[একটা প্রায় গুবলেট প্ল্যান: সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে কোন একদিন কাজের মাঝে হাবুডুবু খেতে খেতে ফেসবুকে একটু ঢুঁ মারতেই ইনবক্সে নূপুরাপুর মেসেজটা চোখে পড়ল পূজোর ছুটির সাথে রেশমি হাওয়ার খোঁজ নিয়ে। আরেকবার সিলেট যাবার জন্যে যখন মনটা আঁকুপাঁকু করতে শুরু করেছে ঠিক এমন সময়ে সিলেট যেতে চাই কিনা জানতে চায়। ঠিক পূজোর ছুটিতে না পারলেও তারপরে ২/৩দিনের ছুটি ম্যানেজ করে নেয়া যায় এটুকু ভেবেই হ্যাঁ বলে দিলাম। দম ফেলবার ফুরসত নেই মধ্য অক্টোবার পর্যন্ত, সবকিছুর দায়িত্ব নূপুরাপুর হাতে ছেড়ে দিয়ে আমি ব্যস্ত হয়ে পড়লাম যে কোন মূল্যে কাজ শেষ করতে, সিলেট বেড়াতে যাবার সুযোগ হারালে চলবে না!
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই প্রথম ক্যান্সেলেশন এল বুনোহাঁসের কাছ থেকে, চাকরি না ছাড়লে নাকি যাবার প্রশ্নই ওঠে না তার। আর ঠিক যখন সব আয়োজন সম্পন্ন করে আনা হয়েছে, লাউয়াছড়ায় ট্রেকিং প্ল্যানটা একদম ফাইনাল, সিলেটে আলবাব ভাইয়ের সাথে কয়েক দফা আলোচনাও শেষ, সুপাশিপুর মেইল এল - ছুটি বাতিল, এবার হচ্ছে না তাঁর যাওয়া! পরেরদিনই রাতে নূপুরাপুর ফেসবুক স্ট্যাটাস আপডেটে জানলাম যে হঠাৎ পা-য়ে চরম ব্যাথা পেয়ে আহত হয়ে পড়েছে!
এতসব হতাশাজনক ঘটনার পরেও যাত্রা ক্যান্সেল করা হলো না। বরং রওনা দেবার আগেরদিন সকালে ফোনালাপে নূপুরাপু জানালো নজরুল ভাইও যাচ্ছেন আমাদের সাথে। সচল অনিন্দ্য আর মনামীও যোগ দেবে, সাথে চতুর্থ আরো কেউ হতে পারে। কিন্তু মুশকিল হলো বাকিদের টিকেট করতে যাবার কেউ নেই!
অবশ্য শেষ পর্যন্ত আরো ৪টা টিকেট মিলেছিল। ১৬ তারিখ রাত ৯:৫০ ‘উপবন এক্সপ্রেস ' ছেড়ে যাবে কমলাপুর থেকে।
মনে মনে বললাম - সিলেট! হেয়ার উই কাম।]
যাত্রা হল শুরু:
১৬ তারিখ সন্ধেয় ঢাকা পৌঁছেছি জানাতে ফোন দিতেই নূপুরাপু জানায় শিমুলাপু নাকি ঢাকায় ঝটিকা সফর করে গেছেন! ক্যাম্নে কী?! মিস হলো তো! নূপুরাপু আর নজরুল ভাইয়ের বিবাহক্ষণ সেদিন ঠিক রাত ১০টায়। এদিকে বাজে সাড়ে ৭টা, ৮টায় দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাবে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে মগবাজার, বেইলি রোড হয়ে কমলাপুরের পথে যখন, দেখি
সুইস, সুমি’স সবই খোলা। পুরাই দৌড়ের উপর সামনে পাওয়া ৩টা কেকের একটা পছন্দ করে কিনে ফেলি। (সত্যি বলতে কী, কেকের উপর লেখাটা ভালো হয়েছিল কেকের থেকেও! ইন্সক্রাইবার ছেলেটারো একটা ছবি তুলে রাখতে হত, তাড়াহুড়ায় মিস গেছে, বানান-টানান সব ঠিকঠিক লিখেছে, বুনোহাঁসের অন্তত পছন্দ হলেও হতে পারত, কে জানে? )
রাত সাড়ে ন’টায় কমলাপুর স্টেশনে উপবনের পাশে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আমি ভাবছি, হায়রে! কই এরা? এখনো এসে পৌঁছয় না কেন? ওদিকে প্ল্যাটফর্মের অন্য মাথায় দাঁড়িয়ে অনিন্দ্য আর মনামীও নাকি প্রায় একই কথাই ভাবছিল! তখনো আলাপ হয় নাই আমাদের। ৯:৪৫ এ ট্রেন ছেড়ে দেবার নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট আগে এসে দলের অন্যেরা হাজির হলে সবার মাঝে ঝটিকা সম্ভাষণ ও পরিচয়পর্ব শেষ হলে ঝটপট কামরায় উঠে পড়ি আমরা, দলের সর্বশেষ ব্যক্তি হিসেবে শেষমুহূর্তে যোগ দিয়েছে পলাশ। শুরু করতে হয় নতুন করে অপেক্ষার পালা, ট্রেনের জেনেরেটর কারে নাকি সমস্যা, মেরামত চলছে! এদিকে ট্রেন না ছাড়লে কেক্কুক পর্ব করতে নারাজ নজরুল ভাই। নিধির কিন্তু সমূহ সন্দেহ কেক না খেতে দেবার পেছনে আমিই দায়ী। পুরো সিলেট সফর তার এই সন্দেহ বহাল ছিলো।
১০:২০ তে ট্রেন ছাড়ার পরেও বেশ খানিক্ষণ গাঁইগুঁই করে নজরুল ভাই রাজি হয় কেক্কুক বিলোতে। (উনি না কাটলে কিনা আমরা খেতে পাই না, এই সহজ ব্যপারটা বুঝতে ক্যান যে নারাজ! নাকি আসলে পুরোটাই নিজের ভাগে জমিয়ে রাখতে চাইছিলেন তাই নিয়ে একটু সন্দেহ আছে)।
ট্রেন পুরোদমে ঢাকা ছাড়তেই আমরা শুরু করি চা পর্ব, গপ্প-শপ্প আর বাদাম ভাজা, চিপসের সাথে মাড়ির এক্সারসাইজ। মানে খালি মুখে গল্প ঠিক জমে না কিনা, আফটারঅল কেকতো হজম হয়ে গেছে তখনই!
মনামী, অনিন্দ্য, আর দলের সর্ব-কনিষ্ঠ (মানে নিধি আর যাকে আমরা একই এজ-গ্রুপে ফেলে দিয়েছি আরকি!) কিন্তু সাইজে সবচেয়ে বড়সর ঝিম পলাশের সাথে আলাপ হয়ে ভালো লাগে। একেক জন একেক রকম জায়গা থেকে এসেছি আমরা। দুষ্ট বালিকার সাথে তাও মাসখানেক পরে সম্মুখ আলাপ। আবিষ্কার হয় আমাদের কামরার ফ্যানগুলোর সুইচে সমস্যা, তারা মাঝে মাঝে চলতেও নারাজ। টিটি আর গার্ড জানিয়ে দেন জানালার নাকি শাটার নামিয়ে রাখাই নিয়ম কারণ স্টেশনগুলোতে ঘুমন্ত যাত্রীদের জিনিস চুরি হবার নজির মেলা। মুশকিল! এত গরমে ফ্যান না চললে জানালা বন্ধ রাখি কী করে? রেলের লোক চোখের আড়াল হতেই খুলে যায় জানালা। শক্ত শাটার ওঠাতে-নামাতে হাঁকাহাঁকি চলে ঝিম পলাশকে! ঘুমোবার আয়োজন করতে করতে বাজে রাত দুটো প্রায়।
রাত পৌনে চারটার দিকে নিধি বেচারা ঘুমের মাঝেই কান্নাকাটি শুরু করে, গরমে কষ্ট পেয়ে। হাত পাখা বের করে ফ্যানের সুইচ গুঁতোই খানিক আবার। নিধি শান্ত হলে নূপুরাপু ঘুমিয়ে পড়ে, আমি জানালা দিয়ে অন্ধকারে চোখ মেলে দেখি মেঘহীন আকাশে তারার হাট বসেছে। আরেকবার আফসোস হয় কন্সটালেশনগুলো না চেনায়। আমার দৃষ্টিপথে যা মেলে তা হল নক্ষত্রদের তৈরি একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ণ। এটা কি আদৌ কোনো কন্সটালেশন? মাথা হাতড়ে ফেইল মারি, কী জানি! চিনি না কিছুই। কিন্তু… ঐতো, উপরে দুটো, কাঁধের কাছে আরো ৩টা, আর নিচে দুটো, ঠিক একটা বিশাল জ্বলজ্বলে কোয়েশ্চন মার্ক। কী যে জানতে চায় বুঝিনা। খুব জরুরি কাজগুলো ফেলে রেখেছি কেন আহাম্মকের মতো তাই জিজ্ঞেস করে হয়ত! কিন্তু দমবন্ধ করে কাজ গুছিয়ে রেখেই না আমি ছুটি নিয়ে পালিয়ে এলাম? অ, এগুলো চাকরি-বাকরির কথা হচ্ছে না বুঝি? একা একা ক্লান্ত লাগে অনেক, মনে হয় বিশাল প্রান্তরের মাঝে আমি নিঃস্ব এক ক্ষুদ্রতা, খুব জোরে ছুটেই চলেছি শুধু… কিন্তু দেখ তারাগুলো ভেংচি কেটেই যাচ্ছে, পিছু ফেলতে পারছি না ওদেরকে কিছুতেই!
পৌনে পাঁচটার দিকে নিধি ফের কান্নাকাটি আরম্ভ করলে আবিষ্কার হয় সবগুলো ফ্যান বন্ধ হয়ে গেছে আবার! আজব ব্যাপার দেখি।
জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখি - কুলাউড়া স্টেশন। আর ঘুম হবে না জেনেই জানালার পাশে বসি কানে গান গুঁজে দিয়ে। আখাউড়া জাংশনে আর ছেলেবেলার মতো সময় কাটায় না ট্রেন এখন। কুলাউড়া পার হবার পরে রেললাইনের দু’পাশে পাহাড় আর টিলা পড়ে। যাক! ঘুমালে তো ট্রেন থেকে পাহাড় দেখা হতো না। মনে পড়ে যায় জীবনের প্রথম পাহাড় দেখার স্মৃতি, সেটা যদিও ছিল দিনের বেলা, কিন্তু তা এই ঢাকা-সিলেট রেলপথেই। ক্লাস ফোরে পড়া আমাকে ডেকে এনে বাবা জানালা দিয়ে দেখিয়েছিলেন তাঁর ছেলেবেলার স্মৃতি বিজড়িত রেলপথ। আমি অবাক বিস্ময়ে দেখছিলাম আমাদের ট্রেন কেমন এঁকে বেঁকে দুপাশের পাহাড়ের মাঝ দিয়ে ছুটে যাচ্ছে, আর পাহাড়্গুলো যেন টানেলের মতো করে ঢেকে রেখেছে সূর্যালোক, ট্রেনের কামরার মাঝে তখন আলো-ছায়া-আলোর সিকোয়েন্স। পাহাড় কি এই কারণেই আমার এত প্রিয়? পাহাড় ভাবলেই যে কু-উ-উ-ঝিক-ঝিক ট্রেনের সাথে কামরার দুলুনিতে বাবার পাশে দাঁড়ানো আমি, জানালা দিয়ে গলা বের করে অবাক দেখি আধো-অন্ধকার দেয়ালের মতো দু’পাশে ঘিরে থাকা জঙ্গুলে পাহাড়ি পথ! মাঝে মাঝে ভবিষ্যতের কোন এক ক্ষণে ছোট এক ব্যাকপ্যাকার থাকে আমার পাশে, ছোটবেলার আমার মতো করেই তার বিস্মিত চোখ দিয়ে দেখে জীবনের প্রথম পাহাড়, আর কচি মনে এঁকে নেয় সেই স্মৃতি, ট্রেনের কামরায় চলে আলো-ছায়া-আলোর নকশি খেলা ...
