৩.১
গল্পটা সম্ভবত নানার কাছে শুনেছিলাম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালের গল্প। ইউরোপ তখন সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার ভয়ে কাঁপছে। বিভিন্ন দেশে গুপ্ত সমাজতন্ত্রী সন্দেহে উইচহান্ট চলছে। এরই মাঝে খবর বেরোলো, ফ্রান্সের অধিপতি চার্লস দ্য গলের ছেলে নাকি তালিকাভুক্ত সমাজতন্ত্রী। এক সাংবাদিক এ-নিয়ে প্রশ্ন করলেন তাঁকে। দ্য গল জবাবে বললেন, আমার ছেলে যদি আঠারো বছর বয়সে সমাজতন্ত্রী না হয়, তাহলে বুঝতে হবে তার কোন সমস্যা আছে। যদি সে চল্লিশ বছর বয়সেও সমাজতন্ত্রী থাকে, তাহলেও বুঝতে হবে তার কোন সমস্যা আছে।
বয়সের সাথে সাথে কিছু মানুষ শক্তিশালী হয়, আর কিছু মানুষ হয় সাবধানী। চেতনার যে-বীজ মানুষের ভেতর শৈশবে উপ্ত হয়, কেউ বয়সের সাথে সাথে তার বাস্তবায়নের জন্য শক্তি সঞ্চয় করেন, বিপর্যয় আর প্রলোভনের ঊর্ধ্বে উঠে নিজের বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করে যান। আবার কেউ বয়সের সাথে সাথে কেমন যেন মিইয়ে যান। তাঁরা কখনো সুশীল, কখনো মধ্যপন্থী, কখনো জাতির বিবেক।
দুটোর মাঝে অনেক মিল থাকা সত্ত্বেও স্বপ্ন পানির চেয়ে মূল্যবান। দুটোই বিনামূল্যে পাওয়া যায়, দুটোই মানুষ হেলায় হারায়। তবে পানির পরিশোধনাগার থাকলেও স্বপ্নের পরিশোধনাগার নেই। বাস্তবায়ন করতে হলে স্বপ্নকে বেহায়ার মত আঁকড়ে ধরে থাকতে হয়। বয়সের সাথে অনেক স্বপ্নের পঁচন ধরে, অনেক সদিচ্ছা হারিয়ে যায়। নির্লিপ্ততার জং ধরে যায় স্বপ্নগুলোর মধ্যে। কিছুদিন না যেতেই এককালের স্বপ্নবাজেরা হয়ে যান অক্ষম পরাজয়ের পূজারী। তেমনটা হয়ে যাওয়াই সাফল্য, হতে না পারাটা সমস্যা। অন্যথায় রাষ্ট্রযন্ত্র বিব্রত হবে, এর আপদকালীন শান্তিব্যবসায়ীদের বাজার নষ্ট হবে।
৩.২
আইনের প্রয়োগ আদালতে হলেও এর জন্ম মানুষের মনে। নিজের মনে প্রতিটি মানুষ জানে কোন কাজটি অন্যায় কিংবা কার ভোগবিলাস অন্যায্য। মানুষ দূরদর্শী হলেও ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নয়। সে-কারণেই অন্যায়ের প্রতিবিধান করবার জন্য আইনের সংশোধন হয়। রাষ্ট্র এতে বাধা দেয়, অহেতুক দুর্যোগের ভয়ে কেউ কেউ গালভরা বুলি ছড়িয়ে শান্ত হতে বলেন। ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রয়াস বা ইচ্ছাপ্রকাশকে এঁরা বাহুল্য মানেন। পাপাচারীর সানন্দ উপস্থিতি এঁদের কাছে সহনীয়। দু’চারটে চড়-থাপ্পড় মেরে দেওয়া কিংবা উকিল বাপের উপস্থিতিতে হালকা করে বকে দেওয়াই এঁদের কাছে সহজ সমাধান। এরপর যে বিধির হাতে বিধান ছেড়ে দিয়ে বালিতে মুখ গুঁজে সাহিত্যরস আস্বাদন করা যায়!
