জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট
ভাবতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্য যে ডিজিটাল দেশ গড়ার প্রথম শর্ত হলো প্রতিটি নাগরিককে একটি নম্বরে বন্দী করা। দ্বিতীয় কাজ হলো এই নম্বরটিকে যথাসম্ভব নিরাপদ করা। তৃতীয় কাজ হলো প্রতিটি নম্বরের মালিককে যথাসম্ভব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া। বহু বছরের চেষ্টা শেষে গত নির্বাচনের আগে এই প্রথম ধাপটি অতিক্রম করলো বাংলাদেশ। রাজা থেকে উজির পর্যন্ত প্রত্যেকেরই একটি পরিচয়পত্র আছে। এতে ছবি আছে, আছে শনাক্তকরণের জন্য কিছু তথ্য। এই নম্বর বর্তমানে পাসপোর্ট থেকে নির্বাচন পর্যন্ত সর্বত্র ব্যবহার হচ্ছে।
দুর্বৃত্তের কবল থেকে বর্তমান ধাঁচের পরিচয়পত্র খুব বেশিদিন নিরাপদ রাখা যাবে না। পৃথিবীময় তাই অনেক রকম প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে এই নম্বর বা পরিচয়পত্রগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। দিন দিন যুক্ত হচ্ছে অনেক রকম ইলেকট্রনিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম। যে-দেশে গলাকাটা পাসপোর্টের প্রতুলতাই রোধ করার উপায় নেই, সে-দেশে স্রেফ ছবি দেখে শনাক্তকরণের উপর ভরসা রাখা দুষ্কর।
পরিচয়পত্র নিরীক্ষার বর্তমান পদ্ধতি শুধুমাত্র ছবি মিলিয়ে দেখা। সরকারের কাছে একটি ছবি থাকে, আর ব্যবহারকারীর কাছে থাকে কার্ড। চোখের দেখায় ছবি মিলিয়ে রহিমকে রহিম বলে শনাক্ত করা হয়, করিমকে করিম বলে। এক্ষেত্রে জালিয়াতি প্রধানত দু’রকম হতে পারে।
যেখানে কেন্দ্রীয় ভাবে সংরক্ষিত ছবির সাথে মিলিয়ে দেখা হয় – যেমন নির্বাচন কমিশন – সেখানে রহিমের মূল ছবিটি বদলে করিমের একটি ছবি রেখে দেওয়া দুষ্কর কিছু নয়। এরপর রহিমের অজান্তেই তার পরিচয়ে জীবন চালাতে পারে করিম।
দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হলো নিজের ছবি তুলে একটি পরিচয়পত্র তৈরি করে ফেলা। এটি ব্যবহার হতে পারে এমন স্থানে যেখানে ছবি ব্যবহার হলেও কেন্দ্রীয় ভাবে সংরক্ষিত ছবির সাথে মিলিয়ে দেখা হয় না – যেমন, বাজার-ঘাটে পরিচয় দেওয়া, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সময় পরিচয়পত্র দেখানো, ইত্যাদি।
এই দুর্বলতা নিরসনে ভবিষ্যতে এমন কার্ড দরকার যা তার চুম্বক-স্মৃতিতে কিছু মৌলিক তথ্য সংরক্ষণ করবে। এটি হতে হবে এমন তথ্য যা শুধু সেই পরিচয়পত্রের প্রকৃত মালিক জানবেন। ধরা যাক রহিম ও করিমের একজনের গুপ্ত সংকেত ১২৩, অন্য জনের ৪৫৬। শুধু এটুকু তথ্য থাকলে তা খুব সহজেই জেনে যাওয়া সম্ভব। প্রয়োজন তাই আরেকটু কঠিন কিছু।
