(বাঁচতে হলে জানতে হবে টাইপ কথাবার্তা আছে ... খোকা খুকিদের না পড়াই ভাল)
আমার ছোটভাই শাহেদের বাচ্চার বয়স প্রায় ৬ মাস। হাসিখুশি আমার এই ভাস্তিটার জন্মের সময়টার কথা মনে পড়লে এখনও ঐ ডাক্তারের উপর রাগে মাথায় রক্ত চড়ে যায়। শাহেদের বউ আমাদের কাজিন ছিল (আছে)। গর্ভের কয়েক মাসের সময় বাইরে বেশি ঘুরাঘুরি করার জন্য সম্ভবত হঠাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে পড়লো। ডাক্তার পরামর্শ দিল বেড-রেস্টে থাকার জন্য। এই সময়টাতে গর্ভবতী মেয়েরা সাধারণত তাঁদের মায়ের কাছে চলে যায় --- এই রেওয়াজ জাপানেও দেখে এসেছি। সুতরাং ও সাভারে ওদের বাসায় চলে গেল।
সাভারেই একটা ক্লিনিকের ডাক্তারকে দেখানোর ব্যবস্থা করা হল। ঐ লেডি-ডাক্তারের দেশের বাইরের বড় ডিগ্রী আছে, উপরন্তু শাহেদের সম্বন্ধীর (আমাদের ..তুতো ভাই) খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মা উনি। ক্লিনিকটা ঢাকা থেকে গেলে সাভার বাজার পার হয়ে কিছুদুর পরে প্রধান রাস্তার বামপাশে অবস্থিত (ভেলরি টেইলরের সি.আর.পি. ওটার উল্টা দিকে কিছুটা ভেতরে)। ডাক্তার সাহেবের আলিশান বাড়িটাও ক্লিনিকের সাথেই লাগোয়া। কাজেই বেশ নির্ভরতার সাথেই ওনার পরামর্শ মেনে চলতে থাকলো ওরা। বাইরের দেশগুলোতে গর্ভবতী মায়েদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয় ... সিজারিয়ান অপারেশন ছাড়াই স্বাভাবিক প্রসবের জন্য তাঁদের নিয়মিত বিভিন্ন ব্যায়াম করানো হয়। জাপানে থাকার সময় এই ব্যাপারটা দেখেছি .... কেউ আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের জুনিয়র সিনেমাটা দেখে থাকলেও এই ধরনের সিন দেখে থাকবেন। অথচ, আমাদের ডাক্তার এ ধরণের কোন পরামর্শই দিয়েছে বলে কখনো শুনিনি। বরং সবসময়ই এমন কথা বলেন যে সব ঠিক আছে ইত্যাদি।
ফলে শুয়ে থাকতে থাকতে গর্ভবতীর ওজন বেড়ে গেল অস্বাভাবিক। ডেলিভারির সময়ে ঐ ক্লিনিকে ভর্তি করানো হল এবং বাচ্চার পজিশন ঠিক নাই এমন আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট দেখিয়ে সিজার করা হল। আমার ছোটচাচা হোমিওপ্যাথির ডাক্তার, থাকেন সেই কুড়িগ্রামে। উনি পরে বলেছিলেন যে, আসলে বাচ্চার পজিশনের যেই ব্যাপার দেখিয়ে সিজারিয়ান করানো হয় তার বেশিরভাগই ঠিক না। বাচ্চা শুরুতে উল্টা পজিশনেই থাকে। তারপর যতই প্রসবের দিন ঘনিয়ে আসতে থাকে ততই বাচ্চা ঘুরে পজিশনে আসতে থাকে; বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্লিনিকওয়ালাগণ সিজারিয়ান অপারেশন করে টাকা কামানোর জন্য এই পজিশনে আসার আগেই আল্ট্রাসনোগ্রাম করে উল্টা পজিশনের ছবি নেয়। পাশাপাশি ডেট পার হয়ে যাচ্ছে, ঠিক সময়ে প্রসব না হলে বাচ্চার ক্ষতি হবে -- এসব কানপড়া দিতে থাকে। পানি ভেঙ্গে গেলে বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার কথাটা পুরাপুরি সত্য, কিন্তু সময় পার হয়ে যাচ্ছে ... এই কথাটা আতঙ্কিত করানোর জন্য বলা হয়; কারণ তা না হলে কয়েকদিন পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রসব হবে ... ওদের সিজারিয়ানের দাও মারা হবে না। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখা ভাল - আমার ছোটচাচীর ৫জন সন্তান (+১ জন জন্মের পর মারা গিয়েছিল) সকলেই স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে।
