এই পোস্টের বিষয়বস্তু "হায়েনা"।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের শিরোনাম এবং চুম্বক অংশে বলা হচ্ছে, "ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রীকে ‘হায়েনা’ ডাকায় বুয়েটের প্রভাষককে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।"
এটুকু পড়ে আওয়ামী-/হাসিনা-বিদ্বেষীদের ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ আছে, বুয়েটের ছাত্র-শিক্ষকদেরও ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ আছে। এই ক্রোধের সাথে সহমর্মিতা রেখেই মুদ্রার অপর পিঠের দিকে তাকানোর অনুরোধ করছি। প্রথমে এ-পিঠ দেখি।
রাষ্ট্রনেতারা ক্ষুদ্রতম প্রয়াসে আমাদের জীবন নাশ করে ফেলতে পারেন, কিন্তু আমজনতার দৌঁড় দু-চারটা ব্যঙ্গবিদ্রূপ পর্যন্তই। অতএব, রাষ্ট্র যদি এত অল্পতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাহলে ক'দিন পর আমরা রামগরুড়ের ছানা হয়ে যাবো।
আরেকটু গম্ভীর ঢঙে বললে, সাইবার আইনের ছুতায় মুক্ত মননকে রুদ্ধ করা, বিরুদ্ধ মতাদর্শের কাউকে হয়রানি করা, কিংবা তথ্যনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দলীয় অবস্থান পোক্ত করার যেই ধারা সরকার গ্রহণ করেছে, তা নিয়ে আশঙ্কা আরও প্রকট হচ্ছে এই ধরনের আচরণে। এর বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট ও দৃঢ় অবস্থান নেওয়া প্রয়োজন। এই প্রতিরোধের সাথে মৌলিক বাকস্বাধীনতার প্রসঙ্গ জড়িত।
এবার মুদ্রার অপর পিঠ দেখা যাক।
বুয়েটের যেই প্রভাষক আলোচ্য স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তার পুরো বক্তব্যও পড়া প্রয়োজন। তিনি লিখেছেন, "প্রথমে তোর মাথায় গুলি করবো, পরে পেটে। তারপর মাথা কেটে বুয়েটের সামনে টানিয়ে রাখবো। যাতে আর কোনও হায়েনার আক্রমণে বুয়েট আক্রান্ত না হয়।"
তিনি প্রিয় বুয়েটকে অনেক ভালোবাসেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই, কিন্তু এই বক্তব্যে তিনি খুব সরাসরি ভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। আজকের বিশ্বে এই ভাষায় হুমকি দিলে কোনো প্রকার রূপকের আড়ালেই লুকানোর উপায় নেই। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর যেকোনো দেশের জন্য এই সত্য প্রযোজ্য। বিশ্বাস না করলে বারাক ওবামাকে "হায়েনা" ডেকে এমন একটা স্ট্যাটাস দিয়ে দেখুন। এরপর পালাক্রমে সব অন্যান্য রাষ্ট্রনেতাদেরও একই হুমকি দিয়ে দেখুন। ঘন্টা খানেকের মধ্যেই দরজায় ভারি বুটের আওয়াজ পাবেন।
আমরা বাঙালিরা কথায় কথায় "মাইরা লামু" জাতীয় ভাষা ব্যবহার করি। পথচলতি গালি এগুলো, এর মধ্যে আমরা কোনো অসদাচরণ দেখি না। আইনের চোখে এগুলো অপরাধ, কিন্তু এই অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ দাখিল করা কষ্টসাধ্য। সাইবার দুনিয়ায় সেই সমস্যা নাই। প্রতিটি বক্তব্যের ফুটপ্রিন্ট রয়ে যায়, সেগুলো (বিশেষত পশ্চিমা দেশে) খুব গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়, এবং সেই অনুযায়ী তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সাইবার দুনিয়ায় বাংলাদেশের ব্যাপক প্রবেশ খুব বেশিদিন ধরে হয়নি, তাই এই বাস্তবতাগুলো আমাদের কাছে অচেনা। স্বয়ং উপস্থিত থেকে করা হতো এমন অনেক অপরাধ এখন ইন্টারনেটে দূর থেকেই করা যায়। সেই কারণেই ‘সাইবার ক্রাইম’, ‘অনলাইন বুলিইং’, ‘অনলাইন পাইরেসি’, ইত্যাদি শব্দের সাথে আমাদের পরিচয় হচ্ছে।
অনেকেই এই রকম স্ট্যাটাস দেওয়াতে “দোষের কিছু নেই” বলে মনে করছেন। তাদের এই অজ্ঞানতার জন্য সাইবার আইন সম্পর্কে জ্ঞানের অভাবটুকু দায়ী, এবং পুরো ঘটনায় তারাই হবেন সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ। এই ঘটনা কেন অন্যায়, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে কেউ হয়তো এমন আরও কিছু স্ট্যাটাস লিখবেন। কেউ কয়েক কাঠি সরেস হয়ে হয়তো কোনো ধরনের রূপকের ধার ধারবেন না। এভাবে “ওয়ান অফ আওয়ার ওউন”-কে সমর্থন করতে গিয়ে নতুন করে কেউ আইন ভেঙে বসা খুবই দুঃখজনক হবে। আমাদের সবার উপলব্ধি করা প্রয়োজন, কোনো এক রহিম যদি করিমের মাথা কেটে ঝুলিয়ে রাখার বিস্তারিত হুমকি দেয়, তাহলে করিম অবশ্যই আইনের আশ্রয় নেবে। আইনও তার সেই অভিযোগ আমলে নেবেন। আমরা সমাজে সেই ধরনের আইন-আদালতই চাই।
আরও উপলব্ধি করা প্রয়োজন, আজ যেই ব্যাক্তি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলে উচ্চকিত, কাল বিএনপি ক্ষমতায় এসে একই কাজ করলে তারা চুপ করে থাকবে। আজ বুয়েটের শিক্ষক জড়িত বলে যারা উচ্চকিত, কাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ জড়িত থাকলে তারা চুপ থাকবে (ঠিক যেমন অন্য প্রতিষ্ঠানের সবাই এখন চুপ আছে)। আজ যেই শিক্ষক এই আইনের আওতায় প্রথম দিকের অপরাধী বলে সেলিব্রিটি হয়েছেন, কাল প্রতিবাদীদের কেউ মাত্রা লংঘন করলে সেই মনোযোগ বা সমর্থন পাবেন না। অতএব, প্রতিবাদ করুন তবে একটু রয়েসয়ে।
আমাদের মতো আমজনতার জন্য এটুকুই। এবার মহারথী সরকারের দিকে একটু সশ্রদ্ধ দৃষ্টি দেই।
