এই সেমিস্টারে রবিবার আমার সাপ্তাহিক বন্ধ। আর এমন ছুটির দিনের অলস সন্ধ্যায় বিদ্যূৎ চলে গেলে নেটবুকের ব্যাটারী ক্ষয় করে মাথায় ঘুরতে থাকা বিষয়ে ব্লগ লেখা ছাড়া তেমন কিছু করার থাকে না। বাবা দিবসে বাবাকে নিয়ে কিচ্ছু লিখছি না, কারণ বাবাকে নিয়ে যেই স্মৃতি আর অনুভুতি সেটা ফিকে হওয়ার নয়, তাছাড়া তরল পদার্থ কীবোর্ডের ক্ষতি করতে পারে। তাই অন্য যেই বিষয়টা মাথা থেকে মুছে যাওয়ার কিছুটা সম্ভাবনা আছে সেটা নিয়েই আপাতত তেনা প্যাচাই একটু।
খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে আমার বাছ বিচার একটু কম এবং লবনের কমবেশিতে খেতে তেমন কোনো অসুবিধা হয় না। আমার ৩০+ বি.এম.আই. (Body Mass Index, BMI= weight in kg / sqare of height in meter) এই খাদ্যরসিকতার বিষয়টাকেই প্রকটভাবে তুলে ধরে। আমাকে খাওয়াতেও লোকজন (চাচী/ফুফু ইত্যাদি) পছন্দ করে ... ... কারণ তাঁদের সমস্ত রান্নাই আমার অসাধারণ ভাল লাগে সেটা আমার খাওয়া দেখেই উনারা বুঝে নিতে পারেন। শুধুমাত্র নিজ বাসায় আমাকে খাওয়া দাওয়াতে নিরুৎসাহিত করা হয়, কারণ এতে আমার স্বাস্থ্যহানী হওয়ার আশংকায় ওনারা যথেষ্ট আন্তরিক। হাসাহাসি করার কিছু নাই ... ... আগের আমলে স্বাস্থ্যহানী বলতে শুধু টিংটিঙে পাতলা স্বাস্থ্য বুঝানো হত ... ...কিন্তু আধুনিক মা/শাশুড়ি/বউরা বি.এম.আই.-এর রেঞ্জ (18 - 22 kg/m2) জানে ও বোঝে। আদর্শ রেঞ্জের সর্বোচ্চ মান থেকে আমার ওজন প্রায় আধমন বেশি (!) ... কাজেই আন্ডারওয়েটের মত ওভারওয়েটও সুস্বাস্থ্য নয় অর্থাৎ এটা স্বাস্থ্যহানী।
একটু চা খেয়ে আসি ... ...
আধাঘন্টা পর, আমি কিন্তু চা খেয়ে ফিরে এসেছি .... যা হোক, যেটা বলছিলাম:
খাওয়া দাওয়াতে খুব আগ্রহী হলেও রান্না করার ব্যাপারে আমাকে আনাড়ি বলা যায়। তবে অনেক রেস্টুরেন্টে যে দারুন খাবার রান্না করে সেটা আমরা সবাই জানি ... আর জেনে জেনে সেসব জায়গায় খেতে চলে যাই। আবার অনেক বাসাতেই এমন সুন্দর কিছু আইটেম মাঝে মাঝে শখ করে রান্না করা হয়, যার কোনো তুলনা কোনো রেস্টুরেন্টে পাওয়া যাবে না। অনেক সময়ে আমি বা আরও গুণমুগ্ধ খাদক এই সব মা/চাচী/খালা/ফুফু/ভাবীদেরকে বলি যে আপনার এই আইটেম যদি বিক্রি করা যায় তবে সেটা অমুক হোটেলের ব্যবসাকে লাটে উঠিয়ে দেবে। কিন্তু সেই সব গুণী মহিলারা শুধুই হাসেন, তাঁদের রান্না করা খাবার বা তৈরী করা আচার বিক্রয় করেন না, শুধু আমাদের কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করতেই বিনামূল্যে (কৃতজ্ঞতাটুকু অমূল্য) এসব অকাতরে হাসিমুখে দিয়ে দেন।
বিনামূল্যে দেন অর্থাৎ এগুলো পেতে কোনো টাকা দেয়া লাগেনা, এটা সত্য হলেও দানের ব্যাপারটা যে পুরাপুরি একপেশে হয় সেই কথাটা পুরাপুরি ঠিক নয়। কারণ, আমাদের মনে ওনারা যেই স্থান করে নেন এবং রান্নাবান্নার ক্ষেত্রে প্রথম পরামর্শের উৎস হন -- এই ধরণের স্থান টাকা খরচ করলেও সহজে পাওয়া যায় না।
