সিনেমা দেখে হাসতে বেশি ভালো লাগে

শামীম এর ছবি
লিখেছেন শামীম (তারিখ: মঙ্গল, ০৪/০৯/২০১২ - ১১:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মনে পড়ে পরীক্ষার সময় টেনশন কমাতে মাঝে মাঝে বন্ধু বান্ধব মিলে বিডিআরে চলে যেতাম। ১০-১২ জন এক লাইনে বসে ৬ টাকার টিকেটের সিনেমা দেখছি। সিরিয়াস সিনেমায় নায়িকা নাচছে, পেছনে এক দঙ্গল সখি। একজন বললো দ্যাখ্ দ্যাখ্ সৌরভের বান্ধবী - কারণ সৌরভের টি-শার্টও হলুদ, আর নায়িকার নৃত্যরত সখিদের পোশাকও হলুদ -- খবরটা একজন থেকে আরেক জন হয়ে রিলে হতে হতে গ্রুপের সকলের কাছে গেল ---- সৌরভসহ সকলেই উচ্চস্বরে হাসাহাসি ..... পেছনে সিরিয়াস দর্শকদের রক্তচক্ষু। কিংবা চাকুরী বঞ্চিত নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের ডায়লগ - "কী লাভ হল এ্যাত ভাল পরীক্ষা দিয়ে ৭টা লেটার নিয়ে এইচএসসি পাশ করে ........... " - আরেক দফা হাসির ঝড়, পেছনের সিরিয়াস দর্শকগণ মহা বিরক্ত। কারণ তাঁরা জোকটি ধরতে পারেননি (--- মনে হয় কখনই পারবেন না। ক্লু: এইচ এস সিতে সব মিলিয়ে ৬ সাবজেক্ট, অথচ নায়ক ৭ লেটার পায়)। কিংবা ধরুন, গ্রামের ষোড়শী (ধুমসী) নায়িকা গাছের ডাল না ভেঙ্গে, সেখানে বসে সদ্য আগত নায়কের মাথায় ছোট্ট ইট মারে --- গ্রামের ষোড়শী হলে কি হবে মুখে পুরু মেক-আপ, শ্যাম্পু-আয়রন করা খোলা চুল আর পুরু লিপস্টিক দেখে হাসাহাসি হবে নাই বা কেন? বাংলা ছবির নাচ মানে তো ওয়ান টু ওয়ান টু করে জগিং স্টাইলে নড়াচড়া, উঠাবসা - দেখলে হাসি ছাড়া গালিও আসে না। বন্ধু বান্ধব ছাড়া বাংলা ছবির পুরা মজা নেয়া যায় না --- বন্ধু বান্ধব নাই তো বাংলা সিনেমা দেখাও নাই।

ছোট বেলায় বিটিভিতে ছুটির দিন দুপুরে বাংলা ছবি দেখাতো। ওহ্ সেই একই প্যান প্যান, ঘ্যান ঘ্যান, দূঃখ কষ্টের কাসুন্দি। এক ভুল মানুষ বার বার করে না, তাই ঐ সিনেমাগুলো তেমন দেখা হত না। কিন্তু কার্টুন মিস করতে চাইতাম না। ব্যক্তিগতভাবে সিনেমা হল আমার কাছে বিনোদনের মাধ্যম। হয় এটা আমাকে একটা কল্পনার জগতে নিয়ে যাবে নাহলে হাসাবে ---- কান্নাকাটি মার্কা সিনেমা আমার দুই চোখের বিষ। সময়, অর্থ খরচ করে সিনেমা হলে কিংবা টিভিতে কান্নাকাটি মার্কা সিনেমা দেখার কোন মানে হয় না - কারণ কান্নাকাটি করার জন্য আমার এবং আমাদের জীবনে দূঃখ কষ্টের তেমন একটা ঘাটতি নাই।

