পাহাড়ে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির আগে জরিপ নয়

ইলিরা দেওয়ান এর ছবি
লিখেছেন ইলিরা দেওয়ান [অতিথি] (তারিখ: শনি, ১৭/১০/২০০৯ - ১১:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যানের ভূমি জরিপ ঘোষণায় পাহাড়ে আবার নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভূমি বিরোধ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সমস্যা। সাম্প্রতিক একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা জরুরি মনে করছি।

খাগড়াছড়ি জেলার সিন্দুকছড়ির এক প্রত্যন্ত গ্রামে ফনেমালা ত্রিপুরা (৫০) তার পরিবার নিয়ে থাকতেন। জুম চাষই তার আয়ের একমাত্র উৎস। ফনেমালার স্বামী বিভিষণ ত্রিপুরা একজন ভূমিহীন কৃষক। তাই ফনেমালার বাবা মেয়ের বিয়ের পর জামাইকে জুম চাষ করার জন্য একটি পাহাড় দিয়েছিলেন। তখন থেকেই ফনেমালা আর বিভিষণ এই পাহাড়ে জুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এটি প্রায় ৩৪/৩৫ বছর আগের ঘটনা। তারও আগে এই পাহাড়ে ফনেমালার বাপ-দাদারা জুম চাষ করতেন। কিন্তু গত ৩/৪ বছর ধরে এই পাহাড়ের মালিকানা দাবী করছে সিন্দুকছড়িতে বসতিস্থাপনকারী বাঙালি নওয়াব আলী, রুস্তম আলী, খাইরুল ইসলাম ও আফসার গাজী নামে চার ব্যাক্তি। এ জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ বসেছিল এবং ফনেমালা ত্রিপুরা মহালছড়ি থানায় একটি জিডি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য যতীন্দ্রলাল ত্রিপুরার কাছেও বিচার চেয়েছিলেন। কিন্তু বিচার পাওয়ার আগেই ফনেমালা ত্রিপুরাকে জীবন দিতে হল। গত ৩ সেপ্টেম্বর তাকে তার জুমে হত্যা করা হয় (সমকাল, ২৯ সেপ্টেম্বর)।

শুধু ফনেমালা নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জবর দখল নিয়ে আরও কতজন যে প্রাণ হারাবে তা নিয়ে পাহাড়িদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন ভূমি জরিপের ঘোষণা দিয়ে এই আতংককে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তড়িঘড়ি জরিপের ফলাফল মোটেও শুভ হবে না। কারন জরিপের ফলে ভূমি সংক্রান্ত বিরাজমান সমস্যাসমূহ আরও জটিল করে তোলা হবে এবং হানাহানির পরিমাণ বেড়ে যাবে।

সংবাদপত্রের খবরে দেখা যাচ্ছে, ৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনের এক সভায় কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি (অব:) খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী ১৫ দিনের মধ্যে ভূমি জরিপের পন্থা ও পদ্ধতি ঠিক করে ১৫ অক্টোবর’০৯ থেকে শুরু করে আগামী ২০১০ সালের মার্চের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জরিপ সম্পন্ন করার ঘোষণা দেন। তাঁর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে পাহাড়িদের মধ্যে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। এমনকি চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছার বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। যে সভার মাধ্যমে ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান এ ঘোষণা দেন, সে সভায় আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান বা প্রতিনিধি, পার্বত্য জেলা পরিষদ (রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান) এর প্রতিনিধি ও সার্কেল চিফদের অনুপস্থিতিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত কতটুকু গ্রহণযোগ্য ও বিধিসম্মত হয়েছে তা নিয়ে পাহাড়ি জনগণের মধ্যে সংশয় ও উৎকন্ঠা রয়েছে। কারণ পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক গঠিত ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের অন্যতম সদস্য হিসেবে উল্লেখিত প্রতিনিধিরাও রয়েছেন।

