( (১)
-"মালটা ওরকম মুখ লটকে পড়ে আছে কেন রে শিবু?" বাবলু-দার চায়ের ঠেকে পা দিয়েই রানার প্রশ্ন।
-"আরে, এসে থেকেই দেখছি সমুর মুখে লোডশেডিং। সফটওয়্যার ইঞ্জিনীয়ারের কি আর এখন আমাদের মত বেকারদের ঠেকে বসা পোষায়?"
সমু হাত নেড়ে বলল "রোববার সকালে অফিসের কথা তুলবিনা শালা। ঘেন্না ধরে গেল এই আই-টির চাকরিতে। ধুর-ধুর।"
তপন বলল "কেন রে? তোদের বিলিতি কোম্পানীও কি লক্আউট হল নাকি? মাইনে-কড়ি বকেয়া রাখছে আজকাল?"
সমু খিঁচিয়ে উঠে বলল "মাইনের কথা কে বলছে, আমরা সফটয়ারের লোকজন যে আট ঘন্টার বদলে আঠারো ঘন্টা খাটছি সেকি মাইনের জন্য নাকি? সেটা ইয়ারলি বোনাসের লোভে।"
-"বাবাদের কারখানায় তো আঠারো ঘন্টা কাজ করলে ওভারটাইম পায়। তা তোদের বিলিতি কোম্পানি দেয় না ওভারটাইম? কি নেমকহারাম মাইরি!"
-"আরে অত সোজা নয়, আই-টি কোম্পানীতে অনেক গ্যাঁড়াকল আছে। সারা বছরের পার্ফরমেন্সের ভিত্তিতে একটা নাম্বার দেয়। সেই নাম্বারের ওপর বোনাসটা ডিপেন্ড করে।"
-"তা তুই সারাবছর খেটে খারাপ নম্বর পেলিটা কি করে? শনি-রোববারে অফিস গেলেও যদি বোনাস না জোটে, তো বোনাস বাগাতে গেলে কি হাগতে হাগতেও কাজ করতে হয়? নাকি তোদের কোম্পানি বোনাস টোনাস কিসু দেয় না। নম্বর টম্বর সব ফন্দি ফিকির।"
-"সে হলেও তো একটা সান্ত্বনা থাকত যে কেউ পায়নি। কিন্তু তা নয়। কোম্পানী আগে থেকেই বলে রেখেছে টেন পার্সেন্ট লোককে ডাব্ল বোনাস দেবে, ফিফটি পার্সেন্টকে রেগুলার বোনাস দেবে, থার্টি পার্সেন্টকে কাঁচকলা আর বাকি টেন পার্সেন্ট লোক ছাঁটাই করবে। আমি পড়েছি ওই তিন নাম্বার ক্যাটেগরিতে। অথচ যা কাজ করেছি তাতে অ্যাটলিস্ট রেগুলার বোনাসটা ডিজার্ভ করি। পেলাম না স্রেফ হারামজাদা জয়ন্ত চক্রবর্তীর জন্য।"
-"সে মালটা আবার কে?"
-"সে শালা আমার বস্। আমাদের এই নাম্বার দেওয়াটা পুরোপুরি বসের হাতে। বস্ ঠিক করে কে কত ভাল কাজ করেছে। হারামিটা বলে কিনা তোমার আরো নিখুঁতভাবে কাজ করা উচিত ছিল, সফ্ট্ওয়্যারে রাত বারোটা অবধি অফিসে থাকাটাই নর্মাল, কাজেই আমার দিনের পর দিন থাকাটা স্পেশাল কিছু না। ওই শুয়োরের নাতিটার আন্ডারে প্রায় শ খানেক লোক আছে, জয়ন্তর পেয়ারের চামচেগুলো সবকটা ডাব্ল বোনাস পেয়েছে। আমার টীমেই তো দেখলাম সুবীরকে, তেলের গামলা নিয়ে বসের পেছনে ঘোরে। বললে বিশ্বাস করবি না, কোন কাজ ঠিকমত পারে না, কিন্তু ওই সারাদিন বসের কাঁচের ঘরে বসে রয়েছে, একসাথে চা খেতে যাবে দিনে চোদ্দবার, এক সাথে বাথরুমে পর্যন্ত যায়, বোধহয় বসের প্যান্টের চেন্টাও খুলে দেয়, ফলে ও গেছে ওই একনাম্বার ক্যাটেগরিতে। আমাদের টীমের আরেকজন সিনীয়ার আছে, অরূপদা, সে বেচারাও খুব খেটে শেষমেষ খারাপ নম্বর পেলো, এদিকে প্রত্যেক শনি-রবিবার অফিস গেছে। উফ্, জয়ন্তটাকে ঠাসিয়ে একটা চড় কষালে তবে গায়ের ঝাল মেটে। পারছি না স্রেফ চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে বলে।"
(২)
রানা ওর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলে উঠল "তুই না পারিস আমরা কেলিয়ে দিচ্চি, তুই জাস্ট লোকটাকে চিনিয়ে দে।"
তপন বলল "অতই সোজা, দিন দুপুরে একটা লোককে কেলিয়ে পার পাবি? পুলিস কেস হয়ে যাবে।"
রানা বলল "এমন প্ল্যান বানাব, পুলিশের বাপের সাধ্যি নেই ধরবে। খচ্চা হবে, তা সে না হয় সমু দেবে।"
সমু উত্তেজিত হয়ে বলল "জয়ন্ত শালার নাকে যদি একটা ঘুষি বসাতে পারিস আমি হাজার খানেক খসাতে রাজি। কত বোনাস লস করেছি জানিস? প্রায় একলাখ।"
রানা অন্যমনস্ক ভাবে বলল "সে হয়ে যাবে।" ধীরে ধীরে ওর মুখটা উজ্জ্বল হয়ে উঠছিল, ফিসফিসিয়ে বলে উঠল, "সমু, ওই জয়ন্তর আন্ডারে যতজন তোর বা তোর ওই অরূপদার মত বোনাস পায়নি, তারাও শীওর খুশি হবে লোকটা উদোম ক্যালানি খেলে?"
