– হে, ইশ! আর কতক্ষণ উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরার পর আমাকে চিনবে?
: খুবই দুঃখিত, ডন। একটু বেখেয়াল ছিলাম। ভেবেছিলাম তুমি ঠিক সাড়ে এগারোটায়ই আসবে। সেজন্য বাইরের দিকেই নজর ছিল। খেয়াল করি নি যে এসে বসে আছো।
– কোন ব্যাপার না। আমি মজা দেখছিলাম। আই ওয়াজ গোয়িং টু লেট ইউ ওয়ান্ডার অ্যাবাউট সাম মোর।
: দু’বছর পর আবার এলাম তো, এতদিনের চেনা লুই’স ক্যাফেও কেমন যেন অচেনা ঠেকছিল। শহরটা কত বদলে গেছে। এই সামনেই তো বিশাল একটা শপিং এরিয়া ছিল, এখন দেখি সব ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
– হ্যাঁ, গত দু’বছরে অনেক দালান-কোঠা হয়েছে। শহরটা খাপছাড়া রকম আধুনিক হয়ে গেল চোখের পলকে। কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ। ক্যাটরিনার পর নিউ অর্লিয়েন্স তার সব জৌলুস হারালো, আর এদিকে ব্যাটন রুজে শুরু হল ঠিকাদারির ধুম।
: এটাই জগতের নিয়ম। তবে এবার দেখলাম গুস্তাভ অনেক গাছ-পালা ফেলে দিয়ে গেছে। আগে কত সবুজ ছিল ব্যাটন রুজ। কচু নামে একটা খাবার আছে আমাদের দেশে। লুইজিয়ানা বেড়াতে এলেই লোকে কচু তুলে নিয়ে যেতো। প্লেন থেকে তাকালে সবুজ সমুদ্র মনে হতো। এখন গাছ কমে গেছে অনেক। কিছু গেছে প্রকৃতির ঘূর্ণিঝড়ে, কিছু গেছে কংক্রিট মিক্সারের ঘূর্ণিতে।
– এটাই স্বাভাবিক। কোথাও কমতি হলে কোথাও বাড়তি হবেই। তুমি তো কিছুটা বদলেছো। শুকিয়ে গেছো আগের চেয়ে, লুকস-ও একটু ভিন্ন।
: ভেতরের পরিবর্তনের তুলনায় বাইরেরটুকু কিছুই না। এই দু’বছরে অনেক কিছু শিখলাম। অনেক নাইভ ছিলাম আগে। বিশ্বাস করে ঠকতে ঠকতে টনক নড়েছে।
– চিয়ার আপ। এটা কোন ব্যাপার না। ইউ আর নট ইভেন টুয়েন্টি ফাইভ।
: আই অ্যাম, অ্যাকচুয়ালি।
– সো ইউ জাস্ট টার্ন্ড টুয়েন্টি ফাইভ…
: মেক দ্যাট টুয়েন্টি সিক্স অ্যান্ড আ হাফ। এনিওয়ে, ইউ ওয়্যার সেইং…
– আমার এই শিক্ষাটা হয়েছিল ৪৭ বছর বয়সে। আমার অধীনস্থ লোকজন মিলে ভোট দিয়ে আমাকে বাদ দিয়ে দিলো। আমি তখন এলএসইউ-তে কাজ করি। কী এক কারণে টাকা কিছুটা কমে গেছে ডিপার্টমেন্টে। ওরা সবাই মিলে ঠিক করলো যে আমাকে বাদ দিয়ে আমার বেতনের টাকাটা সবাই মিলে ভাগ করে নেবে।
: এটা তো এমন ঘটনার জন্য খুবই বাজে সময়। ওই বয়সে মানুষ সংসার গুছিয়ে বসে, জীবনের শেষ অংশটার জন্য প্রস্তুতি নেয়।
– আমার দুই মেয়ের তখন ভার্সিটি শুরু করার সময়। আচমকা এক সকালে শুনি আমার চাকরি নেই। আমি আর আমার স্ত্রী তখন একেবারেই হতভম্ব। গতকাল বিকেলে যারা আমার সাথে এক সাথে বাজার করলো, লাঞ্চ খেলো, আমার মেয়েদের সাথে আহ্লাদ করলো, তারা আমাকে সকালে বলে যে আমার চাকরি নেই। উই আর স্যরি, ডন, বাট দেয়ার ইজ সামথিং উই গটা ডু।
: দুঃখজনক, খুবই দুঃখজনক। কী বলবো বুঝতে পারছি না।
– দুঃখের কিছু নেই। কিছু লোক খুব অমানবিক আচরণ করেছিল আমার সাথে। যা করেছে, শুধু তা নিয়েই রাগ ছিলো না। ওরা আমার চোখের দিকে তাকাচ্ছিলো না পর্যন্ত। আই ওয়াজ অ্যাংরি, আই ওয়াজ ভেরি অ্যাংরি।
