১) জগতে এত ঘুরন্তিস কেন?
কৈশোর থেকে প্রশ্নগুলো ঘুরছে। পড়াশোনায় মন ছিল না বলে টই টই করে ঘুরে বেড়াতাম। তাবৎ মুরব্বীর একই ঝাড়ি- 'এত ঘুরাঘুরি কিসের? লেখাপড়ার কাম নাই?' আরে আজব আমি একা ঘুরি নাকি? সারা দুনিয়াটা ঘোরে। কেবল পার্থক্য হলো ওরা ঘুরে নির্দিষ্ট বৃত্তাকারে, আমি ঘুরি লাইন ছাড়া। তবে এইসব ঘুরাঘুরি নিয়ে বিস্তর চিন্তাভাবনা বিকাশ লাভের আগেই মারা গেছে। যেটুকু মনে আছে তা বলছি-
পৃথিবীটা গোল। চাঁদটাও। এমনকি সূর্যটাও। তাবৎ সৌরজগতের, এ পর্যন্ত জানা মহাকাশের সবগুলো গ্রহ নক্ষত্র গোলাকার। ব্যতিক্রম আছে কিছু গ্রহাণু, ধূমকেতু আর উল্কা, সেটাকে হিসেবে আনছি না। প্রত্যেকটা গ্রহ উপগ্রহ নক্ষত্রের একটা অক্ষরেখা আছে, সেই অক্ষরেখায় বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার রেখায় ঘুরছে সবাই। আবার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনুপরমাণু ভেঙ্গেও একই কারবার। ছোট বড় সবাই ঘুরছে তো ঘুরছেই। হাতের নখের মধ্যে আটকানো একবিন্দু বালি, তার ভেতরেও চলছে অবিরাম ঘূর্ণি। এত ঘুরন্তিস কেন? কি উদ্দেশ্য তাহার? উদ্দেশ্যহীন ঘুরন্তিস প্রকৃতির সাথে যায় না। প্রত্যেকটা কাজেরই একটা ইনপুট আর একটা আউটপুট আছে। দুটো মিলেই জগতের সকল কর্মযজ্ঞ। নিশ্চয়ই এই ঘুরন্তিস এর কোন উদ্দেশ্য আছে যা আমাদের অজানা। ঘুরন্তিস এর উদ্দেশ্য বের করা সহজ না হলেও, এখান থেকে একটা সাধারণ জ্ঞান শিক্ষা নিলে ক্ষতি নেই। যেহেতু দুনিয়ার সবকিছুর আকৃতির মধ্যে ঘুরন্তিসের নেশা মানে বৃত্তের প্রভাব, তাহলে ধরে নেয়া যায় বৃত্ত একটি মৌলিক আকৃতি যার জন্ম আদিতে। বৃত্ত ছাড়া আর যত আকৃতি সব মানবসৃষ্ট। মানে দুনিয়াটা আসলে গোল।
২) একই আকাশে চাঁদ সূর্যের আকার পরিবর্তন হয় কেন?
সূর্য যখন দিগন্ত রেখার কাছাকাছি থাকে তখন তার সাইজ দেখছেন? কিংবা পূর্ণিমার সন্ধ্যার পূর্বদিগন্তের চাঁদটা? ইয়া ঢাউস সোনালী/কমলা থালা যেন। কিন্তু একই জিনিস যখন মাথার উপরে থাকে, তখন আবার সেই স্ট্যান্ডার্ড সাইজে ফিরে যায়। এই তেলেসমাতির রহস্য কি? এটা তো আর ভাত চালের ব্যাপার না যে রান্না করার আগে এক সাইজ, রান্না করার পরে অন্য সাইজ হয়ে যাবে। তাহলে রহস্যটা কি? টলেমি আংকেল বলছিলেন যে পৃথিবীর অভিকর্ষ বা বায়ুমণ্ডলের কোন একটা প্রভাব আছে এতে যার ফলে সাইজ এরকম হেরফের দেখায়। দুই হাজার বছর এতে কোন দ্বিমত দেখা না গেলেও আধুনিক মহাকাশ বিজ্ঞানীরা তার দাবীটা খারিজ করে দিয়ে বলেছে, বুড়া কিছুই জানতো না। এখানে কোন ব্যাপারই নাই। আগাগোড়া নাকি একই সাইজ দেখা যায়। যেটা আমরা বড় ছোট দেখি বলে মনে হয় সেটা আমাদের দেখার ভুল, মগজের এরর মেসেজ। যার নাম অপটিক্যাল ইল্যুশন।
আমি আধুনিক বিজ্ঞানীদের গুল্লি মারি। আমার বিশ্বাস টলেমি আংকেলের সাথে যায়। এখানে অভিকর্ষ কিংবা বায়ুমণ্ডলের কোন ফাঁপর না থাকলে এত বড় জালিয়াতি কারবার লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চলতে পারতো না।
৩) পা দিয়ে হাঁটেন নাকি চোখ দিয়ে?
