অধমের ধর্মাচরণ এক শব্দে বর্ণনা করতে গেলে ‘অপধার্মিক’-এর চেয়ে উপযোগী কিছু খুঁজে পাওয়া যাবে না হয়তো। কালে-ভদ্রে জুম্মায় যাই, ঈদ উপলক্ষে ছাত্রদের আগাম ছুটি দেই; কিন্তু প্রকৃত ধার্মিকের তুলনায় এগুলো গণনায় নেওয়ার মতো না। সেই তুলনায় ২০০৯-এর রমজান মাস বেশ ঘটনাবহুল ছিলো।
মাত্রই পাহাড়ি ভার্জিনিয়া থেকে সাউথ ক্যারোলাইনার ধূসর সমতলে নেমে এসেছি তখন। প্রথম দু’সপ্তাহ ছিলাম বীভৎস রকম নোংরা এক বাসায়। তেলাপোকাময় এক মেঝেতে চাদর পেতে ঘুমাতাম, চারপাশে ছিটানো থাকতো বিবিধ কীটনাশক। রান্নার কোনো উপকরণ ছিলো না, তাই ডোরিটো’স চিপস আর দুধ-জুস খেয়ে থাকতাম। সাথে বয়ে আনা মালপত্র বন্দী ছিলো সদ্যকেনা গাড়িটার ভেতর। বাসার মূল বাসিন্দা বেশ হাড়-কেপ্পন ছিলেন। বাথরুমে সাবান বা পর্দা ছিলো না, ঘরের কোথাও ট্র্যাশ বিন ছিলো না, বসার ঘর জুড়ে ছড়িয়ে ছিলো বাসি দুধের বোতল আর পঁচা রুটির ব্যাগ। কিছুদিন না যেতেই নাভিশ্বাস উঠে যাওয়ার যোগাড় আমার। যাযাবর জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে জানি, সম্বল হ্রাসের সাথে সহায় বৃদ্ধির সম্পর্ক সমানুপাতিক। মনুষ্যত্বের স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ সেই দীন দিনগুলোয় দেখার সুযোগ হয়েছিলো আরও একবার। একা একা যখন খাবি খাচ্ছিলাম, ঠিক তখনই পড়শি কিছু বড় ভাই অনেক যত্নে পেলে-পুষে রাখা শুরু করলেন। নিজের বাসায় উঠার পরও তাঁদেরই সাথে ঘুরে বেড়াতাম, ইফতার করতাম, নিয়ম করে তাস খেলতাম, ইত্যাদি।
ক্লাস আর রমজান মোটামুটি একই সময়ে শুরু হলো সেবার। রমজানের প্রথম দিনেই কী মনে করে দিনের নির্যাসটুকু ফেসবুকে লিখে ফেলি স্ট্যাটাস মেসেজ হিসেবে – Thou shalt not start cooking for Sehri at 2am. পটভূমি ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন। দ্বিতীয় দিনে বাবার সাথে ফোনে কথা বলার সময় মৃদু বকা খেলাম ঘুমের অনিয়মের জন্য। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম তার এই তথ্যের সূত্র কী। জবাব, ফেসবুক। রোজার প্রথম দিনে নিয়ম করে অসুস্থ হয়ে যাওয়া আমার বাবার চোখ এড়ায়নি আমার ফেসবুক কার্যকলাপের টাইমস্ট্যাম্প। সেই দিয়ে দ্বিতীয় দিনের স্ট্যাটাস – Thou shalt have faith in the sharpness of thy father's Ramadan-weary eyes. এভাবেই চলতে থাকে স্ট্যাটাসের গাড়ি। একেকটা রোজার নির্যাস হয়ে যায় সেদিনের ফেসবুক আপডেট। কোনোদিন ভরপেট ভাত খেয়ে ফুটবল খেলতে যাওয়ায় আফসোস (Thou shalt choose no more than two of three R's – Ramadan, Rice, and Recreation Center.), কোনোদিন ঘুম বনাম সেহরী নিয়ে দ্বন্দ্ব (Thou shalt learn to choose between "sleep tight" and "eat right", or risk both.), কোনোদিন বাজারে গিয়ে বাজেট ফেল (For richer or poorer, through good times and bad, in times of failure and in times of triumph, in sickness and in health, thou shalt remain true to thy shopping list.), কোনোদিন মেজাজ ঠাণ্ডা রাখার ব্যর্থতা (Thou shalt not fast and be furious.), কোনোদিন ভুল রঙের শার্ট পড়ে ডিপার্টমেন্টাল ফটোশুট-এর মডেল হয়ে যাওয়া (Thou shalt not wear a pink shirt to work.), ইত্যাদি।
ক’দিন না যেতে দেখলাম অনেকেই অনুসরণ করছেন অধমের দৈনন্দিন ঘটনাবলি। কারও কারও সাথে অনেক আড্ডা-তর্কও হলো সময়ে সময়ে। দিন দশেক যাওয়ার পর এক আধাচেনা (আমার দিক থেকে সম্পূর্ণ, তাঁর দিক থেকে শূন্য, গড়ে অর্ধেক) কন্যার সাথে আলাপ শুরু হয়। এই ফেসবুকেই তাঁকে চার বছর আগে প্রকাশ্যে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই, জবাবে শুকনা ধন্যবাদও মেলেনি। বছর দুয়েক আগে তাঁর একটি প্রশ্ন নিউজফিডে দেখতে পেয়ে উপযাচক হয়ে সমাধান বাতলে দেই। এবারে কিঞ্চিৎ উন্নতি, খড়খড়ে একটা ধন্যবাদ। সেই কন্যাও দেখলাম নিয়ম করে স্ট্যাটাস মেসেজ অনুসরণ করছেন, দৈব-দুর্বিপাকে কিছু ‘লাইক’ মারছেন। সংযমের মাসে পরওয়ারদিগারকে তাঁর ভাগের ১৫ ঘন্টা বুঝিয়ে দিয়ে নিজের ভাগের ৯ ঘন্টায় মনের কোণে লালিত লম্পটটাকে উন্মুক্ত করে দিলাম। কন্যাকে প্রশ্ন করলাম, তোমার জন্মদিন অমুক সময়ে না? কন্যা বিগলিত, অধমও চার বছর পর শোধ তুলতে পেরে বিগলিত। স্ট্যাটাসেও কন্যার সাথে আলাপচারিতার প্রতিফলন আসতে লাগলো। মাহে রমজানের সুফল হাতে-নাতেই মিললো। ঠিক দু’সপ্তাহ নাগাদ কন্যা অধমের বাহুলগ্না হলেন, অল্প ক’মাস নাগাদ স্ত্রী।
পিএইচডি-র যন্ত্রণায় এবারের রমজানে এমনতর শৌখিনতার সুযোগ নেই। তবুও রোজার মাস আসতেই গত বছরের কথা মনে পড়ছিলো। কারণ, শুধু বৌ বা নতুন বাসা না, মনের মধ্যে ঘুরপাক খাওয়া ধর্মসংক্রান্ত অনেক প্রশ্নের জবাবও সেই রমজান মাসেই পাওয়া।
ধর্মে বিশ্বাস রাখলেও খুব সচেতন ভাবেই আমি ধর্মাচরণবিমুখ মানুষ। কোনো বাসায় পরপর দুই দিন নামায পড়ার জন্য চাপাচাপির স্বীকার হলে আমি তৃতীয় দিন থেকে হাফ-প্যান্ট পড়ে যাই। আমার দৃষ্টিতে ধর্ম একেবারেই ব্যাক্তিগত বিশ্বাস, একে সামাজিক রূপ দিতে চাওয়া অগ্রহণযোগ্য । এই ধরণের প্রয়াস নিরীহ ভাবে শুরু হলেও চূড়ান্ত পরিণতি পাকিস্তান কিংবা ইসরায়েলের মতো অপরাষ্ট্র; যেখানে সংস্কৃতি কিংবা জাতীয় পরিচয়ের বালাই নেই, আছে শুধু ধর্মের গায়ে বিভিন্ন রকম রঙ লাগিয়ে তা দিয়ে সব কিছু ব্যাখ্যা করার চেষ্টা।
গ্রন্থিত ইতিহাস অনুযায়ী, প্রতিটি ধর্ম বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করে গেছে একটি ‘ইনক্লুসিভ’ চরিত্র বজায় রাখতে। যেই পরিমার্জন অধিকতর মানুষকে ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করে, সেই পরিমার্জনের পথেই গেছে ধর্মগুলো। পরিহাসের বিষয় হলো, ধর্মের ধারক হতে গিয়ে এর মূল প্রবক্তারা আজ ধর্মকে ‘এক্সক্লুসিভ’ চরিত্র দিচ্ছেন। নিজের ধর্ম থেকেই উদাহরণ দেই। বাকি বিশ্বের অনেক শতক আগেই দাসদের উল্লেখযোগ্য অধিকার দেওয়া হয়েছিলো ইসলাম ধর্মে। সমকালীন ‘বাস্তবতা’র কারণে সকল শক্তি থাকা সত্বেও দাসপ্রথা বিলুপ্ত করা হয়নি অবশ্য। তবুও এতে অবহেলিত অনেকের কাছে ইসলাম নতুন আবেদন পেয়েছে। উল্লেখ্য, এই বৈপ্লবিক অধিকারায়নে উহ্য থেকে গেছে নারীমুক্তি, কারণ তাঁরা সমাজের কোনো উল্লেখযোগ্য শক্তি নন, শ্রমশক্তিতে ভূমিকা রাখেন না, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আপনা থেকেই অধীনস্থ, ধর্মের স্থিতি ও কলেবর বৃদ্ধিতে তাঁদের ভূমিকা নগণ্য। যুগের তুলনায় এগিয়ে থাকার শিক্ষার পরিবর্তে এই যুগের প্রবক্তারা দেখছেন সপ্তদশ শতাব্দীতে ফিরে যাওয়ার রোমান্টিক স্বপ্ন!
ধর্মের প্রাণ ঐশ্বরিক হলেও এর কলেবর বৈষয়িক। প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখার জন্য ধর্ম নিজেকে নিয়ত আধুনিক করে, সমসাময়িক সংস্কৃতি থেকে উপাদান নিয়ে ঋদ্ধ হয়। অধিকাংশ মানুষের পছন্দের কাজ হিসেবে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানও কালক্রমে সংস্কৃতির উপাদানে পরিণত হয়, কিন্তু তা ধর্মের পুঁথিবর্ণিত রূপের “অপভ্রংশ” হিসেবে। এই অপভ্রংশটুকুই ধর্মকে কালোত্তীর্ণ করে, সংকীর্ণ সংজ্ঞায়ন নয়। মানুষ যখন অসভ্য যুগে ছিলো, তখন ধর্মও অনেক অসভ্য উপাদান ঢুকে গেছে। অথচ আজ তুলনামূলক সভ্য যুগে এসে ধর্মের বিবর্তন থমকে গেছে। উদার, মুক্তমনা, দূরদর্শী, বা ন্যায়নিষ্ঠ কোনো উপাদান সংযোজিত হচ্ছে না কোনো ধর্মেই।
ধর্মকে যাঁরা শুধুই সংকীর্ণ, পুঁথিগত অর্থে নেন, তাঁরা আজও খুব কঠোর ভাবে নারী অধিকার বিরোধী। সম্ভব হলে চারটি বিয়ের চেষ্টা থাকে, সম্পত্তির অর্ধেক হিস্যা দেওয়ার ব্যাপারেও কোনো দ্বিধা কাজ করে না, ধর্মের দোহাই দিয়ে নির্যাতন করতেও কারও হাত কাঁপে না। এখানেই ধর্মের আক্ষরিক অনুবাদের সমস্যা, এগুলো থেকেই অধমের ধর্মাচরণ সম্পর্কে বিতৃষ্ণা ও ধর্মকে সংস্কৃতি হতে দিতে অনীহা। সংকীর্ণ ব্যাখ্যা করার প্রয়াসে মত্ত লোকেদের দেখে ইতিহাসের ক্লাসে পড়া একটা কথা মনে পড়ে যায় – “White man’s burden”. দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় এসে স্প্যানিশ ঔপনিবেশিক শক্তি অবাক হয়ে যায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অনগ্রসরতা দেখে। শ্বেতাঙ্গরা তাদের “দায়িত্ব” হিসেবে নেয় অন্ধকারের কবল থেকে এই মানুষগুলোকে “উদ্ধার” করাকে। ফলাফল দ্বিবিধ – প্রথমত, কোনো রকম দ্বিতীয় চিন্তা কিংবা অনুতাপ ছাড়াই অনেক মানুষ মারা পড়ে বৃহত্তর ভালোর স্বার্থে; দ্বিতীয়ত, শ্বেতাঙ্গদের বয়ে আনা জীবাণুর সংক্রমণে মারা যায় অগণন মানুষ। এই অকল্পনীয় ক্ষতির চেয়ে কি সেই মানুষগুলোকে নিজের মতো ছেড়ে দেওয়াই উত্তম ছিলো না? ভারতবর্ষও কি দুই শ’ বছরের গোলামি করার চেয়ে ক’বছর পর ট্রেন লাইন ও বিদ্যুৎ পেতে পছন্দ করতো না?
এসব কারণ মিলিয়েই সংগঠিত ধর্ম বা ‘অর্গানাইজড রিলিজিয়ন’ আমার দু’চোখের বিষ। ধর্ম আমাকে কাঠামোবদ্ধ ভাবে অনেক আদেশ-নিষেধ দেয় ভালো মানুষ হওয়ার জন্য, নীতি বুঝবার আগেই নীতিবান করে তোলে অনুশাসনের মাধ্যমে। অন্য দিকে সংগঠিত ধর্ম যুগে যুগে অনেক অপচর্চায় লিপ্ত হয়েছে ঈশ্বরকে জিম্মি রেখে। মধ্যপ্রাচ্য দূরের কথা, এই আমেরিকায়ও এদের প্রতাপ দেখে বিরক্ত। সাউথ ক্যারোলাইনায় “ব্লু ল” বলে একটি আইন আছে যা রবিবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত দোকান খুলতে দেয় না, চার্চে যেতে বাধ্য করার “আইনসঙ্গত” কারসাজি আর কি! একই দেশে আর দু’দিন পর এক কাঠমোল্লা ঘোষণা দিয়ে কুরআন শরীফ পুড়ানোর আয়োজন করছে। শতকের পর শতক ধরে বিজ্ঞানের পথ আগলে রাখার ইতিহাস তো আছেই।
জাকির নায়েক থেকে শুরু করে যত্রতত্র গজিয়ে উঠা টেলিভ্যাঞ্জেলিস্টদের আমার আপত্তিটাও এখানেই। ধর্মকে কি নিজের মতো ছেড়ে দেওয়া যায় না? খুব কি জরুরী নিজেকে ধর্মের শেষ সহায় হিসেবে কল্পনা করা? যেই স্রষ্টা এক ফুৎকারে বিশ্ব-চরাচর সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি সামান্য কিছু বিপথগামী “কাফির”-এর অসাম্প্রদায়িকতার স্বপ্নে বেসামাল হয়ে যাওয়ার কথা? যা-কিছু ভালো, তাকে কি এমনিতেই ভালো বলে স্বীকৃতি দেওয়া যায় না? কেন সব কিছুতেই রাজনৈতিক নামকরণের মতো করে একটা “সুবহানাল্লাহ” জুড়ে দিতে হবে? কেন ধর্মের নিশান বাহুতে পড়ে ঘুরে বেড়াতে হবে? কেন স্রেফ ধার্মিকতাকে বিবেচনায় নিয়ে স্বীকৃত অপরাধীদেরও আস্কারা দিতে হবে?