-"মনে তো হয়, কেন বল তো?"
-"তোদের কোম্পানিতে কম করে হাজার খানেক লোক চাকরি করে নির্ঘাত? আর থার্টি পার্সেন্ট মানে প্রায় শ তিনেক লোক বোনাস পায়নি? তাদের নাম ঠিকানা জোগার করতে পারিস?"
-"আমাদের প্রজেক্টে জনা কুড়ির ভাগ্যে এ বছরের মত বোনাসের শিকে ছেঁড়েনি; তাদের নাম আর ঠিকানা না হোক ই-মেল আই-ডিটা আমি এখনি দিতে পারি। আর কালকে অফিসে গেলেই ক্যান্টিনে, লাইব্রেরিতে, চায়ের দোকানে, অফিস বাসে, একটু কান পাতলেই বেরিয়ে যাবে আরও কারা কারা আমার মত এবছর বোনাস পায়নি। কোম্পানির ডেটাবেস থেকে শুধু নাম আর ই-মেল আইডিটা বের করতে হবে। এবার তোর মতলবটা খুলে বল দেখি?"
-"ধর তুই, তোকে যদি কেউ বলে পাঁচশোর দুটো পাত্তি ফেললে এই উদমা ক্যালানিটা একটা সংস্থা খুব নিপুণ এবং পোফেসানালি করে দেবে, তুই তাকে কাজের বরাতটা দিবি কি দিবি না?"
সুমন্তর মাথায় আইডিয়াটা আস্তে আস্তে বোধগম্য হতে লাগল। ওর এই কন্সেপ্টটা হঠাৎ বেশ মনে ধরল, সামান্য ভেবে বলল "আজকে আমার যা মনের অবস্থা, তা হয়ত রাজী হয়ে যাব।"
রানা শিবু আর তপনের দিকে তাকিয়ে বেশ সিরিয়াস গলায় বলল "শিবু, তোর আর আমার তো মনে হয়না আর কোন ভদ্র চাকরি হবে বলে, শিক্ষিত বেকার হয়ে আর বাপের হোটেলে খেয়েই জীবনটা কাটিয়ে দিতে হবে যা মনে হচ্ছে, আর তোপে তুইও তো ড্রাইভারি শিখে ট্যাক্সি কেনার মাল্লু জোটাতে পারলি না, কাজেই আমাদের সামনে এই এক সুবর্ণ সুযোগ। চ আমরা একটা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করি, যার নাম হবে "প্রতিশোধ প্রাইভেট লিমিটেড"।
এক্ষুনি সমুর হেল্প নিয়ে আমাদের কাস্টমারদের ই-মেল পাঠাব যাতে বলা থাকবে যে তাদের সাথে এই হারামিগিরি করেছে, তাকে উপযুক্ত শাস্তি দেব আমরা, সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে।"
তপন বলে উঠল "সেবার খেলার মাঠে তোর শিক্ষা হয়নি? আরেকটু হলেই পলিশের জীপে তুলছিল আরকি, এও কোনো এম্পির ভাই হলে এবারে আর রক্ষে থাকবে না।"
শিবু তপনকে এক ধমকে চুপ করিয়ে বেশ খুশীয়াল গলায় বলল "নামটা কিন্তু বস্ পুরো ফিল্মি হয়েছে। বলছি শোন, এই নাম পাব্লিক খাবে।" সমু অধৈর্য গলায় বলল "কিছু করতে হলে আজই, এখুনি করতে হবে। রাগটা বাসি হয়ে গেলে মিইয়ে যাবে, সপ্তাখানেক পর এই অপমানটা গা-সওয়া হয়ে যাবে রে।" রানা চায়ের ভাঁড়টা ছুঁড়ে ফেলে উঠে দাঁড়াল "চ সমু, তোর বাড়ি যাই, তোর ল্যাপটপ থেকে একেবারে ই-মেলগুলো লিখে পাঠিয়ে দেব।"
- "না, সেটা একটু রিস্কি হয়ে যাবে, আই-পি আড্রেস ট্রেস করলে আমি মুস্কিলে পড়ে যাব, আমার বাড়িতে বসে লেখালিখি করতে পারিস, কিন্তু ই-মেলগুলো পাঠাতে হবে কোন সাইবার ক্যাফে থেকে।"
(৩)
চারজনে হুড়মুড় করে পৌঁছোল সুমন্তর বাড়ি। ল্যাপটপ অন্ করে ই-মেলের মুসাবিদা করতে শুরু করে দিল রানা।ডকুমেন্টের হেডিং দিল - "প্রতিশোধ প্রাইভেট লিমিটেড"।