ঘুরাঘুরি কেবল আমিই করি না। আপনিও করেন। কথা সেটা নয়। এই যে এত হাঁটাহাঁটি করেন কখনো ভেবে দেখেছেন কিভাবে হাঁটেন? হ্যাঁ, পা দিয়ে হাঁটেন জানা কথা। কিন্তু অজানা কথা হলো পা হলো একটা ভর দেবার অঙ্গ মাত্র আপনি আসলে হাঁটেন চোখে ভর দিয়ে। কিভাবে? আপনার আশেপাশে টাইলসের ফ্লোর আছে? একফুট বাই একফুট টাইলস? যদি থাকে তবে একফুট টাইলসের উপর দিয়ে সোজা সামনে একশো ফুট হেঁটে যান তো! সাবধান, একফুট টাইলসের বাইরে যেন কোনমতেই পা না পড়ে। সীমা এই একফুট প্রস্থ টাইলস। এর ডাইনে বামে যে টাইলস আছে তাতে যেন পা না পড়ে। .......... কী, পারা গেছে? পারার কথাই। সোজা একটা কাজ।
কিন্তু ধরুন এই একফুট প্রস্থ একটা সাঁকো স্রোতস্বিনী নদীর পঞ্চাশ ফুট উপরে বসিয়ে দেয়া হলো। এটার উপর দিয়েই আপনাকে নদীটা পার হতে হবে। পারবেন? এবার চিন্তায় পড়ে গেছেন তাই না? হুঁ সেজন্যই বলেছিলাম, আপনি আসলে হাঁটেন চোখের মাথায় ভর দিয়ে। ফ্লোরে হাঁটার সময় আপনার দৃষ্টি আশেপাশের টাইলসে ভর করে আপনাকে সোজা পথে হাঁটিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু নদীর উপর দিয়ে যাবার সময় আপনার চোখকে ভর দিতে হয় জলের স্রোতে। ফলে আপনি ভারসাম্য হারাবেন বারবার, হয়তো দশ পা গিয়েই নদীতে ঝপাৎ করে পড়ে যাবেন । (তবে হ্যাঁ কেউ যদি শারীরিক কসরতের কারিগর হয়, তাহলে এটা তার জন্য প্রযোজ্য নয়।) এখন বলুন, আপনি কী দিয়ে হাঁটেন, চোখ দিয়ে নাকি পা দিয়ে?
৪) এবং কলম বিষয়ে একটি সাম্প্রতিক উপলব্ধি
আমার ধারণা কলম দিয়ে লেখালেখি করতে হলে ৯৯% লোকের ব্লগিং নেশা ছুটে যেতো এবং নিশ্চিতভাবে আমি তাদের প্রথম সারিতে থাকতাম। সেদিন এক জায়গায় কলম দিয়ে দুই পাতা বাংলা লিখতে গিয়ে হাতের আঙুলগুলো এমন কিমা কিমা হলো যেন স্কুলের তিন ঘণ্টার বার্ষিক পরীক্ষার খাতা জমা দিয়ে বেরুলাম।
কম্পিউটারের কাছে কৃতজ্ঞতা। বিশ শতকে আবিষ্কৃত হবার জন্য এবং উনিশ শতকে আবিষ্কৃত না হবার জন্য। কম্পিউটার, ইন্টারনেট, অভ্র এই তিনটা বস্তু না থাকলে এতগুলো বই একুশে মেলায় প্রকাশ পেতনা, বাঙালী এতখানি লেখালেখি করতো না, এতগুলো বাংলা ব্লগেরও জন্ম হতো না- এটা যেমন সত্য, এই আবিষ্কার ১০০ বছর আগে হলে রবি বুড়ো একা যা লিখতো তা পড়ে শেষ করার জন্য একেকটা মানুষের সত্তরবার জন্ম নিতে হতো সেটাও সত্য। বেঁচে গেছি!