নিজের মনে এই ধারণাগুলো স্পষ্ট হওয়ার পরও জনসমক্ষে কিছুটা অপরাধবোধ কাজ করতো। সেই অনুভূতিটা চাইলেও ঝাড়তে পারছিলাম না। সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে নজরুলের একটা গান। বহুকাল আগে দুখু মিয়ার লেখা হামদ ও নাত আনিয়েছিলাম দেশ থেকে। তার মাঝে একটা গান কানে আটকে গেল হঠাৎ।
“যেদিন রোজ হাশরে করতে বিচার তুমি হবে কাজী
সেদিন তোমার দিদার আমি পাবো কি আল্লাহজী?”
গানের কথাগুলো আমার “ধোঁয়াশা” ধর্মবিশ্বাসের সাথে খুব গভীর ভাবে অনুনাদ করে। আমার ভাবনায় স্রষ্টার সাথে তাঁর সৃষ্টির সম্পর্ক অন্ধ ভক্তির নয়, মিথষ্ক্রিয়ার। দু’জনকে দু’জনের প্রয়োজন ভিন্ন কারণে। আমার জ্ঞান, অর্জন, বোধের পেছনে তাঁর অবদান আছে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি বোধসম্পন্ন মানুষ। বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও আমি ধর্মের অলীক স্বপ্নে বিশ্বাস রাখি নিজের সিদ্ধান্তে। বিবর্তনের সাক্ষী হয়েও কিতাবি বুজরুকি মানি নিজেরই সিদ্ধান্তে। আমার যৌক্তিক, সুসংবদ্ধ চিন্তাভাবনা অনেক কিছু ব্যাখ্যা করতে পারে না। তার সমাধান হিসেবে আমি ধর্মকে ধারণ করি, আমার চেয়ে অনেক উঁচু কোনো সত্ত্বা আছেন জেনে মনকে শান্ত রাখি। অস্তিত্ব গুঁড়িয়ে দেওয়া দুঃসময়েও তাঁর উপর বিশ্বাস রাখি।
বহুকাল ধরে মনের মধ্যে সুপ্ত যুক্তিগুলো একত্র হয় এক বছর আগের এই সময়েই। অবশেষে নিজের অবস্থানেও থিতু হই, মন থেকে বিশ্বাস করি যে আমার ধর্মে আমার মতো করে বিশ্বাস স্থাপনের পূর্ণ অধিকার আছে আমার, কোনো চরমপন্থীর হাতে একে ছিনতাই হতে না দিতেই পারি আমি। এই উত্তরণে সাথী ছিলো দুখু মিয়ার অসামান্য হামত-এ-খোদা। রোজ হাশরে ভয় পাওয়ার পরিবর্তে নাহয় সরাসরি তাঁকে প্রশ্ন করলাম প্রয়োজনের অনেক মুহূর্তে অনুপস্থিতির ব্যাপারে, ধন্যবাদ জানালাম সুসময়গুলোর জন্য। এই আলাপচারিতার পর যদি অন্ধ আনুগত্য বা নিয়মনিষ্ঠ ধর্মাচরণের অভাবে আগুনে পুড়তে হয় তবে তা-ই সই। কারণ…
“আমি তোমায় দেখে হাজারো বার দোযখ যেতে রাজি”
|
৭০ থেকে ৭৫ ভাগ খাঁটি ধর্মপ্রান নিরীহ মুসলমান
লেখক ঠিক তাই...খাঁটি ধর্মপ্রাণ (কারণ অনেক কিছু বাকোয়াজ জেনেও বিশ্বাস করেন) আর নিরীহ তো বটেই...বাংলাদেশের ৭০-৭৫ ভাগ মানুষ এরকমই। ১৫-২০ ভাগ শুক্রবার আসলে ইসলামি শাসন ইসলামি শাসন বলে লাফালাফি করে কিন্তু বাসায় গিয়ে ঠিকই ক্লোজ-আপ ওয়ান দেখে আর এসেমেস করে সালমাকে ভোট দেয়। আর বাদবাকিগুলা বাংলাদেশি না, আরব, তাও প্রাগৈতিহাসিক কালের। এখন বলেন কার জন্য আইন করবেন।
ইসলামিক ক্রিমিনাল ল এর কিছুটা অনুসরন করে সৌদী-আরব।তাতেই কি অবস্হা জানেন?বিশ্বের সবচেয়ে কম ক্রাইম এখন সে দেশে।
বেশী Effective.
জানি, এক্কেবারে বেহেশ্ত হয়ে গেছে আরকি। এতই বেহেশ্ত যে আপনার এই মহান দেশের --রানি, মা-ত, মহান শাসকরা দেশের ভিতর ফেরেশ্তা সেজে দোর্রা-হাত-পা-কল্লা কাটার বিধান দিয়ে নিজেরাই আবার অন্য দেশে গিয়ে দুনিয়ার জঘন্যতম কুৎসিতম অশ্লীলতম মাগিবাজি-বেশ্যাবাজি-দুর্নীতিবাজি-সন্ত্রাসবাজি করে বেড়ায়। ছুটায়ে দেয় শরাবের নহর, বসিয়ে দেয় হূরপরীদের আসর। সব এই দুনিয়াতেই, সাধের বেহেশ্তে যাওয়ার আগেই। এসব সবাই জানে কিছু অন্ধ লোক ছাড়া। আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও অসঙ্খ্যবার বিস্তারিত এসেছে এসব কথা। উন্নত পশ্চিমা-বিশ্ব থেকে শুরু করে পূর্ব-ইউরোপ, রাশিয়া, প্রাক্তন-সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র-সমূহ, পোল্যান্ড, ভারত ইত্যাদি দেশ থেকে হুরপরী সংগ্রহে কোনই অনাসক্তি নেই এদের - যদিও এদিকে তারা তথাকথিত ধর্মীয় হুকমতের ও আইনের মা-বাপ। আশে-পাশের প্রায় প্রত্যেকটা তুলনামূলকভাবে গরীব আরব দেশে বোধহয় এদের অভিজাত পাড়ায় নিজস্ব রক্ষিতা-বাড়ি আছে। দেশের ভিতর দেশি প্রজা বা বিদেশি মিসকিনদের (ওদের ভাষায়; দেখুন আপনার মতো মুসলমান 'ভাইদের' কত্ত সম্মান করে ওরা! এই না হলে মুস্লিম উম্মাহ! ) সামনে 'ভাবমূর্তি' বজায় রাখতে রাখতে যখন হয়রান হয়ে যায়, তখন বোধহয় ঐসব রক্ষিতাবাড়ি-বাগানবাড়িতে গিয়ে একটু চাঙা হয়ে আসে নিত্যই। (এর অতি সামান্য এই অধমের নিজের চোখেই দেখা)। এজন্যেই এইসব অন্যান্য আরব দেশের অনেকেই আবার এই সৌদি হারামিদের দুই চোখে দেখতে পারে না।
দুনিয়াজুড়ে এদের অত্যাচার-অনাচার, দুর্নীতি আর সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসে মদতদানের কথা এখানে নাহয় নাইবা বললাম। এটা কিছু অন্ধ-গর্দভ বা ধান্দাবাজ ছাড়া আর সবাই জানে।
তো, এই না হলে আর পাপের পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত হয়ে "ক্রাইম-ফ্রি" নৈতিকতার শিখর-স্পর্শী শিখন্ডী ধর্মরাষ্ট্র হয় নাকি !!!! এই না হলে "Effective" ! আর অনন্তকাল ধরে এটাইতো ধর্মরাষ্ট্রের আসল চরিত্র!
সুতরাং এইসব ফালতু কথা এখানে বলে লাভ নাই। এই ধরনের ওয়াজ-নসিহত করতে চাইলে দেশদ্রোহী-বেঈমান রাজাকারদের কোন সভায় করেন গিয়ে। তবে ওরা আপনার কথা শুনবে বটে আবার আস্তিনের তলায় মুখ লুকিয়ে মুখ টিপে হাসবেও বটে। ওরা গুরুমারা চ্যালা কিনা ! আসল গোমর সবই জানেন ওনারা।
শেষ কথা হলো, আপনাদের সৌদি বা মওদুদী-মার্কা তথাকথিত ধর্মরাষ্ট্র ও ধর্মরাষ্ট্রতত্ত্ব আসলে খোদ ইসলামের দৃষ্টিতেই স্বকপোলকল্পিত, অনৈস্লামিক, বেদাত, ইনোভেশন, মোনাফেকির চুড়ান্ত...এমনকি -- পাক্কা "কুফরী কালাম"। এটা নিজেকেই আল্লার জায়গায় বসাতে চায়। আর এই কুফরী-কালাম তত্ত্বের প্রবক্তারা হজরত মোহাম্মদের সমকক্ষ হয়ে বসে (আপ্নার গুরু নিজামীবাবুর সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্য স্মরন করুন) এই দুনিয়াতেই ২১বিংশ শতাব্দীর পয়গম্বর-কাম-রাষ্ট্রপ্রধান হতে চায়। সুযোগ পাইলে এই ব্যাটা আর কিছুদিন পরে নিজেরে হয়তো আল্লাহ বলেই দাবি করে বসতো। তওবা! তওবা! ওয়াস্তাগফিরুল্লাহ! নাউজিবিল্লাহ্! আর আপনি বিশ্বাসী হিসাবে তো জানেনই, ইসলামে এইসব কত্তবড় গুনাহের কাজ। সব গুনাহর মাফ আছে, 'শির্ক'-এর কোন মাফ নাই! সুতরাং, সাধু সাবধান, এখনো সময় আছে সুপথে - সঠিক দ্বীনের পথে - চলে আসুন এইসব মোনাফেকি, শির্কি, আর কুফরী-কালাম ছেড়ে। ভালো হয়ে যান। নাস্তিকরা নাহয় হাবিয়া দোজখে যাবেই এবং আপনার কথানুযায়ী এই পোস্টের কান্ডাকান্ডজ্ঞানসম্পন্ন ধর্মবিশ্বাসী লেখকও হয়তো, কিন্তু আপনাদের মতো পরহেজগার ফেরেশতার চেয়েও ফেরেশতা মানুষেরা কেন এই কুফরী-কালামের (মওদুদীবাদ এবং এইরকম অন্যান্য কাল্পনিক বিদাৎ ধর্মরাষ্ট্রতত্ত্বগুলি) চক্করে পড়ে নিজেদের হাশরের মাঠের ভবিষ্যৎ এইভাবে ফকফকা করে দিবেন? কিম্বা দেশের? আপনাদের জন্য লুৎ ইত্যাদি জাতির উপর আল্লাহর তরফ থেকে যেরকম গজব নেমে এসেছিল, বাংলাদেশের উপরেও তেমন যেন না নেমে আসে। আল্লাহ আপনাদের হেদায়েৎ করুন !
শেষ করার আগে, ছোট মুখে একটা বড় উপদেশ দেই আপনারে। নিচের ইংরেজি মন্ত্রগুলি মুখস্ত করুন এবং এখন থেকে শয়নে-স্বপনে-জাগরনে সর্বক্ষন তসবীহ জপার মতো জপতে ও জিকির করতে থাকুন। তবে বুঝে বুঝে। দেখবেন আপনার শরীর-মন, IQ, মানসিক স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি ঘটবে। মানুষের বানানো উপরোক্ত শির্কি, মোনাফেকি ও কুফরী-কালামের খপ্পর থেকে মুক্তিলাভ করাও অনেক সহজ হবে। স্বদেশের ২০-২৫% মানুষকে আর বানের জলে ভেসে আসা নিরধিকার কচুরীপানা ভাবার আস্পদ্দা বা ধৃষ্টতা হবে না! তো এই হলো সেই অসামান্য মন্ত্রগুলিঃ-
১. “Only two things are infinite, the universe and human stupidity, and I'm not sure about the former.”
- Albert Einstein
২. “The difference between stupidity and genius is that genius has its limits.”
- Albert Einstein
৩. “The dumbest people I know are those who know it all.”
- Malcolm Forbes
৪. “Some people are born in ignorance, while other strive their whole lives to achieve it!”
- C.J. Rose
৫. “Programming today is a race between software engineers striving to build bigger and better idiot-proof programs, and the Universe trying to produce bigger and better idiots. So far, the Universe is winning.”
- Rich Cook
--------------------
স্যরি ইশ্তিয়াক ভাই, আপনার পোস্টটাকে বেপথু করার ইচ্ছা ছিল না। অনেস্ট।
ডাক্তার সাহেবের মন্তব্যগুলো দেখে গইড়ান দিয়ে হাসলাম শুধু। কিছু বলার নাই আর। পোস্ট লেখার কষ্ট সার্থক হলো শেষ বেলায় এসে।
আপনারা হাসছেন!!হাসেন।এ হাসি একদিন আপনাদের উপরই ফিরে যাবে।আমি শুধু দোয়া করতে চাই যেনো এ জগৎ ছারার আগেই বুঝতে পারেন।
প্রচন্ড খারাপ লাগল যখন আমাকে নিজামির ......।ভাইরে অনেক কথা বলেত মন চাইল।আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, আমি কি ছিলাম কি হইছি ইত্যাদি ইত্যাদি ।পরে ভাবলাম,থাক,এরা যুক্তি না,উপহাস জানে।আর জানে গালি দিতে।
আপনারা সুধী সমাজ,ভদ্দর লোক,মানুষকে গালি দেন ভদ্র সুলোলিত ভাষায়......
আমি সৌদি রাজা আর ধনীদের কাহীনি জানি,তাই তো লিখেছিলাম কিছুটা মেনে,সাধারণদের ক্ষেএে যেখানে ল মানা হয় সেটুক তো ভাল।
রাশিয়ায় তো বহু দিন চলল আপনাদের ধারনার সরকার,খুব কি ভাল!!!নাকি খারাপ????