আইনের কাজ দুর্বলকে আশ্রয় দেওয়া, সবলের হাতিয়ার হওয়া নয়। বুয়েটের ভিসি-বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন ক্রোধের বশে একজন তরুণ শিক্ষক কিছু বলেছেন। স্ট্যাটাস প্রকাশের মুহূর্তে তিনি “হাসিনা”-র পরিবর্তে “হায়েনা” রূপক ব্যবহার করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার দুর্বল প্রচেষ্টা করেছেন। কিন্তু এই ব্যাক্তি কি আদৌ শঙ্কিত হওয়ার মতো কেউ? তিনি কি নিজের ভুল বুঝে স্ট্যাটাস মুছে ক্ষমা প্রার্থনা করেননি? তারপরও সেই প্রসঙ্গ এতদূর গড়ানোর কোনো কারণ নেই। এত কাজ ফেলে সরকারকে কেন “আমি কলা খাই নাই” বলতে হলো হায়েনার সাথে হাসিনা মিলিয়ে? আমরা জানি, যেই ব্যাক্তির আত্মসম্মানবোধ অটুট, তিনি ছোটো-খাটো বাড়াবাড়ি গায়ে মাখেন না।
এই ধরনের মামলাবাজিতে সবচেয়ে পটু জামায়াত-শিবির। নিধনের পরিবর্তে আওয়ামী লীগ যেন তাদের কাছ থেকেই শিক্ষা নিচ্ছে। যখন দেশে-বিদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই জামায়াতের কাছ থেকে উকিল নোটিশ খেতে হয়, তখন আওয়ামী লীগ কিংবা তার অনুসারী আইনজীবিদের টিকি খুঁজে পাওয়া যায় না। যখন শাহবাগের গণআন্দোলনের খবর স্রেফ রিপোর্ট করার দায়ে প্রবাসী বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলকে পক্ষপাতের অভিযোগে বন্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়, তাদের সমর্থন দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগকে পাওয়া যায় না। জামায়াত যখন সারা দুনিয়ার শহরে শহরে আইনজীবি পাঠিয়ে গাঁজাখুরি ছড়ায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে, তখন সরকারের কোনো উপস্থিতি চোখে পড়ে না। যখন জামায়াত-শিবির অর্থের বিনিময়ে হ্যাকার ভাড়া করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির কথোপকথন চুরি করে, তখন সাইবার আইন বলে কোনো কিছু এই দেশে আছে বলে মনে হয় না। যখন মিথ্যার বেসাতি ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানো হয় তখনও সরকার নিরব থাকে।
সেই অপটু এবং উন্নাসিক সরকারের কী প্রয়োজন ছিলো একজন নগণ্য নাগরিকের ক্ষণিকের উন্মাদনাকে এত বড় করে তোলা? বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নিয়েই যদি এত অস্থিরতা, তাহলে কেন আসিফ নজরুলদের অপপ্রচারের কোনো যথোপযুক্ত জবাব দিতে পারেন না? কেন স্বাধীনতাবিরোধীরা একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখল করার সময় নির্বিকার থাকেন?
সরকারের প্রতি অসন্তোষের প্রথম কারণ ছিলো এটুকুই -- আইনের চোখে যদি অপরাধ হয়েও থাকে, তবুও আপনাদের কাছ থেকে মার্জনা প্রত্যাশিত ছিলো। এবারে দ্বিতীয় প্রসঙ্গে যাই।
সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচ্য বিষয়গুলোর একটি হলো পদ্মা সেতু বিষয়ক দুর্নীতি। এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ব ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সরকারের বাদানুবাদের মূল বিষয় একটাই -- দুর্নীতির সংজ্ঞায়ন। পশ্চিমা রীতি অনুযায়ী বিশ্ব ব্যাংক দাবি করছে যে “দুর্নীতির ষড়যন্ত্র”-ও এক ধরনের দুর্নীতি। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় কায়দায় বলছে যে টাকার হাত-বদল হয়নি, তাই কোনো দুর্নীতিই হয়নি। অতি-চর্বিত এই প্রসঙ্গের গভীরে যাচ্ছি না আর। আমার প্রশ্ন অন্য জায়গায়।
যেই সরকার পদ্মা সেতু এবং ‘দেশপ্রেমিক’ আবুল হোসেনের প্রসঙ্গ এলে অপরাধের উদ্দেশ্যকেও অপরাধ হিসাবে দেখতে নারাজ, তারাই কেন প্রভাষক হাফিজুর রহমান রানার প্রসঙ্গে সামান্য একটি স্ট্যাটাসকে এত বড় করে দেখছেন? আপনারা যে শক্তের ভক্ত এবং নরমের যম, তা জামায়াত-শিবিরের মুখোমুখি হতে গেলে কাঁপাকাপি লেগে যাওয়া থেকেই আমরা জানি। মনে হয় না এই ভাবেও ব্যাপারটা প্রমাণ করা দরকার ছিলো।
আশা করি সরকার বাহাদুরের সুমতি হবে, সাইবার আইন নামক নতুন খেলনা নিয়ে খেলা বন্ধ হবে, এবং এই হাস্যকর অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটবে। ইত্যবসরে বাকিদের জন্য আবারও বলি -- সামাজিক মিডিয়ার কল্যাণে আমরা একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন জগতে প্রবেশ করেছি। এখানে অবশ্যই মন খুলে কথা বলবেন, নিজের মত প্রকাশ করবেন। শুধু গালি এবং ঝাড়িগুলো একটু রয়েসয়ে দেবেন। এটুকু কমন সেন্স একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের কাছে প্রত্যাশিত ছিলো, নতুন যুগের নেটজেনদেরও সেই সম্পর্কে সচেতন থাকা প্রয়োজন।
প্রাসঙ্গিক সংবাদঃ http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=105763324f2dbfe9eb9115e7b6b8cacb&nttl=27062013206680
মন্তব্য
আমার জানামতে, এই রকম হুমকি ধামকি তো নতুন কিছু না, অফলাইনেও হর হামেশাই হয়। জমির দখল নিয়ে, মেয়ের প্রেম/বিয়ে নিয়ে, যৌতুক নিয়ে.... পত্র পত্রিকায় পড়ে যেটুকু বুঝি, আইনের আশ্রয় নিতে কেউ থানায় গেলে সেটার প্রেক্ষিতে একটা জিডি/ডাইরী করা হয়। কেউ কাউকে হুমকি দিয়েছে তার প্রেক্ষিতে গ্রেফ্তার হয়েছে(বিচার/শাস্তি হওয়া তো দূরের কথা), এমনটা আমার জানা নেই।
এইটা একটু অতি সরলীকরণ হয়ে গেলো। একই যুক্তিতে বলা যায় আজ যেই ব্যাক্তি চুপ করে আছে, কাল বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সে প্রতিবাদ করবে। আওয়ামীলীগ যদি বিএনপিপন্থীকে কথা বলার সুযোগ করে দেয়, তাহলে সেই সুযোগ বিএনপিপিন্থী নেবেনা কেন
!
