খাওয়াদাওয়ায় অনাগ্রহী লোক আমার অপছন্দ। দাওয়াতে গেলে মন ভরে খাবে, বুফেতে গেলে খেয়ে পেট উচা করে ফেলবে, হাঁটতে বেরুলে চোখ রাখবে আশেপাশে নতুন দোকান খুলছে কিনা, কাজে বেরুলে কাজ সেরে আসার সময় কোন তেলে ভাজার দোকানে ঢুকে পড়বে, নতুন জায়গায় গেলে ওখানকার সবচেয়ে রসনাময় খাবার দোকানের নাম জানতে চাইবে, তেমন লোকই আমার পছন্দ। তেমন লোকেরা ভদ্রলোক হয় না সচরাচর। আমার বন্ধু তালিকায় ভদ্রলোকেরা তাই নিতান্তই অপ্রতুল। যে সমস্ত ভদ্রলোক এখনো বন্ধুতালিকায় টিকে আছে তারা কেউ জন্মগত ভদ্রলোক ছিল না। কালের কুসঙ্গে, সভ্যতার যাঁতাকলে তারা ভদ্রলোক হয়ে গেছে। সুযোগ পেলেই তারা আমার কাতারে নেমে আসে বলেই বন্ধু বলে স্বীকার করি এখনো।
জন্মগত ভদ্রলোকেরা বড় বেশী যন্ত্রনাদায়ক। বাইরে কোথাও খায় না তারা। ঝুপড়ি, খুপড়ি, ফুটপাতের পলিথিন ছাওয়া দোকানের তো প্রশ্নই ওঠে না, যে কোন মধ্যম ক্যাটাগরির আবুলের রেস্তোঁরায়ও ঢুকে না এই প্রজাতি। এমনকি অতি সুশীল রেস্তোঁরায় খেতে গেলেও বাছাবাছি করে অতিষ্ট করে তোলে। সবকিছু বিশুদ্ধ কিনা, প্যাকেটের গায়ে এক্সপায়ারি ডেট লেখা আছে কিনা, মিনারেল বোতল সীল করা আছে কিনা ইত্যাদি যাচাই করে নাক কুঁচকে খেতে বসে। আরে বাপু জগতে সবকিছু যদি ১০০% নিষ্কলংক থাকতো, আমি দেড়খানা বিএ পাশ দেবার পরেও গত পাঁচ বছর পথে পথে ভ্যান ভ্যান করে ঘুরে বেড়াই কেন? তাছাড়া খোদ বিধাতাই চায় না জগতে সবকিছু ঠিকঠাক থাকুক। ঠিক না থাকার জন্য বিধাতা দুনিয়ার নানা দেশে কোটি কোটি শয়তানের হাড্ডিকে বছরের পর বছর ধরে পুষছে বাকী জগতের নাভিশ্বাস তোলার জন্য। আমি তাই জন্মগত ভদ্রলোকদের কাছ থেকে সাড়ে তিনশো হাত দূরে থাকি।
এইসব জন্মগত ভদ্রলোকদের দুটো সমস্যার উদাহারণ দেই-
১. কোন দাওয়াতে গেছে। সামনে খাবার দেয়া হয়েছে, পেটে খিদেও যথেষ্ট, তবু এরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবে। যেন নিতান্ত অনিচ্ছায় দাওয়াতে এসেছে। খাসী মুরগার দোলমা কোরমার দিকে অবহেলার চোখে তাকাবে। পেটকে কষ্ট দিয়েও এরা তাকিয়ে থাকবে অন্যরা কখন শুরু করে। সবার আগে খেতে শুরু করা নাপছন্দ এদের। খাওয়া শুরু করলেও এমন ভাবে চিবোবে যাতে দাতের পাটির কিয়দংশও দেখা না যায়। খেতে বসে হাসি ঠাট্টা গল্প গুজব এদের কাছে কবিরা গুনার সমতুল্য। খিদে পেয়েছে এই কথাটা কোন কুক্ষণেও উচ্চারণ করে না, যেন বলামাত্র হাবিয়া দোজখ হাসিল হয়ে যাবে।
