আগের অংশের লিংক
ডিসক্লেইমার: ইহা একটি খৈ ভাজা পোস্ট
৪. এসি লাগবে না ... কেমনে কী?
বাইরে ঝাঁ ঝাঁ গরম থাকলেও উইপোকার ঢিবির ভেতরে রানীর কক্ষের তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে। শীতকালেও তাই থাকে। কীভাবে? এটার কারণ ওদের গর্তের অ্যারোডাইনামিকসে। আমাদের ভবনগুলোও যদি গরম বাতাস চলাচলের মত করে আকার দিয়ে বানানো হয় (অ্যারোডাইনামিক শেপ) তাহলে কোনরকম পাখা ছাড়াই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখা যাবে। গরম বাতাস বের হয়ে যাওয়ার জন্য ভবনের নিচ থেকে ছাদের উপরে আরো কিছুটা উঁচু করে টাওয়ারের মত ফাঁকা জায়গা বা অ্যাটিক (Attic) রাখতে হবে ..... বসুন্ধরা সিটি শপিং সেন্টারের মাঝে মাঝে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত ফাঁকা জায়গাগুলোর মত। বিশেষত বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে এই পদ্ধতিটি বেশ ভাল কাজ করবে। এছাড়া ঘরের গরম বাতাস যেন সহজে সেই নির্গমণ টানেলে যেতে পারে সেজন্য ছাদের নিচে বীম যেন বেশি বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায় না হয় সেই চেষ্টা করতে হবে।
ছাদের উপরে বাতাস নির্গমনের ফাঁকা টাওয়ারটা উপরের দিকে কিছুদুর উচ্চতা বাড়িয়ে তারপর একদিকে খোলা জানালার মত রাখতে হবে। এখন এই "একদিকে"টা হবে বাতাস যেদিক থেকে প্রবাহিত হয় তার উল্টাদিকে। অর্থাৎ দখিনা বাতাসের স্থলে উত্তর দিকে খোলা জায়গা রাখতে হবে। কারণ বাতাস যেই দিকে ধাক্কা দেয় (এক্ষেত্রে দক্ষিনের দেয়ালে) সেদিকে একটা ধণাত্নক চাপ (positive pressure) তৈরী হয় আর উল্টা দিকে একটা ঋণাত্নক চাপ (negative pressure or suction) তৈরী হয়। সুতরাং এ পদ্ধতিতে বাইরে বাতাস প্রবাহিত হলেই যেমন বিভিন্ন তলার জানালা দিয়ে বাতাস ঘরে প্রবেশ করতে চাইবে তেমনি উপরের অ্যাটিক দিয়ে বাতাস বাইরে টেনে বের করার মত পরিস্থিতি তৈরী হবে। সুতরাং এই বলগুলোর প্রভাবে ভবনের গরম বাতাস বাইরে চলে যাবে আর ঘরে বাইরের অপেক্ষাকৃত শুকনা ও ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করবে। যদি বাতাসের এরকম একমূখী প্রবাহ না থাকে তাহলে অ্যাটিকের চারিদিকেই ঝাপ ওয়ালা জানালা দেয়া যেতে পারে। বিভিন্ন ঋতূতে বাতাসের প্রবাহ অনুযায়ী কোন কোন জানালা বন্ধ রাখলেই হবে।
আবাসিক ভবনগুলোতে এরকম সবার জন্য সাধারণ একটা উপর-নিচ খোলা জায়গা করলে প্রাইভেসির সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে একটা উপায় হল সবগুলো দরজার উপরে বড় ভেন্টিলেটর দেয়া আর সিড়ির ঘরে বাতাস বের হয়ে যাওয়ার মত যথেষ্ট ভেন্টিলেটর। আর ছাদের সিড়ির ঘরটাকে আরেকটু উঁচু করে সেখানে জানালার ব্যবস্থা করা। জানালা দিয়ে বৃষ্টির ছাঁট আসা ঠেকানোর জন্য উপরের ছাদটাকে একটু বাইরের দিকে বাড়িয়ে দেয়া জরুরী।