আমরা মনে করি, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জরিপের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আছে। কিন্তু জরিপের ফলে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলার জন্য জরিপের আগে সরকারকে কতকগুলো বিষয়কে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় আনতে হবে। যেমন, জরিপের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি হবে, জরিপের টেকনিক কি ধরণের হবে অর্থাৎ জরিপ কোন্ পদ্ধতিতে করা হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রনয়ন করতে হবে। যেহেতু পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথাগত আইন, রীতি ও পদ্ধতি অনুসরণ করেই ভূমি ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হয়ে থাকে, সেহেতু ভূমি জরিপের ক্ষেত্রেও সে বিষয়গুলিকে অনুসরণ করতে হবে। এছাড়া যে বিষয়টি সবচেয়ে জরুরি তা হল জরিপের সময়কাল নির্ধারণ করা অর্থাৎ স্বাধীনতার পরে বাঙালি সেটেলার পুর্নবাসনের আগের সময়কালের ভূমির মালিকানাকে ভিত্তি (Base) ধরেই জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

কেননা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংখ্যানুপাত পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৭৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের মোট জনসংখ্যার ২৬.২৯% বাঙালি ছিল। কিনন্তু ১৯৮১ ও ১৯৯১ সালে তা দাঁড়ায় যথাক্রমে ৪০.৯৩% ও ৪৮.৬৭%। সুতরাং এ পরিসংখ্যান থেকে এটি স্পষ্ট যে, আশির দশকের শেষের দিকে জ্যামিতিকহারে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালির জনসংখ্যা ও ভূমির অবৈধ দখলদারের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে গিয়েছে ।

বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি এবং চুক্তি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় ঘোষণায় পাহাড়িদের মধ্যে আশার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু ভূমি কমিশনের তড়িঘড়ি এ সিদ্ধান্ত সরকারের সদিচ্ছাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। কেননা পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম সমস্যা হল ভূমি সমস্যা। এ মৌলিক সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে কেবল জরিপ করতে গেলে পার্বত্য সমস্যাটি আরো জটিল আকার ধারণ করবে। ভূমি জরিপ বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা এক আলোচনা সভায় বলেছেন, “ভূমি কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৫ অক্টোবর থেকে ভূমি জরিপ করার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। অথচ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভূমি কমিশনের সদস্য এবং আইন অনুযায়ী জেলার সব ভূমি জেলা পরিষদের আওতাভূক্ত”(প্রথম আলো, ৪ অক্টোবর)। কাজেই ভূমি কমিশন চেয়ারম্যানের জরিপ ঘোষণার এই সিদ্ধান্তের পেছনে কোন বিশেষ মহলের দূরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্য আছে কিনা খতিয়ে দেখা দরকার।

এখানে আরেকটি প্রশ্ন থাকে যে, ভূমি জরিপের ক্ষমতা কমিশন বা চেয়ারম্যানের আদৌ আছে কিনা? ভূমি কমিশন আইনের ৬ নং ধারায় কমিশনের কার্যাবলী সর্ম্পকে স্পষ্ট বলা আছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন ও রীতি অনুযায়ী ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচলিত আইন বর্হিভূতভাবে কোন ভূমি বন্দোবস্ত দেয়া হলে তা বাতিলকরণ এবং বন্দোবস্তজনিত কারনে বেদখলকৃত জমি বৈধ মালিকের কাছে দখল পুনর্বহাল করে দেয়া। কাজেই এটি স্পষ্ট যে, ভূমি কমিশনের দায়িত্ব জরিপ চালানো নয়, এ দায়িত্ব সম্পূর্ণ ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের। কিন্তু কমিশনের চেয়ারম্যান তাঁর কর্মপদ্ধতির বর্হিভূতভাবে জরিপের ঘোষণা দিয়ে পাহাড়ের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন।