পূবাকাশে ভোরের রেখা ফুটে ওঠে, ক্যামেরাটা বের হয়ে আসে হাতে, এত দুলুনিতে ম্যানুয়াল মোডে আমার সুপার আনস্টেডি হাতে কচু ছবি উঠবে জেনেও ঘ্যাচাঘ্যাচ তুলে ফেলি কিছু। আমি যদি তৈলরং জানতাম, কিছু এঁকে ফেলতাম নির্ঘাত! যাক! আপাতত আমার পয়েন্ট এন্ড শুটেই ভরসা।
একটা পোড়ো চা-বাগান, লালাখাল আর সিলেট:
তাড়া দিয়ে ঘুমন্তদের আরামের ঘুমে বাগড়া বসিয়ে ঝটপট নেমে পড়া হয় ট্রেন থেকে। সোয়া ৬টাতেই সিলেট পৌঁছে গেছে ট্রেন। সিলেট স্টেশনটা বেশ। প্ল্যাটফর্ম থেকে মূল গেটের কাছে যেতেই মাথার উপর পাখির কলতানে উপরে তাকলে চোখে পড়ে লোহার ফ্রেম স্ট্রাকচার আর নেটের জালির মাঝে বাসা বানিয়েছে হাজারখানেক চড়ুই আর আরো সব পাখি! Aviary!! এটা মনে হয় ন্যাচারালি তৈরি হয়েছে, স্টেশন ডিজাইনের সময় এভিয়ারির কথা মাথায় রেখে আর্কিটেকচারালি ডিজাইনড মনে হলো না। ক্যামেরাটা হাতে বের করে না রাখায় সামান্য আফসোস হয়। ব্যাগ নামিয়ে বের করতে ইচ্ছা হয় না। মনে মনে নোট রাখি, এর পরেরবার এটার একটা ছবি নিয়ে রাখতে হবে।
স্টেশনে বেরিয়ে দলের যারা ঘুমিয়ে ছিল তারা অবাক হয় আকাশটা দেখে। কী চমৎকার নীলের মাঝে রুপা মেঘ আর সোনা সূর্যের কারুকাজ!
এবার আসে দলনেতা হিসেবে নূপুরাপুর প্রথম চ্যালেঞ্জ, সমন্বয় সাধন ৭ জনের টিমের। নজরুল ভাই ভাবছেন এই সাত সকালে আলবাব ভাইকে ঘুম থেকে তুলে দিলে কেমন হবে ব্যাপারটা, তার চেয়ে চল চা-খাই কোথাও। চায়ের নামেই রাজি আমরা জনাকয়েক। একদল আবার সিএনজি আর রিকশাকে জিজ্ঞেস করি শাবি যেতে কতক্ষণ লাগতে পারে আর কত ভাড়া নেবে। দূরত্বটা বেশ। রিকশা, সিএনজি, নাকি চা? এই চিন্তায় ১৫ মিনিট অতিবাহিত করে চা ফাইনালাইজ করতেই আলবাব (অপু) ভাই কলব্যাক করেন, “সেকি! ট্রেন লেট হয়েও এত সকালে পৌঁছে গেছে?” আমাদের আপত্তি না শুনে টিপু ভাইকেও ঘুম থেকে তুলে দু’ভাই রওনা হয়ে পড়েন গাড়ি নিয়ে স্টেশনের পথে। আমরা ওদিকে স্টেশনের উল্টোদিকেই মদীনায় চা খেতে ঢুকি। অবশ্য চা-এর সাথে টাও হয় খানিক, মানে কয়েকটা পরোটা অর্ডার দেয়া হয় সবাই ভাগাভাগি করি ক্ষীরের মতো মিষ্টি দুধ-চা্যের স্বাদ খানিকটা হলেও সাধারণ বানানোর অপপ্রচেষ্টায়।
চা শেষ করতে না করতেই হাজির অপু-টিপু ভাই যার যার গাড়ি নিয়ে। ব্যাগপত্র তুলে নিয়ে সাথের ব্ল্যাক-ফরেস্ট কেকটা (এটা পলাশ কিনে এনেছিল সুমি’স থেকে, নূপুরাপুর ফরমায়েশে), সাবধানে বাঁচিয়ে দু’দলে ভাগ হয়ে আমরা উঠে পড়ি। আর আমি টের পাই, কেন শাবি দূরে হয়েও অপু আর টিপু ভাই এমন দ্রুত পৌঁছুলেন স্টেশনে!
মিনিট পঁচিশের মাঝেই কীন ব্রিজের উপর দিয়ে, আর মহিলা কলেজের সামনে বয়-স্কাউট টিপু ভাইয়ের কাহিনি শুনতে শুনতে () আমরা শাবির ভেতর দিয়ে শর্টকাটে চলে আসি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে বিশাল এলাকা নিয়ে টিলার উপরে অপু ভাইদের বাসায়। সাদর সম্ভাষণ, আন্তরিকতায় সিক্ত হই আমরা। আমাদের যত্নে চাচি নিজে আর ভাবিরাও ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। বাবাই-কাশিফ-নিধি খেলনার হাট বসিয়ে দেয় মেঝেতে চটজলদি। ফ্রেশ হলে নাশতার টেবিলে গিয়ে দেখি সে এক কাণ্ড!! পরোটা-মুরগি কষানো থেকে শুরু করে পোলাও-ইলিশ কী নেই?! হাত গুঁটিয়ে বিনা বাক্যব্যয়ে বুভুক্ষু আমরা ব্রাঞ্চ খেতে বসে পড়ি যে যার চেয়ার টেনে নিয়ে। ব্রাঞ্চ-এ ঠিক কে কতটা খেয়েছিল, সেই হিসেবটা দিতে না পারলেও এখানে বলা মনে হয় নিষ্প্রয়োজন যে আমাদের ঝিম্বুয়েট পলাশ একাই ৬-পিস পুডিং সাবড়ে দিয়েছিল চোখের নিমিষেই!
অপু-টিপু ভাই অনেক আগে থেকেই লালাখাল যাবার প্ল্যান করে রেখেছিলেন। তৈরি হয়ে জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে বেরুবার জন্যে মাইক্রোতে উঠে বসেছি অনিন্দ্য-মনামী, পলাশ, বালিকা, বাবাই, তুলি আপু-অপু ভাই, গরমে অবস্থা কেরাসিন। টিপু ভাইয়ের গাড়ির যাত্রীরা তখনো নামেনি নিচে। অপু ভাইকে আমি অভিযোগ জানাই, গঠনা কী? আমরা এলাম, সিলেট থেকে বৃষ্টি পালালো?
অপু ভাই আমাকে এক নজর দেখে নিয়ে থিওরি দেন, অন্য অঞ্চলের মানুষেরা সাথে করে তাদের আবহাওয়া নিয়ে আসেন বলেই এমন হ্য়! আমি হাসি, বেশ তাহলে আপনাদেরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছি এবার বাড়ি। আমাদের শহরে বৃষ্টি হয় নাই এই বর্ষায় মোটেই।
চরম গরমে আর এক দফা সিএনজি স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকি আমরা, ড্রাইভার আগেই গ্যাস নিয়ে রাখেন নাই। এই ফাঁকে অবশ্য পলাশ ঠিকই খুঁজে বের করে ব্ল্যাকফরেস্ট কেকের বাক্সটা, আর কোত্থেকে একটা কাঁটা চামচ আর কিচেন ন্যাপকিনও যোগাড় হয়ে যায়। (এই ছেলেটা সাথে থাকলে আসলে দেখি সুবিধাই আছে!)
আমরা সাবড়ে দেই সাথের সেভেন-আপের দুই লিটারের বোতলটাও। এম.সি. কলেজের পাশ দিয়ে যাবার সময় অপুভাই-তুলিআপু তাঁদের কলেজ জীবনের গল্প বলেন, দূরে টিলার ওপরে অনিকেতদাদের সেই বাড়িটা দেখি, এম.সি. কলেজের নামকরণ প্রসঙ্গ ওঠে, আমার মনে পড়ে ছোটবেলায় বাবার সাথে তাঁর প্রিয় কলেজ দেখার স্মৃতি।
জাফলং-এর রাস্তা বরাবরই মনোরম তা যে ঋতুতেই হোক না কেন। বর্ষায় বাড়তি মজা হলো দূরের পাহাড়ে জলপ্রপাত দেখা যায়! শেষবার জাফলং গিয়েছিলাম ২০০৬-এর বর্ষায়, তখন পাহাড়ি ‘ঝরা’য় পাথর দেখা যাচ্ছিল না ঠিকই, কিন্তু দূর পাহাড়ের প্রপাতগুলো খুব স্পষ্ট ছিল। এটা বাংলাদেশে আমার খুব পছন্দের একটা হাইওয়ে। অনেকটা এই রাস্তার লোভেই সিলেট আসার একটা সার্বক্ষণিক আকাঙ্ক্ষা থাকে আমার।
এবারে ঝরণা দৃশ্য না থাকলেও পাহাড়ি নদীগুলোতে পানি কমে গেছে ইতিমধ্যেই, সারি নদী ভ্রমণ আনন্দের হবে তা বোঝাই যাচ্ছে। আর পাহাড়! সেতো আছেই, দেখে মনে হয়ে এইতো পাশেই, মাইল খানেক মাঠের মাঝ দিয়ে দৌড়ুলেই আমি পৌঁছে যাব ঐ বন-পাহাড়ের নিচে। আসলে কিন্তু তেমন মোটেও নয়! আফসোস, এগুলো প্রায় সবই পড়েছে ভারতের ভাণ্ডারে, আর আমাদের যাও বা ছিল, আমাদের বিশাল জনসংখ্যা, চাপ মেটাতে কেটেকুটে সাফ করে ফেলছে। তবুও ঐ মেঘগুলো এখনো কারো নয়, ওর দাবিদার সবাই, আর ঐ বিস্তীর্ণ সবুজ ধানক্ষেত, সুবিশাল নীলাকাশ ...
