১১. যখন কেউ আমাকে পাগল বলে
স্নাতকোত্তর ছাত্র বা গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট মানেই প্রায়-দাসত্ব। টাকা যা পাই, তাতে ট্যাক্স আর বিল দিয়ে হাতে থাকে না কিছুই। দেশ থেকে কেউ প্রশ্ন করলে নিরর্থক প্রশংসার লোভে বলি, পিএইচডি করছি। প্রবাসী কেউ জানতে চাইলে মায়ার কাঙাল হয়ে বলি, গ্র্যাজুয়েট স্কুলে আছি। যুগে যুগে ঐহিক দুর্গতি থেকে পরিত্রাণ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়েই পারত্রিক বিশ্বাস প্রসার পেয়েছে। এক্ষেত্রেও বাস্তবতা ভিন্নতর নয়। পাশ করার পরের সুখের স্বপ্ন দেখতে দেখতে বর্তমান দুরবস্থা মেনে নেই। ক্রেডিট কার্ডের হাতে বন্ধক রাখা জীবনটা তাই বন্দীই থেকে যায়। ডেবিট কার্ডটা রাখা থাকে ওয়ালেটের ভেতরের দিকে কোথাও, বাজারে গেলেই ফট্ করে আমেরিকান এক্সপ্রেসটা বের হয়ে যায়। মাস আসে, ৮০ ডলার মিনিমাম-বিল হয় তো মন বড় করে ১০০ ডলার শোধ দেই। ফলাফল যা হওয়ার তা-ই। পরের মাসে দেখি মূলটুকু যেমন ছিলো তেমনই আছে, সুদ বেড়েছে আরও। কোনো রকমে বেঁচে-বর্তে থেকে একটা চাকরি জোটাতে পারলে স্বাচ্ছন্দ্য আসবে জীবনের কোনো পর্যায়ে, এটাই আশা। পিএইচডি কমিক্সে দেখেছিলাম ক’দিন আগে, আমেরিকায় গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ডদের গড় বাৎসরিক বেতন ১৮ হাজার ডলার। তুলনায় এদেশিদের জন্য গড় বাৎসরিক বেকার ভাতা ২১ হাজার ডলার! তবুও চাকরির বেতনের কথা মনে করে নিজেকে প্রবোধ দেই। পাশ করে চাকরি পাওয়ার আগ তাই পর্যন্ত দেশের মানুষের হুতাশ ও প্রবাসীদের হিংসাই পাথেয়।
গ্র্যাজুয়েট স্কুলে একেক জনের মালিক (সুপারভাইজার) একেক রকম হয়। কেউ সোমবারে বুঝিয়ে দেন পুরো সপ্তাহে কী কী করতে হবে, কেউ শুক্রবারে খোঁজ নেন সারা সপ্তাহের কাজকর্মের ব্যাপারে। দুইয়ের কোনোটাতেই আমাকে ঠিক কব্জা করতে না পেরে আগামী সপ্তাহ থেকে আমার মালিক বুধবার মিটিং-এর দিন ধার্য করেছেন। এতে যদি আমাকে দিয়ে কাজ করানো যায়! কালানুক্রমে একেক মালিকের বিবিধ অভ্যাস ছড়িয়ে পড়ে তাঁদের অধীনস্ত ছাত্রদের মাঝে। গ্র্যাজুয়েট স্কুলে তাই প্রচলিত আছে যে প্রত্যেকে নিজ নিজ সুপারভাইজারের ছায়ায় পরিণত হয়। আমার মালিক কাজ-পাগল, আমি অলস। আমার বিবেচনায় যা কাজ করতে করতে জিহ্বা বের হয়ে যাওয়া, মালিকের বিবেচনায় তা ফাঁকিবাজি। জানি না কতটুকু পরিশ্রমী হতে পারবো তাঁর মতো। মাত্র পাঁচ মাস গেছে, পুরো তিন-চার বছরের কথা ভাবলে হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে প্রায় রাতেই। মালিকের কীই বা দোষ? বয়সে তিনি আমার চেয়ে অল্প ক’বছরের বড় হবেন। জাতিতে চীনদেশীয়, অপরূপা সুন্দরী, দারুণ চটপটে, এখনও টেন্যুর পেতে কিছু বাকি, এবং শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অনূঢ়া।
এই টানাপড়েনের মধ্যে এগিয়ে চলে জীবন, জেঁকে বসে ভয়। নিজেকে হারিয়ে ফেলবার ভয়।
সংসার বলতে লোকে যে-ধরনের ঝুট-ঝামেলাকে বোঝে, প্রবাসী হওয়ার সুবাদে তার অনেক অনুষঙ্গের সাথে পরিচয় হয়েছে গত বছর ছয়েকে। নিয়ম করে রান্না আছে, ঘরকন্না আছে, টাকা-পয়সার হিসেব আছে, শুধু সংসারীসুলভ সুখটুকু নেই। অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে অবশেষে এক সুহাসিনীর বদৌলতে সময় এসেছে স্বপ্ন দেখার, কিন্তু সেটাও পদে পদে মরিচীকাময়। কখনও দূরত্বের বিভেদ, কখনও সময়ের বিভেদ, কখনও আবেগের বিভেদ, আর কখনও সামর্থ্যের বিভেদ বাধা হয়ে দাঁড়ায় পদে পদে। নতুন প্রেমের বেহায়া আবেগ দিয়ে সেগুলো ভুলে থাকা যায় কিছুকাল, কিন্তু মনে জেঁকে বসে থাকে অদৃশ্য “গ্লাস সিলিং”-এর ভয়। যদি একটা সময় এই আবেগ আর জীবনের প্রতিকূলে শক্তি যোগাতে না পারে? সেই আশঙ্কারই গান মান্না দে’র ‘যখন কেউ আমাকে পাগল বলে’।
