আমাদের সেই প্রীতিলতা

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: সোম, ২৪/০৯/২০১২ - ১২:৪৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১৯২৩ সালের ডিসেম্বরের এক পড়ন্ত বিকেল। রেনুদের বাড়ি থেকে আসকারদীঘির পাড়ের নিজেদের বাসায় ফিরছিল রানী। বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হলো কদিন আগে। রেনু আজ ওদের বাসায় থাকবে। হঠাৎ রাস্তায় হৈ চৈ দেখে ওরা থমকে দাঁড়ালো। রানী শক্ত করে ধরলো রেনুর হাতটা।

একটা গরুর গাড়ি আসছে কাতালগঞ্জের দিক থেকে। ওটাকে ঘিরেই হৈ চৈ। খাকী পোষাকের পুলিশ ঘিরে রেখেছে গাড়িটা। গাড়িতে বিধ্বস্ত চেহারার দুজন লোক বসা। গাড়িটা পাশ দিয়ে যাবার সময় ছইয়ে নীচে বসা চাদর পরিহিত একজনকে দেখে রানীর বুকের ভেতরটা কেমন কেঁপে উঠলো। অচেনা এক মানুষ তবু কেমন অদ্ভুত এক শিহরণ জাগলো।

লোক দুটো নাকি ডাকাত। রানী কখনো ডাকাত দেখেনি। না দেখলেও আন্দাজ করার ক্ষমতা আছে তার। ডাকাতের চেহারা শরীর এমন নিরীহ শুটকো হয় কি করে? কিছুতে হিসেব মেলাতে পারে না রানী। এই ডাকাত দল রেলওয়ের ১৭ হাজার টাকা ডাকাতি করেছিল কদিন আগে। ঘটনাটা খুব হুলস্থুল ফেলে দিয়েছে শহরে। এত বড় ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। ডাকাত দলের দুজনকে আজ নাগরখানা পাহাড় থেকে রীতিমত যুদ্ধ করে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রানীর মাথায় অনেকদিন গেঁথে ছিল গরুর গাড়ির দৃশ্যটা। কিন্তু সে কি জানতো গরুর গাড়িতে বসা চাদর পরা মানুষটির হাতে তার ভবিষ্যতের সুতো ধরা আছে? ডাকাত দলের দুজনের একজন হলো ন্যাশনাল হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মাষ্টারদা সূর্যসেন, অন্যজন কাস্টমস অফিসের কর্মচারী অম্বিকা চক্রবর্তী।

রানীকে চিনতে পারছেন? খাস্তগীর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ওরফে রানীকে চট্টগ্রাম বাসীও তখন চিনতো না। কিন্তু এই রানীকে সমগ্র ভারতবাসী চিনেছিল তার নয় বছর পর ২৪শে সেপ্টেম্বর ১৯৩২ সালে। সে তখন টগবগে বিপ্লবী তরুণী। মাষ্টারদা সূর্যসেনের অন্যতম সহযোগী। এই তরুণী ২৩শে সেপ্টেম্বর ১৯৩২ সালের রাত পৌনে এগারোটার সময় চট্টগ্রামের ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমন করার পর আহত অবস্থায় পটাসিয়াম সায়নাইড খেয়ে আত্মাহুতি দিয়ে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার অন্যতম এক মাইলফলক স্থাপন করেছিল মাত্র একুশ বছর বয়সে।

মৃত্যুর পর লাশের সাথে পাওয়া স্বহস্তে লিখিত চিঠিতে ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে বলেছিল-

“আমি বিধিপূর্ব ঘোষণা করতেছি যেই প্রতিষ্ঠানের উচ্চ আদর্শে অনুপ্রাণিত হইয়া অত্যাচারীর স্বার্থসাধনে প্রয়োগকারী সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদ সাধন করিয়া আমার মাতৃভূমি ভারতবর্ষে গণতান্ত্রিক শাসন প্রবর্তন করিতে ইচ্ছুক আমি সেই ভারতীয় রিপাবলিকান আর্মির চট্টগ্রাম শাখার একজন সদস্যা।

