(সংশোধিত এবং সম্পাদিত: শামীম ১৮-মার্চ-২০১৭ ২১:৪৫)
১।
কিছুদিন আগে ঠিক এই ইংরেজি শিরোনামে একটা বক্তব্যের ভিডিও দেখেছিলাম (লিংক শেষে)। অসাধারণ এই বিশ্লেষনটা আমি পরে পরিচিত অনেক জনকেই দেখিয়েছি। এই বক্তব্য যিনি দিয়েছেন তাঁর নাম Simon O. Sinek – একজন ব্রিটিশ-আমেরিকান লেখক এবং মোটিভেশনাল বক্তা (জন্মসাল: ১৯৭৩)। তাঁর লেখা তিনটা বই আছে। আচ্ছা এবার মূল বিষয়ে ফেরত আসি: এইখানে তাঁর বক্তব্যের একটা কাছাকাছি বাংলা দেয়ার চেষ্টা করছি কারণ: মনে হয়েছে যাদের দেখার সুযোগ হয়নি বা ইংরেজিতে সমস্যা তাঁরা এই বিশ্লেষনটা জানুক।
২।
এবার আসি সংক্ষেপে সাইমন ভাইয়ের বিশ্লেষনটিতে:
বর্তমানের যে প্রজন্ম অর্থাৎ ৮৪ সাল বা এর পরে যাদের জন্ম তাঁদের চারটা বৈশিষ্ট আছে যা আগের প্রজন্মগুলো থেকে সম্পুর্ন আলাদা। এঁদের নামে অনেক অভিযোগ – এরা নবাবজাদা মানসিকতার; এদেরকে ম্যানেজ করা কঠিন; এরা আত্নকেন্দ্রীক; লক্ষ্যহীন; অলস ইত্যাদি।
এঁদেরকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়: জীবনে কী হতে চাও? এঁদের জবাব হবে - আমি একটা মহৎ কাজ করতে চাই; সবার জীবনে প্রভাব ফেলতে চাই (বিখ্যাত?), ফাও খেতে চাই ইত্যাদি। কিন্তু তাঁরা যা চায় সেগুলো দেয়া হলে, এমনকি ফ্রী খাইতে দিয়েও তাদেরকে খুশি করা যায় না দেখা যায় কিছু একটা বাকী আছে। এরকম হওয়ার পেছনে চারটি মূল কারণ বের করেছেন তিনি।
প্রথম কারণ হল ভুলভাবে বাচ্চা লালন-পালন। এদের বেশিরভাগের বাবা-মাগণ ছোটকাল থেকে এঁদেরকে বার বার বলেছে যে তাঁরা স্পেশাল; বলেছে যে তোমরা যা হতে চাও তাই হতে পারবে - ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে এমন যে শুধুমাত্র চাইলেই হবে; কিন্তু এর জন্য যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে সে ব্যাপারে কিছুই বলে না। এদের কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে কারণ এমন নয় যে এরা এর যোগ্য (মানে রেজাল্ট এ্যাত ভাল যে উচ্চতর ডিগ্রী করানো যায়), কারণ হল এটা এঁদের বাবা-মা’ চায় তাই। কেউ কেউ ক্লাসে এ গ্রেড পেয়ে এসেছে - যোগ্যতার কারণে নয়, বরং এই কারণে যে শিক্ষক এঁদের অতি নাক-গলানো স্বভাবের বাবা-মা’কে এড়াতে চায়। কেউ কেউ এমনকি ক্লাসে দেরিতে আসার জন্যও পুরষ্কার পায় – কাজেই যা হয় তা হল যারা সত্যিই পরিশ্রম করে তারা নিজেদেরকে বঞ্চিত মনে করে - পরিশ্রম করার আগ্রহ কমে যায়। আর যে শেষে আসার জন্য পুরষ্কার পায় সে একটু বিব্রত বোধ করে - কারণ সে জানে সে পুরষ্কারের যোগ্য না; তাই হীনমন্যতায় ভোগে। কিন্তু এই গ্রুপের পোলাপানগুলো যখন বাস্তব জীবনে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে এঁরা দেখে - তাঁরা মোটেও স্পেশাল নয়; মামা-চাচার লবিং ছাড়া প্রমোশন পাচ্ছে না; দেরিতে বা শেষে আসার জন্য কোন পুরষ্কার নাই; আর শুধুমাত্র চাচ্ছে বলেই কোন কিছু পাওয়া যায় না – ফলে মুহুর্তেই তার নিজেকে নিয়ে গড়া স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায়। ফলে একটা পুরা প্রজন্ম, তাদের পূর্বসূরীদের চেয়ে অনেক বেশি হীনমন্যতা নিয়ে বড় হচ্ছে।
৩।
দ্বিতীয় কারণ হল বাধাহীনভাবে সামাজিক মাধ্যম যথা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া। লোক-দেখানি ভাব নিতে এগুলোর জুড়ি নাই। অসাধারণ জীবন যাপনের একটা ভূয়া ভাব নেয়া যায় সেখানে, যদিও যে চরম ভাব নিচ্ছে আদতে হয়তো তাঁর মন খারাপ। ফলে এখানে ঘুরলে মনে হয় সবাই কী দারুন জীবন যাপন করছে, আর তাদের কথাবার্তা দেখলে মনে হয় জীবনে তাঁরা সব সমস্যার সমাধান করে ফেলেছে যা বাস্তবের পুরা বিপরীত। আরেকজনের কাজ কারবার দেখলে মনে হয় আমারও এমনই করতে হবে - কিন্তু আদতে সেরকম হওয়া বা করা সম্ভব না। ফলে হীনমন্যতায় ভোগা একটা প্রজন্ম আরো বেশি হীনমন্যতায় ভুগতে থাকে - যদিও এতে তাঁদের কোন দোষ ছিল না।
একজনের হয়ত কিচ্ছু করার নাই, বা ভাল লাগছে না - তাই মেসেঞ্জারে গ্রুপকে লিখলো “হাই ...”। একটু পরেই আবার মেসেজ চেক করে দেখে দশটা রেসপন্স এসেছে …. “হাই”, “হাই”, “হাই”, “হাই” … … … … … । এতে আসলে কী হল!? মনে হল কিছুই না, কিন্তু আসলে এটাতে প্রথম ব্যক্তির বেশ ভাল লাগলো। এই যে ভাল লাগা, এই অনুভুতিটার পেছনে একটা হরমোন কাজ করে - যেটার নাম হল ডোপামিন। এজন্যই আমরা বার বার চেক করি, কয়টা লাইক পড়লো, কয়টা রেসপন্স আসলো ইত্যাদি। অর্থাৎ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের ডোপামিন নিঃসরণ ঘটাতে সাহায্য করে। তবে জেনে রাখা ভাল, এই সামাজিক যোগাযোগের ডিজিটাল মাধ্যম ছাড়া আরো অনেক যে যে জিনিষগুলো আমাদের ডোপামিন নিঃসরণ ঘটায় সেগুলোর মধ্যে আছে – সিগারেট, মদ, জুয়া এবং অন্যান্য মাদক দ্রব্য। অর্থাৎ মাদকতার আনন্দ যে ডোপামিনে, যা আসক্তি সৃষ্টি করে - ঠিক সেই একই রকম আসক্তি এই সামাজিক মাধ্যম সৃষ্টি করে। ছোটরা যেন অবুঝের মত আক্রান্ত না হয়ে পড়ে সেজন্য বিদেশে মদ, সিগারেট কিনতে এবং জুয়া খেলতে বয়সের বিধিনিষেধ আছে - দোকানে নির্দিষ্ট বয়েসের কমবয়সী কেউ সেগুলো কিনতেই পারে না; অথচ একই রকম আসক্তিদায়ক সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে বাচ্চাদের কোনো বাধা নাই। এর মানে হল অনেকটা এরকম: একজন কিশোরকে বা বালককে নিজের সিগারেট প্যাকেটে/মদের ভাণ্ডারে বাধাহীন অধিকার দেয়া।
