মাটির মানুষ!
কানের কাছে মৃদু স্বরে ‘আই লাভ ইউ’ শুনে কাঁচা ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো। কাঁধে গরম নিঃশ্বাস আর জড়িয়ে ধরে থাকা হাতটাকে চিনে নিতে সময় লাগে না আমার। রোজ রাতে কাজ শেষে এভাবেই পাশে এসে শোয় রকিব। হাতটাকে টেনে বুকের কাছে নিয়ে গাঢ় ঘুমে তলিয়ে যেতে যেতে অস্ফুটে বলি, ‘আই লাভ ইউ টু’। রকিব শুনেছে কি শুনেনি তাতে কীই বা এসে গেলো, ও তো আমার সবজান্তা শমসের!
গলা আর নাক বন্ধ নিয়ে সকালে ঘুম ভাংলো আমার। আশ্চর্য! রাতে তো ঠাণ্ডা ছিলোনা একটুও! একটু ধাতস্থ হতেই গত রাতের স্বপ্নটা মনে পড়লো আমার! ... না জানে কতদিন লাগবে একাকীত্বে অভ্যস্ত হতে! শাড়িটা ঠিক করে বিছানা থেকে নামতে গিয়ে চমকে উঠলাম! বুকের উপর থেকে এঁটেল মাটির একটা দলা মাটিতে পড়ে গুড়ো হয়ে গেলো! চমকে তাকিয়ে দেখি বিছানায় আমার পাশে রকিবের বালিশের উপরে, সারা বিছানা জুড়ে মাটির দাগ, জমাট বাঁধা এঁটেল মাটি, ঠিক যেরকম মাটিতে গতকাল নামিয়ে রেখে এসেছি রকিবকে, আজিমপুরে, ওর বাবার পাশে!
কলিজা!
রমিজা কইলজা খাইতে ভালোবাসে, অনেক হিমো্গল্বিন আর অনেক লুহা আছে কইলজায়। রক্ত হয়, হাড্ডিও নাকি লুহার মতো শক্ত হয়! ডাক্তার আপায় কইসে। হিমোগল্বিন নিয়ে রমিজা শিউর না, ক্যালসিরামও হইতে পারে! ঐ একটা হইলেই হইলো, শইলের জন্য ভালো সেইটাই কথা। তয় বেশী খাইলে নাকি পেটের পোলাটার ক্ষেতি হইবো। এইজন্যে পেত্যেক দিন না খাইয়া রমিজা সপ্তাহে দুইদিন খায়, শনিবার আর বুধবার, ঐ দুইদিনই তো মেডিকালের পোলা মাইয়ারা লাশ কাইটা মানিকের বাপের জন্য ফেলায়া থুয়ে যায়, সব পরিষ্কার করে সেলাই করে মরাটারে মর্গে দিয়া আসনের আগে মানিকের বাপে পলিথিনের ব্যাগে কইলজাটা কাইটা যত্ন কইরা রাখে। রমিজার জন্যে গরুর কইলজা কেনার পয়সা কি আর মানিকের বাপের আছে?
আদুরে!
বারান্দায় পড়ে থাকা ছোট্ট পাখিটা তুলে নিয়ে আসলাম আমার কাজের টেবিলের উপরে। ডানাভাঙ্গা, ঘাড়টা দুমড়ানো চড়ুইটার! ঘাড়ের উপর থেকে চোখটোখ কিছু নাই, ক্রিস্টিনার পেটে গেছে বুঝলাম। আহারে! খিদে পেলেই বদ বেড়ালটা পাখি ধরে আনে!
টেবিলের উপরে রাখা ক্রিস্টিনার ছবিটার দিকে তাকিয়ে পাখিটার জন্য কষ্টটা ভুলে গেলাম। বেচারিতো শুধু আমার মনোযোগটাই চায়। দুদিনের গ্যাপ পড়ে গেছে আসলে, ঠিক করলাম কালকেই আবার সেমেটারিতে যাবো, বেড়ালটাকে ছেড়ে থাকতে আমার কতোটা কষ্ট হয় সেটা কে বুঝবে?
------------------------------------
বালিকার বয়স হয়ে গিয়েছে মনে হয়, এখন আর দুষ্টামি দূরে থাক,ছোটখাটো বাঁদরামি করতেও ইচ্ছাকরে না! লেখক-পাঠক-আড্ডাবাজ সত্ত্বাটার শুধু মৃত্যুই হয়নি,সে ব্যাটা কই যেন গিয়ে পচে-গলে হেজে-মজে দুনিয়ার বুক থেকে সাফা কিরকিরা হয়ে গেছে একেবারেই! একগাদা গল্প আধাআধি অনুবাদ হয়ে এদিক সেদিকে ফোল্ডারে বিমর্ষ ভাবে পড়ে আছে, আব্জাব লেখার চিন্তাটাও মাথায় আসেনা বলা চলে, আগে যেখানে আকাশে কিউমুলোনিম্বাস মেঘের ছায়া দেখলেও একটা আব্জাব ব্লগ লিখে ফেলতে পারতাম এখন কিবোর্ড নিয়ে আছাড় দিলেও দুই লাইন বের করা যাবে বলে মনে হয় না!
এমতাবস্থায় গতকাল মাথায় ভাব এলো! আরেকটু হইলেই ইউরেকা ইউরেকা বলে বাড়ি মাথায় করে ফেলতাম বলে জলদি জলদি ল্যাপি অন করে পনেরো মিনিটে এই তিনখানা ঘোড়ার ডিম ডাউন-লোড করলাম! আশা করি আজকের খুশীর দিনটায় এই বিখাউজ ডাউন-লোড এর জন্য আমারে কেউ মারবেন না!