এই বিখ্যাত চট্টগ্রাম দেশের যুবকদের দেশের যুবকদের দেশপ্রেমকে নব-চেতনায় উদ্বুদ্ধ করিয়াছে। স্মরণীয় ১৯৩০ এর ১৮ এপ্রিল এবং উহার পরবর্তী পবিত্র জালালাবাদ ও পরে কালারপোল, ফেনী, ঢাকা, কুমিল্লা, চন্দননগর ও ধলঘাটের বীরোচিত কার্যসমূহ ভারতীয় মুক্তিকামী বিদ্রোহীদের মনে এক নতুন প্রেরণা জাগাইয়া তুলিয়াছে।

আমি এইরূপ গৌরবমণ্ডিত একটি সংঘের সদস্যা হইতে পারিয়া নিজেকে সৌভাগ্যবতি অনুভব করিতেছি।

আমার দেশের মুক্তির জন্য এই সশস্ত্র যুদ্ধ করিতেছি। অদ্যকার পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমন স্বাধীনতা যুদ্ধের একটা অংশ।

ব্রিটিশ জোরপূর্বক স্বাধীনতা ছিনাইয়া লইয়াছে। ভারতে কোটি কোটি নরনারীর রক্ত শোষন করিয়া তাহারা দেশে নিদারুণ দূর্দশার সৃষ্টি করিয়াছে। তাহারাই আমাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ধ্বংসের এবং সকল অধঃপতনের একমাত্র কারণ। সুতরাং তাহারাই আমাদের একমাত্র শত্রু। স্বাধীনতা লাভ করার পথে তাহারাই আমাদের একমাত্র অন্তরায়। যদিও মানুষের জীবন সংহার করা অন্যায়, তবু বাধ্য হইয়া বড় বড় সরকারী কর্মচারী ও ইংরেজের জীবন সংহার করিতে আমরা অস্ত্র ধারণ করিয়াছি। মুক্তিপথের যে কোন বাধা বা অন্তরায় যে কোন উপায়ে দূর করার জন্য আমরা সংগ্রাম করিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ..................“
..............................................................

আজ সেই বিশেষ দিনে মাষ্টারদা সূর্যসেনের অস্ত্রাগার লুন্ঠনের অন্যতম জীবিত সহযোগী বিনোদবিহারী প্রীতিলতাকে স্মরণ করেছেন চট্টগ্রামের দৈনিক পত্রিকা আজাদীতে-

রানী এই মেয়েটির ডাক নাম। এই রানীর নাম উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে আমার মনে একটি কবিতা জেগে উঠে।

ধনে ধান্যে পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা
সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি।

ছোটবেলায় এই কবিতাটি পড়েছিলাম যেখানে আমার জন্মভূমিকে রানী বলে কবি আখ্যায়িত করেছিলেন। রানী ছিল সৌন্দর্যের প্রতীক। আমি যে রানীর কথা বলতে চলেছি তিনিও নানাগুণে বিভাসিতা একজন রানীর মতোই। বহুবছর পরে জেলে থেকে বেরিয়ে এসে এই রানী সম্বন্ধে তার দাদা বিপ্লবী পূর্ণেন্দু দস্তিদার থেকে অনেক দুঃসাহসী খবর পাই এবং আরো জানতে পারি রানীর গায়ের রঙ ছিল কালো। চেহারাতো তেমন কোন অপরূপ সৌন্দর্য ছিল না। একটা প্রবাদ আছে, কানা ছেলের নাম লোকে পদ্মলোচন রাখে। এই কালো মেয়েটির নামও মা-বাবা রানী রেখেছে। সচেতন ব্যক্তিমাত্রই তাদের প্রিয় জন্মভূমিকে স্বর্গাদপী গরিয়সী মনে করেন। শুধু তাই নয়, অন্যান্য সকল দেশ থেকে নিজের জন্মভূমিকে “অপরূপ সৌন্দর্য সুষমায় পরিপূর্ণ এবং নানাগুণে বিভোষিতা” মনে করে সবার শ্রেষ্ঠ বা রানী নামে অভিহিত করেন। কিন্তু এই রানী আর কেউ নন। তিনি অগ্নিকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। তার জন্ম পটিয়া থানার ডেঙ্গাপাড়া নামক একটি ছোট্ট গ্রামে। এই গ্রামটি ঐ থানারই ধলঘাট নামক গ্রামের পার্শ্ববর্তী গ্রাম। প্রীতিলতার বাবা জগৎবন্ধু সেন এবং মাতা প্রতিভা দেবী ডেঙ্গাপাড়া গ্রাম ছেড়ে শ্বশুরের ভিটে ধলঘাটে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেন। পরে কার্যোপলক্ষে চট্টগ্রাম পৌরসভার হিসাবরক্ষক পদে নিযুক্ত থাকায় তিনি চট্টগ্রাম শহরের আসকারদিঘির দক্ষিণপূর্ব কোণার একটি মাটির দেয়াল দেওয়া ঘরে সপরিবারে বাস করতেন।

