মানুষ কেন বই পড়ে? জ্ঞানী হবার জন্য নাকি স্রেফ আনন্দের জন্য? অন্যদের কথা জানি না, আমি পড়ি আনন্দের জন্য। সেই ফাঁকে যদি দুয়েকটা জ্ঞানার্জনের পূণ্য অর্জিত হয় সেটা বাড়তি লাভ।
তো, এই পড়াশোনা ব্যাপারটা জ্ঞানার্জনের পাশপাশি মানুষের কল্পনাশক্তির প্রসারণ ঘটায় ব্যাপক ভাবে। আমি নিজে স্কুল বয়স থেকে আজ অবধি হাজার হাজার হাবিজাবি বই গিলে নিজের কল্পনাশক্তির বড়সড় এক পর্বত দাঁড় করিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম জীবনে আর নতুন কিছু পড়ার নাই। কিন্তু কয়েকদিন আগে শেষ করা একটি অভিনব পুস্তকের কাছে আমার সমস্ত কল্পনাশক্তির পর্বতের ভিত নড়বড়ে হয়ে গেছে। আরেকটুর জন্য ধ্বসে পড়েনি।
মজার ব্যাপার হলো, আমি আগ থেকেই জানতাম আমি একটি কল্পকাহিনী পড়তে যাচ্ছি যার সাথে বাস্তবের কোন যোগসূত্র নেই। তবু এই হোঁচট খাবার কারণ কী?
জানতে হলে, পড়তে হবে।
আপনি অনেক জ্ঞানী কিংবা পড়ুয়া হতে পারেন, কিন্তু আমার বিশ্বাস এমন কিছু আপনি আগে কখনো পড়েননি। বড়দের রূপকথা হিসেবে ঘোষিত অভিনব গ্রন্থটির নাম ‘আগুনি’। কথাসাহিত্যিক মাহবুব আজাদের সাম্প্রতিকতম সৃষ্টিকর্ম।
এটা আপনাকে এমন কিছু দেখাবে যাতে আপনার অভ্যস্ত চিন্তাভাবনার কম্পাস উল্টোদিকে ঘুরে যেতে পারে। শুধু বাংলা ভাষায় নয়, পৃথিবীতে অন্য কোন ভাষাতে এমন অদ্ভুত কোন উপখ্যান লেখা হয়েছে কিনা জানা নেই। এই উপখ্যানের বিষয়বস্তু যেমন বিচিত্র, তেমনি স্থান, কাল, পাত্র সবকিছুই বিচিত্র। আমাদের চিরচেনা যে জগতটির মধ্যে আমরা বাস করি, এটা তার চেয়ে একেবারেই আলাদা। এতখানি আলাদা হওয়া সত্ত্বেও আপনি নিজেকে বিচ্ছিন্ন ভাবতে পারবেন না। এখানে রহস্য, রোমাঞ্চ, কুটচাল, রসবোধ সবকিছুই এমন নিবিড়ভাবে সন্নিবদ্ধ হয়েছে যে পড়তে পড়তে একসময় আপনার মনে হবে আপনিও আগুনির জাহাজের এক নাবিক।
আপনাকে কেউ ১২৯৬ পৃষ্ঠার বই পড়ার অনুরোধ করলে আপনি আঁতকে উঠতে পারেন। ভাবতে পারেন ইহজীবনে এই পুস্তক আপনার পক্ষে শেষ করা অসম্ভব। আমিও শুরুতে তাই ভেবেছিলাম। কিন্তু সাহস করে যখন আগুনির প্রথম দুটো অধ্যায় শেষ করলাম, তখন আবিষ্কার করলাম, আগুনির কল্পজগত আমার একাংশ দখল করে ফেলেছে। আমার ঘোরতর বিশ্বাস, ‘আগুনি’ বাংলা সাহিত্যে একটা অভিনব সংযোজন হতে যাচ্ছে।
আগুনির প্রেক্ষাপট অতীতকালের এক পৃথিবী। কিন্তু এর সময়কাল বোঝা সহজ নয়। কখনো মনে হবে মধ্যযুগ, কখনো মনে হবে আরো প্রাচীন কোন যুগ। আগুনিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি, খাদ্যাভ্যাস, ভৌগলিক বিবরণ সবকিছুই আমাদের চেনা জগত থেকে আলাদা। এমনকি রূপকথায়ও আমাদের চেনা জগতের অনেক কিছু উপস্থিত থাকে, আর কিছু না হোক খাবার দাবারগুলো পরিচিত। এখানে আপনি এমনসব খাবারের নাম শুনবেন- যা এই ভূগ্রহের কোথাও কখনো ছিল না। এমনসব পশুপাখির উপস্থিতি আছে যা আমাদের চেনা জগতে নেই। আপনি বিস্মিত হবেন প্রাচীন যুগের আদিম প্রযুক্তির বিচিত্র ব্যবহারে।