আসল কথা হলো দেশে বিচার বিভাগ "স্বাধীন"। আদালতে যেই রায় হয়েছে তার বিরুদ্ধে কথা বলা আদালতের অবমাননা। এই জন্য চুরি ডাকাতি খুন করলে বিচার হয়না, গণহত্যার বিচার হয়না - বিচার হয় ফেসবুক স্ট্যাটাসের।
লেখাটা তেমন ভাল লাগেনি, একটু বেশীই ব্যালান্স হয়ে গেছে।
সংযোজন- অফলাইনে এই নিয়ে একজনের সাথে তর্ক করে খুবই বিরক্ত। মন্তব্য একটু রুঢ় শোনালে দুঃখিত।
এটা স্পর্শকাতর ইস্যু, তাই সবারই কম-বেশি মেজাজ খারাপ থাকা স্বাভাবিক। এই জন্যই ফেসবুকের কোনো তর্কে না গিয়ে নিজের কথা নিজের ব্লগে লিখলাম।
"ব্যালেন্স" হওয়ার অভিযোগটা মানি, কিন্তু বিষয়টা আসলেই তেমন সোজা-সাপ্টা না। কারণটা একটু স্বার্থপর। আমি নিজে শাহবাগ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর কম হুমকি খাই নাই। যারা আজকে এই রকম আইনের উপস্থিতি এবং প্রয়োগের বিরুদ্ধে, তাদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন -- আমি তাহলে কোন্ আইনের কাছে নিরাপত্তা চাইবো?
যারা এই ভাবে মাথায় এবং পেটে গুলি করা, মাথা কেটে ঝুলিয়ে রাখা, ইত্যাদি হুমকির পর বিচার করায় এত নাখোশ, তাদের কয়জন আদৌ মৃত্যু-হুমকি খেয়েছেন? অতএব, এই রকম আইন প্রয়োজন। আজকে আমি আপনাকে এই হুমকিগুলো দিলে আপনি আমার যতই পরিচিত মানুষ হয়ে থাকুন না কেন, আইনের আশ্রয় নেবেনই। এইটুকু একদমই বেসিক।
এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে। বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ মামলা আদালতে ঝুলে আছে। এর মধ্যে কোন মামলার গতি দ্রুত হবে, আর কোন মামলা ফাইলচাপা পড়বে, সেটা সরকারের মর্জিতে নির্ণীত হয়। এই মামলার এত ত্বড়িৎ ফলাফলের পেছনে কারণ একটাই -- সরকারের অতি-মনোযোগ। সেটার জন্য সরকারের সমালোচনা তো করতেই হবে। মনে হয় না সেটা রেখে-ঢেকে করেছি।
এবার "অতি-সরলীকরণ" প্রসঙ্গ। কথাটা কি খুব ভুল? কিছু মানুষ স্রেফ পার্টিজান বিবেচনা থেকেই প্রতিবাদ করবে। এই মৌসুমী প্রতিবাদীদের দেখে পথ ভোলা কি ঠিক? ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে কাউকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া একটা রাষ্ট্রীয় পরিহাস, এবং এর প্রকৃত প্রতিরোধের পথে পার্টিজান মানুষগুলোই সবচেয়ে বড় কাঁটা। এমন কারও উষ্কানিতে যেন নতুন কেউ "হায়েনাকে ওমুক-তমুক করবো" লিখে না ফেলেন, সেই সতর্কতা দেওয়া কি দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে না?
এখানে পক্ষ একটা না। কম করে চারটা পক্ষ আছে, এবং তাদের একেক জনের ভূমিকা একেক রকম। সব মিলিয়ে খিচুড়ি বানিয়ে ফেললেই বরং সরলীকরণ হয়ে যায়। পক্ষগুলো বলি।
১) প্রভাষক রানা -- তিনি যেই স্ট্যাটাস লিখেছেন, সেটা স্পষ্টতই বাড়াবাড়ি/অন্যায়। এরপর তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন, যেটা সরকার বিবেচনায় নেয়নি।
২) আদালত -- সরকারের উৎসাহের কারণেই একটি মামলা আদালতে এসেছে, আদালত সেই অনুযায়ী রায় দিয়েছেন। এখানে তো তাদের দোষ দেওয়ার মতো কিছু নেই।
৩) সরকার -- যেই অতি-উৎসাহ সরকার দেখিয়েছে, সেটার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। আইনত তারা এটা করতে পারেন, কিন্তু নীতিগত ভাবে এটা করার কোনোই অর্থ নেই। বাকি কথা আগেই বলেছি।
৪) প্রতিবাদকারী -- এর মধ্যে মুষ্টিমেয় মৌসুমী প্রতিবাদী আছেন হাওয়ার উপর তাওয়া ভাজার জন্য। কিন্তু মোটা দাগে বাকিদের এটুকু সতর্ক থাকা উচিত যেন এই "অপরাধ"টুকু আর না করা হয়। সেই সংহতি না থাকলে শুধু নামেই প্রতিবাদ হবে।
ইন সামারি -- আমি এই আইনের বিরুদ্ধে নই, তবে পুরো অধ্যায়টাই হাস্যকর এবং অবান্তর।
কেউ যদি কাউকে হুমকি দেয় তাহলে যাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে সে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারে। এখন এজন্য আইনের সাহায্য কামনা করা যেতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো আইন কী করবে এরপর,
অপশন ১। ৭ বছরের জন্য জেলে পুরে রাখবে
অপশন ২। মৌখিক বা লিখিত হুমকি যাতে কাজে পরিণত না হয় সেটা দেখভাল করা। হুমকিদাতাকে জেলে না পুরেও অনেক শাস্তির ব্যবস্থা সম্ভব। যেমন, চাকুরিচ্যুত করা, সরকারি কোন প্রজেক্টে কাজ না করতে পারা, পুলিশ রেকর্ডে হুমকি লিখে রাখা, ব্যাংক থেকে লোন যাতে না পায় সে ব্যবস্থা করা।
অপশন ৩। হুমকি যাতে কাজে পরিণত না হতে পারে সেজন্য পুশিলি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।
আমার কাছে ২, ৩ গ্রহণযোগ্য মনে হয়। ফেইসবুক হুমকির জন্য ৭বছর বাড়াবাড়ি রকমের শাস্তি।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
সেটাই। অনেক, অনেক রকম কিছু করা যেতো। দুর্নীতিবাজ খুনীদের "বকে দেওয়া"-র কথা শুনেছি আমরা এক কালে। তাদের তুলনায় নগণ্য এই ব্যাক্তিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়াটা বাড়াবাড়ি। কিছুদিন আগেই তো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে কিছু মাসের দণ্ড দেওয়া হলো (বিস্তারিত মনে পড়ছে না এই মুহূর্তে, দুঃখিত)।
সেই স্ট্যাটাসে হায়েনা মানে কি ছিল, সেটার মানে স্ট্যাটাস দাতাই জানেন, তিনি যদি বলে থাকেন এটা দিয়ে করাপশান বোঝানো হয়েছে, সেখানে আপনি/ আমি/ আমরা জোর করে এটাকে "হাসিনা" বানাচ্ছি কেন?! আপনি কেন ভাবছেন এটা "হাসিনা" শব্দেরই রূপক?? সেই সময়ে বুয়েটে আন্দোলন তো বুয়েটের ভিসির বিরুদ্ধে ছিল, তার করাপশানের বিরুদ্ধে ছিল, সেখানে হাসিনা কিভাবে আসে? এইটুকু বুঝতে এতো বিজ্ঞ জনেরা পারছেননা, নাকি বুঝেও ভান করছেন, সেটা বোঝাই যায়!! পুরো বিষয়টিতে ধিক্কার জানানোর ভাষাও নাই!