মন্তব্য
প্রশ্ন উত্তর পর্ব ভালো লাগছে । আপনার উপলব্ধি ও ঠিকই আছে।
এখনও কলম দিয়া লিখতে হইলে এই মন্তব্যটাও আপনে পাইতেন না। ভাবছেন বিষয়টা !!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
সেজন্যই তো কইলাম কলমের যুগে থাকলে লেখাখেলাটা আর চলতো না।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
প্রশ্নগুলো সুপার।
শেষের অনুচ্ছেদটি সবচেয়ে মারাত্মক। ইশ! এতবার জন্ম নিতে অনেক কষ্ট হত।
এই জনমের দুই অর্ধেকও তো বৃথাই গেল
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
দারুন! এতো ভাবার টাইম কই পান? বিষয়গুলো আসলেই চমৎকার!
এগুলো তো পুরান ভাবনা, নতুন করে লিখলাম মাত্র
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
রবি বুড়ো এইসব হাতেকলমে লিখেছেন মনে করেন? আমার মত অনেকদের এক জীবন চলে যাচ্ছে তাঁর লেখাগুলো যোগার করতেই, পড়ে শেষ করা তো দূরের কথা। তাঁর লেখার জন্য ভিনগ্রহের বন্ধুদের দেয়া কম্পিউটার আর বাংলা লেখার সফটয়্যার ছিলো নিশ্চয়ই।
রবিবুড়ো মনে হয় হাত পা চারখান দিয়েই লিখে গেছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
রবিবুড়া মোট যে পরিমাণ লিখেছে সেটার আকৃতি (হাতে লেখায়) দেখলে যে কেউ চিন্তিত হয়ে পড়বে। একাশি বছরের জীবনে এই বিপুল পরিমাণ লেখা কীভাবে সম্ভব! তাও আবার মান নিয়ে কোন সন্দেহই নেই!! টলস্টয়বুড়া বেঁচেছে বিরাশি বছর, আর যা লিখেছে তা নাকি পরিমাণে রবিবুড়ার দ্বিগুণেরও বেশি। বুঝতে পারি না - ক্যাম্নে কী!!!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
খাইছে টলষ্টয় তারো দ্বিগুন লিখছে!! জন্মের আগ থেকেই লেখালেখি চালু করছে নাকি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
তাই তো!
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আমি নিশ্চিত রবিটলস্টয়রা কোনো গোপন কোড আবিষ্কার করছিলো
মুখ দিয়া কইলেই লেখা হয়ে যাইতো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দলছুটও সেরাম কোন কোডের সন্ধান পাইছে মনে হয়
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
সেটাই, বড় বাঁচা বেঁচে গেছি।
নিয়ে বাঁচেন
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
দারুণ হয়েছে লেখাটা।
রবিবাবুর লেখা পড়তেই যদি সত্তর জনম লাগে তাহলে আপনাদের লেখা কখন, কিভাবে ?
বুড়ো একা যা লিখতে তা পড়ে হজম করতে করতে বাকীদের লেখা ভুলে যেতে হয়
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
প্রশ্নোত্তরতো মারহাবা, আর উপলব্ধি - জোশ।
রবি বুড়োর লেখালেখি কবে পড়ে শেষ করব, ভাবতেই মনটা উদাস হয়ে যায়। বাই দ্য ওয়ে দলছুট আজকাল আছে কোন্ঠে !
ডাকঘর | ছবিঘর
রবিবুড়োর সবটা পড়ার চিন্তা বাদ দেন। সবটা পড়তে গেলে জীবনে আর কিছু করা হবে না।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
প্রশ্ন এবং জবাবগুলো আমার মনমত হয়নি! কিন্তু বিস্তারিত বলার জন্য লগ-ইন করে ভাবলাম, সেটা সম্ভবত এই লেখার আলোচ্য বিষয় নয়!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বিস্তারিত বললে ভালো লাগতো। এই পোষ্টে মডুদেরও আলোচনার অধিকার আছে;)
বিশেষ করে প্রথম প্রশ্নটির ব্যাপারে কিছু বলার থাকলে সবচেয়ে বেশী আনন্দিত হবো। ওই প্রশ্নটা বুড়ো বয়সেও কাছ ছাড়া হচ্ছে না
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এইটা আসলে সিরিয়াস বিজ্ঞান পোস্ট ধরনের কিছু না। সেই হিসেবে আমার এই মন্তব্য বেশ অপ্রয়োজনীয়-খাপছাড়া হতে পারে। খানিকটা আঁতলামির মতও লাগতে পারে। সবচে বড় কথা আমি জ্ঞানী টাইপের কেউ নই। মুর্খ বলেই খানিকটা বকবক করলাম। সবকিছুর জন্যে জন্য দুঃখপ্রকাশ করে রাখছি প্রথমেই।
সেটা সবক্ষেত্রে শেষপর্যন্ত সত্যি না হতেও পারে।
পেছনে ব্যাখ্যা না থাকলে এই প্রশ্নটাকে একটা বিশেষ গোত্রভুক্ত করতে আগ্রহী আমি। এই প্রশ্নটি করার আগে অন্য একটি প্রশ্ন ভেবে দেখতে বলি, "সবকিছু এরকম না ঘুরে কী করলে ভালো হত"? অথবা আরো স্পষ্ট ভাবে, কী করলে "ঠিক" হত?
