একটি চাল-চিনি বিষয়ক গাল-গল্প

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: রবি, ২৪/০৭/২০১১ - ৪:৪৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কোথাও ভাত নেই। সাদা কালো লাল হলুদ কোন রকমের চাল বাজারে নেই। মানুষ রাস্তায় রাস্তায় হন্যে হয়ে ঘুরছে একমুঠো ভাতের জন্য। কেউ পকেটে টাকা নিয়ে, কেউ হাতে ভিক্ষার থালা নিয়ে। ধনী-দরিদ্র-ফকির-মিসকিন সব এক হয়ে গেছে, কেউ ভাত খেতে পারছে না। চালের আড়ত থেকে উধাও হয়ে গেছে চালের বস্তাগুলো। চাল বণিক আড়ত বন্ধ করে বাড়ি চলে গেছে।

এরকম আজগুবি কান্ড দেশের লোক কখনো দেখেনি। রাজার হুকুম অমান্য করা! কিন্তু সত্যি রাজার হুকুমেই ক্ষেপে গেছে বণিক। রাজা বলেছে হয় সুলভ মূল্যে চাল বিক্রি করো, নয়তো পাজামা খুলে শুলে চড়ো। চাল বণিক বলেছে উচ্চমূল্যে চাল আমদানি করে সুলভ মূল্যে ভাত খাওয়াতে পারবে না ওরা। শূলে চড়ার ভয়ে চালই রাখলো না আড়তে।

রাজার মোটা চামড়ায় একটু গোস্বা লাগলেও কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কারণ বনিকের টাকা রাজার শান শওকতের উৎস। তাছাড়া দেশে গণতন্ত্র, যার যা কিছু ইচ্ছা করার স্বাধীনতা। এবং সবচেয়ে বড় কথা রাজা-উজিরের চাল কিনতে হয় না। বণিক দিনের বেলা ঝগড়া করেও রাতের বেলা তাদের বাড়ি বাড়ি চালের বস্তাগুলো পৌঁছে দেয়।

চাল বিক্রি বন্ধ হওয়াতে রাজা বরং মনে মনে খুশী। এক মাস ভাত বন্ধ রাখতে পারলে অনাহার অপুষ্টিতে দেশের কয়েক লাখ লোক মরে ঠেসে যাবে, জনসংখ্যার বাড়তি চাপটা কমবে। কিন্তু দোষটা হবে বণিকের।

রাজা তৃপ্তির সাথে আরো ভাবলো, এই মড়াগুলো বরং জীবিতগুলোর চেয়ে সুখে থাকবে। যারা অনাহারে মরে তারা শহীদের মর্যাদা পায়, পরকালে গিয়ে তারা পোলাও-কোর্মা-রোষ্ট-রেজালার সাথে স্বর্গীয় দই-হালুয়া-মিঠাই-মণ্ডা খাবে। আর জীবিতগুলা ঠাসাঠাসি অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে একটু হাত পা নেড়ে বাঁচতে পারবে।

চাল সংকটে পৌর কতৃপক্ষও বিশেষ আনন্দিত। কারণ এত এত লাশ মাটিতে পুঁতে ফেলতে কদিন পরিশ্রম হলেও আজীবন তাদের গু-মুত নিয়ে ভাবতে হবে না। অনাহারী মানুষেরাই নগরের সবচেয়ে নোংরা বিষয়, সৌন্দর্য-হানির প্রধান কারণ।

সুতরাং অনাহারী জনতার ব্যাপক মরণাপন্ন হাহাকার দেখেও বেয়াড়া বণিকের শাস্তির ব্যাপারে কোতোয়ালকে কিছুই বললেন না রাজামশাই।

....................................................................................................................................................