এজন্য সায়েন্স ফিকশন আর কমেডি (humor) আমার প্রিয় সিনেমার ধরণ। প্রিয় নায়ক জ্যাকি চ্যান - এ্যাকশন আর মুখভঙ্গি দেখে হাসি আসবেই, কোনো টেনশন নাই -- কারণ আল্টিমেটলি নায়ক জিতবে, কেউ মারা যাবে না; আর হিন্দি হলে গোবিন্দ -- নো টেনশন মার্কা সিনেমা, ডায়লগ শুনে খালি হাসতে হবে। এছাড়া সায়েন্স কিংবা ফিকশন: Star Trek, Star Wars, Day after tomorrow, 2012, The Da Vinci Code, The Lord of the Rings ইত্যাদি টাইপের কিংবা অ্যানিমেটেড কার্টুন - Kungfu Panda, Ice Age, Avatar the last air bender ইত্যাদি দেখতে ভাল লাগে।

নো টেনশন মার্কা সিনেমাও খারাপ লাগে না। যেমন: The Five Man Army, The lost platoon (অনেকটা ভুতের), Roman Holiday, Chocolat (চকলেট নয় বরং এটাকে উচ্চারণ করেছিলো "শোকোলা"), You've got mail ইত্যাদি। আর জ্যাকি চ্যান বাদে কমেডির মধ্যে অ্যাডাম স্যান্ডলারের মুভি পাইলেই দেখি। বেন স্টিলারের মুভিগুলোও খারাপ লাগে না। এছাড়া কমেডির মধ্যে The Gods must be crazy (সিকুয়েল ২ টাও ভাল লেগেছে, ৩ নং টা ভাল লাগেনি), Three Stooges, Mr. Bean ইত্যাদি ভাল লাগে। হ্যারি পটার এবং জেমস বন্ডের সিনেমায় টেনশন, খুনাখুনি বেশি - তারপরেও একবার দেখি।

আমার সম্বন্ধী কিংবা বউ সকলেই সিরিয়াস টাইপের সিনেমা দেখে। যেমন: Enemy at the gates, The Shawshank Redemption, Forrest Gump ইত্যাদি (এওয়ার্ড পাওয়া ছবি লিস্ট ধরে সংগ্রহ করে।)। ওদের পাল্লায় পরে আমাকে মাঝে মাঝে এগুলোও দেখতে হয়। সিঙ্গাপুর সফরের সময়ে যেই মুভিগুলো কিনলাম সেগুলোতে Who am I, The Gods must be crazy'র পাশাপাশি সেই Sunflower, Roman Holiday, দহন, মাসুম - টাইপের সিনেমায় ভর্তি যা আমি কখনই দুইবার দেখতে আগ্রহী না।

বাসায় দেখা যায়, চ্যানেল ঘুরিয়ে শেষ পর্যন্ত কার্টুন চ্যানেল (কার্টুন চ্যানেল, ডিজনি চ্যানেল, পোগো, নিকলোডিয়ান ইত্যাদি) দেখছি। অনেকবার এমন ঘটেছে যে মেয়েকে (২+ বয়স) সঙ্গ দেয়ার জন্য ওর সাথে কার্টুন দেখতে বসেছি ................. তারপর মেয়ে কখন অন্য ঘরে চলে গিয়ে নিজের মত খেলছে সেটা জানিনা - ধেড়ে শিশু (আমি) কার্টুন চ্যানেলের সামনে ঘন্টা পার করে দিয়েছি।

ঢাকায় বেড়াতে আসা ছোট্ট চাচাতো ভাইয়ের আব্দার রাখতে তাঁকে খোঁজ দ্যা সার্চ দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলাম সিনেপ্লেক্সে। মনে পড়ে, অন্য হলগুলোতে ভালো ভালো ইংলিশ ও বাংলা মুভিও ছিল, কিন্তু ভাইয়ের ডিমান্ড অনুযায়ী তাঁর সাথে খোঁজের হলেই যেতে হয়েছিলো। হলে সিনেমা চলাকালীন সময়ে চেষ্টা করেও চোখ বন্ধ করে রেস্ট নিতে পারিনি। কারণ নায়ক যখনই কোনো ডায়লগ দিচ্ছে হল ভর্তি (হাউজফুল ছিলো) দর্শক উচ্চস্বরে হেসে উঠছে। আমিও হাসছি, কারণ চোখ বন্ধ হলে কি হবে কান তো খোলাই ছিল। এরপর চোখ খুলতে বাধ্য হয়েছিলাম - ঐ এপিক সিনেমা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করতে মন চায়নি। এ্যাতদিন পর বন্ধু বান্ধব ছাড়াই হল ভর্তি দর্শক উচ্চস্বরে হাসতে দেখে - বাংলা ছবি দেখার আনন্দটা আবার ফিরে এল। ধন্যবাদ হে অনন্ত জলিল, তোমার কল্যানে হল ভর্তি বন্ধু পাওয়া গেল।