৪।
কাজেই এই প্রজন্ম বিশেষত কৈশোরের মানসিক পরিবর্তনের সময়ে যখন বিভিন্ন সামাজিক ও মানসিক চাপ সামলাতে খাবি খায় তখন তাঁদের সামনে এরকম একটা নেশাদ্রব্য দিয়ে দেয়া হচ্ছে সেই চাপ ভুলে থাকার জন্য। সেই আবেগ মানসিক চাপ ইত্যাদি সামলাতে যখন বাবা-মা কিংবা বন্ধুদের সাহায্য দরকার ছিল, তখন তাঁরা নেশার সাহায্য নেয় – নেশা মানে এই সামাজিক মাধ্যম – ফেসবুক ইত্যাদি। আর এই ব্যাপারটা যখন তাঁদের মাথায় গেঁথে যায়, তখন জীবনের যে কোন পর্যায়ে সামাজিক, অর্থনৈতীক কিংবা পেশাগত চাপ সামলাতে তাঁরা কোন বন্ধু বা গুরুজনের কাছে সাহায্য চাওয়ার বদলে নেশার বোতল তথা ফেসবুক টাইপের জিনিষপাতি খুলে বসে। আর এ-তো জানা কথাই, নেশা কখনই দীর্ঘমেয়াদে ভাল কিছু করতে পারে না; এটা জীবন ধ্বংসকারী একটা বস্তু।
আর এই আসক্তির কারণে দেখা যায়, এই প্রজন্মের বড় একটা অংশ সত্যিকারের বন্ধুত্ব, গভীর সম্পর্কের অর্থই বোঝে না। তাদের বন্ধুত্বগুলো ভাসা ভাসা; যে বন্ধুর উপর নির্ভর করা যায় না – আর এমনও হতে পারে যে মজা শেষে তাকে খুব সহজেই আনফ্রেন্ড করে দিতে পারে। বাস্তব জীবনে ঝগড়া, মারামারি, মান অভিমানে যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার কথা সেরকম গভীর বন্ধুত্ব হওয়ার মত সুযোগই তাদের হয়না। বন্ধু তৈরীর যে পথ, যে কৌশল: সেটা শেখারই কোন সুযোগ তারা পায় না। আর ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন চাপ সামলাতে নেশাতে ডুবে যাওয়া ছাড়া তাদের উপায়ও থাকে না।
নেশার যে দ্রব্যগুলো - সেগুলো কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহারেই নেশা হয়। বুঝে শুনে সীমিত পরিসরে নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে সেগুলো কিন্তু আনন্দের উৎস হতে পারে। কিন্তু এই সময়ে যেটা হচ্ছে ২৪ ঘন্টাই সেলফোনের প্রভাবে নেশাগ্রস্থ থাকছে একটা প্রজন্ম। আরেকজনের দিকে মাথা তুলে তাকানোর পর্যন্ত সময় নাই। খুব জরুরী দুই একটা কথার বাইরে যে কেমন আছেন, মুরগী ডিম পারছে কি না, কিংবা বাসায় মশার উপদ্রব – বন্ধুত্ব বা পারস্পরিক আস্থার সম্পর্ক তৈরীর শুরুতে জরুরী এই জাতীয় নির্দোষ আলাপচারিতা করার মত সময় বা দক্ষতা তাদের থাকেনা। বন্ধুদের সাথে খেতে বসে যদি সেদিকে মনযোগ না দিয়ে আরেকজনের সাথে ফোনে চ্যাট করতে থাকে কেউ – তাহলে সেটা অবশ্যই একটা নেশা, একটা সিরিয়াস সমস্যা। একটা অফিসিয়াল মিটিংএ যদি মনোযোগটা ফোনের মেসেজে বেশি থাকতে হয়, তাহলে সেটা সমস্যা। ঘুম থেকে উঠে পাশে শুয়ে থাকা প্রিয়জনের খবর নেয়ার আগে যদি ফোনের মেসেজ চেক করে কেউ – তাহলে সেটা নেশা – অবশ্যই একটা সমস্যা।
কাজেই দেখা যাচ্ছে, আমাদের একটা প্রজন্ম গড়ে উঠছে যাদের আত্মসম্মানবোধ গড়ে উঠতে দেয়া হয়নি; আরও দেখা যাচ্ছে চাপ সামলানোর টেকনিকগুলো শেখার সুযোগ আমরা তাদেরকে দেই নাই – নেশাগ্রস্থ হওয়াটা কোন টেকনিক হতে পারে না।
৫।
এবার আসা যাক তৃতীয় কারণে (যেটার সমস্যাটা হল অসহিষ্ণুতা) – তাৎক্ষনিকভাবে চাহিদা মিটে যাওয়ার অভ্যাস। বর্তমান ডিজিটাল যুগে কেউ কিছু কিনতে চাইলে আয়োজন করে টাকা পয়সা জোগাড় যন্ত্র, হাটের দিন কবে ইত্যাদি খোঁজ নিয়ে সময় করে বাজার/হাটে যেতে হয় না; অনলাইনে তখনি কিনে ফেলতে পারে, টাকা না থাকলে অসুবিধা নাই – কারণ এজন্য ক্রেডিট কার্ড আছে, পেমেন্ট অন ডেলিভারি আছে, ইনস্টলমেন্টের সুবিধা আছে; আর একদিনের মধ্যেই সাধারণত জিনিষটা বাসায় চলে আসে। কেউ সিনেমা দেখতে চাইলে ইউটিউব বা অন্য মিডিয়াতে সাথে সাথে দেখতে পারে, কিংবা পে-চ্যানেলে গিয়েও দেখতে পারে। সিনেমাটা কাছের সিনেমাহলে আছে কি নাই, শো-এর টাইমটেবল, টিকেট আছে কি না – এসব নিয়ে কোন ঝামেলাই নাই। একটা টিভি সিরিজ দেখার ইচ্ছা হলে সাথে সাথেই ইন্টারনেটে সেটা দেখে ফেলা যায়। পরের পর্বের জন্য সপ্তাহের পর সপ্তাহ বা মাসের পর মাস অপেক্ষার ফলে সহিষ্ণুতার যে শিক্ষা সেটার কোন বিষয়ই আর নাই এখন। কেউ কেউ তো আবার এতই অধৈর্য যে, মাঝের পর্ব বাদ দিয়ে একেবারে সিজনের শেষ পর্ব দেখে ফেলে।