পার্বত্য চুক্তির মধ্য দিয়েই ভূমি কমিশন গঠনের পটভূমি তৈরী হয়েছে। তাই চুক্তি মোতাবেক কমিশনকে তার কর্মপদ্ধতি পরিচালনা করতে হবে। পার্বত্য চুক্তির ঘ খন্ডের ২ নং ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, “সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন এবং উপজাতীয় শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উপজাতীয় উদ্বাস্তুদের পুর্নবাসনের পর সরকার এই চুক্তি অনুযায়ী গঠিতব্য আঞ্চলিক পরিষদের সাথে আলোচনাক্রমে যথাশীঘ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জরিপ কাজ শুরু এবং যথাযথ যাচাইয়ের মাধ্যমে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করত: উপজাতীয় জনগণের ভূমির মালিকানা চুড়ান্ত করিয়া তাহাদের ভূমি রেকর্ডভূক্ত ও ভূমির অধিকার নিশ্চিত করিবেন”।

এখানে উল্লেখ্য, ভূমি কমিশন আইনের ২০টি ধারার মধ্যে ১৯টি বিষয়ই পার্বত্য চুক্তির সাথে সাংঘর্ষিক। তাই চুক্তির সাথে ভূমি কমিশন আইনের যেসব দিকগুলো সাংঘর্ষিক রয়েছে সেগুলো আগে সংশোধন করে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে হবে। এরপরে পার্বত্য চট্টগ্রামে জরিপ চালানো যেতে পারে। কেননা ভূমি জরিপের অন্যতম উদ্দেশ্যই হচ্ছে ভূমির নকশা প্রস্ততকরণ ও মালিকানা নির্ধারণ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশন গত আগস্ট মাসে তৃতীয়বারের মত পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও পাহাড়ি-বাঙালি উভয় জনগোষ্ঠীর সাথে মতবিনিময়ের পর চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সরকারের নিকট কয়েকটি সুপারিশ পেশ করে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলধ:
(১) ভূমি কমিশন প্রথমে বিরোধপূর্ন সকল ভূমির মালিকানা সংক্রান্ত দাবী দাওয়ার একটি ডাটাবেইজ প্রস্তুত করবে এবং ভূমির দাবীদারদের হাতে ফরম তুলে দিবে যাতে করে ভূমির দাবীদাররা প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সেখানে লিপিবদ্ধ করে কমিশনকে সরবরাহ করতে পারে। এক্ষেত্রে ভূমি কমিশন আর্থিক ও কারিগরী সহায়তার জন্য ইউএনডিপির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা নেয়া যেতে পারে বলে উল্লেখ করে। (২) যেসব ভূমির উপর দ্বৈত মালিকানা রয়েছে সেসব জটিলতা নিরসনে ভূমি মালিকানার আপেক্ষিক অগ্রাধিকার নির্ধারনের জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলী প্রনয়ন করা এবং (৩) শরণার্থী পুর্নবাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স ও ভূমি কমিশনের মধ্যে কাজের বিভাজন ও পারস্পরিক সমন্বয়ের জন্য জরুরী ভিত্তিতে সরকারি দিক নির্দেশনা প্রনয়ন করা।

আমাদের বিশ্বাস, পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে বর্তমান সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। তাই অবিলম্বে যেন ভূমি কমিশনের এ স্বেচ্চাচারী সিদ্ধান্তকে স্থগিত করে চুক্তি মোতাবেক ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধন ও ভূমি অধিকার নিশ্চিত করে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকার গুরুত্বারোপ করবেন।

iliradewan@ইয়াহু.কম


মন্তব্য

স্নিগ্ধা এর ছবি

আচ্ছা, একটা একদম অজ্ঞানের মতো প্রশ্ন করি - ভূমির মালিকানা নিয়ে যে বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে, এতে বাঙালিরা কিসের ভিত্তিতে মালিকানা দাবী করছে? মানে, একটা জমি/পাহাড় যার মালিকানা ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত, সেই জমির মালিকানা দাবী করার সময় সাধারণত যুক্তিটা কী দেখানো হয়? জবরদখল করলে সেটার তো আর কোন যুক্তি বা ব্যাখ্যার দরকারই নেই, সেটা অন্য কথা।

এছাড়া যে বিষয়টি সবচেয়ে জরুরি তা হল জরিপের সময়কাল নির্ধারণ করা অর্থাৎ স্বাধীনতার পরে বাঙালি সেটেলার পুর্নবাসনের আগের সময়কালের ভূমির মালিকানাকে ভিত্তি (Base) ধরেই জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

'বাঙালি সেটলার পুনর্বাসন' - এই পুনর্বাসনের আইনি ভিত্তি কী?

