[একটু ভূমিকা করি। এই সিরিজে আমি মূলতঃ চট্টগ্রাম অঞ্চলে সংগঠিত মুক্তিযুদ্ধের অপারেশান সমূহে ভূমিকা রাখা কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে লিখতে শুরু করেছি। আমি অল্প কজন মানুষের আত্মবিসর্জনের কথা জানি। কিন্তু সারা দেশে এরকম আরো কত লক্ষ মানুষ তাদের জীবন দিয়েছেন। তাই আমি চাই এই সিরিজে আরো কেউ কেউ যুক্ত হোক। এই সিরিজে যে কেউ অংশগ্রহন করতে পারে, করলে ভালো হয়, করা দরকার। কেননা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে মুক্তিযুদ্ধের ছোট ছোট অনেক ঘটনা ঘটেছে যার সবকিছু লিপিবদ্ধ হয়নি।
যুদ্ধ শুধু সম্মুখ সমর নয়। সমরাস্ত্র ছাড়াও অজস্র মানুষ যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। যুদ্ধ মানে শুধু লড়াই না, লড়াইয়ের পেছনে অনেক গল্প থাকে, কোন কোন গল্প খুব করুণ। সীমিত সামর্থ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছেন অনেক মানুষ। নিজের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন কোটি কোটি মানুষ। যে এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে অপারেশান চালিয়েছে, অপারেশানের পরপর সেই এলাকার মানুষের উপর নেমে এসেছে প্রতিশোধমূলক নৃশংস আক্রমণ। সেরকম প্রতিশোধ আক্রমণের নিশ্চিত সম্ভাবনা জেনেও মানুষ পিছপা হয়নি মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিতে, সহযোগিতার হাত বাড়াতে। কাতারে কাতারে মানুষ প্রাণ দিয়েছে, রক্তের স্রোতে ভেসে গেছে গ্রামের পর গ্রাম।
এখনো সেইসব দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন অনেকে। সেই স্মৃতিগুলো লিখিত আকারে প্রকাশ হলে ইতিহাসই সমৃদ্ধ হবে। তাঁদের জীবদ্দশায় সেই গল্পগুলো আমাদের সংকলিত করা উচিত। আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে সেই গল্পগুলো পৌঁছাতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জ্বল রাখার জন্য। মুক্তিযুদ্ধের ৪৪ বছর পার হয়ে গেছে, সেই সময়ে ভূমিকা রাখা অনেক মানুষ পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন। এখনো বেঁচে আছেন অনেকে। সেই মানুষদের কাছ থেকে সাক্ষ্য নিয়ে ইতিহাসের মাইলস্টোনের অংশ হওয়া সেই ঘটনাগুলো যদি আমরা লিপিবদ্ধ করতে না পারি তাহলে সেই ঘটনার পেছনের মানুষগুলো ইতিহাসের পাতা থেকে চিরতরে মুছে যাবে।]
এবার গল্পটি পড়তে শুরু করি।
-----------------------------------------------------------------------------
সময়: ১৯৭১ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি
স্থান: চট্টগ্রাম শহরের জিইসির নিকটবর্তী একটি পাকিস্তানী সেনা ক্যাম্প
বেয়াড়া ধরণের সাহসী লোকও সাপের গর্তে হাত ঢুকিয়ে বসে থাকে না। কিন্তু নজরুল সাহেব এখন অনেকটা তাই করতে বাধ্য হয়েছেন। সকাল সাড়ে দশটা থেকে তিনি বসে আছেন পাকিস্তানী আর্মি ক্যাম্পে। সামনের রাস্তা থেকে ভ্যাপসা হাওয়া এসে চোখমুখে ঝাপটা মারছে। শরীরটা ঘামে আঠালো হয়ে গেছে। ফ্যান নেই ঘরটায়। উর্দি পরা পাকিস্তানী সৈনিকেরা মারাত্মক সব অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছে বারান্দায়, সামনের খোলা চত্বরে। চট্টগ্রাম শহর এখন পুরোপুরি পাকিস্তানী সৈন্যদের দখলে। জিপে ট্রাকে সৈন্য ঘুরছে, প্রতিদিনই মরছে মানুষ গুলি খেয়ে। মৃত্যুটা শহরের স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে গেছে, শুধু সংখ্যাটা ধরে আলাপ চলে। আগ্রাবাদে ৭, নালাপাড়ায় ৯, চকবাজারে ১৩, পাহাড়তলীতে ২৪ ইত্যাদি। এছাড়া প্রতিদিন নানান জায়গা থেকে ধরে নিয়ে যাদের আটকে রাখছে তাদের অনেকেই আর বাড়ি ফিরবে না কোনদিন।
নজরুল সাহেব নাসিরাবাদ এলাকায় বসবাস করেন, ব্যবসা করেন। কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নন। সরাসরি রাজনীতি না করলেও বাকী ৭ কোটি সাধারণ বাঙালীর মতো জয় বাংলার লোক, স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেন মনে প্রাণে। তাঁকে গতকালও একবার ধরে আনা হয়েছিল।
গতকাল বিকেলে বাসা থেকে বেরিয়ে লালখান বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। মোড়ে আসতেই পাকিস্তানী সৈন্যের জীপের মুখোমুখি।
হল্ট!