ইদানিংকার অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে মাঝে মাঝে একটু ফাঁকা জায়গা (Void) রাখতে দেখা যায় যেখানে কয়েকটি ফ্লাটের বাথরূমগুলোর জানালা দেয়া হয় .... যেটা একটা বদ্ধ টানেলের মত উপর নিচ বিস্তৃত। এই voidগুলোর উপরটা ছাদের উপরে একটু বাড়িয়ে অ্যাটিকের মত করে দিলে বাসার অ্যারোডাইনামিক্স ভাল হবে বলেই আমার মনে হয়। আলো আসার সমস্যা এড়াতে এইসব ক্ষেত্রে ছাদের উপরে বাড়ানো অংশ স্বচ্ছ প্লাস্টিক বা কাঁচের ফ্রেম দিয়ে করা যেতে পারে।
বুয়েটের ছাত্র হলগুলোর মধ্যে সোহরাওয়ারর্দী, তিতুমীর, শেরেবাংলা হলের এবং সেন্ট্রাল ক্যাফেটেরিয়ার রান্না করার জায়গায় একপাশে এরকম অ্যাটিকের মত উঁচু করে চিমনী বানানো আছে বলে মনে পড়ে। অবশ্য ফ্লাট/অ্যাপার্টমেন্টগুলোর রান্নাঘরের জন্য অমন করা সম্ভব নয়। তাপ নির্গমনের সুবিধার্থে রান্নাঘরগুলোর বাইরের দেয়ালে বীম না দিলে সবচেয়ে ভাল হয়। বীম দিতেই হলে সেটা ইনভারটেড বীম হতে পারে (অর্থাৎ ছাদের উপরে, যেটা উপরের তলার দেয়ালের সাথে মিশে থাকবে। আর তখন ঘরের সবচেয়ে উঁচু জায়গায় বড় ভেন্টিলেটর দেয়া সম্ভব হবে; ভেন্টিলেটরের উপরে এক/দেড় ফুট প্রশস্থ সানশেড দিলে ভাল হয়। যেসব বাসায় রান্নাঘরের সাথে বারান্দা দিয়ে বাইরের যোগাযোগ, সেখানে উপরে ফাঁকা ভেন্টিলেটর তো দিতেই হবে, পাশাপাশি বারান্দার ছাদের ঝুলের (drop wall) মধ্যে যথেষ্ট ফাঁকা জায়গা (ছিদ্র) রাখা দরকার যেন ছাদের নিচ দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
আরেকটা ভাল বুদ্ধি হল চুলার উপরে হুড লাগানো। হুডটা চারকোনা আকৃতির উল্টা ফানেলের মত, যেটার মোটা পাইপটা ভেন্টিলেটর বা দেয়ালে ছিদ্র করে বাইরে বের করে দেয়া যেতে পারে। এতে চুলার গরম বাতাস সরাসরি বাইরে চলে যাবে। অর্থাৎ গরম বাতাসকে যত্রতত্র জমতে না দিয়ে গাইড করে ঘর থেকে বের করে দেয়া। হুডের মোটা পাইপে এগজস্ট ফ্যান লাগানো যেতে পারে। এখানে একটা কথা না বললেই নয় .... হুডের ভেতরে নিচের দিকে মুড়িয়ে ড্রেনের মত রাখা দরকার; তা না হলে উপরে জমা তেল টপ টপ করে যত্রতত্র পরে নিচটা নোংরা করবে। ইতিমধ্যেই তৈরী হয়ে গেছে সেরকম বাসায় এই বুদ্ধি বেশ কাজে লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস।
ঘরের পার্টিশন দেয়ালের উপরের দিকে (বীমের নিচে, অভ্যন্তরীন ভেন্টিলেটরের জায়গায়) আড়াআড়ি ভাবে লম্বা জানালা দিলে ঘরের ভেতরে ক্রস ভেন্টিলেশনে সুবিধা হয়।
জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরূমগুলোর করিডোরের সাথের দেয়ালের মেঝে বরাবর জানালা দিতে দেখেছিলাম। জানালাগুলো মেঝের সাথে লাগানো এবং এক ফুটের মত উচ্চতার। এটার কারণও ভেন্টিলেশন। ক্লাসরূমে অনেক ছাত্র একসাথে থাকলে দ্রুত ওখানকার বাতাস গরম হয়ে উপরের দিকে উঠে যাবে। তখন ঐ জানালাগুলো দিয়ে করিডোরের ঠান্ডা বাতাস ক্লাসরূমে প্রবেশ করে।
