শেখ মুজিব রোড ধরে গত ত্রিশ বছর আসা যাওয়া করছি কিন্তু এই দোকানটা কখনো চোখে পড়েনি।
যমুনা ভবনের পাশে একটা খালি জায়গা, তার পাশেই দোকানঘরটা। হ্যাঁ, দোকানঘরই। ঘর এবং দোকান দুটো মিলে টু-ইন-ওয়ান। শহরে এরকম দোকান দেখা যায় না। দোকানের পেছনে আবাসিক ব্যবস্থা। দোকানীর কাঁধের উপর দিয়ে উঁকি দিয়েও দেখা যায় পেছনের ঘরটিতে রয়েছে একটা চৌকি, তাতে বিছানা পাতা, চৌকির নীচে খানকতক ডেকচি, একটা স্টোভ, নানান সাইজের কিছু বৈয়াম ইত্যাদি সাংসারিক উপাদান। বোঝাই যাচ্ছে রাতের বেলা এখানে কেউ থাকে।
দোকানদারকে সিগারেট দিতে বলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম ভেতরটা। দিনের বেলায়ও কেমন ঘুটঘুটে অন্ধকার বাসা বেঁধে আছে দোকানটায়। প্রাচীন একটা গন্ধ ভেতরে। মালপাত্র তেমন কিছু নেই দোকানে। ক্ষয়ে যাওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কাঠের কালচে তাকগুলোয় কয়েকটা সস্তা বিস্কুটের প্যাকেট ভাঁজ করে রাখা, কয়েকটা চানাচুর চিপসের প্যাকেট ঝোলানো একপাশে। সামনে কাঁচের একটা সিগারেট শোকেস, তার উপর চকলেটের বৈয়াম। আর তেমন মূল্যবান কোন সামগ্রী নেই। দোকানের সাইজের চেয়ে মালপত্র বড়ই নগণ্য। এই দোকানের আশেপাশে কোন ঘরবাড়ি মার্কেট কিছুই নেই। যমুনা ভবনটা যেমন নিঃসঙ্গ, তেমনি দোকানটাও। আগ্রাবাদের এই জায়গার উল্টোদিকে বিশাল সব দালান, অফিস পাড়া কিন্তু এই পাশে কেমন ছমছমে নির্জনতা।
সেই নির্জনতাকে পাহারা দিয়ে বসে আছে এই দোকানী যার চেহারায় আবার দোকানের অন্ধকারত্বের বিন্দুমাত্র ছাপ নেই। মধ্যবিত্ত আভিজাত্যের ছাপ সেখানে। এই দোকানে এরকম মানুষ বেমানান। চেহারায় অন্ধকারত্বের ছাপ না থাকলেও কপালের যে ভাঁজ সেখানে কি একটা প্রশ্ন যেন ঝুলে আছে। আমাকে সিগারেট দেবার পর থেকে ওখানে প্রশ্নবোধক ভাঁজ লক্ষ্য করছি।
আমার গাড়ি আসতে দেরী হচ্ছে। সিগারেট শেষ হওয়া পর্যন্ত দোকানের ঝাঁপের নীচে দাড়িয়ে থাকবো বলে ঠিক করি। এখানে দাঁড়িয়ে কেমন যেন ভালো লাগা ভর করেছে হঠাৎ। এই দোকানটায় আগে কখনো আসিনি, তবু এখানে কেমন এক প্রাচীন নস্টালজিয়া ভর করেছে। যেন অনেক বছর আগে আমি ছিলাম এখানে কোথাও। আমার বাবা এককালে এদিকে কোথাও থাকতেন শুনেছি।
ঝিরঝির বৃষ্টি শুরু হলো হঠাৎ। আমি আরেকটু ভেতর ঘেঁষে দাঁড়াই। দোকানের টিনের চালে ঝমঝম শব্দটা ভালো লাগছিল মাটির সোঁদা গন্ধের সাথে।
আমি সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে দোকানীর মুখের দিকে তাকাই। কপালের সেই ভাঁজটা আরো সন্নিবদ্ধ হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্নটা কি? আমি সাইকোলজিস্ট নই, তবু আমার অনুমানকে সত্য প্রমাণ করে প্রশ্নটা অবশেষে লোকটার ঠোঁটের গোড়ায় এসে যায় -
-কেমন বুঝছেন?
প্রশ্নটা আমাকে করা। কিন্তু হঠাৎ করে এই প্রশ্ন কেন? কি বুঝছি বলতে চাইছেন? প্রশ্নটাই তো বুঝতে পারছি না। নাকি বুঝেও না বোঝার ভাণ করছি। ছোট্ট করে জিজ্ঞেস করি-
-কী?
লোকটাও তেমন সংক্ষেপে বললো
- অবস্থা?
