স্নাতক জীবনের শেষ পরীক্ষা চলছে। এতদিন এইসব আবজাবের থেকে আপনারা এই কারনেই বেঁচে ছিলেন।
আমার স্বভাবসুলভ আজাইরা প্যাঁচালের আগে একটা গল্প মনে পড়ল, সেটা বলে নেই... পুরানো গল্প, কিন্তু আমি শুনিনাই আগে। আমার মত দু'একজনকে পাওয়া যেতেই পারে ভেবে বলছি! গল্পটা বাবা দিবসে বলতে পারলে খুব ভাল হত, কিন্তু কি করা, আমি যে মাত্র গত পরশু রাতে আমার বেস্ট বান্ধবীর নানীর থেকে শুনলাম... :|...
বাবা তার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছেলেকে নিজের বাড়িতে ডেকে এনে তার সামনে বসতে বললেন। ছেলে বসে বলল, 'বাবা কিছু বলবে?' বাবা বললেন, 'তোমাকে একটা জিনিস জিজ্ঞেস করার ছিল।' তারপর বারান্দার রেলিং এ বসা একটি কাক দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, 'বাবা, এটা কি?'। ছেলে অবাক হয়ে বলল, 'কাক!'।
বাবা হাসলেন, তারপরে আবারও খুব রিরিয়াস ভঙ্গীতে কাকটাকে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, 'বাবা, এটা কি?'। খানিকটা বিরক্ত হয়ে তার অতিব্যস্ত ছেলে জবাব দিল, 'কাক, আবার কি?!'। বাবা তখনও কিছু না বলে একটু হাসলেন। এদিকে তার ছেলের বিরক্তি বাড়ছে। উসখুশ করে উঠে সে বলল, 'বাবা, আমাকে কেন ডেকেছেন?'। বাবা বললেন, 'একটা জিনিস জিজ্ঞেস করতে।' ছেলে তার দিকে তাকাতে আবারও তিনি সেই কাকটার দিকে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, 'বাবা, এটা কি?'। ছেলে এবারে রেগেই গেল। উঠে দাঁড়িয়ে সে বলল, 'বাবা, আমার অনেক কাজ আছে, কাক নিয়ে গবেষণা করার সময় আমার নাই, আপনি কি আরও কিছু বলবেন? নাহলে আমি আজ আসি।'
বাবাও দাড়ালেন, বললেন, 'বাবা এবার তোমাকে একটা জিনিস দেখাই, আর একটু বস।' ছেলে তবুও দাঁড়িয়েই থাকল। বাবা পাশের রুম থেকে এবার একটা বহু পুরানো ডায়রী নিয়ে আসলেন। ছেলের কাছে এসে তাকে পাশে বসিয়ে একটা বিশেষ চিহ্ন দেয়া পাতা খুলে তাকে দেখালেন। ছেলে দেখল তাতে ৩০ বছর আগের তারিখ দিয়ে লেখা আছে যে, ঠিক ৩০ বছর আগে এই দিনে এই খানে বসে ছোট্ট ছেলে তার বাবাকে খানিক পর পর করে মোট ২৩ বার বারান্দার রেলিং এ বসা কাক দেখিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল,'বাবা, এটা কি?'। বাবা প্রতিবার তার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাকে একটা করে আদর দিয়েছিল!
অপ্রস্তুত ও দুঃখিত ছেলে বাবার দিকে তাকিয়ে দেখে বাবার চোখে পানি। বাবা স্খলিতস্বরে জিজ্ঞেস করলেন, 'বাবা, আমার আদর কই?'
বাবা দিবসের লেখাটা বের করে পড়লাম আবারও। দুঃখ পেলাম। করা উচিত অনেক কিছুই করতে পারিনা। চিন্তা করি, কিন্তু চিন্তা গুলো হারিয়েও যায় কোথায় কোন খানে, আল্লাহ মালুম! বিষন্নতা নামক ব্যধীটার এক বেকুব বলি হিসেবে আজ সারাদিনটাও কাটল ছাই ছাই ধূসরতার মাঝে... দিনের শেষে এসে খোমাখাতার 'আপনি কি ভাবছেন ঘরে' লিখলাম,
' দুটা ফুল। একটা শুকনো, আরেকটা কুড়ি। ভাবছি শুকনোটাকেই বরং বইয়ের ভাঁজে রেখে দেই। কুঁড়িটা ফুটবে, ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাবে... কেন হায় নতুন করে দুঃখ কেনা? এর চেয়ে বইয়ের ভাজে শুকনোটাকে রেখে দিয়ে কুঁড়িটা বরং ঐ শিশুটাকে দেই। শিশুরা যে সব ভুলে যেতে পারে বড় সহজে...'