দাঁড়িয়ে পড়লেন তিনি। এরকম মুহূর্তে অনেক দুঃসাহসী মানুষের সাহসের মাত্রাও শূন্যের কোটায় নেমে যায়। ভিনদেশী শত্রুর উদ্যত মারাণাস্ত্রের সম্মুখে প্রাণের কি ভরসা! তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে ক্যাম্পে চলে গেল সৈন্যবাহী জিপ। তিনি প্রায় নিশ্চিত জীবিত ফিরবেন না। পরিবারের কাছে একটা খবর দেয়া গেল না বলে দুঃখ লাগছিল।
কিন্তু ক্যাম্পে বেশ কিছুক্ষণ রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে যখন ছেড়ে দেয়া হলো তখন তিনি খুব অবাক হলেন। এটাই কি কপাল জোর? সেই জোর কতটা তীব্র হলে মানুষ এমন মৃত্যুগুহা থেকে বেঁচে ফিরতে পারে! ভাবতে না ভাবতেই কপালের জোরটা হোচট খেল যখন বের হবার মুখে পাকিস্তানী অফিসারটি বলে উঠলো, ‘কাল সকালে তোমাকে আবারো ক্যাম্পে দেখতে চাই। তোমার কাছ থেকে আরো তথ্য দরকার। বি ফ্র্যাংক, সত্যি বলবে, তাহলে তোমার ভয় নেই। ধরে আনলে তোমার ভালো লাগবে না। নিজ দায়িত্বেই আসবে’।
পাঁচ মিনিট আগের আত্মবিশ্বাস হুশ করে নেমে গেল মাটির তলায়। বোঝার জন্য এটুকুই যথেষ্ট। নজরুল সাহেব বুঝে ফেলেছেন রক্ষা নাই আর। পালানোর কথা ভাবা যায়, কিন্তু কোথায় পালাবেন, কিভাবে পালাবেন? তাঁর বাড়িটা রাস্তার উপরে পাকিস্তানীদের নজরসীমার মধ্যে। আশেপাশে বিহারীও কম নেই। তারাও চোখে চোখে রাখবে তাঁকে। এনায়েত বাজারের ডাক্তার শফিকেও(লেখিকা মুশতারী শফির স্বামী) প্রথমবার ছেড়ে দিয়েছিল সার্কিট হাউস থেকে। দ্বিতীয়বার নেবার পর তিনি আর ফিরে আসেননি। বরং তার পরিবারের আরো একজন সদস্যকে নিয়ে প্রাণ দিতে হয়েছিল। বাকী সদস্যরা পালিয়ে বেঁচেছিল কোনমতে।
তিনি পালাতে চান না কাপুরুষের মতো। পালাতে গেলে পিঠে গুলি খেয়ে মরতে হবে হয়তো। কোন পাকিস্তানীকে বিশ্বাস করা উচিত না হলেও বেনেফিট অব ডাউট বলে একটা কথা আছে। ক্যাম্পে দেখা দিলে আজকের মতো ছেড়েও তো দিতে পারে। সুযোগটা নিতে ক্ষতি কি। তবে হ্যাঁ, পরিবারকে সরিয়ে দিতে হবে। ওদেরকে এতকিছু বলাও যাবে না।
তিনি খুব সাবধানে পরিবারকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দিয়েছেন গত রাতেই। তারপর সকালে নাস্তা করেই ক্যাম্পে হাজির হয়েছেন। মনে মনে দোয়াদরুদ পড়ে প্রস্তুত হয়ে আছেন। পাকিস্তান আর্মিকে তাঁর বলার মতো কোন কথা নেই, দেবার মতো কোন তথ্যও নেই। তিনি নৌকায় ভোট দিয়েছেন গত নির্বাচনে- এছাড়া রাজনীতির সাথে আর কোন যোগাযোগ নেই তার। এদেশের অধিকাংশ মানুষই তাই। সব মানুষই এখন জয় বাংলার মানুষ। এই অপরাধে মারতে হলে এদেশের সব মানুষকে মেরে ফেলতে হয়।