২. খিদে পেলে তো বলেই না, এমনকি বাথরুম পেলেও বলে না। চেপে রাখে প্রাণপনে। একবার গাড়িতে দূরে যাচ্ছিলাম কোথাও। গাড়িতে দুজন আমার মতো অভদ্র, দুজন হাফ ভদ্র, আর তিনজন চরম ভদ্রলোক। পথে বাথরুম চাপলে আমরা অভদ্র দুজন ড্রাইভারকে বলে নেমে গেলাম রাস্তার ধারের ঝোপের আড়ালে। হাফ ভদ্রদুজন নামলো আরো এক মিনিট পর। চরম ভদ্র তিনজন নামলোই না। ভাণ করলো যেন ওই জিনিস তাদের কখনো হয়না। কিন্তু যেইমাত্র গন্তব্যে পৌঁছালাম, ওই তিনজন এমন জোরে ছুট লাগালো যেন পাগলা কুকুর তাড়া করেছে। গিয়ে ধাক্কাধাক্কি করতে লাগলো পুরুষ টয়লেট লেখা ঘরের দরোজায়। বাথরুম একটা, তিনজনে তো একসাথে ঢুকতে পারে না। লটারী করে একজন ঢুকলো বাকী দুজন পেটে হাত দিয়ে মুখ চুন করে দাঁড়িয়ে রইল বাইরে। আমরা তখন পরম সুখে বিড়ি ধরিয়ে নিষ্ঠুর আমোদে উচ্চারণ করি, "কেন বাপু এখানে গুঁতোগুঁতি না করে মাঝপথে প্রকৃতির সাথে লীলাটা সেরে এলে এমন কি দোষ হতো?"
প্রকৃতির ডাক প্রকৃতির মাঝেই সামাল দিতে ওস্তাদ আমার অভদ্রলোক বন্ধু রিপন। সঙ্গী হিসেবে তাই রিপনকে পছন্দ আমার। ওকে যদি একসাথে ডিম-পরোটা-মোগলাইপরোটা-চিকেনতন্দুরী-বাটার নান এক সঙ্গে খেতে দেয়া হয় সে সব খেয়ে দু গ্লাস বোরহানি গলায় ঢেলে বলবে "আরো একখানা শর্মা মুখে দিয়ে বেরুতে পারলে পেটের তৃপ্তি হতো রে ব্যাটা। খেয়ে সুখ হলো না।"
আমরা দুজনের সবচে বড় মিল হলো খাওয়া আর দাওয়ায়(দাওয়াতে)। শহরের ভদ্র মানুষেরা চরম ব্যস্ত। কার্ড দিয়ে ফোন করে দাওয়াত দিয়েও তাদেরকে সহজে হাজির করা যায় না অনুষ্ঠানে। ভদ্রলোকদের প্রতিদিন কয়েকটা করে দাওয়াত থাকে। একটা মানুষ কতো খাবে। একটা দাওয়াতে খেলে আরেকটায় খেতে পারে না। অথচ তাদের জন্যও রান্না করা হয়েছে উভয় অনুষ্ঠানে। এরকম বেশ কিছু মানুষের খাওয়া প্রত্যেক বিয়েতে নষ্ট হয়। খাবার নষ্ট করা গুনাহ। এত টাকা কড়ি খরচ করে মানুষ কেন গুনাহর ভাগীদার হবে, এটা মানতে পারে না রিপন, আমিও তাকে সমর্থন করি। তাই সপ্তাহে অন্ততঃ তিনটা দিন দুজনে মেস থেকে বেরিয়ে চেষ্টা করি জনস্বার্থে কিছু কাজ করতে।