চট্টগ্রামের একমাত্র মেয়েদের হাই স্কুল অন্নদা খাস্তগীর নামের বিদ্যালয় থেকে প্রীতিলতা ওরফে রানী মেট্রিকুলেশন পাস করেন। শৈশবে তার জ্ঞাতি ভ্রাতা পূর্ণেন্দু দস্তিদারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। পূর্ণেন্দু বাবুর দেওয়া কিছু বইও প্রীতিলতা পড়েছিলেন এবং দেশ সেবায় প্রেরণা লাভ করেন। আইএ পড়ার জন্য প্রীতিলতাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয় এবং তিনি ইডেন কলেজে ভর্তি হন। সেখানে লীলা নাগের নেতৃত্বে গঠিত দিপালী সংঘের সদস্য হন তিনি। ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ এই আদর্শ সামনে রেখে তিনি দুইবছর পরে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় ইডেন কলেজ হতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মেয়েদের মধ্যে প্রথম এবং ছেলেমেয়ে উভয়ের মধ্যে পঞ্চম স্থান অধিকার করে তার উৎকৃষ্ট মেধার পরিচয় দেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো একজনের আই এ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। ধীর স্থির বুদ্ধিমতী এবং অপূর্ব মেধার অধিকারী প্রীতিলতা দুর্লভ এ স্থান লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। মা-বাবার আনন্দের সীমা ছিল না। তাদের মেয়ে প্রীতিলতা রানীর যোগ্যতা অর্জন করেছে। তাকে অনার্সসহ বি.এ পড়ার জন্য বেথুন কলেজে ভর্তি করানো হয়। এই সময় ১৯৩০ সালের ১৮ই এপ্রিল মহানায়ক মাস্টার দা সূর্যসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে যুব বিদ্রোহ সংঘটিত হয় এবং চট্টগ্রামকে চারদিনের জন্য বিপ্লবীরা স্বাধীন করে রাখেন। ২২শে এপ্রিল চট্টগ্রামের উত্তর সীমান্তে জালালাবাদ পাহাড়ে বিপ্লবীদের সাথে ইংরেজ সৈন্যের সম্মুখযুদ্ধ হয়। শেষে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ব্রিটিশ বাহিনীর প্রায় দুই ঘণ্টা যুদ্ধের পর যুদ্ধক্ষেত্র পরিত্যাগ করে পালায়। সেই এক লোমহর্ষক অসীম সাহসিকতাপূর্ণ বিপ্লবীদের প্রথম সম্মুখযুদ্ধ।