কিসের অবস্থা? যদিও এবার আমি মনে হয় বুঝে ফেলেছি কিসের কথা ইঙ্গিত করছে লোকটা তবু কিছুক্ষণ বিরতি নিলাম জবাব দিতে। লোকটার মুখমণ্ডল দেখে আঁচ করার চেষ্টা করলাম কিরকম উত্তর দিলে সুবিধা হয়। আজকাল লোকজন প্রশ্ন করে পছন্দের উত্তর খোঁজে। বিশেষতঃ রাজনৈতিক প্রশ্ন। অবস্থা বোঝাতে আজকাল রাজনীতির হালচালই বোঝানো হয়। এই লোকও তাই কিনা বোঝার চেষ্টা করলাম। বুঝতে পারলাম না। অচেনা জায়গায় নিরপেক্ষতাই নিরাপদ। আধনিরপেক্ষ ভঙ্গিতে বললাম-
-এখনো চলছে, সামনে চলবে কিনা বুঝতে পারছি না।
-আমিও তাই ভাবছি, গতমাসে গ্রামে গিয়ে যা দেখে এলাম......
-আপনার গ্রাম কোথায়?
-নোয়াপাড়া
-ও
-আপনার?
-কদলপুর
-এবার বোধহয় আর পারা যাবে না।
-কি?
-এদেশে থাকা। পাকিস্তান আমল থেকে এ পর্যন্ত ছ'বার পুড়ছে?
-কি পুড়ছে?
-আমাদের বাড়ি
-কে পোড়ালো?
-আর কারা, ওই তারা, যারা আবার আসতেছে, এবার সাথে আছে হেফাজত হুজুরের দলও, আর রক্ষা নাই
এটুকু শুনে আমি চুপ করে গেলাম। কি বলবো বের করতে পারছি না। আমার মুখ দিয়ে কোন আশ্বাস বের হলো না। বলতে পারলাম না, ভয় নেই আমরা আছি, ওরা কিছু করতে পারবে না। আমার কল্পনার শিউরে ওঠা চোখ তখন রাউজানের নোয়াপাড়া। সাকা চৌধুরী জেল থেকে হাসতে হাসতে বের হয়ে তালিকা করছে তার বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দিতে গিয়েছিল কে কে।
ভদ্রলোক আমাকে নিশ্চুপ দেখে কি বুঝলেন জানি না। তবু তিনি নামোল্লেখ না করে গত পাঁচ দশকের সংক্ষিপ্ত উৎপীড়ন বর্ননা করতে লাগলেন। এই খাতে সাকা পরিবারের অবদান বিস্তৃত। এবার আর শেষ রক্ষা হবে না মাধববাবুদের। মানে এই ভদ্রলোকের।
কিন্তু আমাকে কেন বলছেন এসব। আমি কি করবো? হয়তো আমাকে বলা যায় বলে ভেবেছেন। কিন্তু আমিও যে ঝামেলা দেখে চুপচাপ কেটে পড়া লোক। শুনতে তাই অসহায় লাগলো। প্রসঙ্গ পাল্টাতে জিজ্ঞেস করলাম-
-আপনি এখানে কতদিন, মানে এই দোকান......
-এই তো ৫৩ বছর
এমনভাবে বললেন, যেন এই সেদিন। আর আমি আমার জন্মপূর্ব ইতিহাস ভ্রমণ করতে চলে গেলাম। এত বছর ধরে লোকটা এই দেশে এত অত্যাচার সহ্য করেও টিকে আছে। ছয়বার ঘর পুড়েছে, কিন্তু সপ্তমবারে আর ভরসা পাচ্ছে না। এই দোকানের যে চেহারা, সপ্তমবার অগ্নিদগ্ধ হলে আর বোধহয় টিকবে না। আমি মনে মনে ভদ্রলোকের সাথে একমত হলেও মুখে কিছু বললাম না।
ততক্ষণে গাড়ি চলে এসেছে আমার। আমি যেন হাঁপ ছাড়ার উপায় পেলাম। জলদি বললাম - আসি তবে। চোরের মতো মুখ নিয়ে গাড়িতে উঠে গেলাম।
কিছুদূর যাবার পর গাড়িতে চোখ বন্ধ করতে যেন ভদ্রলোকের অসহায় মুখটা আমাকে ব্যাঙ্গ করতে লাগলো। আমি চোখ বন্ধ করে দেখতে পারলাম দুই পাটি দাঁত হাসছে, আর ঝকঝকে উঠোনের একটা হলুদ বাড়ি আগুনের লেলিহান শিখায় কৃষ্ণবর্ন ধারণ করেছে।
আমি ড্রাইভারকে থামতে বলে গাড়ি থেকে নেমে গেলাম। একটা রিকশা নিয়ে ফিরতি পথ ধরলাম। বৃষ্টি তখনো ঝরছিল। খানিক ভিজে গেলেও দোকানঘরের সামনে নেমে এক দৌড়ে ঝাঁপির নীচে চলে গেলাম। ভদ্রলোকের মুখে কোন ভাবান্তর নেই। যেন জানতেন আমি ফিরবো। দোকানের দরোজাটা খুলে দিয়ে বললেন,
-ভেতরে আসেন দাদা, এই সময় আদা দিয়ে এক কাপ চা খেলে ভালো লাগবে
আমি চায়ের কাপ হাতে দোকানের ভেতরে পেতে রাখা মলিন তক্তোপোষে উঠে বসলাম। আমাদের আরো অনেক গল্প রয়ে গেছে। আমি সকল কাজকে ছুটি দিয়ে ওই দোকানের ৫৩ বছরের অন্ধকারের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে গেলাম একটা দিনের জন্য।
মন্তব্য
খুব ভাল লাগল গল্পটি।
গল্পটি সাবলীল ভাবে লেখা হলেও এর ভেতরে কি যেন এক আবেগি অনুভূতি লুকিয়ে আছে।
অনুভুতি দিয়েই তো লেখা
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
"এবার বোধহয় আর পারা যাবে না।
কি?