কিন্তু এত অদ্ভুত আজগুবি কাহিনীতে ভরপুর আগুনিতে আপনি এমন কিছু অতিচেনা মানুষের দেখা পেয়ে যাবেন, মনে হবে প্রতিদিন আপনি তাদের কোন না কোন পত্রিকার পাতায় দেখেন। বিষয়টি খুব চমকপ্রদ। বিচিত্র কিছু মানব চরিত্রের সার্বজনীন উপস্থিতি এবং নিঃসন্দেহে তারা বাঙালী। কিছু ক্ষেত্রে আপনার চেনা পাশের বাড়ির লোকটিও হতে পারে। এখানে এমন কিছু বিচিত্র চরিত্রের মানুষের দেখা পাবেন যাদের চলমান কাণ্ডগুলো আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে বইয়ের শেষ সীমানা পর্যন্ত। মধুদামাদ বা বাবাবতুতার মতো দুটো চরিত্রের উপস্থাপনা এতই নিপুন হয়েছে যে বইটি শেষ করার পরও পাঠতৃষ্ণা রয়ে গেছে তাদের পরবর্তী কাণ্ডকারখানা জানার জন্য। শুনলে অবাক হতে পারেন ১২৯৬ পৃষ্ঠার বিপুলায়তনের এই উপাখ্যান পড়ার পরও পরের খণ্ড পড়ার অপেক্ষা করছি।
শেষ করার আগে আগুনির ভবিষ্যত পাঠকদের জন্য একটি পরামর্শ। গড়পড়তা গল্প উপন্যাসের গতিতে আগুনি পড়া অনুচিত। একটু সময় নিয়ে, ধীরে সুস্থে, রয়ে সয়ে আগুনির ‘পিচিং’ পান করতে হয়। ভাবছেন ‘পিচিং’ আবার কী বস্তু? না জানাই স্বাভাবিক এই পানীয় কেবল আগুনিতেই পাবেন আরো অদ্ভুত কিছু খাবার দাবারের সাথে। আগুনির কয়েক অধ্যায় পাঠ করলেও পড়লে আপনিও এক পেয়ালা পিচিং নিয়ে বসতে চাইবেন। আগুনিতে এমন সব অচেনা অজানা খাবার আছে প্রথম দিকে যা বুঝতে একটু কষ্ট হলেও একসময় অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। এছাড়াও আগুনিতে প্রাচীন যুগের এমন সব অপ্রচলিত বাংলা শব্দ আছে, যা সচরাচর কোথাও দেখা যায় না। সুখের বিষয়, এসব অপ্রচলিত শব্দ এবং নতুন তৈরী হওয়া শব্দের মর্মার্থ গ্রন্থের শেষাংশে যুক্ত করেছেন লেখক।
আগুনি এখনো অনলাইন সংস্করণে নরম ইবুক আকারেই আছে। মুদ্রিত কাগজ মলাটের শক্ত বই হিসেবে কী বাজারে আসবে? তা জানি না। কিন্তু আমার বুকশেলফের একটি শূন্যস্থান অপেক্ষা করবে আগুনির কাগজে ছাপানো মুদ্রিত পুস্তকের জন্য।
মন্তব্য
১২৯৬ পৃষ্ঠা হবে (মৃদু কাশি)।
ঠিক করে দিলাম। কাশির জন্য
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আপনার জন্য পিচিঙের দাওয়াৎ রইলো।
দাওয়াতে কবুল
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এই বইয়ের একটা মুদ্রিত সংস্করণ চাই!
