ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ) এর পক্ষ থেকে আমরা গভীর দুঃখ এবং ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করছি যে একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী জামাত শিবির চক্রটি যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে বানচাল করার একটি ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা অপরাধমূলকভাবে লঙ্ঘন করে কিছু ব্যক্তিগত কথপোকথন এবং ইমেইল হ্যাকিং করে এবং তা বিভিন্নভাবে বিকৃত করে দেশী বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে ছড়াতে শুরু করেছে। নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে এবং বিচার প্রক্রিয়াকে স্থায়ী ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে চিহ্নিত এই চক্রটি নানান রকম বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা খুবই উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে এই বিভ্রান্তি প্রগতিশীল সংগঠনগুলির ভেতরেও ধীরে ধীরে তারা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হচ্ছে। পারষ্পরিক অবিশ্বাস এবং ভিত্তিহীন কাদা ছোঁড়াছুড়ির এই পরিবেশের সম্ভাব্য ফলাফল হিসেবে আমরা দেখতে পাচ্ছি - অবশ্যম্ভাবীভাবে এই ঘটনার মূল সুবিধাভোগী (beneficiary) এবং আসল অপরাধীর (অর্থাৎ স্বাধীনতাবিরোধী জামাত শিবির চক্রের) ওপর থেকে সবার মনযোগ সরে যাচ্ছে, যা তাদের এই গুরু অপরাধের দায়ভার থেকে পার পেয়ে যাওয়ার পথ উম্মোচিত করছে; হ্যাকিং ঘটনার প্রকৃত তদন্ত তার সঠিক দিকনির্দেশনা হারানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে; স্বাধীনতার পক্ষের সক্রিয় সংগঠনগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ এবং অবিশ্বাসের বীজ বপনের মাধ্যমে স্থায়ী বিভেদ সৃষ্টির পরিবেশ তৈরী হচ্ছে যা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বৃহত্তর আন্দোলনেরই ক্ষতি করতে পারে।
১৯৭১ এ সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহের বিচারের মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতির নিরসন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত স্বাধীন বিশেষজ্ঞ, কর্মী এবং সংগঠনসমূহের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (ICSF)। বাংলাদেশে বর্তমানে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকে পর্যবেক্ষণ, অনুশীলন এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যেই এই নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠা। এই সব উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এবং এর বিভিন্ন অঙ্গসমূহকে দালিলিক, আর্কাইভ এবং গবেষণা সহায়তা প্রদান করা ছাড়াও ট্রাইবুনালের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং দফতরসমূহের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ, মতামত এবং পরামর্শ বিনিময়, এবং ক্ষেত্রবিশেষে সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহণ এই নেটওয়ার্কের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের অংশ। শুরু থেকেই এদেশের বিচারপ্রার্থী জনগনসহ আরো যে সংগঠনগুলো ট্রাইবুনালের এই বিচার প্রক্রিয়াকে তিল তিল করে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য সহায়তা এবং সমর্থন দিয়ে এসেছেন তাদের মধ্যে আইসিএসএফ অন্যতম। এই ট্রাইব্যুনাল গঠনের সময় থেকেই আইসিএসএফ বিচার প্রক্রিয়াকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছে। এ কারণে আইসিএসএফ এর পক্ষ থেকে কিছু বিষয় তুলে ধরা কর্তব্য বলে মনে করছি। আইসিএসএফ এ বিষয়ে দক্ষ ব্যক্তি ও পেশাজীবিদের স্বাধীন মতামত নিয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতেই আমরা মনে করি:
(ক) এটি এক সুপরিকল্পিত এবং দীর্ঘ প্রস্তুতির পর সংঘটিত সাইবার অপরাধ যার ফলে ব্যপক আকারে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের কম্পিউটারের নিরাপত্তা, ইমেইল এর এবং কথাপকথনের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হয়েছে। লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট- বিচার প্রক্রিয়াতে বিঘ্ন ঘটানো এবং প্রশ্নবিদ্ধ করা ।