একটি পদ্ধতি হলো কেন্দ্রীয় সার্ভারে সংরক্ষিত ছবির সাথে স্বয়ংক্রিয় ভাবে মিলিয়ে নেওয়া। একটি স্ট্যাম্প-সাইজ ছবিতে প্রায় ৮০৪ পিক্সেল পরিমাণ তথ্য থাকে। এই পরিমাণ তথ্য ও আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়াকরণ দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে কেন্দ্রীয় ভাবে যাচাই করার প্রয়াস সুতার উপর ট্রাক চালানোর মতো ব্যাপার। তুলনায় অনেক কার্যকর পদ্ধতি হলো আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে নেওয়া। এটি বর্তমানে বহুল-ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলোর একটি।
প্রতিটি মানুষের হাতের ছাপ ভিন্ন। এমনকি যমজ ভাই-বোনের হাতের ছাপও ভিন্ন হয়। এটি প্রতিটি মানুষেরই আছে, এবং এটি কোন পাসওয়ার্ডের মতো কষ্ট করে মুখস্তও রাখতে হবে না। কম্পিউটারে এই ভিন্নতাকে ধারণ করা হয় কো-অর্ডিনেট সিস্টেমের মাধ্যমে। পাঠক নিজের ডান হাতের তর্জনীর দিকে তাকালে দেখবেন, কোনো কোনো স্থানে হাতের দাগগুলো ভাগ হয়ে গেছে কাটা চামচের মতো (ফর্ক), কোথাও কোথাও দাগের সমাপ্তি ঘটেছে (টারমিনেশন), আর কোথাও কোথাও তৈরি হয়েছে পাহাড়চূড়া (মিনুশা পয়েন্ট)। মূলত এই তিনটি বিশেষত্বের অবস্থান দিয়েই গঠিত হয় একজন মানুষের ‘পরিচয়’।
এই তথ্য সংরক্ষণের জন্য একটি সাধারণ মেট্রিক্স যথেষ্ট। প্রান্তিক ভাবে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই পদ্ধতিকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব। কেন্দ্রীয় সার্ভারেও নামের বিপরীতে একটি হাতের ছাপ সংরক্ষণ করা সহজতর। কেন্দ্র ও প্রান্ত উভয় ক্ষেত্রেই উচ্চতর প্রযুক্তি ব্যবহার করে পদ্ধতিটি শক্তিশালী করা সম্ভব। এই সামগ্রিক পরিবর্তন কোন ভাবেই তথ্য আদান-প্রদানের প্রক্রিয়াটি প্রভাবিত করবে না। পক্ষান্তরে, একটি ছবি কেন্দ্রীয় ভাবে যাচাই করার জন্য অনেক বেশি পরিমাণ তথ্য আদান-প্রদান করতে হয়। সাথে রয়েছে চেহারার বিভিন্ন অংশ খুঁজে বের করা, সেগুলোর আইগেন ভ্যালু নেওয়া, ইত্যাদি জটিলতা।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, যান্ত্রিক ভাবে যাচাইকৃত ছবির ব্যর্থতার হার ২০ থেকে ৪০ ভাগ। তুলনায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করলে ব্যর্থতার হার কমে ২.৫% -এ নেমে আসে। এখনও পর্যন্ত জানা পদ্ধতির মধ্যে শুধুমাত্র ডিএনএ পরীক্ষা করেই এর চেয়ে সফল ভাবে পরিচয় যাচাই করা সম্ভব।
খুব সহসা না হলেও ২০২১ নাগাদ এই পদ্ধতি খুব সহজেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব বাংলাদেশে। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির প্রাথমিক ধাপেই এ-ধরনের দিক-নির্দেশনা দেওয়া থাকলে সকল নাগরিকের হাতের ছাপ সংরক্ষিত থাকবে, যা ভবিষ্যতে অপরাধ দমনেও সাহায্য করবে ব্যাপক ভাবে।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ক্রেডিট কার্ড কিংবা পাসওয়ার্ডের ধারণার সাথে পরিচিত নয়। ব্যবহারকারীকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে শনাক্ত করা তাই অনেক দুষ্কর। ফিঙ্গারপ্রিন্ট-ভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহারের অন্যতম সুবিধা হলো নিরক্ষর মানুষের প্রতিও এটি প্রযুক্তিবান্ধব। যুগ যুগ ধরে চলে আসা টিপসই প্রথার সাথে সবাই পরিচিত। স্রেফ আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে মানুষকে শনাক্ত করা গেলে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বিভিন্ন রকম সুযোগসুবিধা দেওয়া সহজ হবে। নিরক্ষর কেউও খুব সহজে নিজের চাহিদার কথা জানাতে পারবেন।