যেদিন সন্ধ্যায় বাচ্চা হল, তার পরদিন দেখতে গেলাম। বাচ্চা কোলে নিয়েই মনে হল ওর গায়ে জ্বর। আঙ্গুল দিয়ে বাচ্চার ভ্রুর উপরে এবং কপালে একটু ঘষে ম্যাসেজ করে দিলে বাচ্চা আরামে চোখ বন্ধ করে ফেলে। বাচ্চার মা-বাবা, খালারা সকলের কাছেও তাই মনে হল। তখন বাচ্চার মা বলছিল যে গতরাত্রে যখন সিজারিয়ান করতে নিয়ে যাওয়া হল তখন ঐ কক্ষের তাপমাত্রা এত কমানো ছিল যে ও ঠান্ডায় কাঁপছিলো। এই ঠান্ডার মধ্যে বাচ্চা বের করে ওরা বলাবলি করছিলো যে দূর্বল বাচ্চা ... অবস্থা সুবিধার দেখছি না। তারপর ওর রূমে আসার পর জোর করে বাচ্চাকে একটা ইঞ্জেকশন দিয়েছে।
কাহিনী এখানে শেষ হলেও খুশি হতাম। কিন্তু তারপর আমি চলে আসার পর বাচ্চার নানী যখন বাচ্চার কাপড় পাল্টাতে গেল তখন ভক করে নাকে দূর্গন্ধ এসে লাগলো। বাচ্চা ভুমিষ্ট হওয়ার পর ওকে গরম পানি দিয়ে গোসল দেয়ানোর কথা ... কিন্তু এখানে তা-ও করা হয়নি। একেই তো এয়ার কন্ডিশনারের ঠান্ডায় বাচ্চা কুঁকড়ে ছিলো তার উপর গোসল না দিয়ে কোনো রকমে তুলা দিয়ে মুছিয়ে তোয়ালে জড়িয়ে দিয়েছে। স্তম্ভিত নানী তারপর তাড়াতাড়ি করে গরম পানিতে বাচ্চাকে ধুইয়েছে। শুরুতেই বাচ্চাকে এরকম অসুস্থ করানোর জন্য ক্লিনিকওয়ালারা চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেনি বলে মনে হল (প্রসুতিকে ঠিকভাবে গাইড করেনি, স্বাভাবিকের বদলে সিজারিয়ান, কনকনে ঠান্ডা রূমে প্রসব করিয়ে বাচ্চাকে ঠান্ডা লাগানো, গোসল না দিয়ে জীবানুদের সুযোগ করে দেয়া, ইঞ্জেকশন?)। ফলে বাচ্চা এর পর বেশ কিছুদিন জ্বর, নাড়ি কাঁচা থাকা এবং জন্ডিসে ভুগেছে।
যা হোক অপারেশনের ক্ষত শুকানো মাত্র ঐ ক্লিনিক থেকে ওদেরকে রিলিজ করিয়ে আনা হয়েছে। ঐ কসাইখানা থেকে জীবিত বাচ্চা এবং মা-কে নিয়ে বের হয়ে আসতে পেরে আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ। নানীবাড়ি থেকে ঢাকায় আনার পর ঐ কয়েকদিনের বাচ্চাকে নিয়ে ঢাকায় রক্ত পরীক্ষা করানো হল ... বাচ্চা আমার কোলে, শাহেদ ক্লিনিকের কাউন্টারে কথা বলছে। যখন রক্ত নিল তখন বাচ্চা আমার কোলে --- সুঁইয়ের সাইজ ওর পায়ের পাতার চেয়ে বড়। পায়ের পাতা থেকে রক্ত নিল। রক্ত/সুঁই এই জিনিষগুলো আমি খুব ভয় পাই - দেখতে পারি না (যদিও নিজে আবার এদিক দিয়ে বেশ ভাল ছিলাম ... মাথা কামাইলে এখনও শুধু ঐটুকুতেই দুই ডজন দাগ দেখা যাবে, বাকী দেহের কথা না হয় বাদই দিলাম)। রক্ত নেয়ার সময় আমি বাচ্চাকে ধরে রেখেছিলাম .. .. যে লোক রক্ত নিল সে, শাহেদ সবাই আমাকে অভয় দিচ্ছে ... দৃশ্যটা বেশ মজার এবং করুণ। জন্মের সময় থেকেই বেচারীকে ভীষন প্রতিকূলতার বিরূদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়েছে - দূঃখ লাগে এজন্য যে সেই প্রতিকূলতাগুলো কৃত্রিমভাবে কিছু মানুষই(?!) সৃষ্টি করেছিলো।
মাঝে মাঝে ভাবি, বিদেশে যেখানে স্বাভাবিক প্রসবের জন্য এ্যাত চেষ্টা করা হয় সেখানে আমাদের কিছু ডাক্তার/ক্লিনিকগুলো এ্যাত কসাইগিরি করতে চায় কেন? টাকা কি মানুষকে এ্যাতই খারাপ বানিয়ে দেয়? যাদের উপর জীবনের জন্য নির্ভর করে মানুষ, তারাই কিনা এটা নিয়ে ছিনিমিনি খেলে! .... .... আরেকটু চিন্তা করলে বুঝি যে এটা আমাদের সিস্টেমের জন্যই হয়েছে। এদেশের বাস্তবতায়, এই সিস্টেম ভুল না শুদ্ধ সেই তর্ক তোলা থাক আপাতত। অন্য দেশের ডাক্তারগণের স্বাভাবিক প্রসবপ্রীতির