ফিরোজ জামান চৌধুরী এর ছবি

স্নিগ্ধার মতো এই সরল প্রশ্ন অনেকের। আশা করি ইলিরা দেওয়ান বিস্তারিত উত্তর দেবেন।

ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।

ইলিরা দেওয়ান এর ছবি

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।
ধন্যবাদ, ফিরোজ জামান চৌধুরী।
আমার লেখার যেকোন প্রশ্নের যথাসাধ্য উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। আমি পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে ইচ্ছুক। আর আপনার তো পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে বিশাল জানার ক্ষেত্র আছেই। সুতরাং আমার পাশাপাশি আপনিও অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আশা করছি, ভবিষ্যতে এ ধরণের আলোচনায় আপনাকে সাথে পাবো।

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।

ইলিরা দেওয়ান এর ছবি

ধন্যবাদ, স্নিগ্ধা। বাঙালি সেটলার পুনর্বাসন মূলত: ১৯৭৮ সালে জিয়া শাসনের আমল থেকেই শুরু হয় এবং তা সরকারি পৃষ্টপোষকতায় হয়েছিল। কাজেই যেখানে সরকার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সেখানে আমদের মত সাধারণ পাবলিকের আইনী ভিত্তি খোঁজা অবান্তর, নয় কি?

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।

বর্ষা এর ছবি

লেখাটা পড়ে অনেক কিছু জানলাম, কিন্তু কিছু করার নাই।
'যেসব ভূমির উপর দ্বৈত মালিকানা রয়েছে সেসব জটিলতা নিরসনে ভূমি মালিকানার আপেক্ষিক অগ্রাধিকার নির্ধারনের জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলী প্রনয়ন করা।'--এটা জরুরী ভিত্তিতে করা দরকার বলে মনে করছি লেখাটা পড়ে।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

ইলিরা দেওয়ান এর ছবি

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।
ধন্যবাদ, বর্ষা।

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।

দুর্দান্ত এর ছবি

একমত। নতুন জরীপের নামে আসলে তো আদীবাসীদের নাম নিশানাকেই মুছে ফেলা হবে। আর যে জমি থেকে সরকার এমনিতেই কর আদায় করবে না (তিন পার্বত্য জেলা ভুমি করের আওতায় পড়ে না), সেখানে ঠাস করে জরীপের কি প্রয়োজন?
--
ভুমি মন্ত্রনালয়ের যদি বেশী বেশী জরিপের সখ থাকে তাহলে সেটা কেরানীগঞ্জ বা শনির আখড়া বা বুড়িগংগায় করলেই তো পারে।
--
যে সভার মাধ্যমে ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান এ ঘোষণা দেন, সে সভায় আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান বা প্রতিনিধি, পার্বত্য জেলা পরিষদ (রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান) এর প্রতিনিধি ও সার্কেল চিফদের অনুপস্থিতিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত কতটুকু গ্রহণযোগ্য ও বিধিসম্মত হয়েছে তা নিয়ে পাহাড়ি জনগণের মধ্যে সংশয় ও উৎকন্ঠা রয়েছে।