প্রযুক্তির সুফল প্রান্তিক নাগরিকের কাছে পৌঁছে দিতে হলে তিনটি ধাপ প্রয়োজন – পরিচয়, শনাক্তকরণ, এবং সেবা। সেবা খাত আগে থেকেই আছে, তবে তা মূলত শহরকেন্দ্রিক। পরিচয় তৈরি করা হচ্ছে নির্বাচনের প্রয়োজনে। শনাক্তকরণের সেতুটি গড়ে দিলেই মানুষ সহজে বিদ্যমান সেবা পেতে পারে। তবে এর সবচেয়ে বড় সুফল হলো ভোক্তাকে চেনার সুবিধা, তাঁর (অনেক ক্ষেত্রেই সহজ ও সীমিত) চাহিদা সম্পর্কে অবগত হওয়া। এই সুফল পেলে সেবা খাতও অনেক এগিয়ে যাবে।
উদাহরণ হিসেবে সদ্য পাশ করা একজন কম্পিউটার/তড়িৎকৌশল প্রকৌশলীর দিকে তাকানো যায়। দেশের শীর্ষস্থানীয় এই ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ভবিষ্যৎ বলতে আছে বিদেশে চলে যাওয়া, মোবাইল কোম্পানিতে কাজ (এবং পাশাপাশি আইবিএ-তে এমবিএ) করা, নয়তো হাতে-গোনা কিছু আউটসোর্সিং কোম্পানিতে যোগ দিয়ে টুকটাক প্রোগ্রামিং করা। এঁদের যোগ্যতা ও সম্ভাবনা অনেক, কিন্তু এঁদের কাছে চাহিদা এটুকুই। এঁদের মাঝে মুষ্টিমেয় ক’জন মেটাচ্ছেন খুব উঁচু পর্যায়ের ভোক্তা/ক্রেতার দুরূহ কিছু চাহিদা। যদি এঁদের সবার কাছে কৃষক-মজুর-মুটেদের চাহিদা পৌঁছে দেওয়ার একটি পথ খুলে দেওয়া যায়, তবে তাঁরা খুব সহজেই তা পূরণ করতে পারেন। প্রকৌশলী থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সবাইই তখন উচ্চতর অবস্থান অর্জন করবেন। এভাবেই প্রথমত ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে একটি বিশ্বস্ত শনাক্তকরণ পদ্ধতি তৈরি করা যায়, এবং তা বিবিধ ভাবে কাজে লাগিয়ে আধুনিকায়ন করা যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এ-ধরনের বায়োমেট্রিক তথ্যসমৃদ্ধ চিপ ব্যবহার করেই ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট তৈরি হয়। এই আধুনিক পাসপোর্টে একটি ডিজিটাল ছবি জুড়ে দেওয়া হয়। আগামী কিছু বছরের মধ্যে উন্নত বিশ্বে যাতায়াতের জন্য ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট আবশ্যক হতে যাচ্ছে। অতএব, কোনো না কোনো পর্যায়ে বাংলাদেশের অনেক মানুষকেই নতুন করে পাসপোর্ট গ্রহণ করতে হবে। দেশব্যাপী কোনো প্রকল্প হাতে না নিলেও অন্তত এই নতুন পাসপোর্ট ইস্যুর সময় নিজস্ব একটি বায়োমেট্রিক ডেটাবেজ তৈরির দিকে নজর দেওয়া উচিত। অতঃপর সীমিত পরিসরে হলেও এর ব্যবহার ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। এভাবেই হাঁটি হাঁটি পা পা করে কিছু বছরের মধ্যে একটি ব্যাপক তথ্যভাণ্ডার গড়ে উঠবে।
(চলবে)
মন্তব্য
খুব গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ। অব্যহত থাক এটা....