(খ) হ্যাকিং হওয়া প্রচারিত ইমেইল গুলোর স্ক্রীনশট থেকে এটা স্পষ্ট যে বিচারকের কম্পিউটারে সংরক্ষিত সকল ইমেইল, যাবতীয় পত্রালাপ, তথ্যাদি, সমস্ত ফাইল ইত্যাদি হ্যাকিং এর মাধ্যমে অপরাধী’র হস্তগত হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে ।
(গ) এক্ষেত্রে তদন্তে বিলম্ব হওয়া খুবই উদ্বেগের বিষয় বলে আমরা মনে করছি, আর সব অপরাধের মতোই এখানেও বিলম্বের কারণে আলামত ও তথ্য প্রমাণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
(ঘ) প্রকৃত অপরাধীকে অবিলম্বে চিহ্নিত করা না গেলে, এবং তার/তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করা গেলে একই অপরাধ আরো বিস্তৃত আকারে হবার সম্ভাবনা বাড়তে থাকবে, যা বিচার প্রক্রিয়াকে আরো বড়ো হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে। যথাপোযুক্ত এবং প্রযুক্তিগতভাবে মানসম্মত তদন্তের মাধ্যমে এই অপরাধের ভয়াবহতা, গভীরতা, বিস্তৃতি ইত্যাদি নিরূপন এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা এখনো সম্ভব।
১. বিচারের বিরুদ্ধ পক্ষ থেকে হ্যাকিংকৃত তথ্যকে পূঁজি করে যে সব প্রচারণার চেষ্টা চলছে তা একেবারেই ভিত্তিহীন। কারণ, হ্যাকিংকৃত তথ্যে এমন কোনো কিছুই নেই যা এই বিচার প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা বা গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বরং, তা সংশ্লিষ্ট বিচারকের ঋজুতা, নিরপেক্ষতা এবং মানসম্মত বিচারের প্রতি সংশ্লিষ্টদের দায়বদ্ধতাকেই আবারও মূর্ত করেছে।
২. বিচারক নিজামুল হক এর পদত্যাগকে কোনোভাবেই দায়ের স্বীকারোক্তি বলে ধরে নেয়া যাবে না। বরং, তা একটি বিতর্কিত পরিস্থিতিতে বিচার প্রক্রিয়াকে সব ধরণের প্রশ্নের উর্ধ্বে রাখার প্রয়াস হিসেবে দেখতে হবে।
৩. হ্যাকিং এবং বিচারকের পদত্যাগে বিচার প্রক্রিয়ার কোনো বিঘ্ন ঘটেনি । এক্ষেত্রে ১৯৭৩ এর আইন ও বাংলাদেশের আইনের সংস্কৃতি খুবই পরিস্কার । ধারা ৬ এ সব বিধৃত আছে । এছাড়া এটাই ট্রাইবুনালের প্রথম বিচারকের পদত্যাগ নয় । বিচারকের পদত্যাগের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়ার কোনো পরিবর্তন হয়না, ফলে প্রক্রিয়া যথাযথভাবে চলতে কোনো বাধা নেই ।
৪. আসামী পক্ষদের পুনঃ বিচার ইত্যাকার আবেদনের কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালস আইন-১৯৭৩ এর ধারা ৬ এর অধীনের উপধারা ৬ এ এটি অত্যন্ত স্পষ্ট যে ট্রাইবুনালের কোন বিচারপতি যদি “যে কোনো কারনে” তার পদ থেকে সরে আসেন তাহলে,ট্রাইবুনালের কোনো বিচারপতির পরিবর্তন হয়ে থাকলে কেবলমাত্র সেই অজুহাতের ভিত্তিতে ট্রাইবুনাল পুনরায় সাক্ষীদের সাক্ষ্য গোড়া থেকে শুনতে বাধ্য নয়। বরং আইনে বলা রয়েছে - ইতোমধ্যেই মামলাগুলোর যেটুকু সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়ে গেছে ঠিক সে পর্যায় থেকেই ট্রাইবুনাল নতুন বিচারপতিকে/বিচারপতিদের নিয়ে তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ক্ষমতা রাখে, মামলার পদ্ধতি এবং পর্যায়ে কোনো ধরণের ছেদ ছাড়াই।
৫. এর পরেও এই ধরনের ভিত্তিহীন কথা বলে যারা এই বিচার বন্ধ করবার কিংবা গতি স্লথ করবার চেষ্টা চালাবেন, ধরে নিতে হবে যে তারা ট্রাইবুনালের কাজে বাধা গ্রস্থ করবার জন্যই এই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, যাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।
(i) এই অপরাধের ফসল কারা তুলছে বা তুলতে পারে তা খুঁজে বের করা এবং এই তদন্তে আসামী পক্ষের রাজনৈতিক গোষ্ঠী কি সুফল পাবে তা আমলে নেয়া। আমাদের দাবি তদন্তকালীন মূল দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকতে হবে ‘হ্যাকিং’ এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধের দিকে। এ ছাড়াও কারা হ্যাকিঙ সংক্রান্ত খবর বিবিধ দেশী বিদেশী মিডিয়াতে পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে এবং ফেসবুক সহ সকল মিডিয়াতে সমসাময়িক বিবিধ প্রোপাগান্ডা ছড়ানোতে ভূমিকা রাখছে সেখানেও তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ সূত্র নিহিত থাকতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস।
(ii) অবিলম্বে ট্রাইবুনালের সার্বিক প্রযুক্তি-অবকাঠামোর সামগ্রিক নিরাপত্তা বিষয়ক পর্যালোচনা (overall technology security review) এবং তা ঢেলে সাজানো প্রয়োজন, যাতে এধরণের ঘটনার কোনো পূনরাবৃত্তি না হয়।