প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদের নাটকগুলোর মধ্যে হাস্যরস ছিল একটা অন্যতম আকর্ষণ - অবশ্য সেটার উপস্থাপনা হত অন্য রকম উপায়ে। আমি চাই অনন্ত জলিল সাহেব এভাবেই সিনেমা করুক - বাচনভঙ্গি অপরিবর্তিত রাখুক। চরম অ্যাকশন, ইফেক্টসের মাঝে কমেডি একটা আলাদা আকর্ষণ তৈরী করে। উনার মুখ খুললেই কমেডি, নড়াচড়াতেই কমেডি .... আমার মত অনেকেই শুধুমাত্র এই বিনোদন টুকুর জন্যই জলিল সাহেবের ছবি দেখতে হলে যাব।


মন্তব্য

আর্য এর ছবি

আপনার সাথে আমিও একদম একমত। সারাদিনের টেনশন কর্মব্যস্ততা শেষে সিনেমা দেখতে বসি তো একটু শান্তি আর আরাম পাবার জন্যই। সেখানেও যদি অনেক জটিল জটিল জিনিস দেখতে হয়, আর প্রচুর চিন্তা ভাবনা করতে হয়, তাহলে মাথাটা ঠান্ডা হবে কখন? এজন্যই আমার পছন্দের তালিকায় থাকে হালকা কমেডি, থ্রিলার ধরনের মুভিগুলো। দেখার পর হয়ত আর মনে থাকে না কি দেখলাম; কিন্তু যতক্ষণ দেখলাম, ততক্ষণ আনন্দ পাই, সেটাই যথেষ্ট।

অতিথি লেখক এর ছবি

যখন মনটা অনেক বেশি খারাপ থাকে তখন বাংলা সিনেমা দেখতে ইচ্ছে করে। বিশেষ করে প্রয়াত জসীম মামার অ্যাকশন মুভ্যির ঢিশুম ঢিশুম শুনলে/ দেখলে মুখের দাঁতগুলো ঝিলিক দিয়ে ওঠে। বাংলা সিনেমা রক্স।

দ্রোণ মৈত্র

সাবেকা  এর ছবি

আমিও প্রাণ ভরে হাসার সুযোগ খুজি, কিন্তু কপাল এমনি আমাকে ঘুরে ফিরে সিরিয়াস সিনেমা গুলোই দেখতে হয় যাতে করে মন মাথা সবকিছু আরো খারাপ হয় । আসলে ভাল ছবি দেখতে বসলে এই সবই পাতে উঠে আসে মন খারাপ

মাহফুজ খান এর ছবি

একেবারে মনের কথা কইছেন ভাই, কার ভালোলাগে দুই তিন ঘন্টা সময় ব্যয় করে শোকগাঁথা দেখতে। আমিও আপনার মত কার্টুন দেখি, তিনমাত্রিক এনিমেটেড ছবি হইলেত কথাই নাই।
কয়েকদিন থেকেই দেখতেছি, ফেসবুক এবং বিভিন্ন ব্লগে জলিল সাহেবকে নিয়ে নানা ধরনের রসিকতা হচ্ছে। অস্বীকার করছিনা যে উনার উচ্চারনে সমস্যা আছে, উনি অভিনয়ের অ'ও জানেননা; কিন্তু সবকিছুকে ছাড়িয়ে যেটি আমার চোখে পড়েছে তা হল- তার সিনেমাগুলো সচরাচর আর দশটা বাংলা সিনেমা থেকে সম্পুর্ণ আলাদা। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, পৃথিবীর নানা শহরে শুটিং, ভুরিহীন নায়িকার আমদানি, আশ্লীলতা বর্জিত নাচ-গান ইত্যাদি সহ আরো নানা দিক থেকে তার ছবিগুলো স্বতন্ত্র। আমরা যেভাবে লোকটাকে নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছি তাতে করে আমার মনে হয়না, একজন সাহসী মানুষ যে কিনা একটি বিলুপ্ত প্রায় শীল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কোটি-কোটি টাকা খরচ করে সিনেমা বানাচ্ছে, তার প্রতি সুবিচার করছি।

