“তোমার গা থেকে ফুলের সুবাস আসছে আজকে। খুব সুন্দর গন্ধ, এত চেষ্টা করেও মনে করতে পারছি না কীসের গন্ধ এটা। ইউ লুক ভেরি ফ্রেশ অ্যাজ ওয়েল।”
- ফুল ঠিক মাই কাপ অফ টি না। আমার দৌঁড় গোলাপ পর্যন্ত। তবে ল্যাভেন্ডার খুব প্রিয়। ছোটবেলায় নানাকে দেখতাম ইয়ার্ডলি ব্যবহার করতে। ওদের ল্যাভেন্ডারটা অসাধারণ লাগতো। আমিও তোমার পারফিউমের গন্ধটা চিনতে পারছি না। সকাল বেলা বাসে যাবার সময় এরকম তাজা সুবাস পাই, কিন্তু মেয়েলি ব্যাপারে ধারনা কম দেখে চিনতে পারি না। ওদিকে আবার জিজ্ঞেসও করতে পারি না চড় খাবার ভয়ে।
“উহু, তবুও কিছু একটা ভিন্ন আজকে। কিছু একটা করেছো যা আগের বার করনি।”
- আজকে গোসল করে, শেভ করে এসেছি। নাহলে আমার ঘাম-ময়লা-দুর্গন্ধ তোমার হাতে চলে যেত। সেটা হতে পারে। আফটার শেভটার জন্য এরকম লাগছে হয়তো। আন্দাজ করতে পারো কিনা দেখি তো। উহু, জিলেট না। ওল্ড স্পাইসও না। ব্রুট।
“গন্ধটা পছন্দ হয়েছে আমার। আগে তেমন কাউকে দেখিনি এটা ব্যবহার করতে।”
- না দেখারই কথা। এটার বদনাম আছে বুড়াদের ব্র্যান্ড হিসেবে। তবে আমার বেশ লাগে। কেমন যেন শান্ত একটা গন্ধ। জ্বলে খুব, এটাই সমস্যা।
“তোমার চুলগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। দেখে তো মনে হচ্ছে না চুল পড়ার সমস্যা আছে, বরং বেশ ঘন আর সিল্কি।”
- বলে যাও, শুনে সুখ পাই। আমার অত খুঁতখুঁতে ভাব নেই। শুধু কান আর ঘাড়ে চুল লাগলেই অস্বস্তি লাগে।
“ট্রিমারে কয় নম্বর সাইজ ব্যবহার করো তুমি চুল কাটানোর সময়? সে কী, এত বছর ধরে চুল কাটিয়েও তুমি জানো না কোন সাইজ? ঠিক আছে, কত ইঞ্চি বললেও চলবে।”
- এসব ব্যাপারে আমার কোনই ধারনা নেই। সাইজের আন্দাজ বলতে পারবো না। আমি চুল কাটাতে গেলে শুধু বলি, আই জাস্ট ওয়ান্ট টু ফিল মাই ইয়ারস। এরপর নাপিত যা করার করে। এই যে এখন যেমন চুলের ভারে এলোমেলো অবস্থা। মেয়েদের মত কানের উপর থেকে চুল সরাতে সরাতে ক্লান্ত।
“মেয়েদের মত হলেই খারাপ, তাই না? খুব খারাপ। রাগ করার কিছু নেই, ঠাট্টা করছিলাম। সাইজ না জানলে তো একটু ঝামেলা হয়ে গেল। এত্ত কম জানলে কি চলে এই যুগে? লম্বা চুল রাখলে যখন খারাপ লাগে, তাহলে যেমন আছে তেমনটাই রেখে শুধু ছোট করে কাটাতে পারো তাহলে।”