(iii) তদন্ত হতে হবে নিরপেক্ষ এবং এমনভাবে হতে হবে যেন স্বাধীনতাবিরোধী জামাতশিবির চক্র কোনোভাবেই এই তদন্ত থেকে ফায়দা লুটতে না পারে।
তদন্ত চলাকালে বিচার প্রক্রিয়ায় সহায়তাকারী সকল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ঐক্য বিনষ্ট হয় এমন কোনো রকম কর্মকান্ড বা বক্তব্য বিবৃতি প্রদান থেকে বিরত থাকতে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল মহল এবং সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এই সংকট নিরসনে প্রয়োজন ১৯৭১ এর সকল পক্ষ শক্তির মধ্যে অটুট ঐক্য। আমাদের বিশ্বাস যত দিন সে ঐক্য বিরাজ করবে ততদিন আমাদের পক্ষে সব ধরণের ষড়যন্ত্র এবং বাধার মোকাবিলা করা সম্ভব।
ধন্যবাদ।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ)
ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর ২০১২
আইসিএসএফ মূল পোর্টাল: http://icsforum.org
মিডিয়া আর্কাইভ: http://icsforum.org/mediarchive
ই-লাইব্রেরী: http://icsforum.org/library
ফেসবুক: http://facebook.com/icsforum
টুইটার: http://twitter.com/icsforum
ইউটিউব: http://youtube.com/icsforum
যোগাযোগ:
মন্তব্য
আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা,
১। ২০০৯ থেকে দেশ এবং প্রবাসের একদল নিবেদিত প্রাণ ছেলেমেয়ে মিলে আইসিএসএফ (ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম) নামের এই নেটওয়ার্ক বা কোয়ালিশন শুরু করে।
২। বিশ্বের প্রায় ৩৮ শহরের তরুণ প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সংগ্রামী কিছু তরুণ-তরুনীদের মধ্যে এই সংগঠনটি ছড়িয়ে পড়েছে।
৩। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে গড়ে তোলা এই সংগঠনটিতে কোনো তথাকথিত স্তরবিন্যাস নেই। রাজনৈতিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতাহীন এই সংগঠনটিতে একে একে জড়ো হয়েছে ১৩টি সংগঠন, যার মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নেতৃত্ব দেয়া সবচেয়ে প্রভাবশালী বাংলা ব্লগগুলোও।
৪। এ সংগঠনে যুক্ত হয়েছেন অক্সফোর্ড-কেমব্রীজ-হার্ভার্ডসহ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রখর মেধাবী দেশপ্রেমিক ছেলেমেয়েরা, দেশ-বিদেশের নাম করা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা, রয়েছেন আইনজীবি, সাংবাদিক এবং নানা পেশাজীবিরা, রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
৫। এ সামষ্টিক কর্মযজ্ঞে কেউ নিজের ব্যক্তিগত নাম বা যশের জন্য কাজ করেন না। প্রচলিত ধারার কমিটি, সাব-কমিটি নির্ভর বিবৃতি সেমিনার এবং প্রচারনির্ভর কর্মকাণ্ডের বাইরে গিয়ে ওরা নিভৃতে গড়ে তুলেছে একের পর এক আর্কাইভ যা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চা ও গবেষণায় বর্তমান এবং আগামীর জন্য অমূল্য সম্পদ হতে পারে।
৬। যুদ্ধাপরাধী বিচারের এ মহৎ উদ্যোগের সামনে শত শত প্রতিবন্ধকতা জেনেই সংগঠনটি তৈরী হয়। যুদ্ধাপরাধ সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা, বিচারে আইনী সহায়তা প্রদান, অপপ্রচারের জবাব দেয়া, জনমত তৈরী করা, সমমনাদের একাত্ম করাসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বিচার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সব ধরণের অপ-প্রচার এবং ষড়যন্ত্র এই নেটওয়ার্কের সদস্যরা মোকাবিলা করে আসছে। এরাই টোবি ক্যাডম্যান, স্টিফেন র্যাপ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, বা গ্রেগ হার্টলিদের নানা বিভ্রান্তিমূলক বিবৃতি এবং রিপোর্টগুলোর সমুচিত জবাব দিয়ে এসেছে।
প্রাণ দিয়ে দেশটাকে ভালবাসা ছাড়া সংগঠনটির আর কোনও স্বার্থ নেই। যুদ্ধাপরাধী বিচারে আর কোন ভূমিকা রাখতে পারি আর না পারি, আসুন, নিঃস্বার্থ দেশপ্রেমিক এ সংগঠনটির ডাকে আমরা অন্ততঃ একাত্ম হই। কারণ এখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষের ঐক্য বড় বেশি জরুরী। যুদ্ধাপরাধী বিচারের সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করার এটাই হয়তো শেষ সুযোগ আমাদের।
ব্যক্তি, দল, স্বার্থ সবকিছুর উর্ধ্বে উঠে আমরা কেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি না?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
না। তিক্ত বাস্তব হোল "না!"