: তোমার রাগ সম্পর্কে আমার ধারণা আছে। আড়াই বছর তোমার অধীনে কাজ করেছি, খুব একটা কম সময় তো না।
– আরে নাহ, তোমার সাথে তো আমি রাগ করিনি কোনদিন। অন্যদের উপর করেছি অবশ্য। তবে ঐ লোককে আমি একেবারে ধরাশায়ী করে ফেলতে পারতাম। দেয়ার উড বি টু ব্লোজ। ওয়ান ইজ মে হিটিং হিম, দি আদার ইজ হিম হিটিং দ্য ফ্লোর।
: এই বয়সেও তোমার যা শরীর, তুমি অনায়াসেই পারতে, সে-নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই।
– আমি এখনও নিয়ম করে জিম-এ যাই। তাছাড়া জীবনভর পরিশ্রম তো আছেই। আমার শুরুটা কিন্তু খুব অনাড়ম্বর। ওকলাহোমার একটা পাড়াগাঁয়ে আমার জন্ম। বাবার সাথে কাজে হাত লাগাতে হতো। ছেলেবেলায় গরু চরিয়েছি, কাঠ কেটেছি। সেখান থেকে লেখাপড়া করে উঠে এসেছি এতদূর।
: আমার মত ফার্স্ট জেনারেশন ইমিগ্র্যান্টদের জন্য এই কাহিনীগুলো খুব প্রেরণাদায়ক। সবাই মনে করে এখানে ডলার গাছে ধরে, নয়তো যুদ্ধ করে এত উন্নতি হয়েছে। একটা দেশ গড়তে যে তোমার মত কত শত মানুষ প্রয়োজন, সেটা কেউ বোঝে না।
– সেই লোকগুলো এখন আর লুইজিয়ানায় নেই। একজন ওকলাহোমায়ই আছে বলে জানি। আমি তখন বলেছিলাম যে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় খুব ভাল কিছু বন্ধু আছে। আমাকে বাদ দেবে দাও, আমি শুধু কিছু ফোন কল করবো এরপর। করেছিলামও। এই অন্যায়ের জন্য আমি এল-এস-ইউ’কে স্যু করতে পারতাম। আই কুড ওউন দ্য ম্যাসকট, কিন্তু আমারই এক কাছের বন্ধুকে পাঠালো আমার কাছে। অনুরোধ করলো যেন আমি আইনী পথে না যাই, ওরা ব্যাপারটা নিজের মত মীমাংসা করবে।
: তাহলে তো বেশ ভাল ভাবেই উৎরে গেলে শেষ পর্যন্ত। ঝামেলা আরও অনেক দূর গড়াতে পারতো।
– তা তো পারতো অবশ্যই। তুমি বলেছিলে যে তুমি অ্যাকাডেমিয়ায় থাকার চিন্তা করছিলে, তাই বললাম। দু’টা কথা মনে রাখবে সব সময়। প্রথমত, এমন কিছু পড়বে যাতে সত্যিই আগ্রহ পাও। আদারওয়াইজ ইউ ও’ন্ট হ্যাভ আ রিজন টু ওয়েইক আপ এভরি মর্নিং। দ্বিতীয়ত, অ্যাকাডেমিয়ায় কাউকে বিশ্বাস করবে না। আমরা আগে অনেক দান-খয়রাত করতাম। অথচ ১০ বছর পরও দেখি, পিপল ইউ আর হ্যাভিং কফি উইথ ও ইউ মানি! মানুষ খুবই বিচিত্র।
: দুটোই আমি খুব মূল্য দিয়ে শিখেছি। এই যে রিসেশন, চাকরির বাজারে খরা, এরপরও টিকে আছি নিজের আগ্রহের কিছু নিয়ে পড়েছি বলে। হয়তো এই লাইনে টাকা-পয়সা পাইনি, তবুও মনে শান্তি আছে। দেখি, পিএইচডি’টা ঠিক মত সারতে পারি কিনা। আর অ্যাকাডেমিয়া কেন, কোন কিছুতেই কাউকে আর অন্ধভাবে বিশ্বাস করি না। আগে আগ বাড়িয়ে প্রতিটা মানুষের উপর কিছু বিশ্বাসের বিনিয়োগ করতাম, দেখতাম সেই বিশ্বাসের মর্যাদা কীভাবে দেয়। কেউ মর্যাদা না দিলে তাকে আর কাছের মানুষ মনে করতাম না। এখন কেউ বিশ্বাস অর্জন করে নিতে পারলে নিক, আমি সেধে বিশ্বাস করে ঠকতে নারাজ। কাছের মানুষের বিশ্বাসঘাতকতা খুব খারাপ।
– এত হতাশাবাদী হয়ে গেলে কবে তুমি? নাহয় কিছুটা সময় নিজের ইচ্ছে মত যায়নি, তাই বলে এভাবে দেখতে হবে কেন?