.... .... আচ্ছা কী যেন বলছিলাম ... ... ও হ্যাঁ মনে পড়েছে; শখের কাজ যে পেশাদার কাজের চেয়ে উন্নত মানের হতে পারে তার একটা উদাহরণ দিচ্ছিলাম (বাবুর্চির চেয়ে ভাল রান্না)। ইচ্ছা করলে এটা নিয়ে আরও ত্যানা প্যাচানো যায় ... ... যেমন, কোনো কোনো লোকের সংগ্রহ করা তৈলচিত্র কোনো যাদুঘরের সংগ্রহশালাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। একজন শখের শিল্পীর গান পেশাদারদের ছাড়িয়ে যেতে পারে; শখ করে করা হাতের কাজ (কাঁদামাটির কাজ/ কাঠ খোদাই করা / পেইন্টিং ইত্যাদি), পেশাদার কাজের চেয়ে হাজারগুণ ভাল হতে পারে ... ... কারণ পেশাদার কাজে গ্রাহকের চাহিদার বাইরে কিছু করার দরকার হয় না, আবার অতিরিক্ত কিছু করলেও উল্টা ফল হতে পারে, কিন্তু শখে মানুষ যা করে সেটার মধ্যে নিজের সমস্ত কল্পনা, আবেগ এবং মননশীলতা স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে পারে; নিজের কল্পনার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে পারে।
আক্কেলমান্দকে লিয়ে ইশারাই কাফি ... কাজেই ওপেনসোর্স সফটওয়্যার মাত্রই নামকরা প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটারি সফটওয়্যারের চেয়ে নিম্নমানের/পচা হতে হবে বলে সস্তার তিন অবস্থা মার্কা তালগাছের মালিকগণনিশ্চয়ই এখনও আগের মত করেই ভাববেন ... ... আক্কেলমান্দদের জন্য শুধু শুধু বিনামূল্যের সচলায়তন, অভ্র, উইকিপিডিয়া, ফায়ারফক্স বা লিনাক্স নিয়ে কথা বলার দরকার নাই .... শুভরাত্রি।
মন্তব্য
শামীম ভাই, আপনার BMI ৩০ জানতাম না তো। আপনি লম্বা মানুষ বলেই মনে হয় চোখে পড়েনা।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আমি ভাইদের মধ্যে সবচেয়ে খাটো। আবার আমার মত একই রকম দেখতে অন্য অনেকের চেয়ে আমার ওজন বেশ খানিকটা বেশি পাওয়া যায় ..... সম্ভবত হাড্ডির ওজন একটু বেশি .... বি.এম.আই. সহ সব ধরণের মেজারমেন্টই ১০০% স্যাম্পলে সঠিক ফলাফল দেবে না ... ০.০১% নমুনাতে হলেও ভুল করবে; নিজেকে সেই সংখ্যালঘু গোত্রের একজন ভেবে একটু শান্তি পাওয়ার চেষ্টা করি ... (Too young আর Old মানুষের ক্ষেত্রে BMI পুরাপুরি ঠিক ফলাফল দেয়না বলে পড়েছিলাম কোনো এক সময়ে)
ওজন কমানোর চেষ্ট করছি ... ... ... কিন্তু লোল ঝরানো খাবার দাবার (প্রায় সব খাবারই ..) দেখলে কি যে হয়ে যায় ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
"বাবা দিবসে বাবাকে নিয়ে কিচ্ছু লিখছি না, কারণ বাবাকে নিয়ে যেই স্মৃতি আর অনুভুতি সেটা ফিকে হওয়ার নয়, তাছাড়া তরল পদার্থ কীবোর্ডের ক্ষতি করতে পারে"
আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পর যদি বেঁচে থাকি তখনও মনে হয় এই কথাটা সত্য থাকবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
রান্নার মত আরেকটি কাজের কথা কি কেউ বলতে পারেন যেখানে পঞ্চইন্দ্রিয়ের সবগুলোর ব্যবহার হয়?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ক্যুইজ দিলেন নাকি!