মাত্র সাঁইত্রিশ বছর গেল। গোলাম আযম নাগরিকত্ব পেয়েছে, শাহ আজীজ সংসদ ভবন চত্বরে শায়িত হয়েছে, কামারুজ্জামান মন্ত্রী হয়েছে, নিজামী রাজসিক অভ্যর্থনার সাথে কারামুক্ত হয়ে রাজনীতিতে ফিরেছে। রাষ্ট্র এদের ব্যাপারে সবসময়ই নীরব। ঝুঁকি নিয়েও এদের প্রাপ্য বিচারের দাবি তুলেছিলেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। জনতার আদালতে দেওয়া হয়েছিল মৃত্যুদণ্ড, ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল তাদের কুশপুত্তলিকা। বুঝিবা সাহিত্যচর্চায় ব্যাঘাত ঘটার ভয়েই সুশীলেরা জাহানারা ইমামের উপরও ছিলেন বিরক্ত।
আমি মনে করি না শহীদ জননীর সে-প্রয়াস শুধুই স্বামী-সন্তান হারানোর বেদনা থেকে ছিল। যে-মা হাসিমুখে সন্তানকে যুদ্ধে পাঠাতে পারেন, তিনি স্রেফ আবেগের বশবর্তী হয়ে সংগ্রামের ডাক দিতে পারেন না। তাঁর কাছে স্বাধীন বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় ছিল, মুক্তি সবচেয়ে বড় আরাধ্য ছিল। কোন দুর্যোগের ভয় তাঁকে বিরত করেনি তাই। সুবিধাবাদীদের দাপট সত্ত্বেও তিনি লড়ে গেছেন একা। স্বপ্নের সাথে আপোষ না করা এই মহীয়সী শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত বলে গেছেন যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির কথা।
দ্য গলের সেই গল্প মনে পড়ে। সাথে কাকতালীয় ভাবেই ’০৮-এ মনে পড়ে শহীদ জননীর শেষ চিঠির একেবারে শেষ কথাগুলো। ফর সার্টেইন, ভিকট্রি উইল বি আওয়ারস।
ছবিঃ উইকিপিডিয়া
মন্তব্য
হুমম...... আনন্দ দিয়ে শুরু , শপথ দিয়ে শেষ.
প্রথম আলোতে লেখার জন্য ধন্যবাদ। সদর দরজা দিয়ে ঢুকে যে আজ মন্তব্য করতে পারছি তার পেছনে সেটাও কারণ হতে পারে।
---------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
দেশ থেকে সরাসরি সচলে ঢোকা যাচ্ছে নাকি?
গুড নিউজ!!!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
ধন্যবাদ আপনাকেও। সদর দরজা দিয়ে ঢোকা যাচ্ছে তাহলে। জেনে ভাল লাগলো।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
There are those who fail, there are those who fall, there are those who will never win,
Then there are those who fight, for the things they beleive, these are men like you and me
- lyrics, Snows of NewYork, Chris De Burgh
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
বিশ্বাসের জন্য যুদ্ধের প্রসঙ্গ এলে কিন্তু নব্য-জামাতিদের কথাও চলে আসে। অবিরাম প্রোপাগান্ডার পর এখন একটা প্রজন্ম তৈরি হয়েছে যারা একেবারেই মগজধোলাইকৃত। এরা কিন্তু এদের বিশ্বাসের জন্য পথে নামতে, জীবন দিতে প্রস্তুত। এই বিষয়টা আলোচনার দাবি রাখে। অবতারণা করবো কোনদিন।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
সদর দরজা মানে? কি বলে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দ্য গলের তত্ত্ব মানলে, আমার সমস্যা তো এ জীবনে যাওয়ার নয়। চল্লিশ পেরিয়েছি সেই কবে, বদলেছি কি? এখনো তো বোকাদের দলেই থাকতে পছন্দ করছি।
এই পর্বে শূন্য আটের সঙ্গে যোগাযোগটা ঠিকমতো স্পষ্ট হয়নি। খুব তাড়াতাড়ি, আচমকা শেষ হলো যেন।
আরেকটা কথা। পূর্ববর্তী পর্বগুলির লিংক দিলে যাঁরা আগেরগুলি পড়েননি, তাঁদের সুবিধা হবে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
চল্লিশের চেয়ে আঠারোর কাছাকাছি আছি বলেই হয়তো আপনার মত "বোকা"-রাই আমার মত লোকেদের উৎসাহ!