সারি ঘাট পার হয়ে আমদের গাড়ি এগিয়ে যেতে নির্দেশ দেন অপু ভাই, চট করে শ্রীপুরের পাহাড়ে ঘুরিয়ে আনবেন আমাদেরকে। মনামী, অনিন্দ্য, পলাশ আর বালিকার এটাই প্রথম সিলেট সফর। আর আমি তো হামেশাই রাজি ঐ পথ ধরে আরো দূরে চলে যেতে। পলাশের কাছে নজরুল ভাইয়ের ক্যামেরা, সে সামনের সিট থেকে ছবি তোলে আরাম করে, খিচিৎ। টিপু ভাইদের গাড়িতে বাকিরা সারি-ঘাটে পৌঁছুতে পৌঁছুতেই আমরা শ্রীপুরের পাহাড় ঘুরে এসে পড়ব এই আশা।
শ্রীপুরের যে জায়গাটা আমাদের গন্তব্য, সেটা আসলে একটা পুরোনো চা-বাগানের অংশ। দূরে যে মেঘালয়ের পাহাড়, তার গোড়ায়, আমাদের পাহাড়ের নিচে একটা পাহাড়ি ঝরা বয়ে চলেছে, এটাই বাংলাদেশের বর্ডার। নিচে ঝরায় না নেমে, আমরা বরং ঢালে একাকী রয়ে যাওয়া অবহেলিত চা-বাগানে নেমে যাই প্রখর রৌদ্র উপেক্ষা করে। আহা! পাহাড়ের বনে দেখ ঐ সোনা রঙ মেঘের ছায়া, দূরে বহুদূরে মনে হয় বৃষ্টি হচ্ছে! দেখে দেখে আশ মেটেনা।
অনিন্দ্য ক্যামেরা চালায় আপন মনে। আমি ছবি তুলি অপু ভাইয়ের সাথে মনামী, দিশা, বাবাই, আর ঐ দূর পাহাড়ের। জুন মাসে অপু ভাই এখানেই নিয়ে এসেছিলেন মুস্তাফিজ ভাইকে। টিম ম্যানেজার নূপুরাপুর ফোন আসে অপু ভাইয়ের কাছে, তাড়া দেয়, জোর করে পা ফিরাই আমরা, ফিরতি পথে ঢাল বেয়ে উঠতে শুরু করি পুরনো চা-বাগান ছেড়ে। প্রথমে ভেবেছিলাম এটা নতুন দেখা জায়গা ছিল আমার জন্যে। পরে বাবার সাথে আলাপ করে জানলাম, প্রথম যেবার সিলেট যাই ঐবার এখানেই ওই ঝরায় নেমে ভেজা পাথরে পা রেখেছিলাম। এটাই সেই স্মৃতি বিজড়িত প্রথম পাহাড়ি নদী। (ছেলেবেলার ছবিগুলো কেন জানি খুঁজে পাচ্ছিনা! দেখি আবার সময় নিয়ে খুঁজতে হবে)। অপু ভাইকে অনেক ধন্যবাদ এই বন-পাহাড়ের ঢালে নিয়ে যাবায়।
বেলা ১:৩০টার দিকে যখন আমরা নৌকায় উঠেছি ফাইনালি, টিম ম্যানেজারের বকাঝকা খেয়েও আমাদের দিকে চেয়ে চোখ টিপেন অপু ভাই, আমরাও দাঁত বের করে হাসি, বেশ করেছি শ্রীপুর গিয়ে! তোমরা মিস করেছ হে! কিন্তু আরে বাহ্! এই সারি নদীও দেখি অসাধারণ! পাথুরে নয়, পাথর তুলে তুলে সব নদীগুলোকে হৃতযৌবনা করে দিয়েছি আমরা। কিন্তু বর্ষার খরস্রোতা তেজস্বীনি রূপ না হলে কী হয়, সারি এখন স্মিত, স্নিগ্ধ হাসি দিয়ে ঝলমলে ঝকঝকে পানি নিয়ে মনোহারিণী রূপের ঝাঁপি খুলেছে।
ইঞ্জিন নৌকোয় সামনের দিকে আছেন নূপুরাপু-নিধি-নজরুল ভাই, মাঝে টিপুভাই-কাশিফ-বাবাই-ভাবি-অপুভাই-তুলিআপু, পেছনে আমরা বাকিরা ক’জন। ইঞ্জিনের শব্দ ছাপিয়ে চলছে গল্প। প্রায় দেড় ঘন্টার নৌকাবিহার শেষে আমরা পৌঁছুলাম লালাখাল টি-এস্টেটে। সে গল্প বরং আরেকদিন করবো।
বেড়িয়ে কুড়িয়ে ফিরতি পথ ধরেছিলাম আমরা বিকেল পাঁচটার দিকে। বাবাই-কাশিফ মানিকজোড়, দু’ভাইকে আলাদা রাখাই মুশকিল। সারাটা সময় মায়েরা তাদেরকে গেঞ্জি ধরে টেনে রাখলেন যাতে ঝপাং না হয়, আর তারা দু’ভাই উপুড় হয়ে নৌকা থেকে প্রায় অর্ধেক বেরিয়ে হাত দিয়ে পানি থাবিয়ে পুরোই গোসল হয়ে আনন্দ পেলেন। তা ওদেরকে আর কি বলা যাবে? আমাদের বালিকাও তো জলে পা ভিজিয়ে আর হাত ডুবিয়েই চললেন পুরোটা নৌপথ।
সেদিনের ট্রেকিং, বোটিং, হাইকিং অ্যাডভেঞ্চার সেরে আমরা যখন সন্ধ্যে বেলায় হোটেলে ফিরে ফ্রেশ হচ্ছি, হাসান মোরশেদ ভাই এলেন, সাথে ভাবি আর মৃন্ময়, আমাদের সাথে তাঁদের আলাপ হল প্রথমবারের মতো। ওরা এদিকে দেশে ফিরেছেন মাত্র ৪দিন হল। অপু ভাই এসে পৌঁছেছিলেন তাদের খানিক আগেই। হোটেলেই তাই গল্প-গুজব চলতে থাকত হয়ত, কিন্তু দুপুরেতো ভালো করে কিছু খাবার সুযোগ হয়নি,হাঁটাহাঁটিও হয়েছে বেশ, সবারই ক্ষিদে পেয়েছিল, তাই বেরিয়ে রিকশা নিয়ে আমরা চলে এলাম উন্দাল-এ। সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় উন্দাল মানে উনুন বা চুলো। উন্দালের মেনু ইন্ডিয়ান-বাংলাদেশী মেশানো। আমরা সবাই মিলে চেনা-অচেনা মিশিয়ে খাবার অর্ডার দিলাম। গল্প চলল খাবারের মতই স্বাদ মেখে। এর মাঝেই আলমগীর ভাইয়ের ফোন এল, পরদিন দুপুরে লাঞ্চ করানোর জন্যে মোরশেদভাই-ভাবি আর আলমগীর ভাইয়ের মাঝে বেশ একটা ফাইটের পরে আলমগীর ভাই জিতলেন। ঠিক হল পরদিন আলমগীর ভাইয়ের সাথে সিলেট ঘুরছি আমরা। দুপুরে মোরশেদ ভাইরা আমদের সাথে রেস্টুরেন্টে মিট করবেন।
টিলাগড় আর কীন সাহেবের ব্রিজ:
১৮ তারিখ বেরুতে বেরুতে প্রায় সাড়ে ১২টা, রিকশায় সিলেট শহর ভ্রমণ। প্রথমে গেলাম গোয়াইটুলী সৈয়দ শাহ্ চাষনী (রঃ) পীরের মাজারে, এখানে বানর আছে মেলা। মেয়েদের মূল মাজারে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, তাই তাদেরকে টিলার নিচে রিকশাতে অপেক্ষা করতে হল। আর নিধি চলল নজরুল ভাইয়ের সাথে বানর দেখে আসতে।
এরপর লক্ষ্য টিলাগড় ইকো পার্ক। মূল সড়ক ছেড়ে পার্কের পথে মোড় নেবার পরে আরো পড়ল সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আর সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। আর সেই সাথে ছাগল উন্নয়ন খামার!
টিলাগড় ইকো পার্ক কিন্তু বেশ। দু’পাশে বন-পাহাড়, মাঝে দিয়ে এঁকে বেঁকে রাস্তা। কলেজগুলো হবার আগে নাকি পার্কে পৌঁছুনোর রাস্তা কাঁচা ছিল, কিন্তু সে পথে ছিল অনেক গাছ। পুরো পার্ক রিকশায় ক্রস করতে আমাদের লাগল মিনিট ২০-র মতো। তাই ব্যাক করে পার্কের রাস্তায় দেখা একমাত্র চা-য়ের দোকানের কাছে এসে থামলাম আমরা। কেউ কেউ পাহাড়ে উঠে এক্সপ্লোর করল কিছুটা, বাকিরা গরমে কাবু হয়ে নিচেই বসল ছায়ায়। আমার কাছে টিলাগড়ের গজারি গাছ দেখে ময়মনসিংহের শেরপুরে গজনী- যাবার রাস্তার কথা মনে পড়ল। তবে সেটা বেশ অনেকটা পথ বন-পাহাড়ের মাঝে দিয়ে। আর এটা প্রতিদিন চট করে প্রকৃতির মাঝে বেড়িয়ে আসার জন্যে চমৎকার একটা জায়গা শহরের কাছেই। (পরে অবশ্য আমাদের সিলেটি ব্লগার ভাই-ভাবিদের কলেজ জীবনের কিছু বেড়াবার কাহিনি আমরা শুনেইছি, কিন্তু ছেলেমানুষ লক্ষী ব্লগার হিসেবে আমি কী আর সেসব আলোচনা করতে পারি)!
চ্রম গরমে ছায়ায় বসেও ঘামতে থাকা, এদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিহ্বল আমাদের ক’জনার ইচ্ছা ছিল সিলেট শহরে আমরা একটু ঘুরব, বিশেষ করে আমার ইচ্ছা কীন ব্রিজ আর আলি আমজাদের ঘড়ি আরেকবার কাছে থেকে দেখবার। এদিকে নূপুরাপুর পায়ের ব্যথাটা বেড়েছে। হঠাৎ দেখি কোত্থেকে টিপু ভাই ঠিকই তার গাড়ি নিয়ে আমাদেরকে রেসকিউ করতে হাজির।
পলাশও উঠে পড়ে বালিকা, নূপুরাপু, নিধি আর আমার সাথে টিপু ভাইয়ের গাড়িতে। ঠিক হয় অন্যেরা রিকশা নিয়ে চলে যাবে রেস্টুরেন্টে। আমরা জয়েন করবো তাদেরকে। আর মোরশেদ ভাইরা, উজানগাঁদাও চলে আসবেন সেখানেই।
কীন ব্রিজ ঘুরে আমরা রেস্টুরেন্টে পৌঁছে দেখি সবাই হাজির, উজানগাঁদা পৌঁছে গেছেন, বাকি খালি মোরশেদ ভাইরা আর তুলি আপু, খাবার অর্ডার দেয়া পর্ব চলছে। দেশি খাবার কনুই ডুবিয়ে খাবার সর্বসম্মতিক্রম ডিসিশন নিয়ে স্থিতু হতে না হতেই, আলমগীর ভাইকে রিকোয়েস্ট করে বালিকা আর আমি একটা সুপেরও অর্ডার দিয়ে ফেলি, অন্যেরা নাকি খাবেন না সুপ-টুপ, এই খালি পলাশ, বালিকা, আমি আর হয়তবা নিধি এই আমরা চারজনই নাকি সুপের আগ্রহী পাত্র-পাত্রী। কিন্তু কোত্থেকে কী হল বুঝলাম না, সুপ অর্ডার দেবার খানিক্ষণের মাঝেই দুম করে দেখি অনিন্দ্য তার নির্ধারিত সিট ছেড়ে চলে এসেছে আমাদের সুপখেকোদের মাঝে! সুপ আসলে অবশ্য দেখা গেল তা পরিমাণে অনেক বেশিই দিয়েছে এবং শেষমেশ আবালবৃদ্ধবনিতাই সুপের সাগ্রহ খাদক!