এ দেশে থাকা।।"
অনেকেই চলে গেছেন।এরাও চলে যাবে হয়ত। অন্য কোথাও। ঐ দেশে। শূন্য হয়ে যাবে।
কিন্তু আমি?
আমরা কোথায় যাবো? আমাদের তো অন্য কোথা, ঐ দেশ নেই।
সুতরাং,
এখনই সময়।
শাকিল অরিত
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
বাকি তুকু খুলে বলেন,্শুন্তে মন্চায়
বাকীটুকু লেখার মতো কাগজ-কলম-মগজ নেই, ওটা দীর্ঘশ্বাসের দীর্ঘ উপন্যাস
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
রাসিক রেজা নাহিয়েন
আপনারও?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আজকে গল্প হলেও, কালকেই তা হবে নগ্ন সত্য।
এই দেশে এমন হয়েই আসছে- ৯১ এর পরে এরশাদকে নিয়ে যা যা লেখা হইছিল তা এখনো আমার মনে আছে। এখন দেখেন- দুই দলের মুরুব্বি হইয়া গেছে!!
এইটা সব সম্ভবের দেশ। আবার, এই দেশেই- সারাদিন ভয়ে কেঁপে হলেও জন্মভূমির মাটি কাঁমড়ে পরে থাকে মাধববাবুরা।
মাটির মায়ার কাছে জীবন তুচ্ছ। আলগোছে লেখা আপনার- মনে হলো আমার সামনে বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে গল্পটা শোনালেন।
-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।
নগ্ন সত্যটা আর উপস্থিত না হউক
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এই আমি, আমার দেশ নিয়ে সবসময়ই বড্ড আশাবাদী। সেই আমিই এবার সন্দিহান।
লেখা ভাল লেগেছে। একটা গভীর অনুভূতির জন্ম দিয়েছে।
অনেক ধন্যবাদ প্রৌঢ় ভাবনা
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
প্রায় নির্ভার ভঙ্গীতে গভীর বেদনার আর মানবিকতার ছবি এঁকেছেন।
- একলহমা
আসলে সেই দৃশ্যমান বেদনার বিশাল অংশই ফোটাতে পারিনি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
তারপর কি কি গল্প হলো শোনাবেন না?
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
ওই গল্পগুলো ভিন্ন সময়ের জন্য রেখে দিয়েছি। কোন একসময় শোনাবো হয়তো
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
' আমাদের আরো অনেক গল্প রয়ে গেছে। আমি সকল কাজকে ছুটি দিয়ে ওই দোকানের ৫৩ বছরের অন্ধকারের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে গেলাম একটা দিনের জন্য।'
আমারো অনেক গল্প জমা । কিন্তু ছুটি পাই না ।।।
সালাম , ভাইয়া ।
আফরিন আহমেদ
না লিখে পাঠকের প্রতি অবিচার করছো। ফাঁকে ফাঁকে লিখতে শুরু করো।
ডাক্তারদের কখনোই ছুটি মেলে না, ছুটি চিবি দিয়ে বের করতে হয় তাদের ।
ভালো আছো আশা করি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
'ধরণী দ্বিধা হও ' অবস্হা হল ভাইয়া ।।।বিরাট ভয় খাইলাম ।।।
কি সব যে লেখেন?!
ওইসব রহীমুদ্দী বা মাধববাবুদের নিয়ে ভাবার সময় আছে নাকি আমাদের?