লেখাপড়া শুরু করেছিলাম গাড়ি-ঘোড়ার স্বপ্ন নিয়ে। সেই স্বপ্নে এতই বুঁদ ছিলাম যে ঝগড়া করে ঘর ছাড়তেও বাধেনি। আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সরকারী চাকুরে বাবার মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবার কাছ থেকে মেধার উত্তরাধিকার পেয়েছি। সেই সাথে পেয়েছি বিশেষ যত্ন নিয়ে লেখাপড়া করানো। ধূলায় থেকেও যে পৃথিবীর রাজা হওয়া যায়, তা আমার বাবাকে দেখে শিখেছি। বারাক ওবামা এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, দামী পোষাক পরিহিত ব্যবসায়ীর সাথে দর কষাকষির সময় রঙচটা জুতা পরিহিত সাংসদদের মাথা ঠিক রাখা খুব কষ্টের কাজ, কারণ কাঁচা টাকার বাড়তি চটকটুকু অনেকেই উপেক্ষা করতে পারেন না। মুচকি হেসেছিলাম, কারণ আমার বাবাকে জীবনভর অবলীলায় মাথা ঠাণ্ডা রেখে উঁচু-নিচু সবার সাথে মিশতে দেখেছি।
এগুলোর পাশাপাশি বাবাকে দেখে কষ্টও পেতাম। গ্রামে লেখাপড়া করেও আব্বু মেধাতালিকায় ৯ম স্থান পেয়েছিলো ম্যাট্রিকে। খাদ্য অধিদপ্তরে হাজারও চোরের মাঝেও সততা ধরে রেখেছিলো পুরো চাকরিজীবন ধরে। যথারীতি, মূল্যায়ন মেলেনি তার। জীবনভর মাত্র গোটা চারেক “শখ” করতে দেখেছি। আবাহনী-মোহামেডান খেলা দেখতে গিয়ে জুতা হারিয়ে ফেরা, চুরি যাওয়ার পর নতুন ক্যাসেট প্লেয়ার কেনা, কিংবা অফিসের ট্যুরে গেলে দই-ছানামুখী কেনাতেই তা সীমিত ছিলো। স্থিতধী, ভদ্র, মেধাবী বাবাকে দেখে আমার চোখে মনে হতো মস্ত এক দৈত্য যেন ছোট্ট বোতলে বন্দী। দিগন্তের সীমানা একেক জনের একেক রকম। কেউ বুয়েটে পড়ে বাধিত হয়, কেউ আমেরিকা এসে, কেউ আমেরিকায় চাকরি পেয়ে। মনে হতো, আমার বাবাও হয়তো সামর্থ্যের তুলনায় খুব ছোট কোনো সীমানায় আটকা।
ইদানীং আমাকেও নিয়মের মধ্যে চলতে হচ্ছে। চলতি সিমেস্টারে দু’টা ক্লাস পড়াতে হয়। এক সেকশন সকালে, আরেক সেকশন সন্ধ্যায়। ইচ্ছা থাকলেও জগৎ উদ্ধার করা হয়ে উঠে না। ক্লাসের কাজ শেষে অবশিষ্ট সময়টুকুতে না চাইলেও ব্লগ-সংবাদ-ফেসবুক-ওবামা থেকে মন উঠিয়ে গবেষণায় দিতে হয়। কোনো কোনো দিন ছাত্র-ক্লাস-লেকচার-পরীক্ষা উঠে আসে তারও উপরে। এই নিয়মের মধ্যে এসে জেনেছি, প্রথাগত জীবনে থিতু হওয়াই কঠিনতর। নিয়মের মধ্যে জীবন যাপন করাকে পরাজয় ভাবতাম, এখন বুঝি যে অসাধারণত্বের শুরু সাধারণত্বকে জয় দিয়ে। এই কঠিন পথ ধরেই উপরে উঠতে হয়, উদ্ভট কোনো স্বপ্নের-সিঁড়ি বেয়ে নয়।
দৈনন্দিন কাজ সেরে প্রায় দিনই খেলতে যাই আমরা ক’জন। বিকেলের হুল্লোড়ের সময় নিজের মাঝে সেই দৈত্যকে খুঁজে পাই। মনে হয় যেন একটু একটু করে গুটিয়ে নিতে থাকা জীবনের ছাড় দেওয়া স্বপ্নগুলো নিজের মাঝে পুঁতে ফেলছি সময়ের সাথে সাথে। অথচ সেই বাবার সাথে কথা বললেই মনোবলও ফিরে পাই। কল্পনার মানসে দেখি, আর ক’বছর পর পরিবার বড় হচ্ছে। জাগতিক স্বপ্নের আকর্ষণ যতো প্রবলই হোক না কেন, অপত্যের জন্য তাতে ছাড় দিতে তিলেকের দ্বিধাও কাজ করবে না, তা এখনই মর্মে মর্মে বুঝি। উপলব্ধি হয়, সেই দৈত্যটা বোতলবন্দী হয়েছিলো আমাকে বোতল ভেঙে বের করতেই।