সরকারের বাড়াবাড়িতে ধিক্কার অবশ্যই জানাবেন। সেই জায়গায় আপনি একা নন, আমরাও সাথে আছি।
তবে অন্য জায়গাটাতেই ভুল করে বসলেন। ধরে নিলাম "হায়েনা" বলতে "হাসিনা" বুঝানো হচ্ছে না। ধরুন "ইশতি" বা "সোহা"-কে বুঝানো হচ্ছে। তাহলে ইশতি কিংবা সোহা বিপন্ন বোধ করলে কোথায় যাবে, কার কাছে আশ্রয় চাইবে? সেই জন্যই বলছি, এই রকম আইনের প্রয়োজন আছে।
"ওয়ান অফ আওয়ার ওউন"-কে সমর্থন দেওয়ার আবেগ থেকে অনেকেই প্রশ্ন করছেন রূপক কার দিকে ইঙ্গিত করছে সেটা তো স্পষ্ট না। এখানেই আরও বড় একটি ভুল ভাঙানো প্রয়োজন। এত স্পষ্ট ভাবে হুমকি দিয়ে তুচ্ছ রূপকে আড়ালে লুকানো যায় না। সারা পৃথিবীর যেকোনো আইনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মূল মেসেজটা হলো --- অনলাইনে কাউকে মেরে-কেটে ফেলার মতো কথা বলা যাবে না। পিরিয়ড। এই বিষয়টা তর্কের ঊর্ধ্বে বলেই সর্বজনস্বীকৃত।
আপনি যদি সেটা না মানেন এবং প্রতিবাদে এই রকম আরও কথাবার্তা বলেন, তাহলে আপনি নিজেই অহেতুক বিপাকে পড়বেন। আশা করি বুঝাতে পেরেছি।
একটা সংগ্রহিত কৌতুকঃ
একবার এক ভদ্রলোক রাস্তায় দাঁড়িয়ে চ্যাঁচামেচি করতেছে, প্রধানমন্ত্রী একটা হায়েনা।
সাথে সাথে এক পুলিশের কানে গেল।
পুলিশঃ ওই বেটা, তুই আমাগো প্রধানমন্ত্রীরে হায়েনা কইলি ক্যান? চল চল, থানায় চল।
ভদ্রলোকঃ আমি কি আমাগো প্রধানমন্ত্রীরে কইছি নাকি? আমি তো কইছি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী একটা হায়েনা।
পুলিশঃ মশকারি মারোস আমার লগে? আমি জানি না, কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী হায়েনা?
[বিঃ দ্রঃ সকল বিষয়বস্তু কাল্পনিক]
সমসাময়িক বহুল ব্যবহৃত এইটা একটা চূড়ান্ত ফালতু জোকস! উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তানের বানিয়ে আমার দেশ বলতে বাংলাদেশ বুঝিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকেই আবার হায়েনা বানানোর পায়তারা এইখানে হৈছে!
আমাদের সমাজে ইম্পিউনিটির একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যেখানে নিজ নিজ সাধ্যানুসারে 'এনিথিং গোজ্'। যার মেরে ফেলার বাক-সর্বস্ব হুমকি দেয়ার দুঃসাহস বা ইমিউনিটি-বোধ আছে সে সেটা দেয়, যার হুমকিটা কার্যকরী করার ক্ষমতা আছে - সে মেরেই ফেলে। সমস্যা হল, দুটিই যে আসলে 'ভায়োলেন্স' - একথা এদেশে অনেকে বুঝতে অক্ষম। এটা অনেকটা ভেজাল খেতে খেতে খাঁটি জিনিষের স্বাদ ভুলে যাওয়ার মত মনে হয়। কিম্বা হয়তো ভুলে নাই, খাঁটিটার স্বাদ আসলে হয়তো আদৌ জানি না আমরা! তা নইলে ১৫ বা ২১শে আগস্টের মত ঘটনা কিভাবে ঘটে বা সেই নৃশংস ও নারকীয় ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর মৌখিক হুমকি কিভাবে কিছু কিছু রাজনীতিবিদ প্রকাশ্যে ও নির্বিকারচিত্তে বারবার দিতে পারে বা তাদের পক্ষাবলম্বী সাধারন লোকজন পর্যন্ত সেই হুমকি আবার রিপিট করতে পারে কোন বিকার ছাড়াই? কিম্বা '৭১-এর পৈশাচিক গণহত্যা পর্যন্ত কিভাবে অনেকে জায়েজ করতে বা গণহত্যাকারীদের বাঁচানোর জন্য আদাজল খেয়ে লাগতে পারে? আর হ্যাঁ, এগুলি বা এরকম কাজ কেবল মুষ্টিমেয় রাজনীতিবিদরাই করে না, এই সুপ্ত ভায়োলেন্স বা তার মনোবৃত্তি বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। মাঝে মাঝে মনে হয়, নিজে আক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা বোধহয় 'ভায়োলেন্স' কাকে বলে তা বুঝতে অক্ষম। এমনকি এই মৌখিক ভায়োলেন্সকে নিজেদের 'গণতান্ত্রিক অধিকার' পর্যন্ত মনে করি বোধহয়!!!
সমস্যা হল, ইম্পিউনিটিপ্রাপ্ত মৌখিক ও বাস্তব ভায়োলেন্স যখন একই ঘটনার প্রেক্ষিতে হয় তখন তো বটেই, কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে হলেও তারা আসলে সম্পর্কহীণ নয়। এরা পরস্পর পরস্পরকে 'ফিড' করে, ইন্ধন, শক্তি ও পৃষ্ঠপোষকতা যোগায় - নৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ, একক ও কিউমিলেটিভ, বিচ্ছিন্ন ও সার্বিক - সর্বতোভাবেই। আমার মনে হয় যেখানে মৌখিক ভায়োলেন্স আছে সেখানে দৈহিক/বাস্তবিক ভায়োলেন্স থাকবে ও আরো জোরদারভাবে বাড়বে। এই চক্রটা ভাঙার একটাই মাত্র উপায় - উভয় ক্ষেত্রেই সমান গুরুত্ব দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। সেক্ষেত্রে মৌখিক ভায়োলেন্সকে হাল্কা করে দেখার কোন অবকাশ নেই। বাস্তবটার হার কমাতে হলে, মৌখিকটাকেও ব্যপকভাবে ধরতে হবে। উভয়ের ইম্পিউনিটিই ধ্বংস করতে হবে।
****************************************
সহমত। Impunity-র সংস্কৃতির দিকটা মাথায় আসেনি লেখার সময়।
কিছু মনে করবেন না ভাই, আপনার লেখাও বৈপরীত্যে ভরপুর। আপনি নিজেই বললেন অন্য কোন রাষ্ট্রপ্রধানকে এ ভাবে হুমকি দিলে শাস্তি অবধারিত, অথচ হাসিনার ক্ষেত্রে উল্টো বিধান। কেন?