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
মনের কথা কচ্ছিস...চালিয়ে যা। খুব ভাল লাগছে!
হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
বাংলাদেশের বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল পদ্ধতিতেই একমাত্র নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ২০২১ লাগুক আর যত বছরই লাগুক সবাইকে একটি বিশাল ডাটাবেজ এর আওয়তায় না আনতে পারলে এ দেশ কন্ট্রোল করা অসম্ভব। দেশের সকল সমস্যার মূলে রয়েছে জনসংখ্যার আধিক্য। শুধুমাত্র অত্যাধিক জনসংখ্যার কারনেই দূর্ণীতি, দ্রব্যমূল্য সহ সব কিছুই নিয়ন্ত্রণের বাহিরে।
সিরিজ চলুক। সাথে আছি সব সময়।
সহমত। এই জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাইজ না করে নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব। ১৫ কোটির মানুষকে ঠিক মত পথে রাখতে ৫ কোটি পুলিশ লাগবে! তবে, আমি জনসংখ্যার আধিক্যকে প্রধান সমস্যা মনে করি না। আমার মতে, প্রধান সমস্যা হলো দূরদর্শিতার অভাব।
আজকে ২০০৯-এ এসে যেসব প্রযুক্তির কথা বলছি, তার অনেক গুলোই সেই ৯০-এর দশকে তৈরি হয়ে বসে আছে। আমরা ভারতেরও আগে আইটি/ফাইবার অপটিক সুবিধা পেতে পারতাম। যে-পরিমাণ আয় সম্ভব ছিলো (এবং এখনও আছে), তা কাজে লাগিয়ে আমাদের এই জনগোষ্ঠীকেও আরামে রাখা যেতো। বন্দর, দেশজ প্রকৌশল, ইত্যাদির কথা বাদই দিলাম।
আমি পড়ি নাই, স্কিম করেছি। পরে পড়বো আশা করি। মূল্যবান, কিন্তু পড়তে ইচ্ছা করছে না। তাই এই কমেন্ট।![হাসি হাসি](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/1.gif)
গতবার দেশে যাবার সময় খুব খুশী ছিলাম আইডি কার্ড পাবো বলে
হাতে নিয়ে সব খুশী শেষ
তবে শুনেছি খুব হাইফাই কার্ড করা হবে তাড়াতাড়ি
সত্যি নাকি?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
কোনো এক পর্যায়ে বর্তমান পরিচয়পত্রকে ঢেলে সাজাতেই হবে। এই পদ্ধতির দুর্বলতা অনেক। এবারের নির্বাচনেই এটা প্রথম ব্যবহার করা হয়েছে। প্রণয়ন আর ব্যবহারের আগে খুব বেশি দিন সময় দেওয়া হয়নি। এসব কারণে জালিয়াতি সেভাবে ছড়াতে পারেনি। আগামী নির্বাচন এভাবে করলে জালিয়াতিতে ভরে যাবে সব। এই পদ্ধতির ত্রুটিগুলো এখন প্রত্যক্ষ।
একটু আধুনিক কিছু প্রয়োজন। মেশিন-রিডেবল কার্ড এবং অটো-আইডি পদ্ধতির বাইরে কোনো ভাবেই নিরাপদ কিছু পাওয়া সম্ভব না। অতএব, একটু উন্নত প্রযুক্তিতে যেতেই হবে। সেক্ষেত্রে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করা হয় কিনা দেখা যাক। করা খুব জরুরী (এবং সহজ)।