কিছু জায়গা খুব একটা ব্যাক্তিগত করতে চাইনি। সে-জন্যই মোটা দাগের বিবেচনা থেকে লেখা, যাতে তথ্যের অভাবে ভোগা সাধারণ পাঠকের প্রতি অবিচার না হয়।
লেখার আয়তন দেখেই যদি পাঠক ভেগে যায়, সেই ভয়ে ছোট করে রেখেছি। বড় লেখাতেও পাঠক ধরে রাখার কৌশলটা তো আজো শেখা হল না আপনার কাছ থেকে।
স্রেফ অলসতা। পাশেই তো দেখা যায়, এই চিন্তা থেকে দেওয়া হয়ে ওঠেনি। দিয়ে দেবো।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
প্রথম আলোর আর্টিকেলটার জন্য আপনাকে এককোটি ধন্যবাদ...বিশেষ করে প্রথম লাইনটার জন্য।
---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল
আদিম পাপের পুরনো পাপী তো, অভিজ্ঞতা থেকেই লিখেছিলাম। কত ঘন্টা যে কেটেছে ই-কুসংসর্গে! পেছনে সমমনাদের সমর্থন থাকলে যেকোন লেখাই খুব সহজ হয়ে যায়। সে-কারণে আপনাদেরও ধন্যবাদ।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
মুগ্ধ হলাম কথাগুলো পড়ে। সিরিজ দৌড়াক।
হাঁটুপানির জলদস্যু
এটাও একেবারে অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। ছোটবেলায় ইচ্ছা ছিল পাইলট হব, নয়তো আইসক্রিম বিক্রি করবো। পঁচে গেছে স্বপ্নগুলো। স্রেফ ভয়ের কারণে, সাবধানী হবার চেষ্টার কারণে।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
ফর সার্টেইন, ভিকট্রি উইল বি আওয়ারস...
এই আশায় বুক বেঁধে আছি। লেখা দুর্দান্ত।
প্রবাসের কথোপকথনও জমে আছে। কবে যে একটু অবসর পাবো!
যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . (আবু হাসান শাহরিয়ার)
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
অনেক দিন হয় ঐ সিরিজেও হাত দেই না। মনে করিয়ে দিলেন। ধন্যবাদ।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
আমি সচল হই গত বছর জুলাইয়ের দশ তারিখ। বলতে গেলে একদম শুরুর দিকেই। এসেই প্রথম যে সিরিজটাতে হাত দেই, সেইটা আপনার প্রবাস সিরিজটা।
আবার শুরু করেন।
- বছরখানেক আগে "অন্য কোথাও" লেবানন আর প্যালেস্টিনের আত্মঘাতি বোমাবাজদের নিয়ে তুমুল হৈচৈ হয়েছিলো। তাদেরকে নৈতিকভাবে অনেকেই সাপোর্ট দিয়েছেন, তাদেরকে অমন একটা অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব, এমনটাই দাবী ছিলো তখন। কিন্তু এই দাবীকারীরা একবারও ভাবেনি বাংলাদেশের প্রেক্ষিত। সুফী ভাবধারায় বিশাল বিশাল সব মানবীয় পোস্ট পড়তো তখন। জনগণ হামলে পড়তো, আহা-উঁহু করতো দুঃখে, বেদনায়। কিন্তু একাত্তরে আমার যে চাচা খুন হলো, আমার যে খালা তাঁর সর্বস্ব হারালো, আমার যে ভাইয়ের হাত-পায়ের রগ কাটা হলো এই শতাব্দীতেই, এসবের উপলক্ষ্য আসলে সূফীরা চুপ করে যান। তখন কথা আসে সহাবস্থানের, পুরনোকে ভুলে নতুন করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভবিষ্যত বিনির্মানের।
আমি আশাবাদী থাকতে পারি না। যখন দেখি আমার পূর্বপুরুষের সঙ্গে বেঈমানি করা একেকটা প্রেতাত্মা পাজেরো করে ঘুরে বেড়ায়, আমি ক্রোধ চেপে রাখতে পারি না। আমি আমার রক্তের সঙ্গে বেঈমানী করতে পারিনা, শিখিনি এখনো হয়তো তথাকথিত আধুনিক কিংবা উত্তরাধুনিক মানসিকতার হতে পারিনি বলেই। আমি চিন্তা করতে পারি না আমার স্বজনের রক্তে রাঙানো যাদের হাত, তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়নের। আমি এখানে এসে ফিলিস্তিন কিংবা লেবাননের কোনো আত্মঘাতি বোমারুর সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পাই। যখন রাস্ট্র সেই ঘাতকদের নির্লজ্জ নিরাপত্তা দেয়, যখন কর্ণধাররা তাদের বিরুদ্ধে উৎক্ষেপিত অঙুলি কর্তনের ভয় দেখায়, তখন আমারও বুকের দীর্ঘশ্বাস রূপ নেয় ঝড়ো হাওয়ায়। আর সেই ঝড়ো হাওয়ার তান্ডবে যদি আমি বুকে মাইন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি সেই সকল হার্মাদদের সামনে, তখন হয়তো কোনো ঘাতক লালিত কোনো সুশীল কর্মকার আমাকে "সহিংস বিক্ষোভের" দায়ে অভিযুক্ত করবেন। তা তিনি এবং তারা করতেই পারেন, কারণ বাবা মায়ের সম্মান নিয়ে দালালি কিংবা বিকিকিনি করতে আমি শিখিনি, তিনি বা তারা হয়তো শিখে থাকবেন!