****************************************
আমি বইটার মাঝামাঝি এখন। মধুদামাদ কেরেক্টারটাকে আমার কি যে দারুণ লাগসে! মাঝে মাঝে খুবই চালাক, মাঝে মাঝে খুব বোকা, সারাটাখন খালি এরে খোচায় তারে খোচায়। মধুদামাদ বাবাবতুতা গনক এই তিনজনের কথা কাটাকাটি গুলা ক্লাসিক! এইরকম উইটি ডায়ালগ আমি আর কোন বাংলা বইতে পড়ি নাই। তবে বীরকে একটু ভোদাই মনে হইসে।
আমি বইটা শুরু করসিলাম একটু কিন্তু কিন্তু ভাব করে। টু বি অনেস্ট, এই সাইজের বই পড়ার সময় আমার পরিচিত কারুর হাতেই নাই। গল্পদ্রুম এর সাইটে প্রিজেন্টেশান মজার দেখে বইটা উল্টায় পাল্টায় দেখতে মেইল দিসিলাম। ভিতরের ডিজাইন দেখে খুব পছন্দ হইসিল, কিন্তু বইটা পড়া শুরুর পর ব্যাক্তিগত কারনে বেশি দুর আগাইতে পারি নাই। পরে আবার পড়তে গিয়ে দেখি একসেস নাই। বিরক্ত হয়ে আবার মেইল দিলাম। নতুন করে একসেস পাওয়ার পর পড়তে শুরু করে যখন নাতথুর সেই জোলাপ ওয়ালার গানটা পড়লাম, তারপর আর থামি নাই, পড়ে যাইতেসি। গুপি গাইন বাঘা বাইনের পর কোথাও এমন মজার গান পাই নাই। বাইজির গান, জাহাজিদের গান, মধুদামাদের গান, লোহশিং এর গান, জলদস্যু নীলদাঁড়ির আপন ভাগিনার গান, প্রত্যেকটা ইউনিক আর সাংঘাতিক মজার!! এই গানগুলিতে সুর দিয়ে যদি ইউটিউবে বা ফেসবুকে ছাড়া হইত, লুপে ফালায় শুনতাম।
আরেকটা কথা, আই নিড এ ম্যাপ। অংসায়র টিংসায়র লালসায়র শুক্তি বহমিকা কর্কট দ্বীপ সব মাথার মধ্যে গুলায় যাইতেসে। লেখক ভাই, প্লিজ বইতে ম্যাপ দেন।
গানগুলোর কথা উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছিলাম। আমার ধারণা পড়তে পড়তে পাঠকের কল্পনায় সেই গানগুলো মাথায় গুনগুন করতে থাকে একেকজনের কাছে একেক সুরে।
মানচিত্রের দাবীটায় আমিও সমর্থন দিলাম। এত সাগর উপসাগর চিনতে চিনতে মাথা চক্কর দেয়। তাতে অবশ্য রসের ঘাটতি পড়ে না। তবু মানচিত্র থাকলে পাঠকের মাথার খাটনিটা কমবে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
পরের সংস্করণে কয়েকটা দিশান জুড়ে দেওয়ার ইচ্ছা আছে। তবে কাজটা নানা কারণে কঠিন।
গানগুলোতে সুর বসানো হয়েছে অনেক আগেই, কিন্তু গেয়ে/গাইয়ে ধারণ করা হয়নি। কোনো এক শনিবারে...। তবে একেকজনের মাথায় একেক সুরের ব্যাপারটাই বরং ভালো।