এছাড়া বাথরূমগুলো যেন স্যাঁতস্যাঁতে যেন না থাকে সেজন্য বাথরূমের দরজার নিচের দিকে খড়খড়ি দেয়া যেতে পারে। এতে সবসময়ই বাথরূমে ঘর থেকে শুকনা বায়ু প্রবাহ থাকবে।
সিলিং ফ্যান ছাদের বাতাসকে টেনে নিচের দিকে ছুড়ে দেয়। গরমের দিনে ঘরে ঢুকে ফ্যান চালালে সেজন্য প্রথমেই গরম বাতাস গায়ে লাগে। এটা চালানোতে বাতাস ঠান্ডা হয় না, কিন্তু তারপরেও আমাদের আরাম লাগে কারণ গায়ের চারপাশে বাতাস প্রবাহিত হতে থাকলে শরীর থেকে উৎপন্ন বাষ্প এবং তাপ দ্রুত সরিয়ে নিয়ে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শ দেয়। সিলিং ফ্যান যদি ছাদে না হয়ে জানালা বরাবর টেবিল ফ্যানের মত হত তাহলে কিন্তু ব্যাপারটা আরো কার্যকর ভাবে হত। ঘরে অনেক বন্ধুবান্ধনের ভীড়ে গরমে ঘামতে থাকলে তাই ফ্যান চালিয়ে খুব একটা সুবিধা হয় না কারণ ঐ ফ্যান ঘরের বাতাসকেই শুধু ওলট-পালট করতে থাকে। এসব ক্ষেত্রে একটা টেবিল ফ্যান বা প্যাডস্ট্যান্ড ফ্যানকে জানালার সামনে রাখলে ওটা বাইরের বাতাস টেনে ঘরে আনবে যেটা বেশি আরামদায়ক ফল দেবে। যদি এরকম করলে ঘরের খাবার ঠান্ডা হওয়ার আশঙ্কা থাকে, কিংবা টেবলক্লথ উড়ে যায় তাহলে ফ্যানটাকে ঘুরিয়ে ঘরের বাতাস বাইরে ছুড়ে দেয়ার মত করে রাখতে পারেন। এতে ঘরের ভেজা/আদ্র বাতাস বাইরে চলে যাবে এবং অন্য জানালা/দরজা দিয়ে অপেক্ষাকৃত শুকনা বাতাস ঘরে প্রবেশ করে ঘরের আবহাওয়াকে আরামদায়ক করবে।
এইবার কয়েকটা বাস্তব অভিজ্ঞতার তেনা প্যাচাই একটু-
ভেন্টিলেশন বাদে গরমের দিনে বাসা ঠান্ডা রাখার পরোক্ষ উপায়গুলো:
ছাদে গাছ: কোন ভবনের সবচেয়ে উপরের তলার বাসিন্দাগণ ছাদ থেকে আসা সূর্যের তাপের কারণে অতিরিক্ত গরমে আক্রান্ত হন। এ ধরণের গরম কমানোর জন্য ছাদের উপরে ড্রামে করে সবুজ গাছ লাগানো যেতে পারে। এতে যেমন ছাদের সৌন্দর্য্য বাড়বে তেমনি গাছের সালোকসংশ্লেষণের কারণে সূর্যের আলো এবং তাপ শোষন করে ছাদে ছায়া দেবে। কিছুদিন পূর্বে অলিম্পিকের সময় চীনের কোন এক শহরের গরমের দিনে এয়ার কন্ডিশনিং-এর শক্তি সাশ্রয়ের জন্য এমন ছাদজুড়ে সবুজের সমারোহ দেখেছিলাম টেলিভিশনে। গরমের দিনে গাছের তলে কেন ভবনের ছায়ার চেয়ে বেশি ঠান্ডা অনুভুত হয় তা নিশ্চয়ই এখন আর ব্যাখ্যা করতে অসুবিধা হবে না।
পর্দা ভেজানো: বাইরে থেকে গরম বাতাস আসলে, পর্দাগুলো ভিজিয়ে দিন। কাজটা খুবই সহজ, একটা বড় মগ বা গামলায় পানি এনে পর্দা জানালায় থাকা অবস্থাতেই গুটিয়ে ভিজিয়ে নেয়া যায়। এতে বাইরের বাতাস ভেতরে আসার সময় পর্দার পানি শুকানোর জন্য কিছু তাপ হারিয়ে কিছুটা ঠান্ডা হবে।
৫. বাতাস নিয়ে এত প্যাচাল কেন?