তার নিচে সংক্ষেপে বলে দিল ওদের প্রতিষ্ঠান ঠিক কি আদর্শে উদবুদ্ধ হয়ে কি কি কাজ করতে সক্ষম। দশ মিনিট পরে যে ইমেলটা দাঁড়াল, সেটা এইরকম-
প্রতিশোধ প্রাইভেট লিমিটেড
নমস্কার,
আমরা জানি আপনার বস ইচ্ছাকৃতভাবে আপনাকে আপনার প্রাপ্য "বোনাস" থেকে বঞ্চিত করেছে। সারা বছর আপনি দিনরাত খেটে এককটা প্রজেক্ট সময়মত ডেলিভার করেছেন। তার জন্যে বউকে নিয়ে মন্দারমণির প্ল্যানটা ক্যান্সেল করতে হয়েছে, শালীর জন্মদিনের পার্টি মিস করেছেন, জামাইষষ্ঠীর ডিনারে অনেক দেরী করে পৌঁছেচেন, আর এত সব হাতছাড়া হল কিসের জন্যে? অথচ যে পাষন্ড আপনাকে এত বড় অপমান এবং ক্ষতি করল, তাকে কি আপনি গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেবেন, এবং চুপচাপ এই অন্যায়কে মেনে নেবেন? আবার এটাও বলাই বাহুল্য যে আপনার মত শিক্ষিত, ভদ্র, আইন মেনে চলা দায়িত্ববান নাগরিকের পক্ষে নিজের স্কাউন্ড্রেল বসকে চড় মেরে গায়ের জ্বালা মেটানোও সম্ভব নয়। তাই আপনার মত শিক্ষিত, বঞ্চিত, প্রতিশোধকামী মানুষের চাহিদা মেটাতে "প্রতিশোধ প্রাইভেট লিমিটেড" হাজির হয়েছে তাদের অনবদ্য পসরা নিয়ে। আপনার তরফে আমরা পার্সোনালাইজ্ড্ শাস্তির বন্দোবস্ত করব আপনার বসের। এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য আমাদের নিম্নবর্ণিত পাঁচটি অভিনব শাস্তি পদ্ধতি (দাম সমেত)-
১)নাকের ওপর ঘুঁষি, একবার, খুব জোরে - ১০০০/- মাত্র
২)নিতম্বে কষে লাথি - ১২০০/- মাত্র
৩)নাকের ওপর ঘুঁষি এবং নিতম্বে কষে লাথি - ১৫০০/- মাত্র
৪)গাড়ির সীটে একটি নির্বিষ, জ্যান্ত সাপ রেখে দেওয়া - ২০০০/- মাত্র
৫)কিড্ন্যাপ করে, জামা-প্যান্ট খুলে শুধু জাঙ্গিয়া পরা অবস্থায় শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে পীক অফিস টাইমে ছেড়ে দেওয়া - ৫০০০/-
নিখুঁত পেশাদারিত্ত্বের সাথে উপরোক্ত পদ্ধতিগুলি প্রয়োগ করা হবে।
প্রতিশোধ নিতে চাইলে আমাদের সাথে ই-মেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে আপনার পছন্দের পদ্ধতিটি জানান। আপনাকে আগে থেকে শাস্তি প্রয়োগের স্থান-কাল জানিয়ে রাখব, যাতে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে স্বচক্ষে দেখে এক স্বর্গীয় তৃপ্তি অনুভব করতে পারেন। কাজ দেখে তবে পেমেন্ট। নিম্নলিখিত পে-প্যাল আকাউন্টের মাধ্যমে পেমেন্ট করার সুবিধা রয়েছে।
একটু দূরের একটা অচেনা সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে সমুর টিমের বিশ জনকে ই-মেল পাঠিয়ে দিয়ে সেই রাত্রির মত যে যার বাড়ি গেল। কথা রইল পরের দিন সন্ধ্যায় আবার সবাই পাড়ার ঠেকে জমা না হয়ে সমুর বাড়িতেই জমা হবে।
(৪)