পেছনেও টাকার ক্ষুধা কাজ করে - সেটা কেন তা ব্যাখ্যা করি একটু। জাপান বা অন্য উন্নত দেশে সকলের রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বীমা থাকে। চিকিৎসা খরচ দেয় সরকার, কিছু ক্ষেত্রে রোগীকে খরচের সামান্য অংশ বহন করতে হয়। অন্য দেশের কথা জানিনা, জাপানে প্রতি সন্তান প্রসবের জন্য ঐ ক্লিনিক/হাসপাতাল/ডাক্তার বেশ ভাল একটা টাকা পায় সরকার থেকে। এই টাকার পরিমান নির্দিষ্ট। কাজেই স্বাভাবিক প্রসবের বদলে যদি সিজারিয়ান করানো লাগে তাহলে ঐ ডাক্তার/ক্লিনিকের খরচ বেড়ে যাবে - ভাগের টাকা কম পড়ে যাবে। তাই ওরা প্রানান্ত চেষ্টা করে যে স্বাভাবিক ডেলিভারি হউক। অনেকক্ষেত্রেই সিজারিয়ান দরকার এমন রোগীকেও স্বাভাবিক প্রসব করানোর চেষ্টা থাকে। যেটা আমাদের দেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্যাসেকটমি করানোর সেই প্রজেক্টের কথা মনে করিয়ে দেয়।
অসুখ বিসুখ হলে তাই পারতপক্ষে ডাক্তারের কাছে যাই না। ওমুখো না হওয়ার জন্য নিয়ম কানুন মেনে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার দাবার খাওয়ার চেষ্টা করি। আর, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা নেয়াটা হল আমার সর্বশেষ অপশন। দরকার হলে হোমিও ঔষধ খাই। অপেক্ষাকৃত কম প্রচারওয়ালা এই চিকিৎসা পদ্ধতিটা সম্পর্কে আজেবাজে কথা প্রচলিত থাকলেও জার্মানিতে আবিষ্কৃত এবং জার্মানি /আমেরিকা /পাকিস্থান /ভারত /বাংলাদেশে তৈরী ঔষধওয়ালা এপদ্ধতিতেই বেশি আস্থা রাখি (এক্ষেত্রে চিকিৎসা খরচ এবং সুঁই-এর অনুপস্থিতি আমার জন্য একটা বিরাট ইস্যূ)।
দেশে ভাল অনেক ডাক্তার আছেন ... যাঁরা সত্যিকারের চিকিৎসার উদ্দেশ্য নিয়েই চিকিৎসা করেন (এই মুহুর্তে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাগ্রহণরত স্ত্রীর পাশে বসে লিখছি)। তাঁদের অসম্মান করা এই পোস্টের উদ্দেশ্য নয়। নীতিগত ভাবে আমি হোমিও চিকিৎসা নেয়ার পক্ষপাতি হলেও বেশ কিছু ডাক্তার (এলোপ্যাথি) চিরজীবনই আমার কৃতজ্ঞতা পাবেন। আমার খারাপ অভিজ্ঞতাগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা; এতে, ডাক্তার বা চিকিৎসাপদ্ধতি খারাপ - এমন কোনো জেনেরালাইজেশনে না যাওয়াই ভাল।
(৭-মার্চ-২০০৯, বিকাল ৩:৩০)
মন্তব্য
শামীম ভাই,
বাচচার জন্মের পর নাভী না পড়া পর্যন্ত মনে হয় গোসল না দেয়াই উচিত। নাভীতে পানি ঢুকলে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে। ডাক্তারের পরামর্শে এ সময় পর্যন্ত আমরা শুধু ভেজানো কাপড় দিয়ে গা মুছে দিতাম আর মাথায় পানি দিতাম। নাভী পড়ার পর 'প্রথম গোসল'। দেশি ডাক্তার তাই মনে হয় এক্ষেত্রে ঠিকই করেছিল।
বাচচা শুরুতে উলটানো থাকে। এরপর ধীরে ধীরে মাথা নীচের দিকে নামতে থাকে। বেশি বেশি হাঁটা হলে এ নামার কাজটা ত্বরান্বিত হয়। গর্ভধারণ অবস্থায় তাই নিয়মিত প্রতিদিন (অন্তত শেষের কয়েক মাস) অন্তত আধঘন্টা হাঁটা উচিত। এটাও ডাক্তারের পরামর্শ । বাংলাদেশের গ্রামের মহিলাদের দেখবেন প্রায় সবারই স্বাভাবিক প্রসব হয়। কারণ তাঁদের অনেক কাজ-কর্ম করতে হয় এবং যে পরিমাণ হাঁটা লাগে তাতে বাচচা উলটে নীচে নেমে আসে। শহরের মেয়েদেরই শুধু এ সমস্যা।