- সেটাই ভালই হয়। সেই যে ছোটবেলায় বাবা চুল আঁচড়ে দিতো, এরপর থেকে তো সাহসে কুলায়নি কোনদিন কিছু করতে। তোমার মাথায় কিছু খেললে বল। লেট ইওর ইমাজিনেশন রান ওয়াইল্ড। তুমি যা বলবা, তাই হবে। একটা ঝুলঝাড়ুর চুল কাটলেও আপত্তি করতে পারে, আমি করবো না। তোমার হাতেই আমার মাথা সঁপে দিলাম, যাও। অবশ্যই, বল তো ন্যাড়া হতেও আপত্তি নেই। আই ওয়োন্ট হোল্ড এনিথিং এগেইন্সট ইউ, আই প্রমিস। আমার এই খোমা প্রসাধনের ঊর্ধ্বে, তাই এসব নিয়ে মাথা ঘামাই না। বছরের পর বছর ধরে সাত-সকালে উঠে নিজের মুখ দেখতে দেখতে এখন দুঃস্বপ্ন দেখেও ভয় লাগে না। এই রকম চেহারা নার্ভের জন্য ভালো।
“অনেক হল, ঠাট্টা রাখো এবার। তুমি কোন দেশ থেকে যেন? ও হ্যাঁ, বাংলাদেশ। আমি লেবানন থেকে এসেছি। আমি আরেকটু বেশিদিন হয় দেশে যাই না। প্রায় ১৩ বছর। যেতে মন চায়, যাবো যাবো করি, আমার মা ওখানেই, কিন্তু গোলাগুলি আর যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্য যাওয়া হয় না।”
- খুব খারাপ লাগার কথা অবশ্যই। বাকি ভাই-বোন সহ এখানেই থাকো, না? ওহ, আমি তো ভাবলাম তুমি এখানে পড়াশোনা কর। আমি আছি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিঙ্গে। আরে ধুর, ফালতু কথা ওসব। স্মার্ট না ছাই। বাপ-মা ধরে-বেঁধে পড়ালো দেখে পড়ছি। আমার হাতে ছেড়ে দিলে অর্থনীতি নয়তো ইতিহাস নিয়ে পড়তাম। এই যে, এখন বুড়া বয়সে এসে আর ভাল লাগে না পড়তে, তার কারণ ঐ জোর করে পড়ানোই।
“এটা কোন কথা হল না। লেগে থাকো, হয়ে যাবে। লাইফ ইজন্’ট ফেয়ার, অ্যান্ড নো ওয়ান এভার সেড ইট ইজ। ম্যান আপ, ডুড।”
- ঠিক হল না কিন্তু। মারলা তো মারলা, একদম বেল্টের নিচেই মারলা। নাহ, এই জন্যই মেয়েদের সাথে কথা বলতে ভয় লাগে আমার। প্রথম দিকের আধো-আধো কথা ভুলে নিজের ডিফেন্স লোয়ার করি, আর তারপর ধুম করে এরকম কিছু একটা বলে বসে সবাই।
“নারী আর পুরুষ কখনও সমান হতে পারে না, এটা আমরাও বুঝি। তবে ছেলেরা দুর্বল লিঙ্গ হওয়া সত্ত্বেও মেয়েরা তাদের ঠিকই সহ্য করে এসেছে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে।”
- ঐ যে আবার শুরু হল কোমড়ের নিচে মারামারি। এমন একটা সময় বলছো এসব, যখন আমি পুরোপুরিই তোমার মর্জির কাছে জিম্মি। এই মুহূর্তে তোমার সাথে একমত না হলে আমাকে যাচ্ছেতাই একটা মো-হক নিয়ে ঘুরতে হবে এক মাস।
“ভয় নাই। চুলও ছিড়বো না, বকাও দিবো না। গরমের এত ভয় তোমার, মাথায় এত গরম লাগে, তবু আজকের মত দিনে তুমি সুইমিং পুলে না কেন?”