: এই যে গত দু’বছর কেমন এলেবেলে কাটলো। গ্র্যাজুয়েট স্কুলে গিয়ে যেন এতিমখানায় পড়লাম। অ্যাডভাইজার জুটলো যা-গরু-চড়ে-খা জাতীয়।
– এটা কোন ব্যাপার না। ইট ওয়াজ দেয়ার লস, নট ইওরস। সময় হলে দেখিয়ে দিও। শিক্ষা ব্যাপারটা এখন ব্যবসা হয়ে গেছে। নির্দিষ্ট করে বললে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে। তুমি যেমন গুরু-শিষ্য সম্পর্ক আশা করছিলে, সে-ধরনের অ্যাপ্রেন্টিসশিপ আর নেই। শুধুমাত্র টিয়ার-থ্রি’র কিছু স্কুলে গেলে এমনটা পাবে। সেখানে কামড়া-কামড়ি করে ফান্ড আনার চেয়ে নিজের ভাইকে শেখানোটা জরুরি বেশি। তবে সেটা নিয়ে তো এত বিরক্ত হলে চলবে না। নিজের কাজ করে যেতে হবে।
: নট দ্যাট আই অ্যাম প্রাউড অফ ইট, কিন্তু এই সিনিজম’টা এখন অস্তিত্বের অংশ হয়ে গেছে।
– হোল্ড অন আ মিনিট। টাইম-আউট। মাসে কয় বেলা খাও তুমি?
: দিনে তিন বেলা করে ত্রিশ দিনে ৯০ বেলা বলতে পারো।
– টুকটাক স্ন্যাক খাও না?
: অবশ্যই, তা তো থাকেই কিছু না কিছু।
– তবুও কি তুমি কখনও না কখনও দিস ইজ দ্য ওয়ার্স্ট মিল অফ মাই লাইফ বলো নি?
