কত কপি করে রে!

শামীম এর ছবি
লিখেছেন শামীম (তারিখ: শনি, ০৯/০৫/২০০৯ - ১২:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(ফালতু ব্লগর ব্লগর)
কয়েকদিন আগেই আগের সেমিস্টার (ট্রাইমিস্টার) শেষ হলো। ঠিক সময়ে খাতা দেখে জমা দেয়া অসম্ভব বলে মনে হয়েছে এ পর্যন্ত। শেষ যেই খাতার বান্ডিলটা ছিল, সেটা দেখে মনে হল - বেশ কয়েকজন ভরপুর নকল করেছে। ঐ পরীক্ষায় ইনভিজিলেটর কে ছিল সেটা খেয়াল নাই (আমি ছিলাম না); তবে সে সম্ভবত পরীক্ষার গার্ড দেয়ার বদলে নিজের ভাগের খাতা দেখেছে বসে বসে।

এই গ্রুপটার খাতা আগেও দেখেছি দুটো মিডটার্ম পরীক্ষায়। আহামরি কিছু নাই ... কিন্তু ফাইনালের খাতায় নিখুত ইংরেজি দেখেই সন্দেহ হচ্ছে ... ... এমনকি আমার দেয়া ক্লাসনোটে দুই জায়গায় টাচপ্যাডের কল্যানে / টাইপিং এর ভুলে কোনো কোনো শব্দের মাঝখানে সংখ্যা পড়ে গিয়েছিল (যেমন diffic3ult); সেগুলোও ঐ ভুল সহ খাতায় নিখুত ভাবে লেখা!! যাঁরা সত্যই পড়েছে আর যারা না পড়েই লিখছে তাদের আলাদা করতে না পেরে মেজাজ একটু খারাপ।

একই ব্যাপার দেখা যায়, হোম এসাইমেন্টের ক্ষেত্রে; একই ভুল অনেক খাতায় পেলে সবগুলোতেই শূণ্য দিতে হয়। আবার পরীক্ষার খাতায় দেখা যায় এক প্রশ্নসেটের উত্তরে আরেক সেটের ডেটা দিয়ে সমাধান করা ... ... সাথে সাথে শূণ্য। ওপেন বুক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের ডেটার বদলে বইয়ের ডেটার সমাধান কপি করা!!

ছাত্রাবস্থায় ঐতিহাসিক কপি করার কাহিনীগুলো মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়তো। যেমন কোনো এক বড়ভাই সেশনালের খাতা কপি করার সময় ভুলে আরেকজনের নাম রোল নং শুদ্ধ লিখে দিয়েছিল!! কোনো স্কুলে নাকি কপি করতে গিয়ে বাবার নামে আরেকজনের বাবার নাম বসিয়ে দিয়েছিল।

তবে, লেটেস্ট যেটা শুনলাম (পুরাতন কাহিনী হয়তো) সেটা হল: কোনো এক ছাত্র একটি প্রশ্নের উত্তরে লিখেছে - "প্রমথ চৌধুরী"। পাশের জন দেখে কপি করেছে - "প্রথম চৌধুরী"! তারও পাশের জন ওটা দেখে লিখেছে "১ম চৌধুরী"!! চোখ টিপি

এরা পাশ করে কর্মক্ষেত্রে কী করবে .. ... .... মন খারাপ


মন্তব্য

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

কী আর করবেন, বলেন? একটু তো জনসেবা করতেই হবে। মন খারাপ

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

এরা পাশ করে কর্মক্ষেত্রে কী করবে .. ... ....

তাহলে আমি একটা মেইল দেখাই ...

আমার এক ফ্রেণ্ড ঢাকার মোটামুটি খ্যাতনামা একটা প্রাইভেট ইউনির লেকচারার ছিল ... কম খরচ প্লাস মোটামুটি পড়ালেখা হয় এই টাইপ রেপুটেশনের কারণে এই ভার্সিটির বিপুল পরিমাণ স্টুডেণ্ট, লাস্ট শুনছিলাম বিশ হাজার ছাড়াইছে ...

সেই ভার্সীটির এক ছাত্র আমার ফ্রেন্ডকে, যে এখন কানাডায় এমএস করতেছে, মেইল করছে ... মেইলটা হুবহু তুলে দিলাম, খালি নাম-ঠিকানা সেনসর করলামঃ

Dear sir,

How are you? I am ******.i am ******* university ** batch student.my all course are complete only thesis remain.sir i want to complete master program out of bangladesh such as the country UK,Canada,or Austrila this three country is my favourite choice. sir my acadmic result is cgpa 3.52. sir i choching saifur,s for ielts. sir give me some advice or away how i get good score in the ielts exam each modual. sir it,s my and father dream study abroat. which country is better for me? which book i follow for each modual? how i practice lesiting,speaking give me advice?

pls forgive me any mistake.

good bye and goodluck.