পরদিন আটটা নাগাদ সমু বাড়ি ফিরে দেখে বাকিরা বসে আছে। জামাকাপড় না ছেড়েই সমু কমপিউটার খুলে ই-মেল চেক করতে বসল। প্রতিশোধ প্রাইভেট লিমিটেডের নামে দুটো ই-মেল আছে। একটা অরুপ বাসু অন্যটা সুতপা সরকার। অরূপদা লিখেছে "আপনাদের এই অভিনব প্রতিষ্টানের কথা জানতে পেরে খুব আশ্চর্য এবং আনন্দিত হয়েছি। জয়ন্ত চক্রবর্তীর মত রাস্কেলের জন্য পাঁচ নাম্বার শাস্তিটাই উপযুক্ত। তবে আপাতত আপনারা এক নাম্বারটা দিয়ে শুরু করুন। সাকসেসফুল হলে আমার বাকি অপ্সান গুলোও ট্রাই করার ইচ্ছা রইল। শাস্তি প্রয়োগের স্থান কাল অবশ্যই জানাবেন।"
সমু বলল "বাপরে অরূপদার মত লোক পাঁচ নাম্বার শাস্তি দিয়ে শুরু করতে চাইছে!!! ভাবা যায় না!!" তপন বলল "কি শুরু করেছিস তোরা ? একটা লোককে কিডন্যাপ করবি? কিডন্যাপিং কেসে কত বছর জেলের খানি ঘোরাতে হয় জানিস?"
"এই তোপে! মারব এক কানের গোড়ায়" রানা দাবড়ে ওঠে। "কিডন্যাপ কে করছে ? দেখছিস না এক নম্বর চাইছে। এই সমু পরেরটা পড়।“
সুতপা বাসু লিখেছে "আপনাদের ই-মেল পেয়ে মনে হল গত তিনদিন ধরে এটাই ঠিক চাইছিলাম।আমি সব থেকে খুশি হব যদি জয়ন্ত কে চার নাম্বার শাস্তি দিতে পারেন। আরো খুশি হব সাপের বিষটা বার করতে ভুলে গেলে। তবে আপাতত জয়ন্তর ভাঙ্গা নাকটা দেখার লোভ সামলাতে পারছি না, তাই এক নাম্বার শাস্তি অর্ডার করলাম।"
শিবু বলল "আইব্বাপ কি খতরনাক মেয়েছেলে মাইরি! যাকগে একদিনেই দু দুটো ই-মেল, চল রানা লেগে পড়ি।"
রানা বলল "আরে দাঁড়া আরো দু একদিন দেখি। আর কেউ অর্ডার করলে এক ঘুষিতেই তিন/চার টে পেমেন্ট। আর একবার নাক ভেঙ্গে গেলে কেউ এক নম্বর আর অর্ডার করবে না।
পরদিন সমু বাড়ি ফিরে দেখল আর একটা ই-মেল। খবরটা নিয়ে ও ঠেকে গেল। ওদের বলল "আরেকটা অর্ডার আছে, শুভাশিষ সরকার।" তপন বলল "এদের মধ্যে একজনও যদি বস্ কে বলে দেয়?"
সমু বিরক্ত হয়ে বলল "দিলে দেবে। না হয় আমার চাকরি যাবে, তোর কি? কেবল সেই থেকে কু ডাকছে। যাক গে রানা তুই এবার শুরু করে দে। আমি তো বলেইছি আমিও তোর একজন ক্লায়েন্ট। তাহলে আমাকে নিয়ে চারজন হল। আর কি চাই?"
(৫)
রানা বলল "দাঁড়া প্ল্যানটা পাকা করি। আজ গিয়েছিলাম তোদের রাজারহাটের অফিসে। জয়ন্ত চক্কতির ড্রাইভার কে ধরে মালটা কখন আসে, কোন রুটে ফেরে সব জেনে নিইচি আর অফিসের চাদ্দিকটা দেখে নিইচি। কি জায়গায় কাজ করিস মাইরি! চাদ্দিকে গরু চড়ছে, একটাই তো চায়ের ঝুপড়ি দেখলাম। আচ্ছা সমু, তুই বলেছিলি না মালটা বিকেলের আগেই চা খেতে যায়?"
-"হ্যাঁ চারটে বাজল কি না বাজল ব্যাস। লোকজন তখন জমেও না ভাল করে।"
রানা বলল "ওইখানেই কাজ হাসিল করতে হবে। তারপর গাড়ি নিয়ে এয়ারপোর্টের রাস্তা ধরে পগারপার।"
তপন দাঁত খিঁচিয়ে বলল "অতই সোজা না পগারপার? অফিসের সামনে ঘুঁষি মেরে পার পাবি? এসব অফিসে কত সিকিউরিটি গার্ড থাকে জানিস?"