- চুল, চুল। এই জঙ্গলটা সাফ করে নেই আজকে, তারপর কালকে থেকে নাহয় যাবো আবার। সপ্তাহ খানেকের একটা বড় ট্রিপ দিয়ে আসলাম। বাড়ি থেকে সাতশ' মাইল দূরে গিয়ে গাড়ি নষ্ট হয়ে গেল। সেই গাড়ি ঠিক করতে করতে আমরা আরো ঘুরে বেড়ালাম। না না, বন্ধুর গাড়ি। আমার না।
“আমার একটা হোন্ডা আছে। ১০ বছর পুরনো। আমি যখন ১৮ বছরের ছিলাম, তখন কিনেছিলাম।”
- ভাল সার্ভিস দেওয়া উচিত। হোন্ডা খুব রিলায়েবল গাড়ি। তবে আওয়াজ বেশি করে, এটাই সমস্যা। ইদানিং সেগুলো ঠিক করে ফেলেছে অবশ্য।
“আমি চালাই খুব কম। ১০ বছরে মনে হয় মাত্র এক লাখ মাইলে চলেছে গাড়ি। আই বট অ্যান অ্যাকর্ড।”
- এক মালিকের হাতে চলা গাড়ি, বিক্রি করলে দাম পাবা ভালো। হোন্ডার প্রাইস রিটেনশন সবচেয়ে ভাল। আমেরিকান আর কোরিয়ান গাড়ির দাম সবচেয়ে কমে।
“আমার বাবা বলেছিল তাকে বিক্রি করে দিতে। তেলের দাম বেশি দেখে তার ট্রাকটা বের করতে চায় না।”
- কেনার সময় খেয়াল রাখা দরকার ছিল। এই ভুল করেই ডেট্রয়েট ডুবলো। তেল একটা সীমিত সম্পদ, এর দাম কখনো না কখনো বাড়বে। এই সহজ সত্যটা ভুলে গিয়ে আজকে আমেরিকার বেহাল দশা। বেশি বেশি লাভের লোভে ট্রাক আর এসইউভি বিক্রি করতে থাকলো। আজকে অর্থনীতির বেহাল দশা হত না সময় থাকতে সচেতন হলে।
“আমি এই জন্যই কোন খোঁজ রাখি না। সবাই শেয়ার মার্কেট নিয়ে চিন্তা করে, আমি কিচ্ছু করি না। স্রেফ নিজের মত থাকি।”
- কে যেন বলেছিল, হ্যাপিনেস ইজ আ চয়েস। সুতরাং যা করছো, ঠিকই হয়তো। অযথা খাল কেটে ডিপ্রেশন ডেকে আনার মানে নেই কোন। তবে তেলের দাম হিসেবে রাখতেই হয়। আমি চার বছর আগে ওয়ান এইটি ফাইভে কিনেছিলাম, এবার কিনলাম ফোর টুয়েন্টিতে। জাপানি গাড়ি কিনেছিলা বলে রক্ষা, নয়তো অনেক টাকা যেত তেল কিনে।
“আমার ইচ্ছা একটা লেক্সাস কেনার। ইএস। ইউ নো হোয়াট আই অ্যাম টকিং এবাউট, রাইট?”
- আই শিওর ডু। আমার রুমি একটা লেক্সাস চালায়। আর এবার ঘুরে আসলাম ভলভোয়। বেশ লাগলো চড়ে। আমার শখ বিএমডব্লিউ কেনার। সারা জীবনের শখ আমার।
“শোন, থ্রি-এইটথ্ ইঞ্চ কাটি তোমার চুল। আর সামনে কিছুটা বড় রাখি। স্পাইকিং জেল লাগিয়ে দেই। খারাপ লাগবে না দেখতে।”
- অ্যাজ ইউ লাইক ইট। আমার কাছে সব সমান। পেছনে যেমন খুশি করতে পারো। স্কোয়্যার আর রাউন্ডের তফাৎ নেই আমার কাছে। দ্যাট্স পারহ্যাপস দি ওনলি পার্ট অফ মাই বডি হুইচ আই ক্যান্ট সি নো ম্যাটার হাউ মাচ আই ট্রাই। ওয়েল, হয়তো আরো দুই-একটা জায়গা আছে, তবে সেদিকে নাহয় না যাই। আপাতত স্কোয়্যারই করে দাও। তো এই গাড়ি বিক্রি করলে কি লেক্সাস কিনবে? মিন্ট কন্ডিশনে আপত্তি না থাকলে বছর পাঁচেকের পুরনো লাক্সারি মডেলের গাড়ি কিনতে পারো। দে কাম ফুললি লোডেড টু।