দিন পনেরো আগে ফিরিঙ্গি বাজার ব্রীজঘাটার কাছে দেলু মিয়ার চায়ের দোকানে বসে একটা নিমকি ভেঙে চায়ের কাপে চুবিয়ে খেতে খেতে অচেনা পরিব্রাজকের কাছে এই গল্পটা শুনে অবিশ্বাসী দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল রহিম শেখ। ঘরে গিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত ভেবেছে, এমন আজব দেশও দুনিয়াতে আছে! ভাগ্যিস সেরকম দেশে তার জন্ম হয় নাই। আবার ভাবলো, নাহ এরকম হতেই পারে না। ব্যাটা নিশ্চয়ই মস্ত চাপাবাজ। তাকে মূর্খ ভেবে যা তা গল্প করে গেছে।

গতকাল সন্ধ্যায় এক পোয়া চিনি কিনতে বেরিয়ে সারা বাজার ঘুরে একটা দোকানেও চিনি পেল না। দোকানীরা জানালো ওরা আর চিনি বিক্রি করবে না। কারণ সরকার চিনির ন্যায্য মূল্য বেঁধে দিয়েছে। ওই দামে চিনি বিক্রি পোষাবে না, বিক্রির অপরাধে শাস্তি মেনে নিতে পারবে না। তাই চিনি বাজার থেকে উধাও।

রহিম শেখের মাথাটা চক্কর মারলো হঠাৎ। দেলুমিয়ার চায়ের দোকানে শোনা গল্পটা এতদিন বাদে পুরোপুরি বিশ্বাস হতে শুরু করেছে।

খবরসুত্র


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

..........................

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় সরকার এতটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে দেখে। পাবলিক পালস তারা ইচ্ছে করেই বুঝতে চাইছে না। বিশেষ করে প্রধান মন্ত্রীর কিছু বক্তব্য তেমনটা ইংগিত দেয়।

দুর্দান্ত এর ছবি

মূল্য জিনিসটা রহস্যময়। এটা হাত তালির মত। এক হাতে বিক্রেতা যতই দাম হাঁকাক, ক্রেতা সেই দামে না কিনলে মূল্য হয়না। দ্রব্যমূল্য বাড়ছে কারন কিছু মানুষ সেই দামে দ্রব্য কিনছে, এই দুর্দিনেও। চিনি/চাল মজুদ করতে খরচ হয়। বাজার যদি সরকারি সরবরাহ যথেষ্ট থাকে, তাহলে মজুদে রেখে গোডাউন খরচা গুনবে কোন ব্যাক্কল? যথেষ্ট সরবরাহের ব্যবস্থা না করে বাজার দর বেঁধে দিয়ে বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করার মত উচ্চমার্গের বুদ্ধি শুধু আমাদের নেতাদের মাঝেই সুলভ। সরকারের উচিত বড় আকারের আমদানি করে খোলা বাজারের ছাড়া। ইন্ডেন্টিং নয়, বিও নয়, টিসিবি নয়, বিডিআর নয়। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে জাহাজে করে আমদানি করে, চট্টগ্রাম-খুলনা বন্দরে জাহাজের পাশে দাঁড়িয়ে আগে আসলে আগে পাইবেন ভিত্তিতে যে সেইদিনের আন্তর্জাতিক বাজারদর-সমান টাকা নিয়ে আসবে তার কাছেই ট্রাক-চুক্তি চিনি/চাল বিক্রি করা। বিডি আর নামানো উচিত যেন তখন গ্যারেজে গ্যারেজ ট্রাক দাঁড়িয়ে না থাকে। র‍্যাবকে নামাতে হবে যাতে ব্যাঙ্ক থেকে ক্ষুদ্রব্যাবসায়ীর হকের ঋণ আটকানো না হয়, তাকে যেন রাস্তায় আটকে ছিনতাই করা না হয়। সরাসরি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে বড় আড়তদার-পরিবহন-ব্যাঙ্ক মাফিয়ার হাত থেকে মুক্ত করে আমদানির পরিমাণ যথেষ্ট করতে হবে।
যেখানে সারাদেশের কোটি-টন প্রয়োজন, সেখান হাজার-হাজার টন আমদানি করে বর বর ঢাকঢোক পিটিয়ে লোক দেখানো ওএমস আর বাজার দর বেধে দিলে এমপি-উপদেষ্টাদের পকেট ভারী হতে পারে, পাবলিকের পেট খালিই থেকে যাবে।

ফারুক হাসান এর ছবি

দেশের মানুষের চাওয়া কি খুবই বেশি? সেটুকুও সরকার পূরণ করতে পারে না।

আশালতা এর ছবি

অভিযোগের পাহাড় জমছে, কিন্তু শুনছে কে ?

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

স্বপ্নাদিষ্ট এর ছবি

অভিযোগের পাহাড় জমছে, কিন্তু শুনছে কে ?

চলুক

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

মন খারাপ মন খারাপ ................................