রানা বলল "জানি, আজ গুনে দেখেচি, সামনের গেটে তিনজন পেছনের গেটে একজন। চায়ের দোকানটা পেছনের দিকে, গেট থেকে কমসে কম বিশ হাত দূরে। আর আমরা কাজটা একটু আড়ালে সারব, লোকেশান দেখে এসেছি।"
শিবু মাথা চুলকে বলল "কিন্তু জয়ন্ত আমাদের পছন্দের লোকেশানে আসবে কেন?"
রানা বলল "আরে আনতে হবে। তুই এক কাজ কর দেখি, চুল দাড়ি কাট আর সমুর থেকে শার্ট, টাই নিয়ে ভদ্দরলোক সাজ। আর সমু বৃহস্পতিবার জয়ন্ত চা খেতে নামলেই তুই আমাকে মোবাইলে কল করে দিস।"
-"সে না হয় দেব তবে আমি কিন্তু বস্ স্পটে থাকব না। সীট ছেড়ে নড়বই না তখন। অ্যালিবাইটা পাকা রাখতেই হবে আমায়।"
রানা ওর পিঠ চাপড়ে বলল "তোকে কিস্যু করতে হবে না। এখন চ ববিদার গ্যারেজে একটা গাড়ি ম্যানেজ করতে হবে। সমু শ-পাঁচেক ঝাড় তো, ববিদা ধারে কারবার করে না। তোপে সকাল থেকে গাড়িটা নেব, তুই ওই চত্তরে দুচার চক্কর লাগিয়ে নিস।"
তপন প্রায় তোতলা হয়ে গেল। "আ-আমি চালাব মানে? আমি এসবের মধ্যে নেই আগেই বলেছি তোদের।" রানা দাঁত খিঁচিয়ে বলল "চালাবি না মানে? শালা তোর মায়ের চোখ অপারেশানের টাকা কার বাপের পকেট থেকে আসবে শুনি?"
তপন ঘাড় গোঁজ করে বলল "মারপিঠের মধ্যে আমায় জড়াস না, শুধু গাড়িটা চালিয়ে দেব।"
শিবু বলল "গুরু আমার ফাংসানটা কি? ফর্সা জামাকাপড় পড়লে কি জয়ন্ত চক্কতি ঘুঁষি খাবার জন্য নাক বাড়িয়ে দেবে?"
"না, তোকে অ্যাকটিং করতে হবে। চ যেতে যেতে বলচি। অনেক কাজ আছে কাস্টমারদের সব ই-মেল করে অ্যাকশনের জায়গাটা আর টাইম জানাতে হবে। গাড়ির নকল নম্বর প্লেট বানাতে হবে...।"
(৬)
বৃহস্পতিবার বেলা চারটে নাগাদ জয়ন্ত চক্রবর্তী চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিতেই সুবীর রোজকার মত সিগারেট টা বাড়িয়ে ধরতে যাচ্ছিল। হঠাৎ পাশ থেকে একটা মাইক জয়ন্তর মুখের কাছে এগিয়ে এল। জয়ন্ত ফিরে দেখল শার্ট-টাই পরা একটি ছেলে। মাইকে লেখা 'সারাদিন নিউজ'।
মাথা ফেরাতেই ছেলেটি বলল "স্যার আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনি বিসিএসের সিনিয়র ম্যানেজমেন্টে আছেন। আমরা একটা স্টোরি করছি সফট্ওয়ার কোম্পানীতে প্রোডাক্টিভিটির সম্মান, এবং ভলান্টারি অ্যাট্রিশান ভার্সেস ইনভলান্টারি লে-অফ নিয়ে। আপনাদের মত সিনিয়র ম্যানেজারের মতামতটা খুব ভ্যালুয়েবল্, কিছু বাইটস দেবেন স্যার?" জয়ন্ত গলাটা ঝেড়ে নিয়ে শুরু করার উপক্রম করতে ছেলেটি বলল "স্যার রাস্তার ওপারে গাছের তলায় ক্যামেরা সেট করা আছে। একটু কষ্ট করে আসতে হবে স্যার।"
জয়ন্ত ও সুবীর একসাথে পা বাড়াতে শিবু সুবীরের আপাদমস্তক একবার দেখে নিয়ে তাচ্ছিল্যমিশ্রিত গলায় বলল, "আপনাকে দেখে তো ম্যানেজার বলে মনে হচ্ছে না, আমরা জুনিয়রদের ইন্টারভিউটা এখন করছিনা, আপনি বরং এখানেই ওয়েট করুন।" সুবীরের কালো হয়ে যাওয়া মুখটা অগ্রাহ্য করে শিবু জয়ন্ত কে নিয়ে রাস্তার ওপারে গেল। গাছের কাছাকাছি পৌঁছতেই নেড়াতলা স্পোর্টিং ক্লাবের বক্সিং চ্যাম্পিয়ান রানার হেভিওয়েট ঘুঁষিতে জয়ন্ত চক্রবর্তী ছিটকে পড়ল।
তপন গাড়িতে স্টার্ট দিয়ে স্টিয়ারিং-এ বসে দূর্গা দূর্গা জপছিল। রানা লাফিয়ে গাড়িতে উঠে বলল "শিবে চলে আয়।" শিবু গাড়িতে বসে দরজা বন্ধ করার আগেই তপন অ্যাক্সেলারেটরে চাপ দিল। শিবু পেছন ফিরে দেখল সুবীর তখন "ডাকাত, ডাকাত, মেরে ফেলল, ধর ধর" ইত্যাদি চেঁচাতে চেঁচাতে গাড়ির পেছনে ছুটে আসছে।