বাচচা হওয়ার প্রসেসে প্রসব যন্ত্রণাটাই সবচেয়ে ভয়ংকর। দেশে মেয়েদের শুধু একা এ যন্ত্রণা পোহাতে হয়। আত্মীয়-স্বজন পরিবেষ্টিত থাকায় স্বামীদের এ অভিজ্ঞতা হয় না বললেই চলে। কিন্তু বিদেশে সে সুযোগ নাই আমার স্ত্রী এখন মনে করতে পারে না, সে কী ভয়ংকর কষ্টের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল (কারণ তাকে প্রচন্ড ব্যথা উঠায় ঘুমের ওষুধ দেয়া হয়েছিল, ঘুমের মধ্যেই সে ব্যথা উঠলে একটু পরপর জেগে উঠে 'মারা যাচ্ছি, মারা যাচ্ছি' করে চিৎকার করত; পুরা হরর ফিল্মের অবস্থা)। কিন্তু ঐ রাত আমাকে সারাজীবন তাড়া করে বেড়াবে। আর সেজন্য এখন দ্বিতীয় বাচচার চিন্তা বাদ দিয়েছি।
বিদেশে যারা আছেন এবং বাচচা নেয়ার চিন্তা করছেন, এখানে হাসপাতাল থেকে 'পেইন ম্যানেজমেন্ট' এবং বাচচা-প্রসব সম্পর্কিত আরো অনেক ক্লাস করানো হয় (ফ্রি নয়)। প্রসবের আগে অবশ্যই বাবা-মা দুজনেই করে নেবেন, খুব উপকারী। দেশ থেকে যদি কোন আত্মীয় না আসে, তখন বাচচার মা-কে সামলানোর জন্য এক আপনি ছাড়া আর কেউ থাকবে না। ডাক্তার, নার্স শুধু শেষ সময়ে পাওয়া যাবে।
আমি জানি না দেশের এখন কী অবস্থা, তবে বিদেশে এখন বাচচা ভূমিষ্ঠ হওয়ার ব্যাপারটা ইজি হয়ে গেছে। 'এপিডিউরাল' নামের একটা ইনজেকশন দিয়ে মা-কে অবশ করে ফেলা হয়। ঐ সময় কোন লেবার পেইন ছাড়াই বাচচা ভূমিষ্ঠ হয়। 'এপিডিউরাল' নেয়াটা অপশনাল। আপনি চাইলে নাও নিতে পারেন প্রসবকালীন অভিজ্ঞতার জন্য। তবে আমেরিকার ৭৫% মহিলা এখন এই ইনজেকশন নেয়। একটু দীর্ঘ সময় অবশ থাকা ছাড়া এর তেমন কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই। তাই মাদের জন্য পরামর্শ- সুযোগ থাকলে অবশ্যই এপিডিউরাল নিয়ে নেবেন। অনেক যন্ত্রণার হাত থেকে বেঁচে যাবেন। আর চাই, বাংলাদেশেও অবিলম্বে এর ব্যবস্থা হোক, যদি এখনো না হয়ে থাকে। এর ব্যবস্থা না করাটাই আমার কাছে মনে হবে 'বর্বরতা'।
তবে 'এপিডিউরাল' বাচচা একদম ভূমিষ্ঠ হওয়ার অবস্থায় না যাওয়া পর্যন্ত নেয়া যায় না। ডাক্তারই সেটা ঠিক করবে। তার আগে পর্যন্ত যন্ত্রণা ঠিকই সহ্য করতে হবে। আমরা সে রাতে দুইবার হাসপাতালে গিয়েছিলাম ভর্তি হওয়ার জন্য। আবুল নার্স দেখে বলল বাচচা ভূমিষ্ঠ হওয়ার অবস্থায় আসে নি, এই ব্যথা 'মাসল ক্রাম্পের' জন্য! এপিডিউরাল নিতে হলে সার্ভিক্সের সাইজ কত জানি হওয়া লাগবে (মনে হয় ১০ সেমি)। বেটি ঘুমের ঔষুধ দিয়ে বাসায় পাঠায় দিল, বলল রাতে যদি অবস্থা খারাপ হয় নিয়ে আসতে। রাত তখন বাজে দেড়টা। এরপর বাসায় চলল বউয়ের 'হরর ফিল্ম'। পাঁচ মিনিট ঘুমায়, আর পাঁচ মিনিট ব্যথার 'তান্ডব'! চারটার দিকে টিকতে না পেরে আবার হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। সে তখন বেহুঁশ, বাসায়, গাড়িতে রক্তারক্তি। এবার নার্স বলল সময় হইছে, এপিডিউরাল দেয়া যাবে। বেটিরে তখন ইচ্ছা হইছিল একটা থাবড় মারি- তুই দুই ঘন্টা আগে বুঝতে পারলি না যে এটা লেবার পেইন, বাসায় পাঠায়ে দিলি, কইলি 'মাসল ক্রাম্প''ফলস পেইন' হাবিজাবি! বুঝলাম এগুলার মাথায় কোন ঘিলু নাই, রোবটের মত কাজ করে। চোথায় আছে এত সাইজ না হইলে লেবার কওয়া যাবে না, মাপ নিয়া বলছে লেবার হয় নাই- এগুলা এমনই বেকুব।
যাহোক, বিশাল লেকচার হয়ে গেল দেখি! যারা বাবা-মা হতে যাচ্ছেন সবার জন্য শুভকামনা; ও হ্যাঁ শামীম ভাই, আপনাকে অভিনন্দন
নিশ্চিত? আমরা তো জানতাম বেশ খারাপ পার্শপ্রতিক্রিয়া আছে। আপনার কথা পড়ে, গুগল করলাম, প্রথম দুইটা লিংক পড়েই তো ভয় পেয়ে গেলাম!
