুক্ষণ দাঁড়ায় থেকে আস্তে আস্তে সরে আসা উচিত। আর চোখাচোখি একদমই বারণ।

হাতির ঘ্রাণশক্তি ভাল। তাই চেষ্টা করা উচিত বাতাসের বিপরীত দিকে থাকা। (যদিও তা অনেক সময় সম্ভব না)। আর কোন রকম সুগন্ধী (তেল,জেল, ক্রিম, আফটার শেভ) ব্যবহার না করা। যতটুকু সম্ভব জংলী হওয়া যায় আর কী! হাসি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আরেকটা জিনিস মনে হয় কোথাও পড়েছিলাম-- হাতিকে অন্য কিছুতে ব্যস্ত করে দেয়া। যেমন গায়ের শার্ট বা কাপড় বা ব্যাগ পেছনে ফেলে দেয়া। জানিনা এমনটা আদৌ করা সম্ভব কিনা।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

পেছনে কিছু ফেলে দিয়ে হাতিকে ব্যস্ত রাখা যায় কিনা জানি না, তবে স্থানীয় এক কাঠুরিয়া বালক জানালো, মামুদের সে ভয় পায় না। 'মামু'দের দেখার সাথে সাথে ও সালাম দেয় দুর থেকে, 'মামু'রা নাকি ভক্তিশ্রদ্ধা খুব পছন্দ করে। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হা হা . তাই নাকি হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আমার গ্রামের বাড়ি পটিয়া পেরিয়ে চন্দনাইশে। অথচ এই রিজার্ভ ফরেস্টে এখনো যাওয়া হয় নাই। মন খারাপ

নীড় সন্ধানী এর ছবি

চন্দনাইশে ছৈয়দাবাদ বলে একটা জায়গা আছে নাকি? আমি যেদিন গেলাম তার দুদিন আগে হাতি নেমে ঘরবাড়ি তছনছ করেছে শুনলাম।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

বাউলিয়ানা এর ছবি

ছবিগুলো দেখে এলুম।

লেখা আর ভিডিও দুটার জন্য চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে দাদারে, এসব কী জায়গা? এত বয়স হয়ে গেল, এখনও যাওয়া হল না...

আপনি বরং ওখানে জমিই কেনেন। একটা বাংলো বানাবেন, আমরা সময়-অসময়ে আমোদভ্রমণ করতে পারব...

অদ্রোহ এর ছবি

শিরোনামটা কিন্তু আমার বেলায় এক্কেবারে অক্ষরে অক্ষরে খাটে, শিকলবাহা পেরিয়ে পটিয়ার একটু আগেই আমার পৈতৃক বাড়ি। দেখুন দেখি ব্যাপার, আসলেই ঘর থেকে দু পা ফেললেই হয়, অথচ যাওয়াই হয়নি। নাহ! চাঁটগা আসছি শীঘ্রই, এসেই আর দেরি করবনা।

বাই দ্য ওয়ে, ফোস্ট গম অঁইয়ে বদ্দা দেঁতো হাসি

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

তিথীডোর এর ছবি

ঘর থেকে দু পা ফেললেই হয়, এত বয়স হয়ে গেল ইয়ে, মানে... , অথচ এখনও যাওয়া হল না..

চলুক চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

দ্রোহী এর ছবি

বাহ! চমৎকার জায়গা।

ঘর হতে আরো কয়েক পা এগিয়ে সীতাকুণ্ডের সহস্রধারা ঘুরে আইসেন একবার। ভাল লাগতে বাধ্য।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভ্রমনে আমার নেশা আছে। গিয়েছি বেশ কবার এখানে। তারপরেও ভাল লাগ্লো । শুভ হোক জন্মমাস হাসি

মোহনা'

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।