আমিতো ভাবি খোদা আছেন,তাই তো আমি শান্ত সুবোদ।না হলে আমার মত মানুষের হাত থেকে অন্যদের বাচাঁবে কে?মাএ ১৪ বছর বয়সেই আমি যা শুরু করেছিলাম.......ঠিক এমন ই অবস্হা অন্যদের।চকলেট বয় রা,হাজার এমন ভাবুক সমাজের সমস্যা নেই,কিন্তু আমার জাতের ১টার মাথায় বিশ্বাসে যদি ঢুকে খোদা নাই জবাব দিহি নাই.......তারা যে কি ক্ষতিকর দেশ ও সমাজের তা তোমাদের জানা নাই।
এ কারনেই আমার এত চিক্-পাক্ করা।কারন তোমাদের ব্লগটা ভাল,অনেক সুন্দর লেখা থাকে।আমার অনেক ছেলে মেয়ে এ লেখা গুলো পরে।আমি চাই তারা জানুক বাংগালী শিক্ষিত মানেই নাস্তিকতা না।আর ভাল খোদা পৃতি থাকা মানে জামাতইসলাম না।
খোদা নাই মানে জবাবদিহিতা নাই, তা-না। বরং খোদা নাই মানে পুরা দায়িত্ব আমার ঘাড়ে! খোদা তো হাশরের দিনে হোলসেল মাফ করে দিতে পারে, কিন্তু আমি নিজেরে মাফ করি কেম্নে?
আর এই লেখা থেকে আমি তো একটা মেসেজই পেলাম, ধর্ম জিনিসটা সিরিয়াস ব্যাপার, কিন্তু মানুষ আর তার শুভবোধের উপরে কিছু না। আমি মনে করি এধরণের লেখা পোলাপানদের পড়ার দরকার আছে। তখন ধর্মের গ্যাড়াকল একটুশখানি আলগা হবে, আরাম করে নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ হবে, পোলাপান বুঝবে, "আরি! দুনিয়াটা তো এত ছোট জায়গা না! আর আমিও এমন স্পেশাল কিছু না যে আমি যা ভাববো তা-ই হইতে হবে।" দুনিয়াদারি বড়ই অনিত্য। এই টালমাটাল অবস্থাতেই আমাদের চলতে হবে। স্থির বিশ্বাসে থিতু হতে গেলেও বদমাশ দুনিয়া আবার গুঁতো দিয়ে তাকে নড়িয়ে দেবে। ম্যাচিউর মানুষ হবার প্রথম শর্তই হচ্ছে এই জিনিসটাকে হাউকাউ ছাড়া রেকগনাইজ করা (আর ইশ্তি ভাই তো অনেক আগে থেকেই...)
আমিতো ভাবি খোদা আছেন,তাই তো আমি শান্ত সুবোদ।না হলে আমার মত মানুষের হাত থেকে অন্যদের বাচাঁবে কে?
জ্বি, ঠিক এ কারণেই ধর্মগুলো এসেছিল। আপনাদের মত মানুষদের জন্য। যাদের ঠিক পথে রাখতে হলে নরকের মত ভীতি প্রদান করতে হয়। না হলে এরা যা খুশি করতে পারে। যে সব ব্যক্তির নিজের কাছে জবাবদীহিতা নেই তাঁদের জন্য ধর্ম অন্তত দরকার। আপনার সরল স্বীকারুক্তির জন্য অনেক ধন্যবাদ। এই স্বীকারুক্তি করার সাহস অনেকেরই থাকে না। অনেকেই জানে না কেন সে ধর্ম পালন করছে। উত্তরাধিকার সুত্রে পেয়েছে, তাই করছে। আপনি অন্তত জানেন কেন আপনার জন্য ধর্ম আবশ্যিক। আপনার কথায় কোন দ্বিমত নেই আমারো। আমিও বলি আপনি মন দিয়ে ধর্ম পালন করুন।
তবে যদি কারোর নিজের কাছেই জবাবদীহিতা থাকে, সে ধর্ম ব্যতীত উন্নতর নৈতিক জীবন খুব ভাল ভাবেই পালন করতে পারে। তাই আপনার চিক-পাক না করলেও চলবে। আর এই বিশ্বাসটাও দূরে রাখুন যে একজন মানুষ যে ধর্ম ছাড়াও উন্নতর নৈতিক জীবন পালন করেছে সে শুধু অবিশ্বাসের জন্য নরকে পঁচবে, আর আপনি ভয়ের কারণে আধা নৈতিক জীবন পালন করেও হুরের স্বপ্ন দেখবেন।
ধর্ম পালন করুন কিন্তু সেটা ইনসেপশান কইরেন না। ভাল থাকুন।
লগ-ইন করেছিলাম এই কথাগুলো বলার জন্যই। স্বাধীন ভাই বলে দিলেন যা বলার।
তবু নিজের মতো বলি একটু...
একটা বয়সে আমি খাবার নষ্ট করতাম। প্রথম প্রতিকার হিসেবে কাজে দিয়েছিলো "একটা ভাত নষ্ট করলে ৭০টা সাপ কামড়াবে" তত্ত্ব। এখন সেই বয়স নেই। তখন ভয় থেকে সব ভাত খেতাম, এখন মূল্যবোধ থেকে খাই। "৭০টা সাপ"-এর চেয়ে অনাহারী মানুষের কথা মাথায় রাখাকে বেশি ক্রেডিট দেই আমি এই সচেতনতার জন্য। আগে "৭০ জন হুর"-এর লোভে চুরি বা মিথ্যাচার থেকে দূরে থাকতাম, এখন মূল্যবোধের কারণে এসব অপকর্ম থেকে দূরে থাকি।
এই উদাহরণ দুটো থেকেই ধর্মের রিওয়ার্ড-পানিশমেন্ট মেকানিজমের প্রভাব স্পষ্ট হওয়া উচিত। মানুষ যখন অবুঝ, তখন ধর্মের অনুশাসন তাকে ঠিক পথে রাখতে সাহায্য করে। কালক্রমে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি ঘটে, তার মধ্যে মূল্যবোধ জেগে উঠে। শাস্তি ও পুরষ্কার ধর্ম থেকে ধর্মে ভিন্ন হয়, কিন্তু মূল্যবোধ সেই তুলনায় একেবারেই ধর্মনিরপেক্ষ একটি অনুভূতি।
ধর্মের *মূল উদ্দেশ্য* শুধুই কিছু মানুষকে শাস্তি বা পুরষ্কার দেওয়া নয়, বরং মানুষের মধ্যে মূল্যবোধের জাগরণ তৈরি করা। যে-মানুষ নিজের মূল্যবোধের কাছে জবাবদিহি করছেন তাঁকে ধর্মের কাছে জবাবদিহিতা না করার কারণে দায়ী করা যায় না, কারণ দুই-এর উদ্দেশ্য একই।
যাবতীয় প্রেজুডিস দূরে রেখে বলছি... আপনি ধর্মে বিশ্বাস করলেন কি না, সেটা আমার কাছে বিবেচ্য না। আমার বিবেচ্য একটাই, সমাজে আপনি সদাচারি মানুষ কি না। ব্যাক্তিগত ভাবে যে যা খুশি বিশ্বাস করি না কেন, সমাজে তা চাপিয়ে দিতে চাওয়া ঠিক না। সমাজ এক ধর্মের মানুষের না। "৭০টা সাপ" বা "৭০ বছর আগুনে পুড়া" বা "৭০ হাজার দোররা"-এর ভয় দেখাতে পারে একেক ধর্ম। ধরা-ছোঁয়ার বাইরের এই সব কাল্পনিক শাস্তি নিয়ে মারামারি করা কি যুক্তিসঙ্গত? মূল্যবোধ ও যুক্তিবোধ সেই তুলনায় অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। অহেতুক মারামারি না করে অনাহারীকে খাবার যোগানো বেশি প্রয়োজন। এখানে সৌদি আরব থেকে রাশিয়া পর্যন্ত সব কিছুই অপ্রাসঙ্গিক, সে-কারণেই গ্রুপ-স্পেসিফিক যেকোনো ব্যবস্থাও অগ্রহণযোগ্য।
কেউ মূল্যবোধ থেকে গরীবকে খাবার দিতে গেলে যদি "ধার্মিক" কেউ এসে "বিসমিল্লাহ বলে করলি না ক্যান, হারামি?" বলে তাড়া করে, তাহলে ধর্মই ছোট হয়।
মন্তব্য
সহমত। ধর্মের বিশ্বাস কিভাবে আমার মনকে নিয়ন্তণ করবে এটা জেনেই আমি মনকে তার হাতে ছাড়ি।
আল্লাহর সাথে কথোপকথন চালানোর চেষ্টা করলে তিঁনি মাঝে মাঝে হু, হ্যা করে জবাব দেন বলেই তো আমার মনে হয়। সাবকনশাস মাইন্ডের ব্যাপার বলে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানার পরেও আমার বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে যে আমি সৃষ্টিকর্তার সাথে আলাপ করছি।
সহধর্মিনীকে খুঁজে পাওয়ার প্রথম চান্দ্রবার্ষিকীর শুভেচ্ছা।
-শিশিরকণা-
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনি নিশ্চিত যে, আপনি অন্য ধর্মের পরিবারে বড় হয়ে উঠলে ঠিক এই নিউরনে অনুরণন হতো? উত্তর যদি 'না' হয়, তাহলে কি আপনি দৈবভিত্তিতে গড়ে ওঠা একটা ব্যাপার দিয়ে নিয়ন্ত্রিত না, যেটার ওপর আপনার কোন হাত ছিলো না এবং যেটা আপনি নিজে বেছে নেন নি? যুক্তিতে কি মানায়?
দ্বিতীয় লাইনটি সেমেটিক ধর্মগুলোয় ব্লাসফেমির কাছাকাছি। কিন্তু, ভারতীয় দর্শনে এটার নাম অদ্বৈতবাদ। রবীন্দ্রনাথের অনেক গানে এটার স্বরূপ পাওয়া যায়। ভক্তিমার্গও বলা যায় এটাকে অনেকটা।
থিংকিং এলাউড, কমপক্ষে সঠিক আত্মসমালোচনা, বলার কিছু নাই।
ব্যাপারটা নিয়ে ডকিন্সের 'গড ডিল্যুশন'-এর সম্ভবত নবম বা দশম অধ্যায়ে একটি উপ-অধ্যায় আছে 'Consolation' নামে, যাতে তিনি ধর্মবিশ্বাসীদের এই সান্ত্বনার পাতলা পর্দাটি নিষ্ঠুরভাবে ছিন্নভিন্ন করেছেন। হুমায়ুন আজাদও বেশ কঠিনভাবেই 'আমার অবিশ্বাস'-এ বিশ্বাসীদের 'মূর্খ সান্ত্বনাবোধ' আক্রমণ করেছেন।
যাগগে, আমিও সশব্দে চিন্তা করছিলাম। জবাবের কিছু নেই। ভালো থাকুন সপরিবার। শান্তিতে থাকুন।
ইদের অগ্রিম শুভেচ্ছা। ধর্ম যার যার, উৎসব হোক সবার।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
ডকিন্সের 'গড ডিল্যুশন'-এর সম্ভবত নবম বা দশম অধ্যায়ে একটি উপ-অধ্যায় আছে 'Consolation' নামে, যাতে তিনি ধর্মবিশ্বাসীদের এই সান্ত্বনার পাতলা পর্দাটি নিষ্ঠুরভাবে ছিন্নভিন্ন করেছেন। হুমায়ুন আজাদও বেশ কঠিনভাবেই 'আমার অবিশ্বাস'-এ বিশ্বাসীদের 'মূর্খ সান্ত্বনাবোধ' আক্রমণ করেছেন।
এই বিষয়ে কিছু লিখুন না। ডকিন্স বা আজাদের ঐ আলোচনা পড়ি নি, কিন্তু জানতে আগ্রহী।
http://books.google.com/books?id=Ayt0bUwN5v4C&lpg=PA195&ots=6M_F0_3--t&dq=god%20delusion%20consolation&pg=PA194#v=onepage&q=god%20delusion%20consolation&f=false
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ধন্যবাদ।
-------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
এস এম মাহবুব মুর্শেদ ভাই,আপনার দেয়া লিংক থেকে পড়লাম।very convincing.কিন্তু আপনার এই দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা (বা অনেকটা) একমুখি,তাই না ?যদি সত্যিই people of reason রা এক মুখি না হন তবে,TV-তে কিছু ইসলামিক ওরাটর রা Atheist দের সকল যুক্তির জবাব দিচ্ছে,দেখছেন ওগুলো?আমার জানার ইচ্ছা সে যুক্তি গুলি কি যুক্তি নাকি!!!সেগুলো ও বোকাচো০ার মতো কথা।
দয়া করে জানালে আমার দৃষ্টিভঙ্গি কে দিশা দিতে পারব।বানান ভুলের থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী।
আপনার মন্তব্য ভাল লাগল।
এখানে 'দৈবভিত্তিতে' না বলে 'ঘটনাচক্রে' বললে কি আরো ভাল হত না?
ডকিন্স তাঁর দৃঢ় অবস্থানের কারণে মৌলবাদীদের কাছে তো বটেই, তুলনামূলক 'উদারপন্থী' ধার্মিক বা অনিশ্চয়বাদী (অ্যাগনস্টিকের বাংলা যেন কি?) -দের কাছেও অপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাই এমন লোকেদের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে ডকিন্সের লেখা থেকে যুক্তি বা রেফারেন্স আনলেও, নামটা চট করে উল্লেখ করতে চাই না। ওটা শুনলেই জ্বলে উঠে অনেকে আর কথা বলতে চান না, যদিও তার আগে অবধি হয়ত ঠিকই আলোচনা হচ্ছিল...
বদ্দার বিখ্যাত "হ"-টাই এখানে সেরা এবং একমাত্র প্রতিমন্তব্য।
মন্তব্যটা খুব পছন্দ হয়েছে।
না, ঠিক একই নিউরনে অনুরণন হতো না। আমার ধর্ম ইসলাম, তাই চিন্তাটুকু এই ধর্মের কাঠামোর আপেক্ষিকে ছিলো। অন্য ধর্মের অনেকেও একই ভাবে চিন্তা করেন, তাই ধারণা করি যে খুব বেশি পরিবর্তন হতো না। এক্ষেত্রে ধর্মের চেয়ে বেড়ে ওঠার পরিবেশ বেশি ভূমিকা রেখে মনে হয়। "দৈব" সেটাই।
সেটাই সমস্যা। পুরো মধ্যযুগ ধরে ক্যাথোলিক চার্চ এই বিবেচনা থেকে বিজ্ঞানের পথ আগলে রেখেছে, উইচহান্ট করেছে, বই পুড়িয়েছে। তবুও এর বাইরে পথ নেই। "র্যাডিকেল"-কে প্রতিকার করার জন্য "মডারেট"-দের একটু সরব হওয়ার বিকল্প নেই তাই। ধর্মে বিশ্বাস করার পূর্বশর্ত হিসেবে মূর্খতাকে আরোপ করা হয় বলেই মূর্খ অনুসারী ব্যতিরেকে আর কেউ হুজুরদের মন জয় করতে পারেন না।
যুক্তির সমর্পণকে চাইলে এই ভাবে দেখা যায় অবশ্যই, তবে সেটাও খুব জরুরী না। অবিশ্বাসেই বা বাধ্য করা কেন?
