মার্কিন মুল্লুকে আসবার পর থেকে জীবন থেকে অনেক জিনিস বিদায় নিয়েছিলো, তম্মধ্যে একটা হলো পদব্রজে অরণ্যে গমন কিংবা পর্বতারোহণ। আমি এখানে হাইকিং বলেই উল্লেখ করবো পুরো লেখায়। হাইকিং এর জন্যে প্রথমে দরকার একটা দল। পুরোপুরি সমমনা না হলেও ৬৫-৭০% মিল থাকলেই চলে। একদম মিল না থাকলেও চালানো যায়। তবে সেটা বেশ কষ্টসাধ্যে। সেন্টমার্টিনে এরকম একটা ট্রিপে আনিস যেমন ব্যাপক কষ্ট দিয়েছিলো। এই হোটেলে থাকুম না, ওই টয়লেটে হাগুম না। এই খামু না, ওই খামু না। ম্যানেজ করেছিলাম। এমনিতেই এইসব ট্রিপে আমি পালের গোদা। ওই দিকটা যেহেতু আমার এলাকা স্বভাবতই খাস চাঁটগাইয়া ভাষার সুবাদে আমিই বাতচিৎ করি। দলের ভাইরাস’রা তেমন গ্যাঞ্জাম পাকাইতে পারে নাই। এইখানে আসবার পর আমি ব্যাপক বেকায়দায়। দল ছাড়া কান্ডারী আমি ফ্যা ফ্যা কইরা, ইন্টারনেট চষি। কই যাই, কেমতে যাই। বান্দরবনে যাওনের লাইগা ব্যাগে কিছু কাপড়, তোয়ালে, প্রাত্যহিক টয়লেট্রিজ, এক জ়োড়া স্যান্ডেল আর নিজেরে নিলেই খালাস। খাওন-থাকনের বন্দোবস্ত সেখানকার অধিবাসীদের ভালোবাসাতেই হইয়া যায়। এইহানে পানির বোতল থিকা, তাম্বু, স্লিপিং ব্যাগ, প্যাড, রাত্তিরের শীতের কাপড়, পানি পরিষ্কারক ফিল্টার, সব কয়দিনের খাওয়া, এর উপরে ভাল্লুক নিবারক স্প্রে, বৃষ্টি প্রতিরোধক কাপড় এক কথায় যা তা একটা ব্যাপার।
সুতরাং আসবার পর থিকা হাইকিং হয়ে ঊঠলো না। দুধের স্বাদ ঘোলে মিটাতে মাঝে মাঝে কনগ্যারি নদীর ধার ভ্রমণ করি। কনগ্যারি ফরেস্টে ক্যানুয়িং করে আসি। স্টর্ম থার্মন্ডে ভার্টিক্যাল ক্লাইম্ব করি। মাঝে মাঝে সমুদ্র দর্শন করি। এই করতে করতে একদি আলাবামা গিয়া দ্রোহী-দ্রোহীনি পর্যন্ত দর্শন করে আসলাম। কিন্তু ঘোল দিয়া আর পোষাইতেছিলো না। ফেইসবুকের সন্ধানে একদিন সন্ধান পাইলাম আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্বতারোহণ এবং সাদা জল রাফটিং ক্লাবের। ক্লাবের বেশীর ভাগ সদস্য ক্রিমিনোলজি এবং ল’ ডিপার্টমেন্টের। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কোন ভুদাই ক্লাবে নাই। সব গুলিই সাদা আমেরিকান। প্রোপোজাল ডিফেন্সের আগের দিন মিটিংয়ে গিয়া মনে হইলে একগাদা সাদা মুরগার মাঝখানে আমি একটা লাল্টু রোড রানার। বেশীর ভাগ হইতাছে আন্ডারগ্রেডের ছুটি-ছাটার অভাব ওদের নাই। সুযোগ পাইলেই ওরা বড় ট্রিপে যায়। আমি মাঝখান দিয়া বেকায়দা। সাপ্তাহিক ছুটি ব্যাতীত আর কোন কিছুই আমার নাই। এর মধ্যে গত তিন মাস আবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও গাধার খাটনি দিতে হইছে। সুতরাং ফোর্থ জুলাইয়ের লং উইকেন্ডে স্মোকি ট্রিপের প্রস্তার যখন জিমি (ক্লাবের প্রেসিডেন্ট) দিলো তখন আমার পোয়াবারো। আটজনের ট্রিপ আমি কয়া দিলাম আছি। আমার নিজের কোন প্রফেশনাল ব্যাকপ্যাক নাই, নাই স্লিপিং ব্যাগ, নাই তাঁবু, নাই ক্যামেল ব্যাগ, কি কি লাগতে পারে তার ও কোন হদিস আমার নাই। জিমি’রে কইলাম আমি আছি। ক্লাবের মালপত্র লাগবো আমার। ও কইলো ফি সাবিলিল্লাহ্ । কিছু ক্যাশ নিয়া তৈরি থাকো। তোমারে তিন তারিখ ফোনাইয়া জানাবো কি, কোথায়, কেমনে ?
তিন তারিখ ফোনাইয়া বললো, “তোমার গাড়ী আছে ?”। কইলাম “আছে”। সাব্যস্ত হইলো আমি গ্রিনিভিল থেকে একজনরে পিক-আপ করবো, ওরে নিয়ে স্মোকি’র উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিবো। আগেরদিন রাতে গ্রিনিভিলের মেম্বাররে ফোন দিলাম। ওর নাম চার্লস। উনিশ বছর বয়েসী, আমাদের স্কুলেরই ইলেক্ট্রিক্যালের আন্ডারগ্রেড। কিন্তু কথা বলতে অনিচ্ছুক। কথা বলানোর জন্যে মনে হলো ওর পেটে বোমা মারতে হবে। যাই বলি হুঁ এবং হ্যাঁ বাদে জবাব নাই। পরবর্তীতে আবিষ্কার হলো সে এক সেমিস্টার আগে আমার ছাত্র ছিলো।
মন্তব্য
মজাদার আধা-কাহিনী । বাকি টা ?
সৌন্দর্য্যে কাতর হয়ে পরার পরপরই হতাশ হয়ে পরি, তাঁর নশ্বরতায় ...
বাকীটা আসিতেছে। ধামরাই বাসস্ট্যান্ডে জ্যামে আটকে আছে।
কাকা, আমার বউ বললো তুমি নাকি ফেসবুকে [খোমা খাতা: সন্ন্যাসী কতৃক প্রদত্ত নাম] একগাদা ছবি দিয়া ভরাইয়ালাইছো। ৬০ টা ছবির মধ্যে তোমার খোমার চিহ্ন মাত্র নাই!
সে সন্দেহ করতেছিল তুমি অন্য কারো ছবি মাইরা দিসো। কিন্তু আজ নাকি রিসেন্টলি ট্যাগড্ অবস্থায় তোমারে পাইয়া সে বুঝছে যে তুমি সত্যিই হাইকিং করছিলা।
পর সমাচার এই যে: আমি গত একমাসে দুইবার সাইকেল থেকে পইড়া গেছি। এইবারের চোটটা জব্বর হইছে। পা কেটে পুরা ফাঁক হয়ে গেছে। হাটতে পারি না।
কী ব্লগার? ডরাইলা?
ফেসবুকে এই লোকের রোমাঞ্চকর ট্র্যাকিং এর ছবি দেখতে দেখতে ঈর্ষায় দগ্ধ হচ্ছি কয়েকদিন ধরে।
আহ ঈশ্বর, আমাদের ক্ষোভ কি তোমাকে স্পর্শ করে?