এমনকি, কাউকে প্রপোজ করাটাও এখন এঁরা শিখতে পারে না। কিভাবে হাত ঘষে ঢোক গিলে বোকা বোকা কথা শুরু করবে ডিজিটাল যুগে এধরণের সামাজিকতা শেখারও প্রয়োজন নাই। ডেটিং সাইটে গিয়ে শুধু ক্লিক করলেই সব ঠিক। এই যুগে যাই চাওয়া হয়, সাথে সাথে পাওয়া যায়, শুধুমাত্র যা পাওয়া যায়না সেটা হল – পেশাদারিত্ব আর গভীর সম্পর্ক। কারণ, এগুলোর জন্য কোন অ্যাপ নাই। এগুলোর অর্জন হয় ধীরগতির, আঁকাবাঁকা, বন্ধুর পথে – যা পেরোতে দরকার ধৈর্য আর একাগ্রতা। কিন্তু এই প্রজন্মের এই অর্জনগুলোর জন্য যে প্রশিক্ষণের দরকার ছিল তা হয়নি। কর্মস্থলে গিয়ে এরা হতাশ হয়, গভীর সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয় / পিছিয়ে যায়: কারণ ধৈর্য ধরে সফলতার জন্য অপেক্ষা আর লেগে থাকা, তিল তিল করে সফলতার ভিত্তি গড়ে তোলা বা কোন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী চর্চা - এ ধরণের কোন প্রশিক্ষণই বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এরা পায় না। ব্যাপারটা অনেকটা পর্বতের গোড়ায় দাঁড়িয়ে থেকে চূড়াতে যাওয়ার কামনার মত – এঁরা শুধু চূড়া দেখে আর সরাসরি সিরিয়ালের শেষ পর্ব দেখার মত স্টাইলে সেখানে যেতে চায়। কিন্তু বাস্তব তো এমন নয়: এর জন্য পাহাড় ডিঙানোর পরিশ্রম, ধৈর্য, পরিকল্পনা, দক্ষতা এইসব দরকারী বিষয়গুলোর কোন ধারণাই এদের মধ্যে থাকে না। ফলাফল আরো বেশি হতাশা, হীনমন্যতা।
এইসব কারণে হতে পারে যে সমাজে আত্মহত্যা, মাদকাসক্তির হার বেড়ে যাবে। ডিপ্রেশনের কারণে পড়ালেখা ছেড়ে দেয়ার হার বেড়ে যাবে। মন্দের ভাল হিসেবে সবচেয়ে ভাল যেটা হতে পারে, তা হল: পুরা সমাজের একটা বড় অংশ রোবটের মত একঘেয়ে একটা জীবন পার করবে কিন্তু কখনই জীবনের আনন্দঘন দিকগুলো সেভাবে উপভোগ করতে পারবে না। কখনই তাদের মধ্যে জীবনবোধের গভীরতা কিংবা পরিপূর্ণতার অনুভূতি আসবে না।
৬।
শেষ বা চতূর্থ পয়েন্টটা হল পরিবেশ। কর্পোরেট কালচারেও সবকিছু স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য নিয়ে করা হয়। এঁরা যে নতুন কর্মী যোগ দিয়েছে তার কোন উন্নয়ন হল কি না সেটা মোটেও ভাবে না বরং নিজেদের স্বল্পমেয়াদী অর্জনের লক্ষ্য ঠিক আছে কি না সেটা নিয়েই চিন্তিত। এটা এমনই একটা পরিবেশ যেটা তাঁদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে মোটেই সাহায্য করছে না। এই কর্পোরেট পরিবেশ তাদেরকে পারস্পরিক আস্থা, বন্ধুত্ব স্থাপনের যে কৌশল তা শিখতে সাহায্য করছে না। অসহিষ্ণুতা থেকে বেরিয়ে আসতে যে প্রশিক্ষণ বা ট্রেনিং দরকার – ধৈর্যধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যস্থির করে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটু একটু করে এগিয়ে যাওয়ার – সেটার কোন ক্ষেত্র সৃষ্টি করছে না এই কর্পোরেট সংস্কৃতি। যে ধরণের অর্জনগুলো করতে বছরের পর বছর ধৈর্য ধরে এক লক্ষ্যে কাজ করতে হয় এবং সেটা অর্জনের পর যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়, সেটা অনুভব করার কোন সুযোগই তাদেরকে এখানে দেয়া হয় না। এসব কারণে দিনকে দিন তারা আরও হতাশ হয়ে যায়, মনে করতে থাকে তাঁদের কোন যোগ্যতাই নাই।
বাব-মা’র ভুল, সমাজ-ব্যবস্থার ভুলের ফলে এই প্রজন্ম ক্রমেই আত্মকেন্দ্রীক, অসহিষ্ণু এবং অসামাজিক হয়ে যাচ্ছে – অথচ তার দায় কেউ নিতে রাজি হয় না। … … … …
৭।
সাইমন ভাইয়ের বিশ্লেষনের পরিপ্রেক্ষিতের সাথে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত হয়তো পুরাপুরি মিলবে না। কিন্তু কিছুটা শিক্ষনীয় চিন্তা-জাগানিয়া বিশ্লেষনী দৃষ্টিভঙ্গি যে সেখানে আছে - সেটাও অস্বীকার করা যাবে না। এই যে আমাদের পোলাপানগুলোকে না চাইতেই গণহারে উচ্চতম জিপিএ দিয়ে পাশ করিয়ে দেয়া হচ্ছে সেটার দীর্ঘমেয়াদে প্রায় একই রকম খারাপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার কথা। কারণ এতে যাঁরা সত্যিকারের পড়াশোনা করতো তাঁরা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। তেল আর ঘি’য়ের যখন একই মূল্যায়ন হবে তখন কেন কষ্ট করে ঘি উৎপাদন করবে কেউ? আর এই না চাইতেই পাওয়ার ফলে তাঁদের অবচেতন মনে এমন ধারণা পাকাপোক্ত হয়ে গেছে যে এই ডিগ্রীগুলো ছেলের হাতের মোয়া, সহজলভ্য বস্তু - যা না চাইতেই পাওয়া যায়। এর জন্য পরিশ্রম, অধ্যবসায় এসবের কোন প্রয়োজন নাই। শুধু আসবো যাবো, ফূর্তি করবো, ফেসবুকিং করবো, চকচকে ক্যাম্পাসে ফ্যাশন করে ছবি তুলবো – কয়দিন পর প্রসেসের কারণে ডিগ্রী এমনিই পাওয়া যাবে।