পলিথিনের রেইনকোট একটু সময় পড়ে থাকলেই দেখবেন যে বাতাস আদানপ্রদানের অভাবে ভেতরটা কেমন ভেজা ভেজা হয়ে গেছে। আমরা প্রতিনিয়ত শরীর থেকে জলীয় বাষ্প এবং তাপ ছাড়ছি। এইগুলো যদি সরিয়ে ফেলা না হয় তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই খুবই অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হবে। তাই সুস্থ থাকার জন্য প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশের বাতাসকে পরিবর্তন করতে হয়, বাইরে থেকে অপেক্ষাকৃত কম কার্বন ডাই-অক্সাইড, তাপ ও জলীয়বাষ্পযুক্ত বাতাস ঘরে আসার ব্যবস্থা রাখতে হয়। আমাদের শরীর ছাড়াও ঘরে থাকা বৈদ্যূতিক যন্ত্রপাতিও ঘরের বাতাস গরম করতে থাকে। তাপ ছাড়াও এই সকল যন্ত্রপাতি এবং কিছু কিছু রাসায়নিকে পদার্থ থেকে (দেয়ালের রং-ও এমন করতে পারে) সবসময় অল্প অল্প করে কিছু বিষাক্ত পদার্থ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। তাই বাসযোগ্য ঘরের বাতাস নবায়ন করা খুবই জরুরী।
স্থাপত্যকৌশলে ভেন্টিলেশনের ব্যাপারগুলো পড়ানো হয়। ভাল ভাল স্থপতিগণের নকশা করা ভবনে তাই খুব খোলামেলা (ভেন্টিলেটেড) হয়। ইদানিং অবশ্য অনেকজায়গাতেই কাঁচঘেরা সুদৃশ্য দালান তৈরী হচ্ছে যেগুলোতে বাইরে থেকে বাতাস চলাচলের তেমন কোন উপায় থাকে না। এরকম ক্ষেত্র ছাড়া খুব ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় স্বাস্থ্যকর বাতাস সরবরাহের জন্য ইদানিং এসির ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই এয়ার কন্ডিশনারগুলো প্রচুর শক্তিব্যয় করে সার্বিক ভাবে জ্বালানীর খরচ বাড়িয়ে দেয়। সেজন্য ভবনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অনেক বেড়ে যায়। তাই আধুনিক স্থাপত্যবিদ্যায় প্রাকৃতিক নিয়মেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন এবং বাতাস নবায়নের উপায়গুলো অভিযোজন করার বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে।
বাসগৃহ ও কর্মস্থল ছাড়াও কিছু কিছু জায়গা আছে যেগুলোতে বাতাস নবায়ন করা অত্যন্ত জরুরী। প্রাকৃতিক উপায়ের সম্ভব হউক বা না-হউক এসব জায়গায় এগজস্ট ফ্যান ব্যবহার করতে হবে। তাই আপনার আশেপাশে এমন স্থানগুলো একটু খেয়াল করে দেখুন ঠিক আছে কি না ....
৬. যদি আরো পড়তে চান .... (তথ্যভাণ্ডার)
উইকিপিডিয়া:
http://en.wikipedia.org/wiki/Natural_ventilation
http://en.wikipedia.org/wiki/Ventilation_(architecture)
ম্যাসাচুসেটস্ ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি:
http://stuff.mit.edu/afs/soap.mit.edu/arch/project/naturalventilation/
ইউনিভার্সিটি অব হংকং: স্থাপত্য বিভাগ
http://www.arch.hku.hk/teaching/lectures/airvent/
http://www.dyerenvironmental.co.uk/natural_vent_systems.html
BNBC, 2003 (বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড, নিউমার্কেট বা নীলক্ষেতে পাবেন ৬০০ - ৮০০ টাকা)
মন্তব্য
এতো জ্ঞান অর্জন করলাম যে, এখন নিজেকেই ইঞ্জিনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার মনে হচ্ছে। যদিও সিস্টেমে কোন গন্ডগোল থাকলে আদৌ কিছু করতে পারবো না চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
এসব জিনিষ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়ানো হয় না। কিন্তু আমি যেখানে মাস্টারি করি সেখানকার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সিলেবাসে ভেন্টিলেশন আছে। যেটা আগে কেউই পড়াইতো না। এখন কেমনে কেমনে জানি ঐ ক্লাসের দায়িত্ব আমার ঘাড়ে পড়ার পর পাগলের মত বইপত্র ঘেটে কিছুই পাই নাই। শেষে দেখি আমাদের ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড-এ ঐ জিনিষ আছে।