আপনি সাউণ্ড ক্লাউডে সুরগুলো কাউকে দিয়ে গাইয়ে নিতে পারেন। তারপর লিংকটা খোমা খাতায় দিয়ে দেবেন। জনগণের জন্য এটা বাড়তি পাওনা হবে। আপনার আপনার গলাটা অতি কোমল, তাই আপনাকে গাইতে বলছি না। এখানে হেড়ে গলার একজন গায়ক দরকার যে দুনিয়া ফাটিয়ে গান গাইবে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ম দিয়ে নাম শুরু, এমন একজনের কথা মনে পড়ে গেলো। তবে সেই ম-নামী ভদ্রলোক আবার ঈদের মরশুম ছাড়া গান তেমন একটা করেন না। মন্দ লোকে বলে, ওনার গানে সুর দেওয়া আর ইনক্রেডিবল হাল্কের পেন্টুলুন সেলাই করা সমান নিরর্থক। লৌহশিঙের গানটা ওনাকে দিয়ে "গাওয়াতে" পারলে...।
ওনার গানে তো আবার মডেল লাগে। মডেল সাপ্লাই দিতে পারলে তিনি অসাধ্য সাধন করতে পারেন। লৌহশিঙের চরিত্রেও মানাতে পারে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ম্যাপ একটা আসলেই দরকার। নিজের সুবিধার জন্য একটা ম্যাপ আঁকতে গিয়েছিলাম। সেটা দেখতে হয় কয়েকটা ডিমের সমষ্টি অথবা পৃথিবীর ম্যাপের কাছাকাছি। জং দ্বীপকে জাপান ধরে নিয়ে মিলাতে যেয়ে অনেক কসরতের পর জানতে পারলাম সে নাকি দক্ষিণ গোলার্ধে। এর আগ পর্যন্ত গোলার্ধের ব্যাপারটা মাথায়ই আসেনি। ওয়েস্টেরস কিংবা মিডল আর্থের দিশানের মত একটা চ্যাপ্টা পৃথিবী কল্পনা করে ফেলেছিলাম বোধহয়। তারপর থেকে চেষ্টায় ক্ষান্ত দিয়েছি।
জংদ্বীপ দক্ষিণ গোলার্ধে না তো!
আগুনির এক-তৃতীয়াংশ পড়লুম। এখন পর্যন্ত বেশ লাগছে। যে ব্যাপারটা নজর কেড়েছে --- বইটা সুসম্পাদিত। বানান ভুল পাইনি এখনও। বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত যে ক'খানা বই গত ক'বছরে পড়া হল, প্রতিটিতেই ভুল বানানের মোচ্ছব, sorry to say. পাতার সাজ সুন্দর, সোভিয়েত বইগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। ফন্ট নির্বাচন প্রশংসনীয়। অলংকরণ বেশ অভিনব, তবে রঙে না করে রেখায় করলে জমজমাট হত। গল্প বেশ, বেশ উপভোগ্য, বিশেষ করে চরিত্রগুলোর বিচিত্র নামকরণের ধারা খুব মনে ধরেছে। জলিলিও জলিলির পূর্ববঙ্গীয় সংলাপ পড়ে খানিক নস্টালজিক হতে হয় (মানিকগঞ্জের ডায়ালেক্ট কি?)।
তবে একটা কথা না বলে পারছি না --- গুগল ড্রাইভ থেকে বইখানা পড়তে গিয়ে চোখ ক্লান্ত হয়, টানা তরতরিয়ে পড়ার পথে ওই যা বাধা। ইপাবে পেলে বেশ হত।
--- আবীর
ঠিক। এত সুসম্পাদিত নির্ভূল বই বাজারে খুব খুব কম। প্রগতি প্রকাশনীর বইগুলোর কথা মনে পড়ে ফন্টের চেহারা দেখে।
আমার ধারণা বইটা একদিন আমাজন গুগলে বিক্রি হবে। তখন ইপাব মোবি ফরমেটেও হয়তো আসবে। পুরোটা পড়ে শেষ করুন, তারপর দেখবেন আরো কী বিস্ময় লুকোনো আছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
জলিলিও জলিলির সংলাপ নারায়ণগঞ্জের উপভাষায়। তবে মানিকগঞ্জের ভাষাধারার সাথে এর পার্থক্য, যত দূর জানি, সামান্যই।