জানি, উচ্চশিক্ষার কিছু জায়গায় এই চর্চাটাই চলছে। কিন্তু অবচেতন মনে হীনমন্যতা ঢুকে আত্মসম্মানবোধহীন যে প্রজন্ম আমরা তৈরী করছি তাতে করে সমস্যা বাড়তেই থাকবে। কর্মক্ষেত্রে এঁদের বড় অংশ শুধু খাবি খাবে। কোত্থাও টিকতে পারবে কি না জানিনা, তবে হতাশা বাড়তেই থাকবে।
মন্তব্য
ষণ্ডচক্ষু!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
বেশ খানিকক্ষণ লাগলো মন্তব্যের মর্মোদ্ধার করতে। যা হোক একটা নতুন বাংলা শব্দতো শিখলাম
ষণ্ডচক্ষু = বুলসআই
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
যাক একটুর জন্য বেঁচে গেছি। ৮৩তে জন্মেছি। চমৎকার পর্যবেক্ষন। আসলে এখন সব কিছুই তড়িৎ গতিতে পেতে চায় স্মার্টফোনের টাচের মত। আপনি যেমনটা বলোছোন আমাদের সময় এত বেশি সুযোগ (ডিস্ট্র্যাকশন) ছিল না তাই হয়তো কোন একটা কাজ সুস্থির ভাবে করতে াপরতা,। এখনকার প্রজন্মের বিশেষন হচ্ছে অস্থির তো এরা সুস্থির হবে কিভাবে ? শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কিছু না বলাই ভাল। এক বছরের পড়া পরের বছর মনে রাখতে পারে না পরীক্ষার্থীরা। গণিত থেকে শুরু করে ইংরেজিতো বাদই দিলাম বাংলার ভিত্তিও খুব খারাপ। যাই হোক এরাই গড়বে আগামীর অধম আয়ের বাংলদেশ। এত দিন জানতাম বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ এখন শুনছি আমরা সল্পোন্নত দেশ অচিরেই নাকি হব উন্নয়নশীল ! উন্নতি আর উন্নয়নের বলির পাঁঠা কোন না কোন প্রজন্মকে হতেই হত।
ডিসট্র্যাকশনের ব্যাপারে সম্পুর্ন সহমত। এখন আগের প্রজন্মের অভিভাবক যদি এটা ঠিকভাবে খেয়াল করতে পারে আর তাদেরকে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো অর্জনে সাহায্য করে তাহলে কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। বরং নিয়ন্ত্রিত উপায়ে টেকনোলজির সাথে পরিচয় ঘটিয়ে দিলে সেটা আরো চমৎকার হতে পারে।
এই প্রজন্মের একটা ছোট অংশ কিন্তু অসাধারণ। ওদের দেখে মুগ্ধ হই প্রায়ই ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
বড় ভাই, সব প্রজন্মই দেখি তার পরের প্রজন্মকে কমবেশি সমস্যাযুক্ত মনে করে। এটাও কি আরেকটা সমস্যা না?
আমার পর্যবেক্ষণ অবশ্য আলাদা। পরবর্তী প্রজন্ম - সেটা মানুষ হোক বা শিল্পপণ্য হোক সেটা সাধারণত উন্নততর হয়।
যদি কোন সমস্যা তৈরী হয়, তখন সেই সমস্যাকে অস্বীকার করলে সেটার সমাধান হবে কিভাবে?
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
শিল্পপণ্য আর মানুষকে এক কাতারে নামিয়ে আনাটা কি ঠিক হল ? দুটোর উন্নত হওয়ার ধারা সম্পূর্ণ পৃথক। মানুষের উন্নতি বলতে আমরা বুঝি বর্বর দশা থেেকে মুক্তি পেয়ে বিন্যস্ত সমাজে একত্রে বসবাস, খাদ্য উৎপাদন, পশু লালন পালন, বসবাসের জন্য স্থায়ী নির্মান, ভাষা ও শিল্পকলা। এটাকে আমরা বলছি সভ্য হওয়া। তবে সভ্য মানেই ভাল, সৎ সদাশয়, বিবেচক কিংবা চতুর নয়। এসব চারিত্রিক বৈশিষ্ট প্রাগৈতিহাসিক আমলের মানুষের মধ্যেও ছিল, তাছাড়া সবচেয়ে সভ্য মানুষও সবচেয়ে নিষ্ঠুর হতে পারে, হতে পারে অসৎ এবং অবিবেচক। আমরা চাঁদে অবতরণের মত কারিগরী দক্ষতা অর্জন , পারমানবিক শক্তি, ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি, কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বহুদূর এগিয়ে গেলেও দাসত্ব, অবিচার, ধর্মীয় সংঘাত , সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়গুলোর অস্তিত্ব এখনও বিদ্যমান।
ঠিক বেঠিক জানিনা, আমি শুধু আমার পর্যবেক্ষনটুকু শেয়ার করেছি।
ধন্যবাদ।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
একমত হতে পারলাম না। আপনি নতুন প্রজন্মকে এমন একটা সমাজে বড় করছেন যেখানে ঘুষ খাওয়াটা একটা স্বাভাবিক বিষয়। মূল্যবোধের বিকাশকে সমাজ মূল্যায়ন করে না। এমন একটা সেন্সরড শিক্ষা ব্যবস্থা দিচ্ছেন যেখানে শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে মেধার বিকাশের কোন সুযোগই নেই। এমন অভিভাবক দিচ্ছেন যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র সন্তানের হাতে তুলে দিতে দু'বার চিন্তা করে না। তারপর আশা করছেন পরবর্তী প্রজন্ম উন্নততর হবে? যেখানে পুরো সমাজ ব্যবস্থাতেই সমস্যা, সেখানে ১-২% ভাল হলে তাতে খুশি হবার কিছু দেখছি না।
ব্যাপার না। একমত হতে হবেই এমন কোন কথা নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
এই লেখাটা নিয়ে ধাপে ধাপে আলোচনা করার ইচ্ছে আছে। আপাতত দুয়েকটা বিষয় নিয়ে একটু বলি।