প্রকৃতিতে কোনকিছু ঘুরছে, অথবা স্থির আছে, অথবা লাফাচ্ছে কারণ সেটাই যুক্তিসঙ্গত। আপনি যদি সেই 'যুক্তি'টি কী তা জানতে চান তাহলে জবাব অন্যরকম হতে পারে!
প্রকৃতি কিন্তু চিন্তাশীল কিছু নয়! প্রকৃতির কোন ঘটনার 'ভবিষ্যত উদ্দেশ্য' নয়, বরং 'পেছনের কারণ' থাকবে। "ভবিষ্যতে কী হবে বলে বর্তমানে এরকম হচ্ছে?", প্রকৃতির জন্য এটি কোন সঙ্গত প্রশ্ন নয়। সঙ্গত প্রশ্নটি হতে পারে এরকম, "অতীতে কী হয়েছে যার জন্য বর্তমানে এরকম হচ্ছে?" অথবা জিজ্ঞাসা করতে পারেন, "বর্তমানে যে এরকম হচ্ছে, এর প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে কী ঘটবে?"
না কোন উদ্দেশ্য নেই। আগেই যেরকম বললাম। পেছনের কারণ আছে। 'উদ্দেশ্য' শব্দটি বদলে 'ভবিষ্যত' বললে বরং মেনে নেব। এই মহাযজ্ঞের 'ভবিষ্যত' আছে নিশ্চয়ই কিন্তু সেটা কোন 'উদ্দেশ্য' নয়।
এই অংশটি সম্ভবত পুরোপুরি 'দর্শন' টাইপের কিছু একটা। আমার মন্তব্য না করাই ভালো হবে
২ নং প্রশ্নে টলেমির ব্যপারটি আমি নিজে পড়িনি/শুনিনি তাই স্পষ্ট ব্যাখ্যা করতে পারছি না। কিন্তু আমার মনে হয়না টলেমি বলতে চেয়েছিলেন চাঁদ সূর্যের আকার কখনো বদলে যায়। সবার বক্তব্যই এক, আকার ভিন্ন 'দেখায়'। এখন এরকম ভিন্ন আকার দেখতে পাওয়ার পেছনের কারণ কী সেটা নিয়ে টলেমির বক্তব্য ভুল হতে পারে, আমার জানা নেই।
৩ নং প্রশ্নটির ক্ষেত্রে মনে হয় একটু ঘোলাটে ব্যাখ্যা হয়ে গেল। আমার ব্যাখ্যাটি এরকম,
পা ফেলে চলাটাই সব নয়। এই প্রক্রিয়াটির জন্য মস্তিস্ককে নানা রকম হিসেব করতে হয়। সে হিসেব করতে চায় কোথায় পা ফেললে কতটুকু বিপদের সম্ভাবনা। কোথায় পা ফেলা কতটুকু নিরাপদ। এই জটিল হিসেবটিকে এইখানে আলোচনার সুবিধার্থে 'বিবেচনা' বলছি। বিবেচনার জন্য মস্তিস্ক চোখের সাহায্য নেয়। আপনি যদি জানেন যে একটি ঘরের মেঝেতে নরম কার্পেট পাতা, কোন বিপদ নেই, তাহলে সেখানে দিব্যি চোখ বন্ধ করে লাফিয়ে বেড়াতে পারবেন। কিন্তু যদি আপনাকে জানানো হয় যে সারা ঘরেই নরম কার্পেটের নিচে আসলে লুকোন কাঁটা ছড়ানো তাহলে চোখ খুলে রেখেও আপনি কোথায় পা ফেলবেন সেটি নিয়ে দ্বিধায় পড়বেন। নদীর উপর বিছানো টাইলসে অথবা নিচে কাঁটা ছড়ানো কার্পেটের উপর, সবক্ষেত্রেই আপনি কীভাবে হাঁটবেন সেটির নির্ভর করে আপনার 'বিবেচনা'র উপর। এই বিবেচনাটি আবার নির্ভর করে দুটি বিষয়ের উপর, কোথায় কতটা কম বিপদের সম্ভাবনা অথবা কতটা বেশী পুরস্কারের সুযোগ।
চোখ বিবেচনার এই প্রক্রিয়ার সহযোগী, কিন্তু কাজটি করে আপনার মস্তিস্ক!