শামীম ভাই , ভাল উদ্যোগ।
হ। নিজেদের উপর পরীক্ষিত। আমার স্ত্রী এমন কি বেশিক্ষণ অবশও থাকে নি। পরের দিনই হাঁটা শুরু করেছে। তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারদের কলই ফাইনাল। শারীরিক অবস্থা দেখে ডাক্তার যদি মনে করে নেয়া যাবে না, তাইলে যাবে না।
মিয়াভাই, সিজারিয়ানের ব্যাপারে আমার একটা ব্যাখ্যা আছে। আমাদের দেশে বিশেষত শহুরে মানুষদের মধ্যেই এর প্রবণতা বেশী। এর কারণও আছে। আমাদের দেশের শহুরে মেয়েরা কিন্তু বিদেশের মেয়েদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম শারিরীক পরিশ্রম করে। চিন্তা করে দেখেন কয়জন মেয়ে ১০০মিটার দৌড়াতে পারবে? আমার মনে হয় তেমন মেয়ে কমই পাওয়া যাবে। বলা যেতে পারে এটা মেয়েদের একধরনের শারিরীক বিবর্তন। যে কারণে স্বাভাবিক নিয়মে বাচ্চা হওয়াটা ইদানিংকালে ততটা স্বাভাবিক হয়না। তবে ব্যতিক্রম থাকেই।
স্বাভাবিক বাচ্চা জন্মের প্রকৃয়ার সাথে তাই রিস্ক ফ্যাক্টর জড়িয়ে গেছে। কেউই রিস্ক নিতে চায়না। সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ব্যাপারটা হয়তো ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি দুইটা উদাহরণ জানি যেখানে ঢাকার একজন নামকরা ডাক্তার যিনি সবসময় স্বাভাবিক প্রসবের ব্যপারে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এভাবে করতে গিয়ে একটা কেইসে অনেক দেরী হয়ে যায় এবং বাচ্চার পজিশন শেষ পর্যন্ত ঠিক না হওয়ায় বাচ্চা ডিজ্যাবলড অবস্থায় জন্ম নেয়। সেই পরিবার এখন শুধু আক্ষেপই করে, এর বেশী কিছু নয়।
মন্তব্য লিখতে অনেক দেরি হয়ে গেল, পোস্ট করে দেখি তানভীর ভাই তেমনটাই বলে দিয়েছেন।
হুমম... অভিজ্ঞদের কাছ থেকে ভাল পরামর্শ পেলাম। নতুন কিছু জানতে পারলাম যেটা হয়তো দেশে থেকে জানা সম্ভব হত না। ধন্যবাদ।
ওয়াটার বার্থ বলে একটা পদ্ধতি টেলিভিশনে / ইউ.টিউবে দেখেছিলাম। তাই তানভির ভাইয়ের পানিতে গোসলের ব্যাপারটার ব্যাখ্যা নিয়ে এখনও কনফিউশনে রয়ে গেলাম। হাসপাতালের ডিউটি শেষ হলে পরে বাসায় গিয়ে ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি শুরু করতে হবে ... ...