আমার ধারণা, যারা সিলেবাস তৈরী করেছিল তারা BNBC কমিটিতে ছিল। তাই এগুলো গছিয়ে দিয়েছে। এই বিষয়টাই বাদ দেয়ার চিন্তাভাবনা করে অনেকে, কিন্তু আমার ধারণা, এগুলোকে খুব সাধারণ/সামান্য মনে হলেও স্বাস্থ্যকর আবাসনের জন্য এদের সার্বিক প্রভাব অসাধারণ।
পয়েন্টটা হল, এগুলো জানার জন্য ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার দরকার নাই। শত শত বছর ধরে প্রকৃতি থেকে মানুষ একটু একটু করে যা শিখেছে সেগুলোকেই ক্যাপসুল আকারে মাত্র ৪ বছরে গিলিয়ে দিয়ে বলা হয় যে ইঞ্জিনিয়ার/ডাক্তার ইত্যাদি .... ... অথচ যারা এগুলো আবিষ্কার/উদ্ভাবন করেছিল তাঁদের কিন্তু এই ডিগ্রি ছিল না। সার্টিফিকেট থাকলেই জ্ঞানময় হয় না, আর জ্ঞানময় হওয়ার জন্য সার্টিফিকেটও জরুরী না।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
এত্তকিছু?!!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আগামীতে কারো বাড়ির/অ্যাপার্টমেন্ট বানানো/কেনার সময় যথেষ্ট ঝাড়ি দিতে পারার জন্য অনেক অপশন জানা থাকলো .... এইটা ভাল না ... অ্যারোডাইনামিক্স ভালো না ... ক্রস ভেন্টিলেশনের জন্য কী করেছেন .... আর্কিটেক্ট ঘাবড়িয়ে যাবে
আর নিজের জন্য মিন্ট লজেন্স .... বেশ ঠান্ডা লাগে কিন্তু!
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
এই জিনিস এদেশে লাগাতে দেখছি । আমাদের দেশে হয় নাকি?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
কয়েকটা দোকানে দেখেছি। বিলাসবহুল কিছু অ্যাপার্টমেন্টে সম্ভবত এগুলো এবং কিচেন-ক্যাবিনেট দেয়।
এখন এই পোস্ট পড়ে যদি বাড়ির নির্মাতা বা মালিক ঐ জিনিষ খোঁজে তাহলে আরও ব্যাপক ভাবে এটার প্রচলন ঘটতে পারে।
সুতরাং বাইরে যেগুলো ভাল মনে হয় সেগুলোর অনেকগুলোই এখানে আস্তে আস্তে স্থায়ী হচ্ছে।
এছাড়াও কিছু অভ্যাসেরও আমদানী ঘটেছে:
এতে দেশ আগাচ্ছে না পিছাচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না ....
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
দুর্ধর্ষ পোস্ট!
এই সেমেস্টারে শক্তিসাশ্রয়ী নির্মাণকৌশল নিয়ে একটা পেপার ছিলো। খুব একটা ভালো গ্রেড আসেনি, তারপরও অনেক কিছু শেখা হয়েছে। এখানে আলো ও তাপের ব্যাপারে স্ট্যান্ডার্ড বেশ কড়া। উল্টাপাল্টা ডিজাইন করে পরে বেশি বিদ্যুৎ খরচ কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
আমাদের দেশে পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী নির্মাণরীতি অনুসরণ করা এখন অত্যন্ত জরুরি। ঢাকায় প্রতিদিন নাকি ৩৫টি করে নতুন গাড়ি নামছে। সস্তায় সিএনজি পাওয়া যায়, অতএব প্রতিটি গাড়িই শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। অফিস-বাড়ি সেগুলোও শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। ফলে এই বাড়তি তাপটুকু ছড়িয়ে পড়ছে আশেপাশে, রাস্তাঘাটে। গ্রীষ্মে ঢাকার ব্যস্ত এলাকাগুলি দিয়ে হাঁটতে গেলে অসুস্থ লাগে। গাছ নাই, চারপাশে কংক্রীট, যা তাপ ধরে রাখে দীর্ঘক্ষণ ধরে।
আমি মনে করি সামনে সব ভবনের ওপরই ক্লোরোফিল-আইন বসানো উচিত। ভবনের এক্সপোজড কংক্রীটের আয়তন (কিউবিক মিটারে) অনুযায়ী নির্দিষ্ট ক্ষেত্রফলের (মিটার স্কোয়্যার্ড) গাছ ভবনে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।