: সে তো হরদমই বলি।
– ওয়ান মিল আউট অফ অ্যাবাউট আ হান্ড্রেড ইজ ব্যাড, অ্যান্ড ইউ আর স্টিল কমপ্লেইনিং! এটা কি ঠিক হল? শ’এ একটা তো ভালো-মন্দ হতেই পারে। তুমি ৯০ বছর বাঁচবে জীবনে। নাহয় সেই লম্বা জীবনের দু’টা বছর একটু খারাপই গেল। এটা তো জীবনেরই অংশ। এটাকে এভাবে দেখার কিছু নেই। বাকি ৮৮ বছরের মধ্যে থেকে সেরাটা বের করে আনো।
: ইউ শিওর নো হাউ টু লিফট আ ম্যান’স স্পিরিট, ডন। কথাটা মনে থাকবে। এভাবে ভাবিনি কখনও। তোমার নাতি-নাতনিরা কেমন আছে? অনেক বড় হয়ে গেছে নিশ্চয়ই। মাত্রই দু’বছর পর এলাম, তবু কোনো পিচ্চিকে চিনতে পারি না আর। সবাই এক মাথা পরিমাণ বড় হয়ে গেছে।
– আমার নাতনি ইসাবেলা’র কথা তোমার সবচেয়ে বেশি মনে থাকার কথা। ওর বয়স এখন পাঁচ বছর। প্রি-ম্যাচিউর ছিল, তাই কোমড়ের হাড় বাড়েনি, জানোই তো। ডাক্তাররা ওর উপর অনেক গুলো অপারেশন করবে সামনে। হাড়গুলো জায়গা মত বসাবে।
: এতটুকু বয়সে কী কষ্ট। ভাবলেই গা শিউরে উঠে।
– ওর কিন্তু তেমন বিকার নেই। ও টাবের উপর আরাম করে বসে থাকে। দুই হাত মাথার পেছনে দিয়ে শুয়ে শুয়ে পা দুলায়। দেখে বোঝার উপায় নেই যে ওর এত বড় সমস্যা আছে শরীরে। ওর বাবা খুবই ধারালো বুদ্ধি রাখে। ডাক্তারদের জেরা করে করে বের করেছে কী করতে যায়। একটা পর্যায়ে দেখে যে ডাক্তারের নিজেরই স্পষ্ট ধারণা নেই কী করবে, জটিলতা হলে কীভাবে সামলাবে, ইত্যাদি নিয়ে। হি ইজ ওয়েইটিং ফর অ্যানাদার ওপিনিয়ন নাউ।
: বোঝো কীভাবে এটা? এই যে, লোকজন কিছু না জেনেও মুখে মুখে হাতি-ঘোড়া মেরে ফেলে, এদের ধরো কীভাবে তুমি?
– যা বলছে, সেটার চেয়ে যা বলেনি সেটার উপর মনোযোগ দেবে বেশি। তোমার সাথে যখন কথা বলতে আসবে, তখন দে আর দ্য ওয়ানস ইন কন্ট্রোল অফ দ্য কনভার্সেশন। এই ব্যাপারটা থেকে বের হয়ে আসবে। খুব মনোযোগ দিয়ে শুনবে কী বলছে, এরপর কিছু একটা উছিলা দিয়ে সরে যাবে। এক বেলা সময় নেবে। ভেবে দেখবে কী কী বলেনি তোমাকে। পরের বেলায় যখন কথা হবে, তখন ইউ উইল বি দ্য ওয়ান ইন কন্ট্রোল অফ দ্য কনভার্সেশন।
: রিডিং বিটউইন দ্য লাইনস। শিখতে পারলাম না জীবনে।
– অবশ্যই শিখবে। সময়ের সাথেই হবে। বয়স তো কম হলো না আমার। এখন এরকম কোন ফাঁক-ফোকর পেলেই আমি তার জন্য ফাঁদ পেতে বসে থাকি। একটা ‘উম’ দিয়ে বাক্য শুরু করলেই চেপে ধরি।
: এটা কেমন কথা আবার?
– ইফ ইউ স্টার্ট আ সেন্টেন্স উইথ ‘উম’, দেন ইদার ইউ ডোন্ট নো হোয়াট ইউ আর টকিং অ্যাবাউট, অর ইউ আর জাস্ট লাইং।
: এটা খেয়াল রাখতে হবে। আমার তো বাক্যের শুরুতে উম-আম করার স্বভাব অনেক পুরনো।
– বিলটা এদিকে দিও। মাই সান ইজ স্টিল আ স্টুডেন্ট, হি কান্ট পে।
: আমি জীবনের একেবারে শেষে গিয়ে একটা বই লিখবো, বলেছিলাম তোমাকে? সেখানে আমার দেখা কিছু অসামান্য মানুষের কথা লেখা থাকবে। তোমার জন্য একটা চ্যাপ্টার থাকবে সেখানে।
– এভাবে ভাবার কোন দরকার নেই। আমি ১১৬ বছর বাঁচবো। তোমাকে যেন ঠিকঠাক দেখি ততদিন। আমি এখন লেখালেখি করছি কোস্টাল এরিয়াগুলো নিয়ে। আজ থেকে ৬০ বছর আগে এই সমুদ্রতীর কেমন ছিল তা নিয়ে সাক্ষাৎকার নিচ্ছি সবার। তাঁদের জীবদ্দশায় কী পরিবর্তনগুলো এসেছে, তা নথিবদ্ধ করছি। পাশাপাশি সবাইকে একটা বাড়তি প্রশ্ন করছি। হোয়াট ডিড ইওর গ্র্যান্ড ফাদার টেল ইউ হোয়েন ইউ ওয়্যার ইয়াং।
: অপেক্ষায় থাকলাম বই বের হওয়ার। ছবি তুলে রাখি তোমার সাথে একটা। স্মৃতিগুলো আকার পাবে।
– অবশ্যই। ঐ মেয়েটাকে বলি ছবি তুলে দিতে। ক্যান ইউ টেক আ পিকচার অফ আস, প্লিজ। ইউ গেট এক্সট্রা পয়েন্টস ফর ফিগারিং আউট হু ইজ দ্য ওল্ডেস্ট!