এই দেশ আমাদের চৌদ্দ পুরুষের। আমরা যা বলবো তাই হবে আইন।
যা করবো মানতে হবে এ দেশের সব হাড়-হাভাতের দলকে।
আমরা সব সময় একই চরিত্রে তবে ভিন্ন কন্ঠস্বরে এই দেশের উপর ঘোরাবো ছড়ি।
আমাদের কন্ঠস্বরের সঙ্গে সঙ্গে পালটে যাবে মাইকে বাজানো সূচনা সঙ্গীত।
আমাদের রক্তের বা পরিবারের উত্তরাধিকাররাই এ দেশের সিংহাসনে বসবে শতাব্দীর পর শতাব্দী।
আমাদের সরানোর চেষ্টা হলেই রাজপথে বুক পেতে দেবে এ দেশের যত আকাট মূর্খের দল।
আর যারা এইসব 'গভীর বেদনার অনুভূতির' জন্ম দেয়া লেখা লিখে মানুষকে ভাবাতে চায়, ওইসব হাড়-হাভাতের দলকে ইতিহাস মনে রাখবেনা।
*****
আমাদেরকে জাগতে হবে।
জেগে উঠার সময় এসেছে ভাই।
আমাদের সন্তানদের বেড়ে উঠার জন্য একটা নিরাপদ জন্মভূমি আমরা চাই। কি চাইনা?
******
অনেক শুভকামনা 'নীড় সন্ধানী'।
আপনার না বলা গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম।
ভালো থাকবেন।
----------------------------
কামরুজ্জামান্ পলাশ
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। না বলা গল্পগুলো কোন এক সময়ে উঠে আসবে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আপনার লেখা নিযমিত পড়ি,ভালো লাগে,মনও খারাপ করে দেন।
ভালো থাকবেন।
মন খারাপ হবার মতোই ব্যাপার।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
গল্প বলার ঢংটা বেশ ভালো লাগছে নীড়দা।
ঢং ভালো লাগার জন্য
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
মন খারাপ হয়ে গেল
ইসরাত
মনের দোষ কি, ঘটনাগুলো তো সেরকম
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এ গল্প আমাদের কিছু মৌলিক প্রশ্ন করে, এ গল্প আমাদের সামনে একটা আয়না হয়ে আমাদের জাতীয় নগ্নতাকে উন্মোচন করে। আদিম যুগে মানুষ খাবারের জন্য গোত্রে গোত্রে মারামারি করত। মধ্যযুগে ধর্ম-অর্থ-কাম এর জন্য। এ যুগের সংযোজন ক্ষমতা। তবু আমরা নিজেদের সভ্য বলি। কারণ আমাদের লজ্জা নেই!
অনেকে বলছে বাংলাদেশে একেবারে চরম অবস্থা কখনোই হবে না। আমি অবশ্য তত আশাবাদী নই। কারণ শচীনের মতো আমরা মেতে উঠেছি নিজেদের ছাপিয়ে যাবার খেলায়! ফটিকছড়ি, শাহজাহানপুর ইত্যাদি আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাস্তানের স্বপ্নে বিভোর করে তোলে। 'মডারেট' ভেকধারী অনেকেরই তখন অবারিত শত্রু সম্পত্তির লোভে লালায়িত জিহ্বা লকলকিয়ে ওঠে।
সাহিত্য সমাজকে বদলাতে পারে না, কিন্তু জাগাতে পারে। অবশ্য সে জাগরণ সভ্য মানুষদের জন্য!
এ দীর্ঘশ্বাস ফেলার স্থান নেই।
আপাততঃ দীর্ঘশ্বাস, অতঃপর একদিন তুমুল প্রতিরোধ.........
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
খুব করে আবেগটাকে ছুঁয়ে গেলেন। অসম্ভব ভালো লাগায় কিন্তু এক অব্যক্ত কষ্টের মধ্যে ফেলে দিলেন ভাইয়া!
-নিয়াজ
শামসুর রাহমানের একটা কবিতার কথা খুব মনে পড়ছে - 'সুধাংশু যাবে না"।
আমরা কবে এমন জোরগলায় বলতে পারবো সুধাংশু যাবে না, ধর্মপাল যাবে না, ক্রিস্টোফার যাবে না, টংকিং যাবে না - কেউ যাবে না! আমরা মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, মার্মা, চাকমা ইত্যাদি নই - আমরা মানুষ। এটাই আমাদের বড় পরিচয়, একমাত্র পরিচয়!
____________________________
অনেকদিন পর সচলে আসলাম। আপনার লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো অনেক। আপনার লেখার ধরনটা বেশ পছন্দ হয়েছে দাদা।
এবিএম।
নতুন মন্তব্য করুন