শহুরে মেয়েদের সিজারিয়ানে প্রবণতা বিষয়ে অনেকটাই একমত। যেই ভয়গুলো পায় সেগুলো কতটুকু জেনুইন আর কতটুকু ক্লিনিক ব্যবসার জন্য পরিকল্পিত আতঙ্ক ছড়ানো -- সে বিষয়ে নিশ্চিত নই। পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় চুপচাপ শুয়ে বসে না থেকে যে স্বাভাবিক নড়াচড়া আর কিছু ব্যায়াম করতে হয় সেগুলোও সম্ভবত ইচ্ছাকৃতভাবে জানানো হয় না .... কারণ সেক্ষেত্রে ক্লিনিকের "মুর্গা ছুটে যাবে"।
শংকরের লেখা (খুব সম্ভবত) "কবি" উপন্যাসে একটা ডায়লগ ছিল যার মর্মার্থ হল, চোখে রঙিন চশমা থাকলে সাদা জিনিষও রঙিন দেখায়। আমার মনে কুটিলতার কারণেই হয়তো স্বাভাবিক ব্যাপারে ষড়যন্ত্রের আতঙ্ক খুঁজে পাই ... ।
সম্ভবত ডিসকভারি চ্যানেলে womb নামে দারুন একটা ডকুমেন্টারী দেখেছিলাম। ছোটভাইয়ের বাচ্চা হওয়ার আগে ও ঐ ডিভিডিটা সংগ্রহ করলো। কয়েকদিন আগে দেখি আমার ফ্লাশড্রাইভেও ওটা কপি করে দিয়েছে ... যদিও হাসপাতাল আর বাসায় ডিউটি করে ওগুলো দেখার মত অবসর সময় এখন নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
এসি যে আছে এটা বোঝানোর জন্যই যেন তাপমাত্রা কমিয়ে রাখা হয়। ব্যাপারটা অনেক যায়গায় দেখে নিন্দুকের অনুমান।
হায় রে!! একজন সদ্য বাবা (তানভীর) আরেকজন আসন্ন বাবা (শামীম) 'র জ্ঞানের বহর দেখে আমি তাব্দা!! দুজনেরই একটু ইন্টারনেট ঘেঁটে জ্ঞান বাড়ানো বাধ্যতামূলক শাস্তি হওয়া উচিত !!
একটু ঝাইড়া কাশেন দেহি ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
হ। আফা, আঁই কিচ্ছি? [কপিরাইট দ্রোহী]
এপিডিউরাল মোটেই ভূমিষ্ঠ হবে হবে অবস্থায় দেয়া হয় না। ডায়ালেশন একটা পর্যায়ের পর চলে গেলে আর দেয়া যায় না এবং সেটা ১০ সেন্টিমিটারের অনেক আগেই!! আর থাকেন টেক্সাসে আর বেচারা বাচ্চাটাকে খামোখা গোসল করান নাই এই গরমের মধ্যে!!
আচ্ছা, আপনার ফি ডিসি-তে এসে আপনার বাসায় হাতে হাতে দিয়ে যাব...চিন্তা কইরেন না
গোসল করানো যাবে না এমন কিছু বলি নাই। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এমবিলিক্যাল কর্ড না পরা পর্যন্ত শুধু 'স্পঞ্জ বাথ' করানোই ভাল। এইখানে দেখেন আরো অনেকেই এমন কথা কইছে। এপিডিউরাল কয় সেন্টিমিটারে দেয় সেটা আসলেই মনে নাই (মন্তব্যেও বলছি)। তবে লেবার স্টেজে না গেলে যে দেয়া যায় না, সেটা কনফার্ম। আর ব্যাকপেইন হতে পারে, নাও পারে; কিন্তু লেবার পেইনের তুলনায় ওই ব্যাক-পেইন মনে হয় কিছুই না।
আসল কথা হইল, ডিসির কথা ভুইলেন না কিন্তু। আমার ডিসিতে কেউ নাই।
বাচ্চাদের গোসল না করানোর কোন কারণ নাই। এপিডিউরাল নিলে অনেকের পরে ব্যাক পেইন ডেভেলাপ করে - তবে করবেই এমন কোন কথা নাই। পেইন ম্যানেজমেন্ট বা লামায ক্লাস নিলে নিশ্চয়ই ভালো কথা, কিন্তু না নিলেও যে খুব ক্ষতি হয় - এমন মনে করি না (নিজের অভিজ্ঞতা থেকে)। বাচ্চার যত্ন নেয়ার জন্য একপাল লোকের কোনই দরকার নাই - দুই জনই যথেষ্ট, সে তারা যে-ই হোক না কেন।
বাচ্চাদের জনডিস নিয়ে জন্মানোটা খুব খুব সাধারণ একটা ব্যাপার। অল্পতে কোন ওষুধ লাগে না, কিন্তু বেশী কি না সেটা দেখা দরকার।
আপনার স্ত্রীর যখন হাইপোগ্লসিমিক টেন্ডেন্সী আছে, খেয়াল রাখবেন জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হতেও পারে। সেটাও কোন ভয়ের কিছু না, মেপে খেলেই হবে। আর আপনার স্ত্রীর মনে হয় মরনিং সিকনেসটা বেশ ভালোই জ্বালাবে, সেক্ষেত্রে ডিহাইড্রেটেড যেন না হয় সেটা খেয়াল রাখা উচিত।
ও হ্যা, ভালো কথা - আমার ফী ($300) টা ওয়েস্টার্ণ ইউনিয়ন করে পাঠালেই ভালো, তাড়াতাড়ি পাবো ......