শুনলাম বাংলাদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। আমি বিদ্যুতের ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিলাসকে নিরুৎসাহিত করার পক্ষে। তাই শুধু ক্যাপাসিটি, এনার্জি আর সার্ভিস নয়, বিদ্যুতের দামের সাথে সার্ভিস এরিয়াকেও আমলে আনা উচিত বলে মনে করি। যেমন, ১২০০ বর্গফুটের ওপরে বাড়ি হলে তাতে আলাদা চার্জ দিতে হবে বিদ্যুতের জন্যে (কারণ বাড়ির ক্ষেত্রফল যত বড় হবে, বিদ্যুৎ খরচও তত বাড়বে আলো, তাপ ও আনুষঙ্গিক কনজামশনে)। লোড ২ কেভিএ অতিক্রম করলে অতিরিক্ত চার্জ গুণতে হবে। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎ কনজামশন অতিক্রান্ত হলে বাড়তি চার্জ বহুগুণিত হবে (আমাদের এখানে ১০০ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত একই রকম)।
আমরা যা উপলব্ধি করি না, তা হচ্ছে, বিদ্যুৎ আমরা পৃথিবীর বহু দেশের চেয়ে অনেক সস্তায় পাই। গ্যাসের ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। সস্তায় পাই দেখে আমরা পাত্তা দেই না, এবং আমাদের পকেট থেকে টাকা বের হয় না বলে অবকাঠামোর পেছনে পাবলিকের পয়সা বিনিয়োগ করা যায় না। আজ যদি গার্হস্থ্য বিদ্যুতের দাম ইউনিট পিছু দশটাকা হতো, তাহলে দেশের বিদ্যুৎ অবকাঠামোর পেছনে খরচ করার মতো টাকা উঠে আসতো, লোকজনও বুঝে শুনে খরচ করতো। এ কথা ঠিক, যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্যে বিশ্বব্যাঙ্ক, এডিবি গোছের (বাঁশ)দাতাগোষ্ঠীর চাপ আছে, কারণ বিদ্যুতের দাম না বাড়লে বিদেশী বেনিয়ারা এসে এখানে ব্যবসা করতে চাইবে না, কিন্তু বিদ্যুতের দাম না বাড়লে তো আমাদের দেশী ব্যবসায়ীরাও শক্তিখাতে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হবেন! চিন্তা করে দেখুন নির্মিতব্য চারশো মেগাওয়াটের প্ল্যান্টটির কথা, সেটি দেশী প্রতিষ্ঠানকে না দিয়ে দেয়া হয়েছে একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে, যারা নানা আপত্তিকর শর্তও জুড়ে দিয়েছে। বিদেশীদের লুটপাট বন্ধ করার জন্যে যে মানসিকতার প্রয়োজন, তা আমাদের মন্ত্রীসচিবদের নেই। কাজেই ঐসব অজুহাত দিয়ে এই সেক্টরকে খোঁড়া বানিয়ে রাখার কোন অর্থ হয় না।
হাঁটুপানির জলদস্যু
সার্বিক ভাবে আমাদের দেশে শক্তির অপচয় খুবই কম। অন্য জায়গায় এক লোক এক গাড়ি .... আর এখানে ৩০ সিটের বাসে ৫০ জন যায়। টিউবলাইট এবং সাশ্রয়ি বাতির ব্যবহারও অনেক বেশি।
অদক্ষতার কারণে অপচয় কিছুটা হয়। কিন্তু অভ্যাসের কারণে তেমন অপচয় হয় না। তারপরেও টাইটের ওপর থাকলে সেটা সার্বিক ভাবে ভালই হবে।
বাইরে থেকে দাম বাড়াতে বলে: এটাকে যুক্তিযুক্ত হলেও এর আড়ালে অন্য উদ্দেশ্য (vested interest) যে থাকে সেটা আপনিই বললেন। আমেরিকা আর ইউরোপে যেখানে কৃষিতে ৩০% এর মত ভর্তূকী দেয়, বাংলাদেশে সেখানে মাত্র ২% এরও কম দেয় ... তারপরও ওরা সন্তুষ্ট হয় না ....
আপনার মন্তব্যে (বিপ্লব)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
শিক্ষাসফরীয় পোস্ট।
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
কত ভাল ভাখ পোস্ট মিস করে যাই
পোস্টে উত্তম জাঝা
অসাধারণ পোস্ট। অনেক জানা-অজানা বিষয় একসাথে পেয়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
______________________________________
চোখ যে মনের কথা বলে, চোখ মেরেছি তাই
তোমার চোখের শূল হয়েছি, এখন ক্ষমা চাই
______________________________________
লীন
থ্যাঙ্কু ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
নতুন মন্তব্য করুন