সুন্দর লেখা +
মেলা দিন বাদে সিরিজ চালু করলেন। এই পর্বটা আদপে অনেক ভাবনার খোরাক জোগাল। দুনিয়ায় ধর্ম নিয়েই বোধহয় সবচেয়ে বেশি হেজিমনি হয়, ধর্মের মাধ্যমেই মানুষ সবচেয়ে বেশি করে খায়-, ধর্মের নামে অর্থের বেসাতি আজকাল আর অবিদিত নয়।
আপনার এই প্রশ্নগুলোর জবাবে কিন্তু স্বতঃসিদ্ধ হিসেবে আরও কিছু গোলমেলে প্রশ্ন এসে পড়ে। যাক ,ওদিকে আর গেলামনা।
লেখাটা দারুণ লাগল ভাইয়া
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
স্বতঃসিদ্ধ হিসেবে আরও অনেক প্রশ্ন আসে অবশ্যই, কিন্তু সেটা ধর্মবেত্তাদের বিবেচনার বিষয়। যুক্তি দিয়ে ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা যতটা অগ্রহণযোগ্য, যুক্তি দিয়ে ধর্মকে আক্রমণ করার চেষ্টাও ততটাই অগ্রহণযোগ্য। যে যেভাবে খুশি, যেই ধর্মে খুশি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারেন। শুধু রাষ্ট্রের মতো সার্বজনীন কোনো প্রতিষ্ঠানের উপর সেই বিশ্বাস চাপিয়ে দিতে গেলেই আমার আপত্তি।
রাষ্ট্রে যেকোনো ক্ষুদ্র আইন প্রণয়নের জন্যেও অনেক বাছ-বিচার করা হয়। আইন কার উপর প্রযোজ্য হবে, কতটা শাস্তি হবে, প্রয়োগের দায়িত্বে কে থাকবে, ইত্যাদি অনেক বিবেচনা কাজ করে। ছিঁচকে চুরির শাস্তির বিধান করতেও যেখানে এত বিবেচনা করা হয়, সেখানে বৃহত্তম ব্যাপারে কেন "আল্লাহ বলেছেন তাই..." বলে আইন প্রণীত হবে? এখানেও যাচাই-বাছাই প্রয়োজন, যা করতে গেলে যুক্তি দিয়ে ধর্ম-বনাম-আরেকধর্ম যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এতে কোনো ধর্মই জেতে না, বরং স্ব-স্বীকৃত আউলিয়ার প্রতাপে বহু মানুষের প্রাণ যায়।
ধর্মে বিশ্বাসের সাথে এই কারণেই অসাম্প্রদায়িকতার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। বিশ্বাসের কোঠরে ধর্ম বিচরণ করুক তার পূর্ণ কলেবরে; রাষ্ট্র পরিচালনার কোঠরে আসুক শুধুই ধর্মের শিক্ষাটুকু, তার বিধান নয়।
সেই পুরোনো ইশতি ভাই...
এই কথাটাই লোকজন বুঝলে হতো...
_________________________________________
সেরিওজা
হ রে ভাই, বহুদিন পর...
অসাধারণ লিখেছেন ভাইয়া...
"চৈত্রী"
ভালো লাগলো!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
খুবই সুন্দর ও গোছালো লেখা। ভালো লাগলো।
নজরুল আমার খুব একটা পড়া নেই, তবে রবি ঠাকুর-ও কিন্তু একই কথা বলে গেছেন। "ডাকঘর" -- এ এর একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।
আত্মিকজন
আমি রবীন্দ্র-নজরুল দুটাই পড়েছি কম। গুরুদেব নিজের মতো ভালোই ছিলেন, কারণ অন্য ধর্ম নিয়ে তেমন একটা লেখেননি। তাঁর লেখার বিষয়বস্তুতে "হিন্দু ধর্ম"-এর তুলনায় "সমকালীন সমাজ" এসেছে বেশি। ব্রিটিশ ভারতে নব্য-শিক্ষিতদের পরিচয় সংকট নিয়েও তিনি অনেক লিখেছেন। এগুলোর কারণে তাঁকে তেমন কোনো গঞ্জনা সইতে হয়নি।
আফসোস হয় নজরুলের জন্য। ধর্মের গূঢ় তাৎপর্য এই মানুষটার চেয়ে ভালো ভাবে কেউ বুঝতে পেরেছেন বলে মনে হয় না আমার। এক দিকে ধর্ম নিয়ে এত আকর্ষণীয় গান-কবিতা কেউ লেখেনি বলে তাঁকে বুকে টানা হয়, আরেক দিকে ধর্মের ভণ্ডামি ও সংকীর্ণতা খুব সরাসরি ধরিয়ে দেওয়ার কারণে অবমাননাও করা হয়। মৌসুমী অনুসরণ আর কি...
বুঢ়া ব্রাহ্ম (প্রাইওরি অফ সিওন) ছিলেন না? আমার হিসাব মতে তো উনি গ্র্যান্ডমাস্টার ছিলেন...
নজ্রুলিস্লামের রিচার্ড ডকিন্স পড়া থাকলে কী বেরুতো সেটা চিন্তা করে ভয় পেয়ে গেলাম
দারুণ পোস্ট
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।
ভাল্লাগসে।
মির্চা এলিয়াদ তো লিখলেন।।
এবার পুরো ঘটনা মৈত্রেয়ী দেবী'র মতো ঈশিতা আপুর জবানিতে পড়তে মঞ্চায়...
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
মৈত্রেয়ী আজ রাতে ফিরছেন। দ্যাখো লিখিয়ে নিতে পারো কি না। আমার একটাই উপদেশ, নিরাপদ দূরত্বে থেকে যা বলার বোলো।
জীবন থেকে নেওয়া উপদেশ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অনেকদিন পর লিখলেন ইশতি ভাই। লেখা ভাল লাগছে
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
হুঁ, ঝাড়া ৭ মাস পর নিজের মতো করে কিছু লিখলাম। এর মাঝে ব্লগ পোস্ট আছে কিছু, কিন্তু সেগুলো সার্ভিস-পোস্ট বলা যায়। একটাই ডকুমেন্টে পুরো সিরিজটা রাখা আছে। আগের পর্বে চোখ বুলিয়ে দেখি, "৫ মাস হয় পিএইচডি" শুরু করেছি লেখা। সেখান থেকেই বুঝলাম, ৭ মাস ধরে মরিচা পড়েছে...
দুর্দান্ত লাগলো, এমন চমৎকার বাংলা আর চিন্তার এমন স্বচ্ছ প্রকাশ, অনেক দিন পর পড়লাম। আমি নিজে এমনকি অপ-ধার্মিকও নই, বিপরীত-ধার্মিক গোছের কিছু একটা হব হয়তো, তবু এই সপ্রেম সহিষ্ণুতা আমাকে মুগ্ধ করলো।
অন্য প্রসঙ্গে বলি, সিরাত থাকাকালীন তো দেখা করা হলো না, ভবিষ্যতে যদি এ দিকে আসার সুযোগ হয় একা বা সস্ত্রীক, তো জানালে আতিথেয়তা করার এবং আড্ডা দেওয়ার সুযোগ পাবো।
সহিষ্ণুতার অভাবটাই তো সমস্যা। তার উপর আছে "সেন্ড দিস ইমেইল টু টেন আদার পিপল ইন ফাইভ মিনিটস" জাতীয় একটা প্রচারব্যবস্থা। আরও অনুসারী রিক্রুট করতে পারলে স্বর্গ সহজতর -- এই কথাটা প্রচলিত না থাকলেই ধর্মের নামে অনেক অনাচার কমে যেতো। যাক গে, চাইলেও কথা বাড়ানো গেল না লেখার কলেবর বড় হয়ে যাওয়ায়। শেষ পর্যন্ত গানের সাথে জড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিগত আবেগটুকু নিয়েই লিখলাম। বাকিটা নাহয় অন্য কোথাও লিখবো পরে।
সামনে কোনো সময়ে ঐ দিকে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। আওয়াজ দিবো অবশ্যই।
বাঃ, এইটা তো ভালো খবর, আমি শহরে থাকি শুক্র থেকে রবি, জানালে বাসস্থান, পরিবহন ও উদরপূর্তির বন্দোবস্ত গরীবখানায় হয়ে যাবে। তবে অক্টোবরে তিন সপ্তাহ থাকছি না।
মানুষজন ফার্মভিলের বোনাস গিফটের লোভই সামলাতে পারে না, গণহারে রিকোয়েস্ট পাঠাতে থাকে, আর বেহেশ্ত তো মানে যাকে বলে বেহেশ্ত!
চমৎকার লেখা।
ধর্ম ইন্ট্রোডিউস করা হয়েছিল মানুষের জীবনকে সহজ করার জন্য। আজ যখন দেখি রক্ত দিলে রোজা ভেঙ্গে যাবে বিধায় রক্তের অভাবে মানুষ মারা যায় তখন অবাক হয়ে ভাবি এ কেমন সহজ জীবন পেয়েছে মানুষ!
একদিকে যেমন অতি ধার্মিক মুসলিমরা নাঙ্গা তলোয়ার হাতে জিহাদে সামিল হয় তেমনি অন্যদিকে প্রতিশোধ নিতে কোরান শরীফ পোড়াতে উদ্যত হয় ধর্মযাজক। পৃথিবীতে কোন ধর্ম সবচেয়ে সেরা তা নির্ধারণ করতে সবচাইতে বেশি পরিমাণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ সৃষ্টির আদিকাল থেকে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সামান্য মনযোগ দিয়ে খেয়াল করলেই ঈশ্বরকে খেয়ালি রূপে ছাড়া অন্য কোন রূপে দেখতে পাই না।
এসব দেখেশুনে ধর্ম সম্পর্কে উদাসীন থাকাটাই যুক্তিযুক্ত মনে হয়। আস্তিক বা নাস্তিক হবার [নাস্তিকতাকেও একটি স্বতন্ত্র ধর্ম বলা চলে] চাইতে ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্পর্কে উদাসীন হওয়াটাই অপেক্ষাকৃত যুক্তিপূর্ণ সমাধান।
কেন আপনার এটা মনে হয় একটু বুঝিয়ে বলবেন? একটা পোস্টও দিতে পারেন এটা নিয়ে, সাম্প্রতিককালে সচলে অনেককেই এটা বলতে শুনলাম।
নাস্তিকের ধর্ম নাস্তিকতা। একজন নাস্তিকতাবাদ প্রচারকও চেষ্টা করে নাস্তিকতাবাদের প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে আস্তিকদের ঈশ্বরের পথ থেকে দূরে সরিয়ে আনতে। আমার পরিচিত যে ক'জন ঘোর নাস্তিক আছেন তারা তাই করেন। হাটে-মাঠে-ঘাটে যেখানেই দেখা হোক আস্তিকদের সাথে গিয়ানজামে চলে যান। সেই তুলনায় আমি অতি ভদ্র, আমি গিয়ানজাম দেখি বসে বসে আর মাঝে মধ্যে দুয়েকটা বাক্য দুদিকেই ছুঁড়ে দিয়ে গিয়ানজামের ঘনত্ব বাড়াতে প্রভাবক হিসাবে কাজ করি।
সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই বললাম। এ ব্যাপারে বিশদ লেখার মত জ্ঞান আমার নাই গো ভাইডি।
দ্রোহী আপনার কথা (নাস্তিকতাকেও একটি স্বতন্ত্র ধর্ম বলা চলে) অনুসরণ করে আমার দুআনা যোগ করি। এটা কৌস্তভের প্রশ্নের একরকম উত্তর বা উত্তরের চেষ্টা-ও বটে। আমার মতে যে বিশ্বাস আপনার জীবনায়ন নির্ধারণ করে, বিশেষ ভাবে বলতে গেলে "যা" আপনাকে ধারণ করে, সেটাই আপনার ধর্ম (ধৃ ধাতু থেকে এসেছি কি শব্দটা?)। এই যুক্তিদ্বারা যদি আপনি চালিত হন তবে নাস্তিকের বিশ্বাস-ই তার ধর্ম।
--------------------------------------------------------------------------------
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
বুঝলাম, আপনি এই প্রসঙ্গ আর বাড়াতে ইচ্ছুক নন। বেশ।
এখানে ধর্ম অর্থে religion এর বদলে lifestyle বা habit হিসাবে ব্যবহার করেছেন মনে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সহমত। সংস্কৃতেও আদিতে ধর্ম শব্দটা ওই অর্থেই ব্যবহার হত। কিন্তু এখানে বেশির ভাগ লেখকই যেহেতু religion অর্থে ব্যবহার করেছেন, তাই আপনার মন্তব্যটায় প্রশ্ন করেছিলাম। যাহোক, আপনার ইচ্ছানুসারে আর কথা না বাড়াই।
গতবার আমি নিজেই রক্ত দিয়েছি রোজার মধ্যে (ডায়াগনস্টিকের জন্য)। আমার মনে হয় এতে সমস্যা নাই। আমি এমনটা জানি যে কেটেকুটে গেলে এবং রক্ত যদি গড়িয়ে পড়ে তাহলে রোজা মাকরুহ হয়। এখন কেউ যুক্তি দিতে পারে যে রক্ত গড়িয়ে পড়া আর সিরিঞ্জ দিয়ে টেনে নেয়া তো একই। তাহলে আমার উত্তর হবে আপনি যেটা ভাল মনে করেন সেটাই করেন।
এই ব্যাপারে কিছুদিন আগেই বুনোহাঁসের ব্লগে একটি মন্তব্য করেছিলাম।
তবে আপনার সাথে দ্বিমত নেই যে নাস্তিক ব্যক্তিও উগ্রবাদী/মৌলবাদী হতে পারে উগ্র আস্তিক ব্যক্তির মত। তার জন্য যেমন ধর্ম অথবা নৈতিকতা বাতিল হয়ে যায় না তেমনি উগ্র নাস্তিকের জন্য নাস্তিকতার দর্শন ধর্মে পরিণত হয় না। ধর্ম এবং নাস্তিকতার মধ্য মূল পার্থক্য হচ্ছে ধর্মকে ধরা হয় ঐশ্বরিক বাণী হিসেবে যা পরিবর্তণ যোগ্য নয়। কিন্তু নাস্তিকতা দর্শনকে কেউ ঐশ্বরিক বাণী বলে দাবী করে না। আর যদি বলেন যে ধর্ম একটি বিশ্বাস এবং অনেকের কাছে নাস্তিকতাও একটি বিশ্বাস। সেটিও কিন্তু ব্যক্তির সমস্যা। যে কোন দর্শনই যখন কেউ পরিপূর্ণভাবে না বুঝে সেটিকে বিশ্বাসে পরিণত করে ফেলে তখন বিশ্বাসই তার চালিকা শক্তি হয়ে উঠে। সেটা ব্যক্তি মাত্রেই হতে পারে। এ কারণে স্টালিন, হিটলার এরা নাস্তিক হয়েও ছিলেন অমানুষ। আবার গোআ, মুজাহিদ, বাংলা ভাই, লাদেন এরা ধার্মিক হয়েও অমানুষ।
আপনি যেমন বলছেন ধর্ম ইন্ট্রোডিউস করা হয়েছিল মানুষের জীবনকে সহজ করার জন্য। এ রকম নাস্তিকতা দর্শনও এসেছে ঈশ্বরের অস্তিত্ব ছাড়াই মানুষের জীবনকে সহজ করার জন্য। কিছু মানুষ সব সময় চেষ্টা করে নিয়মকে এবিউস করার জন্য। কিন্তু নাস্তিকতা দর্শন তাতে ধর্মে পরিণত হয় না। কারণ ধর্ম হতে হলে সেখানে একজন ঈশ্বরের প্রয়োজন, তার বাণী প্রয়োজন, মৃত্যুর পর পাপ-পূণ্যের বিচার প্রয়োজন, একজন ঈশ্বর মনোনীত দূত প্রয়োজন। এর কোনটাই নাস্তিকতা ধারণ করে না। তারপরেও যদি বলেন এটি একটি ধর্ম, তবে আমার মতে এটা আরো মস্ত একটি বড় ভুল হবে।
"নাস্তিকতাকেও একটি স্বতন্ত্র ধর্ম বলা চলে" - এরকমটা একসময় আমিও ভাবতাম। কিন্তু এটা খুবই ভুল ধারণা।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
কিভাবে এই ভুল ধারণাটুকু ভাঙ্গলো সে সম্পর্কে দু'চারটা কথা লিখলে আমার ধারণা অনেকেই উপকৃত হবে। লিখতেই হবে কথা নেই, তবে আমি শুনতে আগ্রহী।
আরেকটি ভিন্ন বিষয়, আমি কোন মন্তব্য পছন্দ/অপছন্দ করতে পারছি না। এটার জন্য কি রিচ এডিটরের মত হাত তুলতে হয়? তুলতে হলে তুলিলাম। অগ্রীম ধন্যবাদ রইল।
'নাস্তিকতা' ধর্ম হলে, নন-স্ট্যাম্প কালেকশন ও একটা 'হবি', টিভি অফ থাকলে সেটাও একটা 'চ্যানেল'।
সহমত। আস্তিকতা আর নাস্তিকতার সাথে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে, আজকে যদি ঈশ্বর এসে আমার সাথে উপস্থিত হন, আমি বিনা দ্বিধায় তার অস্তিত্ব মেনে নেবো। তাকে পুজা করবো কি করবোনা সেটা নিয়ে তার সাথে আমার ভালো একটা ডিসকাশন হবে, তবে অস্তিত্ব যে মেনে নেবো তাতে সন্দেহ নেই। যেকোন নাস্তিকই নেবেন। কিন্তু আস্তিকদের হাজার প্রমান দেখালেও তারা মেনে নিবেনা। গতানুগতিক ধর্মের সাথে নাস্তিকতার মিল তাহলে কোথায়?