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সরকারি গাধামোটাই আসলে সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণহীন। ন্যায্য মূল্য বেঁধে দিলো সরকার... সেটার দায় দোকানদারের... কিন্তু আমদানীকারক আর মধ্যবর্তী ফড়িয়াদের কে নিয়ন্ত্রণ করবে শুনি?
আমদানী মূল্যের চেয়ে বাজার মূল্য দ্বিগুন হচ্ছে... শুধু এসব মধ্যবর্তী ফড়িয়াদের জন্য... ট্রান্সপোর্ট খরচের জন্য... রাস্তায় রাস্তায় ট্রাফিক আর সমিতিরে চাঁদা দেওয়ার জন্য... এগুলো নিয়ন্ত্রণ না করে ন্যায্যমূল্য বেঁধে দিলে যা হবার তাই তো হবে...
এখন আমরা না খেয়ে থাকি... চিনি খেয়ে কী হবে? চিড়তার রস খাই

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

স্যাকারিন আছে তো চোখ টিপি

জহির  আহমাদ এর ছবি

ভাইরে, এইধরনের মতামত দেখলে শত দু:খেও হাসি ধরে রাখতে পারি না । সরকার কি পাবলিকের ইয়ে লাগে যে তারা বাজার নিয়ন্ত্রন করতে পদক্ষেপ নিবে ? সরকার, সরকারি দল, বিরোধী দল, বড় ব্যবসায়ি, ব্যাংক-বীমার হর্তাকর্তা, মিডিয়া মালিক, সমাজের উপরমহল, বুদ্ধি দালাল... এরা সবাই মিলে একটা সিন্ডিকেট । তারা জানে, কীভাবে পাবলিকরে বেকুব বানায়া পকেট কাটতে হয় । তারা সেটা চর্চ্চা করে । শেয়ার মার্কেট দেখেন নাই ।

আরে ভাই, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর বানাইছে আতিউর রহমান সাব রে । হ্যায় কৃষি ঋন দেওনের কাজ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে বইসা ! ওইদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্ণর খালেদ সাবরে ফালায়া থুইছে কৃষি ব্যাংকে । আর মাঝখানে একবার শেয়ার মার্কেট তদন্তে আইনা তারে যা করল ! এরা তো “যোগ্য লোকের যোগ্য স্হান”--এই সহজ নীতিটাই বুঝে না । এইসব কইতে গেলে আবার পাবলিকে দেখি উল্টা বোঝে । কয় আরে জানেন না, “আতিউর সাবে কী কষ্ট কইরা পড়ালেহা করছে, হের বাফে কৃষক আছিল !”---যদি জিগাই তো কী হইছে ? এদেশের সব বাপ নইলে বাপের বাপ নইলে তার বাপ কৃষকই আছিল । কোন কৃষকের বেটা কষ্ট না করে । কাজে লাগে নি এইডা দেহেন । হেরে কন বাংলাদেশ ব্যাংক থুয়া কৃষি ব্যাংকে যাইতে । তখন কয় হে বিদেশ থেইক্কা এই বড় বড় ডিগ্রী আনছে । আরে ভাইরে ইংরেজ কন আর মোগল, আর্য কন আর বর্গী---সবতে এইদেশে চুরি-চামারী, লুটপাট করতে আইছিলো, আর আমরা তাগো থেকে যাই শিক্ষা লইতে, হুহ ! সঠিক শিক্ষা লয়া ফিরলে কোন অসুবিধা নাই, না ফিরলেও কী আয়ে যায়, বাংলাদেশে হাবিল কাবিল কোনোটার অভাব নাই, কিন্তু ফিরা আয়ে কতগুলান অশিক্ষিত আর কুশিক্ষিত । উদাহরন দিতে গেলে অনেকের দিলে আঘাত লাগবে । ভালাভালা জ্ঞানী লোকজন আবার দেখি এগুলারে মডেল আইডিয়াল বানায় ।

“সরকারি গাধামোটাই আসলে সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণহীন” ।---গাধা আসলে কে?
“ন্যায্য মূল্য বেঁধে দিলো সরকার... সেটার দায় দোকানদারের”---দায় তো ফেলতেসি সরকার তথা হাসিনা আর খুচরা দোকানদারের উপর, অথচ সিন্ডিকেটেড বাজারে এরা আসলে বলির পাঠা ।