এদিকে সুপ আসতে আসতেই মোরশেদ ভাই আর মৃন্ময় আমাদেরকে জয়েন করলেন। ভাবি নাকি নিচেই আছেন, শপিং কমপ্লেক্সে, এই এলেন বলে। তুলি আপুও খানিক্ষণের মাঝেই চলে এলেন উপরের ফ্লোরে তার ইউনিভার্সিটি থেকে। এদিকে খাওয়া দাওয়া চলল মজা করে। তারপর আবিষ্কার হলো, মুন্নি ভাবি নিচে শপিং কমপ্লেক্সে কী করছিলেন! সবাই আমরা পেলাম উপহার! বেড়াতে গিয়ে উপহারও মেলে ইদানিং?! খাইছে! ছেলেদের সবার হল একই রকম টি-শার্ট আর মেয়েদের জন্যে কাঠের কারুকাজ করা অর্নামেন্ট বক্স।
এবার আমরা চললাম উপরে তুলি আপুর ইউনিভার্সিটি দেখতে। এখানে আলাপ হল অনিকেতদার বোন সুমনা আপুর সাথে। দেখা গেল এখানেও সবাই বেশ জোরেশোরেই সচলায়তন পড়েন। অনুযোগ এল আগে বেশ আরামেই নাকি পড়া যেত, এখন রেস্ট্রিক্টেড করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ, তাই এখন খালি বিকেলের একটা নির্ধারিত সময়েই পড়া সম্ভব। কিন্তু এর মাঝেই সুমনাপু ঠিক ঠিকই বলে দিতে পারলেন আমরা কে কোনজন। এমনকি এই হতভাগা আমাকে চেনার কোন প্রশ্নই আসে না ধরে নিয়ে নিশ্চিন্তে আমার নিক বলতেই রাজশাহীও ঠিকঠিক বলে ভড়কে দিলেন আমাকে।
চা খাওয়া হলো, গল্প-গুজব হলো। ঠিক হলো এবার বেরুনো উচিত, রাতে আমাদের শ্রীমঙ্গল থাকবার কথা। টিম ম্যানেজার নূপুরাপু ইতিমধ্যেই ২ ঘন্টার নোটিশে চা বাগানে রাত কাটাবার ব্যবস্থা করে ফেলেছে! (আমি মনে মনে পাঁচ তারা দিয়ে রাখলাম তাকে টিম ম্যানেজার হিসেবে, পরের এক্সপেডিশনেও অবশ্যই নূপুরাপুকে টিম ম্যানেজমেন্টের মহান দায়িত্ব বর্তানো হবে)।
চন্দ্রনক্ষত্রাহতসচলাড্ডা:
সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গল যাবার পথে হাওরের মাঝে দিয়ে চমৎকার একটা লংড্রাইভ আছে। কিন্তু বিকেলের নির্ধারিত জার্নি আমরা শেষতক রাতে নিয়ে যাওয়ায়, ভাগে নৈসর্গিক শোভা তেমন একটা জুটেনি। তবে ব্যাপারটা পুষিয়ে নেয়া গিয়েছিল গাড়ি-আড্ডায়। এবারে সবাই ঠেসেঠুসে উঠেছিলাম একটা মাইক্রোবাসেই। নিধি মাঝে রাজি হলো গান শোনাতে।
গল্প করতে করতে মৌলভিবাজার শহর হয়ে, শ্রীমঙ্গল ফুলবাড়িতে ফিনলের বাগানে আমরা পৌঁছুলাম রাত ১০টার দিকে। ম্যানেজেরিয়াল বাংলোয় আমাদের জন্যে এদিকে রিপনভাই-দিয়াভাবি অপেক্ষা করছিলেন সেই সন্ধ্যে থেকেই। আলাপ পর্ব আর ফ্রেশ হবার পরে চলল খাওয়াদাওয়া পর্ব। নিধি-বাবাই-যারা তখন জোর খেলাধূলো জুড়েছে। ভাই-ভাবির বড় মেয়ে প্রিয়ন্তি ঢাকায় ছিলো, বেচারার নাকি স্কুল খোলা, তাই আসে নাই, ভাবিকেও ঢাকা-শ্রীমঙ্গল করতে হয় নিয়মিত। খাবার পরে চলল আমাদের সবার বাংলোর বারান্দায় গপ্প-শপ্প। ব্যাপারটা ঠিক জুইতেবল হচ্ছিল না, যতক্ষণ না ভাবি আমাদের উসখুস দেখেই কিনা কে জানে, রাত্রিকালীন চা-এর অর্ডার দিলেন।:) বালিকা এবার নেমে পড়ল তার কর্মকাণ্ডে, সুন্দর করে ভাবির হাতে মেহেদি লাগিয়ে তাঁর ডিজাইনার বিদ্যে জাহির করতে, সাথে চলল আমাকে বকাঝকা ফ্রি (আমি নাকি গল্প করতে গিয়ে নড়ছি অনেক, ডিস্টার্ব করছি! এদিকে সে নিজে নজরুল ভাইয়ের প্রতিটা কথায় যে মাথা ঘুড়িয়ে উত্তর করছে তা কিচ্ছু না! )। রিপন ভাই ঘুমাতে চলে গিয়েছিলেন, রাত অনেক হয়ে গেছে, এদিকে তাঁকে ভোরে উঠে মৌলভিবাজার যেতে হবে বাগানের একটা কাজে। ভাবিও অনেক কষ্টে ঘুম চোখে আমাদের সাথে বসে থাকলেন বালিকার কাজ শেষ না হওয়া তক। তার পর গুড নাইট বলে উঠে পড়লেন যারাকে নিয়ে। নিধি আর যারা খেলছিলো এতক্ষণ আমাদের পাশেই, আগের দিন জাফলং থেকে যারাদের কুড়িয়ে আনা রং-বেরঙের নুড়ি দিয়ে। নূপুরাপুর পা ব্যথাটা বেড়ে গিয়েছিল অনেক জার্নির সময় গাড়িতে বসে থাকার কারণেই মনে হয়। নূপুরাপু আর তুলি আপুও তাই নিধি-বাবাইকে নিয়ে চললেন ঘুম পাড়াতে।
শ্রীমঙ্গলের বাকি সময়টুকু আমরা আসলে কাটিয়ে দিয়েছি ফিনলে-র চা আর রাবার বাগানে ঘোরাঘুরি করেট। নীলকন্ঠ টি স্টলে সাত রঙা চা খেয়ে, আর শ্রীমঙ্গল শহরে চা কিনে, মৌলভিবাজার পৌঁছুতে পৌঁছুতে ১৯ তারিখ বিকেল ৪টা। সচল বালক আমাদের জন্যে সকাল সকাল শ্রীমঙ্গলে মাইক্রোবাস পাঠিয়েছিলেন মৌলভিবাজার থেকে, আমাদের সবার ঢাকায় ফিরবার বাসের টিকেটও করে রেখেছিলেন, তার সাথে দেখা হল বিকেলে। বাস ছিল ৫টায়, সবাই মিলে চাইনিজ খাওয়া হল, সে আরেক গপ্প! আর কখনো অত দ্রুত আমরা কেউ কোন রেস্টুরেন্টে কিছু খেয়েছি মনে পড়ে না! অপুভাই-তুলিআপু-বাবাই বিদায় নিল বাসস্ট্যান্ডে, মনটাই খারাপ হয়ে যাচ্ছিল, আমি আবার বিদায় টিদায় ভালো পারি না, আগেই বাসে উঠে পড়েছিলাম। ঢাকায় ফিরবার পথেও অনেক মজা হলো, আমাদের প্রিয় ঝিম পলাশ তার সোফিয়া তত্ত্বের পরে ফুকাল্ট তত্ত্ব শোনালো আমাদেরকে। নিধিমণিরও মনমেজাজ ভালোই ছিলো পুরো পথ। ডেমরা পৌঁছে জ্যামে আটকাতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মনামী বলে উঠল – আহ্! বাড়ি ফিরে এলাম।
কিন্তু এগুলোতো হয়ই, একসাথে খাওয়া-দাওয়া, বেড়ানো, বিদায়টাও নিতেই হয় নেহায়েৎ বাধ্য হয়েই … যেটা সচরাচর হয়না তা হলো নক্ষত্রভরা আকাশের নিচে সারা রাত জেগে আড্ডা দেয়া...
সেরাতে ছোটরা ঘুমাতে গেলে আমরা বাকিরা উঠি-উঠব করে গিয়ে দাঁড়ালাম উঠোনে। বালিকা বলল, এইতো একটু হেঁটে নেই বাগানে। বাংলোর বারান্দার ফুট তিরিশেক দূরে হবে বাগানের গেট। আর গেটের ওপারেই লম্বা লম্বা সব ছায়াগাছ, আর মূল চা-বাগান। একদম চা-বাগানের মাঝেই একরকম আসলে বাংলোটা। লাইট জ্বলছে চত্ত্বরে বাগানের কোণে কোণে, ভাই-ভাবির যত্নের ছাপ সর্বত্র। এক কোণে দোলনাটা পড়ে আছে একা একা, সামনে কেয়ারি করা ফুলের ঝোপ নিয়ে। গুটি গুটি পায়ে আমিও নেমে পড়ি পাকা উঠোনে… কী যেন দেখছে অন্যেরা আকাশে। মুখ তুলে তাকাই আমি আর গত কয়েক মাসের মাঝে আরেকবার তব্দা খাই প্রকৃতির মাঝে রাতের আকাশ দেখে। একাদশীর চাঁদটা বাংলোর পেছনে তখন, আর শরতের মেঘমুক্ত আকাশে লক্ষাধিক নক্ষত্রেরা ফিসফিস করছে। আমার আবার মন খারাপ হলো কোন্টা যে কী তা না চেনায়। খালি কালপুরুষ বা ওরাইয়নকে আমি সব সময়েই চিনতে পারি, ঐযে, কোমরে তার তিনটা তারার বন্ধনী, আর ঐযে তার তীর ধনুক। আর এবার আমার বৃশ্চিককেও চিনতে পারলাম অনেকদিন পরে। যখন সবাই কোন্টা কী নিয়ে গবেষণা করছি, আমার দেখা শরতের প্রথম স্পষ্ট উল্কাটাকে দেখলাম পূবাকাশে!! থতমত খেয়ে আমি তখন ভাবছি খুশিতে একটা ছোটখাট উল্লাসায়োজন করবো নাকি আমার উচিত একটা উইশ করা যেমনটা সবাই করে শুটিং স্টার দেখে!
সেরাতে আমরা উঠোনে দাঁড়িয়ে আর বাংলোর বারান্দার সিঁড়িতে বসে গল্প করেছি ভোর ৫টা পর্যন্ত। সবাই মিলে ঢাকা-সিলেটে মঞ্চ নাটকের সেকাল-একাল, জার্নালিসম, ঢাবি-রাবি-জাবি আলোচনা, আর টুকরো টুকরো মজার আর দুর্ভোগের স্মৃতির সূতো ছাড়াচ্ছিলাম। আর তার থেকে দেশ, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধ, সচলায়তন সব মিলে মিশে একাকার হচ্ছিল আমাদের ভাবনায়-আলাপে। কখনো অপু ভাই বলছিলেন সিলেটের গল্প, কখনো নজরুল ভাই ঢাকার, মনামী টিভি চ্যানেলের.. যেমনটা হয় আর কি আড্ডায়, এক কথা থেকে উঠে পরে অন্য কথা। অনিন্দ্য তার ক্যামেরা নিয়ে খুটখাট করছিল, কিন্তু কানটা ছিল এদিকে, মাঝে মাঝে টুকরো কিছু মন্তব্য করছিল। পলাশ, বালিকা আর আমি শুনছিলামই বেশি। ঝির ঝির শিশির পড়ছিলো আর মাথার উপর তারার মিছিল নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন বয়সের আর নানান পেশার কিছু মানুষ বসে গল্প করছিল, কথার পিঠে কথা হচ্ছিল, কখনো বা ছিল শুধু টুকরো টুকরো নিস্তব্ধতা। মানুষগুলো আর দেশকে নিয়ে তাদের স্বপ্ন, হতাশা আর আকাঙ্খাগুলো মিলে মিশে যাচ্ছিল রাতের আকাশে, উঠোনের আলোয়, ঝরা শিশিরে, চা-বাগানের একটি কুঁড়ি আর দু’টি পাতায় . . .