আরও একটা গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার সবাই বলেন, ধার্মিকরা যেমন বলেন, ঈশ্বর আছেন, তেমনি নাস্তিকরা বলেন ঈশ্বর নেই। দুই পক্ষই তাদের অবস্থানে নিশ্চিত। সুতরাং নাস্তিকতাও এক ধরণের ধর্ম। এখানেও একটা ব্যপক ভুল ধারনা আছে।
আমি নিজে নাস্তিক। এবং জুডো-ক্রিস্টিয়ান- মুসলিম গড বা আব্রাহামিক গড বলে যে কিছু নেই, সে ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত। কারণ তিনি তার থাকার বিভিন্ন ইণ্ডিকেশন আমাদের দিয়েছেন। যেমন ধর্ম গ্রন্থে বলেছেন আদম- হাওয়া থেকে মানুষের রেস শুরু হয়েছে, মহাবিশ্ব কিভাবে তিনি সৃষ্টি করেছেন, সেটাও তিনি বলেছেন। এবং আমি দেখেছি কথাগুলো ভুল। সুতরাং ধর্মগ্রন্থের বাণীগুলো মিথ্যা (একটিও যদি মিথ্যা হয় তবে পুরোটাই মিথ্যা হবে), অর্থাৎ আব্রাহামিক গড বলে কিছু নেই, এটা মানুষের সৃষ্টি, ধর্মগ্রন্থও মানুষের লেখা। কিন্তু এমন একজন গড থাকতে পারেন, যিনি ধর্মগ্রন্থ লিখেন নি, যিনি তার দলের লোকদের কোনধরণের ফেভার দেন না, যিনি নির্দিষ্ট একদলের প্রার্থণা কবুল করেন না, যার কিছুতেই কিছু আসে যায় না- হ্যা! তার অস্তিত্বের ব্যাপারে আমি এগনোষ্টিক। তার অস্তিত্বের ব্যাপারে আমি সংশয়বাদী, না থাকার ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত নই।
এবার আসা যাক আরেক প্রসংগ, ধার্মিকরা যেমন ধর্ম প্রচার করেন, নাস্তিকরাও তেমনি নাস্তিকতা প্রচার করেন। হ্যা! দুটোই প্রচার। কিন্তু দুইটি প্রচারণার মাঝে সিগনিফিক্যাণ্ট পার্থক্য আছে। যেমন, আস্তিকরা প্রচার করেন আত্মা বলে একটি জিনিস আছে, কেন আছে তা বলেন না, বলেন যে ধর্মগ্রন্থে আছে, সুতরাং বিশ্বাস করো। নতুবা শাস্তি পাবা, করলে পুরষ্কার পাবা। কিন্তু নাস্তিকরা যুক্তির মাধ্যমে দেখান এমন কিছু থাকা সম্ভব না। এই যে দেখো বিজ্ঞান কি বলতেছে। তোমার কিছু অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে হবে না, খালি পইড়া দেখো। তুমি যা ইচ্ছা তাই বিশ্বাস করতে পারো, ইউনিকর্নকে বিশ্বাস করতে পারো, জিন পরীতে বিশ্বাস করতে পারো, কিন্তু এইগুলার অস্তিত্বের কোন ভিত্তি নাই।
প্রচারণায় আরও একটা ব্যাপার উল্লেখযোগ্য, ধর্ম কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ একদম চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। কিন্তু নাস্তিকরা (আমার কথা কই খালি), আমি বলি, হ্যা, কোন জিনিস ভালো আর কোন জিনিস খারাপ এইটা আমরা এইভাবে বিবেচনা করি। এই জিনিসটা এই কারণে খারাপ, এইটা এই কারণে ভালো। এখন দুনিয়াতে আরও বিলিয়ন বিলিয়ন ব্যাপার আছে, তুমি বিচার বুদ্ধি দিয়া বিবেচনা কইরা লও।
অনেকে আবার কন, দুই পক্ষের প্রচারণাতেই তারা বিরক্ত হয়। কিন্তু নাস্তিকরা কি এমন প্রচারণা করে? দুই কলম বই লেখা, কথা কওয়া, ব্লগ লেখা। অপরদিকে ধর্মের প্রচারণা দেখেন। একটা শিশু জন্মাইতে পারেনা, ওমনি তার কানে আজান দেওয়া শুরু হইয়া যায়, অমনি তারে পানিতে চুবাইয়া ব্যাপটাইজ করার কর্মকান্ড শুরু হইয়া যায়।
আর কথা বাড়ামুনা, এই ব্যাপারে কইতে থাকলে কওয়াই যাইবো। কিন্তু অলরেডি ছোট মুখে অনেক বড় কইথা কইয়া লাইছি।
দ্রোহীদা আপনার খবর আছে। আমার নাস্তিকতা ধর্মানুভুতিতে আপনি আঘাত দিসেন। আপনারে জবাই দিমু। সাবধানে থাকেন।
দারুণ কইছেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খুবই পছন্দ হইল কথাটা।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
চুপার!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
"উদাসীন" হওয়ার পক্ষে মত দেই না আমি। যে যার মতো থাকতেই পারে... শুধু প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাওয়াতেই আপত্তি।
"নাস্তিকতা"-কে আমি ধর্ম হিসেবে দেখি না। তবে হ্যাঁ, কিছু নাস্তিকও অনেক বেশি কট্টর। সেটাই বোঝাতে চাইছিলেন কি?
দ্রোহী,খাঁটি ১টা চাপা মারলেন,না ভাই। আমি ডাক্তার আর রক্ত দান কর্ম নিয়া আছি প্রায় ১০ বছর ।১টা রুগি মরতে দেখলাম না,রক্ত দিলে রোজা ভেঙ্গে যাবে বিধায় রক্তের অভাবে মানুষ মারা যায়....ভাইরে, এ রকম গুটি বাজি কি ভাল???আর রক্ত দিলে রোজা ভেঙ্গে যাবে !!!!!!কোনো মানুষের জান বাঁচানো পুরা মানবতা বাঁচানর সমান---এটা আল্লার কোরানের কথা।অধমের না।আর যার রক্তর অভাবে মানুষ মরে ওর রোজা হবো!!!!!
কোনো বাসায় পরপর দুই দিন নামায পড়ার জন্য চাপাচাপির স্বীকার হলে আমি তৃতীয় দিন থেকে হাফ-প্যান্ট পড়ে যাই। আমার দৃষ্টিতে ধর্ম একেবারেই ব্যাক্তিগত বিশ্বাস, একে সামাজিক রূপ দিতে চাওয়া অগ্রহণযোগ্।
..........................................................
অসাধারণ লিখেছেন
অনেক দিন পর লিখলে। লেখা সম্পর্ক বিশেষ কিছু বলার নেই, তাই কিছু নাই বলি। ভাল থেকো।
লেখা ভালো লেগেছে।
ধর্ম নিয়ে একই ধরনের অনুভূতি লালন করছি। সেটা শুধুই নিজস্ব অনভূতি, নিজের কাছে নিজের বোঝাপরা। কাউকে জানাতে, মানাতে বা কারো যুক্তির সামনে/সংগে তুলে ধরতে মোটেই ইচ্ছে করে না। প্রিয়জনকে খুশি রাখতে জুম্মায় যেতে হয়, রোজা রাখতে হয় ইত্যাদি ইত্যাদি... তাতে তেমন কোনো আপত্তি নেই। থাকুক না মা-বাবা একটু খুশি। তবে এর বেশি নয়! ধর্মকে ততক্ষনই সহ্য করি যতক্ষন পর্যন্ত তা আরেকজনের দিকে চোখ না তোলে।
"আমার দৃষ্টিতে ধর্ম একেবারেই ব্যাক্তিগত বিশ্বাস, একে সামাজিক রূপ দিতে চাওয়া অগ্রহণযোগ্য "
ধর্মের গোষ্ঠীবদ্ধ রুপ সম্ভবত পথিবীর সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক শক্তি- অনেক যুদ্ধ, অনেক হত্যার ইতিহাস। ধর্ম মানব সভ্যতাকে দিয়েছে যেমনি, নিয়ছেও অনেক। একটি নিরীহ মানুষকে রাতারাতি পাশবিক শক্তিতে রুপান্তরিত করতে ধর্মের জুড়ি নেই। ধর্ম মানে বিশ্বাস, কোনো প্রশ্ন নয়! সামাজিক ধর্মকে তাই ভয় পাই।
এ নিয়ে আরো লিখুন।
রাশু
ghumontoshohoreঅ্যাটgmail.com
পৃথিবীর ইতিহাসে ধর্মের নামে যত মানুষ বলি হয়েছে, দুই বিশ্বযুদ্ধ মিলেও তত মানুষ মারা গেছে কি না সন্দেহ। ধর্মব্যবসায়ীরা কিন্তু রিক্রুট করে থাকে নিরীহ ও নিঃসহায় মানুষদেরই। প্রাপ্যের উপযোগী প্রাপ্তি মানুষকে অনুগামী করে না। অনুগামী, অনুসারী, বা বিশ্বাসী পাওয়ার জন্য মানুষকে তার প্রাপ্যের অতিরিক্ত দিতে হয়।
সত্যিকার আদর্শ থেকে যাঁরা ধর্মে বিশ্বাসী, তাঁরা কোনো অবস্থায় মৌলবাদী নন। উদাহরণ দেই... এই শনিবার ফ্লোরিডায় কুর'আন শরীফ পুড়ানোর কথা। সত্যিকার ধার্মিকদের একজনকেও পেলাম না যিনি এ-নিয়ে আলোড়িত। খুব শান্ত, স্থিতধী আছেন তাঁরা সবাই। "পুড়ালে পুড়াক, আমার ধর্ম এত ঠুনকো না যে একটা বই পুড়ালেই ধসে যাবে" -- এটাই সবার কথা। এই ঘটনার পর অনেক হৈ-হুল্লোড় হবে, ভাংচুর হবে, যাতে সামিল হবে এক কালের "নিরীহ" মানুষেরাই...
