১.
সারাবছর যে বন্ধুর সাথে কাটাই তাকে বিশেষ কোন দিবসে আলাদা করে শুভেচ্ছা দিতে কেমন বিব্রত লাগে। সৌজন্য বস্তুটা বন্ধুতার সাথে সম্পূর্ণ বেমানান। বন্ধুর কোন কাজ করে দিলে যদি ধন্যবাদ পেতে হয়, সেই কাজটা ছোট হয়ে যায়। ঠাট্টা বাদে সিরিয়াস শুভেচ্ছা বা ধন্যবাদ কখনো দেইনি বন্ধুকে। যেমন দেইনি বিশেষ দিবসের কোন রঙিন কার্ড। তার চেয়ে ক্যামেরায় একটা ক্লিক করে ছবিটা বন্ধুর কাছে পাঠাই। নইলে সাদা খাতায় আঙুল বুলিয়ে কিছু আঁকিবুকি। আমার তেমনি ভালো লাগে। খুব সাদামাটা কিছু। অথবা ছোট্ট কোন রেস্তোঁরায় বসে ধোঁয়া ওঠা চায়ের সাথে মুচমুচে পিয়াজু সালাদ। সাথে খানিকটা বৃষ্টি হলেও হতে পারে, না হলে কিছু মেঘের দল ভাসতে ভাসতে দক্ষিণ সমুদ্র থেকে উত্তর হিমালয়ের পথে চলে যেতে পারে।
২.
ভাগ্যিস ফেসবুক ছিল, নইলে এত দিবস কেমনে মনে রাখতাম। দিবসটিবসগুলো মনে করিয়ে দেবার জন্য ফেসবুকের দরকার আছে। আজ বন্ধুদিবস জানার পর টের পেলাম আমার অধিকাংশ মাইট্যা বন্ধুর কোন ফেসবুক নাই। যে কয়জন আছে তারাও নিয়মিত না, মাসে দুচারবার ঢোকে কিনা সন্দেহ আছে। ফেসবুকে শুভেচ্ছা দিলে তাদের কারো কাছে পৌঁছানোর সম্ভাবনা নাই। আবার তাদেরকে যে সুমধুর (!) ভাষায় শুভেচ্ছা দিতে অভ্যস্ত সেই ভাষাও ফেসবুক এথিকসের বাইরে। যাশশালা তাইলে আজ তোদের কাউরেই শুভেচ্ছা দিলাম না। বিফলে যাক বন্ধু দিবস। তয় নিজ নিজ দায়িত্বে ভালো থাকিস তোরা। হুটহাট কারো হার্ট অ্যাটাকের সংবাদ শুনতে যেন না হয়। মেজাজ খারাপ লাগে।
৩.
মাঝে মাঝে এরকম দিনগুলোতে আরো ভালো থাকতে ইচ্ছে করে। তুই থাকলে দিনটা আরো ভালো থাকে, বিকেলটা আরো সুন্দর, সন্ধ্যেটা আরো রঙিন। এরকম সময়ে তোর সাথে কোথাও বসতে ইচ্ছে করে। উড়াল দিয়ে চলে আয়, ছাদের আকাশ ঘরে বসে কবুতর ওড়াই। শুধু কবুতর নয়, রঙধনুর সাথে উড়বে পাংখি ঘুড়িটাও। আজ আমার বহুকাল আগে কাটা যাওয়া পাংখি ঘুড়িটার জন্য মন খারাপ হয়েছে। পাংখি ঘুড়িটাও কি আমার বন্ধু ছিল? নইলে কাটা যাবার পর নির্বাক নাটাই হাতে অতক্ষণ আকাশে তাকিয়ে ছিলাম কেন স্তব্ধ হয়ে?
মন্তব্য
পাংখি ঘুড়িরা যে থাকে না নীড়ুদা! হয় কাটা যায়, নয় পড়ে থেকে থেকে ছিঁড়ে যায়; আরো একটা হয় - "এটা তোকে দিয়ে দিলাম"। বন্ধুদিবসে অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এইসব আনুষ্ঠানিকতা আর কার্ড বিনিময় বন্ধুত্বের জন্য খুব আলগা বিষয় বলে মনে হয়, আদিখ্যেতা মনে হয়। সত্যিকারের বন্ধুর জন্য এসব লাগে বলে কখনও মনে হয় নি।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
জীবনে সত্যিকারের বন্ধু পাওয়াও ভাগ্যেের ব্যাপার। বন্ধুতো অনেক আছে, সত্যিকারের বন্ধু ক'জনা!
অসাধারন
---------------------------
আশফাক (অধম)
দিবস ভেবে কি আর বন্ধুতা হয়?
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
বন্ধুর জন্যে দিবস প্রয়োজন হয় না, এগুলো ব্যবসায়িক দিবস-ই মনে হয় আমার।
মাসুদ সজীব
যে কোন দিবস পালনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে যার জন্য এই দিবস তাকে একটু Special ফিল করানো। উদাহরণস্বরূপ- আমরা চাইলে জন্মদিন বা বিবাহ বার্ষিকীও পালন না করতে পারি কিন্তু আমরা পালন করি কারণ যার জন্মদিন তার ভালো লাগে আর আমাদেরও তাকে উইশ করতে ভালো লাগে। সারা বছর বন্ধুকে তো কতভাবেই কতকিছু বলি। বন্ধু দিবসের এই একটা দিনে যদি বলে যে, "তুই থাকলে দিনটা আরো ভালো থাকে, বিকেলটা আরো সুন্দর, সন্ধ্যেটা আরো রঙিন" তাহলে মনে হয় কোন ক্ষতি হবে না। ভালোবাসার মানুষকে ভালোবাসি বললে কি সেটা আদিখ্যেতা/ব্যবসা হয়?
ফাহিমা দিলশাদ
কি জানি! কখনও কখনও মনে হয় কত বন্ধু আশেপাশে, কখনও কখনও মনে হয় কেউই তো বন্ধু না।
আমার সবচেয়ে কষ্ট লাগে সত্যটা মেনে নিতে: এখন আর চাইলেই আর চট বন্ধু জোগাড় করা যায় না, স্কুলে পাশাপাশি বসলেই বন্ধু, পাড়ায় নতুন এলেই বন্ধু -আর আজকাল পাশাপাশি বাস করেও নতুন বন্ধু হয় না কেউ। বয়সের বাড়ার সাথে সাথে এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত জিনিস। তাও চাই, যে কয়জন আছে, তারা যেন দূরে চলে না যায়।
শুভেচ্ছা
এক লহমা, প্রৌঢ় ভাবনা, সাক্ষী সত্যানন্দ, মাসুদ সজীব, ত্রিমাত্রিক কবি, ফাহিমা দিলশাদ, নজমুল আলবাব, আশফাকসহ সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা মন্তব্যের জন্য।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
নতুন মন্তব্য করুন