তিনি যে এতক্ষণ ক্যাম্পে বসে আছেন তাঁকে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করছে না। দালাল ধরণের কিছু লোককে দেখা গেল একটু দূরে ফিসফাস করতে। তাঁর দিকে তাকালো দুয়েকবার। তিনি জানেন এরাই সর্বনাশের মূল। অমন মহৎপ্রাণ মানুষ ডা. শফিকেও এরাই শেষ করেছে। তাঁর সম্পর্কে কি লাগিয়েছে খোদা মালুম। মীরজাফরের বাচ্চারা! মনে মনে গাল দিলেন দালালদের।
শুধু একটা বিষয় অপরাধ বলে বিবেচ্য হতে পারে। ৭ মার্চের পর পাড়ায় কয়েকটা মিটিং এ তিনি অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে পাড়ার ছেলেদের অস্ত্রশস্ত্রের ট্রেনিং এর ব্যাপারে ঘরোয়া আলাপ হয়েছিল। আর দশজনের মতো তিনিও ট্রেনিং এর পক্ষে মত দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই মিটিং তো একান্তই ঘরোয়া মিটিং। তার খবর কি এখানে পৌঁছাতে পারে? ভ্রু কুঁচকে ভাবতে লাগলেন তিনি।
প্রায় দেড় ঘন্টা বসে থাকার পর কালকের সেই অফিসার উদয় হলো। তাঁর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, ‘আরে বঙাল তুমি কোন আক্কেলে এখানে এসে বসে আছো’?
নজরুল সাহেব বুঝলেন এটা এক ধরনের তামাশা। ইতরামির ভদ্ররূপ বলা চলে। আরো কী নোংরামি করবে বলা মুশকিল। এদের যা খুশী করুক। তিনি মার খাবার জন্য প্রস্তুত। এমনকি সরাসরি বুকে গুলিও। কোনটা করবে ওরা? গুলি খেয়ে মরাই ভালো হবে।
তিনি বললেন, ‘গতকাল তুমিই তো আসতে বললে আবার। তাই আসলাম’।
পাকিস্তানী অফিসার বিস্ময়ের সুরে বললো, ‘আমি আসতে বললাম,আর তুমি চলে আসলে? বাহ, সাহস আছে তোমার! আমরা ডাক দিলে বাঙাল হেগে মুতে পালিয়ে যাবে এটাই তো দেখি সবসময়’।
নজরুল সাহেব দৃপ্ত কন্ঠে বললেন, ‘দেখো আমার পালিয়ে যাবার কোন কারণ নেই। আমি অপরাধী নই। তুমি কি জন্য আসতে বলেছো, সেটা জানতে পারলে বাধিত হই’।
নজরুল সাহেবের কথার ধরণ শুনে হোহো করে হেসে উঠলো মেজর হামজা। নামটা মাত্রই জানতে পারলেন তিনি। কথাবার্তা ইংরেজীতেই হচ্ছিল এতক্ষণ। কিন্তু মাঝে কি একটা উর্দু বুলি বেরিয়ে গেল পাক অফিসারের মুখ দিয়ে। শুনতে গালির মতো লাগলো, কিন্তু অর্থ বুঝতে পারলেন না তিনি। তারপরই ইংরেজীতে ফিরে এল কথাবার্তা।
‘শোনো, আজ আমার মনটা বিশেষ কারণে ভালো হয়ে আছে। তোমাকে সেটা বলা যাবে না। শুনলে গালিগালাজ করে বসতে পারো, বলা যায় না। বাঙাল জাতটা গোঁয়ার, অসভ্য, ছোটলোক! নিজের ভালো নিজেই বোঝে না বলে লাথি খায়। তবে তুমি কপালওয়ালা লোক। বেঁচে গেলে আজ নিজের ভালো বুঝলে বলে’।
নজরুল সাহেব বললেন, ‘বেঁচে গেলাম? তাহলে আমি কি এখন উঠতে পারি?