মান্না দে’র গানের ভক্ত আমার বাবা প্রায়ই “যখন কেউ আমাকে পাগল বলে” ছেড়ে দিয়ে ব্যায়াম করতো। গম্ভীর মানুষ হওয়ায় আব্বুর সাথে কথা হতো কম। তার কঠিন খোলসের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মানবিক দিকটির সাথে পরিচয় অনেক বড় বয়সে এসে। উঠতি বয়সের অনেক নতুন প্রশ্নের জবাব তাই নিজেকেই খুঁজে নিতে হয়েছে। তেমনই একটি অভিজ্ঞতা ছিলো নব্য কৈশোরে পর্দার আড়াল থেকে বাবার শেভ করা দেখে একটু একটু করে “বড়” হতে শুরু করা। মায়ের সাথে অনেক খোলামেলা ছিলাম, তাই তার কাছে অনেক কিছুই জিজ্ঞেস করা যেতো। লোকে হাসবে, লোকসম্মুখে স্বীকার করেছি জানলে মা বকবে, তবু একটা ঘটনা বলি।
দুর্গন্ধে টিকতে না পেরে একটা সময় মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম বগলের চুল কাটা যায় কীভাবে। শেভ করতে সাহস পাই না, কাঁচি চালালে কেটে যায়, ইত্যাদি। মা বলেছিলো, পাউডার মেখে শেভ করলে নাকি কষ্ট কম হয়। সেই খুশিতে কেশমুক্ত বগল বাজিয়ে বেড়ালাম কিছুদিন। এরই মধ্যে আবিষ্কার করলাম, গাল শেভ করে ঠিক আরাম পাচ্ছি না। খোঁচা খোঁচা দাঁড়ির জন্য খুব যন্ত্রণা হয়। তখনও পর্যন্ত স্রেফ একদিকে শেভ করতাম, জানতাম না উলটা দিক থেকে শেভ করা যায় কিনা। এই প্রশ্নের জবাব আমার মায়েরও জানা নেই। বাবা শেভ করার সময় তো মা রুটি বানায়, বাক্সে ভাত-ডাল ভরে দেয়! অগত্যা একদিন পর্দার আড়ালে ঘাপটি মেরে পড়ে থাকলাম। আব্বুকে দেখে শিখলাম, চাইলে উলটা দিক থেকেও শেভ করা যায়। সে-দিনও ক্যাসেট প্লেয়ারে “যখন কেউ আমাকে পাগল বলে” চলছিলো। গম্ভীর মুখে শেভ করতে করতে হঠাৎ আব্বুও হঠাৎ গেয়ে উঠলো, “পাগল তোমার জন্য যে”।
গানটা শুনলে আজও সেই স্বপ্ন ও উপলব্ধিতে ফিরে যাই, আনমনে দরজার দিকে তাকাই। হয়তো আমারই মতো আর কারও ‘রাইট অফ প্যাসেজ’ লুকিয়ে আছে ঐ দরজার আড়ালে। মাত্র ক’দিন আগে আমার বাবা অবসরে গেল। দেশের আলো-হাওয়া-ছায়া-তরুর চেয়েও বেশি আফসোস হয় সেই দিনটায় তার পাশে না থাকতে পারায়। কোনোদিন কেউ এভাবেই আমার সমাপ্তিতে ছটফট করবে কিনা ভাবি। সেটাই হবে মানুষ হিসেবে আমার সাফল্যের সূচক, আমার দিগন্তের সীমানা।
পুরনো পর্বসমূহঃ
১০. জাওয়ানি জানেমান হাসিন দিলরুবা
৯. আমি বাংলায় গান গাই
৮. রক ইউ লাইক আ হারিকেন
৭. ওবলাডি ওবলাডা
৬. মিস লংকা
৫. আমি আশিক, তুমি প্রিয়া
৪. নায়ে বাদাম তুইলা দে ভাই
৩. আজ আমার শূন্য ঘরে আসিলো সুন্দর
২. খরবায়ু বয় বেগে
১. সে যে বসে আছে একা একা
মন্তব্য
কাইন্দো না। আমার সাথে তুলনা করি, তাহলে বুঝবে ভালই আছো...
১।আমি বর্তমানে বেকার অবস্থায় জিম্যাট পড়ছি, যদি কোনভাবে পিএইচডিতে ঢোকা যায় এই আশায়...তুমি তো তাও ঢুকে গেছ... (আবার নাকি চৈনিক সুন্দরী এডভাইজর )
২। তোমার তবুও সুহাসিনী আছে...আমার কপালে কুহাসিনীও নাই
৩। টাকা পয়সার কথা এই ভর মজলিশে নাইই বা বলি
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
ভাইরে, আপনার বাসার ছাদ দিয়ে তো আর চাইনিজ শরবত পড়ে না...
বাজার যে কত মন্দ, তা কি আর জানি না? লেগে থাকো, কিছু একটা হয়ে যাবেই যাবে। পুরনো লেখায় গেলে দেখবা আমার কষ্টের কাহিনীগুলা। দেনার দিকে আমিও না যাই। পানির নিচে দুই হাত!
আমার বাবারই আরেকটা ছবি দেখলাম যেন...খুব মিস করি...মাঝে মাঝে বাবা-মা-ভাইয়ের জন্য অস্থির হয়ে যাই...মাথা আউলাইয়া যায়... এবার দেশে যেতে পারলাম না...