আপনার ফি আপনার সব সচলেরা মিলে চান্দাইবো, টেনশন নেহি লেনেকা। আপনি খালি প্রেসকাইবপোস্টান।
*********************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
(মন্তব্যগুলো আমার অন্য পোস্টের সাপেক্ষে করা)
একটু আগে একটা হালকা পড়া দিলাম hyperemesis grabidarum -- মোটামুটি মিলে গেছে। আর রোগির পাশে ডাক্তার ম্যাডাম যখন ছাত্রীদের পড়ায় তখনও কিছু শুনেছি ।
মাঝে মাঝেই খাওয়া বন্ধ করা অভ্যাসটা আগে ছাড়াতে হবে। ভিটামিন সি-এর ইঞ্জেকশন দিলে দেখি ওর খাওয়ার রুচি বেড়ে যায়।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
শামীম, ঠাস করে আবার মন্তব্য সম্পাদন কর্ল্লেন কেনু, কেনু, কেনু? আমি তো দেখে ফেলসি আগের ভার্সন! না, আমি আই টি ফাই টি'র মোটেই না - আমি সমাজবিজ্ঞানের মানুষ। আর ভেড়া/কুকুরের গল্পটা না জানায়, মর্মার্থ উদ্ধ্বার কর্ত্তে পারি নাই
শিগগীর গল্পটা বলেন ......
এহ্ হে .... গল্পটা বলতে হতে পারে ভেবেই সম্পাদনা করেছিলাম ... কিন্তু পার্লাম কৈ!
...
...
...
পাইছি ... প্রয়াত জুবায়ের ভাইয়ের ব্লগে ছিল।
এই নেন লিংক।
(মা.খা.এ.ন.) =মাইন্ড খাওয়া এ্যালাউড নহে
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
আর জীবনেও যদি আপনাকে সদুদ্দেশে কোন সৎপরামর্শ দিসি ......!!!!
এখন রাত ৩টা ... সকাল ৮টাতেই আবার হাসপাতালের ডিউটিতে যেতে হবে। আপাতত ভাগি ... ... সময়ের সাথে সাথে আবার সদুদ্দেশে সৎপরামর্শ দেয়ার অনুভুতি ফিরে আসুক ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
- বড়দের জন্য লেখা পোস্ট, তাও জ্ঞান আহরণ করতে দোষ নাই দেখে চীন দেশে না গিয়েও আহরণ করে ফেললাম। ভবিষ্যতে কামে দিলে দিবে, না দিলে নাই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
জ্ঞান না থাকলেও যা ঘটার তা ঘটবেই
বরং যাদের জ্ঞান কম থাকে তাদের ঘরেই ঘটে বেশী। কাপড় ধোয়ার বুয়া বা ইট ভাঙ্গার আন্টি ওদের জীবন যাত্রা আমার মতো লোকের পক্ষে চিকিৎসা বিজ্ঞান দিয়া ব্যাখা করা সম্ভব না কিন্তু ওদের কোন ডাক্তার - ক্লিনিক ছাড়াই কমম সাবার হয়ে যায়
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
জানার আছে অনেক কিছু......
----মর্তুজা আশীষ আহমেদ(mortuzacse1982@yahoo.com)
সম্পুর্ন বিস্রামে থাকবে সেই সব গর্ভবতি মায়েরা যাদের threatened abortion, মানে খুব সহজেই এবর্সান হওয়ার সুযোগ আছে। আপনার ভাইয়ের বউ গর্ভের কয়েক মাসের সময় বাইরে বেশি ঘুরাঘুরি করার জন্য সম্ভবত হঠাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে পড়লো। তাহলে আপনি আগে কনফার্ম হন যে তিনি কি threatened abortion এর স্টেজ এ ছিলেন কি না। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ঠিকই ছিল।
আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি নরমাল ডেলিভারীতে অনেক কম ঝামেলা কিন্তু তুলনামুলক ক্লিনিকের বেশিই লাভ। সিজারের ক্ষেত্রে রোগীর টাকা বেশি খরচ হয় কিন্তু সার্জন,সহকারী সার্জন, এনেস্থেসিয়ার ডাক্তার, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ইত্যাদির খরচ ও শ্রম দিয়ে খুব বেশি লাভ ক্লিনিকের থাকে না।
বিদেশে অনেক ভাল চিকিৎসা হয়। খরচটা কিন্তু অনেক বেশি হয়। আমাদের দেশে স্কয়ার হসপিটাল, এপোলোতে গেলে কিন্তু ভাল চিকিৎসা পাওয়া যায়। খরচটা কিন্তু বাইরের দেশের তুলনায় অনেক কম হয়।
আর হোমিও যদি বেশি ভাল হত তাহলে সারা দুনিয়াতে এটার চাহিদাও অনেক বেশি হত। আপনার সন্তানকে কি হোমিও ডাক্তার হতে বলবেন?
