সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বিশ্লেষণ পদ্ধতি

শামীম এর ছবি
লিখেছেন শামীম (তারিখ: শনি, ১৮/০৭/২০০৯ - ১১:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সতর্কবাণী: পড়ালেখা মার্কা পোস্ট; পড়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে মনে বিরক্তির (সাথে মাথাব্যথা) উদ্রেক হতে পারে!

যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে অনেকগুলো উপায়ের মধ্য থেকে একটা বেছে নিতে খুব সমস্যা হয়। বিশেষ করে উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডে বিভিন্ন বিকল্প প্রস্তাব থেকে ঠিকটি বেছে নেয়ার জন্য বিশেষ কিছু প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে যুক্তিসংগত উপায়টা বেছে নিতে হয়। প্রকল্পের বিকল্প প্রস্তাবগুলোর অর্থনৈতিক খরচের বিষয়টা সরাসরি একমাত্র নিয়ামক হতে পারে না ....... কারণ তাই যদি হত, তাহলে ৬০০ কোটি টাকার (বর্ধিত হয়ে ১৫০০ কোটি টাকা) হাতিরঝিল প্রকল্পের ১৫০ কোটি টাকার প্রথম প্রস্তাবটাই গৃহিত হত। এই ধরণের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার পদ্ধতিটা কী সেইটা একটু বুঝতে চেষ্টার প্রক্রিয়ায় যতটুকু বুঝতে পারলাম সেটা সকলের দৃষ্টিগোচরে আনা, আর নিজের জন্য লিখে রাখাও এই পোস্টের উদ্দেশ্য।

সহজ একটা উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি। ভাড়া নেয়ার জন্য একটা বাসা খোঁজার চেষ্টা করছি --- যেখানে লিফট/এলিভেটর আছে বা ৩ তলার মধ্যে; আর বাথরূমগুলো ঝকঝকে। খুঁজতে খুঁজতে ৩টি বাসা পাওয়া গেল যাদের বৈশিষ্ট্যগুলো এমন:

বিবেচ্য বিষয় সমূহ

মন্তব্য

মাপের একক

উত্তরার বাসা

পরীবাগের বাসা

বসুন্ধরার গলি

ভাড়া

কম হলে ভালো

টাকা

৮,০০০

১৭,০০০

১৫,০০০

আকার

কম হলে সুবিধা

বর্গফুট

৮০০

১,৪০০

১,২০০

শ্বশুরবাড়ি থেকে দূরত্ব

কম হলে সুবিধা

রিকশা/CNG ভাড়া

১২০

২০

বুয়েটের দূরত্ব

কম হলে ভালো

রিকশা/CNG ভাড়া

১৩০

২০

৪০

অফিসের দূরত্ব

কম হলে আরাম

মিনিট (সবগুলো থেকেই ক্যাব ভাড়া ১০০ টাকা)

২৫

৫০

৩৫

ভালো শপিং সেন্টারের দূরত্ব

কম হলে ভালো!!

রিকশা ভাড়া

১৫

২০

১০

সবচেয়ে সরল উপায়ে আমার পছন্দের হিসাবটা এমন হবে:

বিবেচনাসমূহ

পছন্দের আপেক্ষিক ক্রমাবস্থান (Ranking)

বাসা-১ (উত্তরা)

বাসা-২ (পরীবাগ)

বাসা-৩ (বসুন্ধরা)

বিবেচ্য-১ (ভাড়া)

বিবেচ্য-২ (আকার)

বিবেচ্য-৩ (শ্বশুরবাড়ি)

বিবেচ্য-৪ (বুয়েট)

বিবেচ্য-৫ (অফিস)

বিবেচ্য-৬ (শপিং)

মোট পয়েন্ট:

১১

১৫

১০

এই হিসাবে দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে বাসা-৩। বাসা-১টাও বেশ ভালো, আর, বাসা-২টা পছন্দ হিসেবে বেশ খারাপ। (বাসা-৩ --> বাসা-১ --> বাসা-২)

অবশ্য যে কেহই এই হিসাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। কারণ বিবেচনাসমূহ সবগুলোর গুরুত্ব সমান না হওয়ারই কথা। এই সমস্যা দূর করার জন্য প্রত্যেকটি বিবেচনার জন্য একটা করে আপেক্ষিক গুরুত্ব যদি দেয়া যায় তাহলে সেগুলো দিয়ে ভারযুক্ত পছন্দ হিসাব করাটা বেশি যুক্তিযুক্ত হবে। আপেক্ষিক গুরুত্ব দিলে পছন্দের হিসাবটা হবে এরকম:

বিবেচনাসমূহ

আপেক্ষিক গুরুত্ব

আপেক্ষিক ক্রমাবস্থান (Rank)

আপেক্ষিক গুরুত্ব × ক্রমাবস্থান

বাসা-১

বাসা-২

বাসা-৩

বাসা-১

বাসা-২

বাসা-৩

বিবেচ্য-১ (ভাড়া)

০.১৪৩

০.১৪৩

০.৪২৯

০.২৮৬

বিবেচ্য-২ (আকার)