হিমু এর ছবি

মাহফুজ ভাই, এখানে একটা কিন্তু আছে। জলিলকে নিয়ে হাসা আর জলিলের সিনেমার সমালোচনা, দুইটা কিন্তু দুই জিনিস। যারা জলিলকে নিয়ে হাসছে, তারা কিন্তু জলিলের দর্শকগোষ্ঠীরই একটা অংশ। এই হাসিটা ঘৃণা বা বিদ্বেষজাত না, বরং একটা মৃদু অ্যাপ্রিসিয়েশন এর সাথে জড়িত। কয়টা নায়ক দর্শককে হাসাতে পারে? একজন। তার নাম জলিল। কাজেই এই হাসাহাসি জলিলের সিনেমা পুনরুজ্জীবিতকরণের পক্ষেই যাবে। খোঁজ দ্য সার্চের পর যখন সে থামে নাই, তাকে আপনি হামজা দিয়ে টেনেও থামাতে পারবেন না।

সবাই বলছে জলিল সিনেমার জন্য ইতিবাচক কিছু করছে, অতএব তাকে নিয়ে হাসা যাবে না। কিন্তু লোকে এটা বলছে না, চাক নরিসকে নিয়ে করা রসিকতাগুলোর সরাসরি নকল করে রজনীকান্তকে নিয়ে যে হাসাহাসির ফোয়ারা বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা করছিলো, সেই জায়গাটা জলিল স্বচ্ছন্দে দখল করে নিয়েছে। জলিল তার দর্শকের সাথে সম্পর্কের সুতোটাকে স্যাটায়ারের রসে ভিজিয়ে নিলেও সেটা অক্ষুণ্নই থাকবে।

কাজেই জলিলের জলিলপনা দেখে আসুন হাসি, সঙ্গে তার সিনেমাও দেখি। বাঙালির জীবনে অনেক সমস্যা, একটু হাসির রিলিফ জলিল দিতে পারছে, অযথা তাকে স্যাটায়ারোর্ধ্ব পীর না বানাই। যাকে নিয়ে হাসা যায় না, তাকে ভালোবাসাও যায় না।

মাহফুজ খান এর ছবি

হিমু ভাই, আমরা অবশ্যই হাসব, জলিলের হাস্যকর কথাবার্তা নিয়ে রসিকতা করব, কিন্তু তার পাশাপাশি তার অবদানকেও স্বীকার করব; নইলে বেপারটা বড় একতরফা হয়ে যায়।

হিমু এর ছবি

আনফরচুনেটলি, মানুষের হাসি যত স্বতস্ফূর্ত, অবদানের বিশ্লেষণ বা স্বীকৃতি ততটা নয়। হাসির সময় যদি পদে পদে ফুটনোট দিয়ে অবদানের কথা স্মরণ করতে হয়, পৃথিবী থেকে হাসি উঠে যাবে। জলিলের অবদানের বিচার হবে আজ থেকে এক দশক পর। পরপর চারটা বাণিজ্যিক সিনেমা বানিয়েই যদি কেউ সিনেমার জগতে "অবদান" শব্দটা ব্যবহার করার মতো কিছু করে ফেলে, তাহলে আমাদের কোথাও কোনো একটা সমস্যা হচ্ছে।

আর জলিলকে নিয়ে লোকে হাসছে, এটাও একটা পরোক্ষ স্বীকৃতি। জলিলের মতোই ত্রুটিপূর্ণ উচ্চারণ আরো অনেক অভিনেতার আছে, তারা পাবলিকের আলোচনা বা মনোযোগে নেই। কাজেই বোঝা যাচ্ছে, জলিলকে লোকে গ্রহণ করেছে। সে এখন বিনোদনের জগতে নিজের একটা নিশ তৈরি করেছে, যেখানে তার বাচনভঙ্গি বা হাবভাব একটা গুরুত্বপূর্ণ প্যারামিটার। পাবলিককে এই নিশটা উপভোগ করার সুযোগ দিতে হবে। সময়ের সাথে জলিল আর পাবলিক একে অন্যের সাথে ইভল্ভ করবে। আজ নাহয় হাসিই চলুক।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