মন্তব্য
ঈস্তিয়াক ড়ঊফ
পড়িলাম। ভালৈ লাগিল
---------------------------------------------------------------------------
No one can save me
The damage is done
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
পড়িবার জন্য ধন্যবাদ। পড়িয়াছেন জানিয়া ভাল লাগিলো।
ভালো লাগলো
ডন কি তোমার এডভাইজার ছিল আন্ডারগ্র্যাডে?
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
না, ডন ছিল আমার বস। আন্ডারগ্র্যাড করার সময় ওর অফিসেই কাজ করতাম। অসামান্য মানুষ। এখানে আছে ডনকে নিয়ে আরও কিছু কথা।
ভাল্লাগলো। অনেকদিন পরে আপনার ব্লগ পড়লাম। মাঝখানে গানবিষয়ক জিনিসগুলো খুব একটা ভালো করে পড়া হয়নি।
তাই বলি পিপি'দাকে দেখি না কেন মন্তব্যের ঘরে। এবার জানা গেলো কারণ। দেখি, আপনার জন্য কিছুদিন গানবন্দী বাদে কিছু দেওয়া যায় কিনা।
সিরিজের এই অংশটার প্রতিটি কথাই সত্যি। প্রমাণস্বরূপ ছবিটাও জুড়ে দিলাম।
লেখা ও ছবি ।
তবে শুধু কথোপকথনের চেয়ে একটু বর্ণনাময় লেখা হলে বোধহয় দৃশ্যকল্পগুলো আরো ফুটে উঠতো। ধন্যবাদ।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
আলসেমি লাগে যে...
এই সিরিজের প্রথম লেখাটায় এরকম একটা ফর্ম দাঁড়িয়ে গিয়েছিলো। এরপর আর তা বদলানো হয়নি। মাথায় থাকলো, দেখি কী করা যায়।
খুব ভালো লাগলো পড়ে।
ইশতিয়াক রউফের অনেক অনেক ভালো দিকগুলোর মধ্যে ধৈর্য,স্থৈর্য, চিন্তা চেতনায় সুসামঞ্জস্য, ভারসাম্য, সৌষম্য ইত্যাদির পাশাপাশি গুণী মানুষদের প্রতি পক্ষপাতহীন সম্মানবোধ আমার খুব চোখে পড়ে, দিনকে দিন এই গুণটা দুর্লভ হয়ে যাচ্ছে । পৃথিবী তার কক্ষপথে ঠিক ঠাক মতো চললে অনেক দূর যাবে এই ছেলে!