ঠিকই বলেছিস, একসময় ভাবতাম অসাধারণ হব...এখন ভাবি বেঁচে আছি এর চেয়ে বড় অসাধারণত্ব আর কী হতে পারে!
চৈনিক সুপারদের আমি বড় ভয় পাই...
-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আমিও চৈনিক সুপারদের ভয় পাই। তবে কোরিয়ানরা আরও বাজে। যত্রতত্র ছাটাই করে দেয়, কুৎসিত রকম খাটায়।
বেঁচে থাকাই সবচেয়ে বড় মিরাকল।
হায় পরবাস....
ভালো থাকুন ইশতি ভাই!
--------------------------------------------------
"আমি তো থাকবোই, শুধু মাঝে মাঝে পাতা থাকবে সাদা/
এই ইচ্ছেমৃত্যু আমি জেনেছি তিথির মতো..."
*সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ব্যাপার না। পরবাসের যন্ত্রণা এখন আর গায়ে লাগে না তেমন একটা।
হায় পরবাস....
ভালো থাকুন ইশতি ভাই!
--------------------------------------------------
"আমি তো থাকবোই, শুধু মাঝে মাঝে পাতা থাকবে সাদা/
এই ইচ্ছেমৃত্যু আমি জেনেছি তিথির মতো..."
*সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
লেখাটা একটু মন খারাপ করে দিয়ে গেলো। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার পথটুকু কঠিনই বটে।
দুঃখ বা হতাশা গুলো ক্ষণিকের হোক----এই কামনা।
মন খারাপ করানো জন্য তো লিখিনি... তবু মন খারাপ হয়ে গেলে কী আর করা। এটাই তো জীবনের ছবি, তাই না?
সময় তো একদিন না একদিন ফুরোয়। তবুও সাফল্য আসুক হাতের মুঠোয়।
-আসন্ন সাফল্যের আশায় দিনগুলো কাটুক আনন্দে।
.
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
জীবন তো এভাবেই চলে গেল... "আসন্ন" সাফল্যের আশায়।
পড়লাম। কিছু বলার নেই। প্রবাসে এই চিত্র কমবেশী সবারই একই রকম। শুধু একটা জিনিস থেকে দূরে থাকি-- ক্রেডিট কার্ডের লোন। ভালো থাকুন, সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায়।
আমিও খুব চেষ্টা করতাম, কিন্তু মাস্টার্স করতে গিয়েই ধরা খেয়ে গেলাম। এখন এই পাকেই ঘুরপাক খাচ্ছি।
একই রকম হলেও এই চিত্র দেশের অনেকের কাছেই অজানা। সেজন্যই লিখে যাওয়া...
ইশতি ক্রেডিট কার্ডে জীবন বাঁধা। চাকুরী পেলে আরো বড় ঋনে বাঁধা পরবা। বাড়ির মর্টগেজ, গাড়ির লোন সুতরাং মন শক্ত করো ঃ)
ভালো থাকো সুহাসিনীকে নিয়ে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
হায় হায়, ভয় ধরিয়ে দিলেন তো, আপু!!
মন ছুঁয়ে গেল। ভাল থেকো।
অনেক ধন্যবাদ।
তোমার লেখাগুলো মাঝে মাঝে আচ্ছন্ন করে দেয় ইশতি। ঠিক সেইভাবে যখন থেকে গান শোনা শুরু করি( বোধকরি নটরডেমে পড়াকালীন সময় থেকে), মাটির ব্যাংকের জমানো টাকা দিয়ে প্রথম যে ক্যাসেটটি কিনেছিলাম তা ছিল মান্না দের একটি 'দু প্যাক' এলবাম। গানগুলি এখনো শুনি, ভিন্ন বয়সে, ভিন্ন প্লেয়ারে কিন্তু আবেশটুকু থেকে যায় আগের মতই। বিশেষ করে 'আমার এক দিকে শুধু তুমি' গানটা আমাকে এখনো আচ্ছন্ন করে রাখে দীর্ঘসময় ধরে।
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
অনেক ধন্যবাদ, ভাইয়া। আমাদের বাসায় যা চলতো, সেটা কেনা হয়েছিল বাণিজ্যমেলা থেকে। সলিল চৌধুরী আর মান্না দে একাধারে বাজতো।
পড়লাম; ভালো লাগল, কিছুটা খারাপও।
আপনার মালিকরে দেখতে হয় তাইলে একদিন
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
জানোই তো কোথায় খুঁজতে হবে!
আমি আজকে দেখসি দেখসি দেখসি চাইনিজ মেয়েদের চুল দেখলে আমি আবার কাইত হয়ে যাই। গন্ধে কাছে যাওয়া যায়না, এটাই প্রব্লেম...তবে কোন চাইনিজ মেয়ে যদি কথা দেয় যে সে দিনে চারবার শ্যম্পু দিয়ে গোসল করবে তাহলে আমি রাজি
আমার মালিক খুবই উঁচু মানসিকতার মানুষ। নোংরা সহ্য করতে পারেন না। চিংকুগোত্রে বিরল।
লেখাটা খুব ভাল লাগল ইশতি।
মনে হল আমার কথাগুলো কেউ খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখে গেছে।
ক্রেডিট কার্ডের যূপকাষ্ঠে কেবল তুমি নও বৎস---তোমার সিনিওররাও কিন্তু সমান ভাবে ঝুলে আছেন (যেমন...আহেম...আমি)। বয়েসের সিনিওরিটি ক্রেডিটেও সমান ভাবে পরিষ্ফূট। মাঝে মাঝে ভাবি প্রায় দশ বছর আম্রিকা থেকে আমার প্রাপ্তি কি কি! বেশ কিছু চমৎকার বই, কিছু মেঘের মত মানুষ আর বছরের সমান মাপের ক্রেডিট কার্ডের ঋণ!