পয়েন্ট-৮: এইখানে একটা বিষয়ে সামান্য দ্বিমত আছে। বেশিরভাগ লোকে আসলে "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি অথচ সেখান থেকে ডিগ্রী চায়" এমনটা নয়। অনেকে নিরুপায় হয়ে হোম ইকনমিক্সের মেয়েদের মতো আন্দোলনটা করে। এদেশে শিক্ষায়তনগুলো, বিশেষত স্নাতক পর্যায় থেকে, মানের ফারাক এতো বেশি যে যারা শিক্ষা নেন আর যারা নিয়োগ দেন উভয়পক্ষ হতবুদ্ধি হয়ে যান। পাঠক্রম, পদ্ধতি, শিক্ষকের মান, ভৌত ব্যবস্থাদি, মূল্যায়ণ ব্যবস্থা ইত্যাদিতে একটা শিক্ষায়তনের সাথে আরেকটার মিল পাওয়া দুষ্কর। মোটামুটি গবেষণাগারের ব্যবস্থাবিহীন শিক্ষায়তন প্রকৌশল, চিকিৎসা ইত্যাদি ঘোরতর ফলিত বিষয়গুলোতে ডিগ্রী দিয়ে দিচ্ছে এমনটা বিরল নয়। নামজাদা শিক্ষায়তনগুলোতে চাইলেই অগণিত শিক্ষার্থী নেয়া সম্ভব নয়। তাই অনেকে যথেষ্ট মেধাবী হয়েও বা বিগত পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে আসলেই ভালো ফলাফল করেও সেখানে সুযোগ না পেতে পারেন। এই শিক্ষার্থীদেরকে নিম্নমানের শিক্ষায়তনে ঠেলে দেবার বা তাদেরকে উচ্চতর শিক্ষার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করার অধিকার কারো নেই। এমনসব আন্দোলনের বহু আগেই নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত ছিল বাকি শিক্ষায়তনগুলোর মানোন্নয়ন ঘটানো বা আরও নতুন নতুন উচ্চমানের শিক্ষায়তন গড়ে তোলা। সেটা যেহেতু হয় না তাই এমন আন্দোলন তৈরি হবার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এখানে একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, কোন যুক্তিতেই শিক্ষায়তনের অভ্যন্তরীন সমস্যা সমাধানের আন্দোলনের অংশ হিসেবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কোন কিছু করা সমর্থনযোগ্য নয়। এই প্রসঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা নিয়ে করা আন্দোলনে অনেকগুলো দিন ধরে সাধারণ নাগরিকদের যে অসীম কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে সেটা স্মর্তব্য। এই দুর্ভোগ সৃষ্টি করে জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের কোন লাভ হয়নি, এই ব্যাপারে যাদের কিছু করার ক্ষমতা আছে তাদের কিছুই হয়নি, মাঝখান থেকে অগণিত মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে।
সমস্যাটার শুরু কোথায়? এই বিশাল ব্যাপারটিকে একটি প্রতিনিধিত্বমূলক উদাহরণ দিয়ে বুঝতে চাইছি। ইংলিশ বা অন্য কোন ভাষা বা অন্য কোন বিষয়ের কথা বাদ দিন, খোদ বাংলা ভাষা শুদ্ধরূপে 'বলিতে, পড়িতে ও লিখিতে পারে' এমন মানুষের সংখ্যা এই দেশে খুব কম। আমার নিজের ধারণা সেটা অক্ষরজ্ঞানসম্পন্নদের মাঝে ১০%ও হবে না। মাতৃভাষাজ্ঞানের ক্ষেত্রে এমন সর্বনাশটা কী করে হলো? আসলে সর্বনাশটা প্রথম থেকেই হয়ে আসছে। ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে যে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করার কথা সেটা কখনো করা হয়নি। তাই বেশির ভাগ স্থানীয় মানুষ বাংলা ভাষা 'শুনিয়া বুঝিতে' বা 'পড়িয়া বুঝিতে' অক্ষম। ১২+ বছর ধরে বাংলা পড়া শিক্ষার্থী বাংলা শুদ্ধভাবে 'বলিতে, পড়িতে ও লিখিতে পারে' না, কারণ তার শিক্ষকদের বেশির ভাগ জন তা পারেন না। এই না-জানা শিক্ষক নিজেও জানেন না যে, 'হৈমন্তীর চরিত্র' বা 'একটি নৌকা ভ্রমণ' মুখস্থ করার বিষয় নয়। এগুলো কীভাবে শিক্ষা দিতে সেটাও তারা জানেন না। এটা তাদের দোষ নয়, কারণ এই অশিক্ষা শতাব্দী কাল ধরে চলে আসছে। বাংলা ভাষা শিক্ষার মতো করে আজকে যে তরুণ পাহাড়ের গোড়া থেকে এক লাফে চূড়ায় পৌঁছাতে চাইছে সে কয়েক প্রজন্ম ধরে একটু একটু করে উপত্যকার গহ্বরে নেমেছে। এই অধোগতি বিশ-পঁচিশ বছরের ব্যাপার নয়। সমাজ ও রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর দুর্বৃত্তায়ণ তাকে এটা বুঝতে শিখিয়েছে এখানে চাইলেই এক লাফে পাহাড়ের চূড়ায় উঠা যায়। এখানে জ্ঞানলাভ না করে বিপুল অর্থ, বিত্ত, ক্ষমতা আর মর্যাদার অধিকারী হওয়া যায়। শিশু/বালক/কিশোর/তরুণদের নষ্ট করার যাবতীয় উপাদান, যাবতীয় প্রলোভন বুড়ো ভামগুলোর বানানো। সুতরাং শিশু/বালক/কিশোর/তরুণদের তিরষ্কার করার বা শাস্তি দেবার আগে এই বুড়ো ভামগুলোর শাস্তি হওয়া উচিত।
একটা সাধারণ জিজ্ঞাস্যঃ ঠিক কী যুক্তিতে 'গার্হস্থ্য অর্থনীতি' বিষয়টি শুধুমাত্র নারী শিক্ষার্থীদের বিষয় বা এখনো নারী শিক্ষার্থীদের বিষয়? এই ক্ষেত্রে পুরুষদের অযোগ্যতাটি কী? দয়া করে কেউ 'তারা পুরুষ এটাই তাদের অযোগ্যতা' ধরনের যুক্তিহীন মন্তব্য করবেন না।
লেখাতে শিশু/বালক/কিশোর/তরুণদের দোষারোপ করিনি - অথবা বলা যেতে পারে তেমন কোন ইচ্ছাই আমার ছিল না। দোষটা কিন্তু বর্তমান সমাজ/শিক্ষা ব্যবস্থার দিকেই ইঙ্গিত করেছিলাম। সেই মেসেজ পৌঁছেনি - যেটা লেখক হিসেবে আমার ব্যর্থতা।