০.১৪৩

০.১৪৩

০.৪২৯

০.২৮৬

বিবেচ্য-৩ (শ্বশুরবাড়ি)

০.১৯০

০.৫৭০

০.৩৮০

০.১৯০

বিবেচ্য-৪ (বুয়েট)

০.২৮৬

০.৮৫৮

০.২৮৬

০.৫৭২

বিবেচ্য-৫ (অফিস)

০.১৯০

০.১৯০

০.৫৭০

০.৩৮০

বিবেচ্য-৬ (শপিং)

০.০৪৮

০.০৯৬

০.১৪৪

০.০৪৮

মোট পয়েন্ট:

২.০০০

২.২৩৮

১.৭৬২

এই হিসাব অনুযায়ী আগের হিসাবের মতই বাসা-৩ সবচেয়ে ভালো আর বাসা-২ সবচেয়ে কম পছন্দের (বাসা-৩ --> বাসা-১ --> বাসা-২) .... তবে ৩টা বাসার মধ্যে পয়েন্টের পার্থক্যগুলো প্রায় সমান হয়ে গিয়েছে। এই হিসাব নিয়েও মনের মধ্যে খুঁত খুঁত রয়ে যাচ্ছে ... কারণ ক্রমাবস্থান থেকে একটা আরেকটার সাপেক্ষে কতটা কম বা বেশি সুবিধাজনক সেটা ঠিকভাবে বোঝা যাচ্ছে না। কোনোটাতে ১ম পছন্দ অপেক্ষা ২য়টি দ্বিগুন আর ২য়টি থেকে ৩য়টি সামান্য বড়;আর কোনো কোনো হিসাবে ১ম আর ২য়টির পার্থক্য সামান্য কিন্তু ৩য়টি অনেক আলাদা। তাই হিসাবের আপেক্ষিক ক্রমাবস্থানের বদলে যদি আপেক্ষিক মান ব্যবহার করা যেত তাহলে বিষয়টা আরো সুক্ষ্ন হত বলে মনে হয়।

আপেক্ষিক মান ব্যবহার করলে হিসাবটা কেমন হয় দেখা যাক:

বিবেচনাসমূহ

আপেক্ষিক গুরুত্ব

আপেক্ষিক মান (Scale)

আপেক্ষিক গুরুত্ব × আপেক্ষিক মান

বাসা-১

বাসা-২

বাসা-৩

বাসা-১

বাসা-২

বাসা-৩

বিবেচ্য-১ (ভাড়া)

০.১৪৩

২০.০০

৪২.৫০

৩৭.৫০

২.৮৬০

৬.০৭৮

৫.৩৬৩

বিবেচ্য-২ (আকার)

০.১৪৩

২৩.৫৩

৪১.১৮

৩৫.২৯

৩.৩৬৫

৫.৮৮৮

৫.০৪৭

বিবেচ্য-৩ (শ্বশুরবাড়ি)

০.১৯০

৮৫.৭১

১৪.২৯

০.০০

১৬.২৮৬

২.৭১৪

০.০০০

বিবেচ্য-৪ (বুয়েট)

০.২৮৬

৬৮.৪২

১০.৫৩

২১.০৫

১৯.৫৬৮

৩.০১১

৬.০২১

বিবেচ্য-৫ (অফিস)

০.১৯০

২২.৭৩

৪৫.৪৫

৩১.৮২

৪.৩১৮

৮.৬৩৬

৬.০৪৫

বিবেচ্য-৬ (শপিং)

০.০৪৮

৩৩.৩৩

৪৪.৪৪

২২.২২

১.৬০০

২.১৩৩

১.০৬৭

মোট পয়েন্ট:

৪৭.৯৯৭

২৮.৪৬০

২৩.৫৪৩

এই হিসাব অনুযায়ী কিন্তু পছন্দের ক্রম পরিবর্তিত হয়েছে। (বাসা-৩ --> বাসা-২ --> বাসা-১)

প্রিয় পাঠক, আপনার মনের মধ্যে হয়তো এখনো খচ্ খচ্ করছে যে আপেক্ষিক মান এবং আপেক্ষিক গুরুত্বের মানগুলো কিভাবে দিলাম?! .... এগুলো কি আনুমানিক নাকি হিসেব করা? ... এগুলো দিতে কি বিশেষজ্ঞ লাগে নাকি? ... ইত্যাদি। ............... আপনার মনের চিন্তা দুর করতে জানাচ্ছি - বিশেষজ্ঞ দ্বারা বিবেচনা ছাড়াই ওগুলো সাধারণ কিছু হিসেব করে বের করা হয়েছে।

আপেক্ষিক মানগুলো বিভিন্ন বিকল্পগুলোর মধ্যে সরাসরি একটা তুলনীয় মান দিতে পারে। এটা হিসাব করা খুবই সহজ। যে কোনো বিবেচ্য বিষয়ের জন্য ৩টি বাসার মানগুলো যোগ করে সেটার শতকরা বের করা হয়েছে। যেমন ভাড়ার মান গুলো ধরুন। ৩টা বাসার ভাড়াগুলোর যোগফল (৮,০০০+১৭,০০০+১৫,০০০=) ৪০,০০০ টাকা। কাজেই বাসা-১ হল ৮,০০০/৪০,০০০ = ২০%। একই ভাবে, শপিং এর মোট রিক্সাভাড়া (১৫+২০+১০=) ৪৫ টাকা ফলে বাসা-২ এর আপেক্ষিক মান হল ২০/৪৫ = ৪৪.৪৪%। ইত্যাদি।