ভয় হলো, এখন শুরু হবে দফায় দফায় রিভিশন। ক'দিন পরই কোনো না কোনো কারণে নতুন ধরনের পরিচয়পত্র প্রণয়নের কথা হবে। কোটি কোটি টাকার মোচ্ছবের ফলাফল হবে, কেউ কেউ একাধিক পদ্ধতির কার্ড পাবে, কেউ কিছুই পাবে না। ঘোলকে দুধ বলে বেচে দেওয়ার লোকের তো অভাব নেই। একটু সাবধান থাকা উচিত, এবং একবারে সেরা পদ্ধতিতে যাওয়া উচিত। এতে করে "তিন অবস্থা"র ভয় করতে হবে না।
মন দিয়ে পড়ছি ইশতি। অনেক ধন্যবাদ অত্যন্ত দরকারী এই সিরিজটার জন্য। পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি।
গত সপ্তাহেই পত্রিকায় দেখেছিলাম টাইগার আই.টি. নামক দেশি কম্পানি নাকি বায়োমেট্রিক ... ????????????? ব্যাপারে প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার পেল। এই ব্যাপারে আরেকটু বিস্তারিত লেখার অনুরোধ থাকলো।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
উৎসাহব্যঞ্জক, কিন্তু কিঞ্চিৎ অতিরঞ্জনও সম্ভব। টেকনিকাল ডিটেইল দেখে জানাবো।
এই প্রযুক্তি অনেক আগেই তৈরি। ইদানীং খরচও অনেক কমে এসেছে। নতুন করে করতে হবে না কিছুই। শুধু বিদ্যমান সল্যুশনগুলো ঠিক জায়গায় ব্যবহার করলেই হলো।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডি নিয়ে কাজ করতে যা প্রয়োজন, তার কোড অনলাইনে অনেক জায়গায় পাওয়া যায়। বেসিক অনেক কিছু ইমেজ প্রোসেসিং-এর প্রাথমিক কোর্সেই শেখানো হয়। শুধু তাই না, হার্ডওয়্যার ভেন্ডররা প্রচুর ব্যবহারবান্ধব SDK রিলিজ করেছে। দরকার শুধু সদিচ্ছা। কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্রদের একটা ক্লাসকে বিশাল একটা সেমিস্টার প্রোজেক্ট দিয়েই সব করে ফেলা সম্ভব।
তৈরি করে ফেলা সম্ভব হলেও করা অনুচিত হবে। আমার মতে— পঞ্চাশ বা একশত কোটি টাকা খরচা করে হলেও একদল বিশেষজ্ঞ নিয়ে যদি সফটওয়্যার ডিজাইন করা হয়, সেটাই উত্তম পন্থা। প্রথমত, নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে, যেখানে কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের থাকা বাঞ্ছনীয় এবং এই ধরনের গোপনীয় রাষ্ট্রীয় কাজের দায়িত্বভার সাধারণত সেই দেশের সেনাবাহিনী নিয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত, এত বড় একটা distributed system'এর প্রজেক্ট অবশ্যই খুবই দক্ষ এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোন প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় করা উচিত। তবে এগুলো একদম নগন্য প্রয়োগ এবং প্রকৌশলের ব্যাপার।
আসল কথা হলো এই— এই পরিমান টাকা খরচ করা আমাদের দেশের জন্য খুব একটা কোন বিষয়ই না কিন্তু এই টাকা সঠিক ভাবে এবং সঠিক খাতে খরচ করার মতো দূরদর্শিতা আমাদের সরকার প্রধানদের আছে নাকি, সেই ব্যাপারে আমার অনেক সন্দেহ আছে।
অবশ্য যদি এই পনের কোটি মানুষকে যদি আসলেই বশীকৃত করা যায়, তবে এইসব রাজনৈতিকদের ছড়ি ঘোরাবার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে না?