মন্তব্য
বুকে আয় বাভুল!
এইবার বেশ ভালো লেগেছে, তিনটাই।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
থেঙ্কু টিউপু!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
বয়স বাড়ার সাথে দুষ্টুমি কমার আসলে কোন সম্পর্ক নেই।
বরং বয়সের সাথে সাথে দুষ্টুমির নানান ছলাকলা শিক্ষালাভ করা যায় যদি লক্ষ্য থাকে স্হির
২নং টা পড়ে ভীষণ গা ঘুলাচ্ছে! অনেকদিন পর পোস্টসহ আপনাকে দেখে ভালো লাগলো বালিকা।
আবার শুরু করেন লিখালিখি, কী আছে জীবনে!
থ্যাঙ্কিউ!
দেখি চেষ্টা করে, লিখতে পারি নাকি!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
****************************************
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
খাইছে আমারে।
ভালো লাগলো।
স্বয়ম
ধন্যবাদ ভাইসাহেব!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
কলিজা পড়ে ধাক্কা খাইছি।
কলিজা পইড়া 'ছা গম গম' কইরা উঠল!! বাকিগুলাও ভাল্লাগসে।।
- laidback
ধন্যবাদ!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
সকাল তাই গা ছমছম করলোনা। তয় গল্প ভালু হইছে বালিকা।
আমার অবশ্য সকাল সন্ধ্যা নিয়ে সমস্যা নাই, ছা গমগম চলতেই থাকে! থেঙ্কু আপু!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
কলিজা কাহিনী পড়ে গা ছমছমই করল বটে!
গান্ধর্বী
কয়েকদিন পর শোনা যাবে কাদের মোল্লাও এভাবে কবর থেকে উঠে এসেছে গোলাম আজমের কলজি খেতে।কেননা তার নির্দেশ পালন করতে গিয়েইতো মোল্লার ফাঁসি হইল।মোল্লা নিশ্চয়ই তার ফাঁসির জন্য গো.আ. কেই দায়ী করবে।
Muhammad hasan
'কলিজা' পড়ে ঢাকা মেডিকেলের সেই বিখ্যাত কলিজাখেকোর কথা মনে পড়লো।
হ, ভালই... তয় রমিজা কাইট্টা আফিফা কিংবা নিদেনপক্ষে সানোয়ারা কইরা দিলে আরো ভাল হইত... বদলে যাও... বদলে দাও
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হু, ভালই... তয় রমিজা কাইটা আফিফা কিংবা নিদেনপক্ষে সানোয়ারা করলে আরো ভাল হইত... বদলে যাও... বদলে দাও...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কলিজা গল্পটা দুর্দান্ত!
প্রৌঢ় ভাবনা, মনে আছে? সেই লোক গোরস্থানে গিয়ে কলিজা খেত, নাম- খলিলুল্লাহ।
হুম, মনে আছে। তার কথা মনে পড়লো বলেই রমিজা এলো!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
ধন্যবাদ। নামটা আসি আসি করেও মনে আসছিলোনা।
বয়স ভাবলেই বয়স। ধুমায় লিখতে থাকো।
গভীর রাতে প্রথমগল্পটা পড়ে আমারও খানিকটা গা ছম ছম করসে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
তাইই? ছা গমগম ক্যান করসে ভিরু? কার কথা ইয়াদ আসে?
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
১। দারুন লেগেছে।
২। আপনার এই গল্পটির মতোই সচল ব্লগার রানা মেহের এর প্রায় কাছাকাছি ঘটনার এমন একটা অসাধার গল্প আছে। ওটা পড়েছি বলে এই গল্পে খুব বেশি চমকে যাই নি।
৩।
মাসুদ সজীব
বুঝলাম। ইয়ার লিগাই আপ্নে দুষ্ট বালিকা!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আঁই কিচ্চি!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
কলিজা গল্পটার থিম খুব পরিচিত মনে হলো কেন যেন! কিন্তু আপনার উপস্থাপনা ভিন্ন একটা মাত্রা এনেছে গল্প, থুড়ি, অণুগল্পটায়। আমি বেশী চমকেছি মাটির মানুষে! আদুরেটা কেন যেন ভালো লাগে নাই।
____________________________
কলিজা খেকো খলিলুল্লাহ এর কথা মনে পড়েছিলো বোধহয় আপনার! আমার নিজের হিমোগ্লোবিন কম, এই জন্য রক্ত দিতে পারছিনা। ডাক্তার বলেছে বেশী করে কলিজা খেতে সেদিন এম্নিই ইন্টারনেট ঘেটে কলিজা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করছিলাম, তখন দেখলাম যে প্রেগন্যান্ট মা দের কলিজা বেশী খাওয়া নিষেধ, তখন হুট করেই মাথায় এলো, এটা লিখে ফেললাম!
মাটির মানুষ টা মনে হয় কিছুদিন আগে টু লাইনার ভুতের গল্প গুলো পড়েছিলাম, সেটা মনের মধ্যে ছিলো, লেখার সময় সেভাবেই এসেছে, আর আদুরে আমার এক বন্ধুর বিড়ালের চড়ুই মারা ছবি ফেসবুকে দেখার ফল!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আহা!! কলিজা অণুগল্পটা খুব ভালো লাগলো। মুরগির কলিজা খাইতে ইচ্ছা করতেসে। সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। নাশতায় পরোটা দিয়ে গিলা কলিজা। কনফার্ম।
---- মনজুর এলাহী ----
দারুণ
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন মন্তব্য করুন