যদিও জনস্বার্থেই করা, তবু কাজটা গোপনে করতে হয়। সত্যিকার ভালো কাজ নাকি প্রকাশ্যে না করাই উত্তম। জানিয়েছিল মসজিদের ইমাম সাহেব। তাছাড়া আমাদের সমাজ এখনো এই কাজগুলোকে ভালো চোখে দেখে না। দেখার কথাও না। সবগুলো ভালো কাজ সমাজ এখনো চিহ্নিতও করতে পারেনি।
বিষুদ-শুক্র-শনি এই তিনদিন শহরের কোথাও না কোথাও বিয়ে থাকেই। সন্ধ্যের পর দুজনে জামা জুতো পরে বেরিয়ে পড়ি। হাঁটতে হাঁটতে ধোঁয়া ওড়াই। পাঁচ টাকার বাদাম কিনে চিবোই। যেসব রাস্তায় বিয়ের ক্লাব আছে সেসব রাস্তায় হাঁটি। যখন ক্লাবগুলোতে ভীড় বাড়তে থাকে তখন কাছাকাছি চলে যাই। মোক্ষম সময় হলো বর আগমনের সময়। সেই সময় হৈ চৈ থাকে খুব। খাবার টেবিলে তাড়াতাড়ি বসিয়ে দেবার তাড়া থাকে কনেপক্ষের। আমরা সেই সময়টাতে খাবার টেবিলকে পেছনে রেখে দাঁড়িয়ে থাকি যেন খাবার দিকে কোন মনোযোগই নেই আমাদের। তখনই কনেপক্ষের কোন মুরব্বী এসে তিরস্কারের সুরে জানতে চাইবে কে কে না খেয়ে এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে? এই ধরনের তিরস্কারগুলো আমাদের বেশ পছন্দ। আমরা চাই প্রত্যেক বিয়েতে কিছু শাসন পেতে। কোন শাসন ছাড়া, এমনিতে চোরের মতো বসে খেলে সেইরকম তৃপ্তি হয় না।
সেদিন 'কিং অব চিটাগং' এ একটা দাওয়াতে ঢুকে পড়েছি। খান্দানী লোকের অনুষ্ঠান। এরকম জায়গায় একটু বাড়তি ভদ্রতা থাকে আমাদের। খেতে বসলে নিজেরা কখনো নিয়ে খাই না। কেমন লজ্জা লাগে। সেদিনও ছজনের টেবিলে কিছু না নিয়ে চুপচাপ বসে আছি দুজনে। বাকী চারজন বেশ করিৎকর্মা। ওরা খাদ্য পরিবেশন করামাত্র রেজালা কোরমার বড় বড় টুকরাগুলো ধুপধাপ নিজেদের মধ্যে খালাস করে বাটিটা রেখে দিল। আমাদের জন্য কিছুই নেই বাটি দুটোতে। অথচ ছজনের টেবিল, সবকিছু ছ জনের জন্য দেয়া। কি করি? মনে মনে ভীষণ ক্ষেপে গেলেও লজ্জায় কিছু বলতেও পারছি না। ভদ্রলোকদের যে কোন অনিয়ম চুপ করে হজম করে নেয়াই নিয়ম। ঘন্টাখানেকের জন্য আমরা ভদ্রলোক।
তবে আমি হজম করলেও রিপন হজম করতে পারলো না। হঠাৎ করে কারেন্ট চলে গেল। জেনারেটার চালু হতে মিনিটখানেক লেগেছে বোধহয়। বাতি জ্বলার পর দেখি টেবিলের অবন্টিত আইটেম- গরুভুনা, খাসির কলিজাভুনা, টিক্কা কাবাব ইত্যাদির অর্ধেক আমার প্লেটে, অর্ধেক রিপনের প্লেটে। এবার বাকী চারজনের মুখ অন্ধকার। খানিক আগে ওরা অন্যায় করেছে। এবার আমরা। অন্যায় অন্যায়ে কাটাকাটি বলে ওরাও চুপচাপ হজম করে ফেললো। ওদিকে করিৎকর্মা রিপন ছয় কাবাবের দুটো লোডশেডিং