[এই আরকি: আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা অপু-টিপুভাই-ভাবিরা সহ এ যাত্রায় আলাপ হওয়া বাকি সব সিলেটসচল আর তাঁদের পরিবারদেরকে। আসলে পুরো ঘোরাঘুরিটাই ছিল এক চলমান সচলাড্ডা। সিলেট ভ্রমণের আসল গল্প-কথাটা কিন্তু লেখার কথা নজরুল ভাইয়ের। আমার বরং ইচ্ছে আছে সারি আর শ্রীমঙ্গল নিয়ে দুটো ছবিব্লগ করার, অবশ্য সময় মিললে, প্রায় হাজারের উপরে ছবি তুলেছি!
অপুভাই, নূপুরাপু, বালিকাকে ধন্যবাদ লেখার সময় টুকিটাকি ইনফরমেশন মনে করতে সাহায্য করায়।
কল থেকে বানরের পানি খাবার ছবিটা নজরুল ভাইয়ের ক্যামেরা থেকে ধার নেয়া।
অন্যান্য সব ছবি তুলেছি আমার Canon IXUS 950 IS দিয়ে।
নিধি আর নজরুল ভাইয়ের ছবিটা তুলেছে পলাশ, নজরুল ভাইয়ের ক্যামেরায়।]
× আলী আমজাদের ঘড়ির নিচের ছবিটা কীন ব্রিজের সিলেট শহর প্রান্তে একটি ভাস্কর্য।
× ছবিগুলোতে ক্লিক করলে বড় করে দেখার জন্যে আমার ফ্লিকার অ্যাকাউন্টে যাচ্ছিল না কারণ সেগুলো এম্বেড না করে লিঙ্ক দিয়েছিলাম, এডিট করবার সময় এম্বেড করে দিয়েছি কিছু ছবি, যাতে আগ্রহীরা মূল ছবি দেখতে পারেন।
ধন্যবাদ।
১০/১১/২০১০
মন্তব্য
একসময়ে জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী, মুসলমানি...ইত্যাদি সব অনুষ্ঠানেই সুমির ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক খাওয়া হতো...বর্তমানে ওজন কমানোর চেষ্টায় সব ধরণের কেক থেকে দূরে আছি। খিদে পেটে খাবারের ছবি দেখা ও পড়া অত্যন্ত দুঃখজনক
সিলেটে গিয়েছি জীবনে একবার, শ্রীমঙ্গলে...দারুণ একটা জেলা। লেখা ও ছবি দুটোই ভালো লেগেছে। দেশে গেলে সিলেটবাসী সচলকে জানিয়ে কায়দা করে একটা ট্রিপ নিতে হবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হা হা হা! আমার কেকটা কিনেছিলাম সুইস থেকে, সুমি'স এর ব্ল্যাক ফরেস্টের মজাই আলাদা আসলে। আর খেয়ে ফেলেন, এক্সারসাইজ করেন কিন্তু খাওয়াও চালিয়ে যান, কী আছে জীবনে?
দেশে এসে সিলেট সচলদেরকে খবর দেবার সাথে সাথে আমাকেও বলেন কিন্তু! আরেকবার দলে ভিড়ে যেতে আগ্রহী! সিলেটের সচলেরা ভারি আন্তরিক আর খাওয়াতেও ভালোবাসেন।
অনেক সময় লাগিয়ে লিখেছি, তাই ভয়ে আছি দলের অন্যদের কাছ থেকে গালি খাবার! ভালো লেগেছে জেনে আর প্রথম মন্তব্যটার জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ক্রতু, পুলহ, পুলস্থ, অর্ণি, অঙ্গিরা, বশিষ্ঠ, মরিচী- এই সাতজন হলেন আপনার দেখা প্রশ্ন বোধকের সাত তারা। এঁদের মধ্যে পুলহ আর ক্রতুকে যোগ করে একটা সরল রেখা নিচের দিকে নামাতে থাকলে যে উজ্জ্বল ওস্তাদের কাছ দিয়ে যায়, তিনি হলেন ধ্রুবতারা দ্য পোলার স্টার।
আমি প্রথম যেবার সিলেট যাই, সেবারও উপবন এক্সপ্রেস। সেটাই আমার জীবনের প্রথম আন্তঃনগর রেলে ভ্রমন। সারা রাত ঘুমাই নাই। ডিসেম্বরের রাত ছিলো। কামরার অন্যসব পাবলিক নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিলো দেখে হিংসায়িত মনে সহ্য হয় নাই। উঠে গিয়ে একেকবার একেক সিটে ফ্যান ছেড়ে দিয়ে নিজের সিটে এসে চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করে কাত হয়েছিলাম। ভোরের দিকে আর বসে থাকতে ভালো লাগছিলো না বলে দুই কামরার মাঝের দরজার ফুকা দিয়ে মাথা বের করে বসে বসে গান শুনছিলাম। পাহাড়ের মধ্য দিয়ে শো শো করে উপবন যাবার সময়ে সামনের দিকে ছুটন্ত গাছপালার সাথে সাথে কানে বাজছিলো এই গানটা। গানটার সাথে এখনও দেখতে পাই শো শো শব্দে গাছগুলোর ছুটে যাওয়া।
অনেক বড় হয়ে আবারও গিয়েছিলাম সিলেট, উপবন এক্সপ্রেসেই। সেবার আখাউড়া স্টেশনটা বেশ মনে আছে। দুই বন্ধু মিলে অনেকগুলো ডিমসেদ্ধ খেয়েছিলাম খাবো না খাবো না করেও। খালি পায়ে স্টেশনে হেঁটেছিলাম। হুদাই।
আপনার চন্দ্রনক্ষত্রাহত আড্ডার কথা শুনে ভালো লাগলো। মনে হলো যেনো আমিও ছিলাম। অবশ্য না থাকলেও ক্ষতি নাই। ইভেন্ট ম্যানেজার লজু ডিরেক্টরের পরিবার লুপুরের ছন্দ তো আছেনই। আর সিলেট থেকে চা বাগানও আগামী কয়েক শতাব্দীতে নাই হয়ে যাবার না। সুতরাং, হে হে হে...
মজার কথা হলো, কোনো মিলন মেলা শেষ হবার সময়ে আমারও প্রায় একই রকম ভাবনার উদ্রেক হয়, যেমনটা আপনি শেষ করার সময়ে লিখেছেন।
শ্যুটিং স্টার দেখে শেষমেশ কি উইশ করলেন?
ভালো কথা, বাসে কিন্তু ফিরছেন আমরার বাড়ির কাছ দিয়েই। নেক্সট টাইম তেরিবেরি করলে...
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
অ! আমি তাইলে নিদ্রাহীনতায় হ্যালুসিনেট করি নাই? এইরকম একটা সার্বজনীন (Universal) প্রশ্নবোধক আছে তাইলে? যাক! বাঁচা গেল!! দেখেন তো! আপনি না থাকলে কী হতো??!
কিন্তু এইটার আংরেজী/বৈদ্যাশী নামটা কী? বাংলাটাই বা কী? আরেকটু পড়ে দেখতাম গঠনাটা কী এই নক্ষত্রমণ্ডলীর পেছনে আর কেনই বা তারা আমাকে জ্বালাতন করলো! (সপ্তর্ষিতো এমন নয় দেখতে, আর সেটা দেখাও যায় অন্যখানে মনে হয়?) আপনি তো দেখি প্রায় হামেশাই অর্ধেক ইনফো দেন!
এই গান শুনলে গাছপালা সব ছুটে চলে যাচ্ছেন দেখেন?
আমি মনে হয় এই গানটার টাইপেরই আংরেজী না বাংলা কী জানি একটা শুন্তেছিলাম... কিন্তু এই গানটা শোনার সময় আপনি ঠিক কতো বড় ছিলেন তাই ভাবতেছি। আর ফ্যান ছেড়ে দেয়া টাইপ কাজকর্ম আমরাও ছোটবেলায় অনেক করেছি (এখনো করি পারলে )। হে হে, এগুলা নিয়ে লেখা দরকার। ভালো কথাই মনে করালেন।
তবে বেড়াতে বের হলে ডিমসেদ্ধ না খাওয়াটা একটা অপরাধ! এইটা খেতে হয়! এইবার খাওয়া হয় নাই। আমার মাথায় ছিল জিনিসটা, কিন্তু রাস্তায় চোখে পড়ে নাই, নাইলে খাওয়াতাম সবাইকে জোর করে হলেও!
রাতের বেলায় ট্রাভেল করতে ভালো লাগে না আমার। ট্রেনে হোক, বা বাই রোড। ওতে করে আশেপাশের কিচ্ছু দেখা যায় না। আর বেড়াবার একটা আসল ব্যাপারই তো ঐটা! কোন্ কোন্ জায়গার উপর দিয়ে যাচ্ছি, সেখানে দোকানপাটগুলো কেমন, গ্রামের মানুষগুলো কী করছে? ধান শুকোচ্ছে, না ক্ষেতে চারা রোপন করছে, মই দিচ্ছে না ধান কাটছে, কোন্ অঞ্চলে কী ফসল বুনেছে, ছেলেমেয়েরা মাছ ধরছে না ইশকুলে যাচ্ছে, এগুলো না দেখলে আর কী দেখা হলো? রাতের বেলায় তাই বিচ্ছিরি লাগে ট্রাভেল করতে, আর জার্নিতে আমি কখনোই ঘুমুতে পারি না।
আমার মনে হয় আপনার বাড়ির উপর দিয়ে আরো কয়েকবারই যাতায়াত হয়েছে, খালি আপনি নিজেই থাকেননা কিনা, তাই আর ঢুঁ দেই নাই।
আর হ, আমাদের ভাবনাগুলা মেলে। তবে বিদায় জিনিসটা আমি খুবই খারাপ পাই। পরে মানুষগুলোর কথা ভাবতে ভালো লাগে অবশ্য।
আর কী উইশ করেছিলাম তাতো বলা যাবে না! থিওরি অনুযায়ী, তাহলে আর পাওয়া হবে না সেটা ... !
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এইটার ইংরেজি নাম হল The Big dipper আর বাংলা নাম তো জানোই--সপ্তর্ষি মন্ডল!
আহ, কী চমৎকার একটা মন-ভ্রমন হয়ে গেল তোমার সাথে!!
খুব খুউব ভাল লাগল লেখাটা--
শুভেচ্ছা নিরন্তর
ধন্যবাদ অনিকেতদা।
আচ্ছা, আপনাদের বাড়িটা নিয়ে একটা লেখা ছিল কি আপনার? বালিকা অমন কিছুই বলছিল। সময়াভাবে শতাধিক পোস্ট ঘেঁটে লিঙ্কটা খুঁজে বের করতে পারি নাই। থাকলে একটু দেবেন এখানে? ইচ্ছা ছিল ট্যাগ করে দেব লেখায়, আসলে নিজেও পড়তে আগ্রহী।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ধুর, দিলেন তো মেজাজটা বিলা করে। এইসব লেখায় প্রবাসী কারো ঢোকাই উচিত না।
আমিও সিলেট যেতে চাই
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আরে! এইতো দেশে আসছেন পড়লাম। নূপুরাপু দি টিম ম্যানেজার আছে কী করতে??
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
অলস সময়
তোমারে এত পচাইলাম, পেতিবাদ করে নিজের ভার্শনের পুস্ট দাও ঝিম্বুয়েট মিয়া!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
গজব পড়ব, গজব! এত আনন্দফূর্তি করে আবার এমন চিত্তবিদারক পুস্ট দেওয়া হইসে! ল্যাহা ছবির কেক্কুকের থিকাও স্বাদু হইসে।
ধুরো, সহসচলের উপকারে কিছুই লাগেন না দেহি! তবে আইডিয়াটা বেড়ে।
হ! আমার সব আইডিয়াই বেড়ে হয়।
আর ঈমানে কই, মেয়ে ইন্সক্রাইবার হলে আপনার কথা মনে করে অবশ্যই একখান ছবি তুইলা রাখতাম। আপনি চাইলে কিনা আলাপ করিয়ে দেবার ব্যবস্থাও নিতাম। আসলেই তো শুধুই ফায়ার অ্যালার্মের উপর নির্ভর করে আমাদের খেঁদি বা ঘেঁটু হয়ে যাবার সম্ভাবিলিটি নেহায়তই কম (আপনি ভালো ক্যাল্কুল করে কইতারেন)। আপনি আমারটা, আমি আপনারটা না দেখলে ছৈলত?