(৭)
তিন চার মিনিটের মধ্যে রানাদের গাড়িটা রাজারহাটের অফিস চত্তর থেকে বেরিয়ে এল। এখন দুপাশে ফাঁকা জমি বা নির্মীয়মান বাড়ি ছাড়া কিছু নেই। রানা আরাম করে একটা সিগারেট ধরাল। তপনের পিঠে একটা হাল্কা চাপড় মেরে বলল "শালা এখনো তোর ভয় গেল না নাকি?" তপন দাঁতে দাঁত চেপে বলল "পেছনে দেখ একবার, ফলো করছে।" রানা দেখল ওদের বিশ/পঁচিশ মিটার পিছনে একটা নীল স্যান্ট্রো আসছে। রানা বিরক্ত হয়ে বলল "রাস্তা কি তোর বাপের? আর কেউ কি এরাস্তা ধরে চলবে না?" তপন কোনো কথা না বলে গাড়ির গতি বাড়িয়ে দিল।
স্পিডোমিটার একশ ছুঁইছুঁই। কিন্তু পাঁচ মিনিট পরেও পেছনের গাড়ির সাথে দূরত্ব কমল না। শিবু ফ্যাশফ্যাশে গলায় বলল "লোকটার বোধহয় এয়ারপোর্টে যাবার তাড়া আছে।" তপন চোয়াল শক্ত করে বলল "এটা নিশ্চয়ই জয়ন্ত চক্রবর্তীর গাড়ি।" রানা বলল “জয়ন্ত কি শালা আস্তিনের তলায় বডিগার্ড লুকিয়ে রাখে নাকি? ধারে কাছে ত আর একটা লোক ছিল না।" তপন আচমকা স্পিডের মাথায় স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে দিল। ওরা টাল সামলে উঠে দেখল গাড়ি পাকা রাস্তা ছেড়ে একটা নির্মীয়মান সাইটের মেঠো পথে নেমেছে। রানা চেঁচিয়ে বলল "এই তোপে কি করছিস? বড় রাস্তা ছাড়লি কেন?"
শিবু শুকনো গলায় বলল "নীল গাড়ি পিছনে আসছে।"
তপন স্পিড বাড়াতে গিয়ে দেখল সামনে রাস্তা বন্ধ। ঘ্যাস্ করে ব্রেক কষে তপন স্টিয়ারিং-এর উপর অস্ট্রিচ পাখির মত মুখ গুঁজে দিল।
রানা দেখল ওদের গাড়ির তিন চার হাত পিছনে নীল স্যান্ট্রো এসে থেমেছে। গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে আসছে বছর তিরিশের এক ভদ্রলোক। রানাও গাড়ি থেকে নামল।
ভদ্রলোক ছুটে এসে রানার দুহাত ধরে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বললেন "দারুণ দাদা!! মার্ভেলাস!!! মেনি মেনি থ্যাঙ্কস।"
হতভম্ব রানা বলল "আপনি ...মানে...।"
ভদ্রলোক বললেন "ওই যাহ পরিচয় দিইনি? আসলে রাস্কেলটার ভাঙ্গা নাক দেখে এত এক্সাইটেড হয়ে গেছি...।
আমি অরূপ বাসু। আপনাদের ই-মেল পেয়ে চায়ের দোকানের আড়ালে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এক ঘুঁষিতে জয়ন্ত কে ফ্ল্যাট হয়ে পড়তে দেখে মনে হল দুহাত তুলে নাচি। ইচ্ছা হল আপনাদের ধাওয়া করে হাতে হাতে পেমেন্টটা
করে দি। হতভম্ব রানার হাতে দুটো পাঁচশ টাকার নোট গুঁজে দিয়ে অরূপ বাসু গাড়ি ঘুরিয়ে অফিস মুখো রওনা দিলেন।
ততক্ষনে শিবু আর তপন গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে। রানা টাকাটা পকেটে ঢোকাতে যাচ্ছিল। তপন ওর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে মাথায় ঠেকিয়ে বলল "বৌনিটা মাথায় ঠেকিয়ে রাখ শালা।" তারপর গলাটা পরিস্কার
করে বলল "কদিন চল গা ঢাকা দিই আমার মাসির বাড়ি বহরমপুরে। এদিকে ব্যাপারটা থিতিয়ে যাক। ফিরে এসে না হয় আবার...।"
--------------------------------------------------------------------------------------------------
ঋণস্বীকার -
শরদিন্দু মহাশয় 'ঝিন্দের বন্দী' বইটা লিখেছিলেন অ্যানথনি হোপের 'Prisoner of zenda' অবলম্বনে। এবং বইয়ের শুরুতে লিখেছিলেন, "নাম দিয়াই বংশ-পরিচয় স্বীকৃত হইল"।
আমাদের এই গল্পটির ক্ষেত্রেও তাই। রোয়াল্ড ডালের একটি গল্প অদলবদল করে লেখা। আমরাও বলছি "নাম দিয়াই বংশ-পরিচয় স্বীকৃত হইল"।