শাস্ত্রে বলে ঋণ করে ঘি খেতে--
আর আমরা ঋণ করে যাই কেবল বেঁচে থাকার জন্যে একটু নিশ্বাস নিতে--
যাই হোক, এইসব তো জীবনেরই অনুষঙ্গ।
ভাবছিলাম গানটা নিয়ে আরো একটু বেশি লিখবে।
যাক, পরের লেখায় পুষিয়ে দিলেই চলবে----
সুহাসিনী কে সাথে নিয়ে হাসতে হাসতে জীবন কাটুক, এই কামনা সর্বক্ষনের।
- হে হে হে
কয়দিন আগে আমিও "ম্যায় সাজন ঝুলা ঝুলো"র মতোন ঝুলতেছিলাম ঋণে। পরে মেজাজ খারাপ হয়ে যাওয়াতে দিলাম একটা টান।
এখন উলটা আমি টেকা পাই!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
গানটা নিয়ে আরও লেখার ইচ্ছা ছিলো আসলেই, কিন্তু লেখার কলেবর এতো বড় হয়ে যাওয়ায় থেমে যেতেই হলো।
একটা সময় যাবতীয় ঋণ থেকে দূরে থাকতাম, কিন্তু বাধ্য হয়েই পাপিষ্ঠের খাতায় নাম লেখাতে হলো। কবে যে এ-থেকে বের হবো!!
এইসব হা-হুতাশ বাদ দিয়া চলেন বুক ভরে নিঃশ্বাস নেই ম্যান। কী আছে জীবনে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমার মনের কথাগুলাই বোল্ড করে দিছেন।
এইরকম সুপারভাইজার পাইলেও হইতো। পাইছি এক ছয় ফুটি জার্মান ব্যাটা। ক্যাম্নে নিঃশ্বাস নেই?
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
চোখ-কান খোলা রেখে চললেই হলো। ছয়-ফুটি জার্মানের সাড়ে পাঁচ-ফুটি দুয়েকটা বান্ধবী না থেকে যায় না!
আপনার জন্য আমার ল্যাবের দরজা খোলা। যেকোন দিন, যেকোন সময় এসে বেড়িয়ে যান। সবদিক ঘুরিয়ে দেখাবো যত্ন করে। বাকিটা "বোল্ড অ্যান্ড দ্য বিউটিফুল"।
আসলেই, কী আছে জীবনে!
তোমার লেখা পড়ে পিএইচডি করার শখ চলে যাচ্ছে।
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
আরে ধুর! কাউকে আশাহত করতে তো এই লেখা না। জীবন ধাপে ধাপে এগোয়, লাফে লাফে না। এই সামান্য শিক্ষাটুকু আমি পেয়েছি অনেক কষ্টের পর। আমরা সবাই ফলাফলটুকু চাই, কিন্তু তার জন্য কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে তা বুঝি না। সেই ব্যাপারগুলো নিয়ে সামনে নিয়ে আসার জন্যই লেখা। জীবন তো আঘাত করবেই, তাই বলে কি তাকে এড়িয়ে চলবো?
টানটান লেখা...পড়তে ভালো লাগলো।
তবে সময় কিন্তু আপনার পক্ষেই আছে, মনে আছে তো লাইনটা...
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
জিতে আপনি শেষ পর্যন্ত যাবেনই। শুভ কামনা রইল।
--------------------------------------
যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেল মনে
সে কথা আজি যেন বলা যায়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
অনেক ধন্যবাদ। আপনার লেখাগুলো পড়েছি, কিন্তু সময়াভাবে মন্তব্য করা হয়ে ওঠেনি। বাইবেল বেল্ট নিয়ে আরও কিছু লেখা দিয়েন।
বয়স নিয়ে কী বলি আর... সচলে দেখি শুধু আমারই বয়স বাড়ে! :'(
মাত্র আসলাম মরিকাতে। এখনি ভয় লাগায়ে গিলেন!
===অনন্ত===
ব্যাপার না। পরে খারাপের চেয়ে আগে খারাপ ভালো। আমরা সবাই উৎরে গেছি, আপনিও যাবেন।
যথারীতি ইশতিয়াকিয় লেখা, দারুণ! এরকমের আশায়ই ছিলাম। নে পাঁচ।
হাউন্ড অফ দ্য হোমলেসের ফলো-আপটা দে।
ধন্যবাদ। তুই না গুঁতালে লেখায় হাত দেওয়া হতো না আবার। এখন নতুন করে চুলকাচ্ছে লেখালেখির জন্য, কিন্তু সময় খুব কম। "হাউন্ড অফ দ্য হোমলেস"-এর আগে "হারিকেন, ফুটবল, ও কিছু মানুষের কথা" শেষ করতে মন চাইছে। নিউ অর্লিয়েন্স এবার সুপার বৌলে গেল তো...