সময়ে নিজের মুখেই পুরে দিয়েছিল। বাকী চারটার মধ্যে দুটো আমার দুটো তার প্লেটে শোভা পাচ্ছে। খাওয়া শেষ হতেই সামনে গরম পানিতে লেবুর চাক দিয়ে হাত ধুতে দেয়া হলো। বোকা না আমরা। এই গরম পানি দেয়ার মতলব দশ/বিশ টাকা বকশিশ আদায় করা। এরকম সময়গুলতে আমরা গরমপানি দেখেও না দেখার ভান করে উঠে গিয়ে বেসিনে হাত ধুয়ে ফেলি। কিন্তু এই বয়টা নাছোড়। উঠতে যেতেই বলে "স্যার এখানে হাত ধুতে পারবেন, সাবান দিচ্ছি, বকশিশ লাগবে না"।
কিঞ্চিত অপমানগ্রস্থ রিপন গম্ভীর হয়ে ফতোয়া দিল,"বিয়েবাড়িতে টেবিলে হাত ধুলে গৃহস্থের অকল্যাণ হয়।"
"বিয়েবাড়ি? কে কইল আপনারে এটা?" বেয়াড়া অবাক হয়ে তাকালো আমাদের মুখের দিকে। পানির বাটি নিয়ে চলে গেল ভেতরে।
রিপন এদিক সেদিক তাকায়। আমিও। বিয়েবাড়ির মতোই তো লাগে। বর আসেনি যদিও এখনো। নাকি অন্য বিষয়.......?!!! মরুকগে- খাওয়া তো শেষ, এলা যাইগা।
কিন্তু যাওয়া হলো না। বেসিনে হাত ধুয়ে পাশের টেবিল থেকে একটা পান নিয়ে মুখে তুলতেই পেছন থেকে কলার চেপে টান দিল কঠিন একটা হাত।
"বিয়া খাইতে আইছ?"
মাথা ঘুরে উঠলো যখন দেখি কলার ধর্তা আর প্রশ্ন কর্তার পাশেই ঘুষি বাগিয়ে তৈরী বিক্ষুব্ধ চেহারা নিয়ে দাঁড়ানো সেই চারজনের দলটা। যাদের চারটা কাবাব আমাদের দুজনের পেটে মোচড় দিচ্ছে এখন।
ভুল সময়ে ফতোয়া জারির শিক্ষা দুজনের ঘাড় আর পিঠের উপর দিয়ে গেলেও নিজের দোষটা রিপন কিছুতে স্বীকার করলো না। এটা যে কোটিপতি বাচ্চার আকিকার পার্টি ছিল সেটা খেয়াল করার দায়িত্ব আমাকে কবে দিয়েছে খোদা মালুম। অভদ্রদের নিয়ে এই এক সমস্যা। এরা নিজের দোষটা সুচারুভাবে অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেবে।
মন্তব্য
হাকুল্যা কি শুধুমাত্র চট্টগ্রামের মানুষেরা বলে? আমরাও বলি; রাগিব ভাই বইঙ্গা বলছে, এইটা ঠিক না, তীব্র পেতিবাদ
খাওয়ালে প্রাণ ভরে খাওয়ানোতেই আসল আনন্দ।
কিন্তু একটা সন্ধ্যার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে-- আমরা তিন বন্ধু .. ডিসি হিল .. চমৎকার একটা রেস্টুরেন্টে একজন উজ্জ্বল মানুষ .. তাড়াহুড়ো .. পরে খিদে লাগবে বলে কম খেয়ে তারপর ট্রেন এর সময় হয়ে যাওয়া .. পাঁচলাইশ থানার সামনের গরুর গোস্ত মিস করা .. ট্রেন এ খাবার না পেয়ে সারারাত বারবার পানি খাওয়া .. কহতব্য নহে ..
