‘বি দাউ মাই ভিশন, ও লর্ড অফ মাই হার্ট, বি অল এলস বাট নট টু মি, সেইভ দ্যাট দাউ আর্ট...’
আলোটা সুন্দর। কেমন যেন অনধিকার চর্চা হয়ে যাচ্ছে না? কিছু না ভাবলেই হল। হোক দুপুর, তবু রবিবার তো। লোক থাকতে পারে। এত বেশি পাগল হওয়াও কি ঠিক? একদল দসাসই মুসলমান এভাবে গীর্জায় ঢুকে পড়লে পুলিশ ডাকে যদি? গানটা বাড়াবাড়ি রকম সুন্দর। পথ থেকে এমন গান শোনা গেলে যে-কেউ একটু থামতে বাধ্য। যাক, আসলাম যখন, শুনেই যাই আরেকটু। ভেতরে যাব কোন দিক দিয়ে? এতই কি বিধর্মী হয়ে গেলাম যে ভিন্ন বিধাতার অতিথি হয়েও ঢুকতে পারবো না? ওহ, এইতো দরজা!
‘বি দাউ মাই বেস্ট থট, বাই ডে অর বাই নাইট, বোথ ওয়েইকিং অর স্লিপিং, দাই প্রেসেন্স মাই লাইট...’
গানটা চেনা চেনা লাগছে কেমন যেন। হিম্ন তো কোনদিন শুনেছি বলে মনে পড়ে না। ছোটবেলায়? নাহ্। বাইরে এসেও তো শুনেছি বলে মনে পড়ে না। এক্সাম উইকে মাঝেমধ্যে মুফতে খেতে যেতাম চার্চে, কিন্তু সেখানে তো ডিয়ার লর্ড অ্যান্ড সেভিয়ার জিসাস ক্রাইস্ট ছাড়া কিছু শুনিনি। এটা আইরিশ হিম্ন। এটাও তো আমার জানার কথা না। বিদেশি কারো গাড়িতে? কোন রেস্তোঁরায়? কোন ফিউনেরালে? আহ্, ডায়ানার ফিউনেরালে। না, ওটায় তো এল্টন জনের গান ছাড়া তেমন কিছু ছিল না। দশ বছর পূর্তিতে! বি দাউ মাই ভিশন! আইরিশ হিম্ন!
‘বি দাউ মাই গ্রেট ফাদার, অ্যান্ড আই দাই ট্রু সান, বি দাউ ইন মি ডুয়েলিং, অ্যান্ড আই উইথ দি ওয়ান...’
কুফরি হয়ে যাচ্ছে নাতো? পরের ঘরে গিয়ে কিছু ভাল লেগে যাওয়া কি অন্যায়? উপাসনা করছি না, কিন্তু ভাল লাগছে। কেমন যেন শান্তি। কোন অস্থিরতা নেই, কোন দুশ্চিন্তা নেই। মন চাইছে শুধু শুয়ে থাকি লম্বা বেঞ্চগুলোয়। মুক্তি কি অনুশাসনে, নাকি অনুরণনে? কে জানে। হবে কিছু একটা। গীর্জায় এই প্রথম। এর আগে কখনো নাটকে দেখেছি কাঁটার মুকুট মাথায় যীশুর ছবি, কখনো স্থাপত্যকৌশলের বইয়ে চেয়ে দেখেছি বিভিন্ন যুগের নির্মাণশৈলী, কখনো ইতিহাসের বইয়ে পড়েছি পেটের দায়ে মহামনীষীদের ভ্যাটিকানের ফরমায়েশমত শিল্প তৈরির কথা। কেন নিজে থেকে ঘুরে দেখলাম না কখনো? সব স্রষ্টাই তো ব্যাপক, মহান। মন ভুলে যাবার ভয়ে কেন মন ভরাবো না?
‘রিচেস আই হিড নট, নর ম্যান’স এম্পটি প্রেইজ, বি দাউ মাইন ইনহেরিটেন্স, নাউ অ্যান্ড অলওয়েইজ...’
বিয়ের মন্ত্রগুলো এত অদ্ভূত সুন্দর হয় কেন? কেন যেন মনে হচ্ছে, মন্ত্রের সৌন্দর্য আনন্দে, বাণিতে না। এত খুশি কীভাবে হয় মানুষ? সাথে তো ক্যামেরা আছে, ছবি তোলা যাবে কিনা কে জানে। কিছু মনে করবে না হয়তো। আচ্ছা, গীর্জায় কি জুতা নিয়ে ঢোকা যায়? দেখে নিলাম নাতো। অজান্তে অবমাননা হয়ে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। অসম্ভব উষ্ণ হলদে আলো। লাল-নীল কাঁচের মধ্যে দিয়ে কেমন করে যেন ঠিকরে আসছে রশ্মিগুলো। পরিপাটি করে গোছানো, ছবির মত সুন্দর। ইচ্ছে করছে না কেন যেন ছবি তুলতে। এই স্পর্শ, এই হাসি, এই বিশ্বাস, এই আশার কাছে সব সৌন্দর্য মলিন। কোন জাগতিক শক্তির সাধ্য নেই এই মুহূর্তকে ফ্রেমে বেঁধে রাখে। শুধু মনেই গেঁথে থাকুক। পবিত্র, স্নিগ্ধ, প্রাঞ্জল, জীবন্ত, মৌন।
‘হাই কিং অফ হেভেন, দাউ হেভেন’স ব্রাইট সান, ও গ্রান্ট মি ইটস জয়জ আফটার ভিকট্রি ইজ ওয়ান, গ্রেট হার্ট অফ মাই ওউন হার্ট, হোয়াটেভার বিফল, স্টিল বি দাউ মাই ভিশন ও রুলার অফ অল।’
মন্তব্য
মোক্ষম প্রশ্ন।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
জবাবটাই খুঁজে ফিরছি শুধু, পাচ্ছি না। যেখানেই যাই, শুধু প্রশ্নটাই ভেসে ওঠে।
মাঝে মাঝে এমন হয়। কিছু কিছু যায়গা আছে যেখানে গেলে কেমন এক হিম হিম ভাব আসে...
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ঘটনাটা ক্লিভল্যান্ডের। এই সামারে গিয়েছিলাম। রক-অ্যান্ড-রোল হল অফ ফেইম থেকে বের হবার একটু পরেই। ভাবলে অবাক লাগে যে ওরকম একটা তীর্থ থেকে ঘুরে এসে মাথায় ঘুরছে একটা চার্চে বিয়ে আর গানের কথা।
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
নতুন মন্তব্য করুন