আমার ফ্রেন্ড কি জবাব দিবে বুঝতে না পেরে আর জবাব দেয় নাই ইয়ে, মানে...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

রেনেট এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি
---------------------------------------------------------------------------
No one can save me
The damage is done

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

দ্রোহী এর ছবি

লোল।

এটার খুব সুন্দর একটা রিপ্লাই লিখে দিতে পারবো! দুইদিন সময় লাগবে এই যা!

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

আমিও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলাম!

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ব্যাপার্না। আমার ইদানিং আংরেজী বানান নিয়ে যারে বলে কাহিল অবস্থা। সেদিন কলাপ্স বানানে a এর জাগা u বসিয়ে রামপঁচানি খাইছি। একেকটা বানান নিয়া কনফিউশন জাগে আর মন খুইল্যা জার্মান ভাষার মা-বাপ-দাদা-দাদী চৌদ্দ গোষ্ঠী তুইলা ফ্রী স্টাইলে গাইল পারি।

তবে এই মেইল করা সিজিপিএঅলা মিয়া ভাইরে একটাই উত্তর দেওন যায়। "তুমি মন্দিয়া কয়েকমাস সচলায়তন পড়ো!"
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

এনকিদু এর ছবি

দেঁতো হাসি


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

শামীম এর ছবি

দেঁতো হাসি
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

কিংকর্তব্যবিমূঢ় হওয়া ছাড়া আর কিছু বলতে পারলাম না খাইছে

-------------------
উদ্ভ্রান্ত পথিক

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

চিঠিটা পড়ার পর মনে হচ্ছে যে আমি ইংরেজি ভুলে যাচ্ছি !
-------------------------------------

--------------------------------------------------------

অশিক্ষিত এর ছবি

রামানুজন শুনেছি ইংরেজী লিখতে পারতো না। হার্ডিকে লেখা চিঠিটা আরেকজনকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছিলো। ইস ওর চিঠিটা পেলে আমরা একটু হাসাহাসি করে নিতে পারতাম। ছাগলটা শুধু অংকই কষলো ইংরেজীর দামটা বুঝলো না।

দ্রোহী এর ছবি

আমি আপনার সাথে একমত। এই ছেলে রামানুজন না হয়েই যায় না! আরেকটু খারাপ লিখলে আর্যভট্ট হয়ে যাবারও একটা সুযোগ থেকে যেতো!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- তার চাইতেও আরেকটু খারাপ লিখলে মহামান্য ধুগো হইয়া যাইতো! আল্লায় মানির মান অল্পতে রাখছে। হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

হাসিব এর ছবি

ভালো-খারাপ-নকল সব ধরনের ছাত্রই থাকবে । সেইটা কোন বিষয় না । তবে আমার অভিজ্ঞতা (সেইটা ৫/৬ বছরের আগের কথা) বলে এইসব ছাত্র(!)দেরকে পাশ করায় দেবার মন্ত্রনা আসে উপরওয়ালাদের কাছ থেকে । পুরা ব্যাচ ফেল করলে কে ভর্তি হবে এই ইউনিভার্সিটিতে ইত্যাদি অজুহাত দেখানো হয় । এই যুক্তিতে পরে দেখানো হয় গরীব পোলাপান (!) যদি ফেইল করে তাহলে তাদের আবার টাকা দিয়ে কোর্স রেজিস্ট্রেশন করতে হবে । "তাদের দিকটা একটু দেখবেন না !"
বাংলাদেশে যেহেতু সব কিছুর অবনতিই হয় দিনদিন সেহেতু ধরে নিচ্ছি এখনকার অবস্থা আগের থেকে উন্নত কিছু না । আমি ফাহিমের পেস্ট করা মেইলটায় জিপিএ সাড়ে তিন দেখে তাই অবাক হই না ।

মামুন হক এর ছবি

আমিও না হাসিব। আমার জিপিএ ছিলো ২.৬ বা এই জাতীয় কিছু। এই সব স্কোরের সাথে ভাষাজ্ঞানের সম্পর্ক অনেক কম। আমাদের ব্যাচের অনেক পুলাপাইন আছে যারা দীর্ঘদিন বিদেশে থাকে জিপিএ চার, সাড়ে চার জাতীয় ভাব, এদের ইংরেজী শুনলে মনে হয় কানের মধ্যে চপ স্টিক ঢুকাইয়া দেই, আর দেশে যারা আছে তাদের কাছ থেকে কদ্দুর আশা করা যায়?