“সরকারের উচিত বড় আকারের আমদানি করে খোলা বাজারের ছাড়া।”---কী যে সব কথা কন না রে ভাই, শরম পাই ।

তয়------ “র‍্যাবকে নামাতে হবে যাতে ব্যাঙ্ক থেকে ক্ষুদ্রব্যাবসায়ীর হকের ঋণ আটকানো না হয়, তাকে যেন রাস্তায় আটকে ছিনতাই করা না হয়। সরাসরি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে বড় আড়তদার-পরিবহন-ব্যাঙ্ক মাফিয়ার হাত থেকে মুক্ত করে আমদানির পরিমাণ যথেষ্ট করতে হবে।”---- এইটা মোটামুটি ঠিক আছে । লাইণে থাইকেন গুরু ।

দুর্দান্ত এর ছবি

“সরকারের উচিত বড় আকারের আমদানি করে খোলা বাজারের ছাড়া।”---কী যে সব কথা কন না রে ভাই, শরম পাই । ভারতের সুনাম করতে আমারো মাঝে মাঝে শরম লাগে। কিন্তু তাদের সরকারি খাদ্য আমদানী ও বিতরন ব্যাবস্থা ও ফুড সিকুরিটি এক্ট, দুস্থদের জন্য অনন্ত অন্ন যোজনা ইত্যাদি থেকে আমরা কিছু শিখতে পারি।

জহির  আহমাদ এর ছবি

“সরকারের উচিত বড় আকারের আমদানি করে খোলা বাজারে ছাড়া।”---- হ । এইটুকুই বাকী আছে । সরকারেরে নামাইবেন ব্যবসায় । তাইলেই তো ইয়ের ষোলকলা পূর্ণ হইবে ।

“ভারতের সুনাম করতে আমারো মাঝে মাঝে শরম লাগে। কিন্তু তাদের সরকারি খাদ্য আমদানী ও বিতরন ব্যাবস্থা ও ফুড সিকুরিটি এক্ট, দুস্থদের জন্য অনন্ত অন্ন যোজনা ইত্যাদি থেকে আমরা কিছু শিখতে পারি।”--- আবার লাইন ছাইড়া দিলেন ক্যা গুরু ? আয়েন আমরা খালি শিখি । ভারত থেইকা শিখি, ফাকিস্তান থেইক্যা শিখি, ইউরুপ- আম্রিকার থেইক্কা শিখি, নরওয়ে থেইক্কা শিখি ( যেসব বটিকা তারা আমগোরে খাওয়াইতেছিল, সেই বটিকা অহন তাগো লোকজন খায়, খায় আর মরে, মরে আর মারে, আহারে কত মায়ের পুতে জানি মরছে; নরওয়ের সাম্প্রতিক হত্যাকান্ড দ্রষ্টব্য ॥ গ্রামীনফোনের উচিৎ এ বিষয়েও একখান মর্মস্পর্শী এ্যাড বানায়া ফেলা, পয়সা লাগলে দিবে ইসলামী ব্যাংক । আমাগো মুক্তিযুদ্ধ যদি এ্যাডের বিষয় হইতে পারে, জাতীয় সংগীত নিয়া যদি এক্স-পেরিমেন্ট চালানো জায়েজ হয়,, তাইলে...আমারে আবার নিষ্ঠুর ভাইব্বেন না গো, এসব দেইখ্যা কইলজা খালি মোচড়ায় ) ।

আকাম-কুকাম করলে কন বাপ মায় কিছু শিখায় নাই, আর যখন এসব জরুরী বিষয়ের কথা উডে তহন খালি কন হিল্লী-দিল্লী-লা হোর থেইকা শিখতে হইব, লন্ঠন-ফেরিস-অসলো থেইকা শিখতে হইব, নইলে ন্যুড-ইয়র্ক থেইকা শিখতে হইব,,, শিখতে হইব ক্যা ? আমি বুঝি না আমগোর শিক্ষা হইতে আর কত বাকী আছে ? শিখার দরকার নাই, পারলে করেন কিছু একটা, না পারলে অন্তত চেষ্টা করেন, করতে করতেই একদিন শিখা ফেলাইবেন !