আব্দুল্লাহ এ এম
বিধান উলটা না, বলছি প্রয়োজনীয় মার্জনার অভাব। আইনের দৃষ্টিতে অনেক কিছুই অপরাধ, কিন্তু কোন অপরাধ pursue করা হবে সেটা বিবেচনার ভার সরকারের উপর ন্যস্ত। সরকার এক্ষেত্রে বাড়াবাড়ির পথ বেছে নিয়েছে, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এই সরকারই কি রাষ্ট্রপতির ক্ষমার মাধ্যমে সাজেদা চৌধুরীর ছেলের মুক্তির ব্যবস্থা করেনি? তাহলে কেন বুয়েটের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে চড়াও হলে সমালোচনা হবে না?
'হায়েনা' দিয়ে 'হাসিনা'- বুঝানো হয়নি। ঠিকাছে।
'"প্রথমে তোর মাথায় গুলি করবো, পরে পেটে। তারপর মাথা কেটে বুয়েটের সামনে টানিয়ে রাখবো। '- এই কথাটা বুয়েটের শিক্ষক ভদ্রলোক- লিখেছেন তো, নাকি?
মনের ভেতর যাই থাকুক, ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগে কিংবা প্রকাশ্য সভায় অথবা ঘরের নিভৃত কোনে- এইরকম একটা উচ্চারন, কার কার কাছে নৃশংস, ভয়ংকর, আপত্তিকর মনে হয়না- হাত তোলেন।
যারা আপত্তি তুলছেন তাদের আপত্তিটা কীসে? শাস্তির মাত্রায় নাকি এটাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য করায়? শাস্তি'র মাত্রা নিয়ে কথা বললে- ঠিকাছে। ভিন্নমত থাকতেই পারে।
কিন্তু দ্বিতীয়তা হলে কেউ আমাকে দয়া করে বুঝান- এইরকম একটা স্ট্যাটমেন্ট কেনো শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়?
এই ঐ সেই অপরাধের বিচার হয়না ইত্যাদি ত্যানা পেঁচিয়ে লাভ নাই। আইন আদালত বিচার এমনে চলেনা। যে বিচার হয়েছে, সেটি ঠিকাছে কিনা- তা নিয়ে তর্ক করা যেতে পারে।
রাষ্ট্র জিনিসটাই এইরকম। দুনিয়ার সকল রাষ্ট্রেরই নিয়ম কানুন আছে- এইসব নিয়মকানুনের জালে কোন মানুষই এবসুলেট স্বাধীন হতে পারেনা। বাক স্বাধীনতা জিনিসটা ও এমন বিমুর্ত কিছু না।
সেদিন ফেসবুকে দেখলাম একজনের হাসিনার সমালোচনা করে দেয়া স্ট্যাটাস। সেই স্ট্যাটাসে সহমত জানিয়ে এক ইন্টার্নী ডাক্তারের ( ছবি, নামধাম দেয়া) মন্তব্য- আফ্রিকা থেকে 'নিগ্রো' এনে হাসিনাকে রেপ করানো উচিত।
কী মনে হয়- ঠিকাছে, বাকস্বাধীনতা?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সহমত। সমস্যাটা যেমন বললেন সেটাই। অনেকের সমর্থনই খুব গোত্রীভূত... সেটা বোধগম্যও অবশ্যই। তবুও আশা করতে দোষ নাই যে ধীরে ধীরে পুরো ছবিটা সবাই খেয়াল করবেন।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ছাগুদের জন্য মানবতা না। এখানে প্রশ্ন হলো, জনাব প্রফেসর সাব কি ছাগু?
ছাগু হইলে শাস্তি বরং লঘু হয়েছে। ছাগু না হইলে আলোচনা আগানো যায়।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ছাগু না, তার কোন রাজনৈতিক এফিলিয়েশন ছিল না কখনোই শুধুমাত্র শিক্ষক সমিতির আপ্যায়ন সম্পাদক পদ ছাড়া। এই পদটি জুনিয়র শিক্ষকদের অনেকটা ধরে-বেঁধেই দেওয়া হয়।
রাস্তায় মানুষ মানুষকে যতো গালি দেয় সেগুলোও কি এরকম হিসেব করে আইনের আওতায় আনা হবে? আমার মনে হয় তাতে ঢাকা শহরের অর্ধেক লোক নারী নির্যাতনের পরিকল্পনার দায়ে জেল খাটবে! দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। শান্তি শান্তি লাগতেছে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
@আব্দুল্লাহ এ এম, আপনার কথা শুনে অাবক হলাম।
আপনার এই শাস্তি সম্পর্কে কি ধারণা? আপনি যদি ওবামাকে হুমকি দেন, তাহলে এফবিআই এসে আপনাকে জিজ্ঞাসবাদ করবে, আপনাকে ৬ মাসের জন্যও জেলে যেতে হবে না। এটা আপনি যে কাউকে হুমকি দিলেই হতে পারে।
কিছুদিন আগে এক মেয়ে এরকমটা করেছিল, তার জন্য ওবামা তাকে জেলে ঢোকায় নি। তাকে সাবধান করা হয়েছিল মাত্র। ত
সার্চ করলেই নিউজটা পাবেন।
আমার কথাও সেটাই। জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতো, নরম-গরম কথা বলা যেতো, বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে শাস্তির ব্যবস্থা করা যেত, প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে লঘুতর রায় চাওয়া যেতো, ইত্যাদি। ভেজাল হয়ে যায় যখন লোকজন এই ভাবে কথা বলাকে আদৌ আইন পরিপন্থী বলেও মেনে নিতে নারাজ হয়ে যায়।
@মেঘলা মানুষ,
আপনার প্রতিক্রিয়া দেখে আমিও কম অবাক হই নি। বুয়েটের একজন শিক্ষক যখন বলেন-
এবং সে ব্যপারে একটি আইনানুগ বিচার যখন খামাখা প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়, অবাক না হয়ে উপায় কি?
আব্দুল্লাহ এ এম
এই ওবাইদুল্লাহর খবর কী?
বুলস আই!