নাস্তিকদের ব্যাপারে আমার যুক্তিগত দিক থেকে একটা প্রশ্ন আছে | আমি নাস্তিকতার সংজ্ঞা সম্পর্কে নিশ্চিত নই | এ সম্পর্কে কোনো শক্তিশালী রেফারেন্স ও চোখে পড়েনি তেমন | ব্যক্তিগত অপরিনত চিন্তা-ধারা থেকে যেটুকু অনুমান করি, সেখানেই একটু কনফিউশন থেকে গিয়েছে | মন বলছে, এ জায়গায় শেয়ার করা যায় |
খুব সম্ভবত, নাস্তিক ব্যক্তিদের বিশ্বাস অনুযায়ী, স্রষ্টা বলে কিছু নেই | একই সঙ্গে সর্বব্যাপী ও সর্বক্ষমতাময় কোনো স্বত্তার অস্তিত্তেও তাদের বিশ্বাস নেই | এক কোথায়, GOD এর অস্তিত্ব তারা স্বীকার করেনা|
এবার চলে আসি GOD এর সংজ্ঞা তে| অধিকাংশ ধর্ম-বিশ্বাস অনুযায়ী GOD এর সংজ্ঞা তার গুনাবলী দিয়ে বর্ণিত হয়| প্রায় সকল ধর্ম সমর্থন করে যে, GOD হলো সেই সত্তা যা সর্বময় বিরাজমান এবং সর্বজ্ঞানী| অর্থাৎ, তাবৎ বিশ্ব-জগতের সকল কিছু সম্পর্কে সবকিছু জানে এমন কোনো সত্তা থেকে থাকলে সেই হলো GOD|
এখন, যখন কোনো নাস্তিক ব্যক্তি দাবি করে যে, GOD বলে কিছু নেই, নিশ্চিতভাবেই সে দাবি করছে এই বিশ্ব-জগতের সকলকিছু সম্পর্কে সে অবগত এবং তা থেকেই নিশ্চিত হয়েছে যে, কোনখানে GOD বলে কোনো কিছু নেই| Counter এ যুক্তি আসতে পারে, সকল কিছু না জেনেও নিজের জ্ঞান-বুদ্ধিতে ভর করে তো বলা যায়, GOD নেই| সেক্ষেত্রে উত্তর হলো, আপনার জ্ঞান-বুদ্ধির নিয়ন্ত্রণ টিও সংজ্ঞা অনুযায়ী GOD নিয়ে বসে আছেন| এখানে পরিষ্কার contradiction তৈরী হচ্ছে| যদি সকল জ্ঞান কারো না-ই থাকবে, সে কিভাবে নিশ্চিত হবে যে GOD বলে কিছু নেই? সেক্ষেত্রে সে নিজেকে নাস্তিক হিসাবে দাবি করতে পারছে না| অন্যদিকে কারো যদি সকল জ্ঞান থেকেই থাকে, তবে সে নিজেই GOD| সেক্ষেত্রেও GOD এর অস্তিত্ব থাকছে এবং সে নাস্তিক হতে পারছে না|
একারণে আমার ব্যক্তিগত অভিমত অনুযায়ী, নাস্তিক ব্যক্তিরা প্রকৃতপক্ষে নিজেকেই GOD বলে দাবি করে| আমার কোথাও ভুল হয়ে থাকলে শুধরে দেবেন আশা করি|
ঈদ মোবারক |
এখানে নাস্তিক না বলে 'পিপল অফ রিজন' বলাটা বেশী যুক্তি যুক্ত। 'পিপল অফ রিজন' কখনই দাবী করে না যে "বিশ্ব-জগতের সকলকিছু সম্পর্কে সে অবগত"। এবং গড নেই এটার সাথে "বিশ্ব-জগতের সকলকিছু সম্পর্কে" অবগত থাকার কোন সর্ম্পক নেই।
"আপনার জ্ঞান-বুদ্ধির নিয়ন্ত্রণ টিও সংজ্ঞা অনুযায়ী GOD নিয়ে বসে আছেন" - এটাতো আপনার সংজ্ঞা। গড যদি না থাকে তাহলে সে 'জ্ঞান-বুদ্ধির নিয়ন্ত্রণ' করবে কিভাবে? কন্ট্রাডিকশনটা আপনার মাথায় - 'পিপল অফ রিজন' এর মাথায় না।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
মুর্শেদ ভাই-ই জবাবটা দিয়ে দিয়েছেন আরও ভালো ভাবে। যা নিয়ে আমার মূল আপত্তি, সেটাই আপনার বক্তব্য -- আপনি যুক্তি দিয়ে ধর্মকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। ধর্ম বিশ্বাসের বস্তু, যুক্তির না।
স্টিফেন হকিং এর A BRIEF HISTORY OF TIME বই এ একটা উদাহরণ দিয়েছেন, ঈশ্বরকে যদি বলা হয় একটি পাথর বানানোর জন্য যা উনি নিজেই এর ভর নিতে পারবেন না। যদি তিনি বানান তাহলে তার সীমাবদ্ধতা হল তিনি পাথরটা তুলতে পারবেন না। আবার যদি তিনি পাথরটা তুলতে পারেন তাহলে তিনি পাথরটা বানাতে পারবেন না। (জানি না বাংলা অনুবাদ ঠিক আছে কিনা। নিজে নিজে করা ।)
স্টিফেন হকিং-এর বহু শত বছর আগে গোপাল ভাঁড় এর থেকে অনেক ভালো উদাহরন দিয়েছিলেন। জানেন? এর জন্য হকিং হওয়া লাগে না! কিম্বা অন্যভাবে বললে আমাদের প্রিয় গোপাল ভাঁড়ের বুদ্ধি ঐ ব্রিফ হকিংএর চেয়ে বেশি বই কম ছিল না। বিশ্বাস হচ্ছে না ?
একটা পুরনো জোকস শুনুন। বাদশাহ আকবর একবার... (ওহহো, এটা বোধহয় গোপাল নয় - বীরবল হবে...তবে ঐ একই কথা- গোপাল নামটাই থাকুক) দরবারে বসে বসে তার সভাসদদের মুখে নিজের প্রশস্তি উপভোগ করছিলেন। গোপাল ভাঁড় এই কাজটা সবচেয়ে ভালো পারতেন। তো রাজার স্তুতিগান গাইতে গাইতে একপর্যায়ে উনি বলে বসলেন, 'জাঁহাপনা, আপনার যা ক্ষমতা এমনকি স্বয়ং ঈশ্বরেরও তত ক্ষমতা নাই"। বাদশাহর কাছে এইটা একটু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেল। উনি রেগেমেগে কৈফিয়ত দাবি করলেন। গোপাল ভাঁড় নির্বিকারচিত্তে উত্তর দিলেন -- বাদশাহ ইচ্ছা করলেই তার কোন অবাধ্য প্রজাকে নিজের রাজ্য/সাম্রাজ্য থেকে বহিস্কার/নির্বাসিত করতে পারেন। অন্য রাজ্যে পাঠিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু অনন্ত-অসীম (ফিজিকালি) এবং অসীম ক্ষমতাধিকারী ঈশ্বর বা আল্লাহ হাজার চেষ্টা করলেও তার কোন বান্দাকে নিজ রাজ্যের বাইরে নির্বাসিত করতে পারবেন না! কোথায় পাঠাবেন ? সবই তো তার! সুতরাং, বাদশাহ ঈশ্বরের চেয়েও ক্ষমতাশালী!
ছোটবেলায় এই জোক্সটা পড়ে প্রচুর মজা পেতাম। আবার মাথার মধ্যে চিন্তাটা কুরকুরাতোও বটে। ভাবতাম, সত্যি তো, অসীম ক্ষমতাশালী ঈশ্বর যদি তার কোন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সৃষ্টিকেও নিজের রাজত্ব থেকে বহিস্কার করার ক্ষমতা না রাখেন (সামান্য একটা মানুষও যা পারে) -- তাহলেতো উনি 'অলমাইটি' নন। আর সেটা যদি উনি পারেন, তাহলে আর যাই হোন - উনি তো 'অসীম' নন! অনেক চেষ্টা করেও এই প্যারাডক্সটা তখন সমাধান করতে পারিনি।
এমন আরো অনেক প্যারাডক্সের সৃষ্টি হয় ইনফিনিট-ইটার্নাল-অলমাইটি ঈশ্বরের কনসেপ্ট মেনে নিলে। মধ্যযুগের অনেক মুসলিম দার্শনিক তো এই রকম নানা প্যারাডক্স নিয়ে মাথা ঘামাতে ঘামাতে নিজেদের মাথার চুল সাফ করে ফেলেছিলেন।
কিন্তু আমাদের সামান্য বিদূষক গোপাল ভাঁড় এই মহাবিজ্ঞানী-মহাদার্শনিকমন্থিত বিষয়টাই কি সহজসরল ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন। তাইতো বলছিলাম সামান্য এক ভাঁড়ের বুদ্ধিও মহাবিজ্ঞানীদের থেকে কম নয় !
ডিসক্লেমারঃ এই মন্তব্য নিছক নির্মল 'ফান'।
অনন্ত-অসীম (ফিজিকালি) এবং অসীম ক্ষমতাধিকারী ঈশ্বর বা আল্লাহ হাজার চেষ্টা করলেও তার কোন বান্দাকে নিজ রাজ্যের বাইরে নির্বাসিত করতে পারবেন না! কোথায় পাঠাবেন ? সবই তো তার! সুতরাং, বাদশাহ ঈশ্বরের চেয়েও ক্ষমতাশালী!
ছোটবেলায় এই জোক্সটা পড়ে প্রচুর মজা পেতাম। আবার মাথার মধ্যে চিন্তাটা কুরকুরাতোও বটে। ভাবতাম, সত্যি তো, অসীম ক্ষমতাশালী ঈশ্বর যদি তার কোন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সৃষ্টিকেও নিজের রাজত্ব থেকে বহিস্কার করার ক্ষমতা না রাখেন (সামান্য একটা মানুষও যা পারে) -- তাহলেতো উনি 'অলমাইটি' নন। আর সেটা যদি উনি পারেন, তাহলে আর যাই হোন - উনি তো 'অসীম' নন! অনেক চেষ্টা করেও এই প্যারাডক্সটা তখন সমাধান করতে পারিনি।
এই প্যারাডক্সটার.............সমাধান..........akhono ki chan............na chan na................>?????somadhan ta khub soja.............অসীম ক্ষমতাশালী ঈশ্বর ঈশ্বরইক কাজ koren অঈশ্বরিক কাজ tini koren na.............jemon tini mittha bolen na.........onnai vabe sasti diben na.............manush hoben na ba kono sristi hoben na...............thik arokom e beparta.................ar 1ta প্যারাডক্স dei.......hmm...........God ki amon kono pathor banate paren ja vanga jabe na.....keu vangte parben na............ami bollam ..ha......tar por bollo.......amon ki ঈশ্বর o na........ami bollam na..........tokhon se bolbe tahole to tomar ঈশ্বর sob pare......na........ami tokhon mene nilam ha sob pare na............karon ঈশ্বর অঈশ্বরিক কাজ koren na.................hope প্যারাডক্সটার সমাধান hoise............aro clear hote chaile bolben
এইরকম বোকাোদা মন্তব্য দেখলে রাগে আমার গা জ্বলে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
এইটা সত্যিই ফালতু মন্তব্য। তার উপর দুটো করে ইঞ্জিরি আর দুটো করে বাংলা শব্দ... পড়তেও অত্যন্ত বিরক্তিকর।
ইশতি ফেসবুকে এই পোস্ট শেয়ার দিসে, ঐখানে আরো আছে। দেখতে পারেন, হেভি মজার। একটার পরে একটা বাংলা-ইংরেজি (ইংরেজিতেও যে ভুল বানানে বাংলা লেখা যায়, সেইটা একে দেইখা বুঝলাম) মন্তব্য ছাড়তেসে, সম্ভবত এই আশায়, যে কেউ তার সাথে ঝগড়ায় লাগবে। হেদায়েতি উদ্দেশ্য খুব বেশি প্রকট মনে হইল না।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
কেন, কেন, ঈশ্বর অ-ঈশ্বরিক কাজ পারেন না কেন তাপু ভাই ? তাহলে কি উনার ঐটুকু স্বাধীনতাও নাই ? আমরা মানবরা তো দিব্যি 'অ-মানবিক' কাজ করতে পারি! আমাদের যেটুকু স্বাধীনতা আছে তাহলে উনার কি ঐটুকুও নাই ? নাকি উনাকে আর কারো কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে কাজ করতে হয় ? অথবা কোনটা ঈশ্বরিক আর কোনটা অ-ঈশ্বরিক সে ব্যাপারে অন্য কোন উচ্চতর কর্তৃপক্ষের (আপনার?) ডিকটেশন বা গাইডলাইন অনুযায়ী তিনি চলতে বাধ্য ? নাকি আমাদের উপর উনি যেমন ধর্মগ্রন্থ নাযেল করেছেন, উনার উপরেও তেমনি আরো উপর থেকে কোনো ধর্মগ্রন্থ বা ওহী নাযেল হয়েছে যেখানে ঈশ্বরের দায়দায়িত্ব বিধিবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে যার বাইরে উনি যেতে পারেন না ? আমিতো আরো 'কনফিউজড' হয়ে গেলাম তাপু ভাই - একটু কিলিয়ার করে দিবেন প্লিজ ?
ও হ্যাঁ, আরেকটা বিষয় একটু কিলিয়ার করবেন প্লিজ। এটাও আমি ছোট বেলা থেকেই বুঝতে অক্ষম। নিজেরই সৃষ্টিকে - তাকে পেইন বুঝার পূর্ন ক্ষমতা দিয়ে - তারপর আক্ষরিক অর্থেই অ-ন-ন্ত-কা-ল ধরে তাকে লক্ষে-কোটিতে ভয়াবহ আগুনে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারা - ও, না, মারা নয় - অনন্তকাল ধরে জ্যান্ত রেখেই -- দগ্ধে দগ্ধে পোড়ানোর আর ভাজাভুজি করার, সাপ-ব্যাঙ-বিচ্ছু দিয়ে খাওয়ানোর, কাজটা কি আপনার ঈশ্বরের 'ঐশ্বরিক' চরিত্রেরই অন্তর্গত ? উনি এই রকম কাজ তাহলে না করে পারেন না, তাই না ? অবসেসিভ কম্পালসিভ মেগাস্যাডিস্টিক পার্সোনালিটি ডিজর্ডারের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা কি উনার নাই ? আমার কিন্তু ভীষন ভয় হচ্ছে তাপু ভাই! উনাকে জিজ্ঞেস করে ব্যাপারটা একটু তাড়াতাড়ি কিলিয়ার করে দিবেন আমাকে ? তাহলে দরকার হলে, মরার সময় আমি সাথে করে একটা সাইকোলজিস্ট নিয়ে যাব নাহয় ? কি বলেন, কাজ হবে না এতে ?
প্রশ্নগুলো প্রাসঙ্গিক, তবে সেগুলো নাহয় না-ই করলাম। যে যা খুশি বিশ্বাস করতেই পারেন। "Whatever floats your boat" তত্ত্ব থেকে বলছি আর কি। যুক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে ধর্মকে অনেক বিষয় ও বিধানের উপযোগিতা/যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন করা যায়। ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকেও প্রশ্ন করা যায় অনেক যৌক্তিক ব্যাখ্যা (বা তার অভাব) নিয়ে।
আমার কথা হলো, সবাই যে যার মতো করেই বিশ্বাস করুক, শুধু আইনে তার প্রতিফলন আনার চেষ্টা না করা হোক, অন্যের বিশ্বাসকে কটাক্ষ না করা হোক, এবং ব্যাক্তিস্বাতন্ত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা হোক।
আমি বিশ্বাস করি যে পৃথিবীর চারদিকে একটি চায়ের কেটলী ঘুরছে। এই চায়ের কেটলীটি অদৃশ্য এবং সর্ব ক্ষমতাধর। এটিই আমার "গড"। আর আমি তার প্রেরিত পুরুষ। এই আমার "বিশ্বাস"।
এই কথা যদি আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবং প্রচার করি তাহলে কি আমাকে চায়ের কেটলী ধর্মের নবী ভাবা হবে নাকি পাগল?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
মুর্শেদ ভাইয়ের মত আরেকটা, এক্সট্রিম একটা, উদাহরণ দিই। মনে করুন, আমার বিশ্বাস, পাকিস্তানই সর্বশক্তিধর, এবং তার প্রেরিত পুরুষ গুআজমই আমার মহামানব।
এইটা একান্তই আমার বিশ্বাস বলে ধরুন দাবি করলাম, লোক ডেকে ডেকে প্রচার না-ই করলাম, বা আপনার কথা অনুযায়ী "আইনে তার প্রতিফলন" আনার চেষ্টা না করলাম।
এবার বললাম, আমার বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন না, আমি তো আর আপনাকে ডেকে আমার বিশ্বাসে দীক্ষিত হতে বলছি না। তাহলে আমার বিশ্বাসের প্রতি সম্মান রেখে কথা বলবে তো সচলের লোকজন?