এই খবর অনুযায়ী এই রকম সভায় চাকমাদের একাংশ উপস্থিত ছিল দেখা যাচ্ছে।

ইলিরা দেওয়ান এর ছবি

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।
ধন্যবাদ, দুর্দান্ত (বানান ভুল হলে দুঃখিত!) মনোযোগ দিয়ে লেখাটি পড়ার জন্য। এই সভায় চাকমাদের উপস্থিতি মুখ্য নয়। কারন যারা আইনগতভাবে এই ভূমি কমিশনের সদস্য একমাত্র তারাই সভায় উপস্থিত থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কেউ কৌতুহলবশত: উপস্থিত থাকলে সেটি বিবেচ্য বিষয় নয়।

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।

দুর্দান্ত এর ছবি

জানার সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন করছি, চাকমাদের মত অন্য পাহাড়ীরাও 'কৌতুহলবশত: উপস্থিত' হল না কেন?

মাহবুবুল হক এর ছবি

ইলিরা দেওয়ানের কাছে কয়েকটি প্রশ্ন-
১। ভূমি কমিশন আইনটি কত সালের ?
২। পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি মানেই কি সেটেলার ? আর পাহাড়ি মানেই কি আদিবাসী ?
৩। অনেক ভূমিহীন বাঙালিকে পাহাড়ে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। রাষ্ট্র বা সরকার তাদেরকে সেখানে পুনর্বাসিত না করলে তারা হয়ত ভূমিহীনই থেকে যেত। এখন তাদেরকে যদি পাহাড় ত্যাগ করতে হয় তারা আবার ভূমিহীন হয়ে পড়বে। সেটাও কি মানবিক ?
৪। বাঙালিরা সেখানে আগেও ছিল। তবে '৮১ থেকে সংখ্যাটি বেড়েছে দ্রুত, উদ্দেশ্য যাই হোক, পাহাড়িদের সাথে সহাবস্থানের পন্থা সেখানে নেয়া হয়নি। আবার কোন নির্দিষ্ট দিন-তারিখ ঠিক করে তো আর প্রক্রিয়াটি শুরু হয় নি। তাহলে যে সময়কেই বেস লাইন ধরা হোক না কেন তাতে বাঙালি বা পাহাড়ি উভয়েরই কিছু ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে ঘটতে থাকা এই প্রক্রিয়ার কোন যায়গা থেকে ভূমি কমিশন বাঙালি-পাহাড়িদের জমির মালিকানার বেসলাইন ঠিক করবে ?

আপনার আলোচনার জন্য ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে লিখি কথা
আমি তো বেকার পেয়েছি লেখার স্বাধীনতা

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

ইলিরা দেওয়ান এর ছবি

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।
প্রিয় মাহবুবুল হক, শুরুতে ধন্যবাদ আপনার প্রশ্নগুলোর জন্য। যতটা সম্ভব উত্তর দেয়ার চেষ্টা করছি।
১. ২০০১ সালের।
২. পার্বত্য চট্টগ্রামের সব বাঙালিই সেটেলার নয়। আদি বাঙালি যারা আছেন তাদের সাথে পাহাড়ি মানে আদিবাসীদর কোন বিরোধ নেই। সরকারি পৃষ্টপোষকতায় যারা সেখানে সেটেলড্ হয়েছে তাদেরকে সেটেলার বলা হয়।
৩. ভূমিহীন সেসব পরিবারকে সমতলে পুনর্বাসনের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ দাতা সংস্থাগুলো প্রথম থেকেই সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। এবং এ বিষয়টি সরকারকেও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশন জানিয়ে দিয়েছে। কাজেই বিষয়টি অমানবিক হতে যাবে কেন? বরং তাদের জন্য ভবিষ্যত অনেক উজ্বল হবে।
৪. ১৯৭৮ সাল থেকেই সেটেলার পুর্নবাসন শুরু হয়েছিল। তাই পাহাড়িরা চায় ১৯৭৮ সালের আগের সময়কে বেস-লাইন ধরা হোক। এতে জমির উপর প্রকৃত মালিকানাই নির্ধারিত হবে। অবৈধ দলিলধারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
ধন্যবাদ।