চমৎকার ,চমৎকার অতি উত্তম, যথাথ
এত আপসেট হচ্ছো কেনো, হয়ত জ়ীবন সায়ানে এসে ফেরে দেখবে আহ্ রে দিন গুলো না কত ভাল ছিল।
নাহ, আপসেট না মোটেও। আমাকে দেখে কি তেমনটা মনে হয় নাকি? জীবনের পরিবর্তনশীলতাকে মেনে নেওয়ার কথাটুকু বলছিলাম কেবল। সায়াহ্ন পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না, আমি তো এখনই টের পাই এই দিনগুলো কতো ভালো!
লেখা ভালো লাগলো। আমি লোন শোধ করতে পিএইচডি না করে চাকরির জন্য বসে আছি প্রায় একবছর। ভাবছি, যে কাজ পারি তাতেই আবার ঢুকে যাবো না কি????
`ভোর ১১টা নাগাদ ঘর থেকে বের হওয়ার পথে বাক্সে কিছু খাবার নিয়ে যেতাম।'----হি হি হি
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
ঢুকে যান। কী হবে বসে থেকে? আপনি পিএইচডি-তে না যাওয়াটা ঠিক হবে না মনে হয়। এত দারুণ কাজ করলেন মাস্টার্সে...
চাকরির বাজার নিয়ে কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো। আশায় আছি আর বছর দুয়েকের মধ্যে সব ঠিক হওয়ার।
চমৎকার লেখা। প্রতিটা গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট এর জীবনের প্রতিচ্ছবি । তবে চৈনিক মালিক খুশি করা খুবই কঠিন কাজ... ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ঃ(
তোমাকে এই বিষয়ে শুভ কামনা জানানোর সাথে নিজেকেও প্রবোধ দিলাম ঃ)
এই প্রবোধের মধ্য দিয়েই তো জীবন এগিয়ে যায়। লেখালেখি শুরু করে দাও এখানে। নতুন বাঁক নেওয়া জীবনের টুকিটাকি সম্পর্কে জানা হতো আমাদেরও।
সত্যিই আপনাকে দেকে আমার আপসেট মনে হয়না । কিছু কিছু মানুষ জয় করতে পৃথিবী'তে আসে, আপনি তাদের একজন। জ্বলে পুড়ে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়। ভালো থাকবেন ।
ধন্যবাদ অনেক।
চমৎকার লাগল আপনার লেখাটা।
হয়ত এই ‘আশা’ই আসল কথা। একসময় ভাবতাম কবে শেষ হবে পড়াশুনা, কবে আসবে সেই অধরা স্বাচ্ছন্দ্য, চাকুরী এবং আনুষাঙ্গিক। যখন এল, ভাবলাম এটাই কি চেয়েছিলাম। ছাত্রজীবনের সেই মুক্ত দিন গুলো টানে। এখন আছি পরবর্তী আশা গুলি নিয়ে...।
অবশ্য একটা সুপ্ত আশা ছিল একজন অপরূপা সুন্দরী, দারুণ চটপটে, অনূঢ়া (চীনদেশীয় কিংবা আদারওয়াইজ) শিক্ষক বা বস পাব... হল কই?
এই প্রসঙ্গে আজমীরের একটা কথা খুব মনে পড়ে। ও বলেছিলো, এখন টাকা না থাকলেও বয়স আছে, পরে টাকা থাকলেও বয়স থাকবে না। সে-জন্যই একটু কষ্ট করে হলেও ঘুরাফেরা করা বেড়াতো। সেই বাতাস আমার গায়েও লেগেছিলো বলেই টুকটাক ঘুরেছি আমিও। আশা করি ঐ বয়সে যেতে যেতেও জীবনের কিছু অবশিষ্ট থাকবে।
আমার ল্যাবে চলে আসেন, ল্যাবমেট হই দু'জনে।
আমার ক্ষেত্রে এই জিনিস ঘটতে শুরু করার আগেই আমি আত্মহত্যা করবো।
হেহ হেহ... সেটাই ভাবছিলাম আমিও। যতদূর মনে পড়ে, পাজি একটা পাকি সুপারভাইজার ছিলো না আপনার?
ও শালা পাকি হলেও শান্তি পেতাম। আমার সুপারভাইজারুদ্দিন দেশি লুক!
একাডেমিক ক্ষেত্রে আমি দেশী লুকদের ১০০ হাত দূরে থাকি
এই কারনেই আপনার শ্বশুর আব্বার ক্লাশ নেই নাই
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
.........ঠিকাছে। শ্বশুর আব্বা হইলেই যে ভালু হয়ে যাবে এমন কোন কথা নাই। ☺
ধুরো মিয়া! একে মন খারাপের দোকান চালাইতে চালাইতে আমার মাথা শ্যাষ, এখন যদি ভাই বেরাদারেরাও এইরাম দোকান দেয়া শুরু করে তাইলে ক্যাম্নে কী?
-------------------------
ওলো সুজন আমার ঘরে তবু আইলোনা
এ পোড়া মনের জ্বলন কেন বুঝলোনা!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
না রে ভাই, মন খারাপ না। বাস্তবতাকে মেনে নেওয়া শুধু। মন ভালো করা কিছু দিবো নে সামনে, আশা রাখি।
এই কথাটা মনে হয় বলা হয় নাই আগে যে- সচলে যে কয়েকটা সিরিজের অপেক্ষায় থাকি এইটা তার মধ্যে একটা
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
শুনে খুশি এবং লজ্জা হলো অনেক।
ইশতি ভাই- লেখা যথারীতি দুর্দান্ত... আপনার এই সিরিজটার আশায় কেনো এতোদিন বসে থাকি, এই লেখাটা তার পক্ষে সাফাই দিতে পারে...