ইশশশ, খামাকা কষ্ট পেলেন সেদিন। এত করে বললাম কোর্স কমপ্লিট করে যান, শুনলেন না, প্রাণতো দূরে থাক, রসনাও ভরেনি নিশ্চিত। পরের বারে এরকম ভুল আর নয়
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হাকুল্যা লোকজন সব দাওয়াতেই পাওয়া যায়।
ঢাকাতে যারা থাকেন তারা দাওয়াত পেলে প্রথমেই ভাবেন দাওয়াতটাতে গেলে যেতে-আসতে ট্রাফিক জ্যামে কতক্ষণ সময় যাবে। সময় হিসেব করা হলে তারপর চুপচাপ দাওয়াতটার কথা ভুলে যান।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ঢাকায় লাঞ্চের দাওয়াতে গেলে ডিনারের সময় ফিরতে হয়। কদিন আগে একটা কাজে ঢাকা গিয়ে আবারো মর্মে মর্মে অভিজ্ঞতা হলো।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ধানমন্ঢি আটনম্বর ব্রিজের কোনার অন্ধকারে বসে ৯০-৯৬ সাল পরয্ন্ত যে কুলাংগারের দলটি নিয়মিত আড্ডা মারতো, তাদের একটি উপদল ধানমন্ডির শাপলা ও মগবাজারের সোহাগে নিয়মিত্র 'হাকুল্য়া' অভিযাত্রী চিল। ইন্শাল্লা আপনাদের দোয়ায় কোন অঘটন ঘটেনাই। উভয় কমিউনিটি সেন্টারের মামুরা মুখ চেনা এই দলটির সদস্য়্দের কে দশ-বিশ টাকা অথবা দু-চার শলা বাংলা ফাইভের বিনিময়ে প্রায় মায়ের স্নেহে খাবার পরিবেশন করতেন। সোহাগে একবার উপদলের এক নিয়মিত 'হাকুল্য়া' আসতে না পরায় তার জন্য় পারসেলের ব্য়াবস্থাও হয়েছিল।
আহ! ঢাকা একটি বেহেশতি শহরের নাম।
৯০-৯৬ সালের ঢাকা ২০১২ সালে কল্পনা করার জো আছে?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আসেন ভাইজান। বুকে আসেন। বহুদ্দিন পর নিজের লাইনের একজন (আসলে দু'জন) এর পরিচয় পেয়ে বড়ই শান্তি পাইলাম। আমার তো এখনি খাইতে যাইতে মুঞ্চায়। যদিও ইট্টু আগেই দুপুরের গ্রেটলাঞ্চটা সারলাম। আহা, খাবার।
আগে আপনার নিকটা বদলাতে হবে, তদানিন্তন পাঁঠার আকিকা খাইতে মন চায়
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হে হে জটিল হইয়্যে।
বিয়ে বাড়ির খাবার টেবিলের স্নায়ুযুদ্ধ বড় ভালু পাই। তার মইধ্যে ২/৪টা 'চুদানির ফোয়া' থাইলে তো কথাই নাই।
একদল লোক দেখবেন বিয়েবাড়ির খাবার টেবিলে খুবই উদ্যোমী। বেয়ারা খাবার নিয়ে আসতে না আসতেই এরা চামচ-হাত যা দিয়ে পারে সবাইকে তড়িঘড়ি করে সার্ভ করে। আমি খেয়াল করে দেখেছি মুরগীর সবচেয়ে স্বাস্থ্যবান রোস্টটি অথবা খাসির সবচেয়ে নধর রেজালাটি উনারা নিজের জন্যে রেখে তারপর বাকিদের সার্ভ করেন
আমি এরকম পরিস্থিতি দেখেছি বহুবার। এই কান্ডগুলো উপভোগ্যও বটে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ছি ছি, "___ফোয়া" বলেই দিলেন???