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।

রেনেসাঁ [অতিথি] এর ছবি

১৯৯৮-৭৯ সাল থেকে সরকার সারা দেশের উদ্বাস্তু বাঙালিদের এখানে এনে ৫ একর (১৫ বিঘা) করে জমি দিয়ে অবৈধভাবে পুনর্বাসন করেছে। সরকার বলেছিল তাদের খাস জমি থেকে লিজ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে খাসজমির পরিমাণ শূন্য ভাগ। তার মানে সরকার সে সময় যে সমস্ত জমি সেটলোর বাঙালিদের দিয়েছে, যা সেনাবাহিনীর মাধ্যমে জোর করে দখল করা জমি।

এ সমস্ত জমি পাহাড়িদের অর্থা ৎমূল মালিকদের মধ্যে ফিরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে সেনাবাহিনী কর্তৃক জোর করে ভূমি দখল আর এবারের ভূমি জরিপের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না।

ইলিরা দেওয়ান এর ছবি

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।
ধন্যবাদ, রেনেসাঁ। সচলের মাধ্যমে আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেক বিষয়ে শেয়ার করার ক্ষেত্র তৈরী করতে পারি।

মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজের করো জয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের দেশের সরকারের এ সব বিষয়ে আরো অনেক বেশি কঠোর হওয়া দরকার।

গরীব
সাউথ কোরিয়া

নীল ভ্রমর [অতিথি] এর ছবি

ধন্যবাদ আপনার লেখাটার জন্য। কিন্তু মাহবুবুল হক ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তর পেলাম না। পাহাড়ে পুনর্বাসিত বাঙ্গালীদের আবার দেওয়ার মত জায়গা কি সমতলে আছে? এটা কি দেশের উপর আরেকটা বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার মত না।

আমার মনে হয় জমিজমা সংক্রান্ত খুন খারাবির ঘটনাকে বিচার না করে বড় একটা ঝামেলা নিজের উপর কেন চাপাবে সরকার? আর জমিজমা নিয়ে বাংলাদেশে অহরহ খুন হচ্ছে। এই লোভনীয় জায়গায় অরাজকতা হবেই। তাই সরকারকে আইন শৃংখলা রক্ষার দিকে বেশি মনযোগ দিতে হবে। যদি ন্যায়বিচার হয় তবে তো পাহাড়ি বাঙ্গালী সবাই মিলেমিশে থাকতে পারে। সরকার যদি বাংগালী বলে খুনিদের প্রশ্রয় দেয় তবে সেটা নিয়ে আন্দোলন করা উচিত।

সবশেষে একটা প্রশ্ন। পাহাড়ীরা কি বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা নিয়ে বিন্দুমাত্র পরোয়া করে?

মং হ্লা প্রু পিন্টু [অতিথি] এর ছবি

মি. নীল ভ্রমর;

আপনি লিখেছেন, সবশেষে একটা প্রশ্ন। পাহাড়ীরা কি বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা নিয়ে বিন্দুমাত্র পরোয়া করে?

এ ব্যাপারে আপনার কাছে আমার বিনীত প্রশ্ন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পাহাড়ি বা আদিবাসীদের কোনো ভূমিকা আছে কি? স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে পাহাড়ি বা আদিবাসীদের জনসংখ্যা কি সেই হারে বৃদ্ধি পেয়েছে? তা ছাড়া বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ আইন দ্বারা শাসিত একটি অঞ্চল। সেখানে দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে হাজার-হাজার মানুষকে ঠেলে দেওয়ার পিছনে সৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল বলে কি আপনি মনে করেন?