_________________________________________
সেরিওজা
উৎসাহের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ, ভায়া। এটা না, যেকোন রকম লেখায় আবার ফেরার মূল কৃতিত্ব সিরাত/মনওয়ারের। ও না গুঁতালে...
সেই সুদূর অতীতে, যখন আরবের লোকেরা মূর্তিপূজা করিতো, আর আমরা যখন গ্র্যাডস্কুলে ছিলাম, তখন এরকম একটা কথা প্রচলিত ছিলো যে মানুষের তিনটা বাবা। এক নম্বর হলো, আসল বাবা। দুই, গ্র্যাড সুপারভাইজর বাবা। তিন, ক্রেডিট কার্ড। তিন বাবার সম্মিলিত প্রশ্রয় না পেলে জীবনে উন্নতি করা সম্ভব হয় না। তোমার লেখা পড়ে সে কথা মনে হয়ে গেলো, যদিও তোমার ক্ষেত্রে দুই নম্বরকে ঠিক বাবা বলা সমীচীন হবে না।
আমেরিকার সব আণ্ডারগ্র্যাড বা গ্র্যাড স্টুডেণ্টই মাথায় ৩০-৪০ হাজার ডলার ঋণ নিয়ে স্কুল থেকে বের হয়। তাই তুমি একা না এই পরিস্থিতিতে। শুধু এটুকু বলতে পারি, সময়ে সব কিছুই ভালোর দিকে যাবে, তোমার ভাবার কারণ নেই।
তোমার এই সিরিজটা ভালো লাগে, সবসময়ই। তবে এ পর্বটাতে গানটার সাথে লেখার যোগাযোগটা ঠিক সেভাবে পরিস্কার হয়নি। সময় পেলে আরেকটু যোগ করতে পারো।
লেখার কলেবর বড় হয়ে যাচ্ছিলো দেখে থেমে গিয়েছিলাম। শেষ প্যারাগ্রাফটাকে একটু বড় করে লিখলাম। বর্তমান ভার্শনের শেষ ৩ প্যারাগ্রাফ পড়লে হয়তো একটু পরিষ্কার হবে।
আন্ডারগ্র্যাজুয়েটের পড়া নিজখরচে পড়েছি। কাজ করেছি, স্কলারশিপ পেয়েছি, বিনাদেনায় পাশ করে বের হয়েছি। মাস্টার্সে ফান্ডিং ছিলো না। সেটা উৎরাতে পেরেছি আমার মায়ের অসামান্য ত্যাগ ও পরিশ্রমের জন্য। সেটার গল্প "নীড়ে ফেরা"য় লিখেছিলাম। তবুও পারছিলাম না একটা পর্যায়ে। সে-সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলো শোভন ভাই আর পুরুজিতের মতো অসামান্য মানুষ।
এই লেখায় যে-দেনার কথা বলা আছে, তা প্রাত্যহিক জীবন চালাতে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডে জমে যাওয়া দেনা।
তিনি একজন সাহসী ছেলে,লেখাটা পড়ে মন ভালো হয়ে গেলো
উত্তল দর্পন
যাক, অন্তত একজনের তো মন ভালো হলো!
এতোদিন পর! আমি তো ভাবলাম তুমি বোধহয় "হারিয়ে গিয়েছি, এই তো জরুরি খবর" গান নিয়ে লিখেছ!
লেখা তো বরাবরের মতোই...
আশা করি তাড়াতাড়ি সব ঝামেলা চুকে যাবে। ভালো থেকো।
ঝামেলা নেই আর তেমন কোনো। একটু একটু করে গুছিয়ে আনছি সব। দেনা কমলেও রয়ে গেছে যন্ত্রণাটুকু।
হারিয়ে যাওয়ার দেখসো কী?
এত অসামান্য লেখা আপনার! মনে হল নিজের অনুভূতি আমার...
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ!