নারী শিক্ষার্থী বা পুরুষ শিক্ষার্থীর বিষয় সংক্রান্ত কিছুই কিন্তু আমার লেখাতে নাই ... অন্তত নিজের লেখা আমি যতটুকু বুঝি। জ্যাম তৈরী করেছে মেয়েরা - শুধু লেখার প্রথম অংশে সেটুকুতেই 'মেয়ে' কথাটা রয়েছে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
মনে হচ্ছে আমিও ঠিক বোঝাতে পারিনি। সমস্যার শুরু ব্যাপারে আমার মন্তব্যটি আপনার লেখার কাউন্টার কিছু নয়। বরং আপনার লেখাটি আলোচনার যে সুযোগ করে দিয়েছে সেই সুবাদে করা একটি সাপোর্টিভ আলোচনা। সুতরাং শিশু/বালক/কিশোর/তরুণরা দায়ি নয়, বরং বিদ্যমান ব্যবস্থা ও অভিভাবককুলের দায়ের ব্যাপারে আপনি আমি সহমত।
নারী শিক্ষার্থী-পুরুষ শিক্ষার্থী'র ব্যাপারে করা আমার জিজ্ঞাস্যটি আপনার লেখার প্রেক্ষিতে করা নয়। এই জন্য আমি সেটাকে 'একটা সাধারণ জিজ্ঞাস্য' হিসেবে শিরোনাম দিয়েছি। আশা করি আপনি বা পাঠকদের কেউ এই ব্যাপারে কিছু জানলে এখানে জানাবেন।
গার্হস্থ্য অর্থনীতির কারিকুলাম অনেক বিস্তৃত - জেন্ডার স্পেসিফিক বলে মনে হওয়া উচিত নয়।
https://en.wikipedia.org/wiki/Home_economics
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
গার্হস্থ্য অর্থনীতি শিক্ষা বিষয়ে আমার পয়েন্টটাও তাই। বাংলাদেশের গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজগুলোতে খাদ্য ও পুষ্টি (Food and Nutrition), সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায়িক উদ্যোগ (Resource Management and Entrepreneurship), শিশু পালন ও সামাজিক সম্পর্ক (Child Development and Social Relationship), কলা ও সৃজনশীলতা (Art and Creative Studies) এবং বস্ত্র ও টেক্সটাইল (Clothing and Textile) বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায় পড়ানো হয়। এখানে কোন বিষয়টা জেন্ডার স্পেসিফিক? অন্য অনেক দেশে এই বিভাগগুলোর বাইরে ভোক্তা বিজ্ঞান (Consumer Science), খাদ্য প্রস্তুত (Food Preparation), রন্ধন শিল্প (Culinary Art), প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা (Early Childhood Education), পারিবারিক অর্থনীতি (Family Economics), মানবিক উন্নয়ন (Human Development), অভ্যন্তরীণ সজ্জা (Interior Design), গার্হস্থ্য হিসাব ও ব্যবস্থাপনা (Home Accounting and Management) ইত্যাদি বিষয়েও পড়ানো হয়। এই বিষয়গুলোর কোনটাও তো জেন্ডার স্পেসিফিক নয়। তাহলে বাংলাদেশে গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজগুলোতে শুধুমাত্র নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয় কেন?
"আজকে যাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি অথচ সেখান থেকে ডিগ্রী চায়"!
একটা বিভ্রান্তি এখানে আছে - গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের শিক্ষার্থীরা বরাবরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ডিগ্রী লাভ করেন। সমাবর্তনেও অংশগ্রহণ করেন।
সুতরাং আপনার আপত্তির বিষয়টা নিয়ে একটা বিভ্রান্তি থেকেই যাচ্ছে। তাদের দাবীর সাথে আপনার মতামতের ফারাক দেখতে পাচ্ছি। আর যেকোন কিছুর জন্যই পরের প্রজন্মের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে যাওয়াটাও খুব ভালো বিষয় নয়। এটাও বুড়ো আর বড়দের চিরকালীন "মোয়া মুড়কির আব্দার" টাইপেরই ভাবনা।
ধন্যবাদ বিভ্রান্তিটুকু দুর করার জন্য।
প্রজন্মের সমস্যাটার দোষ কিন্তু শিক্ষা/সমাজ ব্যবস্থা, ভুল প্যারেন্টিং -- এসবের উপরেই আসে বলে লিখতে চেয়েছিলাম। অন্তত মূল ভিডিওতে সেরকমই কথাবার্তা ছিল। সেই জিনিষটা ঠিকমত পাঠকের কাছে পৌঁছেনি - লেখক হিসেবে এটা আমার ব্যর্থতা।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
৮ নম্বর পয়েন্টটা সর্বৈব ভুল। এই অংশটুকুকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আর সাথে প্রথম প্যারার সেই অংশটুকুও।
এতে করে শিরোনামের সাথে এই লেখার বিষয়বস্তুর কোন অমিল হবে না।
ধন্যবাদ।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
প্রতিটা প্রজন্মই তার পরের প্রজন্মের মাঝে সমস্যা দেখতে পায়। আমাদের প্রজন্মকেও কতিপয় গুরুজনরা "উচ্ছন্নে যাচ্ছে" বলে মন্তব্য করতেন। তথাপি, এবারের অবস্থা গুরুতর -সন্দেহ নেই, এবং লেখক (এবং বক্তার) পর্যবেক্ষণগুলোর সাথে আমি একমত।
বইদেশে দুটো জিনিস আমার চোখে খারাপ লেগেছে: (১) বাচ্চারা কিছু হলেই বাবা-মা, ভাই-বোন -যে কাউকে বলে বসে "আই হেইট ইউ"। (২) তাদের কোন কাজকর্মে (যেমন, এখন টিভি বন্ধ করো বা ট্যাবলেট দিয়ে দাও, ইত্যাদি) হস্তক্ষেপ করলে তারা বলে বসে, "দিস ইজ নট ফেয়ায়ার"। বলা বাহুল্য, এগুলো সবই আসে পরিবশে এবং সমবয়সীদের থেকে।