খাওয়া আর সেক্স ... এই দুইটা মানুষের বেসিক ইন্সটিংক্ট ... অর্থাৎ কেউ না শিখালেও পারবে। বাচ্চাকে শিখাতে হয় না যে মায়ের বুকে খাবার আছে আর সেটা চুষে খেতে হবে ... ... আর উপযুক্ত বয়স হলে অন্য ব্যাপারটাও ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ক্যুইজ দেই নাই, জানতে চেয়েছি।
বেসিক ইনসটিংকটের কথা বলিনি। বুদ্ধি খাটিয়ে, শরীর খাটিয়ে করতে হয় এমন কাজের কথা বলেছি। এমন কাজ যা নির্বোধের পক্ষে করা সম্ভব না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
- দেশে থাকলে একটা ব্যাপার থাকে, যেটা বাইরে 'মিস' করা হয় শামীম ভাই। খালা, মামী, চাচী, ফুফুদের বাড়িতে খেতে যাওয়ার আব্দার। আহা, খালি এইসব কারণেই মনে হয় যাইগা, দেশে!
আমি মোটামুটি ভোজনরসিক। কিন্তু আমার বাহ্যিক গঠন দেখলে কেউ সেটা প্রথমে ঠাহর করতে পারবেন না। তবে, এই রসিকতায় কিছু 'শর্ত প্রযোজ্য' ব্যাপার স্যাপার আছে। আমাকে খাওয়ার মুডে থাকতে হবে। এই মুড-সুইচটা অন থাকলে, মাশাল্লা দিনে ৫-৬ বার খেয়ে ফেলতে পারি। এবং প্রতিবারই কম্পিটিশন দিয়ে। খাবার সুস্বাদু হলে তো কথাই নেই।
খাওয়ার মুড-সুইচটা অফ থাকলে অবশ্য অন্য কথা। সারাদিনে দেখা যায় প্রায় কিছু না খেয়েই কাটানো হয়ে গেছে। এটা এখানে প্রচুর পরিমানে হলেও দেশেও হতো।
নিজের রান্না করার আলসেমী এর একটা মহাকারণ অবশ্য। এখানে যারা দাওয়াত দিয়ে খাওয়ায়, তাদের মধ্যেও দেশি সেই 'শখের বশে রান্না করে খাওয়ানো' আমেজটা পাওয়া যায় না। আহা, দেশে-বাড়িতে রান্নার আগে তার প্রিপারেশনের গন্ধেই তো ক্ষুধার মাত্রা দশ রিখটার ছাড়িয়ে যায়! তখন খালি পাকস্থলী বলে, "খালি খাওনটা দিয়া লউক, কোপাইয়া সব একশা কইরালামু..."।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এই বডি লইয়াও যে দূর্ধষ্য বোলিং করেন। হ্যাটস অফ। তয় ক্যাপ্টেন্সি ভালো না। খ্যাক খ্যাক।
নতুন মন্তব্য করুন