এই ঘটনা খবরের কাগজে প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রীতিলতা চট্টগ্রামের বিপ্লবীদের অসম সাহসিক কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হন এবং বিপ্লবীদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। কোনো মেয়ে বিপ্লবী দলে আছে এমন কারো সাথে তার পরিচয় ছিল না। পুরুষদের মধ্যে আপন মাসতুতো ভাই পূর্ণেন্দু দস্তিদার গ্রেপ্তার হয়েছেন। অতঃপর চট্টগ্রাম এসে মাস্টারদার সঙ্গে ও অন্যান্য বিপ্লবীদের কাজে সাহায্যের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ঐ বছরই ইন্সপেক্টর জেনারেল ক্রেইজকে কলকাতা যাবার পথে চাঁদপুরে হত্যা করার জন্য মাস্টার দা, রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ও কালিপদ চক্রবর্তীকে চাঁদপুর পাঠান। দুর্ভাগ্যবশতঃ ভুলে ক্রেইজের এডিকং ইন্সপেক্টর তারিনা মুখার্জী নিহত হন। এতে রামকৃষ্ণের ফাঁসি এবং কালিপদ চক্রবর্তীর যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। এই সময়ে ফাঁসির আসামি রামকৃষ্ণ বিশ্বাস আলীপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি ছিলেন। প্রীতিলতা জানতে পেরেছিলেন মনোরমা রায় নামে তার এক মাসিমা তার আত্মীয় অন্য এক ফাঁসির আসামি দীনেশ মজুমদারের সঙ্গে দেখা করার জন্য মাঝে মাঝে আলীপুর সেন্ট্রাল জেলে যান। আত্মীয় ছাড়া অন্য কাউকেও জেলে গিয়ে ফাঁসির আসামির সঙ্গে দেখা করা নিষিদ্ধ এই কথা জেনেও প্রীতিলতা, রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের দূর সম্পর্কীয় আত্মীয় হয় এই মিথ্যা পরিচয় দিয়ে আলীপুর জেলারের কাছে আবেদন পাঠান। সৌভাগ্যবশতঃ আবেদনটি গৃহীত হয় এবং রামকৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করার জন্য প্রীতিলতা অনুমতি পান। এর পূর্বে রামকৃষ্ণের মা, বাবা, দাদা-দিদি কিংবা অন্য কোন আত্মীয় রামকৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি প্রার্থনা করেন নি। তাই অনুমান করা হয় প্রীতিলতা করুণাবশতঃ সাক্ষাতের অনুমতি লাভ করেছিল।

বিশেষত জেলার ছিলেন একজন আয়ারল্যান্ডের অধিবাসী। যদি দরখাস্ত পরীক্ষা করে প্রীতিলতা যে রামকৃষ্ণের আত্মীয় নন এই সত্য ঘটনাটি পুলিশ বা জেল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে তবে নিশ্চয়ই প্রীতিলতার ওপর নির্যাতন ও শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হত। তা জেনেও দুর্জয় সাহসের ওপর ভর করে প্রীতিলতা ফাঁসির আসামির সাথে দেখা করার আবেদন করেন। অথচ সে তাকে কোনো দিন দেখেও নাই শুধু খবরের কাগজে নাম পড়েছিল এবং কৌতূহল নিয়ে মৃত্যুর অপেক্ষারত বিপ্লবীকে দেখার জন্য প্রলুব্ধ হয়েছিল। এটা একটা দুঃসাহস বটে।