কিছু প্যাঁচালঃ
> এতদিন ব্লগবঞ্চিত ছিলাম... তাই দেখা হয়নি যে ছোটবেলার হারানো খাবার আর শখ বিষয়ে পোস্টের পরে কেউ 'ছোটবেলার খেলা' নিয়ে কিছু লিখেছে নাকি... খেলা নিয়ে নস্টালজিক হয়ে একটা লেখা শুরু করেছিলাম, শেষ করিনি এখনও...
> একটা পাগলামী করেছি কিছুদিন আগে... ছেলেবেলায় আমার বার্বি ছিলনা। মা আমাকে পুতুল কিনে দেয়নি কখনও। বদলে দিত বই, তা নিয়েই সন্তুষ্ট ছিলাম। গতদিন আর্চিসের সামনে দিয়ে আসার পথে হঠাৎই ইচ্ছা হল, কিনেও ফেললাম। মন খারাপ হলেই এখন পুতুল নিয়ে খেলি। আমার বৃদ্ধবয়েসের বালখিল্য!
> এখনও সিনেমা দেখার অব্যাহতি নেই একটুও। গতমাসে অন্তর্জাল থেকে টেনে নামিয়েছি ৩৯টা সিনেমা। সেগুলোও দেখে শেষ করিনি এখনও, কিন্তু ৫টা পুরানো ও ১টা নতুন সিনেমাকে টানছি এমনকি এই মূহুর্তেও। আজ দেখলাম 'নিউ ইয়র্ক'। কাল সকালে 3 10 to Yuma দেখে পরশুর পরীক্ষার পড়াশোনা ইশটার্ট মারব। দোয়া রাইখেন!
[দুঃখিত! আবারও অহেতুক প্যাঁচালই পাড়লাম খানিকখন। কিকরি বলেন! আমি যে আর কিছুই পারিনা। ... হা বিতং করে দুপুর বেলায় করল্লার তরকারী দিয়ে ভাত খাবার মত ঘটনাই যে আমার ব্লগের প্রধান উপজীব্য। আর আমার বিষন্নতার সাথে একাকীত্বের জগাখিচুড়ি। ]
[এতক্ষণ প্যানপ্যান শুনার জন্য উপহার...
গানঃ চন্দ্রবিন্দু :: থাক বরং :: http://www.mediafire.com/?3eirjut0tc1 ]
-- দুষ্ট বালিকা
মন্তব্য
হুমমম
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
দুষ্ট বালিকা তোমার লেখা পড়ে বরাবরের মত আনন্দ পেলাম। আপনার বাবা ছেলের কাকের গল্প শুনে কয়েক দিন আগে দেখা সুন্দর একটা ভিডিওর কথা মনে পড়ে গেল। আশা করি ভাল লাগবে।
পরীক্ষার খাতায় লিখে দিয়ে আইসো না সিনেমার গল্প
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
হুমম
নিচের ক্লিপটী দেখুন, সম্প্রতি এক বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়াঃ
মনে থাকে জানি। আবার নতুন কোন শর্ত জুরে না গেলেই ভাল।
শাহাদুজ্জামান প্রথমালোতে একটি আর্টিকেল লিখেছিলেন ফাদারস ডে উপলক্ষ্যে, সেখানে এই গল্পটি দিয়ে শেষ করেছিলেন, চড়াইয়ের জায়গায় কাক আর জড়িয়ে ধরার জায়গায় চুমু বসিয়ে। তবে কি সেটি এই সিনেমা অবলম্বনেই? লেখকরা দেখি কৃতজ্ঞতা স্বীকারও করছেন না আজকাল। ইন্টারনেটের যুগে কি আর কোন কিছু গোপন রয়ে যায়?
পরীক্ষার সময় ব্লগ। সিনেমা !!! দুনিয়াটা কই যাচ্ছে।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
কেয়ামতের বেশি দেরী নাই...