--------------------------------------------------------------------------------------------------
মন্তব্য
এর পরের গল্প আবার ফেব্রুয়ারীর শেষে। আমরা তিনবছর বাদে কোলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছি আগামী বৃহস্পতিবার।
একটা ক্রাইম-থ্রীলার লিখছি তো লিখছিই। শেষ হচ্ছে না। যাওয়ার আগে আর হবে বলে মনে হয়না। এসে শেষ করব।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
জম্পেশ হয়েছে গো দাদা-দিদি! মারাত্মক গল্প! চালিয়ে যান। নমস্কার।
___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা
অনেক ধন্যবাদ অবনীল!
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
দেশ থেকে ফিরে এসে বর বউ মিলে একটা প্রতিশোধ প্রাইভেট লিমিটেড খুলে বসুন দিকিনি। মাইরি বলচি, আপনার প্রথম কাস্টমার আমি হপ। আমার এক্স বসের জন্য পাঁচ নম্বর।
লেখায়
ভালো চলবে, কি বলেন? আপনার মত ১০ জন কাস্টমার পেলে আমরা চাকরি ছেড়ে দিয়ে এই কারবার করতে পারি।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
সবজায়গাতেই বসের দেয়া মার্কসের ভিত্তিতে বোনাস হয় , এবং অবধারিতভাবেই বসগুলা পাজির হাড্ডি হয়
এই সার্ভিস চালু হলে বিশাল মার্কেট পাবে
আমরাও আবার অনেকের বস্।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
হেহেহে চা খেতে গেলে সাবধানে থাকবেন
আপনাদের আগের সব লেখা পরেছি ,দারুন হচ্ছে ,চালিয়ে যান !আমি ওই চত্তরেই আছি মানে রাজারহাট -সেক্টর ৫ এ ,এতটা বাস্তব পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন যে মনে হচ্ছে এটা গল্প না ,বাস্তব ঘটনা না তো ?হলে আমি ও ওই কোম্পানি কে ভাড়া করতে চাই ,রেটিঙ জন্য নয় ,অন্য কারণে !
অথবা নিজেই কম্পানিটা খুলে ফেলতে পারি , একটা সংশোধন ,রাজারহাটে আর এত ফাকা নেই ,নতুন ডি এল এফ বা ইউনিটেক আর ফাকা নেই ,একটু ফাকা অম্বুজা ইকো স্পেশ তাও অতটা নয় ,তবে ক্যালানি দিয়ে পালালে কেউ ধরবে না ,সব শালা ই আমাদের মত 'ভদ্র লোক' ।
লেখা জম্পেশ হয়েছে !!
আপনাদের প্রত্যাবর্তন আনন্দময় হোক ।
অন্য কারণটা কি? জানতে কৌতুহল হচ্ছে খুব। প্রোমোশান রেকমেন্ডেশান করেনি পাজিটা?
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
আসলে রাজারহাট আমরা সেই তিন-চার বছর আগে দেখেছি। তখন ফাঁকা ছিল। অনেকবছর বাদে আবার বেড়াতে যাচ্ছি। তার মানে প্রতিশোধের এগজিকিউশানের জন্য অন্য কোন জায়গা বের করতে হবে।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
আজকে বেশ খুশীর দিন। আমাদের অতিথি হিসেবে আগের লেখাগুলো আজকে আমাদের ব্লগে এসে গেছে। যিনি এই কাজের দায়িত্ত্বে ছিলেন তিনি কিছুদিন দূরে ছিলেন, মনে হয় এর মধ্যে এসেই করে দিলেন।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
অভিনন্দন আপনাদের লেখা গুলো একজায়গায় করার জন্য !
না রেটিং বা প্রমোসন নয়,মানুষ এর নোংরা মনোবৃত্তি আর ক্ষতি করার কাজগুলো আমাকে এই চিন্তা করতে বাধ্য করছে ,আর অতিব দুক্ষের হলো আমরা বাঙালিরা এই কাজগুলোই বেশি করছি আসল কাজ ফেলে কত মানুষ এই কারণে শেষ হয়ে যাচ্ছে আপনি ভাবতে পারবেন না ,চাকরি কমে আসছে ফলে আপোস বাড়ছে ,বাড়ছে রক্তচাপ ,মানুষ (পড়ুন আই টি র আর এই ধরনের পেশার প:ব: র মানুষ গুলো ) ভালো নেই !