না, বলবে না। কারণ তারা সত্যিটা জানে। এবং জানে, যে যুদ্ধাপরাধীদের ছাড় দেওয়ার বা শ্রদ্ধা করার মানসিকতাটা কতটা ক্ষতি ডেকে এনেছে দেশের জন্য।
জয় বাবা কেটলি মহারাজ!
এই দিকে যাই নাই অন্য কারণে। "সেন্স অফ কারেক্টনেস" থেকেই সবাই নিজেরটা অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। "আমাকে আমার মতো ছেড়ে দেন, ভাই" আর "নিজের ধর্ম নিজের কাজে রাখেন, শুধু আইন বা সমাজে এটাকে চাপিয়ে দিয়েন না"... এটাই ছিলো লেখার প্রতিপাদ্য।
পাগল ভাবা হবে।তবে এখনো যে খুব সুস্হ চিন্তা আপনার,তাও নয়।আপনি হচ্ছেন গোপাল ভাঁরের রাজার মতই বোকা।গল্পে গোপাল রাজাকে বোকা বানাচ্ছিল,আর রাজার বংশধর আপনারাও বোকা বনে গেলেন।যদিও তা বোঝার বুদ্ধি বৃওিক ক্ষমতা আপনাদের নেই।ঐ রাজার মতই,যে নিজেকে অসীম জ্ঞনী ভাবে প্রশংসা যোগ্য ভাবে।কিন্তু তার সুরে কথা না বল্লেই শএু ভাবে।আপনিও ঐ হিটলার মার্কা চরম পন্থি।
ইসতি,আপনার History জানায় ভুল আছে।নাস্তিকরা এ দুনিয়ায় যত ধংশ আর হত্যা করছে,আস্তিকদের তা করতে হলে আর এক পৃথিবীর জন্ম দিতে হবে।আপনার লেখাটা সুন্দর কিন্তু চিন্তাগত ভুলে ভরা।আশায় আছি, ভবিষ্যতে আপনি সুচিন্তিত লেখা লিখবেন।
আহমদ সাব, পড়াশুনা করেও যে অনেক মানুষ শাখামৃগ থেকে যায় তার একটা ম্যাত্কৃষ্ট উদাহরণ আপনি।আপনার কমেন্টগুলো থেকে খালি গিয়ান বাইয়া বাইয়া পড়তাছে!দোয়া করি পরওয়ারদেগার আপনার গিয়ানের ফল্গুধারা বহাল রাখুন।আর জোকার নায়েকের সাগরেদগিরির পরে যে সময়টা থাকে, ভাঁড়ামো করে আমাদেরকে বিনুদন দিয়া যাইয়েন।
এই মন্তব্যটাতো দেখি নাই। হা হা হা ...
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
মনমাঝি,
ইনফাইনাইট রিগ্রেস ধরনের এই 'যুক্তি'কে যারা 'যুক্তি' বলে তাদের আর কি বলা যায় বলেন? ডকিন্সের গড ডিলিউশনের তৃতীয় চ্যাপ্টারের প্রথম অংশটি স্মর্তব্য।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ভাই আপনি কি লিখছেন তা পড়ে আমি নিজেই কনফিউজড হয়ে গেছি। তবে আমি যে উদাহরণটা দিসি তা হকিং তার বইতে দিয়েছিল। সে আবার তার একটা ব্যখ্যাও দিয়েছিল। অনেক আগের পড়া তাই হুবুহু মনে নেই। যার সারমর্ম হল আমরা একটা বস্তু বা ঘঠনা যে ডাইমেনশনে দেখি ঈশ্বর হয়ত সেই ডাইমেনশনে দেখেন না। আমাদের সীমাবদ্ধতা ৩য় পর্যন্ত। ঈশ্বর হয়ত ৫ম ডাইমেনশন বা তার অধিক পর্যন্ত দেখতে পারেন।
খুব পছন্দের একটা সিরিজ!
দারুণ একটা লেখা!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
উড়ণচণ্ডী, চৈত্রী, তানিম, মাসকাওয়াথ ভাই, মনু, স্বাধীন ভাই, ইকবাল আসিফ, তিথীঃ ধন্যবাদ।
যেকোন ধর্মবিষয়ক বিতর্কে বহুতদিন কনফিউজড থাকার পরে একদিন বুয়েট২০০২ গ্রুপের একটা ইমেইলে বোধ হয় তোর একটা কথা পাই - সম্ভবত এমন ছিল, "নিজের মত চলি, ভাল হয়ে চলি, নামাজ-রোজা করিনা ঠিক, কিন্তু কানের পাশ দিয়ে গুলি গেলে উপরে তাকায়ে বলি, থ্যাঙ্কস! - এটাই আমার ধর্মবিশ্বাস।"
লেখা পইড়া ভাল্লাগলো খুব।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
হুম... কথাটা চেনা-চেনা লাগছে। ভালোই বলসিলাম তো!
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
জয় বাবা ইশতিয়াক রউফ! এই লেখা ফটোকপি করে রাস্তায় বিলাতে ইচ্ছা করছে
ছোটবেলায় নিজের পরিণত বয়সের কথা ভাবলেই আমি দেখতে পেতাম, একটা ছোট্ট মসজিদে মাগরিবের আগে আগে লুঙ্গি পরে বসে আছি :D। আমার ধর্মকর্মে মতি দেখে আম্মা তো ভয় পাচ্ছিলেন তবলীগ হয়ে বাসা থেকে ভেগে-টেগে যাই কিনা। তারপর...একদিন বড় হয়ে গেলাম
কিন্তু এখনো নামাজ-টামাজ পড়ি সুযোগ পেলেই। আমি রোজা রাখি শুনে সিরাত ভাই অবাক হয়েছিলেন। পরে বাসায় এসে চিন্তা করছিলাম, আমি তো কাউকে লিখে দিয়ে আসি নাই যে র্যাশনাল ভাবেই জীবন যাপন করবো। এমনি করে যায় যদি দিন, যাক না। আল্লাহজি রোজ হাশরে ধরলে বলবো, "বুকা মানুষ, মাফ কইরা দ্যান..."
আর রমজান মাসের কন্যাভজন সংক্রান্ত ফজিলতের কথা আগে জানাবেন না? রমজান তো গেলগা, আরো এ-এ-ক ব-চ্ছর পর আসবে। ভাবছি ঈদ মোবারক দিয়ে শুরু করলে কেমন হয়?
আগামী বছর তাহলে আসলেই "সহীহ সাবিহনামা" আসছে?
আপনার মত ধুপধাপ পারবো বলে মনে হয় না। টাইম লাগবে। আমার তো সেই চাপাও নাই, চাপার পাশে সেই টোলও নাই। আবার সহীহ সাবিহনামার বদলে দলছুট টাইপ একটা লা নুই কলাম্বিয়াও বের হয়ে যেতে পারে, যেখানে 'প্রেমের নির্দয় কষাঘাতে করুণ আর্তনাদ' ছাড়া আর কিছুই শোনার থাকবে না
কিন্তু আর নয় নেট প্র্যাকটিস, এইবার হেইল রউফ বলে চালিয়েই দিব। শুধু ভাবছিলাম একবার আম্মুকে জিজ্ঞেস করে নেওয়া দরকার কি-না
ইন্টার-রেশিয়াল ম্যারেজ/হোমোসেক্সুলিটি/ইউথেনিশিয়া সমর্থক 'উদারনৈতিক' ধার্মিকদের সাথে বোধহয় অ-ধার্মিকদের খুব বেশী একটা মানসিক ব্যবধান নাই। যেমন কবীর সুমন বলেন 'আমি চাই হিন্দু নেতার সালমা খাতুন পূত্রবধু'। সালমা খাতুন পূত্রবধু থাকলে নেতার 'হিন্দুত্বের' কী হাল হবে তা সহজেই অনুমেয়!
সেই... কবে যে ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু! অনেক প্রিয় একটা গান মনে করিয়ে দিলেন...
চমৎকার লেখা ইশতি।
তোমার এই সিরিজের আমি একনিষ্ঠ পাঠক। এবারের কিস্তিটা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং মনে হল--লেখকের নিজের জীবনের কিছু ঘটনা এবং পরবর্ত্তিতে ধর্মবিশ্বাস নিয়ে আলোচনা এইবারের লেখাটাকে একটা ভিন্ন দ্যোতনা দিয়েছে।
আমি নিজে বিজ্ঞানের লোক। নিজেকে যুক্তিবাদী ভাবতে পছন্দ করি। আমার পর্যবেক্ষনে বিশ্বাস একটি ভয়াবহ জিনিস। এক রকমের ব্যধি বিশেষ। বিশ্বাসের পথে মানুষ হাঁটে যুক্তিকে নদীতে চুবিয়ে ফেলে। বিশ্বাসের কাছ থেকে আমরা যতসব 'উপহার' পেয়েছি তাদের প্রায় প্রত্যেকটি আমাদের জন্য নিয়ে এসেছে মানসিক পঙ্গুত্ব অথবা ক্লীবত্ব।
বিশ্বাসের কাছ থেকে পাওয়া সবচাইতে বড় উপহারটির নাম ধর্ম। এর আবির্ভাব মানবসভ্যতার যাত্রার প্রায় শুরুর দিক থেকেই। এবং একটু বিশ্লেষনী হলেই বোঝা যায় এর উৎস অজ্ঞানতায়, এর প্রসিদ্ধি মানুষের অন্তর্গত দুর্বলতায়। হাজার হাজার বছরে মানুষ যত সভ্যতার পথে এগিয়েছে, যত তার জ্ঞানের আঙ্গিনায় আলো ছড়িয়েছে, ঈশ্বর ধর্মকে সাথে নিয়ে তত কোনঠাসা হয়েছেন। 'সাকার' ঈশ্বর থেকে ধীরে ধীরে 'নিরাকার' ঈশ্বরে আমাদের স্থিতি হয়েছে। আজকের পৃথিবীতে সুর্যকে সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ ঈশ্বর বলে মানে না।কিন্তু লক্ষ বছর আগে---এই বেচারাও ঈশ্বরের গদিনশীন ছিল।
নিরাকার ঈশ্বর, আমার মতে, ঈশ্বর বিলুপ্তির অন্তিমতম ধাপ। ঈশ্বর মানুষকে যত না বাঁচিয়েছেন---মানুষ তাকে বাঁচিয়ে চলেছে তারচেয়ে বেশি সময় ধরে। সাকার ঈশ্বরের হাস্যকর দিকটা মানুষের নিজের কাছেই যখন অসহ্য মনে হয়েছে, তখনই আমাদের প্রয়োজন পড়েছে একজন 'নিরাকার' ঈশ্বরের। আমি মাঝে মাঝে ভাবি---এর পরে ঈশ্বর পালাবেন কোথায়?
আমার কাছে যে জিনিসটা সবচাইতে আশ্চর্য লাগে সেটা হল---এতকিছুর পরও আমরা কেন এর কাছ থেকে মুক্তি পাচ্ছি না। এত বছর পরও এখনো কেন ঈশ্বর রাজত্ব করে বেড়ান মানুষের মনে। কেন এত হাস্যকর এবং কুৎসিত দিক থাকা সত্ত্বেও আমরা ধর্মকে সঙ্গে নিয়ে বেড়াই?অসম্ভবের সম্ভাবনার যুগে দাঁড়িয়ে কেন এখনো আমাদের জীবনীশক্তির বড় অংশ (ক্ষেত্র বিশেষে পুরো অংশ) ব্যয় করি ধর্ম কে রক্ষা করতে, তার প্রচার প্রসার বাড়াতে?
একটা উত্তর হতে পারে এইরকম যে---মানুষ তার অন্তর্নিহিত দুর্বলতাটা কাটিয়ে উঠতে পারছে না। মানুষের দুর্বলতা যতদিন ছিল আঁধারকে ঘিরে, সুর্য আর আগুন দেবত্ব উপভোগ করেছেন। প্রকৃতির নানান শক্তি যতদিন মানুষকে রেখেছে ব্যতিব্যস্ত---ততদিন তারাও নিয়মিত ভাবে উপাসনা পেয়ে গেছেন। এখন আর তাদের সেই রমরমা নেই। এখন তাদের নিয়ে উপাসনার কথা বললে মানসিক হাসপাতাল খুব সম্ভবত শেষ ঠিকানা হতে যাচ্ছে।
মানুষের জীবন এখন শুধু মাত্র প্রাণ টিকিয়ে রাখার সংকীর্ণ করিডোরে ঘোরাফেরা করে না। আমাদের সভ্যতার অগ্রগতির সাথে এসেছে আমাদের জীবনে নতুন নতুন সব সমস্যা। এখন যেহেতু অনেক মানুষকেই ভাবতে হয় না আগামী কাল কী করে তাকে টিকে থাকতে হবে অন্ধকারের গহবরে, বন্য প্রানীর সাথে লড়াই করে---এখন আমাদের চিন্তা তাই আরেকটু ভিন্ন খাতে বইছে। এখন আমাদের চিন্তা---চাকরিটা পাবো তো, বাচ্চাটার শরীরটা ঠিক হবে তো, মেয়েটার(অথবা ছেলেটার) মন পাবো তো (যার যার অভিরুচি অনুযায়ী পছন্দ করে নিন), আমার চেয়ে কম জেনে-শুনেও ঐ বদমায়েশটা কী করে আমার বস হয়ে গেল, ও কেন প্রমোশন পায় ফি বছর, আর আমি কেন আটকে আছি একই চেয়ারে দশ বছর---এমনিতর হাজার প্রশ্ন-দুঃখ-হতাশা এখনো আমাদের পোড়ায়। এবং যতদিন এসব চলবে ততদিন, আমার ধারণা ঈশ্বরের হাত থেকে, ধর্মের হাত থেকে, আমাদের রেহাই নেই। কারণ ঈশ্বর তথা ধর্ম এইখানে এসে আমাদের বিপর্যস্ত মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, স্তোক বাক্য শোনায়, মৃত্যু পরবর্ত্তী এক কাল্পনিক জগতে সুবিচারের আশায় দেখায়।
এসবকিছুর পরও রয়েছে মানুষের নিজের অস্তিত্ব নিয়ে হাজারো প্রশ্ন। এই প্রশ্নগুলো দার্শনিক দৃষ্টিকোনের। কেন আমি এমন? এই বিশাল সৃষ্টিযজ্ঞে আমার কী প্রয়োজন? আমার জীবনের উদ্দেশ্যই বা কী? আমি না হলে কী ব্যর্থ হতো কাননে ফুল ফোটা? আমারি চেতনার রঙ্গে রেঙে চূনী হল লাল? এইসব প্রশ্নের উত্তর যতদিন আমাদেরকে মরীচিকার মত তাড়া করে চলবে---ততদিন ধর্মের হাত থেকে আমাদের মুক্তি নেই।
এবং যেহেতু আদতে এইসব প্রশ্নের নিরংকুশ উত্তর পাওয়া সম্ভবপর নয়---ঈশ্বর তার গদিতে আরো অনেকদিনই বসে থাকবেন বলে আমার মত।
ধর্ম কে, ঈশ্বর কে যেতেই হবে কেন? থাকলে অসুবিধা কী?