ক্রমাবস্থান এবং আপেক্ষিক মান ছাড়াও রেটিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন বিবেচ্য বিষয়ের সাপেক্ষে ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাবগুলো তুলনা করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি বিবেচনার সাপেক্ষে নির্দিষ্ট মানের জন্য নির্দিষ্ট রেটিং-এর তালিকা থাকতে হবে। তালিকা দেখে ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাবগুলোকে সেই অনুযায়ী রেটিং দেয়া হবে। (ধরুন: বাড়ি ভাড়ার জন্য ৫০০০ টাকার কম হলে রেটিং=০; ৫০০১-১০০০০ টাকা হলে রেটিং=১; ১০০০১-১৫০০০ টাকা হলে রেটিং=২; ১৫০০১-২০০০০ টাকা হলে রেটিং=৩; ২০০০১-২৫০০০ টাকা হলে রেটিং=৪; ২৫০০০ টাকার বেশি হলে রেটিং=৫। একই ভাবে অন্য বিবেচ্যগুলোর জন্য রেটিং তালিকা বা চিত্রলেখ/গ্রাফ থাকবে যেথা হতে বিবেচ্য বিষয়ের মান হতে ওটার রেটিং নেয়া হবে)

আপেক্ষিক গুরুত্ব হিসাবের অনেকগুলো পদ্ধতি আছে, এদের মধ্যে যেটা আপাতত আমার কাছে সবচেয়ে সহজ মনে হল সেটার নাম হল ক্রমহীন-জোড় তুলনা পদ্ধতি (unranked paired-comparison method)। খুবই সহজ এই পদ্ধতির হিসাবটা নিচে দেখানো হল:

ক্রমহীন-জোড় তুলনা পদ্ধতিতে বিবেচনাসমূহের আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ণয়

 

বিবেচ্যসমূহকে জোড়ায় জোড়ায় তুলনা

মোট পয়েন্ট

গুরুত্বের মান

বিবেচ্য-১ (ভাড়া)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

০.১৪৩

বিবেচ্য-২ (আকার)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

০.১৪৩

বিবেচ্য-৩ (শ্বশুরবাড়ি)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

০.১৯০

বিবেচ্য-৪ (বুয়েট)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

০.২৮৬

বিবেচ্য-৫ (অফিস)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

০.১৯০

বিবেচ্য-৬ (শপিং)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

০.০৪৮

ডামি (বলির পাঠা)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

০.০০০

 

যোগফল:

২১

১.০০০

এখানে যে কোনো দুইটি বিবেচ্য বিষয়কে পরষ্পরের সাথে তুলনা করে বেশি গুরুত্বপূর্ণটাকে ১ এবং কমটাকে ০ মান দেয়া হয়েছে। প্রথমে বিবেচ্য-১ এর সাথে বিবেচ্য-২ এর তুলনা করে দেখতে হবে যে কোনটা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেশি গুরুত্বপূর্ণটাকে ১ এবং কমটাকে ০ দিতে হবে। এভাবে প্রতিটার সাথে প্রতিটার তুলনা করতে হবে। বিবেচনার তালিকায় একটা ডামি বিবেচ্য রাখতে হবে যেটা সবগুলোর চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ হবে। ওটা না দিলে এই পদ্ধতিতে যে কোন একটা বিবেচনার আপেক্ষিক গুরুত্বের মান শূন্য হয়ে যেতে পারে। আমার কাছে বাসার আকারের চেয়ে ভাড়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ লেগেছে, তাই ভাড়া (বিবেচ্য-১) এর জন্য ১ এবং বিবেচ্য-২ (আকার) এর জন্য ০ দিলাম। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির দূরত্ব ভাড়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এক্ষেত্রে বিবেচ্য-১=০ আর বিবেচ্য-৩=১ দিলাম। তাই ক-সংখ্যাক বিবেচ্য থাকলে ক×(ক+১)/২ টি (এক্ষেত্রে ২১ টি) জোড়া তুলনা করতে হবে। কোনক্ষেত্রে দুইটি বিবেচ্যকে সমান গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে উভয়কে ০.৫ করে দেয়া যেতে পারে। এভাবে সবগুলো তুলনা হয়ে গেলে প্রতিটি বিবেচ্য বিষয় মোট কত পয়েন্ট পেয়েছে সেটা যোগ করতে হবে। তারপর সবগুলো বিবেচ্যর প্রাপ্ত নম্বরগুলো যোগ করে প্রতিটি বিবেচ্যর মোট পয়েন্টকে এই যোগফলের ভগ্নাংশ হিসেবে প্রকাশ করলেই সেটা আপেক্ষিক গুরুত্বের মান নির্দেশ করবে।