বর্ষা এর ছবি

মং হ্লা প্রু পিন্টু ,'বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পাহাড়ি বা আদিবাসীদের কোনো ভূমিকা আছে কি? স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে পাহাড়ি বা আদিবাসীদের জনসংখ্যা কি সেই হারে বৃদ্ধি পেয়েছে?'---কথাটা ভাল লাগলো না। পাহাড়িরাতো বাংলাদেশী নাগরিক...... না কি? তো দেশের বাকি অঞ্চলের দায়ভার তাদের কিছুটা হলেও ঘাড়ে নিতে হবে। আমরা দুবোন দেখে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে আমার বাবামা ভূমিকা রেখেছে দাবী করতে পারি, তাই বলে কিন্তু আমার পাশের ফ্লাটের ৭ ছেলেমেয়েওয়ালা পরিবারকে এই ধরণের কথা বলবো না। আমি বুঝতে পারছি আপনি নীল ভ্রমরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আবেগতাড়িত ভাবে মন্তব্যটি করে ফেলেছেন। কিছু মনে করবেন না, শুধু আমার খারাপ লাগাটা একটু বললাম। হাসি

নীল ভ্রমর আপনাকে বলছি, সমতলে জমিজমা নিয়ে খুন খারাপি নিয়ে গ্যাঞ্জামে একপক্ষ সরকারের প্রশয় পাবে আশা করে না, পাহাড়ে যে ব্যাপারটি হয়। 'আর জমিজমা নিয়ে বাংলাদেশে অহরহ খুন হচ্ছে। এই লোভনীয় জায়গায় অরাজকতা হবেই।'----পাহাড়ি অঞ্চলে ব্যাপারটি কি পর্যায়ে হয় তা একটু হলেও বুঝতে--- ইলিরা দেওয়ানের আগের লেখাগুলো পড়তে পারেন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

জুম্ম [অতিথি] এর ছবি

ইলিরাদি, ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
শুধু একটু শেয়ার করতে চাই - আমার দাদার দাদা যে ভূমি চাষাবাদযোগ্য করে তুলেছিলেন, সেই ভূমির পাশে ছোট টিলায় একটি আর্মি ক্যাম্প, আর চারপাশে সেই জমিতে বহিরাগত সেটেলাররা। আমরা আদিবাসীরা কোনোদিন কাগজে কলমে ভূমির মালিকানা প্রথা বিশ্বাস করি নাই, আমরা রীতি-নীতি, প্রথা-পদ্ধতিতে বিশ্বাস করি । কিন্তু রাষ্ট্র এখানে শোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে সবকিছুই ধ্বংস করে দিচ্ছে। জানি না, হয়ত আগামী ২০০ বছর পরে নতুন প্রজম্ম আমাদের ইতিহাস পড়বে যেভাবে আমরা এখন পড়ি "আমাকে কবর দিয়ো হাটু ভাংগার বাকে"।

@বর্ষা
"পাহাড়িরাতো বাংলাদেশী নাগরিক...... না কি?" কথাটা সত্য, কিন্তু বাস্তবে আমাদের সাথে কি সেভাবেই আচরণ করা হয়েছে??আপনি ১৯৭১ থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমাদের CHT ইতিহাসটা একটু দেখেন।

আমি ভালভাবে বাংলা লিখতে পারি না- তাই অনেক কিছু লিখতে পারি নাই। ইমেইল করতে পারেন এখানে - এবং

বর্ষা এর ছবি

@ জুম্ম

"পাহাড়িরাতো বাংলাদেশী নাগরিক...... না কি?" কথাটা সত্য, কিন্তু বাস্তবে আমাদের সাথে কি সেভাবেই আচরণ করা হয়েছে??আপনি ১৯৭১ থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমাদের CHT ইতিহাসটা একটু দেখেন।
দেখুন আমি একটু জানি যে আপনাদের সাথে কি করা হয়েছে। আমি শুধু বলছি, ধৈর্য হারাবেন না। আপনারা নিজেদের বাংলাদেশি না ভাবলে ব্যাপারটি খারাপের দিকেই যাবে। কষ্ট করে কি এই ব্যাপারে লেখা দিয়ে বাকি দেশবাসীকে ভয়াবহতাগুলো জানাবেন?