এবার আয়নায় তাকাই, আমাদের প্রজন্মের কথায় আসি। আমরাও আমাদের পূর্বপুরুষের চেয়ে কিছুটা অস্থির, আমাদের বাবা-চাচারা যেমন এক চাকরিতে ঢুকে সেখান থেকেই রিটায়ার করেছেন, সেটা আমরা সবাই (দুর্ভগ্যবশত) পাবো না। আমাদের টিভি-ফ্রিজ কেনার জন্য আমাদের টাকা জমাতে হয় না, দাম কম। গাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক লোন এখন সহজেই পাওয়া যায়। সম্মান বজায় রাখার জন্য হলেও মলয়েশিয়া ঘুরতে যেতে হবে কারণ সবাই যাচ্ছে, আমার ভ্রমণপিপাসা না থাকলেও। আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের (অসুস্থ্য) প্রতিযোগিতায় ঠেলে দিতে দ্বিধা করি না, ভারী ভারী বইয়ের বোঝা চাপিয়ে ভাবি জ্ঞানের পাল্লাও ভারী হচ্ছে। বাচ্চাকে ছবি আঁকার ক্লাসে নিয়ে যাই, কারণ পরীক্ষায় অঙ্কন বিষয়টায় নম্বর তোলা জরুরী, বাচ্চাটা ছবি আঁকতে পছন্দ করে কী না সেদিকে খেয়াল করার বিলাসিতা কই? তালিকা করতে বসলে বোধ হয় উপন্যাস হয়ে যাবে।
আমাদের সমাজ কোন জিনিসটাকে মূল্যায়ন করছে? সত্যিকারের ভালো মানুষের যে দাম সমাজ আগে দিত, এখন সেখানে ধনী লোকেরা জেঁকে বসেছে।
আমাদের পরের প্রজন্মের যে সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে সেগুলোর জন্য আসলে আমরাই দায়ী সমাষ্টিকভাবে। এই যুগে জন্মনেয়া বাচ্চাদের ডিএনএ-তে কোন আকস্মিক মিউটেশন হয়নি -যে কারণে তারা আলাদা। বরং, তাদের চারপশের পরিবেশটা আলাদা। দুর্ভাগ্যজনক সত্য হল সেই পরিবেশটা আমরাই তৈরি করেছি।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এই বিষয়ে একাডেমিক ফাইন্ডিংস (সমাজবিজ্ঞানীদের) কী বলে?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আমারও জানার ইচ্ছা। কারণ-গতি-প্রকৃতি জানতে পারলে সমাধানের পথও বের হয়ে আসবে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ভাই দোষ যদি খুঁজতেই চান তাহলে অন্যান্য প্রজন্মের ভিতরেও কোন না কোন সমস্যা খুঁজে বের করা যায়, যেমন ধরেন আমাদের ঠিক আগের প্রজন্ম (যাঁরা ৮০-৯০ দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বা কলেজের ছাত্র ছিলেন), তাদের কথা বলি --
১. মাদকঃ দেশে মধ্যবিত্ত এবং শিক্ষিত যুবসমাজে মাদকের ভয়াবহ প্রাদূর্ভাব (বিশেষ করে হেরোইন এবং ফেন্সিডিল) কিন্তু সেই প্রজন্মের হাত ধরেই শুরু হয়। যদিও এই ক্ষেত্রে এরশাদ সরকারের সরাসরি এবং প্রত্যক্ষ অবদান থাকলেও তার দায় দায়িত্ব সে প্রজন্ম সম্পূর্ণ ভাবে এড়াতে পারেন না।
২. দূর্নীতিঃ দেশের প্রায় সব সেক্টরে, বিশেষ করে সরকারী প্রতিষ্টান সমূহে দুর্নীতির প্রতিষ্টায়ন এবং দূর্নীতিকে "স্ট্যাটাস কো"র পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রেও, তৎকালীন এরশাদ সরকারের প্রত্যক্ষ অবদান আছে, কিন্তু একটা গোটা প্রজন্ম কিভাবে এমন দূর্নীতিগস্ত হল, এটা নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়।
৩. ইতিহাস বিকৃতিঃ এই ক্ষেত্রে এরশাদ সরকার, জাতীয়তাবাদি দল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অনেক অবদান রাখলেও সে প্রজন্মের মানুষরাও অনেক ক্ষেত্রে দায়ী।
৪. সেশন জটঃ যারা ৮০-৯০ দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন তারা নির্বিকার ভাবে ৭-৮ বছর ধরে ৪ বছরের ব্যাচেলর্স প্রোগ্রাম শেষ করতেন। ভয়াবহ বেকার সমস্যা এর অন্যতম কারণ, এবং এর ফলস্রুতিতে ছাত্ররাজনীতির ভয়াবহ দূর্বিত্তায়ন এই প্রজন্মের হাত ধরেই শুরু হয়।
৫. মেধা পাচারঃ উপরের ১, ২, এবং ৪ নম্বর পয়েন্টের কারণে "পশ্চিমা দেশে গিয়ে সেটল করার" ধারণা যুব সমাজে পাকাপোক্ত ভাবে গেড়ে যায়।
৬. প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির বিলুপ্তিঃ "ছাত্র মৈত্রী" ঘরানার দল সম্পূর্ণ ভাবে জনপ্রিয়তা হারায়, এর পেছনে অবশ্য বিশ্ব রাজনীতির প্রভাব আছে, যেমন সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙ্গে যাওয়া এর অন্যতম কারণ।
এভাবে খারাপ ব্যপারগুলা "চেরি পিকিং" করা যেতেই পারে, তবে ভাল কিছু যে হয়নি না তা কিন্তু না। যেমন এরশাদ বিরোধী আন্দোলন এবং রাজাকার বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ঘাদানিকের প্রতিষ্টা ইত্যাদি।
আমার নিজের প্রজন্মেও সমস্যা কম ছিল না / কম নয়। ফোকাস পয়েন্টটা হল, এই লেখায় যে প্রজন্মের সমস্যার কথা বলা হয়েছে সেটার কারণটা অনেকাংশেই আমাদের হাতে; কাজেই এটা যাতে আর বাড়ার সুযোগ না পায় এবং অদুর ভবিষ্যতে যাতে এটা কমে আসে সেজন্য আমাদের উদ্যোগী হওয়া দরকার - কারণের বিশ্লেষণ সেজন্যই। ধন্যবাদ।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
খুব ভালো হয়েছে।
নির্দিষ্ট করে ৮৪ সাল কেন??