এই ক্ষেত্রে আমার বিবেচনায় দেখা যাচ্ছে বুয়েটের দূরত্ব সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে মোট ৬ পয়েন্ট পেয়েছে, তাই এর আপেক্ষিক গুরুত্ব হল ৬/২১=০.২৮৬। সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ হল শপিং এটা শুধু ডামি বিবেচনার সাথে ১ পয়েন্ট পেয়েছে। এর আপেক্ষিক গুরুত্ব ১/২১=০.০৪৮।

এই ধরণের বিশ্লেষণের কেতাবী নাম হল: ট্রেড-অফ এ্যানালাইসিস।

এখানে বোঝার সুবিধার্থে একটা অত্যন্ত সাধারণ বিষয় নিয়ে উদাহরণ দেয়া হয়েছে। আসল কোনো প্রকল্পে শতাধিক বিবেচ্য বিষয় থাকতে পারে। কোন প্রকল্পের পরিবেশগত প্রতিক্রিয়া অনুমান করতে গেলে সম্ভাব্য বিবেচ্যগুলো নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলোর মধ্য থেকে হতে পারে

১. ভৌত-রাসায়নিক পরিবেশ

  • মৃত্তিকা
  • ভূতত্ত্ব
  • ভৌগলিক অবস্থা
  • জলাশয় এবং ভূগর্ভস্থ পানিসম্পদ
  • পানির গুণগত মান
  • বাতাসের গুণগত মান
  • আবহাওয়া

২. জৈব পরিবেশ

  • প্রকল্প এলাকার জীববৈচিত্র্য, (এতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, ঘাস, মাছ, সরীসৃপ, পাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণী অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী বা উদ্ভিদের কোনো প্রজাতি অন্তর্ভুক্ত থাকলে সেগুলো উল্লেখ করা থাকবে)
  • সাধারণ জৈব বৈশিষ্টের, বাস্তুতন্ত্রের জীববৈচিত্রের ব্যাপকতা এবং পারষ্পরিক নির্ভরযোগ্যতা

৩. আর্থ-সামাজিক পরিবেশ

  • ঐতিহাসিক বা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানসমূহ
  • স্থানীয় রীতিনীতি, কৃষ্টি, দর্শনীয় সম্পদসমূহ
  • জনসংখ্যার হ্রাসবৃদ্ধির ধারা এবং জনবসতির প্রকৃতি
  • জনকল্যাণের বিভিন্ন পরিমাপকের মানসমূহ
  • শিক্ষাব্যবস্থা
  • যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অবকাঠামো
  • পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন এবং আবর্জনা ব্যবস্থাপনা
  • সরকারী সুবিধাসমূহ যেমন পুলিশ, অগ্নিনির্বাপন, চিকিৎসা ব্যবস্থা ইত্যাদি

৪. অন্যান্য

  • স্বাস্থ্যগত
  • মানসিক স্বাস্থ্য

আজকে এই পর্যন্তই।

তথ্যসূত্র: Environmental Impact Assessment - by Larry Canter.


মন্তব্য

যুধিষ্ঠির এর ছবি

চলুক

ভালো লাগলো। অ্যাডভান্সড ডিসিশন অ্যানালিসিস পড়েছিলাম মাস্টার্স করার সময়। তখনই ব্যাপারটা দারুণ লেগেছিলো। এই বিষয়টাকে একদম ধারে কাছের উদাহরণ দিয়ে অনেক সহজবোধ্য করে বলেছেন।

এর কাছাকাছি আরেকটা টপিক আছে প্রব্যাবিলিস্টিক রিস্ক অ্যানালিসিস জাতীয়। সম্ভাবনার সূত্র দিয়ে বের করার চেষ্টা আপনি কতটা ঝুঁকি নিতে পারবেন আর তার অর্থমূল্য কত হবে এইরকম। ব্যক্তিগত, অ্যাকাডেমিক আর ব্যবসায়িক - সব জায়গাতেই এগুলোর চমৎকার প্রয়োগ হতে পারে। আরও লিখুন এরকম বিষয় নিয়ে।

শামীম এর ছবি

উৎসাহমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

স্বপ্নহারা এর ছবি

ভাল লাগল...বেশ কিছু জিনিস জানলাম। ধন্যবাদ!

হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

আহমেদুর রশীদ [অতিথি] এর ছবি

আরে, বই বের করার জন্য এখন থেকে এই পদ্ধতি কাজে লাগাব।

শামীম এর ছবি

টুটুল ভাই ... অতিথি কেন? জাতি জানতে চায় ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

জাতি অতিথিদের কদর বেশী করে,তাই।

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

সিরাত এর ছবি

দারুণ লেগেছে! আরো মনোযোগ দিয়ে আরেকবার পড়বো, কিন্তু কথা হল, মানুষের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত কিন্তু চুড়ান্তভাবে rational না, সুতরাং ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে হয়তো অন্য ম্যাট্রিক্স প্রযোজ্য। তবে গ্রুপের ক্ষেত্রে এটা খুবই কার্যকর। গ্রুপের কাজকর্মও প্রেডিক্টেবল।

ব্যক্তির ক্ষেত্রে এরকম একটা মডেল পেলে দারুণ হতো। বানানো যাবে, কিন্তু it must be tampered with wisdom।