তবে অল্প বয়সেই জীবনের বোধ-বিশ্বাসকে একটা নির্দিষ্ট ছাচে ফেলে দেয়া একটা সর্বগ্রাসী ভুল, জীবনের রংময়তা ঢেকে ফেলে হৃদযন্ত্রকে ব্লাড পাম্পার মেশিন বানিয়ে ফেলে সেটা, মাঝে মাঝে মানুষকে বিশ্বাস করে ঠকা ভালো, চরম ঠক না হলেই হয়। চলতে চলতে শেখার চেয়ে ভালো আর কিছু হয় না।
আমি বেশি দূর যেতে চাই না। বহুদিন ধরে দশ হাজার মাইল দূরে বসবাস। শুধু ঘরে ফিরতে পারলেই খুশি।
বিশ্বাস হল খুব বাজে একটা বদভ্যাসের মত। না চাইলেও চলে আসে। ধাক্কাগুলো খেয়েছি দেখেই তো বিশ্বাস করতে ভয় হয়।
ক'দিন অনিয়মিত সচলে, এই লেখাটা পড়লাম, খুব ভালো লাগলো।
অনিয়মিত? কে বলে? আপনি না নতুন কমিক আঁকছেন? (পুরাই আন্দাজে ঢিল। )
অচিরেই হয়তো ফোন দিতে পারি দেখা করবার জন্য।
না রে ভাই, এখন পুরো ফাঁকি চলছে (আর কী যে ভালো লাগছে কী বলবো)
কয়েকটা সিনেমাও দেখলাম, লিখতে ইচ্ছা হচ্ছে না কিছু। সচলে ঢুকে শুধু পড়ি, কমেন্ট করতেও খাটনি লাগে।
নিশ্চয়ই ফোন করুন, দেখা করা গেলে তো আরো ভালো।
যেমনটা পরিকল্পনা করেছিলাম, তার বেশ খানিকটা আগেই হয়তো সাউথ ক্যারোলিনা যাচ্ছি। কোন এক ফাঁকে সাক্ষাৎ সেরে ফেলা যাবে নে। সেই ইচ্ছা থেকেই বলছিলাম যে অচিরেই হয়তো ফোন করতে পারি।
আমার অনেক দিন হয় কোন মুভি দেখা হচ্ছে না। গতকাল স্টার ট্রেক দেখলাম ভাইয়ের সাথে। দুর্দান্ত লেগেছে। সাই-ফাই হিসেবে দারুণ, তবে স্টার ট্রেক হিসেবে কেমন ঠিক বুঝছি না। আরেকটু গুরুগম্ভীর ছিল সিরিজটা। আপনার রিভিউ-এর অপেক্ষায় রইলাম।
ভালো লাগলো পড়ে
...........................
Every Picture Tells a Story
ভালো লাগলো জেনে।
খুব ভালো লাগলো লেখাটা
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
নাশু ভাইয়ের উদারতা সম্পর্কে ধারণা আছে।
বিদেশী...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এক শব্দের দারুণ মন্তব্য!
ওয়ান মিল আউট অফ অ্যাবাউট আ হান্ড্রেড ইজ ব্যাড, অ্যান্ড ইউ আর স্টিল কমপ্লেইনিং!
অসাধারণ বাক্যটা। মাথার মধ্যে পিঁপড়ার মত ঘুর ঘুর করছে। আর কুট কুট করে কামড়াচ্ছে। আজকেই সকালের নাশতা করতে গিয়ে মনে মনে ভাবছিলাম পুরাহপ্তায় এত বাজে নাশতা করিনি।
***
২৫ পেরিয়ে গেল, ভেবে দেখলে স্বল্পায়ু মানুষ হিসেবে প্রায় অর্ধেক শেষ। এবং এই অর্ধেকই আসলে অধিক সুখকর ছিল, যেটা যাপনের সময়ে কদাচিৎ মনে পড়তো। এখন বাকি পথে কেবলই সেই স্ট্যান্ডার্ডটাকে সম্বল করে নিঃশ্বাস এবং প্রশ্বাস।
***
অনেকদিন পরে ফিরলাম, মাঝে দু'টা মাস। ফিরেই তোর লেখা! মন ভাল হয়ে গেল মন খারাপ লেখাটা পড়ে। দেশে আসবি কবে সামনে?
এই উক্তিটার কথা সবার সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্যই এত বড় লেখায় হাত দেওয়া। তুই একদম মোক্ষম জায়গাটায় হাত দিয়েছিস।
অনেক রকম ব্যক্তিগত কারণে আমার ভেতর খুব হতাশা ঢুকে গিয়েছিল গত কিছুদিনে। আন্ডারগ্র্যাডের দিনগুলোয় আপবিট থাকতে পারার পেছনে ছিল এই মানুষটার অনেক বড় ভূমিকা। এবারে লুইজিয়ানা এসে ডনের সাথে দেখা করা আমার জন্য খুব জরুরী ছিল। অনেক দিনের জন্য একটা বুস্ট নিয়ে গেলাম। ১০নং আর এই পর্বের উদ্দেশ্য ছিল শুধু ডনের সাথে সবাইকে পরিচিত করে দেওয়া।
আমি তো হাইবারনেশনের জন্য তোর উপর মেজাজ খারাপ করে বসে ছিলাম। যাক, ফিরলি তাহলে। এবার লেখা দে কিছু!