দেখতে দেখতে বিএ পরীক্ষার তারিখ এসে গেল। আশা ছেড়ে দিয়ে যেকোনো ভাবে বিএ পাস করে চট্টগ্রামে মা-বাবার কাছে ফিরে আসার জন্য পরীক্ষা দিতে মনস্থির করল এবং ডিস্টিংশনে বিএ পাস করে চট্টগ্রামে ফিরে আসল। তখনও অপর্ণাচরণ গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। গোলাপ সিংহ লেনের পশ্চিম দক্ষিণ প্রবেশ পথে যে খালি জায়গাটা ছিল স্থানীয় জনসাধারণের উদ্যোগে সেখানে একটি বেসরকারি মেয়েদের স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন পর্যন্ত এই স্কুলে ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়ানো হত। প্রীতিলতা এই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকার পদে যোগদান করেন এবং ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণের দায়িত্ব পাওয়া পর্যন্ত ঐ বেসরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে কার্যে নিযুক্ত ছিলেন। পরে এই স্কুল বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত জায়গায় স্থানান্তরিত হয় এবং অপর্ণাচরণ নামক সীতাকুণ্ডের এক পণ্ডিত লোকের কাছ থেকে কয়েক সহস্র টাকার বিনিময়ে জমি ক্রয় করার কারণে তাঁর নামানুসারে স্কুলটি নামকরণে কর্তৃপক্ষ রাজি হন। তাঁর নামানুসারে এখনও অপর্ণাচরণ বালিকা বিদ্যালয় সগৌরবে চট্টগ্রামের নন্দনকাননে সুপ্রতিষ্ঠিত আছে। এই সময়ে একদিন প্রীতিলতার সঙ্গে মাস্টারদা ও নির্মলদার দেখা করার দিন স্থির হয়। সে সময়ে প্রীতিলতা তার এক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যাবেন এই কথা মা বাবাকে বলে ধলঘাট গ্রামে সাবিত্রী দেবীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশতঃ ঐ বাড়িটি পুলিশ সন্দেহবশতঃ ঘেরাও করেছিল এবং গভীর রাত্রে পুলিশ বেস্টনি দিয়ে বাড়িটিকে ঘিরে বাড়ির দোতলার (মাটির কৌটা) ক্যাপ্টেন ক্যামরেনের নেতৃত্বে মাস্টারদা সহ বিপ্লবী দলকে ধরার জন্য অগ্রসর হচ্ছিল তখন সিঁড়ির মুখে পাহারাদার বিপ্লবী নেতা নির্মল সেনের গুলির আঘাতে ক্যাপ্টেন ক্যামরেন নিহত হন। সঙ্গে সঙ্গে ক্যামরেনের সঙ্গীরা এই বিপ্লবী নেতাকেও গুলি করে হত্যা করে। এই সময়ে সাময়িক বিশৃঙ্খলার মধ্যে মাস্টারদা, প্রীতিলতা ও অন্য এক বিপ্লবী ভোলা সেনকে নিয়ে বাড়ির পেছন দিকে এক গড়ায়ের (ছোট পুকুর) মধ্যে কচুরিপানাতে লুকিয়ে থাকেন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, গড়ায়টিতে নামার পূর্বে শুকনো পাতার মর্মর শব্দ শুনে গুর্খা সৈন্যের গুলিতে ভোলা সেন মৃত্যুবরণ করেন। ঘণ্টা দুই তল্লাশির পর সাবিত্রী দেবী ও তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করে দুইটি মৃতদেহ সহ পুলিশ নিজেদের ক্যাম্পে চলে গেলে মাস্টার দা প্রীতিলতাসহ জ্যৈষ্ঠপুরার অন্য একটি আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে ভোররাত্রে উপস্থিত হন এবং প্রীতিলতাকে শহরে চলে গিয়ে স্কুলে হাজির থাকার নির্দেশ দেন যাতে পুলিশ অনুমান করতে না পারেন যে প্রীতিলতা ধলঘাট গ্রামে সাবিত্রী দেবীর বাড়িতে ছিলেন। এই ঘটনার পর প্রীতিলতা কোনো দুরূহ বিপ্লবী কাজে অংশ নিয়ে মৃত্যুবরণের আকাঙক্ষার কথা জানান মাস্টারদাকে। মাস্টারদাও মনে মনে একজন বিপ্লবীকে মৃত্যু পথযাত্রী করতে চেয়েছিলেন যাতে নারী সমাজ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয় এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেয়। তাই অনেক বিপ্লবী যুবক এবং নেতা থাকা সত্ত্বেও সেই জালিয়ানবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিপ্লবী মহানায়ক মাস্টার দা প্রীতিলতাকে মনোনীত করেন। ১৯৩০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রীতিলতা ও তার সহযোগীরা ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করেন এবং আক্রমণে সফলতা লাভ করেন। এতে মাস্টারদার দীর্ঘদিনের প্রতিশোধ নেওয়ার আকাঙক্ষা বাস্তবে পরিণত হয়। কিন্তু প্রীতিলতার সাতজন বিপ্লবী বন্ধু যারা ক্লাব আক্রমণে অংশ নিয়েছিল তাদের পালাতে আদেশ দিয়ে নিজে ক্লাবের কাছাকাছি একটি স্থানে বসে ধীর স্থির চিত্তে পটাশিয়াম সায়ানেট খেয়ে বীরত্বের সঙ্গে আত্মাহুতি দেন। এই সেই রানী। এই সেই জগৎবন্ধু সেন ও প্রতিভাদেবীর আদুরে কন্যা রানী বা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। এমন দুঃসাহসিক দেশপ্রেমিক নারী ছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার।

এভাবে স্বেচ্ছায় নিজের জীবনকে দেশের জন্য উৎসর্গ করার কথা ভাবতে পারে তেমন অসমসাহসী নারী এক শতকে কয়জন জন্ম নেয় একটা দেশে? যে শহরে প্রীতিলতা বড় হয়েছে, সে শহর এখন অনেক বড় হয়েছে, যে রাস্তায় প্রীতিলতা হেঁটেছে, সেই রাস্তা এখন মহাসড়ক হয়েছে, প্রায় একটা শতক চলে যাচ্ছে, তবু প্রীতিলতা আমাদের বুকের গভীরে অনুপ্রেরণা যোগায় প্রতিনিয়ত। যে কোন অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার সাহস যোগায়। আজকে দিনটায় খুব মনে পড়ে যায় চট্টগ্রামের চিরতরুণী রাণীকে, আমাদের গর্ব প্রীতিলতাকে।