ওরে বাবা, আপনি তো অনেক সিরিয়াস হয়ে গেলেন। আমাদের এই লেখাটা কিন্তু খুবই তরলভাবে লেখা।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
গল্পটা আরেকটু জমলে ভাল হত। শাস্তির পদ্ধতিগুলো কিন্তু বেশ, ছাগুদের জন্য এরকম কিছু ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা থাকলে বেশ হত।
হ্যাঁ, তাড়াতাড়ি শেষ করলাম। এক বন্ধু বলেছিল জয়ন্ত চক্রবর্তী এই প্রাইভেট লিমিটেড-কে টাকা দিক ওর বস্কে মারার জন্য। ইত্যাদি।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
কম্পানির আইডিয়াটা দারুণ! এরকম কিছু থাকলে সত্যি খুব চলতো। গল্প ছোট হলেও খুব ভাল লেগেছে।
দেশে বেড়ান ভিষণ উপভোগ করবেন প্রত্যাশা রইল। আশা করছি ফিরে এসে লম্বা অপেক্ষা পুষিয়ে দেবেন।
আরে আমরাও অনেক খুশি নিয়ে যাচ্ছি। নিশ্চয়ই খুব ভালো লাগবে।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
আমার এইচ আর ম্যানেজার এর জন্য ৫ নম্বর
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
হ্যাঁ, কোম্পানির পে-প্যালের অ্যাকাউন্ট নাম্বার পাঠিয়ে দিচ্ছি।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
ভাল্লেগেছে। যাকে বলে বেশ 'হৃদয়ের কাছে' হয়েছে গল্পটা।
তবে পরীক্ষিৎ ঠিক বলেছেন, নিউ টাউন আর অত ফাঁকাও নেই, আর রাজারহাট আর নিউ টাউন একটু আলগা আলঘা হয়ে গেছে। রাজারহাট মানে সিসি-২ এর ওপাশটাকেই সাধারণত রেফার করা হয়।
গল্পটা ভাল্লেগেছে, তাই আরেকটা ভাললাগা লেখা শেয়ার করে যাই
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
অনেক ধন্যবাদ গল্প ভালো লাগার জন্য আর ওই অনবদ্য প্রবন্ধটি শেয়ার করার জন্য দময়ন্তী।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
ফাটাফাটি গল্প আর আইডিয়া।আমার বসকে কোনটা দেয়া যায় ভাবছি
বেশী না ভেবে পাঁচ নম্বর দিয়ে দিন। অ্যাট-লিস্ট চার নম্বর।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
গল্পগুলো সাধারণত শুক্রবার এ পড়ার জন্য রেখে দিই - নাম দেখে আজকেই পড়ে ফেললাম
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
ভালভাবে ঘুরে আসুন, এসে নতুন লেখা উপহার দিন।
এই গল্পটাও চমৎকার লেগেছে।
অনেক
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
দারুন আইডিয়া। পাঁচ নাম্বারটা তো জোস। চার টাও পছন্দ হইছে।
শুভেচ্ছা রইল, ভালভাবে ঘুরে আসুন নতুন নতুন গল্পের প্লট মাথায় নিয়ে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
হ্যাঁ, ঘুরে এসে অসমাপ্ত লেখাটা শেষ করতে হবে।
প্রসংশার জন্য অজস্র ধন্যবাদ।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
The duo strikes again!!
দারুণ! দারুণ!!
ফারাসাত
অনেক
গল্পটা সবারই মনে ধরবে বোধ হয়
আপনাদের আগের গল্পে যদ্দুর মনে পড়ে বলেছিলাম যে ক্যারেকটার ডেভেলপ করতে গিয়ে অনেক লম্বা হয়ে গেছে। এটা বেশ ছোটর উপর ধাঁ করে সেরে দিয়েছেন, ভালো।
হ্যাঁ, এটা বেশ ছোটর উপর নেমে গেছে।
একটা মজার ব্যাপার কি জানেন? আমি কিন্তু আমার বসকে বেশ ভালো চোখে দেখি।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
হে হে হে আপনার বস বুঝি সচলায়তন পড়ে?
আপনাদের দুজনের মধ্যে এখানে 'আমি' কেডা?
আমি কে সেটা উহ্য থাকুক। তবে হ্যাঁ একজন বস কে ভালো চোখে দেখে, অন্যজন কিন্তু ভাবছে লেখাটা বসকে বেনামে শেয়ার করা যায় কিনা ।
সামনে বর্ষশেষের অ্যাপ্রাইসাল আসছে।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
নতুন মন্তব্য করুন