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
চল্লিশ মাইল হাঁটলে পরে রোমান্স যাবে উড়ে।
রাশিফল দেখে "প্রেম ও রোমান্স শুভ" এরকম কোন দিনে বেরুতে হবে।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
শুনে খারাপই লাগলো। বউ সহকারে এসে যাও তোমাদের একটা ট্রিপ দিয়া দিই স্মোকি তে।
- হালা কমিশনার কয় কী!
মেম্বর সাব যাইয়েন না। ভাও দিয়া শালি লইয়া লইবো কইলাম!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ডরের কিছু নাই। হযুরে একদিন জিগাইছি, "বিয়া করবা?" হযু ডরাইছে।
কী ব্লগার? ডরাইলা?
- "লাইসেন আছে না!"- গোছের কাউরে দেখাইছিলেন নাকি পাত্রী হিসাবে?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সাইকেল থেকে মানুষ পড়ে ক্যামনে? বড় অদ্ভূত।
সাইকেল চালানোর সময় বেগানা মেয়েদের দিকে চোখ দেওয়া ঠিক নাহ।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
আমি নিজেও কোনদিন কাউকে সাইকেল থেকে পড়তে শুনিনি। খালি আমার ক্ষেত্রেই ঘটনা ঘটলো।
হযু: গ্যাটলিনবার্গে গেছিলাম গত ডিসেম্বরে। স্মোকি খানিকটা দেখেছি। অ্যামিকালোলা ট্রেইল [ব্লাড মাউন্টেইন] ঘুরে এসেছি। আমার এখন একটা বিয়ে খাওয়া দরকার। তুমি বিয়ে কর আমরা বেড়াইতে আসি ।
কী ব্লগার? ডরাইলা?
- পরেরবার সাইকেলে উঠলে ঠুলি পইরা উইঠেন। তাইলে আর বেগানা নারীদের দিকে তাকাইয়া সাইকেল থন পইড়া যাইবেন না!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কয়দিন ঝুলায় রাখবেন ?? তয় দা গ্রেট স্মোকি মাউন্টেনের ছবি দেখে মনে খুব একটা ভক্তি জাগে নাই। ইয়োসোমিটি আর রকি মাউন্টেন দেখার পর সেরম জুইতের কিছু পাইলাম না আজ পর্যন্ত। আর গ্র্যান্ড কনিয়নের কথা বাদই দিলাম। ঐটা অন্যরকম।
___________________________________
দুনিয়াজুড়া পচুর গিয়ানজাম
আমার খুব শখ গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখার।
কী ব্লগার? ডরাইলা?
এইদিকে সময় নিয়া আসেন। একটা ট্রিপ দিমু নে।
___________________________________
দুনিয়াজুড়া পচুর গিয়ানজাম
আগামী সামারের আগে সম্ভব না মনে হয়।
কী ব্লগার? ডরাইলা?
বেশীদিন রাখবো না ঝুলিয়ে। স্মোকি একটু ভিন্নজাতের আমেজ। এটার নামই বলে এটা কেমন জায়গা। এতটাই ঘন অরণ্য এবং ভীষণ কুয়াশা ঘেরা। একটা হিলটপের ছবিও তুলতে পারিনি। অনেকটা লর্ড অফ দ্যা রিং'স এর সেটের মধ্যে মনে হয়।
- আল্লায় রক্ষা করছে। কমিশনার সাব শেষমেশ সচলে একটা পোস্ট দিছে।
ফেইসবুকে তো সেইরমের সব ফটুক দিয়া নিজের নিজের পাবলিসিটি কর্তাছে শুনলাম!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হ...
কী ব্লগার? ডরাইলা?
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
সিগন্যাল ছেড়ে গেছে, জ্যাম আর নাই ।
একটু তাড়াতাড়ি করেন ভাইয়া...
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,
দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷
লেখায় রস একেবারে চুঁয়ে চুঁয়ে পড়তাছে।
---------------------------
থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
নতুন মন্তব্য করুন