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
প্রথম প্যারায়
যখন যেই জায়গায় গিয়েছি, সবার আগে আশেপাশের খাবার দোকান রেকি করাটাই ছিল প্রথম কাজ
এই রেকি করতে গিয়েও টেষ্ট করা হয়ে যায়
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
facebook
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
_________________
[খোমাখাতা]
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
তা ধরেন গিয়ে প্রায় ৩৮ বছর আগের কথা। ঢাকা শহরে তখন কমিউনিটি সেন্টার খুব একটা ছিলনা। তখন বিয়ে-শাদির খানাদানা চাইনিজ হোটেলেও হতো। আমরা মাঝে-মধ্যে চান্স নিতাম। একটা চার আনা দামের পাউরুটি কিনে রঙিন কাগজে মুড়িয়ে উপহার হিসাবে নিয়ে যেতাম। যাঁরা খানা তদারকি করতেন, তাদের কাছে জানতে চাইতাম, উপহার সামগ্রী কোথায় দিতে হবে। এভাবেই খানা যায়েজ করে নিতাম। তবে কোনদিন ধরা খাইনি। চুরি বিদ্যা বড় বিদ্যা যদি না পড় ধরা।
অনেক পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল। সত্যিই কী এমন বদ ছিলাম!
উপহার খুলে দাওয়াতকারীদের মুখের চেহারা কেমন হতো ভেবে
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
এবং নিশ্চয়ই পাউরুটির উপর নাম লেখা থাকতো না
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
পাউরুটি দিয়ে বিয়ে খাওয়া!!!! চরম বুদ্ধি তো!!!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমি নিজেও খেতে খুব পছন্দ করি, তবে সবাই বসে খেলে আমি আশেপাশের সবাইকে দিয়ে খাওয়া শুরু করি ( প্রথমবার)। শুরুর পরে ....... বাকিটা ইতিহাস
বাকী ইতিহাস মানে কি, আপনারও হাকুল্যাতে পদার্পন ঘটেছে?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ভদ্রতার সাথে আসলে খুঁতখুঁতে স্বভাবের কোন সম্পর্ক নেই। লেখাটা মজারু
কতোদিন পর আপনাকে দেখলাম আপু!! পড়ার জন্য ধন্যা
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমার ঠাকুমার (ফরিদপুর/নোয়াখালি) মুখে কিন্তু আদেখলে/হ্যাংলা বোঝাতে হাকুইল্যা কথাটা শুনেছি।
এমা, আপনাকেও তো অনেকদিন পর। আয়নামতিপুকে আপনিই নিয়ে এলেন নাকি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এঃ, বায়নামতির সঙ্গে আমার কোনোই আলাপ নেই!
আহা কী অভিমান! আবার খুশিও আটকাতে পারছে না। একজন লুল ব্লগার!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অভিমান? বায়নামতির সঙ্গে আসল ভাব হচ্ছে আমাদের পছন্দনীয় আঙ্কেলের...
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
একটু ভিন্ন একটা চিত্র দেখলাম কিছুদিন আগে।
বেশ কিছুদিন আগে বনানী মসজিদে আমার এক আত্নীয়ার কুলখানিতে গিয়েছিলাম। বাইরের বারান্দায় বসে দেখছিলাম বেশ কিছু ছেলেপে্লে আমার মতই বারান্দার বেঞ্চি/রেলিং-এ এসে বসছে। কেউ কেউ নামাজে জয়েন করছে শেষের দিকে। আমি ভাবলাম তারা বোধহয় ঐ আত্নীয়ারই পড়শী বা চেনাপরিচিত কিছু হবে। একটু পরে দেখি নামাজের একদম শেষের দিকে হঠাৎ করেই একদল দৌড়ে ভিতরে গিয়ে শেষ মুহূর্তে একটা কাতার বানিয়ে ফেলল (যদিও বাইরে