“আমার এই স্বপ্নটা সত্যি হবে বলে মনে হয় না। ঐ যে আয়নার নিচে ছবিটা দেখতে পারছো? ঐটা আমার মেয়ের ছবি। ওর জন্মের পর আমার এক্স-হাসব্যান্ড খুব অবাক হয়েছিল আমার দেওয়া নাম শুনে। আই নেমড হার অ্যালেক্সিস, বিকজ আই ওয়ান্টেড আ লেক্সাস অল মাই লাইফ।”
- আইডিয়াটা খুব পছন্দ হয়েছে আমার। আমার ছেলে হলে তাহলে নাম রাখতে হবে বিমার।
“বিমার ফ্রম বিএমডব্লিউ, রাইট? শুনতে খারাপ না। নাও, হয়ে গেছে তোমার চুল কাটা। ইট্স টুয়েলভ নাইনটি ফাইভ।”
মন্তব্য
অবশ্যই পরিচিত কথোপকথন! মিলিয়ে দেখলাম, ঠিক!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ধন্যবাদ, তীরুদা। প্রবাসের কারো কাছে কথোপকথনগুলো পরিচিত ঠেকলেই খুশি। বাইরে জীবনের টুকিটাকি তুলে ধরতে পেরেছি ভেবে খুশি লাগে তখন।
অসাধারণ লাগলো।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
একসময় আমি চুল কাটাইতাম খুবই কম... তখন আমার অনেক বড় বড় চুল ছিলো... কিন্তু সেই চুলেরই আগা কাটা বা জুলফি কাটা এইসব নানাবিধ পরিচর্যার জন্যও আমার বেশ শৌখিনতা ছিলো। ৯৩তে হেয়ারোবিক্সে ঢুকলাম দুরু দুরু মনে... সেইটা তখন ঢাকায় সেলুন জগতে বিপ্লব আনছিলো। তবে সেখানে খালি বড়লোকের পোলাপানে ঢুকতো। আমি গরীব হয়াও ঢুকলাম... আর সেই যে ঢুকলাম আর ছাড়াছাড়ি নাই। মাঝে কয়েকটায় ট্রাই করছি কিন্তু আরাম পাই নাই।
আমার ফিক্সড নাপিত... গুড্ডু তার নাম। সে হেয়ারোবিক্স ছাইড়া এখন যোগ দিছে ফেসওয়াশে... আমিও এখন ফেসওয়াসেই কাটাই তার হাতে। সেই ফোন কইরা মনে করায়ে দেয় আমার চুল যে কাটার সময় হইছে। সেই ঠিক করে স্টাইল কি হইলে ভালো হয়।
যে আমি উত্তরা ছাইড়া পারতপক্ষে বাইরইনা... সেই আমি ধানমন্ডিতে যাই খালি চুল কাটাইতে। আর কাটানের যা বিল... গুড্ডুরে দেই তার চেয়ে বেশি টাকা। টিপস...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দেশে থাকতে তো ছাপড়া ঘরের বুড়ো নাপিত ছাড়াই কাটাইনি কোনদিন। বাইরে এসে চুলের পেছনে টাকার শ্রাদ্ধ করার পর টনক নড়েছে। যে একবার দেশে গিয়েছিলাম, তখন সেই চাচা মিয়াকে যতটুকু সম্ভব উদার ভাবে টিপ দেবার চেষ্টা করেছি। গিলটি ফিলিং...
১৯৭২ সালে তখনকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (এখনকার শেরাটন) বাদ দিলে ঢাকার প্রথম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সেলুন ছিলো গ্রীন সুপারমার্কেটের প্রিন্স। এখনো আছে কি না জানি না।
প্রিন্সের মালিক ছিলেন আমাদের হাফিজ ভাই, হাফিজুর রহমান জোয়ারদার। তাঁকে আমরা নাপিত হাফিজ ভাই বলতাম। আমাদের আরেক বন্ধু রবার্টের ছিলো স' মিলের ব্যবসা, তাকে ডাকা হতো কাঠুরিয়া। মানিক কাজ করতো বিমানের ক্রু হিসেবে, সে হলো খানসামা।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
কেন যেন এই মন্তব্যটি পড়ে তাড়িনীখুড়োর কীর্তিকলাপ মনে পড়ে গেল... ঠিক যেন সেই রকম করে একটি গল্প বলা শুরু করেছেন, আর আমরা পোলাপানের দল গল্পের শুরু শুনেই চুপ করে বসে গেছি। তারপর?