অন আ সিরিয়াস নোট, বাংলাদেশে আসলে খালি আওয়াজ দিয়ে দেখেন, বেড়াবার জায়গার আর ঘুরিয়ে দেখাবার লোকের অভাব হবে না। শুধু সহসচলেরা নন, আমাদের দেশের মানুষগুলো আসলেই খুব আন্তরিক।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
খুব ভাল লাগল! ৩ নম্বর মন্তব্যের সাথে একমত, চমৎকার একটা "মন-ভ্রমণ" হয়ে গেল!
সিলেটে জীবনের সেরা ৬ টি বছর কাটিয়ে এক কঠিন মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে গেছি--সিলেট সম্বন্ধে যেকোন লেখা দেখলেই গোগ্রাসে গিলি আর সুখস্মৃতির নিঃশ্বাস ফেলি।
আমজাদ আলীর ঘড়ির নিচের ছবিটা কমন পড়লনা, এটা কী?
---দিফিওcom
furiousfive.f5< at >gmail
পড়বার আর ভালো লাগার জন্যে।
জানিনা আপনি ঠিক কোন্ সময়ে সিলেটে ছিলেন, তবে এবার দেখলাম কীন ব্রিজের সিলেট পাড়টা সুন্দর করে রেলিং ঘিরে বেড়াবার একটা স্থানের মতো করে দেয়া হয়েছে। সেখানেই ব্রিজের গোড়ায় এটা একটা স্কাল্পচার। এখন খেয়াল হচ্ছে, স্থাপত্য ডিটেইলস অত রোদ আর তাড়াহুড়োয় খেয়াল করতে ভুলে গিয়েছি।
টিপু ভাইকে একটা ফোন দিতে হবে দাঁড়ান। ওঁর টুকিটাকি ইম্পরট্যান্ট জিনিসগুলি ঠিকঠিক জানাবার, আর কম সময়ে জরুরি কিছু মিস না করি এমনভাবে ঘুরিয়ে দেখাবার টেকনিকটা মারাত্মক! একটা মেজর ধন্যবাদ পাওনা হয়েছে ওঁর এমনিতেও।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সিলেট, নীলগিরি, বান্দরবান - এসবের নাম দেখলেই যেকোন লেখা পড়ে ফেলি। এটাও পড়লাম এবং যথারীতি ভালো লাগল।
সিলেটে মাঝেমধ্যেই যাই। এই তো এই সেপ্টেম্বরেই একবার ঘুরে আসলাম। এইবার যাওয়ার সময় একটা জিনিষ খেয়াল করলাম, আশ্চর্য ব্যাপার হলো যা আগে খেয়াল করিনি - গরমের দিনেও পাহাড়ের মধ্যে মধ্যে ভোরবেলা কুয়াশা থাকে! উপবনের নাইট ট্রেনে যখন মাইজগাওর কাছাকাছি পোঁছেছি তখন জানালা দিয়ে ভোরের আধ ফোটা আলোয় তাকিয়ে দেখি - সবুজ গাছে ঢাকা টিলার ফাঁকে ফাঁকে বিশাল সাদা কুয়াশার মেঘ উড়ে বেড়াচ্ছে। ঢাকার ধোঁয়া-ভীড়-ইট-কাঠ-গাড়ি-বাড়ি-আর-কংক্রীটের স্তূপে শতহস্ত কবরস্থ মানুষের ঘুমভাঙা চোখে আচমকা এই সামান্য দৃশ্যটাই যে কি অসামান্য আর স্বর্গীয় হয়ে যায় - তা ব্যাখ্যা করা আমার অসাধ্য।
মাইজগাও-র কাছেই ঘিলাছড়ার দিকে একটা জায়গা আছে যেখানে আমি, যখনই ঢাকা অসহ্য লাগে, চলে আসি। হাকালুকি হাওরের পারেই চারিদিকে চা-বাগান, রাবার-বাগান, এবং আরো নানান রকম বাগানে ঢাকা টিলায় ঘেরা, ভীড়-ভাট্টা-গাড়িঘোড়া-শব্দদূষন আর নাগরিকতা থেকে লক্ষ যোজন দূরে, সুনসান নিঃশব্দ জনবিরল এক গ্রামে চমৎকার একটা টিলার উপর বাংলো টাইপের টিনের চালের গ্রাম্য বাড়ি। শীতের সময় পরিবেশটা দুর্দান্ত। ঢাকার 'উম্মাদ'-দশা থেকে এখানে আসলে মনে হয় হামান্দিস্তা হওয়া ঝন-ঝন করতে থাকা নার্ভগুলি হঠাৎ করেই কেমন শান্ত হয়ে যাচ্ছে - কে যেন আচমকা এক পরম শান্তির পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে। নৈশব্দ্য আর প্রকৃতির সান্নিধ্য যে কি জিনিষ তা ঢাকা থেকে না বেরুলে বোঝা যায় না। আমার কাছে তখন এই 'নৈশব্দ্য'ই একটা পরম কাঙ্খিত স্বতন্ত্র সত্তা - একটা প্রায় জীবন্ত প্রাণী - হয়ে ধরা দেয়।
শীতে এখানে একটা উপরি পাওনা হল - পাহাড়ের কোলে হঠাৎ করেই গ্রাম্য বাউলদের আসরের সাথে দেখা হয়ে যেতে পারে। আবার গ্রীস্মে/বর্ষায় (যেমন এবার) হাকালুকিতে নৌকাভ্রমন। এবার হাকালুকি জুড়ে নৌভ্রমন হলো।
সিলেটের উল্লেখযোগ্য প্রায় সবখানেই মনে হয় গেছি - সুনামগঞ্জ ছাড়া। সুনামগঞ্জের টাঙুয়ার হাওরে যাওয়ার খুব ইচ্ছা। টিভিতে দেখে প্রায় রূপকথা-রূপকথা লেগেছে! কিন্তু কিভাবে যাবো বুঝতে পারছি না। যেটুকু শুনেছি, টাঙুয়া সুনামগঞ্জ টাউন থেকে অনেক দূরে এবং ওখানে যাওয়ার বা থাকার তেমন কোন ব্যবস্থা নাই। পানি সরে যাওয়ার আগেই যেতে হয় এবং হাওরটা ভালো করে ঘুরতে হলে ২-৩ দিন সময় লাগে এবং নৌকাতেই রাত্রি যাপন আর রান্না-বান্না খাওয়া-দাওয়া সারতে হয়। সাথে করে বাজার নিয়ে যেতে হয় আগে থেকেই। এসব কতটুকু নির্ভরযোগ্য তথ্য জানি না। কেউ জানেন?
দুই হাজার চারের নভেম্বরে গিয়েছিলাম টাঙ্গুয়ার হাওরে। তিনদিন নৌকায় ছিলাম আমরা। পরিচিতসূত্র থেকে সেই ছোটোখাটো বজরা ভাড়া করা হয়েছিলো, বেশ স্বল্পমূল্যেই। আমরা নয়জন ছিলাম, আর দুই মাঝি। সব বাজার সুনামগঞ্জের ঘাট থেকেই করে নিতে হয়, তবে টাঙ্গুয়ার হাওরে যাবার পথে ডানে বামে দুয়েকটা বাজার আছে, যেমন সোলেমানগঞ্জ। জেলেদের কাছ থেকে টাটকা মাছ কেনা যাবে, তবে চাল-ডাল-লবণ-তেল-চিনি-চা-দুধ কিনে নিয়ে যেতে হবে সাথে। আমরা অবশ্য একটা গ্রাম থেকে চালও কিনেছিলাম আসার পথে।
চেনাজানা নৌকা ও চেনাজানা মাঝি নেয়া জরুরি। আমাদের দুই মাঝি নৌকা ছাড়ার আগে দাবি করেছিলো, এই এলাকা তারা হাতের তালুর মতো ভালো করে চেনে। পরে দেখা গেলো তাদের দুইজনের হাতের তালু দুইরকম রিডিং দেয়, এবং যার তালুর রিডিং একটু আস্থাজনক বলে মনে হচ্ছিলো, সে রাতকানা। ফলাফল, আমরা প্রথম রাতেই পথ হারিয়েছিলাম। তবে সে এক মধুর স্মৃতি। সঙ্গীরা সবাই সুরসিক ছিলেন, দারুণ আড্ডায় কেটেছে সময়টা। আর হাওর আর নদীর টাটকা মাছ ... গরম ভাতের ওপর একটু ঘি ছড়িয়ে দিয়ে সদ্যধৃত কালিবাউস আর বোয়ালের ঝোল ...। ট্যাকেরঘাটে নৌকা নোঙর করে নৌকার ছাদে ঘুমাতে যেয়ে দেখি আকাশ ভর্তি তারা, দূরে মেঘালয়ের অন্ধকার পাহাড়ের প্যাঁচ কাটা রাস্তা বেয়ে নামছে গাড়ির আলো। মৃদু ঢেউয়ে নৌকা দুলছে।
সুনামগঞ্জের ঐ প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষজনের মতো সরলচিত্ত, পরোপকারী, উদার মানুষ কমই দেখেছি। খবরের কাগজে যখন পড়ি হাওরে বন্যায় ফসল ডুবে গেছে, মনে হয় হাওরের বুকে জেগে থাকা সামান্য দ্বীপে যে শিশুটির মা একদিন সকালে আমাদের চিংড়ি কুটে দিয়েছিলেন সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে, যখন তার ছেলেটি তার গায়ে হেলান দিয়ে সকালের রোদে স্কুলের বই পড়ছিলো, সে-ই বুঝি বন্যার কবলে পড়লো। টাঙ্গুয়ার হাওরই শুধু সুন্দর নয়, তার চারপাশের মানুষগুলোর অন্তকরণও সুন্দর। টাউট বাটপারে ভরে যাওয়া দেশটাকে এদের মতো মানুষেরাই বুকে করে আগলে রেখেছে।
অই ব্যাটা, তুই তো হাতুর জানোস না। নৌকার ছৈয়ায় ঘুমানোর সাহস ক্যামনে করলি? পইড়া গেলে! কোলন চিন্তিত
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সুনামগঞ্জটা আমারো যাওয়া হয় নাই এখনো। টাঙ্গুয়ার হাওরের কথা আমিও শুনেছি, কিন্তু এখনো এমন কাওকে পাইনি যাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা আছে, বা সাহায্য করতে পারে। আপনার মন্তব্য পড়ে যাওয়ার ইচ্ছেটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। সমস্যা আসলেই মনের মতো গ্রুপ পাওয়া, যাদের এরকম বেকায়দা অ্যাডভেঞ্চারেও আপত্তি নেই।
আমার কাছে বরাবরই আমার দেখা দেশের প্রায় সব অঞ্চলের সাধারণ মানুষগুলোকেই ভালো লেগেছে, তা সে কুয়াকাটা হোক বা তেঁতুলিয়া।
হক কথা! আর এমন মানুষই দেশের মেজরিটি।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
হুম! সঙ্গে সুরসিক সঙ্গী থাকলে ভ্রমনের সময় পথ হারিয়ে ফেলাটা মনে হচ্ছে একটা দারুন বিষয়। তখন আড্ডাগুলি আরো সরস বা রসপূর্ণ হয়ে উঠে তাই না ? আমারও একবার এরকম হয়েছিল - তাও দেশে নয়, বিদেশে। এইরকম সময় মাঝি/ড্রাইভারদের তালুর রিডিং একটু ভুলভাল হলে সেটা বরং ক্ষেত্র বিশেষে শাপে বর হয়েই দেখা দেয় - ঐ যে সঙ্গে সুরসিক সঙ্গী থাকলে তবেই।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের সরলচিত্ততার কথা যেটা বললেন - সেটা আমিও অনুভব করেছি। সরলচিত্ততা আর হৃদয়ের উষ্ণতা। আসল কথা হচ্ছে ঢাকা, রাজনীতি আর হিন্দী চ্যানেলগুলি থেকে তারা কতটা দূরে তার উপর বোধহয় অনেককিছু নির্ভর করে।
বিকেলে আপনার প্রতিমন্তব্যটা পড়ার পর হঠাৎ করেই পাড়ার এক টেইলারকে আবিস্কার করলাম যার বাড়ি সুনামগঞ্জে। তার মতে অবশ্য হাওরে যাওয়ার সেরা সময় হচ্ছে ভাদ্র মাস - বর্ষার পর পর বা শেষের দিকে যখন হাওর টইটুম্বুর থাকবে কিন্তু অতিরিক্ত ঢেউ থাকবে না। এখন, অর্থাৎ নভেম্বরের দিকে নাকি পানি অনেক সরে গিয়ে থাকবে এবং হাওরের অনেক জায়গায় মাটি বেরিয়ে যাবে - ফলে জলপথে সবটা ঘোরা যাবে না। বিশেষ করে আমি যেরকম হাওরের প্রত্যন্ত কর্নারে যেতে চাই - মেঘালয় পাহাড়/ঝর্না/বর্ডারের যতটুকু কাছে সম্ভব। জানিনা কথাটা কতটুকু সঠিক। আসলে এবার কোরবানির ঈদে ঢাকার বাইরে কোথাও যেতে চাই - কোথায় যাব বুঝতে পারছি না। ইন্ডিয়া বা থাইল্যান্ড যাওয়ার একটা ক্ষীণ ইচ্ছা ছিল, কিন্তু ভিসার জন্য বিদেশি দূতাবাসে দৌড়াদৌড়ি করতে ইচ্ছা করে না। সময়েও কুলাবে না। দেশের ভেতর আমার তালিকায় আছে টাঙুয়া, বান্দরবান আর সুন্দরবন। এর মধ্যে বান্দরবান অবশ্য আগে গিয়েছি। আর সুন্দরবন যেতে চাইলে কোন ট্যুর-অপারেটরের প্যাকেজে ঢোকা ছাড়া বোধহয় গতি নেই।
আপনার কার্যকরী তথ্যপূর্ণ প্রতিমন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আচ্ছা, ঘিলাছড়ার সেই জায়গাটা নিয়ে লেখেন না? আমি বেড়াতে পছন্দ করি সেতো নামেই দেখছেন। কিন্তু দেখেন সচলায়তনের লেখক পাঠককূলের আরো কতজন এমন ঘুরতে পছন্দ করেন! ভ্রমণবৃত্তান্ত পড়তে আমাদের সবারই ভালো লাগে। লিখে ফেলুন কিছু, আর ছবি দিয়েন, ছবি সহ ভ্রমণকাহিনি মানে পড়েই অর্ধভ্রমণ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কোথাও সিলেট লেখা আছে, আর আমি ঢুঁ মারবো না এমনটা হয় না!