_________
চিন্তিত (sajjadfx@জিমেইল.কম)
কথাটা খুবই সত্য। যে-কথা একটু আগে অন্য পোস্টেও বললাম... আমরা কেউ আমাদের রাজনীতিকদের বিশ্বাস করি না। বিশ্বাস করবার কোনো কারণ তাঁরা রাখেননি। টাকা দেখলেই লোলুপ দৃষ্টি হেনে অভ্যস্ত তাঁরা। ১০০ কোটি টাকা এ-ধরনের প্রকল্পের জন্য খুবই মামুলি। তবুও এই টাকা তাঁরা চেটে-পুটে সাফ করে দেবেন।
আরেকটি দিক হলো, যেকোন প্রকল্পেরই প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু সহজ-কিন্তু-একঘেঁয়ে কাজ থাকে। এ-ধরনের কাজের জন্য থোক বরাদ্দের প্রয়োজন হয়, এবং সেখানে ব্যাপক চুরিদারি হয়ে থাকে। লেগ-ওয়ার্কটুকু তাই একটু কম খরচে করিয়ে নেওয়াই যায়।
উচ্চতর পর্যায়ের কনসালটেন্সির জন্য অবশ্যই প্রযুক্তিবিদদের শরণাপন্ন হতে হবে। অর্থায়নটুকু সেখানেই করা যায়, এবং উদার ভাবে করা যায়। আমার জানা মতে, এ-সব ক্ষেত্রে অনেকেই গবেষণা করছেন বিদেশে। তাঁরা আদৌ অর্থের প্রয়োজনে করবেন না কাজটি।
মন্তব্যের শেষাংশটুকু খুব নির্মম সত্য।
পড়লাম। দুর্নীতি দমনে এই আইডি সবথেকে বড় হাতিয়ার হতে পারে। ভারতে প্রকল্প শুরু হল সবে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
এরকম বড়, উচ্চাভিলাষী প্রকল্প হাতে নেওয়ার বিকল্প নেই। আকাশের দিকে লাফ দিলে অন্তত গাছের আগা পর্যন্ত ওঠা যায়। রাষ্ট্রীয় ভাবে জবাবদিহিতে আদায়ের জন্য এমন পদ্ধতির বিকল্প নেই। পাশাপাশি, চিহ্নিত দুষ্কৃতকারীদের জন্য ফেসিয়াল রেকগনিশনও থাকা উচিত। এতে অপরাধী শনাক্ত করা সহজতর হবে অনেক।
বাহ, দারূণ তথ্যবহুল লেখা। অনেক কিছু জানতে পারলাম। কিন্তু আমাদের দেশে এমন ব্যবস্থা কবে হবে?
সদিচ্ছা থাকলে আগামী নির্বাচনের আগেই করে ফেলা যায়। জেলা বা বিভাগ অনুযায়ী কাজ শুরু করা যায় প্রথমে। সামরিক বাহিনীতে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহৃত হয়েছে ইতোমধ্যেই। এ-ধরনের প্রকল্পের মূল কাঠামো দাঁড়িয়ে গেলে বাকিটা মোটেও খরুচে কিছু না।
এই পদ্ধতির জন্য কিছুটা শিক্ষিত নিবন্ধনকারী প্রয়োজন। SSC/HSC-র পর মাস তিনেক বসে থাকা শিক্ষার্থীদের অনেককেই এ-কাজে নিয়োগ দেওয়া যায়। প্রযুক্তি ও তার সম্ভাব্য ব্যবহার নিয়ে তারা সম্মত জ্ঞান পাবে, আমরাও অনেক সহজে কাজ এগিয়ে নিতে পারবো। আফসোস হলো, আমাদের নীতি-নির্ধারকেরা এই সহজ ও engaging পথগুলো সহসা অনুসরণ করেন না।![মন খারাপ মন খারাপ](http://www.sachalayatan.com/files/smileys/2.gif)
একমত। কিন্তু আমাদের নীতিনির্ধারকদের মতে এমনটা হবে কবে?
নতুন মন্তব্য করুন