ইশতি
এই সিরিজের যতগুলো লেখা পড়ি
এমনকি আনন্দের মাঝেও একটা বেদনা ঝনঝন করে বাজে।
আরো যা যা পাশ দেয়া বাকি আছে তাড়াতাড়ি দিয়ে দাও
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
অবাক এবং ভালো লাগে এমন মন্তব্য পড়ে। একটু ভয়ে ভয়েই শুরু করেছিলাম এই আত্মজীবনীমূলক প্যানপ্যান। এখন দেখি অনেকের জীবনের সাথেই মিলে যায়। হয়তো সেই অনুরণনের জন্যই ভালো লাগে, কারণ আমি তো লেখায় বাড়তি কোন অনুষঙ্গ দেখি না।
সেটাই! যোদ্ধা মানুষ আপনি। জীবন ব্যাটাই দেখবেন রাউন্ড তিনেক পরে রিং ছেড়ে পালিয়েছে।
গানবন্দী জীবন শিরোনামটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। আমার নিজেরও এমন কিছু গান আছে যা একেকটা সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়- আনন্দ দুঃখ শোক কষ্ট সব! যেমন বছরখানিক আগে খুব খারাপ একটা সময় পার করছিলাম। তখন এটা খুব শুনতাম। এখনো যখন গানটা শুনি মনে হয় আমাকে এক ধাক্কায় সেই সময়ে ঠেলে দিলো।
ভালো থাকবেন ভাই।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
"যোদ্ধা"? হেহ... আমার বৌ বা ছোট ভাই এই কথা শুনলে যে হাসিটা হেসে নেবে! শিরোনাম ভালো লেগে জেনে খুশি হলাম। আমার নিজেরও পছন্দ তো।
সবার জীবনই কম-বেশি গানবন্দী। আমি আগে লেখা শুরু করেছি, তাই অনেকেই শুধু পড়ে যাচ্ছে। সবাইকেই বলি, এখানেও আবার বলছি। একই গানে বন্দী হলেও একেকটা জীবন ভিন্ন ভাবে বন্দী। সেই বন্দিত্বের কথাগুলো পড়তে আগ্রহী আমি।
লেখা ভালু পাইলাম।
আমি দুবাইয়ের চাকরি থুইয়া গ্রেড স্কুলে ঢুকলাম। মানিব্যাগ রাখাই বাদ দিছি।
করছেন কী? আমি তো সকাল-বিকাল গাই, "টাকা দেন, দুবাই যামু। দুবাই যামু, টাকা দেন!"
আমার আর্মি বন্ধু একটা ভালো উদাহরণ দিয়েছিল। গাধার মাথায় লাঠি বেধে একটু আগে মূলা ঝোলানো হয়, গাধা সেই মূলা খাবার জন্য সামনে আগায়, কিন্তু মূলা অধরাই থাকে। তাদেরও নাকি এভাবেই মূলা ঝুলিয়ে এটা করলে, ওটা হলে, এই লাভ হবে, ওটা হবার পর বলা হয় আরেকটা ধাপ, তারপরই নো চিন্তা। আমার মনে হয়, সবার জীবনই বোধহয় তাই, মূলার পেছনে সমান দূরত্ব রেখে ছুটে চলা। লেখাটা দারুন লাগলো।
আমি জন্ম থেকেই গাধা তো, তাই এই প্রক্রিয়ার সাথে খুব পরিচিত। আমার মা সেই ক্লাস ফাইভ থেকেই একেকটা বড় পরীক্ষার পর আমাকে বিয়ে করিয়ে দিচ্ছে। বৃত্তি গেল, ম্যাট্রিক-ইন্টার গেল, ব্যাচেলরস গেল... অবশেষে মাস্টার্স সেরে পিএইচডি করার সময় তিনি সদয় হচ্ছেন।
হে হে হে।
এর হাত থেকে আর মুক্তি নেই ব্রাদার। চাকরিজীবনে ঢুকলে টের পাবেন, খরচ শুধু বেড়েই চলে, বেড়েই চলে...
=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
তোমার লেখাটা পড়ে এতো ভাল লাগল, কেন জানো ? না, তোমার এই ক্রেডিট কার্ড, চৈনিক প্রফেসরের জাতাকলে নিষ্পেষিত জীবনের পাচালী শুনে নয় ............
দেখতে পেলাম, কেমন করে তুমি বাবার কথা বললে । দেখতে উনি খুব দীর্ঘকায় নন ঠিকই, কিন্তু কিছু কিছু মানুষ খর্বকায় হয়েও দিব্বি আকাশ ছুয়ে ফেলেন, তোমার ঐ ছিপিতে ভরা দৈত্যের মত । কোন এক অদ্ভুত কারনে তারা রপ্ত করে ফেলে জীবনে সততার সর্বোচ্চ পাঠ । কাজেই সারা বিশ্ব তাদের পাগল বললেও কিচ্ছু যায় আসে না এদের । তোমার জীবনেও সেইরকম দিন আসুক যেদিন আত্মজ এমন করেই দূর থেকে শ্রদ্ধার নমষ্কার জানাবে ।
অনেক সিরিয়াস কথা বলে ফেললাম । ও হ্যা, সুহাসিনীকে খালার শুভেচ্ছা জানিও ।
আর তোমার লেখাগুলো সব দেখছি সময় নষ্ট করে পড়তেই হবে ।
.......................................
তোমারই ইচ্ছা কর হে পূর্ণ ....
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। এই জায়গাটা নিজের মতো করে লুকানো ছিলো, এখন দেখছি একটু একটু করে জেনেই যাচ্ছো তোমরা! নাহ, আর আজে-বাজে কিছু লেখা যাবে না!
এই লেখাটা অনেক দিন ধরে একটু একটু করে লেখা। এই দৈত্যটার কথা কীভাবে লিখবো বুঝে পাচ্ছিলাম না, তাই। এতগুলো বছর ধরে ভয়ে দূরে দূরে থেকেছি, এখন হঠাৎ করে এই নৈকট্য একটু নতুন-নতুন লাগে।
ভাগ্নের লেখা, না পড়ে কি খালার উপায় আছে?
আপনি ভয় দেখাইতে না চাইলেও, লেখাটা পইড়া সেইরকম ভয়ই পাইলাম !!
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
কেন, খুব সহসা এই দিকে আসা হচ্ছে নাকি?
কেমন বিষণ্ন অনুভূতি হচ্ছে।
সিরিজটা আসলেই অসাধারণ। প্রত্যেকটা পর্বই মনে দাগ কেটে যায় খুব সহজে।
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
নতুন মন্তব্য করুন