লেখা আসছে না আমার। মাঝে কয়েকটা লিখলাম, এখন কিছু লিখতে বসলেই দু'লাইন পরে সেটাকে ঘ্যাচাং করে দিতে হয়। এবং একইসাথে অবস্থাটা খুব গুমোট লাগতে থাকে। দেখি কিছু আসে কী না।
তোর লেখাটা আরও একবার পড়লাম। বড়ো ভালো লেখা!
আহা! মধু!
দোস্ত, দার-রুন লাগলো রে লেখাটা। পনের তারা। এ্যাক্কেরে সিচুয়েশনের মাঝখানে হ্যাঁচকা টান দিয়া নিয়ে গেছছ। আহ। লাঞ্চ খাইয়া এরকম লেখা পইড়া চা খাওয়ার নিড আর থাকলো না।
তোর শালা কত লাইফ এক্সপেরিয়েন্স! নাহ, তাও তো শেয়ার করস। এই লোকটার আর তোর ছবিটা দে না, অন্তত আমারে পারসোনাল মেইল তো কর! আর এর পর থিকা সিনারিওটা সেট করতে এক প্যারা নিবি, আরো ইমারশন বাড়বে।
দারুন, মজাদার, শিক্ষনীয়। থ্যাংকস! এইরকম লেখা দিতে থাকলে দেশে না আইলেও হইবো এই ব্রেকে, তবে পারলে একটু ঘুইরা যাইস আর কি!
দিবো মেইল করে। ডন'কে যে দেখেনি, তার জগতের কিছু একটা দেখা বাকি রয়ে গেছে। কী অসামান্য প্রাণশক্তি, আর কী উদার একজন মানুষ। বট গাছের মত করে নিজের আশেপাশের মানুষগুলোকে আগলে রাখে ডন। ভুল-চুক করলে শাসন যেমন করে, তেমনি ক্ষুদ্রতম প্রয়োজনে সবটুকু উজারও করে দেয়। এই লোকটার কাছে যে কত্ত কিছু শিখেছি!
ডনের মুখে "মাই সান" শুনে কেমন যে অনুভূতি হয়েছিলো...
মিয়া তুমি আইলানা। তোমার জন্য কত কিছু রান্না করছিলো!
ঈমানে কইতেছি, পূর্ণ ঈমানের সহিত আসতে গেসিলাম, কিন্তু বাপজান যেমন পোক্ত ঈমানের সাথে প্লেনে আসতে বললো, তাতে আমার পূর্ণ কিন্তু দুর্বল ঈমান টলে উঠলো...
আপনার জীবনের "দি এন্ড" এর আগেই একটা জীবনী টাইপের বই বেরুবে সন্দেহ নেই। এতো কাহিনীর সাথে যার বসবাস তার জন্য এটা খুবই সম্ভাব্য।
সেই বইয়ের পাঠক হবার অপেক্ষায় রইলাম।
কথোপকথন এর ধরণটা ভালো লাগে। দৃশ্যপট দাঁড়িয়ে যায় সুন্দরভাবে। খুব ভালো। বাহবা!
গানবন্দী আর কথোপকথনের মধ্যে দিয়েই তো চলমান, তরতাজা জীবনী হয়ে যাচ্ছে। এটাই নাহয় কোন সময় সংকলিত করে ফেলবো। আপনারা তো রইলেনই সৃষ্টির শুরু থেকে পাঠক হিসেবে।
তবে হ্যাঁ, এই গতিতে ঘটনা ঘটতে থাকলে আরও মাল-মশলা পাওয়া যাবে। সমস্যা অন্য জায়গায়। অতিরিক্ত বাস্তবানুগ লেখা লিখতে লিখতে সৃজনশীল কিছু লেখার ইচ্ছা/ধার/শক্তি কমে যাচ্ছে অনেক।
ধরনটা ভাল লাগে জেনে খুশি হলাম। আমি ইচ্ছা করেই অনেক ফাঁক-ফোকর রাখি, যাতে পাঠক প্রয়োজনে দ্বিতীয় বার পড়ে নিজের মত করে মাংস বসিয়ে নেন। আমি শুধু কাঠামোটা দিয়ে ভেগে যাই।
ভালো লাগলো .....................