শামীম এর ছবি

ব্যক্তিভেদে মেট্রিক্সটা ভিন্ন হবেই। আমিই হয়তো আরো ৫ বছর পরে এই মেট্রিক্সটা অনুপযুক্ত ভাববো। বিবেচ্য বিষয়ে তখন ভাল স্কুলের দূরত্ব গুরুত্বপূর্ণ একটা উপাদান হিসেবে বিবেচিত হবে। বুয়েটের দূরত্ব তখন কোন বিবেচ্য বিষয় হবে না (বউ-এর মাস্টার্সের থিসিস আগামী কয়েকমাসেই শেষ হবে জন্য)।

একই ভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য স্থানভেদে, সময়ভেদে মেট্রিক্স ভিন্ন হবে।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

রণদীপম বসু এর ছবি

হা হা হা !
মজা পেলাম পড়ে শামীম ভাই। সহজ যে উদাহরণটা দিলেন এবং এর সাথে যে আপেক্ষিক মান ও গুরুত্বের উদাহরণ টানলেন, ভেবে দেখলাম আমরা সবাই হয়তো এই বাসা বদলের ক্ষেত্রে এই ফ্যাক্টর ও আরো সম্ভাবনাময় ফ্যাক্টরগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে চিন্তাগতভাবে হাইপোথিটিক একটা ক্যালকুলেশন করে ফেলি মাথার মধ্যেই। এবং তা থেকে আপাত একটা সিদ্ধান্তও আমরা নেই।

এগুলারই প্রাতিষ্ঠানিক ফরমটা দেখে মজা লাগলো। বড় কোন প্রজেক্টের জন্যে তো মাথার ভেতরে যোগ বিয়োগ করলে হবে না, তখন এভাবেই এগুতে হয়।

ধন্যবাদ। ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আরো চাই এরকম।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

শামীম এর ছবি

এরূপ নিরস জিনিষ পড়ে মজা পেতে পারাটা একটা বিরাট গুন!

আর নিরস জিনিষ থেকে চিপা দিয়ে রস বের করতে পারাটাও সেইরকম ব্যাপার ... ...

আর, আপনি একেবারে জায়গামত হাত দিয়েছেন .... আমাদের মাথার ভেতরে এই ধরণের আরো জটিল প্রসেস সবসময় চলতে থাকে। সেগুলোকে এভাবে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বুঝতে পারাটা কম্পিউটার প্রোগ্রামিং করার জন্য অত্যাবশ্যকীয় .... ... একই ভাবে জোরে গাড়ি চালানোর চাইতে যানযটের ভীড়ে মধ্যে আস্তে ধীরে নিরাপদে গাড়ি চালানোটা বেশি দক্ষতার পরিচায়ক।

এইবার ধান্ধার কথা বলি: আপনাদের কাছে যদি সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়ার ছকটা বোধগম্য হয়, তাহলে সাহস করে এটাকে সাপ্লিমেন্টারি রিডিং হিসেবে ক্লাসে সরবরাহ করবো ... (গতক্লাসে ইংরেজিতে পড়া অনেকেই বুঝতে পারে নাই)।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

দুর্দান্ত এর ছবি

হাতিরঝিল প্রকল্পটা নিয়ে একটা লেখা দিন। এটা সম্বন্ধে আরো জানতে চাই।

তানভীর এর ছবি

পোস্টে উত্তম জাঝা!

দারুণ বুঝিয়েছেন শামীম ভাই। এখন অবশ্য অনেক সফটওয়ার পাওয়া যায়। খালি ইনপুট দিলেই রেজাল্ট দিয়ে দেবে। কেউ আর মাথা খাটাতে চায় না খাইছে

হিমু এর ছবি

চমৎকৃত হলাম!

বানানপ্রমাদগুলি শুধরে নিতে পারেন।

বিশ্লেষন > বিশ্লেষণ
সতর্কবানী > সতর্কবাণী
মাথাব্যাথা > মাথাব্যথা
কর্মকান্ড > কর্মকাণ্ড
অর্থনৈতীক > অর্থনৈতিক
বৈশিষ্ট > বৈশিষ্ট্য
সুক্ষ্ণ > সূক্ষ্ম
নির্নয় > নির্ণয়
জীববৈচিত্র > জীববৈচিত্র্য



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

শামীম এর ছবি

ধন্যবাদ (বানানের জন্য)

ঠিক করার চেষ্টা করছি।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সুমন চৌধুরী এর ছবি
প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

"সেভ করে রাখলাম, পড়ে পড়বো। ভালো হয়েছে। আপাতত ৫ দিয়ে গেলাম" চোখ টিপি

শামীম এর ছবি

তৃণভোজীর ডায়লগ ইনভারটেড কমার মধ্যে সাঁটিয়ে চোখ টিপির মর্মার্থ বুঝতে পার্লাম্না ... .... ইয়ে, মানে...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এজন্যইতো চোখটিপে দিলাম, পাছে যদি ভেবে বসেন ইহা আমার কমেন্ট। যাইতেছি পিকনিকে, এসে পড়ে মন্তব্য দিবো।