ছবিগুলো অনেক পুরোনো স্মৃতি মপ্নে করিয়ে দিলো। টিউলিপ্পু ঠিকই বলেছেন প্রবাশীদের আসলে এরকম পোস্টে ঢুঁকা উচিত না---হিমু ভাইয়ের মন্তব্য'র পর তো মনে হচ্ছে এখনই দেশে যাই!!
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
হিংসা জানাতে গিয়েও পারলাম না
অসাধারণ পোস্ট।
থেঙ্কুস!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
লেখা দেওনের কথা কবে আর দিছে এতো দেরিতে... মাইনাস...
লেখা ভালো হইছে, তয় সিরিজ করে আরো কয়েক পর্বে দিলে আরো অনেক ডিটেইলে পাইতাম... অনেক মজাই লেখায় অনুস্থিত...
এবারের ভ্রমণটা দারুণ মজা হইছিলো। সিলেটস্থ সচলদের আর টিপু ভাই ভাবীরে যদিও অনেক জ্বালাইছি...
তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। সঙ্গে এটাও জানাই যে, এই জ্বালাই শেষ জ্বালা নয়... শীতের মধ্যেই আবার আসবো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আরে ভাই! বকাও দেবেন লিখতে দেরি হওয়ায়, আবার তাড়াহুড়া করে লেখা দিলেও মাইনাস দেবেন ক্যাম্নে কী?
আপ্নের লেখা না দিলে কিন্তু খবর আছে! আমি ব্যক্তিগতভাবে বসে আছি পড়বার জন্যে, যে বিষয়গুলো নিয়ে আপনি যেভাবে লিখবেন, সেগুলো তো সেভাবে আমার লেখায় আসবে না।
হ! এইটা আমার মাথায়েও আছে। মজার তো কিছুই দেই নাই এখানে! অনেক কাট-ছাঁট করে ফেলেছি বাধ্য হয়েই, তাও বিশাল হয়ে গেছে। মজা আরো আসতেছে আশা রাখি। খালি আমারে একটু দম নেয়ার সুযোগ দেন, সিলেট ঘুরে এসে আবার যেই কে সেই হাল হয়ে গ্যাছে।
আর শীতে সিলেট (বা যেকোন সময়েই) গেলে আমাকে অবশ্যই জানাতে ভুলবেন না! ছুটি পেলেই আমি রাজি)।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
বিশাল ব্যাপার দেখা যায়! এবারে আমারও যাবার কথা ছিল, যাওয়া হয়নি। সবাই যখন সিলেটে আমি তখন বউ বাচ্চা নিয়ে ময়মনসিংহে, ধান ক্ষেতে দৌড়াদৌড়ি করছি। সিলেটে বেড়ানো সবসময়ের জন্যই পছন্দের, কিন্তু এতবার গিয়েছি একবারের জন্যও লালাখেল যেতে পারিনি।
একবার সুনামগঞ্জের নারায়ণতলা যাবার ইচ্ছা আছে, দেখি কখন যেতে পারি।
লেখা ভালো লেগেছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
আমরা কিন্তু আপনাদেরকে সত্যি মিস করেছি।
কিন্তু দেখেন ময়মনসিংহও অনেক প্রিয় জায়গা। আর আপনারাও আপনজনেদের সাথে ধান ক্ষেতে দৌড়েছেন। ( আচ্ছা, আমরা কেন ধানক্ষেতে দৌড়ালাম না?! এইতো নূপুরাপুর একটা ফল্ট পাওয়া গেল, দাঁড়ান মার্ক করে রাখলাম, নেক্সট য্যান এইটাও লিস্টে থাকে ধরতে হবে)!
সুনামগঞ্জ গেলে প্লিজ একটু আওয়াজ দিয়েন! আপনার সাথে বেড়াবার মজা বুঝেছি অপু ভাইয়ের গল্পে! (চোখ চকচক করে ওঠার ইমো)
লালাখাল নিয়ে একটা স্বতন্ত্র পোস্ট দেবার আশারাখি শীঘ্রই। সারি নদী আর লালাখাল এই দাবি রাখে!
অনেক অনেক
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
দুই/তিন পর্বে দিলে মজাটা একটু বেশি হতো মনে হয়...
যাক, ছবিগুলো দেখে বেশ লেগেছে। বিশেষতঃ এমসি কলেজের নামফলকের নীচের ল্যান্ডস্কেপ ছবিগুলো।
সিলেটি অনেকে সচলের সাথে দেখা করে ফেললেন দেখা যায়। দেখবেন, একদিন আমরাও...
আর ঝিম্পলাশের সোফিয়াজনিত তত্ত্ব জানতে মঞ্চায়...
_________________________________________
সেরিওজা
হুম! সবুর কর, আরো কিছু আসতেও পারে হয়ত।
আর নিশ্চয়ই দেখা করবে! সিলেট বেড়াতে গেলেই হয়ে যাবে মনে হয়। সবাই অনেক আন্তরিক।
ঝিম্পলাশের সোফিয়াজনিত তত্ত্বটা সবচেয়ে ভালো ব্যাখ্যা করবেন হলো গিয়ে নজরুল ভাই। তাছাড়া আমি এমনিতেই অনেক পচিয়ে ফেলেছি বেচারাকে। আর না পচাই।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
নীলকান্ত না নীলকণ্ঠ।
********************************************************************************
"কেউ বেশি খায় কারো খিদে পায় না, কেউ সস্তার কিছুই খেতে চায় না... আমি চিনি এমন অনেক যারা সারাদিনে কিছুই খেতে পায় না!"
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
আরে হ! রাতে তো কোনমতে পোস্ট করে দিয়ে ঘুমাইতে গেছি। সক্কাল ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রায় খাড়ায়েই ছিলাম আজকে
এখন আরেকবার পড়তে গিয়ে দেখি এই হাল! এক জায়গায় দেখলাম অপু ভাইকে আপু ভাই লিখে ফেলেছি! হে হে হে!
ঠিক করে দিমুনে পরে সময় করে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ বাই দ্য ওয়ে! আলাপ হয়ে ভালো লেগেছে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমি দুঃখিত
আপনাকে বিদায় জানাতে পারিনি।
পরে অবশ্য নুপুর আপাকে ফোন করে বলেছিলাম আপনাকে বলতে।
********************************************************************************
"কেউ বেশি খায় কারো খিদে পায় না, কেউ সস্তার কিছুই খেতে চায় না... আমি চিনি এমন অনেক যারা সারাদিনে কিছুই খেতে পায় না!"
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
আরে ধুর! এত ফরমালিটিস এর কী আছে? মেসেজ পেয়েছিলাম, ধন্যবাদ।
আর আমি বলেইছিতো, এমনিতেও বিদায় ভালো পাই না। তার চেয়ে বরং আবার দেখা হবে সেইরকম ভাবাই ভালো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
খুব ভাল লাগল যাযাবর ব্যাকপ্যাকার।
(এই ট্রিপে ছোটখাটো একটা আমন্ত্রণ আমরও ছিল। এবং সেই সময়টাতে আমার সিলেটের দিকে থাকারও কথা ছিল। কিন্তু মায়ের অসুস্থতার জন্য ঢাকা ছেড়ে যেতে পারছিলাম না। মিস করলাম।)
বৃহত্তর সিলেটে যেহেতু বড় হয়েছি, সিলেটকে নিয়ে অনেক সুখস্মৃতি তো থাকবেই। তবে মনে হচ্ছে আস্থে আস্থে সব পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। (৮/৯ বছর আগের একটা ছোট ঘটনা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে। রোজা ঈদের পরের দিন এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। কিছুটা অচেনা জায়গা, পায়ে-হাঁটা চিকন পথ ধরে মটরবাইকে যাচ্ছি একাই। একজায়গায় এসে রাস্তা হারিয়ে একটা পথের ডেড এন্ডে চলে এসেছি – একটা উঠোনের চারিপাশে কয়েকটা ঘর, বাচ্চারা/বড়রা সবাই উঠোনে বসে অলস আড্ডা দিচ্ছে। আমি মটরবাইক নিয়ে সরাসরি উঠোনে - ভুল স্বীকার, কোনটা ঠিক রাস্থা এসব কথা হয়ে যাবার পর যখন চলে আসব – লোকজন অবাক। ঈদের পর দিন বাসায় মেহমান এসে মিষ্টি না খেয়ে চলে যাবে এটা কি হয় নাকি...?)