ইশতিয়াক - এ ব্যাপারে আমি আর আপনি একই দলে পড়ি
এ ব্যাপারে আমি আর নাপতানী একই দলে পড়ি
দু'য়ে মিলে কাটাকাটি - even Steven !!
আপনার এই সিরিজের লেখাগুলো ভালো লাগে .........
আপনি তাহলে শক্ত নার্ভের সবলা!
আজই প্রথম পড়লাম এবং মুগ্ধ হলাম।
............................................................................
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে। আমাদের মা আজো লতাপাতা খায়।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আমার নরসুন্দরী এক ভিয়েতনামীজ, নাম- রোজ। ইংরেজী ভালো বলতে পারে না। তবে সে বুঝে যে আমার দেশ ওর দেশের কাছাকাছি। তাই আমার সাথে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংলিশে অনেক গল্প করে। খুব যত্ন করে চুল কাটে। তাই ইংরেজী যাই হোক, আমাদের সুপার কাটে তার ডিমান্ড খুব বেশী। অন্য নাপতানীরা এজন্য বোধহয় তাকে হিংসা করে। আমি রোজ ছাড়া চুল কাটাই না। আরো অনেকেই বোধহয় তাই। রোজ ছুটিতে থাকলে যখন চুল না কাটিয়ে ফিরে আসি তখন অন্য নাপতানীরা ভয় দেখায়, ‘রোজ কিন্তু দু’সপ্তাহ পরে আসবে, বুঝে দেখ’। আমি মুচকি হেসে বলি, ‘অসুবিধা নাই, আমি দু’সপ্তাহ পরেই আসব’। মনে মনে বলি, তোমাদের হাতে পড়ে বান্দর হওয়ার চাইতে দু’সপ্তাহ অপেক্ষা করাই উত্তম।
= = = = = = = = = = =
তখন কি শুধু পৃথিবীতে ছিল রং,
নাকি ছিল তারা আমাদেরও চেতনায়;
সে হৃদয় আজ রিক্ত হয়েছে যেই,
পৃথিবীতে দেখ কোনখানে রং নেই।
ভয়ে ভয়ে আরেকটা প্রশ্ন করি। এই সিরিজের লেখাগুলোতে লক্ষ্য করেছি, প্রতি এক প্যারা অন্তর উদ্ধৃতিচিহ্ন (" ") ব্যবহার করা হয়। কারণ বুঝিনি, লেখকের কাছে নিশ্চয়ই এর ব্যাখ্যা আছে।
তবে পুরো লেখাই যেহেতু সংলাপ (একেক প্যারায় একেকজনের), সে ক্ষেত্রে ঐ চিহ্ন প্রতি প্যারাতেই থাকা দরকার বলে মনে করি। নাহলে যে প্যারায় উদ্ধৃতিচিহ্ন নেই, সেটাকে লেখকের ন্যারেশন বলে ভ্রম হতে পারে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
এই ব্যাপারটা আসলে আগেই ব্যাখ্যা করা উচিত ছিল আমার। এটা লেখাটার ফর্ম নিয়ে আমার নিজের খেলার একটা অংশ। প্রবাসের কথোপকথন সিরিজে কোন ন্যারেশন নেই। মনের কথা, পরিবেশের কথা, ইতিবৃত্তের ব্যাখ্যা, ইত্যাদির কিছুই নেই। সে-কারণেই অনেকে প্রায় বলেন যে লেখায় উল্লেখকৃত ঘটনার ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে আরেকটু জানা থাকলে ভাল হত। তবু অনেকটা গোঁয়ার্তুমি করেই এই ভাবেই রেখে দেওয়া। ট্রানজিশনগুলোয় যাতে পাঠক নিজের মত কিছু ভেবে বসিয়ে নিতে পারেন।