বসে থেকেও এতক্ষণ ঢুকেনি)। এবং পর মুহূর্তেই নামাজ শেষ হতেই সবার আগে ভোঁ দৌড় দিয়ে যে দুজন তোবারক (? কুলখানিতে যে খাবারের প্যাকেট দেয়া হয়) বিতরনের দায়িত্বে দরজার মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাদের ঘিরে ধরল। এদের দায়িত্ব ছিল বেরুনোর মুখে নামাজিদের মধ্যে একজন-একজন করে প্যাকেট হাতে ধরিয়ে দেয়া। কোথায় কি, ইনারা একেকজন প্যাকেট নিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায় তো বাইরে থেকে আরেকজঙ্কে ভেতরে পাঠায় প্যাকেটগ্রহণের জায়গা দখল করতে বা অপেক্ষাকারীর হাতে প্যাকেট দিয়ে নিজেই আবার ফেরৎ যায়। রীতিমত ধুন্ধুমার অবস্থা! আর প্যাকেট বিতরনের দায়িত্বপ্রাপ্ত দু'জনের একেবারে ঘেরাও অবস্থায় নাকের পানি চোখের পানি এক হওয়ার দশা। যারা আসলেই আত্নীয়-স্বজন বা ঐ মসজিদে স্বাভাবিক ভাবে নিয়মিত নামাজি এবং ঐ প্যাকেট যাদের জন্য আনা, তারা অনেকেই কিছুই পাননি, বরং এই অবস্থা দেখে মানে মানে য পলায়তি স জীবতি মনে করে দ্রুত কেটে পড়তেই ব্যগ্র ছিলেন। জীবনে এমন কুলখানি আমি দেখিনি! পরে বুঝেছি এই খাবার-প্যাকেট নেয়ার জন্য হুড়োহুড়ি করা নামাজি সেজে আসা পোলাপাইনরা আসে-পাশের এলাকারই আর তারা ্কেউই মোটেও নামাজ পড়তে বা কুলখানিতে মৃতের জন্য দোয়া করতে আসেনি। স্রেফ পেটপুজোর জন্যই লাস্ট মোমেন্টে নামাজির ভেক ধরে ভিতরে গিয়ে ঢোকা। নামাজ শেষেও অনেকক্ষন ধরে এই কাণ্ডকারখানা চলছিল, তারা কিছুতেই প্যাকেট-বিতরনকারীদের ছাড়ছিল না। ভাবখানা - হে হে আমরাও নামাজি মুসল্লী, কুলখানিতে আগত মহান দয়াপরবশ শুভার্থী - আমাদের প্রাপ্য প্যাকেট না দিয়া যাবা কই! তারা খুব ভাল করেই জানে ধর্মীয় ও আবেগিক স্পর্শকাতরতার জন্য হোস্ট পক্ষ এটা নিয়ে পাব্লিকলি তেমন কোন উচ্চবাচ্যই করতে পারবে না যতক্ষণ খাবার সাপ্লাই আছে। শেষে বাইরে থেকে শুনি মসজিদের ইমাম মাইকে মৃতার ছেলেকে (আমার আত্নীয়) ব্যাপারটা বাইরে নিয়ে যেতে বলছেন। ওদিকে ছেলে ততক্ষণে বেগতিক দেখে মসজিদের বাইরে কেউ না ভাব করে দাঁড়িয়ে আছেন, ভেতরের দু'জনকে বিপদে ফেলে।
প্রথমে কুলখানির সীমিত কিছু খাবারের জন্য এত আদেখলেপনা দেখে বিরক্ত হয়েছিলাম, কিন্তু পরে পুরো ব্যাপারটার অভিনবত্বে ভীষন হাসিও পেয়েছিল।
এটাকে কি এক ধরণের "হাকুল্যা"-চর্চা বলা যায় ?!
****************************************
হাকুল্যা দুই প্রকার। জনস্বার্থে হাকুল্যা, জনবিরোধী হাকুল্যা। গল্পের কাহিনী জনস্বার্থে হাকুল্যা। আপনার এই ঘটনা জনবিরোধী হাকুল্যা।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমার বাবা এই হাকুল্যা ফিস্টের গল্প করত। আমি তার অযোগ্য সন্তান, দাওয়াত থাকলেই খেতে যেতাম না, আর দাওয়াত ছাড়া!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
এই কাজটা বেশ কয়েকবার আমি ও করেছি, সাথে ছিল পাড়ার বদ পোলাপাইন। আর এখন নিপাট ভদ্রলোক।
কি বদ ছিলাম রে ভাই....সবকিছু আবার মনে পড়ে গেল। ভালো থাকবেন।
খুবমজা পাইলাম্।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন মন্তব্য করুন