কারণটা বোধ হয় আমরা সবাই জানি। একটি দলের জন্মই হয়েছিল এদের সাথে নিয়ে। একদিনে তারা জামাতের বি টিমে পরিণত হয় নি। দলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রধানমন্ত্রীর সমান মর্যাদা দিয়েছিলেন শাহ আজিজুর রহমানকে। এবং দুঃখজনক হলেও সত্যি ৪০% এর মত বাংলাদেশি ভোটার এই চৈতন্যবিহীন দলটির সমর্থক!
নির্ঝর অলয়
সাথে আছি।
***
"আসামী পক্ষদের পুনঃ বিচার ইত্যাকার আবেদনের কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।"
তাহলে গো-আ'র রিট্রায়ালের আবেদন গ্রাহ্য় (যে আবেদনের আইন নেই, সেই আবেদনের স্বপক্ষে যুক্তি শুনতে আগ্রহ প্রকাশের মাধ্য়মে) করে কি ট্রাইবুনাল বিবাদী পক্ষকে একটা প্রেসিডেন্স উপহার দিলনা? অবাক হয়ে লক্ষ করলাম, বাদী পক্ষ এখানে নিশ্চুপ থাকলো। আজকের শুনানির ধারাবাহিকতা নতুন বছরের মার্চে দেয়া হল। এই সময়-ক্ষেপন আদতে জামায়াতকে আরো নতুন রিট্রায়ালের আবেদন করার সময় ও সুযোগ দেবে। এগুলোর কি আসলেই কোন দরকার ছিল?
***
আই সি এস এফ থেকে লীগের ভেতরের লাগাম আরো শক্ত হাতে ধরতে বলছে কি কেউ? সুরন্জিতের মত ফাউল পাবলিকের মুখে ঠুলি পরানো অতি প্রয়োজন এখন।
সাথে আছি।
এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ হওয়া উচিত। বাংলাদেশ সংবিধান যেখানে ব্যক্তিগত যোগাযোগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, সেখানে একটি গোষ্ঠীর নোংরা কর্মকাণ্ডের কঠিন বিচার হওয়া উচিত। সংবিধানের ৪৩ (খ) অনুচ্ছেদ দেখুন:
তৃতীয় ভাগ
মৌলিক অধিকার
গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ
৪৩। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, জনসাধারণের নৈতিকতা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের
(ক) প্রবেশ, তল্লাশী ও আটক হইতে স্বীয় গৃহে নিরাপত্তালাভের অধিকার থাকিবে; এবং
(খ) চিঠিপত্রের ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনতারক্ষার অধিকার থাকিবে।
PART III
FUNDAMENTAL RIGHTS
Section Index
Protection of home and correspondence
43. Every citizen shall have the right, subject to any reasonable restrictions imposed by law in the interests of the security of the State, public order, public morality or public health –
(a) to be secured in his home against entry, search and seizure; and
(b) to the privacy of his correspondence and other means of communication.
সূত্র: http://bdlaws.minlaw.gov.bd/sections_detail.php?id=367§ions_id=24591
http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_sections_detail.php?id=957§ions_id=30009
জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটি নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাবার জন্য আইসিএসএফকে আন্তরিক অভিনন্দন এবং সাথে থাকার প্রত্যয়।
অনেকেই যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পর্কে নির্লিপ্ত থেকে নিরপেক্ষ থাকার ভান করে। এই সুবিধাবাদীদের নির্লিপ্ততার আসল রহস্য কি? কেন এরা বিচার নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা নিয়ে বিদ্রূপ করার সাহস পাচ্ছে?
রাজাকারদের সন্তান এবং ভাবশিষ্যদের কঠিন নজরদারিতে রাখা প্রয়োজন। আমি বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখেছি একাত্তরের ঘাতকের সন্তানাদি ,স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে নিদারুণ ঘৃণা পোষণ করে এবং সুযোগ পেলেই আর্থ-সামাজিক-শারীরিক ক্ষতি এমনকি প্রাণনাশের চেষ্টাও করে থাকে। এদের হাত থেকে জনগণকে বাঁচানোর উপায় কি?
১৯৭৫ এর পরের একুশ বছরে যে স্বাধীনতাবিরোধী প্রজন্ম গড়ে উঠেছে তাদের মধ্যে বস্তুত কতজনকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব?
জামাতী মতবাদের অবসান কী ভাবে সম্ভব?
নির্ঝর অলয়
নতুন মন্তব্য করুন