এদের কিছু বলার মতো হ্যাডম আওয়ামী লীগের কোনো কালে ছিলো? এখন তো প্রশ্নই উঠে না।
প্রয়োজনীয় পোস্ট।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
প্রথমে হল লঘু পাপে গুরু দণ্ড। বুয়েট শিক্ষককে শো-কজ করা দণ্ড হতে পারত, হইলো গিয়া ৭ বছরের কারাদণ্ড! প্যাঁদানি দেয়া উচিৎ ছিল এই ব্যাটা ওবাইদুল্লাহকে। তার বক্তব্য পুরাই অসভ্যতা আর হুমকি মেশানো ছিল - শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি জামায়াত নেতার। বুয়েট শিক্ষক এর বক্তব্য অদ্ভুত হলেও সেটা হুমকি বলা যায় কিনা সন্দেহ আছে।
এখন অনেকের উৎসাহ দেখে মনে হচ্ছে শুরু হবে লঘু ইস্যুতে গুরু আন্দোলন। ঘরেঘরে এই বিচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, সবাইকে রুখে দাড়াতে হবে। শাহাবাগ এর মতো আরেকটা মালিবাগ, সবুজবাগ ইত্যাদি গড়ে তুলতে হবে। ভিসি অপসারন করতে হবে। সরকার অপসারন করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রতিবাদ করেন , আপিল করেন। কিন্তু তাওয়া গরম পেয়ে অন্য কেউ যেন রুটি ভেজে না নিয়ে যায় সেটাও খেয়াল রাইখেন।
এই দেশের সরকারই হোক আর মানুষই হোক কারো কোন ব্রেক নাই , কোথায় থামতে হবে জানেনা
-----------------
সুবোধ অবোধ
-----------------------
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কেন এত বোকা হয়?!!
সহমত
প্রয়োজনীয় পোস্ট।
facebook
একজন শিক্ষক কোন অবস্থাতেই কি এ ধরণের ভাষায় কথা বলতে পারেন ?
একজন শিক্ষক কেন, কোনো ব্যক্তির কাছ থেকেই এই ধরনের মন্তব্য প্রত্যাশিত নয়। আর দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপিঠের একজন শিক্ষক এর কাছ থেকে তো নয়ই। আমি তার স্টেটাস দেখিনি বা পরে তার apology ছিল কি ছিলনা তাও জানিনা। তবে আমি ধারণা করছি যে ঘটনাটা ঘটছে এইরকম: আপনি রেগে আছেন, প্রচন্ড বিরক্ত, পরিস্থিতিতে চরম হতাশ, মনে হচ্ছে কিছু একটা ভেঙ্গে ফেলি: তো কি করলেন একটা ফেসবুক স্টেটাস দিয়ে দিলেন। তাতে আপনার ভেতর এর রাগ কিছু সময় এর জন্যে কমে এলো। পরে বুঝতে পারলেন রাগের মাথায় যেটা বলেছেন তা ঠিক হয় নি। (যদিও ক্ষতি যা হবার তা হয়েছে, এর জন্যে পরে বিপাকে পরেতে হতে পারে) যদি উনি apology করে থাকেন তার মানে উনি পুরো ব্যপার তে অনুতপ্ত এবং ক্ষমা প্রার্থী।
প্রশ্ন (১): উনি কি আসলেই এমন কোনো অপরাধ করেছেন যেটা একদমই ক্ষমার অনুপযুক্ত? প্রশ্ন (২) আচ্ছা বুঝলাম, একে ক্ষমা করার কোনো ইচ্ছা বিচারকের নাই, তো তাকে কি ৭ বছর জেলে পাঠিয়ে সুবিচার করছেন? প্রশ্ন (৩) কাকে খুশি করার জন্যে এত হাঙ্গামা আর তিনি কি আসলেই খুশি হচ্ছেন কি না?
প্রশ্ন (৪) সে যদি হায়েনা না বলে অন্য কোনো প্রাণী, যেমন 'হাতি' বা 'সিংহ ' বলতেন তাহলে কি একই বিপাকে পরতেন? নাকি আমরা ধরেই নিচ্ছি হায়েনা আর হাসিনা নামটা সমার্থক?
একটা বিষয় আগে স্পষ্ট হওয়া দরকার যে তিনি আদৌ কোন অপরাধ করেছেন নাকি করেননি ?
তারপর এটা নিয়ে বরং আলোচনা চলতে পারে যে তিনি কি ক্ষমা পাবার উপযুক্ত নাকি নন ?
আর যেটা সবচেয়ে মারাত্মক তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বিচার চলাকালীন সময়ে আর আদালতে হাজির হননি।কিন্তু কেন ?
আজকের প্রথম আলোর খবরে বলা হয়েছে তিনি বুয়েটের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন । এটা কি যাচাইকৃত ?
হায়েনা থেকে হাসিনা কেমনে হয় এইটাই বুঝলাম না এখনো। হায়েনা আসলে উনার গার্লফ্রেন্ড ময়না ও তো হইতে পারে।
শাহবাগের সময় অনেকেই অনলাইনে রেগুলার এইরকম হুমকি পেয়েছে, এবং তাদের কাউকে কাউকে মেরেও ফেলা হয়েছে বা আক্রমণ করা হয়েছে, আজকেই দেখছিলাম সিলেটের গণজাগরণ মঞ্চের এক কর্মী যে এমন হুমকি পেয়ে আসছিলো তাকে কুপিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে হুমকিদাতারা। এইসব ক্ষেত্রে তো সরকারের বা কারও মাথাব্যাথা নেই। হুমকিদাতার হুমকি কার্যকর করার অভিলাষ বা ক্ষমতা কতখানি বা তার আগের ক্রিমিনাল রেকর্ড ও কি এখানে বিবেচ্য বিষয় হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে না?
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
"হায়েনা" থেকে "হাসিনা" হয়, এইটা আদালত-নিরূপিত হওয়ায় সেখান থেকে কথা শুরু হচ্ছে। এর জন্য দুই পক্ষের উকিলের ভূমিকা দায়ী।
তবে যদি "হাসিনা" না-ও হয়ে থাকে, তবুও কোনো না কোনো মানুষকে তো ইঙ্গিত করা হয়েছে। এটা ভিসি হোক, প্রো-ভিসি হোক, কিংবা চায়ের দোকানের মোতাব্বির হোক, তার উদ্দেশ্যে এই রকম ভাষা/হুমকির ব্যবহার করা অন্যায়। কেউ কেউ দেখলাম "হায়েনা বলতে দুর্নীতি বোঝানো হয়েছে" জাতীয় উদ্ভট যুক্তি দেখাচ্ছেন। এই জায়গাটাতেই লোকে ভুলে যায় যে হুমকি-ধামকির ক্ষেত্রে ব্যাকরণিক সূক্ষতা অচল।
বাকিটা নিয়ে কী আর বলবো? সরকারের মর্জি হয়েছে তাই দুবলা একজনকে ধরে গারদে ভরার ব্যবস্থা করেছে। আসল কাজের বেলায় তো ঠন-ঠন, তাই এরকম কিছু distraction তৈরি করা লাগে কয়দিন পরপর।
@আব্দুল্লাহ এ এম: আপনার ভাষায়
আপনার অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার ধরাণা পাওয়া গেল।
আপনার বক্তব্যে:
১। এটা আইনানুগ
২। এটাকে মানুষজন খামাখা প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
৩। মানুষ এটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, এটা একটা অবাক করার কারণ।
আমি যেটা বুঝেছি:
১। স্ট্যাটাস দেয়াটা অন্যায়, খারাপ, নিচু, জঘন্য কাজ হয়েছে। তার জন্য শাস্তি প্রাপ্য হওয়া উচিত।
(যেমন, তার একমাসের বেতন বাজেয়াপ্ত করা যায়)
২। শাস্তিটা আনুপাতিক হারে অনেক বেশি।
এই পোস্টের লেখকও কাছাকাছি একটা ধারণা নিয়েই সম্ভবত এই পোস্টটা লিখেছেন।
@আব্দুল্লাহ এ এম:
রানার সাজা হয়েছে তো আমার কি সমস্যা?