ইশতি, আপনার কোনো বক্তব্যের জন্য ডাউন ফীল করবেন না। আমি আছি আপনার সঙ্গে, এজ অলওয়েজ। আই উইল অলওয়েজ বি উইথ ইউ, দ্যটস এ প্রমিজ বাডি।
কথাটা বলার সুযোগ পাইনি কখনো, যখন বলার দরকার ছিলো। এখন বলে দিলাম।
[ডিসক্লেইমারঃ নানা জায়গায় নানা রকম ত্যানাপ্যাচানি আর বিশিষ্ট লেখকের পত্রিকায় লেখা কলামে অতিষ্ঠ হয়ে করা এই মন্তব্যের জন্য কেবল এবং কেবলমাত্র ধুসর গোধূলি দায়ী।]
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
না বললেও কোন সমস্যা ছিল না, ধূগো'দা। আমি জানতাম আমার সাথে আছেন অনেকেই। মানুষ হিসেবে প্রান্তিক দেখেই হয়তো অনেক মানুষের অনুভূতিগুলোর সাথে পরিচয় আছে। অভিজ্ঞতা থেকেই জানি যে শুভবুদ্ধির মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি, এবং তাঁরা প্রয়োজনের সময় পাশে দাঁড়াতে জানেন। ব্যাক্তিগত ক্ষোভ বা অনুভূতির ঊর্ধ্বে অনেকেই উঠতে পারেননি সংকটের সময়, তবে তার জন্য কারো উপর আমার ক্ষেদ নেই। সমমনাদের উপর রাগ করে থাকা আমাদের সবচেয়ে বড় ভুলগুলোর একটি। এই সময়টাতেই দেখুন না, আমরা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের লোকজন কাদা ছোড়াছুড়ি করছি, আর নব্য-রাজাকারেরা সাইডলাইনে বসে মজা লুটছে।
মুষ্টিমেয় কিছু পথভ্রষ্টের কাছে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি বাড়াবাড়ি হতে পারে, তবে অধিকাংশ মানুষই এদের প্রকোপ থেকে মুক্তি চায়। খোলামেলা ভাবে এই মত প্রকাশকে "পরিকল্পণা" বলে চালিয়ে দেওয়ার অপপ্রয়াস দেখে কিছু বলার থাকে না। এভাবে দেখলে তো "তোর অমুককে তমুক করি" বলা প্রতিটি মানুষ ধর্ষনের দায়ে দোষী!
সন্ত্রাসীদের বাড়াবাড়ি দেখতে দেখতে অতিষ্ট হয়েই মানুষ সজ্ঞানে র্যাবের "ক্রসফায়ার" মেনে নিয়েছে। একই ভাবে যুদ্ধাপরাধীদের আস্ফালন দেখতে দেখতে মানুষ এখন যে-কোন মূল্যে, যে-কোন পন্থায় এদের শাস্তি দেখতে চায়। এই আবেগ যদি রাষ্ট্রের কানে না যায়, তবে আমার মত নগণ্য ব্লগার কিংবা সচলায়তনের মত প্রগতিশীল প্ল্যাটফর্মকে শাস্তি দিয়ে কোন লাভ নেই (যদিও যতদূর জানি, সচলায়তনকে এই কারণে ব্যান করা হয়নি)। চাষী-নেতার কারাবাস বাস্তিল দিবস ঠেকাতে পারে নি, কোন হুকুমদারিও রাজাকারদের শাস্তি ঠেকাবে না।
সময়ের সাথে অনেকে বিস্মৃত হতে পারেন, কিন্তু আমি মনে করি না "সবাই মিলেমিশে" থাকার মত কোন কারণ আছে। যেই মুহূর্তে একজন শহীদুল্লাহ কায়সারের নাম বুদ্ধিজীবি নিধনের তালিকায় লেখা হয়েছে, সেই মুহূর্ত থেকে একজন মতিউর রহমান নিজামীর বেঁচে থাকার অধিকার নেই। এই সত্য সরাসরি প্রকাশ করতে আমার কোন দ্বিধা বা ভয় নেই। ভিন্নমত মেনে নেওয়ার ব্যাপারে আমি যতটা শিথিল, রাজাকারের মত মেনে না নেওয়ার ব্যাপারে ততটাই কঠোর।
হোক উগ্র কিংবা হঠকারী, ধূগো'র মন্তব্য ও আমার জবাব উভয়ের জন্যই আমিও দায়ী।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
ইশতিয়াক আর ধূসরের সাথে আছি।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ইশতি, যে কথাটি তুমি আবেগের বশে বলে ফেলেছিলে (!!!) আমি ঠান্ডা মাথায় সে কথাটিকে সমর্থন করি।
ফর সার্টেইন, ভিকট্রি উইল বি আওয়ারস.........নট নাও, বাট সুন।
কী ব্লগার? ডরাইলা?