ঝিম্পলাশ!!!
@ তাসনীম – শ্রীমঙ্গল কিন্তু জেলা না।
মৌলভীবাজার জেলার ‘সাত-নম্বর’ বলে একটা জায়গায় নির্জন পাহাড়ের উপর পাশাপাশি অনেক পুরানো তিনটা বাংলো-টাইপ থাকার জায়গা আছে। অনেক আগে এক্সপাট্রিয়েটদের জন্য বানানো হয়েছিল – এখন একটা এনজিওর ত্তত্বাবধানে আছে – কেউ থাকতে চাইলে থাকতে পারে। খুব ইচ্ছে একটা সচল-আড্ডার ব্যবস্থা করা এই শীতে......।
অনেক ধন্যবাদ নৈষাদদা!
আমিও কিন্তু শুনেছিলাম যে আপনি যেতে পারেন আমাদের দলে। আচ্ছা বেশ, পরেরবার হবে নিশ্চয়। আশা করি মা ভালো আছেন এখন?
আপনার সিলেট স্মৃতিগুলো কি আছে ব্লগে? পড়তে আগ্রহী।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
শীত কালে বাস বা ট্রেইনে যখন শ্রীমঙ্গল পার হইতাম, মনে হৈত একটা বরফের টুকরার ভেতর দিয়া যাইতেছি। সাথে থাকা সব গরম কাপড় দিয়াও এই ঠান্ডারে কাবু করা যাইতনা। এরকম চল্লিশ মিনিট চলার পর আবার আগের অবস্থায় ফেরত আসতাম। এরকম তিনটা শীতকাল আমি সিলেট-চট্টগ্রাম আসাযাওয়া করছি। আহা কী সব দিন যে ছিল। কষ্টের কিন্তু অমূল্য।
লেখা ছবি দুটোই
আপনাকে অনেক
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
মাইনাচ টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি! ব্যাপক হিংসাইলাম, রাগে দু:খে ক্ষোভে অভিমানে আফসোসে জ্বলতে জ্বলতে এতটুকু হইয়া গেলাম, নাহ, এখন থেইকা সচলাড্ডার নাম দেখলেই সেই পুস্ট থিক্কা দূরে থাকুম।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
কন কী??!!
সিলেট দেখলে ঢুকবেন তো??
আপনি, প্রজাপতি আপু, সামারা দেশে আসলে তো অনেক সচলাড্ডা পাবেনতো আশা করি। নজরুল ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলেই দেখবেন অটো আড্ডা হয়ে গেছে, ঢাকার সবাই আর আমরাও গেলে ওঁর ওখানে হামলে পড়ি। আমাদের নজরুল ভাইকে হলেন সচলাড্ডা বিশেষজ্ঞ!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমাদের সৌভাগ্য, দেশে ফিরেই আপনাদের সাথে দেখা হয়ে গেলো।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আপনাকে ধন্যবাদ। আর ভাবিকেও আবারো অসংখ্য ধন্যবাদ। আর মৃন্ময়কে অনেক আদর রইল।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সিলেট গেছি দুইবার। প্রথমবারে ১৯৯৬ সালের শেষ দিকে/১৯৯৭ এর প্রথম দিকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে। ৫ দিন ছিলাম সেবার। দ্বিতীয়বারে ২০০১ সালে ৭ দিনের ফিল্ডওয়ার্কে।
মনে করার চেষ্টা করতে গিয়ে দেখলাম বেশিরভাগ জিনিসই ভুলে গেছি!
লেখায়-ছবিতে পাঁচতারা।
কাকস্য পরিবেদনা
সিলেট ক্যাম্নে মানুষ ভুলে যায়?? (মাথা চুলকাবার ইমো)
পাঁচতারার জন্যে নাচানাচি (বুনো কই রে ভাই? নাচানাচির ইমো ক্যাম্নে দেয়?? শিখতে হপে!)
পড়বার আর মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ দ্রোহীদা।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ধুর! ভাল্লাগেনা!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
তোমারে ছাড়া আমাদেরও ভাল্লাগেনা!
যাউকগা! বান্দরবন বেড়িয়ে আস, এসে ছবিটবি দাও লেখাটেখা সহ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
গত বছর সিলেট গিয়েছিলাম। সেই প্রথম, এবং এখনও পর্যন্ত সেটাই শেষ। ছোটখাটো কিছু ঝামেলা, হালকা মনোমালিন্য বা সময়স্বল্পতার সমস্যা ছাড়া বেশ উপভোগই করেছি। সিলেটে মাঠের পর মাঠ, আকাশে নানান আকারের/রঙের মেঘ দেখে অন্যরকম ভালো লেগেছে। লাউয়াছড়াতেও গিয়েছিলাম!
এখানে কিছু ছবি আছে সেই সফরের।
লেখা, ছবি ভালো লাগলো। তবে সিরিজ হলে আরো ভালো হতো। অনেক কিছু বাদ পড়েছে। আর, ছবিও খুবই কম হয়ে গেছে মনে হলো।
হুম... লাউয়াছড়া যাব আমি... একদিন... দেখে নিও... তবে জান? ঐ রিজিয়নে আরো এগিয়ে গেলে আরো নাকি দেখবার অনেক জায়গা আছে, শ্রীমঙ্গল-মৌলভিবাজার যারাই সেভাবে বেড়িয়েছেন সবাই এই কথাটা বলেছেন... দেখি... আমিও একদিন...
আর কী হে? মন দিয়ে পড় নাই নাকি? ফাঁকিবাজি? ফুটনোট মিস করছ? বলেইছিতো ছবি-ব্লগ দেবার ইচ্ছা আছে!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সিলেট? আহ্! মনে করতে না চাইলেও কতকিছুই মনে পড়ে যায়!
পড়ে খুব ভালো লাগলো, তবে কিছুটা ফাঁকিবাজি করেছেন বোঝাই যাচ্ছে। আরেকটু ডিটেলস্ হতে পারতো। শাবির একটা ছবি দিলেন না যে?
শাবির ভেতর দিয়ে গেলেও আসলে শাবি ঠিক থেমে ঘুরে দেখা হয় নাই। আর পূজোর ছুটি বলে এমনিতেও সব বন্ধ ছিল। ছবি তোলা হয় নাই আসলে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
অত্যন্ত নিন্দাজনক। ভ্রমন কাহিনীর আড়ালে খাওয়াদাওয়ামূলক পোস্ট। দিক্কার!
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
খাওয়া দাওয়ার তো কিছুই এখানে লেখে নাই মাস্তারণী... এজন্যই বলছিলাম যে অনেক ডিটেইল মিস করছে। পুরাটা শুনলে যে কী কইবেন!
সিলেটের সচলরা অমানুষিক রকমের ভালো আর আপ্যায়ণ প্রিয়। এরপর সিলেটঞ্চলে যেতে সত্যিই অস্বস্তি হবে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই দেখি আমার জবাবটাই দিয়ে দিয়েছেন।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সিলেট আমার ভীষণ প্রিয়। অনেক অনেক স্মৃতি আমার এই সিলেটে।
লেখাটা খুবই ভালো লাগলো যাযাবর।
সচলায়তন একটি মিষ্টি পরিবার।
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
ভাইয়া আপনার মন্তব্য পেয়ে আমার ভালো লাগলো অনেক। ধন্যবাদ আপনাকে পড়বার জন্যে, ভালো লাগার জন্যে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
দুর্দান্ত লিখেছেন।
সাড়ে ছয় বছর ছিলাম সিলেটে, চার বছরের শাবি'র ডিগ্রী শেষ করার জন্যে! কিন্তু মনে হচ্ছে আপনি এক ভ্রমণে আমার চেয়ে অনেক বেশি দেখেছেন সিলেট। পুরনো অনেক কথা মনে পড়ে গেলো।
সোনার খাঁচার দিনগুলো মোর রইলো না...
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন খুব অন্যরকম একটা সময়, তাই না?
অনেক আপনাকে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কত্তো মজা হলো, তাই না? শীতে আর না হলে বর্ষায় সিলেটে যাব। আগে গুছিয়ে উঠি।
পোস্ট ভাল হয়েছে, খালি 'ইমো' কম দিও। দেখে মনে হচ্ছে বাচ্চারা যেরকম স্টিকার লাগায় খাতায়, ওরকম।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।
আপনি তাড়াতাড়ি গোছানো শেষ করেন। বেড়াবার না কত প্ল্যান করলেন দেশে ফিরে?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সিলেট যেতে মন চায়...
কতদিন সিলেট যাওয়া হয় না...!!!
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
সিলেট কৃষি কলেজের বদলে সম্ভবত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হবে। কারণ, ইকো পার্ক এলাকায় জানামতে কোনো কৃষি কলেজ নেই, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আছে।
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
অনেক ধন্যবাদ কারেকশন করে দেবার জন্যে, আমি ছবিতেও চেক করে দেখলাম। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ লেখার সময় মনে হয় এটাও কলেজ হয়ে গেছে ভুলে!
এডিট করবার সময়ে ঠিক করে দেব।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আহ সিলেট, হায় সিলেট।
হেল্লোওওও টিম লিডার!
স্লামালেকুম!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
দুর্দান্ত ভ্রমণব্লগ হইছে। লেখা ছবি বর্ণনা সব
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
আমার সব লেখায় তারকাখচিত করার জন্যে দাদাভাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
(আচ্ছা, খাড়াও! এর আগেরটায় করেছিলা? করে দিও মনে করে!)
অনেক অনেক
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
লেখাটা বি-শা-ল। তবে ভালো হইছে। কিন্তু অহেতুক কয়েকজন মানুষের মর্যাদা উন্নয়ন করার চেস্টা করা হইছে দেখলাম। সেসব ছাড়া বাকিসবই ভালু হইছে।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
দীর্ঘশ্বাস!
এইসব সুযোগ বালির মতোই শুধু হাত গলে বেরিয়ে যায়...
দূরে থেকেও লেখার সাথে একাত্ম বোধ করলাম খুব।
তৈলরং না জেনেও সমস্যা হয়নি খুব একটা। দুটো ছবি আমার কাছে ভীষনরকম তৈলচিত্রের মতোই লাগছে। সুন্দর!
রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে নক্ষত্ররাজি খুজে বেড়ানো যাযাবর ছুয়ে গেলো। আমিও আকাশ দেখেতে ভালোবাসি।
ফটোব্লগের আশায় রহিলাম। আড্ডাবাজির ছবি দেখবাম...
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
অনেক আপু। আপনার যাবার অনেক সাধ ছিল, কিন্তু যেতে পারলেন না, সেজন্যেই হয়ত লাউয়াছড়ার ট্রেকিংটা শেষপর্যন্ত হয়ে উঠল না এবার আর।
অসুবিধা নেই, আবার হবে ঠিকই।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
তোমাকে, এবং সংশ্লিষ্ট বাকিদেরও ত্যাজ্য করলাম!!!
ক্ল্যাসিক স্নিগ্ধা'পু---হা হা হা !
আমি কিন্তু জানিয়েছিলাম মনে হয়, যে যাচ্ছি!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
দারুন লেখা, দারুন সব ছবি, দারুন ফাটাফাটি এক সচলাড্ডা আর দারুন দারুন সব মন্তব্য। এমন একটা সচল আড্ডা করতে মন চায় ।
এক্ষুনি দেশে যেতে মন চাইছে দিদি আপনার পোস্টটি পড়ে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
মানুষ কত কি করে ফেলতেছে আর আমি কি করতেছি
এতো চমৎকার একটা সচলাড্ডা হয় না কেন এখন?
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
নতুন মন্তব্য করুন