=========================================================================

তথ্য সংশয়-১: প্রীতিলতার আত্মাহুতি দিবস নিয়ে দুরকমের তথ্য পাওয়া যায়। ২৩শে সেপ্টেম্বর ও ২৪শে সেপ্টেম্বর। হিসেব করে দেখলে ২৩ সেপ্টেম্বর রাতকেই অধিক যুক্তিযুক্ত মনে হয়।
তথ্য সংশয়-২: প্রীতিলতা মেট্রিকুলেশান পাশের সন নিয়েও দুরকমের তথ্য দেখা যাচ্ছে। ১৯২৭ ও ১৯২৮। বিনোদ বিহারী সহ বেশ কিছু সুত্রে ১৯২৮, আবার পূর্নেন্দু দস্তিদার ও কয়েকজনের সুত্রে ১৯২৭। এটি নিয়ে আরো অনুসন্ধানের অবকাশ রয়েছে বলে আমার ধারণা।

==========================================================================
আগ্রহীদের জন্য লিংক:
উইকিপিডিয়া

দৈনিক আজাদী
===========================================================================
পাঠসুত্র-
১। অগ্নিযুগের চট্টগ্রাম - কালীপদ চক্রবর্তী
২। চট্টগ্রাম বিদ্রোহের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও মূল্যায়ন- গনেশ ঘোষ
৩। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের নারী- আনোয়ারা আলম
৪। ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা শহীদ অগ্নিকন্যা প্রীতিলতা - বিনোদবিহারী চৌধুরী
৫। দেশের নারীদের প্রতি শেষ আবেদন - প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
৬। উইকিপিডিয়া ও বাংলাপিডিয়া
৭। চট্টগ্রাম বিদ্রোহের সংগঠন ও প্রস্তুতি - অনন্ত সিংহ


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গুড জব বস্‌! গোটা আলোচনায় কোথাও কল্পনা দত্তের নাম না আসায় একটু অবাক হয়েছি।

আইআরএ, চট্টগ্রাম বিদ্রোহ, সূর্যসেন, প্রীতিলতা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান, ঘটনা ও মানুষদেরকে স্বীকৃতি দিতে এই উপমহাদেশের ঐতিহাসিকদের মধ্যে একটা কুণ্ঠা কাজ করে। কংগ্রেস, মুসলিম লীগ, আজাদ হিন্দ ফৌজ, মূলধারার যুগান্তর-অনুশীলন দলের বাইরে স্বাধীনতাকামী চট্টলাবাসীরা যে সশস্ত্র যুদ্ধ করে চারদিন দেশের একটা অংশকে মুক্ত রাখতে পেরেছে এই সত্যটা স্বীকার করলে বাকীদের মর্যাদায় আঘাত লাগে বোধ করি। যারা নিজেদের গর্বের জায়গাটা বা নিজেদের বীরদেরকে চিনতে পারে না তারা হতভাগা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আসলে লেখাটার সাইজ বড় হয়ে গিয়েছিল বলে অনেক কিছু বাদ দিতে গিয়ে কল্পনার নাম বাদ গেছে। ২৩ সেপ্টেম্বরের আক্রমনের দায়িত্বে প্রথমে কল্পনা দত্তের কথাই ভাবা হয়েছিল। কিন্তু প্রস্তুতি চলাকালে কল্পনা ১৭ সেপ্টেম্বর পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় পাহাড়তলীতে। সেদিন পুলিশের কাছে মিথ্যে বলে কোনমতে ছাড়া পেলেও কড়া নজরদারীতে রাখা হয় তাকে, ফলে প্রীতিলতার ওই অপারেশানে যোগ দেয়া হয়নি তার। কিন্তু প্রীতিলতার আক্রমন ও আত্মাহুতির পর তার পরনেও কল্পনার মতো একই পোষাক দেখে কল্পনাকে আবারো সন্দেহ করে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তানিম এহসান এর ছবি