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

জুম্ম [অতিথি] এর ছবি

@বর্ষা
আপনারা নিজেদের বাংলাদেশি না ভাবলে ব্যাপারটি খারাপের দিকেই যাবে।
আমি জানি না কোন দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি বলছেন,তবে আপনার মন্তবে শ্রদ্ধা রেখে বলছি - দেশের মাটিতে কোন এক দায়িত্বশীল ব্যাত্তির সাথে পরিচিত হওয়ার পর উনি যদি বলেন,"তোমরাতো বাংলাদেশি না,বহিরাগত উপজাতি", তাইলে কেমন লাগে....এইটা আমার নিউইর্য়ক ও জেনেভার অভিজ্গতা।

দুঃখিত আমি ভালভাবে বাংলা লিখতে পারি না- তাই ইচ্ছে করলেও অনেক কিছুই লিখতে পারি না।কাজের চাপে সময় ও খুব একটা পাইনা। শুধু বলি- ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় পার্বত্য চট্রগ্রামের নির্বাচিত সাংসদ এম এন লারমা - তিনিই সর্বপ্রথম এই বাংলাদেশি শব্দটি প্রয়োগ করেছিলেন জাতীয় সংসদে। সংসদে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবী জানিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন,....আমরা জাতীয়তায় বাংলাদেশি, বাংগালী নই।দুর্ভাগ্য যে,তদানিন্তন সংবিধান প্রণয়ন কমিটি উনার বত্তব্য নাকচ করে দিয়েছিলেন । আর জিয়া এসেই বললেন, তিনিই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবর্তক......

বর্ষা এর ছবি

দেখুন, আপনার আর আমার কথার মূল সুর কিন্তু একই। আমি সাধারণ পাকিস্তানিদের আমাদের ৭১ সম্পর্কে অজ্ঞতায় দোষ দেইনা কারণ আমরা পৃথিবীকে জানাবার জন্য উদ্যোগ নেইনি।
'১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় পার্বত্য চট্রগ্রামের নির্বাচিত সাংসদ এম এন লারমা - তিনিই সর্বপ্রথম এই বাংলাদেশি শব্দটি প্রয়োগ করেছিলেন জাতীয় সংসদে। সংসদে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবী জানিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন,....আমরা জাতীয়তায় বাংলাদেশি, বাংগালী নই।'----ধন্যবাদ ব্যাপারটি জানাবার জন্য। আমি এটা জানতাম না। দেখুন এমন অনেক কিছুই আছে যা আমাদের পক্ষে শহরে থেকে জানা সম্ভব নয়। তাই পাহাড়িদের উদ্যোগ নিয়ে এইসব ব্যাপারগুলো সমতলের মানুষগুলোকে জানাতে হবে।
ইলিরা দেওয়ানের উদ্যোগকে তাই স্বাগত জানাই।
সমতল আর পাহাড়ের মানুষদের মাঝে সংযোগ বৃদ্ধিই পারবে আপনাদের অধিকার রক্ষায় আমাদেরকে যুক্ত করতে।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

নীল ভ্রমর [অতিথি] এর ছবি

আমি দুঃখিত যদি জুম্ম বা মং হ্লা প্রু পিন্টু-কে দুঃখ দিয়ে থাকি। আমি মনে করি পাহাড়ীরা আমাদেরই একটা অংশ। আমাদের পর্যটনের কথা বলতে গেলে বিদেশি কারো কাছে কি আমরা পার্বত্য অঞ্চলের সৌন্দর্য আর বৈচিত্রময় আদিবাসী জীবনের গল্প করিনা? নিজেদের একটা অংশ ভাবি বলেই আলাদা আইন বা আলাদা করার কোন কিছুকে মানতে ভাল লাগে না। কারন বর্ষার সাথে আমি একমত যে ,

"আপনারা নিজেদের বাংলাদেশি না ভাবলে ব্যাপারটি খারাপের দিকেই যাবে।"

আর আমাদের দেশের বহু দায়িত্বশীল ব্যক্তির মন্তব্যে দায়িত্ববোধ খুঁজে পাওয়া যায় না। তাদের জন্য আমাদের বাকিদের পর করা কি উচিত হবে?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।