“র‍্যাবকে নামাতে হবে যাতে ব্যাঙ্ক থেকে ক্ষুদ্রব্যাবসায়ীর হকের ঋণ আটকানো না হয়, তাকে যেন রাস্তায় আটকে ছিনতাই করা না হয়। সরাসরি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে বড় আড়তদার-পরিবহন-ব্যাঙ্ক মাফিয়ার হাত থেকে মুক্ত করে আমদানির পরিমাণ যথেষ্ট করতে হবে।”---আপাতত: এটুক করলেও হয় । ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বললাম । ভুলচুক হইলে মাফ কইরেন ভাইডি !

ত্রিনিত্রি এর ছবি

কিছুই বলার নাই। আগে সবাই রাগ করে বলতো এটা কি মগের মুল্লুক নাকি, কিছুদিন পর বলা শুরু করবে, এটা কি বাঙাল মুল্লুক নাকি।

লেখাটা খুবই ভালো লেগেছে। সেটা বলতেই আসা।

mithun এর ছবি

ব্যবসায়ীরা সরকারকে বলেছিল, রোজার মধ্যে জিনিস-পত্রের দাম বাড়াবে না......তারা তাদের কথা রেখেছেন......আর তাইতো রোজার আগেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা......কিছু জিনিসতো বাজার থেকেই উধাও.........

কৌস্তুভ এর ছবি

অ্যাঁ

নীড় সন্ধানী এর ছবি

সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট(SCM) বলে একটা কথার সাথে আমরা অনেকে পরিচিত। যেসব কোম্পানীর SCM যতটা দক্ষ, সেই কোম্পানী ততটা সফল। বাংলাদেশের পন্য সরবরাহ ব্যবস্থায়ও সরকারের একটা ভুমিকা থাকা উচিত SCM জাতীয় কিছু একটা প্রতিষ্ঠায়।

কয়েক বছর আগে ভূটান সরকারের সেরকম একটা ডকুমেন্ট পাঠ করার সুযোগ হয়েছিল। ওদের কৃষি দফতর বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালের বাজারকে টার্গেট করে একটা পরিকল্পনা তৈরী করেছিল শীতকালীন কিছু সবজি বাংলাদেশের গরম কালে বাজারজাত করার জন্য। সেই ডকুমেন্টে কৃষিখামার থেকে ট্রাকে মাল তোলা থেকে কতদিনে কত ঘন্টায় সেই সবজিগুলো কোনদিন কোন বর্ডার পেরোবে হবে, কয়টা ট্রাক বদল করতে হবে, ঢাকা শহরে কটায় পৌছাবে, আগোরায় কটার সময় আনলোড হবে তার বিস্তারিত পরিকল্পনা লেখা আছে। এতটা নিয়ন্ত্রিত এবং পরিকল্পিত কোন সরকারী পরিকল্পনা আমার দেখা হয়নি এদেশে। তখন মনে হয়েছে ভূটানের কাছ থেকেও শেখার সময় হয়ে গেছে আমাদের।

সরকার যখন একটা মূল্য নির্ধারণ করা ফটাফট ঘোষণা দিয়ে দেয়, তখন কেন বিস্তারিত বলতে পারে না ওই মূল্যটা অত টাকার হবার যৌক্তিকতা কি? কেন আমদানী থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত আসার মূল্য ম্যাপটা প্রকাশ করে না?

৬৫ টাকার চিনি কত টাকায় আমদানী হয়েছে, কতটাকা ট্যাক্স এসেছে, কতো টাকায় পাইকারী বাজারে এসেছে, কতো টাকায় খুচরা বাজারে এসেছে, কতটাকা পরিবহন খরচ হয়েছে, সবগুলোর আনুমানিক হিসেব আছে। প্রত্যেকটা ধাপে অবশ্যই মুনাফার একটা যৌক্তিক মাত্রা থাকতে হবে। ৩০ টাকায় চিনি আমদানী করে ৫ টাকা ভাড়া দিয়ে, ১৫ টাকা ট্যাক্স দিয়ে যদি ১০ টাকা মুনাফা করে আমদানীকারক, সেই মুনাফা অবশ্যই গ্রহনযোগ্য হবে না। কারণ মুনাফার মাত্রা বাড়তে থাকে যতই খুচরা বাজারের দিকে যেতে থাকে। বাণিজ্যমন্ত্রীর ভাষনে সুস্পষ্ট বিস্তারিত ঘোষনা থাকলে কোন ব্যবসায়ী সাহস করবে না মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।