কিছুক্ষণ আগে ডিজনির 'ব্রেভ' (ম্যারিডা) দেখে এলাম। ডরাই নাই, কান্দিও নাই, মাথাও খাটাই নাই। হল প্রায় খালিই ছিলো। তাই এক সারিতে বসে আরও দুই-তিন সারিতে ঠ্যাঙ মেলে দিয়ে চ্যাগায়ে বসে বসে দাঁতমুখ ক্যালায়ে হাসছি যেখানে হাসা দরকার সেখানে, যেখানে দরকার নাই সেখানেও। কারণ, সিনেমাটা ছিলো জার্মান ভাষায়। সুতরাং, কখন হাসতে হবে সেইটা না বুঝেই বার কয়েক হেসে ফেলছি!

আদম স্যান্ডু রক্স। আই লাইক্স দিছ। রোমান হলিডেও রক্স। তবে শেষের দিকটা আই নট লাইক্স দিছ। গডস মাস্ট বি ক্রেজি আজকে আবার দেখুম, খাড়ান। কেছকি মাছ রেডি করছি। আলু কুচি কৈরা কাইট্যা, চেরি টমাটো কুচি কৈরা কাইট্যা, বেগুন কুচি কৈরা কাইট্যা, কাঁচামরিচ কুচি কৈরা কাইট্যা, কেছকি মাছ কুচি কৈরা কাইট্যা আগে রাইন্ধা লই। তারপর গরমভাত কুচি কৈরা কাইট্যা খাইতে খাইতে দেখুম।

মন্তব্যে কারেকশনঃ আমি জলিল ভাইয়ের মহাফ্যান। খালি ফ্যান না, একেবারে ইরির সিজন রীতিমতো এসি টাইপের। সুতরাং, ইপিউ ডোন্ট মাইন্ড, আমি আপনেগোরে একটা কোচ্চেন আক্স করতে চাই- আর ইউ ফ্রম গানা? যদি না হন, তাইলে ইউ হেব টু রেসপেক্ট ইন বাংলাদেশ। আর জলিল ভাইকে জালিল করার আগে আমার লাশের উপর দিয়া গুজারনা পড়েগা। ইঁরি মুতাব্বির, আঁর লাডিডা ল দেহি...

শামীম এর ছবি

আপনি আসলেই চরম ফলোয়িং ফ্যান হো হো হো

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

দুর্দান্ত এর ছবি

"কেছকি মাছ কুচি কৈরা কাইট্যা"

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

শিশিরকণা এর ছবি

কাজের ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে মন মেজাজ তর তাজা ও চাঙ্গা করে নিতে আমি নিয়মিত মাসে অন্তত দুইটা বাংলা সিনেমা দেখি। আর জলিল ভাই তো সেই কবে থেকেই আমার জানের জান, প্রাণের পান।

তবে ইদানীং একটা সাক্ষাৎকারে দেখলাম সে নিজের ভুল ত্রুটি স্বীকার করছে এবং কোথায় তার উন্নতি করতে হবে সেগুলোও বলছে, এইটা দেখে তার প্রতি শ্রদ্ধাটাও বাড়লো, যে সে দর্শকের ফিডব্যাক কে আমলে নিচ্ছে, বাংলাদেশে এইটা কাউকে করতে দেখি না। তারপরে আবার বলছে, তার বেগম নায়িকা বর্ষা নাকি নাচতে পারে না। আমি ভাব্লাম খাইছে, আজকে বাড়িত গিয়া জলিল ভাইরে বর্ষা আপায় আর আস্ত রাখবে না। হৃদয় ভাঙ্গা ঢেউ সিনেমা তে সে কিন্তু আরমান পারভেজ মুরাদ কে দিয়ে চমৎকার ডাবিং করিয়েছিল। কিন্তু সেটা সম্ভবত দর্শক নেয়নি, তারা একটু হাসতে চায়, জলিলের উচ্চারণই শুনতে চায়, তাই পরের ছবি গুলোতে সে আবার নিজের ডাবিং এ ফিরে গেছে। লোকটা নিজের কাছে পরিষ্কার আছে, কি করছে, এবং তার চেষ্টা আছে। এই হাসাহাসি করা ফিডব্যাকগুলা কে সে ভালো ভাবেই নিচ্ছে এবং আরও ভালো করার চেষ্টা করে যাচ্ছে, এই জন্য তার প্রতি রেশপেক্ট।