অনেক ধন্যবাদ।
তোমার গদ্য যে ভালো সেটা সবাই জানে। কিন্তু তোমার ধারাবাহিক এই রচনার উপস্থাপনা ভঙ্গিটা কিন্তু বড্ড গোলমেলে ইশতিয়াক। ভদ্রলোকের সঙ্গে তুমি নিশ্চয়ই ইংরেজিতেই কথা বলেছো। তাই যদি হবে তবে লেখার ভেতরে আবার ইংরেজি ক্যানো?ইংরেজীর ভেতর ইংরেজি!কনফিউজিং......
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
গোলমেলে আমার নিজের কাছেও, তবে তা অন্য কারণে। বাংলা আর ইংরেজি'র মধ্যে নব ঘুরিয়ে কোথায় থামলে ঠিক হবে, তা হিসেব করতে ঘাম ছুটে যায়। শেষ পর্যন্ত তাই কিছুটা বেংলিশ-এই থিতু হয়েছি।
ইংরেজির কিছু কনোটেশন অনুবাদে ঠিক তুলে আনতে পারি না আমি। সেজন্যই অনেকটা বাগধারা ধাঁচের এই কথাগুলো তাই রেখে দেই। বাঙালিদের সাথে কথা হলে এই সমস্যা হয় না, কিন্তু বিদেশিদের বেলায় কিছু কিছু রেখে দেই যাতে মানুষগুলোর কথার 'সিগনেচার'টা থাকে।
প্রায়ই ভাবি ইংরেজি শব্দগুলো রোমান হরফে দেই, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক টানে লিখা যাওয়া এবং দর্শনদারি বিচারে বাংলায়ই লিখি। উপদেশ আছে কোন? অনেকেই বলেন একটু বর্ণনা জুড়ে দিতে। সেটা করবো কিনা ভাবছি। ইংরেজির ব্যাপারেও প্রয়োজনে কিছুটা বদলে নিলাম।
খুবই দারুণ লাগল লেখাটা।
মানিক ভাইয়ের মতো বিশাল আঙুল দেখাতে ইচ্ছা করছে। আপাতত ছোটটাই দেখাই, কয়েকগুণ ম্যাগনিফাই করে নিও-
ধন্যবাদ। আঙুল দেখালা ভালো কথা। আগে বুঝে নেই কোন হাত, এরপর ম্যাগনিফাই করছি।
তোর এই লেখাগুলোর এই জিনিসটা সবচেয়ে ভাল লাগে...শুধু কথা বলে যাওয়া... মনে হয় দেশ কাল এর ঊর্ধ্বে দুটো মানুষ এক হয়ে মহাকালের একটা টুকরো আমাদের দিয়ে যাচ্ছে। আগে পরের কিছু জানা নেই, তেমন কোন বন্ধনও নেই... অথচ কোথায় যেন একটা টান, একটা নিজেকে খুঁজে পাওয়ার মত ব্যাপার থেকে যায়। একেকটা মানুষ একটা নতুন চরিত্র হয়ে ওঠে।
ব্যক্তিগত মতামত: বর্ণনা ছাড়াই কেন যেন আমার এই সিরিজটা ভাল লাগে।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
তাই নাকি? থাকুক তাহলে এরকমই। উদ্দেশ্য কিছুটা এরকমই ছিল শুরুতে। মানুষ ভাবে অনেক কিছুই, কিন্তু প্রকাশ করে কম। বর্ণনা দিতে গেলেই ভাবনাগুলো স্পষ্ট করে দেওয়া হবে। তার চেয়ে প্রকাশ্য কথোপকথন থেকেই ভাবনাগুলো উঠে আসুক। কোনো পর্বে আপন লোকের সাথে প্রাণ খুলে কথা বলা থাকে, আবার কোনোটায় আধা-চেনা কারও সাথে পেঁচিয়ে কথা বলা। গল্প তো কোনোটাই না, তাই চিন্তা করা লাগে কম।
অভি, আমার কাছেও কিন্তু এখনকার ধরনটাই ভাল লাগে, বর্ণনা ছাড়া। শুধুমাত্র কথোপকথন থেকে দৃশ্যপট কল্পনা করে নেয়ার চেষ্টা করি। আমার কাছে এটাই বেশ লাগে।
নতুন মন্তব্য করুন