শামীম এর ছবি

পিকনিক শুনেই তো খিদা পাচ্ছে .... ... ইয়ে, মানে... ওঁয়া ওঁয়া
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

senjuti এর ছবি

exactly এই অ্যানালিসিসটা আমরা রিস্ক গ্রেডিং এর সময় করি, ওয়েটেড অ্যাভারেজ ধরে, এটার ফিন্যান্সে আর প্রজেক্ট ম্যনেজমেন্টে খুব কমন কিছু ব্যবহার আছে।

শামীম এর ছবি

শিখতে মঞ্চায় ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বাহ, দারুণ কাজের পোস্ট। ক্লাসে এক সময় শেখানোর চেষ্টা করেছিলো। কী শিখেছি জানি না, তবে গ্রেড ভালোই পেয়েছিলাম। খাইছে

শামীম এর ছবি

কোন বিষয়ের ক্লাসে?
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

রোবোটিক্স/ক্যাপস্টোন ডিজাইন কোর্সে। জাপানে কোনো প্রকল্পে হাত দেওয়ার আগে লাভ-ক্ষতির হিসেব কষে নেওয়া হয়, তার উদাহরণ দেওয়া হয়েছিলো। মাথায় ঢুকে গেছে এখন ব্যাপারটা। আগে চিন্তা করে কাজে হাত দিলে কাজ ভালো হয়। লার্ন-অ্যাজ-ইউ-গো টাইপ কাজ টেকে না। খুবই কাজে এসেছিলো। সেজন্যই এই পোস্টে মিল (এবং উপযোগিতা) দেখে ভালো লাগলো।

দুর্দান্ত এর ছবি

খুব আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। অভিনব ও সরল উপস্থাপনা ভাল লেগেছে।

প্রকল্পের বিকল্প প্রস্তাবগুলোর অর্থনৈতিক খরচের বিষয়টা সরাসরি একমাত্র নিয়ামক হতে পারে না

কথা সত্য। তবে তাই বলে নিয়ামক অনেকগুলো তাও বোধকরি ঠিক না। আমারতো মনে হয় শেষমেষ সব বিনীয়োগের একক উদ্যেশ্য আর্থিক মুনাফা, কিছু প্রকল্পের ক্ষেত্রে তা ব্যাক্তিগত বা মুষ্টিমেয় কিছু লোকের সরাসরি মুনাফা, কিছু প্রকল্পের ক্ষেত্রে তা একটি বড় দলের পরোক্ষ মুনাফা, আর বাদবাকি প্রকল্পগুলো এই দুই মেরুবিন্যাসের মধ্যবর্তীস্থলের কোথাও অবস্থি্ত।

বিনীয়োগসিদ্ধান্ত ও প্রকল্পবাছাই এর সর্বাধিক প্রয়োগ য়েখানে ব্যাক্তিগত বা মুষ্টিমেয় কিছু লোকের সরাসরি আর্থিক মুনাফার পেছনেই সেখানে বাড়ী খোঁজের সরল উদাহরনটি চাইতে হিরাঝিলের উদাহরনটাই বেশী আকর্ষনীয় ছিল। প্রকল্প বাছাইয়ের সময় ঝুঁকির মূল্যায়ন কিভাবে হবে তাও একটু দেখতে চেয়েছিলাম। এই দুইটি বিষয় হয়তো আপনার পরের কোন লেখায় আসবে।

প্রকল্প মানেই এর কিছু নির্দিষ্ট উদ্যেশ্য থাকবে, যেগুলো পূরন করাই প্রকল্পের স্বার্থকতা। তাই প্রকল্প বাছাইয়ের বিবেচ্যগুলো আসলে সেই উদ্দেশ্যগুলোরই বিবেচ্য। ড্রাকার সেই ১৯৫৪ সালে বলে গেছেন প্রকল্পের উদ্যেশ্যগুলোকে SMART মানে সুনির্দিষ্টতা, পরিমাপযোগ্যতা, কৃতিসাধ্যতা, প্রাসঙ্গিকতাও সময়বাধ্যতা, এই পাঁচ শর্তে য়াচাই করে নিতে। এদের কোনটির কি ওজন, মওলা জানে। তবে উন্নয়ন প্রকল্পে মুনাফার ওজন কম, তাই সুনির্দিষ্টতা, পরিমাপযোগ্যতা আর কৃতিসাধ্যতার শর্তগুলো কিভাবে মানা হয়, সেটাও একদিন আপনার কাছে বুঝতে চাই।

শামীম এর ছবি

প্রথমেই আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এই বিষয়টা পরিবেশগত প্রতিক্রিয়ার নির্ণয়ের (Environmental Impact Assessment) প্রক্রিয়া শেখার পর্যায়ে পড়তে হয়েছিল। সরাসরি ঝুঁকির ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি। সম্ভবত প্রতিটা বিবেচ্য বিষয়ের জন্য নির্দিষ্ট রেটিং/অনুপাত দেয়ার তালিকার মধ্যেই ঐ ঝুঁকির ব্যাপারটা থেকে থাকে।