হাসাহাসি এবং উৎসাহ প্রদান অব্যাহত থাকুক।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

আইলসা এর ছবি

ভাই আপনার যাই বলেন, জলিল ভাইয়ের মত হিরু বাংলা ফিল্ম তো বাংলা ফিল্ম পুরা ফিল্ম জগতে বিরল।
পুরা ট্রাজিক একটা সিন- একটা বাচ্ছা মেয়ে গুলি খাইছে, হাসপাতালে নিতে নিতে মেয়েটা মারা গেল- দেইখ্যা বাঙ্গালি দর্শক যে হাসি দিলো! মাবুল এলাহি! মি. বিন ফেইল। কাহিনী হইছে- পিচ্ছি গুলি খাইলো কক্সবাজারে, তারে নিলো ঢাকার কেয়ার হসপিটালে। একটা ট্রাজিক সিন দিয়া মানুষরে এই লেভেলের বিনুদন কোন ব্যাট্যা দিতে পারে??
তার সর্ম্পকে যে যাই বলুক জলিল ভাইরে আমার লাল সেলাম।
তার স্পিড নিয়া আমার এক ফ্রেন্ডের ফেন্ডের রিভিউ
ইস্পীড- একটি স্যোসাল-পলিটিক্যাল-একশন-রিলিজিয়াস-আল্ট্রামর্ডান-রোমন্টিক-ননফিকশন কমেডী।

আমি পুরা বর্ণনাটা দিতে পারি নাই, আমার ভাষাগত সীমাবদ্ধতার জন্য আমি অনন্ত ভাইয়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থী। তবে মাশাল্লাহ এই মুভি দেখে আর যাই হোক বোরিং লাগার কোনই কারন নাই।

নায়ক বিশাল সৎ ব্যবসায়ী দশ-বারোটা ম্যানেজার নিয়া ঘুরে। কিন্তু কপিতয় দুষ্ট ব্যবসায়ী নায়ককে চিপা দিতে মনস্থির করে। এইদিকে আবার চীফ ম্যানেজারের বোন UK থেকে “শিক্ষা” নিয়া আই্স্যা ডাইরেক্ট নায়কের হার্টে হিট লাগাইয়া দেয়; যদি দর্শকরা ইকটু কনফিউজড ছিলো- কে নায়কের প্র্রেমে পড়ছে নায়িকা না নায়িকার ভাই!!!

যাহোক নায়িকা আবার চাল্লু আছে সরাসরি নায়করে না পটাইয়া, নায়কের ভাতিঝিরে দিয়া শুরু করে। দুই সেকেন্ড নায়কতো পুরা কাইত। তারপর অপ্রাপ্তবয়স্ক ভাতিঝির সামনে তাদের “প্রাপ্তবয়স্ক ধস্তাধস্তি” বাংলা সিনেমায়ও বিরল। রাঙ্গা বউতেও অনেক কিছু ছিলো বাট বাচ্চাগো সামনে কিছু করে নাই।ইন দ্য মিন টাইম শুরু হইয়া যায়, অ্যাকশন এবং নায়কের IELTS speaking ক্লাস।

শুধুমাত্র অনন্ত ভাইয়ের ইংরাজি শোনার জন্যই মুভিটা দুইবার দেখা যায়… গোল্ডেন পিস্তল আর সেকেন্ড নায়িকা ক্রিস্টিনার কথা তো বাদই দিলাম।
তবে কথা হইলো জেমস বন্ডের বাংলা থিকা অনন্ত ভাইয়ের ইংরাজি অনেক ভালো। সোবহানাল্লাহ। বিবিসির ইংরাজি শিক্ষন কর্মসূচীতে আমি অনন্ত ভাইয়ের অর্ন্তভুক্তির দাবি জানাই। “ইস্টপ” আর “আই ওয়ান্ট ইউর আই”- বাংলার ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ডায়লগ।