যেটা মনে হয়েছে মিলেনিয়াল (Millennials) কথাটাকে এভাবে বলেছেন সাইমন ভাই। উইকিতে এটার সংজ্ঞা একটু অন্যভাবে লেখা।
তবে আমার ধারণা নতুন শতাব্দীতে ১৬ বছরে পড়েছে - এমন কোন অর্থে হয়তো ৮৪ সাল বলেছে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
এই প্রজন্ম ফাও খেতে চায়? কোন দেশের "এই" প্রজন্ম?
যাই হোক- ২ নং পয়েন্টের মোদ্দাকথা হচ্ছে- "এখনকার প্রজন্ম তাদের পূর্বসূরীদের চেয়ে অনেক বেশি হীনমন্যতা নিয়ে বড় হচ্ছে"। যদিও কনক্লুশনটা হওয়া উচিৎ ছিল এরকম- এখনকার প্রজন্ম তাদের পূর্বসূরীদের চেয়ে নিজেদের সম্পর্কে অনেক বেশি উচ্চ ধারনা নিয়ে বড় হচ্ছে, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে এসে তাদের সে ভুল ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে পূর্বসূরীদের চেয়ে অনেক বেশি হীনমন্যতা নিয়ে বড় হচ্ছে।
আমার মনে হয় সকল যুগেই শিশুদের মধ্যে এই ধারনা ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয় যে, সে অন্যদের চেয়ে স্পেশাল কিছু। এই প্রজন্মের সন্তান না হওয়া সত্ত্বেও আমার ধারনা ছিল শৌর্য-বীর্যে জ্ঞান গরিমায় অন্যদের চেয়ে আমি অনেক এগিয়ে। বাইরের দুনিয়ায় আমার চেয়ে যোগ্যতর যারা, তাদের সংস্পর্শে আসার পর ধীরে ধীরে আমার স্বপ্ন সৌধ ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে যেতে থাকে। অন্যদেরও এমনটাই হওয়ার কথা।
৩ নং ও ৪ নং পয়েন্টে ফেসবুক ব্যবহারের নানা ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে একদিকে বলা হচ্ছে এতে হীনমন্যতা তৈরি হয়, আবার বলা হচ্ছে এতে ডোপামিন উৎপন্ন হয়ে ভাল লাগার অনুভূতি সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে নেশাসক্ত হয়ে পড়ার মত অবস্থার সৃষ্টি হয়। ফেসবুক ব্যবহারে হীনমন্যতা তৈরি হয়? আমার মনে হয় না। তবে অন্যদের লাইক পেলে ডোপামিন উৎপন্ন হয়ে ভাল লাগার অনুভূতি অবশ্য সৃষ্টি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এটা তো বরং ব্যাক্তিজীবনে ইতিবাচক ভুমিকাই পালন করে। অবশ্য এরকম ইতিবাচক ভূমিকা শুধু ফেসবুকই পালন করে না, ব্যবহারিক জীবনে আরও বহু উপলক্ষে এরকম প্রাপ্তি ঘটতে পারে। মানুষ সামাজিক জীব, সামাজিকভাবে যোগাযোগ ও ভাব বিনিময়ের আকাঙ্খা তার মজ্জাগত। ফেসবুক এ ক্ষেত্রে মানুষের জন্য বিশাল এক সুবিধা নিয়ে এসেছে, এতে মানব জাতি উপকৃত হবে নাকি ক্ষতিগ্রস্থ, তা জানতে মানুষকে অপেক্ষা করতে হবে।
৫ নং পয়েন্টে নানা চাহিদার তাৎক্ষণিক পূরণকে আশঙ্কার দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। এর ফলেও হীনমন্যতা, মাদকাসক্তির হার বেড়ে যাওয়া, ডিপ্রেশনের কারণে পড়ালেখা ছেড়ে দেয়ার হার বেড়ে যাওয়া, আত্মহত্যার প্রবণতা ইত্যাদি ক্ষতিকর ব্যাপার ঘটতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনীর উল্লেখ করা যেতে পারে, আমাদের ছোটবেলায় তার কিছু অংশ আমাদের পাঠ্য ছিল। সেখানে রবীন্দ্রনাথ এখনকার ছেলেমেয়েরা সহজেই সবকিছু পেয়ে যায় বলে হতাশা ব্যাক্ত করে জানিয়েছেন তাঁদের ছোটবেলায় কোন কিছু পাওয়াটা কত কঠিন ছিল। এবং সাইমন সাহেবের মতই তিনি আশংকা ব্যাক্ত করে তিনি বলেছেন এদের ভবিষ্যৎ তমসাচ্ছন্ন। কিন্তু এখন কি কেউ বলতে পারেন যে অনেক কিছু সহজে পেয়ে যাওয়ার কারনে রবীন্দ্র পরবর্তী সমাজের কতটুকু ক্ষতি হয়েছে?
হা হা হা! আমি ভাবছি আমাদের প্রস্তরযুগের কোন আদিপুরুষ যদি রবীন্দ্রনাথের শৈশব-কৈশোরযুগের পোলাপাইনদের দেখতে পেতেন, তাহলে কি বলতেন এই একই যুক্তি ফলো করলে?
একটা ধাঁধা দিলাম সবার জন্যঃ একবার কল্পনা করুন এবং মনে মনে রি-ফ্রেজ করার চেষ্টা করুন উপরে ৫নং পয়েন্টের বক্তব্য এই একই অন্তর্নিহিত যুক্তিতে এবং পোস্টলেখক / সাইমন সাহেবের ভাষার অনুকরনেই ঐ প্রস্তরযুগীয় পুরুষ নিজের অবস্থান ও ব্যাকগ্রাউন্ডের উপর ভিত্তি করে ঊনবিংশ শতাব্দীর রবীন্দ্রশৈশবকৈশোর-যুগের পোলাপাইনদের সম্পর্কে কি বলতে পারতেন?? একটিবার চেষ্টা করেই দেখুন না!! এবং পারলে লিখে ফেলুন এখানে। আমি এই চেষ্টা করতে গিয়ে দমফাটানো হাসি আর সামলাতে পারিনি।
আর চিন্তা করুন, ঐ প্রস্তরমানব যদি ২১শ শতকের পোলাপাইনদের দেখতে পেতেন - তাহলে কি বলতেন??!!!
****************************************
আমার উপরের মন্তব্যে দেয়া তথাকথিত "ধাঁধা"-টা ঠিকমত সমাধান করার চেষ্টা করতে গেলেই লেখকের (নাকি সাইমন সাহেবের?) ৫নং পয়েন্টটার যাথার্থ্য আর আসল মাজেজা ধরা পরবে!
****************************************
প্রস্তর যুগের পূর্বপুরুষেরা নিজেরাই পাথরে পরিণত হয়ে যেতেন, কারন অল্প শোকে কাতর আর অধিক শোকে পাথর।
নতুন মন্তব্য করুন