কিছু ব্যাপারকে সরাসরি অর্থমূল্যে মাপজোক করার মত বুদ্ধিমান হিসাবের পদ্ধতি বের হয়নি। তাছাড়া দীর্ঘমেয়াদি অর্থমূল্য (IRR) বের করাটাও কিছুটা কঠিন। তাই সেগুলোকে এই ধরণের পদ্ধতিতে বিবেচনা করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ: বর্তমানে গৃহিত হাতিরঝিল প্রকল্পের ফলে সম্ভবত পরিবেশ উন্নয়নটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ... কারণ যোগাযোগের উন্নয়ণের কথা চিন্তা করলে দুইটি প্রকল্পই সমান দক্ষতা দেবে। কিন্তু পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার ফলে সামগ্রীক ভাবে নাগরিক জীবনে যে উন্নয়ন হবে সেটাকে অর্থ দিয়ে তুলনা করাটা এই পদ্ধতির চেয়ে বেশি কঠিন।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আগে আমরা নিজেরাই নিজেদের বাড়িঘর বানিয়ে থাকতাম
তারপর আশেপাশের মানুষজন শিক্ষিত হয়ে গেলে তারা এসে বোঝালো ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া বাড়ি বানানো ঠিক না (ইঞ্জি এনকিদুর যুক্তিহ মোতাবেক ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া বাড়ি বানালে সেই বাড়িতে গরম লাগে বেশি)

আমরা বাড়ি বানানোর খরচের সাথে ইঞ্জিনিয়ারের অংক আর জ্যামিতি করার টাকাও যোগ করলাম

কিন্তু এখন দেখি ভাড়া বাসা খুঁজতেও ইঞ্জিনিয়ার লাগবে...

০২

নাহ
এইসব শিক্ষিত লোকজনের পাল্লায় পড়ে নিজের টাকা নিজের পকেটে রাখা বড়োই মুশকিল...

শামীম এর ছবি

শিক্ষার লক্ষ্যই তো হল পকেট ... ... খাইছে
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

বিপ্রতীপ এর ছবি

মিয়াভাই,
লেখাটা চমৎকার লাগলো...চলুক
তবে ঢাকা শহরে ব্যাচেলর হিসেবে কখনো বাসা খুঁজতে গেলে এই উদাহরন দিতেন না...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

স্যার, আমি কিছুই বুঝি নাই চোখ টিপি

শামীম এর ছবি

ব্যাপার না .... .... আমিও কি আর সব বুঝছি নাকি!

যত বেশি আলোচনা আর চর্চা হবে ততই ধারণাগুলো পরিষ্কার হবে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আমার বোঝার যদি ভুল না হয় এটাকে বোধ হয় এনালিটিকার হায়ারার্কি প্রসেস (AHP) বলে। খুবই কার্যকর একটা ব্যপার। তবে একটা আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ধারনের ক্ষেত্রটিই সবচেয়ে ঝামেলার মনে হয় আমার কাছে।

ব্যক্তিগত একটা অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে। বাস্তবে এই আপেক্ষিক গুরুত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেবার প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। বাংলাদেশের পরিবহন খাতে প্রকল্প নির্বাচনের জন্য একটা সাধারন ফ্রেমওয়ার্ক তৈরির কাজে হাত দেয় বাংলাদেশ সরকার। কপালের দোষে হোক আর গুনেই হোক তখন সেই ফ্রেমওয়ার্ক তৈরির কাজ আমার হাতে এসে পড়ে। সৌভাগ্যক্রমে মাথার ওপর কিছু অভিজ্ঞ গুরু আর পাশে কিছু দক্ষ সহকর্মী ছিলেন। যা হোক বাস্তবে এই কাজটি করতে গিয়ে দেখা গেল এই আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ধারন করাটাই সবচেয়ে ঝামেলার কাজ। তবে এই ক্ষেত্রে স্টেক হোল্ডারদের মতামত নেয়াতে বেশ ফল দিয়েছিল। আপাত দৃষ্টিতে খুব সহজ মনে হলেও সড়ক ও জনপথ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এরা অনেক বিষয়ে একমত হতে পারছিলেন না। অবশেষে অনেক টানাপোড়েনের পর সেই রিপোর্টটি অনুমোদিত হয়। জানিনা আজকাল এই ফ্রেমওয়ার্ক কতটা কার্যকর ভাবে প্রয়োগ হচ্ছে। যাই হোক আপনার পোস্টটা পড়ার আবার সেই জটিলতার কথা মনে পড়ল। এই লেখাটা তখন হাতে পেলে বেশ কাজে লাগত। ভবিষ্যতেও সুযোগ পেলে কাজে লাগাব আশা রাখছি।

শামীম এর ছবি

আসলেই খুব ঝামেলার। দুইটা বিষয়ই ঝামেলার।

আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ণয়ের ব্যাপারেও ক্রমহীন-জোড় পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা আছে। এজন্যই তো আরো অনেক পদ্ধতি আছে এবং পদ্ধতিগুলোর উন্নয়ন নিয়ে সবসময় কোথাও না কোথাও গবেষণা চলছে।