মনে করুন, ঘটনা চক্রে আমি 'কড়াই' এর সাপোর্টার আর এরা তখন ক্ষমতায়, আর আপনি 'হাঁড়ি' এর সাপোর্টার।
আমি মামলা করলাম, যে আপনি আমার 'কড়াই' এর নেতা মহান 'খুন্তি' কে পিষে মারার হুমকি দিয়েছেন।
আপনার জেল হয়ে গেল ৭ বছরের!
ঘটনাটা রূপক, কিন্তু এর অভিনেতারা তো জায়গা বদলও করতে পারে তাই না? আপনার জায়গায়ও আমি হতে পারি শিকার।
ভালো থাকুন।
আমি সোজা-সরল মানুষ, রূপক বুঝি কম। আমাকে একটা ব্যাপার বলুন সরাসরি। আপনি কি অনলাইনে কারও মাথা কেটে ফেলার হুমকি দেওয়াকে "অপরাধ" বলে বিবেচনা করেন? যদি না করেন, তাহলে সেটা আপনার ব্যাপার। আমি একে অপরাধ মনে করি, এবং সেটার ভিত্তিতেই আমার যাবতীয় মতামত দিয়েছি। যদি এটা অপরাধ বলে আমরা মনে না করি, তাহলে এই ধারাকে আইনের খাতা থেকে সরিয়ে ফেলার প্রক্রিয়ায় নামতে হবে।
আরেকটা ব্যাপার স্মরণে রাখা প্রয়োজন। এখানে কিন্তু 'কড়াই'-এর কোনো সমর্থকের মুখের কথার ভিত্তিতে 'হাঁড়ি'-র কোনো সাপোর্টারকে শাস্তি দেওয়া হয় নাই। আদালতে অভিযোগ এসেছে, অপরাধ প্রমাণ হয়েছে, তারপর রায় এসেছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক হয়রানি সকালে-বিকালে হয়, এবং সেটা নিয়েও অবশ্যই আলোচনা প্রয়োজন। তবে এই প্রসঙ্গে মূল আলোচ্য বিষয়বস্তু কিন্তু আইনবহির্ভূত হয়রানি না, বরং আই্নী প্রক্রিয়ায় শায়েস্তা করা।
আপনার "আপনি কি অনলাইনে কারও মাথা কেটে ফেলার হুমকি দেওয়াকে "অপরাধ" বলে বিবেচনা করেন?"
জবাবে ৩৯ নং কমেন্টে করা কথার আবার পুনরাবৃত্তি করছি :
আর, আমার মনে হয়নি যে আমি আপনার বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু বলেছি। আইন আছে, কিন্তু আইনের কঠোরতার বিষয় নিয়েও নাগরিকের কথা বলার সুযোগ আছে।
আমার বুঝিয়ে লেখার ক্ষমতা খুবই সীমাবদ্ধ, তাই অবান্তর (এবং অপ্রসংঙ্গিক) রূপকের আশ্রয় নিতে হয় অহরহ। আপনার বাসায় আচার চুরি করে খেতে গিয়ে ধরা পরলে যদি আমার জিব কেটে রাখার মত আইন থাকে সেটা ভাল হবে কি? আমাকে হয়ত ৫ বার কান ধরে ওঠবস করিয়ে ছেড়ে দেবার আইন থাকলে সেটাই বরং মানবিক (এবং স্বাভাবিক)।
লক্ষ্য করুন, আমি কিন্তু বলছি না আমি নির্দোষ, বরং অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি নির্ধারিত হওয়া উচিত।
ধন্যবাদ।
@মেঘলা মানুষ,
আমার উপলব্ধি মতে এই ব্লগে এবং এর বাইরেও অনেকেই ভাবছেন হাসিনার ব্যাপারে এ ধরনের একটা মন্তব্য প্রকাশের অপরাধেই শিক্ষক মহাশয়কে এ ধরনের চরম শাস্তি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের আইন এবং আদালতের বিষয়টিকে এ ক্ষেত্রে তেমনভাবে বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না। আমার জানা মতে এ বিষয়ে গত বছরের এপ্রিলে মামলাটি করেছেন জনৈক এ বি সিদ্দিকি, তিনি জননেত্রী পরিষদের সভাপতি। সিএমএম আদালত স্পর্শকাতর ও জনগুরুত্বপূর্ন বিবেচনা করে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়। অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান গ্রেপ্তার হয়ে জানান, তিনি হায়েনা বলতে হাসিনাকে নয়, দুর্নীতি আর অনিয়মকে বুঝিয়েছেন, এবং কোর্ট থেকে জামিন লাভ করেন। সমস্যার শুরু কিন্তু এর পর থেকে, তিনি আর আদলতে যান নি। ফলে তার বিরুদ্ধে একতরফা রায় হয়ে যায়, যথাযথভাবে আদালদে হাজির হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করলে যার পরিমান অনেক কম হতে পারতো।
ধন্যবাদ, এই আদালতে না যাবার খবরটা ভালোমত জানা ছিল না কারো মুখে শুনেছিলাম, এবং এখন বুঝলাম এটাই সত্যি। তারপরেও একটা প্রশ্ন থাকে, একতরফা রায় হতেই পারে এক পক্ষের অনুপস্থিতিতে, কিন্তু সেটার মাত্রার তীব্রতাটা সত্যই অবাক করার মত।
আবার, রূপকের দ্বারস্থ হই। আমি যদি কারো কম্পানির গুদাম থেকে ১ কেজি চাল চুরি করি, আর মামলার সময় আদালতে না যাই, কম্পানি একতরফা রায় পেয়ে যাবে আমার বিরুদ্ধে, কিন্তু সেটা কি ৫ বছরের সশ্রম কারদন্ড হবে? হবার কথা না। আইন খুব একটা জানি না, তবে একতরফা রায় হলেও সেটা যথেচ্ছ রায় না, আইন মেনেই দন্ড হবার কথা। তাহলে, এক্ষেত্রে আইন মেনেই দন্ড দেয়া হয়েছে। আর, আমার ভাষায় আইনটা অনেক বেশি কঠোর।
[যদি আমার অন্য মন্তব্য লক্ষ্য না করে থাকেন: আমি বেকসুর খালাসের পক্ষে নই, বরং আনুপাতিক হারে দন্ড নির্ধারণের কথাই বেলে এসেছি। যেমন, তার এক মাসের বেতন বাজেয়াপ্ত করা যায়]
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য।
@মেঘলা মানুষ,
এক কেজি চাল চুরির অপরাধে মামলা হলে এবং কোর্টে সেই মামলা ফেস না করলে ফৌজদারী বিধি অনুযায়ী চুরির জন্য যে শাস্তি নির্ধারিত, তার সর্বোচ্চ শাস্তিটাই হওয়ার কথা। রানার বিরুদ্ধে দুটি ধারায় মামলা হয়েছিল, এক- তথ্য প্রযুক্তি আইন লঙ্ঘন এবং দুই- হত্যার হুমকি। তথ্য প্রযুক্তি আইন লঙ্ঘনের দায়ে তার পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে, অথচ যথাযথভাবে ফেস করলে এই অভিযোগ থেকেই তার নিস্কৃতি পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল, নিদেনপক্ষে ন্যূনতম শাস্তি হতে পারতো। আর হত্যার হুমকির জন্য ফৌজদারী দন্ডবিধি অনুযায়ী শাস্তি হয়েছে দু বছরের জেল, যেটা পাঁচ বছরের সাজার মধ্যেই যুক্ত বিবেচিত হবে। ঠিকমত ফেস করলে এই মামলা থেকেও অব্যাহতি পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশী ছিল।
আব্দুল্লাহ এ এম
সাত বছর বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে।
তবে এরকম হুমকি দেয়া অপরাধ। অপরাধের শাস্তি প্রয়োজন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আমারও সেটাই কথা। আমি নিজে হুমকি খেয়েছি, হুমকি খেয়েছেন এমন অনেককে ব্যাক্তিগত ভাবে চিনি। এই রকম আইন কেন প্রয়োজন, সেটা বাকি লোকে সহজে বুঝবে না।
আপনি যে হুমকি পেয়েছেন সেটা নিয়ে আদালতে যান না একটু! দেখেন তো একই রায় হয় কি-না আপনার ক্ষেত্রে!
