রোদসী

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: রবি, ০৬/০৩/২০১১ - ৫:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিকেলের মিঠে রোদ খেলা করছিল চুলে, গালে। মৃদু বাতাসে কপাল, কানের পাশে থেকে চোখেমুখে এসে পড়া চুলগুলো না সামলে শক্ত করে রিকশার হুড ধরে বসে ছিল মৃত্তিকা। পহেলা ফাল্গুন, বসন্তের প্রথম দিন। আজকে ভিড়টা টিএসসি, বইমেলায় আরো বেশি। বিশ্বরোডে এ সময়ে কোনো জ্যাম নেই, রিকশা প্রায় উড়িয়ে নিয়ে চলেছে কমবয়েসী রিকশাচালক ছেলেটা।

জ্যাম নেই বলে যে রাস্তা ফাঁকা তা না, ভারি যানবাহন প্রচণ্ড বেগে রিকশার পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে, যেকোনো সময়ে রিকশাটাকে পিষে দিয়ে যেতে পারে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভেতরে ওদের ক্যাম্পাসের সামনে থেকে রিকশা নেবার পরপরই পঙ্ক্ষীরাজের মতো রিকশা ছুটিয়ে দিয়েছে ছেলেটা।
রিকশাওয়ালা ছেলেটা পরোয়া করে না, আর মৃত্তিকা খেয়াল করে না।

রিকশায় ওঠার সময়ে কী বলেছিল মনে নেই ওর। প্রতিদিনের অভ্যাসে ওটা যান্ত্রিক হয়ে গেছে, না ভেবেও মুখ দিয়ে আউড়ে যাওয়া যায়। যেভাবে আউড়ে যাওয়া যায় দৈনন্দিন ছোট ছোট সম্ভাষণ আর তার উত্তরগুলো। মুখের প্লাস্টিক হাসি, মজার কিছু দেখে সবার সাথে হেসে ওঠা। নিজের ভেতরটা একদম ফাঁকা হয়ে গেলেও, বাইরে সব করা যায় আগের মতোই, ঠিক যে ঘটনায় যেমন প্রতিক্রিয়া হবার কথা, তেমনটাই করা যায়, যান্ত্রিকভাবে, দীর্ঘদিনের প্রোগ্রামিং করা ব্রেইন আসলে। মানুষ খুব অদ্ভুত প্রাণী, সব কিছু করতে পারে, মুখে মুখোশ এঁটে নিলেই চলে খালি।

আজকে ওর মাথাটা খালি। কিন্তু খালি বললেই কি খালি হয়? কী ভাবছে ও আসলে, সেটা বোঝার চেষ্টা করে। হয়েছেটা কী? কেন আজকে সারাদিন ক্লাসে একটুও মন দিতে পারেনি। কী কী ক্লাস ছিল আজকে? কী ছিল লেকচারে? কেন আজকে যান্ত্রিকভাবটা খুব প্রবল? সকালটা কেমন ছিল? সবই তো প্রতিদিনের মতোই ছিল, সকালের জ্যাম, জ্যামে সিএনজিতে আটকে থাকা অবস্থায় ব্যাগে রাখা গল্পের বই পড়া, ক্লাসেও নতুন কিছু হয়নি। দৈনন্দিন ক্যাফেটেরিয়ার লাঞ্চ একই বন্ধুদের সাথে। সব একই রকম। বরং ক্যাম্পাস উৎসবমুখর ছিল আজ। ওদের প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি হলে কী হয়? ভালোই উৎসব লেগে থাকে, বাঙালির বারো মাসে, তের পার্বণ ওরা ভালোমতোই পালন করে ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন ক্লাবের আয়োজনে। অনিন্দিতা লাল টাঙাইল তাঁতের শাড়ি পরেছিল, সুমন খাদির পাঞ্জাবি। মিলির জিন্সের সাথে ‘যাত্রা’ থেকে কেনা চমৎকার হলুদ ফতুয়াটা ওকে খুব মানিয়েছে বলেছিল মৃত্তিকা। মন থেকেই বলেছিল। ঠিকই তো আছে সব! সকালে দেরি হয়ে যাচ্ছে বলে তাড়াহুড়ো করে বেরুবার সময়ে মা-এর বাড়িয়ে ধরা চা-এর কাপটাও নিয়েছিল, চা না খেয়ে বেরুলে দিন খারাপ যাবার একটা সম্ভাবনা ছিল হয়তো। আর সবাই কী কী করেছিল আজকে? সবই মনে করার চেষ্টা করে একে একে।