শামীম এর ছবি

আমাদের ভিসি / অ্যাকাডেমিক এ্যাডভাইজার / ডিপার্টমেন্ট হেড স্যার আবার একটু নির্দয় টাইপের ... .... ছাত্র সংখ্যা না বাড়লে কুছ পরোয়া নেহি ... ... শিক্ষার মান কমানো যাবে না। বিশেষ করে A (=90%) নিয়ে তো খুব সিরিয়াস টেনশন হয় .. ... কড়া নির্দেশ আছে এখানকার A এমন হবে যে, পৃথিবীর যে কোন জায়গায় A ক্যাটাগরীতে যাবে। ... ... গ্রেডের এই দুরাবস্থা নিয়ে ছাত্রদের খুবই আফসোস।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

রেনেট এর ছবি

আমি আরো ভাবছি এমবিএ শেষ করে দেশে গিয়ে কোন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াব ইয়ে, মানে...
---------------------------------------------------------------------------
No one can save me
The damage is done

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

ইফতেখার এর ছবি

তাও ভাল হুবহু লিখেছে।
বড়ু চন্ডীদাশ থেকে ফটোকপি আর তা থেকে কপি করতে করতে বুড়ো চন্ডীদাশ এবং সেশ পর্যন্ত বৃদ্ধ চন্ডীদাশ হয়ে গিয়ছিল
বড়ু চন্ডীদাশ >বুড়ো চন্ডীদাশ >বৃদ্ধ চন্ডীদাশ

এনকিদু এর ছবি

এমনকি আমার দেয়া ক্লাসনোটে দুই জায়গায় টাচপ্যাডের কল্যানে / টাইপিং এর ভুলে কোনো কোনো শব্দের মাঝখানে সংখ্যা পড়ে গিয়েছিল (যেমন diffic3ult); সেগুলোও ঐ ভুল সহ খাতায় নিখুত ভাবে লেখা!!

ভুল বানান টাও মুখস্ত করে লিখেছে ! এলেম আছে ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

শামীম এর ছবি

সেইটা ভেবেই নম্বর দিতে হয়েছে মন খারাপ
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এরকমই অব্স্থা।
আমার অভিজ্ঞতা আরেকদিন শেয়ার করবো।

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

আমারও তো পরিকল্পনা শিক্ষকতার। আমার বিষয়ে আর কোনও বিকল্পও নেই। জার্মানীতে পোলাপাইন যারা আছে, তাদের ইঙরেজী নিয়ে কিছু বলার নেই। ভালো ইংরেজী বলতে পারা লোকজন এখানে অবশ্যই ব্যতিক্রম তালিকাভূক্ত। অবশ্য সেটার জন্য তাদের অশিক্ষিত বলা যাবে কি না সে নিয়ে বিতর্ক আছে।

টিভিতে ঢাকাকে যতোটুকু দেখি, মনে হয়েছিলো, নতুন প্রজন্ম অন্ততঃ ইংরেজীটা সাবলীল মতোই বলতে শিখছে। কথার মাঝে ৭০ ভাগ শব্দ ইংরেজী বলাটা আমার কাছে চরম বিরক্তিকর লাগে। এরা সেটা খুব বেশী করে। নিজেকে স্মার্ট বা আধূনিক প্রমান করার উৎকট চেষ্টার অংশ হিসেবে সবাই এটা করে (হ্যা মোটামুটি সবাই)। এদর প্রকৃত জ্ঞানের বহর তো আপনার লেখাতেই পাওয়া যাচ্ছে! এই অভিযোগ যারা বিদেশে আছি তাদেরও জন্য সমভাবে প্রযোজ্য।

আমি 'শিক্ষিত' শব্দটার সাথে 'ইংরেজী জানা' বা 'যেকোনও ভাষা' জানাটা'কে মিলিয়ে ফেলার ঘোর বিরোধী। সেটা শেখার একটা অংশ হতে পারে। বুয়েটে অনেক জিনিয়াসকে চিনি যারা গ্রামে বেড়ে ওঠার ফলে কথায় কথায় ইংরেজীটা আয়ত্ব করতে পারে নাই। কিন্তু মেধাবী এবং শিক্ষিত।

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গ্রেডিং পদ্ধতির এই ফাঁপড় সম্পর্কে আগেও শুনেছি। বিষয়টা আমাদের বুয়েটের শিক্ষকদেরকো একটু শেখানো দরকার হাসি

আমরা যারা সরকারী ইউনি থেকে দরিদ্র সব গ্রেড নিয়ে আসি তারা কিন্তু ঐসব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের সাথে প্রতিযোগীতা করেই আসি। এই প্রতিযোগীতাটাকে আরেকটু 'ফেয়ার' করা দরকার! সেটা কোনদিক থেকে করা উচিৎ জানি না। ভারত থেকে আগতদের সাথেও আমাদের এই প্রতিযোগীতা। তাদের সবই বলা চলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। আর সেগুলোর গুণগতমান যে কোন তলানিতে সেটা আমার অনেক ভারতীয় সতীর্থের কাছেই শুনেছি। ওদেরগুলো আবার বিশ্ববিদ্যালয়ও নয়, রিজিওনাল কলেজ।

সব বিবেচনায়, কোনটা আমাদের করা উচিৎ সেটা নির্ণয় করা কঠিন।

তানবীরা এর ছবি

মাষ্টররা কটটিন হৃদয়ের অধিকারী হয়। ছাত্রদের পেম আর খেলার বয়সটা তাদের জন্য বইয়ে মুখ গুইজ্জা কাটাইতে হয়। নিদদয় দুনিয়া

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

শামীম এর ছবি

ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ
পাত্রনং প্রেমং কত! চোখ টিপি
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।