এ ধরণের স্টেটাস দেয়া কোনভাবেই ঠিক না, আইন আনুযায়ী এটা অপরাধও। কিন্তু আপনি যখন রাজনিতিবিদ বা পাবলিক ফিগার তখন এসব হাল্কা বিষয়ে এ ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখানো কতটুকু গ্রহনযোগ্য তা প্রশ্ন থেকে যায়। শুধু স্ট্যাটাস দিলাম আর একজন প্রধামন্ত্রীর জীবন হুমকির মুখে পড়ে গেলো, স্ট্যটাস দাতাকে ধরে এনে শাস্তি দিয়ে জেলে পুরে দিলাম, এটা কেমন কথা!
আমরা আদালতের দ্বারস্থ হলে সেই মামলা দিনের আলো দেখবে না, এত গুরুত্বের সাথে বিবেচনাও হবে না, এমন রায়ও হবে না। অথচ আইন অনুযায়ী এর প্রতিটাই হওয়া উচিত। সেটাই তো পোস্টের মূল কথা। এখানে আইনবহির্ভূত কিছু হচ্ছে না, কিন্তু আইনী হয়রানি হচ্ছে।
শাস্তিটা অতিরিক্ত হয়ে গেছে, কিন্তু তার চেয়েও বড় সমস্যা মনে হয়েছে যে ফেসবুকে অনেকেই দেখলাম অনলাইনে মেরে-কেটে ফেলার হুমকিকে অপরাধ হিসেবে দেখছে না। এদের মধ্যে দুইটা বৈশিষ্ট্য লক্ষ করছি :-
১) তীব্র প্রতিষ্ঠান প্রেম - এই পিরিতি অন্ধত্বের দিক দিয়ে মাঝে মাঝে ধর্মীয় মৌলবাদের সমতুল্য হয়ে যায়
২) "হায়েনা" বলতে কী বোঝানো হয়েছে তা নিয়ে ত্যানা পেচানো। "হায়েনা" বলতে হাসিনাকে না বুঝিয়ে জরিনা-মর্জিনাকে বোঝালেও সেটা অপরাধ হত এবং সেটা উক্ত লোকজন স্বীকারও করে, কিন্তু তারা দাবি করছে "হায়েনা" বলতে "দুর্নীতি" এর মত একটা বিমূর্ত বিষয়কে বোঝানো হয়েছে। ভিসি নিয়ে ক্যাচালের আগেও তো বুয়েটে দুর্নীতি ছিল বলে এলামনাইদের মুখে শোনা যায়, হঠাত করে ভিসি আন্দোলনের সময় দুর্নীতিকে মাথায় ও পেটে গুলি করে মাথা কেটে গেটে ঝুলিয়ে রাখার খায়েশ হল কেন?
হতে পারে ওই শিক্ষকের মত আমি সাহিত্য আর রুপক বুঝি না, কিন্তু হায়েনাকে কচুকাটা করার মধ্যে আমি দুর্নীতির মত বিমূর্ত বিষয়ের বদলে হাসিনা না হোক, অন্তত ভিসি আন্দোলনের সময়কার সরকারপক্ষীয় কোন ব্যক্তির প্রতিচ্ছবিটাই দেখতে পাচ্ছি। মাথায় ও পেটে গুলি করে মাথা গেটে ঝুলিয়ে রাখার হুমকি কুলীন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দিক আর রাস্তা-ঘাটের অচ্ছুৎ লোকজনই দিক, দুইটাই সমানভাবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
শাস্তির মাত্রা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে, কিন্তু শাস্তি প্রদান নিয়ে তর্ক অসম্ভব।
Big Brother is watching you.
Goodreads shelf
সহমত
আদালতে প্রমাণিত হয়েছে তাই সাজা হয়েছে। খুব মজা লাগলো কথাটা শুনে। আরেকটি আদালত এক অভিযুক্ত খুনীকে প্রমানের অভাবে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে পারেনি। ইন্টারেস্টিং।
আচ্ছা, গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে সংসদে বলেছেন তার ছেলেকে দিয়ে নাকি ওনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাহলে আমার প্রশ্ন হলো সেখানে কি প্রমাণের অভাব পড়েছিল? খালেদার ছেলের বিচার হচ্ছে না কেন? কিঁউ?
"ছেলেকে দিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেন: হাসিনা
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে সংসদে একথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।"
সমকালের শিরোনাম। প্রকাশ : ২৯ জুন, ২০১৩ ১৯:৫০:৫২
সেখানেই তো শক্তের ভক্ত।
প্রয়োজনীয় লেখা, একজন মানুষের ভাষা অমার্জিত আপত্তিজনক হলে তাকে সতর্ক করা জেতে পারে কিংবা লঘু শাস্তি দেওয়া যেতে পারে কিন্তু ৭ বছর শাস্তি অত্যন্ত উদ্ভট। লঘু পাপে গুরু দন্ড
ইসরাত
নতুন মন্তব্য করুন