অসুবিধা হতো না যদি না এই দুইজনকেই সুযোগসন্ধানীরা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার না করত। ঈশ্বর এবং ধর্ম শুরু থেকেই যদি কারো সেবা করে থাকেন--- তারা হলেন সমাজের হর্তাকর্তারা। সমাজের হর্তাকর্তারা সব সময়েই ধর্ম এবং ঈশ্বরকে ব্যবহার করেছেন তাদের নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্যে। ধর্ম তথা ঈশ্বর কখনো গরিব-গুর্বোর সহায়তায় আসেন নি। যদিও এরাই তাদের সবচেয়ে বড় সমর্থক। ধর্ম মানুষের অন্তঃস্থিত দুর্বলতাকে ব্যবহার---আর ধর্ম কে ব্যবহার করেন সমাজপতিরা---সে তারা ধর্মাধিপতিই হোন, কী রাজনীতিক হোন, কী রাষ্ট্রপতি। ধর্ম হল এক ইউনিভার্সাল রিমোট কন্ট্রোল---যা দিয়ে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের মানুষকে নিয়ন্ত্রন করা যায়। এত বড় অস্ত্র কি আর সমাজপতিরা হাতছাড়া করবেন সহজে? মনে হয় না।
ধর্ম কি মানুষের কোন উপকারই করে নি?
অবশ্যই করেছে। বার্ট্রান্ড রাসেলের মতে, অনেক ক্ষয়-ক্ষতির পর ধর্ম কিছু কিছু ভাল কাজ তো অবশ্যই করেছে। তোমার কথাটারই প্রতিধ্বনি তুলে বলা যায়, ভারতবর্ষ রেল লাইন আর বিদ্যুতের মত উপকারী জিনিস পেয়েছে দু'শো বছর দাসত্ব করে। লাভক্ষতির অনুপাতটা কতটুকু স্বাস্থ্যকর সেটাই বিবেচ্য।
সাধারন ধর্মানুসারীরা যদি তোমার মত বিচক্ষনতা নিয়ে,প্রাজ্ঞতা নিয়ে ভাবতে পারত তাহলে হয়ত পৃথিবীতে এত ঝঞ্ঝাটই রইত না। কিন্তু তুমিই বল, তোমার মত ক'জন এমন করে ভাবে?
অহর্নিশ শুভেচ্ছা----
আপনার মন্তব্যটা অনেক বার পড়লাম। কী যে জবাব দিবো বুঝে পাচ্ছি না। এতটাই পরিপূর্ণ মন্তব্য যে হাত দিলে দাগ পড়ে যাওয়ার ভয় আছে! শুধু মনে হলো যে ভাগ্যিস "মন্তব্য পছন্দ" করার সুযোগ আছে।
শুভেচ্ছা আপনাকেও!
দ্বিমত জানাইলাম। কারণ রেস্ট্রিক্টেড।
"দ্বিমত" দেখে ভয় খেয়ে গেছিলাম। নাহ, আরাম করেন এবারে কিছুদিন।
বিষয়টা তো আরামের না... আপনি যুক্তি দিয়ে কথা বলেন...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সম্ভাব্য ঝামেলা ও সংঘাত এড়াতে আলমগীর ভাইকে চিল-পিল খেতে তথা "আরাম করতে" বলেছিলাম। যুক্তি যখন চাচ্ছেন, যুক্তি দেবো। আগামীকাল সকালে জরুরী কাজ আছে কিছু। সেগুলো সেরে সবিস্তারে জবাব দিচ্ছি।
লেখাটা ভালো লাগলো। অনেক কিছু ভাবার সুযোগ পেলাম
আহা অনেক দিন পরে আবার শুরু করলেন দেখে খুব ভাল লাগল।
পুরাটা পড়ে শেষ করতে পারিনি এখনও। ভাল লাগাটা জানিয়ে গেলাম।
ভালো লাগলো পড়তে।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
লেখাটা অত্যন্ত ঝরঝরে। পড়ে খুবই ভাল লাগল। ধর্মের এই দিকটা নিয়ে আমি চিন্তা করে কোনো কুলকিনারা পাই না। বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলাচালে নাস্তসানাবুদ।
অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম
স্ট্যাটাসেও কন্যার সাথে আলাপচারিতার প্রতিফলন আসতে লাগলো। মাহে রমজানের সুফল হাতে-নাতেই মিললো। ঠিক দু’সপ্তাহ নাগাদ কন্যা অধমের বাহুলগ্না হলেন, অল্প ক’মাস নাগাদ স্ত্রী।
প্রেম ভালোবাসা বলে কথা! আর তুমি মাত্র ২৫টা শব্দে শেষ করে দিলে? আচ্ছা তুমি এত কিপ্টে কেন গো?
সব ধর্মেই বলা হয় সৃষ্টিকর্তা সর্বশক্তিমান, তাহলে ওঁর অপছন্দের ধর্ম অনুসারীদেরকে উনি তো এক তুড়ি মেরেই শেষ করে ফেলতে পারেন, নয় কী! কিন্তু তা কি উনি করেন?
কারণ ছাড়া কার্য হয় না। তাই আমি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করি। আমার বিচারে স্রস্টা হলেন ধর্ম নিরপেক্ষ স্বত্বা। আর তা্ই তিনি তাঁর সৃষ্ট এই পৃথিবীতে সব ধর্মের, বিশ্বাসের মানুষকে সমান ভাবে টেক কেয়ার করেন। আমরা ধর্ম পালন করি না করি, তাকে বিশ্বাস করি বা না করি, তাতে তাঁর কিছ্ছু আসে যায না।
আমরা ধর্ম পালন করি আমাদের জন্য। কারণ মৃত্যুকে তো আটকালো যায় না। কিন্তু মৃত্যুর পরের জীবন সম্বন্দে আমরা কিছ্ছু জানিনা। ধর্ম আমাদের একটা কমফোর্ট জোন দেয় এই অজানা অচেনা জীবনটা সম্বন্দে।
সৃষ্টিকর্তা বলে কিচ্ছু নাই।
যারা সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্ব্যাস করেনা ধরে নিলাম তাদের কথা সবই ঠিক। বেহেশত দোজখ ভুয়া। সৃষ্টিকর্তায় বিশ্ব্যসী আমরা গাধারা এই জীবনে কামনা বাসনা, ভোগ বিলাস ত্যগ করে প্যেচ পেচে ধর্মীও নিয়ম কানুন মেনে একটাই মাত্র জীবনকে ব্যর্থ করে দিচ্ছি। ঠিক আছে। তাতে আর কী বা এসে গেলো।
কিন্তু যদি থাকে???
--------------------------------------------------------------------------------
ভালোবাসার গল্প লিখলে লোকে যদি আদেখলাপনা ভাবে, সেই জন্য তো কম করে লিখলাম।
ধর্মের উপর বিশ্বাস থেকেই কিন্তু এই চিন্তাটা আসা উচিত সবার। আফসোস, ঈশ্বরের তরফের এই অসাম্প্রদায়িক দেখভালটুকুও পারলে সবাই বন্ধ করে দেয়!
Prophet is far apart.before that answer his Ummat....see below u unwise man.it is also a history,specially for Monmajhi & Murshed.
Imam Abu Hafina was asked by the khalifa to meet with them and an atheist so Imam Abu Hanifa could debate with him. They set a time for them to meet up. So the day and time came and left and they kept waiting for Imam Abu Hanifa until finally he came. Everyone questioned him about his being late and what happened. So he started explaining how there was river that he had to cross….and he was waiting for a boat to come and bring him on the other side of the river.
While he was waiting, the branches and leaves of the tree fell and slowly formed themselves into a boat. And he jumped in that boat crossed the river. Obviously ppl laughed at this story and the atheist asked him ‘Are you mad enough to believe that a boat was made all by itself?
Imam Abu Hanifa replied ‘Who is more mad? the one who believed that a boat was created by itself, or you who believes that the entire world is created by itself?’
Mashallah, What a great mind and hard punchline….Inshallah Allah give us all guidance, especially Atheist’s.
কেন নৌকা 'এমনি এমনি' তৈরি হতে পারে না? আমি নদীর ধারে দাঁড়িয়ে আছি, হঠাৎ একটা গাছের গুঁড়ি ভেসে আসলো। আমি আরেকটা ভাঙ্গা গাছের ডাল কুড়িয়ে নিয়ে সেটায় চড়ে বসলাম, তারপর লগি ঠেলে ঠেলে অন্য পাড়ে চলে গেলাম। হয়ে গেল!
দুনিয়ায় সবকিছুই তো 'এমনি এমনি'...আমরা কোনটাকে নৌকা বলি, আর কোনটাকে আগরবাত্তি। 'এমনি এমনি' যেটা হয় না, সেটা আপনি হাজার চেষ্টা করেও বানাতে পারবেন না।
একা একা পৃথিবী সৃষ্টি হয়নি। হয়েছে একটা সুনিদির্ষ্ট প্রক্রিয়ায়। যাকে এভুলিউশান বলা হয়। তবে বিশ্বজগতের শুরুটা কিভাবে সেটা আমাদের অজানা। কিন্তু অজানা বলেই কি আমাদের ধরে নিতে হবে হবে সেটা একজন সৃষ্টিকর্তার তৈরী? তাহলে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি কিভাবে?
বার্টান্ড রাসেলের একটা লেকচার শেষে একজন বৃদ্ধ মহিলা উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, তুমি অনেক কিছুই তো বললে কিন্তু আসল সত্য হচ্ছে পৃথিবীটা আসলে দাঁড়িয়ে আছে একটা বিশালাকৃতির কচ্ছপের পীঠে। রাসেল তখন জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে কচ্ছপটা দাঁড়িয়ে আছে কীভাবে? বুড়ি হেসে বলে, তুমি খুবই চাল্লু, আমি জানতাম তুমি এই প্রশ্নটা করবে। আরে বোকা কচ্ছপের নীচেও তো আরেকটা কচ্ছপ। আর এভাবেই একটা কচ্ছপের কলামের উপর দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবী।
বুঝলেন কিছু?
বাই দ্যা ওয়ে আপনার ইংরেজী কিন্তু বেশ দুর্বল। অনুগ্রহ করে বাংলায় লিখুন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
"যুক্তি দিয়ে ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা যতটা অগ্রহণযোগ্য, যুক্তি দিয়ে ধর্মকে আক্রমণ করার চেষ্টাও ততটাই অগ্রহণযোগ্য। যে যেভাবে খুশি, যেই ধর্মে খুশি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারেন। শুধু রাষ্ট্রের মতো সার্বজনীন কোনো প্রতিষ্ঠানের উপর সেই বিশ্বাস চাপিয়ে দিতে গেলেই আমার আপত্তি।"
প্রশ্ন কেন আপওি?
""রাষ্ট্রে যেকোনো ক্ষুদ্র আইন প্রণয়নের জন্যেও অনেক বাছ-বিচার করা হয়। আইন কার উপর প্রযোজ্য হবে, কতটা শাস্তি হবে, প্রয়োগের দায়িত্বে কে থাকবে, ইত্যাদি অনেক বিবেচনা কাজ করে। ছিঁচকে চুরির শাস্তির বিধান করতেও যেখানে এত বিবেচনা করা হয়, সেখানে বৃহত্তম ব্যাপারে কেন "আল্লাহ বলেছেন তাই..." বলে আইন প্রণীত হবে? এখানেও যাচাই-বাছাই প্রয়োজন,"
আল্লাহ বলেছেন--এর পরও লজিক দিয়ে হিসেব করতে চাইলে করুন।কিন্তু লাভ নেই।তিনি সৃষ্টি করেছেন,তাই মানবের উপকারে কোনটা বেশী আসবে তিনিই ভাল জানেন।ইসলামিক ক্রিমিনাল ল এর কিছুটা অনুসরন করে সৌদী-আরব।তাতেই কি অবস্হা জানেন?বিশ্বের সবচেয়ে কম ক্রাইম এখন সে দেশে।পারবেন বাংলাদেশ কে সে রকম ক্রাইম ফ্রী করতে।সব মুখের বাহাদুরী আপনার।আপনার ঐ করাপ্ট নেতারা কেনো-আপনার মত বিদেশী শিক্ষার পুজারিরা একাট্টা হয়েও শুধু Hypothetical ভাবে,অন্তত কিছু ল বানিয়ে প্রমান করুন দেখি পারলে যে ,আল্লার আইন থেকে আপনাদেরটা বেশী Effective.
" এখানেও যাচাই-বাছাই প্রয়োজন, যা করতে গেলে যুক্তি দিয়ে ধর্ম-বনাম-আরেকধর্ম যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এতে কোনো ধর্মই জেতে না, বরং স্ব-স্বীকৃত আউলিয়ার প্রতাপে বহু মানুষের প্রাণ যায়।"
আল্লার বিধান কোর্-আন আর সুন্নাহ তে দেয়া আছে।ইসলামিক সংবিধানও প্রস্তুত আছে।বাংলাদেশ থেকেও বহু বড় রাষ্ট্র এ দিয়ে পরিচালিত হয়েছে।এখানে ধর্ম যুদ্ধ শুরু হওয়া বা পীড়-আউলিয়ার প্রতাপের কোনো জায়গা নেই।
" বিশ্বাসের কোঠরে ধর্ম বিচরণ করুক তার পূর্ণ কলেবরে; রাষ্ট্র পরিচালনার কোঠরে আসুক শুধুই ধর্মের শিক্ষাটুকু, তার বিধান নয়।
আমনারা ভুলে যান এ দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলিম।যার মাঝে আপনার মত (ধর্মে বিশ্বাস রাখলেও খুব সচেতন ভাবেই আমি ধর্মাচরণবিমুখ মানুষ।) বাদ দিলেও প্রাই ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ খাঁটি ধর্মপ্রান নিরীহ মুসলমান(বিবেচ্য এর থেকে আমি আল্-বদর, রাজাকার জামাত কেও বাদ দিয়েছি,তারা)।তারা খোদাকেই সর্বময় ক্ষমতাশীল জানে ও মানে।কিন্তু আপনার মত চিন্তাধারার লোকজনের করনে,তারা নিজ দেশে উপজাতির মত।দেশের আইন কি ১০০ ভাগ মানুষের কথা ভেবে হওয়া উচিত,না আপনাদের ২০-২৫ ভাগের কথা ভেবে!!!!!পারলে সব গুলো জবাব দিয়েন,রেগে নয় ভেবে জবাব দিবেন আশা করব।