আপনি পা দিয়ে না হেঁটে যদি গাড়িতে চলেন সেখানেও আপনার চলনের প্রকৃতি ঠিক করে দেয় আপনার 'বিবেচনা'। আপনার বিবেচনার জন্য আপনার চোখই যে সবটুকু দায়ী তা কিন্তু নয়। আরো অনেক কিছু এর পেছনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। বনের ভেতর সব স্পষ্ট দেখছেন কিন্তু যদি আগে থেকে জেনে থাকেন ওই বন শ্বাপদসংকুল তাহলে আপনার চলন বদলে যাবে। যদি বিমান চালান তখন আপনার বিবেচনায় বিরাট ভূমিকা রাখবে নানারকম আধুনিক যন্ত্রপাতির হিসেব, ইত্যাদি
প্রসঙ্গত, এই লেখাটি খানিকটা ব্লগরব্লগর টাইপের কাব্যিক লেখা ছিল কিনা জানিনা! ধেনো হাঁটে ওল নামিয়ে থাকলে দুঃখপ্রকাশ করছি!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এই তো আপনাকেই খুঁজছিলাম আমি। তবে এই প্রশ্নগুলো নিয়ে মুখোমুখি বিতর্ক করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হতো। দার্শনিক প্রশ্নের বিজ্ঞানসম্মত উত্তর দিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বিতর্কগুলো হয়। দাঁড়ান কিছু কাজ সেরে তারপর আপনার জন্য জবাব নিয়ে আসছি।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
এবার বিস্তারিত জবাবে আসলাম-
১ নম্বর অংশে
শেষপর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাড়ায় এখনো বলা যায় না। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত বিজ্ঞানে ঘুরন্তিস কিন্তু একটা মৌলিক বস্তু আচরন। সেটা গ্রহ উপগ্রহ নক্ষত্র বলুন আর অনুপরমানু বলুন। এখানে উদ্দেশ্য বলতে আসলে কারণকে বুঝিয়েছি। ইনপুট ছাড়া কোথাও কোন আউটপুট হয় না। সেই ইনপুট কি বিং ব্যাং? এক ধাক্কাতেই জগতের সবকিছু সুশৃংখল ভাবে ঘুরতে শুরু করেছে? মহাজাগতিক ব্যাপারগুলোর মধ্যে সুক্ষ্ণাতিসুক্ষ্ণ ব্যাপারেও কিন্তু দারুণ নিয়ম শৃংখলা। সেটাই সবচেয়ে বিস্ময়কর।
২ নম্বর অংশটি পড়াশোনা না করেও খালি চোখে চাঁদ সূর্যের সাইজের পরিবর্তন আপনি দেখতে পারেন। দেখে বলুন আপনার কি মনে হয় সাইজ পরিবর্তনটা একটা অপটিক্যাল ইল্যুশন? আমার মনে হয়নি। তাই আধুনিক বিজ্ঞানীদের সাথে একমত নই।
৩ নম্বর প্রশ্নে, আপনার কথা সঠিক। আমি চোখের কথাই বলেছি, তবে চোখের নিয়ন্ত্রক তো মগজই। আসলে মগজের নিয়ন্ত্রনটাই আসল। কিন্তু চোখটা মগজের হয়ে কাজটা করে দেয়, তাই চোখের কথাই বলেছি।
এই ইস্যুগুলোতে ত্যানা পেচানীর বিরাট সুযোগ থাকলেও আজকে আমার দিন খারাপ পড়েছে একটু, তাই বেশী প্যাচালইলাম না।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
উপলব্ধি ভালো পেলাম। কেমন আছেন ভাই?
ধন্যাপাতা তানিম ভাই, ভালো আছি আমি। আপনার লেখাটা চরম মুগ্ধ করলো
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আপনার কলম বিষয়ক উপলব্ধি দুর্দান্ত! আমিও ভাবছিলাম আমার যে কি হতো এই আবিস্কার না হলে
বাকিগুলো নিয়ে আমার মতোন মুর্খের মাতব্বরি না করাই ভালো
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মায়ার নেশা কাটাতেই এ তীব্র অস্থিরতা
তবু, মায়ার পাহাড়েই আমার নিত্য বসবাস।
এই আবিষ্কারটা হবার পরেই তো বিধাতা আপনাকে দুনিয়াতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
নতুন মন্তব্য করুন