মেজর হামজা একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বললো, ‘আরে বসো বসো ইয়ার! বসো কথা বলি। তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। তুমি কথা বলতে জানো। ডরপুক নাই। সবাই যদি তোমার মতো হতো! .........তুমি কেন বেঁচে গেলে জানো?’।
নজরুল সাহেব বললেন, ‘না জানি না’।
হামজা বললো, ‘এই যে কালকে তোমাকে ধরে আনার পর আজকে আবারো বোকার মতো বাঘের গুহায় ফিরে আসলে। এর মানে তোমার মনে কোন খারাবি নেই। যদি থাকতো তুমি হাজিরা না দিয়ে পালাতে। তুমি পরীক্ষায় পাশ করেছো। তুমি পাকিস্তানের খাস নাগরিক। উর্দু না পারলেও ইংরেজিতে জবান ভালো’।
নজরুল সাহেব মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। মুখে কিছু বললেন না। বলার কি আছে হারামজাদাদের।
মেজর হামজা একটু উদাস হয়ে সিগারেটে টান দিতে দিতে আপনমনে বলতে থাকে-
‘দেখো কিছু মনে করো না আমাদের কাজটাই এমন যে আমরা সবসময় পছন্দসই কাজ করতে পারি না। এই তো সেদিন- অনেক লোকের সাথে এক তরুণকে ধরে আনলো সৈন্যরা। কচি বয়স, এমনকি ঠিকমতো গোঁফও ওঠেনি। বয়স আঠারো উনিশ হবে কিনা সন্দেহ। দেখেই বোঝা যায় শিক্ষিত ভদ্রঘরের সন্তান। ছেলেটার কথা মনে পড়ে আর আফসোস হয়.....বিলিভ ইট ছেলেটাকে ছেড়ে দেবার বড় ইচ্ছে ছিল। তাকে বারবার সুযোগ দিতে চেয়েছি। তাই তাকে বলেছিলাম, বলো ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’, তাহলে বুঝবো তুমি দেশপ্রেমিক, ছেড়ে দেবো তোমাকে। কিন্তু একবারও তার মুখ দিয়ে এই শ্লোগান উচ্চারণ করাতে পারিনি। যতবারই জিজ্ঞেস করেছি, প্রতিবারই সে বুক টানটান করে বলছিল- ‘জয় বাংলা’!
নজরুল সাহেব স্তব্ধ হয়ে গেলেন। এ কেমন চেতনা! কিসের জোরে মানুষ এমন সত্য বুক ফুলিয়ে বলতে পারে শত্রুর কবজায় আটকে থেকেও! হামজার দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে তাকিয়ে থাকলেন জানালার বাইরে। ওদিকের একটা নারকেল গাছে কিছু কাক হল্লা করছে তারস্বরে। তাঁর খুব জানতে ইচ্ছে করছে, তারপর? কিন্তু মুখ ফুটে বলার মতো কথা খুঁজে পাচ্ছেন না। খানিকপর হামজার মুখের দিকে তাকালেন একপলক। তারপর উঠে দাঁড়ালেন। বললেন, ‘আমি উঠি’। মাথা কাত করে সায় দিল পাক অফিসার।
দরোজা পেরিয়ে যাবার আগে পেছন ফিরে তিনি জিজ্ঞেস করেই ফেললেন - ‘আচ্ছা, সেই ছেলেটার কী হলো শেষে?’