প্রত্যেকটা অ্যাকশন সিনে নায়কযে “ওই”, “ওই” বইল্যা ঝা্পাইয়া পরে, এইটা পুরা হিট.. এমনকি গুলি করার সময়ও “ওই”, “ওই” টা জসিলা হইছে। আমি এখন অফিসেও “ওই”, “ওই” বইল্যা কম্পিউটার খুলি।Windows তাড়াতাড়ি লোড হইয়্যা যায়।

নায়ক আবার বিশাল ইনজিনিয়ার, ডিকিডি অমলেশ ফেইল।খোদার কসম, শুধু দুইটা গ্লাভস দিয়া টেক্সটাইল মেসিনারি ঠিক কইরা ফেললো। আর আমার বন্ধু ওয়ালিদ বাত্তি জ্বালাইতে এক সার্কিট বানইছিলো- হেইজন্য আমেরিকা থিকা হাবিজাবি আনছিলো।

নায়কের চুল ও একটা জিনিস ব্লেজার পড়লেই দাড়াইয়া যায় আর গে্ঞ্জি পড়লে শুইয়া পরে, মানে কী কমু মুভির প্রতি সিকোয়েন্সে চমক।

এই মুভি না দেখলে জানতেই পারতামনা দেশ পুরা ডিজিটাল হইয়া গেছে আর আমাদের নায়ক উন্নয়নের জোয়ারে নৌকা বাইতেছে।

কাহিনী পুরাই ইস্পিডি। নায়কের ভাস্তি গুলি খায় কক্সবাজারে আর নায়ক তারে নিয়া আসে ঢাকার কেয়ার সেন্টারে। দর্শক বিপুল বিনোদিত হইছে।
তবে, আমি দর্শকদের আচরনে সামান্য অবাক হইলাম। নায়িকার ভাস্তি মারা গেলো আর অধিকাংশ দর্শক (আমি সহ) হাউ মাউ কইরা হাইস্যা ফেল্লো।বাংগালী খারাপ।

আর সবচে বড় কথা মুভির এক সিন থিকা আরেক সিন পুরা স্বাধীন, কোন মিল নাই।সো যেকোন সিন থিকা মুভি ইনজয় করা যায়।অত্যন্ত গবেষনাধর্মী ফিল্ম।

যাহোক মুভির জন্য অনন্ত ভাইকে লাল সালাম। পুরা ১৫০ মিনিট বিনোদন।
আমার তার প্রতি একটা অনুরোধ প্লিজ নেক্সট ছবিটার নাম দিয়েন “ওই, ওই”।

শামীম এর ছবি

কক্সবাজার থেকে ঢাকার কেয়ারে আসা নিয়ে টেনশন নিয়েন না -- এগুলা নিজের মাথা থেকে বাইর হয় নাই মনে হয়। আমার নিজের আপন ছোট ভাইয়ের একটা লেখা থেকে কোট করতেছি:

ঘোস্ট প্রটোকল একটু রিভিউয়ের চেষ্টা করি। চরম একশন-প্যাকড একটা মুভি। অ্যাকশন সিকোয়েন্সগুলো সেই রকম দারুণ। তবে কিছু কিছু জিনিস দেখে বড়ই চমকিত হয়েছি। সিনেমার একটা জায়গায়, হিরো গ্যাং ভিলেইন গ্যাংকে ধরার জন্য সুদুর দুবাইয়ের বুর্জ খলিফাতে যায়। যাওয়ার যে রাস্তাটা ছিলো সেটা মাত্র দুই লেনের!! আমি বুর্জখলিফার আশে-পাশে কোন দুই লেনের রাস্তা দেখি নাই। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেই রাস্তায় গাড়ি সহসাই হার্ড ব্রেক করতে হলো নায়কদের। কেন? কারণ সামনে এক উটপালক তার উটের পাল নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো!! আবুধাবি থেকে দুবাই গেলাম, শারজা গেলাম, আলাইনে গেলাম। চিড়িয়াখানা ছাড়া কোন জায়গায় মাইক্রোস্কোপ লাগায়ও উট দেখতে পারলাম না, আর ক্রুজ ভাই, দুই লেনের হাইওয়ের উপর উটের পাল দেইখা ফেলাইলো!! আবার ক্রুজ ভাই, বুর্জখলিফার গ্লাস খুলে, ঝুলে ঝুলে এক ফ্লোর থেকে আরেক ফ্লোরে গেলেন। স্প্যাইডারম্যানের দোয়া ছিলো কিছু হয় নাই। এমনকি উপরের ফ্লোর থেকে যখন নিচের ফ্লোরে ঝুলে নামতে গিয়ে মাথার মধ্যে বাড়ি খাইলেন, তখনও ওনার কিছু হইলো না। এইবার মনেহয় আয়রনম্যানের দোয়া ছিলো ওনার সাথে। এখানেই শেষ নয়। ভিলেইনকে তাড়া করার জন্য ক্রুজ ভাই বুর্জখলিফা থেকে বের হলেন। এর বালিঝড় শুরু হইলো। বালিঝড়তো না, যেন মহাপ্রলয়। এই ঝড়ের মধ্যে উনি ভিলেনের পিছে দৌড়াইতে দৌড়াইতে একটা ঝুপড়ি ঘর সমৃদ্ধ বাজারের মধ্যে ঢুইকা গেলেন! বিশ্বাস করেন, আমি বুর্জখলিফার চারপাশ ভালো করে ঘুরেছি। ওখানে অত্যাধুনিক দুবাই মল আছে। কিন্তু কোন ঝুপড়ি বাজার নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