প্রতিটি প্যারায় দুটি করে উক্তি থাকে। প্রথমটি উদ্ধরন চিহ্নের মধ্যে। সেই উক্তিটি অন্য কারো, আমার নয়। এই 'অন্য কেউ' টি একেক লেখায় একেক জন। এবং একই লেখায় সব সময় একই ব্যক্তি নয়। উদাহরণ, ক'দিন আগে লেখা হোয়াইট ক্যাসেল নিয়ে কথোপকথনে উদ্ধরন চিহ্নে কখনো সেল্স গার্লের কথা ছিল, কখনও আমার সফরসঙ্গী বন্ধুদের। কোনটি কার কথা, তা ইচ্ছে করেই উল্লেখ করা হয়নি। মেদবর্জিত রাখার অক্ষম চেষ্টা বলতে পারেন।
উদ্ধরন চিহ্ন ছাড়া যেই বাক্যগুলো থাকে প্রতি প্যারায়, সেগুলো আমার নিজের কথা। প্রতিটিই। আশেপাশের মানুষগুলোর উল্লেখযোগ্য উক্তি তাই উদ্ধরন চিহ্নে যায় (যদিও কে বললো, বা কোন ধরনের অবস্থায় বললো, তার ডিটেইল উহ্য থাকে), আর আমার নিজের কথাগুলো যায় উদ্ধরনের বাইরে।
এই ব্যাখ্যাটুকুর পর মনে হয় সিরিজের আগের লেখাগুলোও কিছুটা বোধগম্য হবে। জুবায়ের ভাইকে ধন্যবাদ ব্যাপারটা নজরে আনার জন্য।
এই লেখা হিমুরে পড়ানো দরকার। হিমু চুল কাটা বন্ধ করে দেয়ার পায়তারা করছে।
আমি চুল ছাঁটাই সিরাম খুপসুরাৎ এক আওরাতের কাছে ......দম বন্ধ হয়ে আসে!!!!!!!!!!!!
কি মাঝি? ডরাইলা?
আমি কি শুধু কান আর ঘাড়ের শান্তির জন্য চুল কাটাই নাকি??
আমার নাপতেনী একেবারে পক্কবিম্বাধরোষ্ঠী শিখরীদশনা শ্রোণীভারাদলসগমনা স্তোকনম্রাস্তনাভ্যাং ... এক শব্দে বলিতে গেলে হট।[কৃতজ্ঞতা: মুখা]
তার উপর আবার বয়স কম।;)
কি মাঝি? ডরাইলা?
ওরে! চরম!! মুখা যে কই হারায় গেল...
মুখা আমাজনের জঙ্গলে সংসার পেতেছে।
কি মাঝি? ডরাইলা?
বিদেশীদের কি কপাল...
তবে আপনার নাপতেনির বর্ণনা শুনে আমার একটা ঘটনা মনে এলো- সে অনেক কাল আগের কথা... আমার তখন দীর্ঘ কেশ... হঠাৎই এক ফটোসেশনের সময় আদিত্যদার মাথায় আইডিয়া আসলো যে চুল বিষয়ক একটা ফটোসেশন হইতে পারে... রাইত বারোটার সময় আমরা এক ডজন বিভিন্ন রঙ্গা রাবার ব্যান্ড কিনলাম... তারপর দুই নারী মডেল বসলো আমার চুলে বেণী করতে... আফ্রিকান স্টাইলে ডজনখানেক বেণী করা হইলো আমার মাথায়... এক মডেল আমার সামনে আরেক মডেল আমার পিছে... সামনের জন বেশ উচ্চবিত্ত ছিলো... আমার আর কিছুই দেখার ছিলো না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হাহ হাহ হাহ... এই কমেন্ট পড়ার পর থেকেই আপনাকে কাল্লু স্টাইল চুলে কল্পণা করছি।
ভালো লেগেছে।
দারুণ!
[][][][][][][][][][][][][][][][][][]
ওরে বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর,
এখনি, অন্ধ, বন্ধ, কোরো না পাখা।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
এত ভালো লেখা. সম্প্রতিকালে পড়েছি বলে মনে পড়ছে না . thank you very much ... ek line bangla lekhte jaan bariye geche ... Asha kori maap kore deben ...
অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি বাকি লেখাগুলোও ভাল লাগবে/লাগার মত লিখতে পারবো।
নতুন মন্তব্য করুন