‘আর কি? মর গিয়া!’ বলে হাতের ইশারায় কতল করে ফেলার সংকেত দেখালো মেজর হামজা।
নজরুল সাহেব আর দাঁড়ালেন না। দাঁতে দাঁত চাপতে চাপতে ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে এলোমেলো হাঁটতে লাগলেন। তার চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে। তিনি বাড়ির রাস্তা চিনতে পারছেন না যেন। বিড়বিড় করতে করতে যাচ্ছেন- এই দেশ স্বাধীন হবেই, যে দেশে এমন ভয়ংকর দানবের খাঁচায় আটকে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও বুক চিতিয়ে সত্য বলার মতো দুর্বার ছেলেদের জন্ম হয় সেই দেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না! কোনদিনও না!!
--------------------------------------------------
১
মন্তব্য
দারুণ একটা কাজ শুরু করেছেন। সাধুবাদ জানাই।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
পড়া ও উৎসাহের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সাদিয়া!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ট্যাগে 'মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম' বা এরকম কিছু দেয়া যায়?
ট্যাগটা যুক্ত করে দিলাম
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
চট্টগ্রামের ফয়েস লেক/চক্ষু হাসপাতাল এর পাশে রেলওয়ের একটা কলোনীর নাম এখন শহীদ লেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় লাইন ধরে দাড় করিয়ে ওখানে বাঙালীদের গুলি করে মারা হয়। আগে নাম ছিল পান্জাবী লেন। এখন ও এই নাম বললে সবাই চেনে।এছাড়া সারা চট্টগ্রাম থেকে ধরে এনে বাঙালীদের হত্যা করা হত পাহাড়তলীতে। এখন ওখানে নিহতদের স্মরনে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। মিরপুরের মত এখানেও বিহারীদের কলোনী আছে।এখনও ওরা বরাবরের মত উর্দু বলে।
ট্রোল
মর্মান্তিক অনেক ঘটনা ঘটেছিল ওখানে। বিহারীরা ঝাউত্লার কাছাকাছি সেই জায়গাটাতে একবার ট্রেন থামিয়ে কয়েক ঘন্টার মধ্যে হাজারের উপর মানুষকে মেরে ফেলেছিল।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
ধন্যবাদ অভিমন্যু
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমার নানু মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে শুনেছি সেই অগ্নিঝরা দিনের গল্প। বীরত্বের গল্প, বেদনার গল্প, আনন্দের গল্প, অশ্রু আর কান্নার গল্প। এই অসাধারণ লেখাটি পড়ে সেগুলো লিখে রাখার প্রয়োজন অনুভব করছি।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
অবশ্যই লিখবেন। এসব লিখে রাখার সময় চলে যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জীবিত থাকতেই লিখে ফেলতে পারলে সবচেয়ে ভালো কাজ হবে। আপনার নানুর গল্প পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমার একটা লেখার অংশবিশেষ,
লেখা চলুক।
পড়া ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ধন্যবাদ আপনাকে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
খুব ভালো কাজ হাতে নিয়েছেন। আসলেই হয়ত আর অল্প কিছুদিন পরেই হয়ত মুক্তিযুদ্ধের একজন প্রত্যক্ষদর্শীও হয়ত বেঁচে থাকবেন না। তার আগেই যতটুকু পারা যায় লিপিবদ্ধ থাকা দরকার। লেখা অসাধারণ হয়েছে। জয় বাংলা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সেটাই। যে যার এলাকার সংবাদগুলো যতটা সম্ভব যোগাড় করে লিখলে কাজটা সার্থক হয়। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
একটা ছেলে শুধু শ্লোগানের জন্য মারা যেতে পারে?
এত শক্তি কোথায় পেত মানুষ?
