ইহলোকে লেখা সব বহি চিন্তার, এ কথা বিশ্বাস্য নহে। কিছু বহি লেখা হয় মধ্যরাতে বদ হজমের কারণে ঘুম না এলে। কিছু বহি লেখা হয় নিয়ম করে খাওয়ার আগে ও পরে। এসব বহিগুলো যথাযত সময়ে পড়লেই কম্ম শেষ। ধরা দেয়া নাই ধরা খাওয়া নাই। সত্য, সাদ্দাম হোসেন ও স্রাজেরদৌলা, বহি খানি চিন্তার। ইহা পাঠ করলে ধরা খাওয়ার ভয় আছে। কারণ প্রত্যেক প্রবন্ধে সত্যের উচ্চারণ আছে। হাসির আড়ালে রক্তাক্ত হৃদয়ের গান আছে। বিচ্ছিন্নভাবে প্রত্যেকটা প্রবন্ধ পূর্বে বিভিন্ন কাগজে ছাপা হয়েছিল। সব যে বুঝে পড়েছিলাম তাও নয়। কিন্তু আচার্য্য সলিমুল্লাহ খানের গদ্যে কিছু একটা আছে। যা চুম্বকের মত আকর্ষন করে। পড়তে গেলে দেখা যায় কবে যে অসুখে মরছি, নিজের অজান্তে। নিজদেহে বয়ে বেড়াচ্ছি সাম্রাজ্যবাদের জীবাণু। পশ্চিম নিয়ন্ত্রিত যাবতীয় প্রচার যন্ত্র আমাদের যা শোনায় সব ঝুট। বাঘা বাঘা ইতিহাসবেত্তারা দিস্তা দিস্তা কাগজে যে ইতিহাস লিখে গেছে। মার্কামারা প্রখ্যাত উপন্যাসিকরা ঢাউস ঢাউস উপন্যাসে যে বস্তু লিখে গেছে প্রায় সবই বাণিজ্যনীতিতে ভরা। আদ্যিকাল থেকে পশ্চিমের সাম্রাজ্যবাদচক্রের কোনো শেষ নাই আজতক। ‘নেপোলিয় থেকে বুশ তক, সেই একই কাহিনী। কিংবা তারও আগে কিংবা তারও পরে। শুধু জামা বদলাচ্ছিল সাম্রাজ্যবাদ। উদ্ধারের নামে গিলে চলেছে তামাম দুনিয়া। সেই সূত্রে নবাব সিরাজদৌলার পুরানো ইতিহাসও পুণনির্মাণের প্রয়োজন আজ। আর তাই করতে চলেছেন সলিমুল্লাহ খান। অন্তত এই বইয়ে সেই রাস্তার দেখা মেলে। ভাষা ও চিন্তা যে আবহাওয়া ও তার বিপদ সংকেত তারও প্রমাণ মেলে খানের গদ্যে। ৭টি নিবন্ধের সাথে উপরি পাওনা হিসাবে যুক্ত আছে হ্যরল্ড পিন্টারের একগুচ্ছ কবিতার ও জন নিউসিঙ্গারের প্রবন্ধ,টার্জানকেচ্চার রাজনীতি,র সলিমীয় তরজমা । বুঝতে পারি পশ্চিমের ‘রিকনষ্ট্রাকশন’ শব্দটার মানে কি? বইটি শেষ করার পর বুঝতে পারি চুরান্নব্বই পৃষ্টার বইটির দাম কেন দুইশ টাকা।
মন্তব্য
পড়তে হবে মনে হচ্ছে।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
স্লেমুল্লাহ খানের বহির দাম শুনে গরীব মনটা কেঁদে ফেললো। কবে যে এমন একখানা বহি রচতে পারবো।
এডি নেটে ফিরি পাওন যায় না?
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
এই বইটা পড়ার আগ্রহ আছে আমার আগে থেকেই। কিন্তু কেন যেন কেনা হলোনা এখনো। ভালো কথা মনে করাইছেন। অনেক ধন্যবাদ
বইটার প্রতি উৎসাহটা অন্য কারনে। নব্বইয়ের পর পর আব্দুল হাই শিকদারসহ বিএনপির ঘরানার বুদ্ধিবাজরা হঠাৎ করে সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে মাতেন। এর পেছনে একটা সুক্ষ্ম চাল ছিলো।
একই এলাকার ছিলো, তাই কিশোর আমাকে একদিন আব্দুল হাই শিকদার অনেক জ্ঞান দিতে চেষ্টা করছিলেন যে বাংলাদেশ তো মুক্তিযুদ্ধের ফসল না... ইতিহাস অনেক পুরান... আমাদের হিসাব করতে হবে পলাশী থেকে... শেখ মুজিব না... সেরাজউদ্দৌলা থেকে। (হুবহু তো অবশ্যই মনে নাই, ভাবটা বল্লাম আর কি)
তো সেসব কারণে বিষয়টা নিয়ে আগ্রহ ছিলো। সলিমুল্লা খান বইটা লেখার পর থেকে তাই তার ভাষ্যটা জানার আগ্রহ ছিলো...
বইটা অচিরেই পড়বো...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নতুন মন্তব্য করুন