ভাল থাকুন।।
লাভ না থাকলেও কেন জানি ওরা এইটা করতেই চেষ্টা করে। ক্লিনিকের লাভ থাকে কি না তা আমার জানার উপায় খুব কম - তবে রোগির পকেটের টাকা যে বেশি বের হয়ে যায় সেটা বিলক্ষণ বুঝতে পারি। ঐ টাকা যেখানে যায়, তারা নিশ্চয়ই এটার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে। যাক্ আমি খারাপ লোক জন্য খারাপ কথাগুলোই আগে ভাবি। (তালগাছের দাবী ছাড়ি নাই )
আমি নিজের চিকিৎসা হোমিও পদ্ধতিতে করাই বলেই আমার সন্তানকে ঐটার পেশাদার হতে হবে কেন সেটাই বোধগম্য হল না । আমার সন্তান হোমিও ডাক্তার হতে চাইলে আমি হয়তো মানা করবো না (ঢাকাতে ভাল হোমিও চিকিৎসক দেখাতে এক মাস আগে বুকিং দিয়ে দেখা পেতে হয়, ফী-ও মাশাল্লাহ কম না) ... তবে অনাগত সন্তান কী হবে বা হতে চাইবে সেটার সিদ্ধান্ত নেয়ার বয়স হলে ও-ই সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা করি।
হয়তো এ্যাপোলা বা স্কয়ারে চিকিৎসার মূল্য জীবনের মূল্যের চেয়ে কম ... ... তবুও স্বার্থপর ছা-পোষা আমরা সেটা চিন্তাও করতে পারি না।
আমি কম বুঝি, তাই হোমিও চিকিৎসাটাই আগে করানোর চেষ্টা করি। হোমিওপ্যাথির মূল সমস্যা হল এটা সায়েন্টিফিক ভাবে অনেক কিছুর যথেষ্ট ব্যাখ্যা দেয় না। (উইকি)। কিন্তু ব্যাখ্যা করতে না পারলেও এই কার্যকারীতা মিথ্যা হয়ে যায় না। প্রশ্ন হল, বিজ্ঞান কি এটার ক্রিয়াকৌশল ব্যাখ্যা করার মত যথেষ্ট ম্যাচিওরড হয়েছে কি না!
তামার বাহুবন্ধনীতে বাতের ব্যাথা কমে/সেরে যায় ... কেন? (এটা হোমিওপ্যাথি নয়) সেটা কি ব্যাখ্যা করতে যাবে কেউ? শরীরের বিদ্যূৎ প্রবাহের সাথে তামার আনবিক/পরমানু মেঘের কোন ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া আছে বলে আমার ধারণা .... মানুষতো ধীরে ধীরে রেডিয়েশন এবং অন্য বিষয়গুলো জানছে ... একদিন হয়তো দূর্ঘটনাবশতঃ এটাও জেনে যাবে।
আর যতটুকু বুঝি, পুঁজিবাদী এই বিশ্বে সমস্ত গবেষণাই পূঁজিকেন্দ্রিক। কাজেই লাভের রাস্তা না দেখলে কে-ই বা দেহের সাথে তামার ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বা অন্য কোন বিষয়ের ইন্টারেকশন গবেষণায় অর্থ ও সময় ব্যয় করবে! কাজেই ওগুলো সত্য হলেও কখনই সায়েন্টেফিক কমিউনিটিতে গ্রহনযোগ্য মাত্রার গবেষণা হবে না ... প্রতিষ্ঠিতও হবে না। একই কারণে হোমিওপ্যাথির পেছনেও বিনিয়োগ কম।
ব্যক্তিগতভাবে মনে করি হোমিওপ্যাথিও যথেষ্ট কঠিন একটা বিষয় ... এর অনেকগুলো বই বাংলাতে পাওয়া যায় বলে কিছুটা উল্টে দেখার সুযোগ হয়েছিল। আমাদের পাড়ার কোনায় কোনায় যে সব গজিয়ে ওঠা হোমিও ডাক্তার ৫/১০ টাকায় পুরিয়া পুরিয়া ঔষধ দেয় ওদের বিদ্যার গভীরতা সম্পর্কে ঢেড় সন্দেহ আছে আমার। ওদের মূল উদ্দেশ্য হল স্পিরিটের ব্যবসা - কারণ লাইসেন্সপ্রাপ্ত ছোটো হোমিও চিকিৎসালয় মাসে ৩০ লিটার স্পিরিট তুলতে পারে (পারতো?) (হোমিও ঔষধের উপাদান হিসেবে), যেটা মদখোরদের কাছে বিক্রি করে চিকিৎসার 'চ' না জেনেও বেশ ভালই রমরমা অবস্থা বজায় রাখা যায়।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
এখানে দেখি অনেক জ্ঞানের কথা লেখা... তবে আর না বাবা... একটাই কাফি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ছেলে হোক মেয়ে হোক - একটি শয়তানই যথেষ্ট
(কপিরাইট: আমার ভগ্নিপতি আসাদুজ্জামান)
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
উনি নিশ্চয়ই তাহলে উন্মাদের (কার্টুন পত্রিকা) প্রদায়ক ছিলেন। কারণ বছর বিশেক আগে ঠিক এই ডায়লগ দেখেছিলাম ওটাতে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
আমার মায়ের নয়টা বাচ্চা, সবগুলোই স্বাভাবিক। হাঃ হাঃ, এমনিতে উনারে নিয়া আমি গর্ববোধ করিনা। অবশ্য দেশের জনসংখ্যার প্রশ্ন আসলে গর্ববোধ প্রশ্ন সাপেক্ষ।
নতুন মন্তব্য করুন