কাজটা আমিও সমর্থণ করি। ঠান্ডা মাথায়ই করি। আবেগের বশে বলা অংশটুকুর সমস্যা একটাই, আমার নিজের পক্ষে বাস্তবায়ন সম্ভব নয় এমন একটা কাজের কথা বলেছি। এক দিক থেকে ভাল হয়েছে, অনেক মুখোশধারীর স্বরূপ চেনা হল এই সুযোগে। আমি পুরনো দিনের বা পুরনো ঘরানার মানুষ দেখেই আমার হিসেবগুলো খুব সহজ-সরল -- নিজামী বা অন্য কোন যুদ্ধাপরাধীর বেঁচে থাকার অধিকার নেই। এবার তাত্ত্বিকেরা নিজেদের মত আইন তৈরি করতে পারেন, আমি শুধু এদের মৃত দেখতে চাই।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
@ ধুসর গোধূলি
আপনার বক্তব্যে সম্পূর্ণ সহমত।
[ডিসক্লেইমারঃ এটা একান্তই আমার মন্তব্য এবং এই মন্তব্যের জন্য কেবল এবং কেবলমাত্র সংসারে এক সন্ন্যাসী দায়ী।]
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ফর সার্টেইন, ভিকট্রি উইল বি আওয়ারস...
ধূ.গো'র মন্তব্য আর আপনার জবাব দুটোই সমান রক্তক্ষয়ী সময়ের দাবি। আমরা আশা আর প্রত্যাশার মধ্যে ডুবে আছি বলেই কেবলই হতাশ হচ্ছি আর সময় বয়ে যাচ্ছে। যখন সব কিছু শূণ্য মনে হয়, যখন কোথাও কিছু ঘটছে না মনে হয় তখন.........কাউকে না কাউকে শুরু করতে হয়। শহীদ জননী তা-ই করেছিলেন। এখন কারো জন্য অপেক্ষা করব?না শুরু করে দিয়ে বলব...........'আই অ্যাম দ্যাট অলটারনেটিভ ওয়ানম্যান আর্মি,লেট স্টার্ট.....'
----------------------------------------------------------
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
শহীদ জননীর শেষ চিঠির একেবারে শেষ কথাগুলো। ফর সার্টেইন, ভিকট্রি উইল বি আওয়ারস।
মে আই আস্ক দেন, হোয়েন??? শহীদ জননী নিজে দেখে যেতে পারেননি ভিক্টরী, মাথায় কেস নিয়ে মারা গেছেন, তার ছেলেও এখনো দেখেনি ভিক্টরীর মুখ, তার নাতীর দেখার সম্ভাবনাও খুব কম।
দিকে দিকে হায়েনারে ফেলিছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
তাঁর ছেলে দেখে যেতে পারবেন কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নই। যদি না পারেন, তবে সেই ব্যর্থতা কিন্তু আপনাদের প্রজন্মের সবার। ঠিক যেমন তাঁর নাতি দেখে যেতে না পারলে সেই ব্যর্থতা আমার প্রজন্মের সবার। শহীদ জননী হিসেবে যাঁকে জেনেছি, তাঁর অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব তো আমাদের সবার। এখনও হতাশ হতে নারাজ আমি। পরাজয়ের সূচনা কনভিকশনে। এজন্যই প্রত্যয়ী থাকার কোন বিকল্প নেই।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
ইশতি, ধুগো, হিমুর পর আমিও আছি। নিঃশব্দে বা সশব্দে।
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
শহীদ জননীর মৃত্যূ নেই
মুক্তিযুদ্ধের শেষ নেই!
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
আমিও আছি। সজ্ঞানেই।
নতুন মন্তব্য করুন