লেখাটা একটা শক্তি দিলো। এমন একটা দিনের স্বপ্ন দেখি যেদিন বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পারবে কাদের রক্ত তারা নিজ নিজ শরীরে ধারণ করে, তারপর হেঁটে যাবে দুর্জয়! আমরা মনে হয় পৃথিবীর প্রধান একটি জাতি যারা নিজেদের সঠিকভাবে চিনতে পারেনি এখনও।

পান্ডবদার কথাটাই আরেকবার বলতে চাই যারা নিজেদের গর্বের জায়গাটা বা নিজেদের বীরদেরকে চিনতে পারে না তারা হতভাগা।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আমরা আসলেই হতভাগা জাতি। নিজেদের শক্তি কখনোই দেখতে পাই না নিজেরা।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
নীড় সন্ধানী এর ছবি

ধন্যবাদ সবুজ পাহাড়ের রাজা!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

স্যাম এর ছবি

চলুক

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

শ্রদ্ধা

দেবা ভাই
-----------------------------------------
'দেবা ভাই' এর ব্লগ

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- দেবা ভাই

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আফরোজ এর ছবি

খুব ভালো লাগলো। প্রীতিলতার আত্মত্যাগ সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানলাম

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ধন্যবাদ আফরোজ আপনাকে

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

প্রীতিলতার প্রতি শ্রদ্ধা।
আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। (দিনটি মনে করিয়ে দেবার জন্য)

নীড় সন্ধানী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ প্রৌঢ় ভাবনা

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অরফিয়াস এর ছবি

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর গল্প আমাকে সবসময় মুগ্ধ করে। যতবার যত জায়্গায় পেয়েছি পড়ে দেখেছি। এরকম দুঃসাহসী মহিয়সী নারী যিনি নিজের জীবন তুচ্ছ করে উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রেখে গেছেন তিনি নমস্য।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এই এক নারী আরো অসংখ্য নারীর বুকে সাহসের মশাল জাগিয়ে গেছে

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কল্যাণ এর ছবি

চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- কল্যান!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

রংতুলি এর ছবি

স্যালুট প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ রংতুলি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

চলুক
প্রীতিলতা আমাদের চট্টগ্রামের গর্ব
অনেক ধন্যবাদ নীড় সন্ধানী

নীড় সন্ধানী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বাপ্পীহায়াত

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

তাঁকে এক রচনায় পেন্থিসিলিয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে। কতটুকু যথার্থ হলো, সে বিষয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তবে স্বদেশের তরে মুক্তির মন্দির সোপানতলে যারা প্রাণ বলিদান করেছেন, তাঁদের মহত্ব খুঁজে পেতে পুরাণ ঘাঁটা অপ্রয়োজনীয় বলেই জ্ঞান করি। মাটির মমতারসে শুদ্ধ হয়ে তারা তো রক্তজবার মতো নিত্যই প্রস্ফুটিত আমাদের চেতনার চত্ত্বরে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

অদিতি ফাল্গুনী পেন্থিসিলিয়ার সাথে তুলনা করেছেন দেখে অবাক হয়েছি আমিও। ব্যক্তিগতভাবে এই তুলনার কোন অর্থ খুঁজে পেলাম না। উদ্দেশ্য পটভূমি পরিণতি সব মিলিয়ে প্রীতিলতা আর পেন্থিসিলিয়ার অবস্থান সম্পূর্ন আলাদা।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ রোমেল ভাই!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তারেক অণু এর ছবি
নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কড়িকাঠুরে এর ছবি

শ্রদ্ধা

অতিথি লেখক এর ছবি

নিজেদের অতীতকে বারে বারে পিছে ফিরে দেখতে হবে, ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে আর শক্তি নিতে হবে এইসব মহান-মহীয়সিদের কাছ থেকে।

ধন্যবাদ নীড় সন্ধানীকে চমৎকার একটা লেখার জন্য।

আর ঘৃণা জানাই তাদের, যাদের প্রীতিলতার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের নাম করণ করতে গাত্রদাহ হয়, অথচ সেই হলেরই নামকরণ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বা পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নামে করতে তাদের উৎসাহের সীমা থাকেনা।

-অয়ন

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

শ্রদ্ধা

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।