রুপকথায় ময়ুরপংখী নৌকার কথা শুনেছি। তো 'বড়দের রুপকথা' জনরের বিজ্ঞাপন দেখে গল্পটা ডাঙ্গা থেকে সাগরে নামার পর অপেক্ষায় ছিলাম ময়ুরপংখী নৌকা হাজির হবে কোথাউ না কোথাউ। ইলাসট্রেশান গুলা দেখে একটা দুইটা ছবিও এক্সপেক্ট করছিলাম। (শুক্তির কয়েনের ছবিটা যেমন সিম্পলি মাইন্ড ব্লোইং। ঐ রকম কিছু।) মধুদামাদ আর মালদারের বাহাসে আছি এখন। মকরপংখী, ময়ালবঙকি, মহিষদমকি, মলয়লংঘী আর মাগুরভংগি নৌকার নাম পড়ে মাথার তার ছিড়া গেল। একশ পাতা উল্টাইলাম নৌকাগুলির ছবির খোজে, পাইলাম না। আমার রিকোয়েস্ট, সম্ভব হইলে নেক্সট এডিশানে এই পাচটা নৌকার ছবি বইতে রাখতে। সারা বইতেই এখন পর্যন্ত দুই পাতা পরে পরে শব্দের নানা পেচগোজ আর খেলা আছে, কিন্তু ময়ুরপংখী নামটারে পাশ কাটায়া ছন্দ মিল ধরে বানানি এই কয়টা নৌকার নাম অসামের উপর অসাম হয়েছে।
গল্প নিয়ে এখনও বেশি কিছু বলব না (it's simply amazing!!)। তবে উকিলি রেফারেন্স হিসাবে 'কাঠিকৌমুদী'-র আইডিয়াটা আমার খুব পছন্দ হইসে, it's like Machiavelli met Khona and they had an ass-baby! Dog Latin-র মত Dog Sanskrit এ adage লেখার ব্যপারটা খুব খুব মজার লাগসে ('বেক্কেলশ্চরিত্রম সুদুরেঃ জানন্তিস'টা ঘরে কাজে লাগাইতেসি)। কাঠিকৌমুদীর দুইটা পাতার ইলাসট্রেশ্ন পাইসি এখন পর্যন্ত, দুইটাই দারুন হইসে। একটা পুরানা রংচটা দাগ পড়া উডকাট প্রিন্টের ভাব আছে। হিজিবিজি দেখে প্রথমে মনে করসিলাম যেমন খুশি তেমন আকা হইসে। কিন্তু পরে একটু গুগল করে দেখি এলফাবেটটা টিবেটান, যেইটা আরো জোশ লাগসে। Looking forward to seeing more of these.
বইটার ছাপা কপি চাই। পিডিফটা পড়তে গিয়া মাথা ধইরে যাইতেসে।
বইটা কোথায় পাব?
এখানে।
মাহবুব আজাদ হিমুর বই বলে কথা ! বইটা আমি সংগ্রহ করি কী করে?
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
সংগ্রহ করার উপায় আপাতত নেই, রণদা। পড়তে চাইলে এখানে গিয়ে একটা মেইল ঠুকে দিন।
বইটার পাতাগুলি এত সুন্দর!! <সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস> কথাটা নানা সময়ে হাসি ঠাট্টা করতে গিয়ে বলি, কিন্তু এই বইয়ের নকশার জন্য এই কথাটাই জুতসই। ওয়াটারকালারে লতি ডাকাতের ছবিটা দেখে এত ভাল লাগল! তেজোসৃপের উল্কিটাও দারুন!
গল্পটা সাংঘাতিক আগাইতেছে। যেমন ফাস্ট তেমনই হিউমারে ভরা। ফেন্টাসি জেনারের মধ্যে এত চরিত্র নিয়ে এই মাপের ডিটেইল আর জমজমাট কাজ বাংলায় মনে হয় এইটাই প্রথম। লেখক প্রকাশক শিল্পী নীড় সন্ধানী, সবাইকে ধন্যবাদ।
রিকোয়েস্ট অ্যাকসেস এ টোকা দিলাম। বইটা পড়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
নতুন মন্তব্য করুন