=======================
ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হলো ব্যাথা!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
তুমি আজাইরা ট্যাগ লাগালেও বাবা-ছেলেটার গল্পটা কিন্তু আমাকে ছুঁয়ে গেল।
ভালো পাত্র দেইখা একটা বিবাহ কইরা ফালাও, তারপর হানিমুনে যাওগা কানকুন বা লাস পালামাস, দেখবা বিষন্নতা কই পালাইছে!!
ধন্যবাদ,
বাংলাদেশ জিতেছে বলে মনটা বেশ ভাল! একটা কথা বলবেন ভাইয়া? আমার কথা বার্তায় কি আমাকে খুব ডেসপারেট শুনাচ্ছে? বিয়ে না করলেই নয়?... আমাকে প্রতিবারই বিয়ের বুদ্ধি দিচ্ছেন কেউ না কেউ! যদি এরকম কিছুই হয় তাহলে যে তিনটা আবজাবের আধা লিখা আছে সেগুলো পোস্ট করব, তারপর যদি বিয়ে করি কখনও তারপরেই আবার হাজির হব এইখানে! তার আগে নয়! দেখি কোন সে তালেবর যে আমার ব্যধী দূর করতে পারে!
আবারও ধন্যবাদ! ভাল থাকবেন!
--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
- শুধুমাত্র বাবা-ছেলে আর কাউয়ার গল্পটা নিয়ে নিদেনপক্ষে একটা চমৎকার টিভি বিজ্ঞাপন হতে পারে! সুযোগ থাকলে করে দেখিয়ে দিতাম।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বাবার গল্পটা ভালো লাগলো। পরীক্ষার জন্য শুভ কামনা।
গল্পটা আগে জানা ছিলো। গত বাবা দিবসেই প্রআলোর কলামে লিখেছিলেন শাহাদুজ্জামান... খুব প্রিয় গল্প। যতোবার পড়ি বা শুনি, ততোবারই ভালো লাগে।
প্রজাপতির ভিডিওটা দেখার খুব ইচ্ছা ছিলো। দেখা হলো না। রাতে ফিরে দেখবো...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বালিকা,
পরীক্ষার জন্যে শুভ কামনা
লেখা ভাল হয়েছে।
পরীক্ষা শেষ করে আরো ভাল লেখা দাও---
নিরন্তর শুভেচ্ছা----
বাবা আর ছেলের গল্পটা শুনে মন কেমন করে উঠলো
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আগেই জানা তবুও বাবা আর ছলের গল্পটা মন ছুঁয়ে গেল আবারও।
অতিথি লেখক।
তোমার জন্য লাগবে মাইর বুঝলা ! পরীক্ষার সময় এম্নে ফাঁকি মারলে ক্যামনে কি !!! আমি জুইতমতন সিনেমা দেখার সুযোগা পাইতেসিনা আজকাল। আর করল্লার তরকারি দেখলে পঞ্চাশ হাত দূরে থাকি। এই জিনিসটার বেচাকেনা আমার মনেহয় বাজারে নিষিদ্ধ করে দেওয়া উচিত। :|
বুড়া মাইয়ারা ক্যামনে বার্বি নিয়া খেলাধুলা করে সেইটা দেখতে মন চাইতেসে।
------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------
বাবা-ছেলের গল্পটা পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল
চন্দ্রবিন্দু'র গানের জন্য
ধন্যবাদ!
--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
বাবা-ছেলের গল্পটা দারুণ লাগল। আগে কোথাও পড়িনি বা শুনিনি। পরীক্ষা শেষে বালিকার আরো আবজাব আসুক। পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
মানুষজন যেভাবে বালিকাকে বিয়ের জন্য ভড়কাচ্ছে, তাতে বালিকা মন্তব্য করা ছাড়া আর কিছু করবে বলে মনে হয়না!
--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
হ্, আমিও এইটা আগে শুনিনাই।
একজন মেইল করসিল ভিডিওটা সেদিন। এরপর দেখি অনেকেই এই ব্যাপারে কথা বলাবলি করতেসে আবার সচলে আইসা সাইকেলের লেখা এই ব্লগটাতেও পাইয়া গেলাম।
------------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------
বাপ-ছেলের গল্পটা পইড়া আমার চোখে পানি আইসা পড়ছিলো। পরীক্ষায় শুভকামনা রইলো।
শুনে আমারও একই অবস্থা হয়েছিল! অনেক ধন্যবাদ!
--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
নতুন মন্তব্য করুন