এই পর্বটা ভাল লেগেছে।
লেখা চলুক।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
সেই চেতনার উৎসটা এই সময়ে বোঝা খুব সহজ না। কিন্তু রুমী-আজাদের বাংলাদেশে সেই চেতনা ছিল বলেই আজকের বাংলাদেশ পেয়েছি। সেই চেতনার তারুণ্যকে এখনো বাংলাদেশের খুব প্রয়োজন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
পোস্টের একটা কমন শিরোনাম দিয়ে তাতে ১, ২, ৩ এভাবে সিরিজ চালান। ট্যাগেও সিরিজটার নাম দেবেন। তাহলে ওখানে ক্লিক করলে সবগুলো এপিসোড একসাথে চলে আসবে। 'মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম' নামটা মন্দ না।
খুব ভালো একটা কাজে হাত দিয়েছেন। আপনার সাফল্য কামনা করি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সিরিজ বললেও আসলে প্রতিটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা, তাই ১, ২ না দিয়ে প্রতিটা পর্বের শিরোনামে সেই ব্যক্তির নামটা রাখার চেষ্টা করছি। উৎসাহ ও পরামর্শের জন্য অনেক ধন্যবাদ। ধৈর্য মরে যাবার আগ পর্যন্ত লেখার চেষ্টা করবো।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
অসাধারণ একটা কাজ।
২০০৭ এর দিকে, সিডরের পরপর আমরা বরগুনাতে কাজ করতে গিয়েছিলাম। প্রথমে ত্রান-নির্ভর হলেও পরে দেড় বছরের মতো ওই অঞ্চলে আমরা কাজ করি। অম্ল-মধুর নানান অভিজ্ঞতা আছে এসব নিয়ে। সেসময় আমরা ক'জন মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ইতিহাস সংগ্রহের চেষ্টা করেছিলাম। কিছু লেখা হয়েছিল, কিছু রেকর্ডড অবস্থাতেই হারিয়ে যায়। পরে মুক্তিযুদ্ধের ভার্বাল হিস্টরি সংগ্রহের জন্য একটা গ্রুপ দ্বায়িত্ব নেয়।
আমরা যেটা করার চেষ্টা করেছিলাম তা হলো, আমাদের কিংবদন্তিদের তুলে ধরা। আমরা চেয়েছিলাম, আমাদের শিশুরা সুপারম্যান, বা ফ্যান্টমই শুধু পড়বে না, সাথে পড়বে আমাদের সুপারহিরোদের নিয়ে লেখা কমিক বই। উইথ লিভিং লিজেন্ড নামে একটা সংগঠনও হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার ছাত্র, আমাদের ছোট ভাই মাশুকের নেতৃত্বে। দুটি কমিকও বের হয়, দুজন জীবিত মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে যাদেরকে প্রকাশনা উৎসবে ক্ষুদ্র পরিসরে সংবর্ধনা দেয়া হয়। মাশুক এখনো চালিয়ে যাচ্ছে কিনা জানি না। অনেকদিন যোগাযোগ নেই। নিজের কাছে যা ছিল তার বড় অংমই হারিয়ে ফেলেছি। এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই।
যা হোক, এতো কথা বললাম কাজটা দেখে ভালো লাগার কারণে। আশা করি আমাদের মতো এটি থমকে যাবে না। সবগুলো অঞ্চলেই এই কাজটি হওয়া জরুরি। সবাইকে নিজ সামর্থের মধ্যে যতটা পারা যায় সংগ্রহের অনুরোধ রইলো।
স্বয়ম
আপনাদের উদ্যোগটা খুবই চমকপ্রদ লাগলো। আমার মনে হয় এরকম উদ্যোগ আবারো চালু করা যায়। প্রয়োজনে পরবর্তী জেনারেশানের কোন দলের হাতে কাজটা তুলে দেয়া যায়। বাস্তব অভিজ্ঞতায় জানি এক দলের কাজ অন্য দল খুব কম ক্ষেত্রেই এগিয়ে নিতে পারে। তবু চেষ্টা করতে দোষ কি।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ইতিহাসটাকে আগে তুলে আনা জরুরি। এটা হাতে থাকলে, যেকোনো উদ্যোগি প্রজন্মই এই রশদে ভর করে অনেক ভালো কাজ করতে পারবে। চাইকি কার্টুনও হতে পারে। কিন্তু আগে রশদ চাই।
স্বয়ম
সত্যিই দারুণ হচ্ছে কাজটা।
ভাইয়া, এ বিষয়ে আমার আগ্রহ আছে, কিন্তু কিভাবে কী করতে হবে জানিনা সঠিক।
আপনার সাথে ইমেলে এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই।
আপনার আগ্রহ দেখে আমি কৃতজ্ঞতাবোধ করছি। খুব ভালো হয় একাধিক জন এই উদ্যোগে যুক্ত হলে। মেইলে বিস্তারিত বলতে পারেন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
দামী কাজ, জরুরী কাজ।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
উৎসাহ দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ এক লহমা দা!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
চলুক!
দারুণ কাজ। লেখাটাও খুব ভালো।
দেবদ্যুতি
নতুন মন্তব্য করুন