শিশিরকণা এর ছবি

আর কয়েন না। এইজন্য আজকাল বিলাতি সিনেমা দেখে মজা পাই না। সিনেমা টিভিতে মনিটরে গুলি করে কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক ধ্বংস করা দেখলেই মনটা উঠে যায়। আর সিনেমার সব কম্পু চলে ডস মোডে, আবার ক্লিক করলেই চিড়িক পিড়িক শব্দ করে, সেক্সি গলায় একসেস ডিনাইড হেন তেন কথা কয়, চোঁ চোঁ শব্দ করে ডাউনলোড বা প্রসেসিং করে, আর কত কি বলব।
তারপর ধরেন অ্যাভেঞ্জারসে যেমন দেখা গেল, বোমা মেরে উড়ায় দেয়া সাইড ঠিক করতে গেলো যখন ক্যাপ্টেন আমেরিকা তখন সার্কিট বোর্ডের মধ্যে আলো জ্বেলে ইলেক্ট্রন দৌড়াদৌড়ি করতেছে দেখা গেল

এর তুলনায় জলিলের ভয়েস কমান্ড "বোম ফুট" বলে বোম ফুটানো অনেক রিয়ালিস্টিক ব্যাপার।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

আলতাইর এর ছবি

আর সেকেন্ড নায়িকা ক্রিস্টিনার কথা তো বাদই দিলাম।

বস!!! ওইটা 'কিশটিনা' হবে!!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

জলিল বিষয়ে কথা নাই, আপনে প্রোফাইল পিকচার দোতলা বানালেন কেম্নে সেটা কন

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শামীম এর ছবি

‌এই প্রশ্নের অপেক্ষায় ছিলাম খাইছে

বাংলা টিউটোরিয়ালের লিংক:
আমার ছবিটারে ডাউনলোড দিয়ে গিম্প দিয়ে খুলে দেখেন।

ঐ টিউটোরিয়াল আর আমার ছবি দেখে আশা করি করতে পারবেন। বিভিন্ন ফ্রেমের টাইমিং পরিবর্তনের জন্য টিউটোরিয়াল অনুসারে বানানো ফাইলটাকে গিম্প দিয়ে খুলে ফ্রেমের (ডানদিকের লেয়ারের উইন্ডোতে) উপর ডান ক্লিক করে Edit layer attributes ... দিয়ে ম্যানুয়ালি সময় পরিবর্তন করে দিতে হবে।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

দুর্দান্ত এর ছবি

পশ্চিমা ফিল্মের নানাবিধ মজার ভুলগুলো, বিশেষত সম্পাদনার ধারবাহিকতা বিষয়ক ব্লুপারগুলো নিয়ে বিবিসির নিয়মিত আয়োজন গ্রেট মুভি মিস্টেকস। সময় পেলে দেখে নিন।

শামীম এর ছবি

Currently BBC iPlayer TV programmes are available to play in the UK only, but all BBC iPlayer Radio programmes are available to you. Why?

হুমম....
+ http://www.moviemistakes.com/

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।