আবার বিকল্প প্রস্তাবগুলোর জন্য যেই সহগ (ক্রমাবস্থান/আপেক্ষিক মান) সেগুলোরও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন ধরুন, কোন একটা প্রকল্পের কারণে উন্মুক্ত জলাশয়ের দ্রবীভূত অক্সিজেনের ঘনত্বের মাত্রা ৯ মি.গ্রা/লিটার থেকে কমে ৪.৫ মি.গ্রা/লিটার হবে। সেক্ষেত্রে কিন্তু একটা আরেকটার অর্ধেক হলেও প্রকৃতিতে এর প্রভাব আরও অনেক ব্যাপক ... ... তাই এইসব ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়ের (দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা) সাথে প্রকৃতিতে এর প্রভাব চিন্তা করে সাব-ইনডেক্স বের করা হয়। এই সম্পর্কগুলোকে (ঘনত্ব বনাম সাব-ইনডেক্স) লেখচিত্র (গ্রাফ) দিয়ে প্রকাশ করা হয়। সেখানে ৯ মি.গ্রা/লি. ঘনত্ব যদি ১০০% ভালো নির্দেশ করে তবে ৪.৫ মি.গ্রা/লি. ৫০% ভালো না হয়ে বরং হয়তো ২০% ভালো নির্দেশ করবে।
==

আমি নিজে পড়ি আর ভুলে যাই ... ইয়ে, মানে... । তাই এবার নিজের মত করে লিখে রাখছি .... হাসি

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

শেখার জুড়ি নাই

প্রচেত্য দা

গৌতম এর ছবি

দারুণ লেখা। লেখাটি প্রিন্ট করে অন্যদের পড়ার জন্য আমার অফিসের নোটিশবোর্ডে টানিয়ে দিলাম।

আচ্ছা, লেখায় টেবিল যুক্ত করে কীভাবে?
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শামীম এর ছবি

নোটিশবোর্ডে ঝুলানো হয়েছে শুনে একটু ডরাইছি।

html কোড দিয়ে টেবল দেয়া যায়। (এই প্রশ্নটা আমি আরো আগে আশা করেছিলাম! চোখ টিপি )

আমি পুরা লেখাটা ওপেন অফিসে কম্পোজ করার পর html এ পরিবর্তন করে নিয়েছিলাম। ওর মধ্যে বাই-ডিফল্ট অনেক গার্বেজ আসে, যেটা পোস্ট এডিট করতে গেলে প্রয়োজনীয় লাইন খুঁজে বের করতে পেইন দেয়। তাই কষ্ট করে পুরাটা থেকে সেই গার্বেজগুলো মুছে দিয়েছি।

এই বুদ্ধিটার জন্য সচলায়তনের সাহায্য সেকশনটা ধন্যবাদ পাবে। (এখানে আছে)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আমি একটু অন্যভাবে চেষ্টা করলাম। প্রথমে যতোটা সম্ভব সবকিছুকে টাকায় প্রকাশ করলে জিনিসটা কেমন হবে?
ধরি, শ্বশুর বাড়ি মাসে ৪ দিন, বুয়েট ২০ দিন, অফিস ২০ দিন, শপিং ৪ দিন। তাইলে -

বাসা-১: ৮০০০+ ১২০*৪*২ + ১৩০*২০*২ + ১০০*২০*২ + ১৫*৪*২ = ১৮২৪০
বাসা -২: ২৩১২০
বাসা -৩: ২১০৮০

এরপরে আসে বাসার সাইজ, আরামের বিষয়গুলো। এটা আবার অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, যেমন, বেতন বেশি পেলে বেশি খরচের বিনিময়ে আরাম কেনা যায়; কিন্তু যখন টাকা সেইভ করতে পরিশ্রম করা সমস্যা নয়, তখন আবার আরামের আপেক্ষিক গুরুত্ব কমে যায়। যেমন, প্রতি মিনিট আরামের জন্য যদি ১০ টাকা খরচ করতে রাজি হয়, তাহলে -
বাসা - ১: ১৮২৪০ + ২৫*২*১০ = ১৮৭৪০
বাসা - ২: ২৪১২০
বাসা - ৩: ২১৭৮০

বাসার সাইজ অবশ্য আমার বড়ো পছন্দ। হাসি

একইভাবে সাইজের গুরুত্বকেও টাকায় প্রকাশ করা যেতে পারে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শামীম এর ছবি

গভীরভাবে চিন্তা করলে তো মনে হচ্ছে বাসা সিলেকশন নিয়েই বিরাট বই লিখে ফেলা যায় দেঁতো হাসি

আরো কিছু চলক লাগানো যাক:
দক্ষিনের বারান্দা (=আমার মা'এর বাসা পছন্দের একটা প্রধান বিবেচ্য), লেকভিউ, পার্কভিউ, সাউথভিউ, বস্তিভিউ ইত্যাদি .... অবশ্য ভাড়াতেই এই বিষয়গুলোর সুবিধা/অসুবিধাগুলো চলে আসে। -- আরেকদিন নান্দনিকতার তুলনা এবং মূল্য বিষয়ে (aesthetics / visual resources) লেখার ইচ্ছা আছে।

যাতায়াতের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তাজনিত মানসিক চাপ একটা বড় বিবেচ্য হয় ... ট্যাক্সিক্যাব সবসময় পাওয়া যায় কি না; বাসে উঠে সাধারণত বসার জায়গা পাওযা যায় কি না ইত্যাদি।

বড়ই জটিল বিষয় .... ....
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।