বস্তুত পৃথিবীর সব প্রাচীন শাসকরাই ছিলেন নিষ্টুর, কসাই। অতীতে শাসকদের মধ্যে কে কত ধরনের নিষ্ঠুরতা দেখাতে পারে তার একটা প্রতিযোগীতা চলত। তবে তাদের মধ্যে সবচাইতে নিষ্ঠুর ছিল এই মোঙ্গল শাসক চেঙ্গিজ খান। কোন দেশ দখল করার পর তিনি পরাজিত সম্রাটের কাউকেই বাচিয়ে রাখতেন না। এমনকি শিশুদেরও। জ্যান্ত শিশুদের বুক চেরা দেখতে তিনি খুব ভালবাসতেন। আর ভালবাসতেন শিশুদের টকটকে কলিজা খাওয়াতে তার প্রিয় চিতাদের। তবে উপন্যসটিতে তার বেড়ে উঠার সময়গুলোর ওপর আলোকপাত করা হয়নি। তাহলে হয়ত তার নিষ্টুরতার কারন কিছুটা হলেও জানা যেত। মধ্য এশিয়ার স্তেপ ভুমিকে তিনি বহু জাতির রক্তে উর্বর করেছেন। এটা ভেবে তিনি গর্ব করতেন। তার অজস্র নিষ্টুরতায় রঞ্জিত বইটি। শেষের দিকে তিনি পাগল হয়ে উঠেছিলেন অমরত্ব লাভের আশায়। চিকিৎসকদের তিনি নিদের্শ দিলেন অমরত্বের অষুধ তৈরী করতে। তারা বিভিন্ন ধরনের দাওয়াই এনে দিলেন। তিনি পরীক্ষাসুলভ সেগুলো তাদের খাওয়ালেন আর তরবারি দিয়ে কতল করে দেখলেন তারা অমর কিনা। শেষ পর্যন্ত চান চুন নামের এক বিখ্যাত চৈনিক দার্শনিককে তার কাছে আনা হল তিনি নাকি সবজান্তা। চেঙ্গিজ তাকে সমস্ত সুখের লোভ দেখালেন, জিজ্ঞেস করলেন , কিভাবে সে অমর হবে। উত্তরে তিনি চেঙ্গিজ খানকে চৈনিক স্টাইলে দুহাতের বুড়ো আঙ্গুল দেখালেন আর বললেন অমর হবার একমাত্র উপায় হচ্ছে ভালবাসা রাজ্য জয় কিংবা হত্যা নয়। সর্বোপরি উপন্যাসটা ভাল লাগল। না পড়লে পড়তে পারেন।
মন্তব্য
প্রায় শৈশবে রুশ অনুবাদে বইটা পড়ি; সে সময় অনেক কিছুই বুঝি নি। এখন ওই বইটা আবার পড়তে ইচ্ছে করছে। জানি, এটি হয়তো আর সম্ভব নয়।
হারানো শৈশবকে মনে পড়িয়ে দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
চেঙ্গিস খান সম্পর্কে জানার আগ্রহ আমার অনেক আগে থেকেই। কিন্তু তাকে নিয়ে রচিত বই বাজারে নেই বললেই চলে। তাই জানার আগ্রহটা বাস্তবায়ন হয় নি।
উপন্যাসটি পড়ে যদি তার সম্পর্কে জানা যায় তবে তা অবশ্যই আমার জন্য সুখবর। শীঘ্রই খোজ নিচ্ছি ..............
ধন্যবাদ আপনার পোস্টের জন্য।
আমার নানী তাঁর সব নাতি নাতকরদের একটা করে নিক দিতেন, সেই নামেই ডাকতেন। কোনো এক অদ্ভুত কারনে আমার কপালে জুটেছিলো চেঙ্গিস খান নিকটা।
আমার মতো একটা চিকা পটকা স্লিম ছেলের এই নিক জোটার কারন আমি জানি না। কিন্তু নানী আমাকে এই নামেই ডাকতেন। তাই একেবারে ছোটবেলা থেকেই এই নামটা আমার মজ্জাগত...
অনেক কৌতুহল ছিলো এবং আছে এই নামটার প্রতি। প্রচুর পড়েছিও তাকেঁ নিয়ে।
কিন্তু এখানে বিষদ লিখে লাভ নাই। কারন আপনি কোনো মন্তব্যের জবাব দেন না। তাই আপনার পোস্টে মন্তব্য করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি।
ব্লগে আদান প্রদানটাই জরুরী... নইলে বৃথা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পশ্চিমী সংস্কৃতির উপরে চেঙ্গিজ খাঁ এক মারাত্মক শক মারা চরিত্র, হূন অ্যাটিলার মতন। এদের থ্রেট থেকে পশ্চিম কখনো মুক্ত হতে পারে নি। তাই বারে বারে নানা অতিরঞ্জন করে করে এদের দেখিয়েছে রাক্ষস দৈত্য দানব টাইপ কিছু। নইলে নিষ্ঠুরতায় "আলেজান্ডার দ্য গ্রেট" ও কিছু কম না, কিন্তু তিনি তো "গ্রেট" !
আসলে তেমুচিন কেমন ছিলো তা হয়তো জানা যাবে অনেক পরে, পৃথিবীর সংস্কৃতি যখন সত্যি সত্যি গণতান্ত্রিক হবে।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এই লিখাটি পড়ার আধ পর্যন্ত আমি চেঙ্গিস খান সম্পর্কে ভালো ধারণা পোষণ করতাম, (এখনও মোঙ্গোলিয়ানদের কাছে চেঙ্গিস নায়কতুল্য...!) কিন্তু...,... ভাই, প্লিজ উপন্যাসটার নাম, কার লিখা, কার অনুবাদ, কোথায় পাওয়া যাবে ইত্যাদি জানান, আপনার ব্লগটি পড়ে আমার এখনি পড়তে ইচ্ছা করছে।
নতুন মন্তব্য করুন