সবকিছু কিনে নেবে তারা
তোমার আমার দেশ ,দেশের মাটি
পদ্মা-মেঘনা-যমুনার মত সব নদী
কিংবা ধর তোমার বাড়ীর সামনের -
লাউগাছের মাথায় বশ করার জন্য রাখা লাউটাও।
এই যে তুমি আইজুদ্দিন রাস্তা দিয়ে হাটছ
সেটা পলাশীর সামনের নির্জন রাস্তাই হোক
অথবা মতিঝিলের সামনের রাস্তাটাই হোক না কেন
কিংবা ধরেই নও মহাখালী ক্যান্টনমেন্টের সাজানো রাস্তাগুলো
সেগুলোও কিনে নেবে তারা।
তুমি রমনা পার্কের যে বেন্চিতে বসে
তাজবিড়ির পড়ে থাকা মোতা খাও প্রতিদিন
সে বেন্চটাও কিনে নেবে তারা
যেমনটা কিনে নেবে পুরান ঢাকার
মোজাফফর আলীর দোকানের চায়ের কাপের চাটুকুও।
সবকিছু কিনে নেবে তারা
ধরে নাও তোমার বাড়ীর সামন দিয়ে
যে মেয়েটা প্রতিদিন বেনীচুল নিয়ে হেটে যায়
তার মাথায় দেয়া তেলটুকুর বোতলও।
কিনে নেবে তারা তোমার জুতা ক্ষয়ে গেলে
তুমি নীলক্ষেতের যে দোকান থেকে ছোল লাগিয়ে নাও
সে দোকানের সব জুতার খোল।
কিংবা ধর তোমার উঠটি মেয়েটা
যে দোকানে ব্রেসিয়ার কিনতে যায়
সে দোকানের সব ব্রেসিয়ারগুলো।
সবকিছু কিনে নেবে তারা
তোমার দেশের জাতীয় সংসদ,সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
রমনা পার্ক ,সের্কেটারিয়েট,প্রধানমন্তীর দপ্তর
সূধা সদন,হাওয়া ভবন,সেনা কল্যান ট্রাস্ট কিংবা ধর
পাবলিক লাইব্রেরীর যে টয়লেটগুলো তুমি প্রতিদিন
দুইবার করে ব্যবহার কর
তার দেয়ালের লেখাগুলো পর্যন্ত।
কেনে নেবে তারা তোমার গৃহিনীর হাতের কাঁকন
প্রিয় সন্তানের ব্যবহৃত স্লেট,বাড়ীর চা খাবার পেয়ালা
বিটিভির স্কীন,অফিসের বাস,রাস্তার ম্যানহোল
কিংবা তুমি যে মোজাটা
বছর দুয়েক হল বিরামহীন পড়ছ সেটাও।
কিনে নেবে তারা
তোমার দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ,পাটক্ষেতের সব সবুজ পাতা
অবুঝ কিশোরের বুকে আকড়ে থাকা বইয়ের পৃষ্ঠা
ফার্মগেটের ওভারব্রীজ,সদরঘাটের সব লন্চ ও নৌকা
এমনকি তোমার ঘরে সযত্নে রাখাকোরান শরীফের সব সূরাগুলোও।
তুমি শাহেদ জামান যে দোকানে বসে চা খাও
যে বাজারে বাজার কর
যে ব্যাংকে টাকা রাখ
অসুখের সময় যে হাসপাতালে যাও
অথবা বউয়ের হাতের বালার জন্য
বায়তুল মোকাররমের যে দোকানটায় যাও
কিংবা তোমার ছেলেটাইবা যে স্কুলে যায়
তার সবই কিনে নেবে তারা।
তুমি কেরানী আফসার আলী
যে পান্জাবী-পাজামা পড়ে অফিসে যাও
যে খুশবু শার্টে লাগিয়ে কাজ কর
মাসের শেষে পল্টনে যে মেয়েটার কাছে একবার যাও
তোমার কাজে যে কালী ব্যবহার কর
কিংবা তোমার গৃহিনী যে ডিটারজেন্টে ধোয় তোমার গন্ধ
তারও সব কিনে নেবে তারা।
তুমি ছাত্র ইরু
যে কাগজে কবিতা লেখ
কম্পিউটারের যে স্কীনে ছবি দেখ
ঘর্মাক্ত দেহে বালিশের যে কভারের উপর
মরার মত শুয়ে থাক
অথবা বাংলামোটরের জ্যামে ভিক্ষুকের থালায়
যে আধুলিগুলো ছুড়ে দাও
তারও সব কিনে নেবে তারা।
সবকিছু কিনে নেবে তারা
তোমার দেশমায়ের বুকে আজ
একাত্তরের শুয়োরদের বিষাক্ত নখর ।
--------------------------------
কেউ একজন অপেক্ষা করে
মন্তব্য
its very nice .........Thank you very much to give birth this poem.
হুমম কবিতাটা ভালই লাগছে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
তবে একটু বেশী পদ্যিশ পদ্যিশ হয়েছে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমি আবার ভাবলাম পাঁদ সংক্রান্ত কিছু বললেন কিনা...
আপনার ব্যবহৃত শব্দটায় চন্দ্রবিন্দু আছে দেখে একটু অবাক হলাম। শব্দটা আমি চন্দ্রবিন্দু ছাড়াই ব্যবহার করি। খুব সুরেলা করে এস্তেমাল করেন বুঝি?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
তা করি যখন, অনেকগুলো চন্দ্র বিন্দু দিয়েই করি... একটা না শুধু...
তবে, এইটা দ্রোহী ভাইয়ের পেটেন্ট করা কিনা, তাই একটু অন্যভাবে... হেহে
পরে আবার মনে পড়লো, এটা তো দ্রোহী ভাইয়ের পেটেন্ট করা জিনিস...
খুব ভালো লেগেছে......
খুব ভালো লেগেছে।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
নতুন মন্তব্য করুন