খুব জোরে রিকশা ছুটিয়ে দিয়েছে ছেলেটা। রিকশায় বাতাসের ঝাপটা লাগছে মুখে। বাতাসের সাথে ছুটে চলে যেতে ইচ্ছা হচ্ছে ওর। আশেপাশে তাকায়, পাশের রিকশাগুলো দেখে। অফিস শেষে ক্লান্ত বাবা, বিকেলের বাজার করে ফেরা একজন বৃদ্ধ, কলেজ ফেরত দুইজন ছাত্রী। একটা রিকশায় ঝুঁটি বাঁধা লাল-হলুদ ফ্রক পরা একটা পরীর মতন বাচ্চা আর তার বাবা-মা, ঋতুরাজকে বরণের উৎসবের সাজে সাজা উচ্ছ্বল পরিবার। ওর রিকশা হুশ করে পাশ কাটিয়ে যায়, মনে মনে রাগ হয় ওর, দেখতে ভালো লাগছিল পরিবারটাকে। ডানে প্রাইভেট কারে পুরো ফ্যামিলি, সেজেগুজে কোনো অনুষ্ঠানে যাচ্ছে। অন্য একটা গাড়িতে স্কুলফেরত ক্লান্ত একটা ক্লাস সিক্স-সেভেনে পড়ুয়া ছেলে, মাথা এলিয়ে দিয়ে আছে, মনে হয় আবার দৌড়ুচ্ছে কোচিং-এ। মায়া লাগে দেখে। উৎসবের পাশাপাশি এ শহরে চলে দৌড়, সবকিছুরই দৌড়, সবকিছুতেই দৌড়, পিছিয়ে পড়তে রাজি নয় কেউই। ওর রিকশা অন্য একটা রিকশার পাশে চলে আসে, দুটি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেমেয়ে, হাসছে দুজনাই, মগ্ন নিজেদের মাঝে, আলাদা একটা জগৎ যেন ওদেরকে ঘিরে, সুন্দর লাগছে দুজনাকে।

চোখ তুলে আকাশ দেখে মৃত্তিকা, নীল নীল, সাদা ছিটেফোঁটা মেঘ কি? উপরের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে জমা পানিগুলো অভিকর্ষজ ত্বরণে নিচে পড়বে না। উজ্জ্বল আকাশ দেখে, ভেতরের নিজের ভেতরের গুমরে ওঠা হাহাকারটার বিশালত্ব আকাশের চেয়ে কম অনেক, অনেক কম। ঐ ফাঁকা জায়গাটা কাওকে বোঝাতে ইচ্ছা করে, তেমন কাওকে মনে করার চেষ্টা করে আকাশের দিকে তাকিয়ে। অমি, মিতুন, বন্ধুদেরকে কেবলই তো ছেড়ে এল, সহপাঠীদের, সাদাত, অপি, তুরিন – ভাই বোনদের নাম মনে করে, উহুঁ, এটা বুঝবে না কেউ। অন্যদের সাহস যোগাতে, উৎসাহ দিতে ঠিকই পাশে থাকে, কিন্তু নিজের কথা সেভাবে বলতে ইচ্ছা করে না কখনোই, তবুও মাথা হাতড়ে কথা বলার মতন তেমন কাওকে খুঁজে না পেয়ে নিজেকে খুব ব্যর্থ মনে হয়। নেমে আসা চিবুকটা আবার উঁচু করে ফেলে চট করে, চোখ মেলে আকাশ দেখে, বাতাস লেগে জ্বালা করে চোখ। কেউ যেন না দেখে!

ডানে বারিধারা এলাকায় ঢুকেই ওর অন্যমনস্কতায় রাস্তা ভুল করে রিকশাওয়ালা ছেলেটা। তার প্রশ্নের জবাবে উত্তর দেয় না মৃত্তিকা, রাস্তা বাতলে দেয় না, কথা বলতে গেলে নিজের ভাঙা আওয়াজকে ভরসা হয় না ওর। অন্ধকার হয়ে আসছে, লালচে পশ্চিমাকাশে তাকিয়ে থাকে ও, শহুরে পাখিদের একটা ঝাঁক বাড়ি ফিরছে সেটা দেখে। চোখে আবার পানি জমছে টের পায়, কিছুতেই হার মানবে না পণ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। ঘুরপাক খেয়ে আবার ঠিক রাস্তায় পড়ে রিকশা।

আলো কমে আসায় ওর মুখের ভাব আর আগের মতো শক্ত করে রাখার দরকার হয় না, বিষণ্ণ সন্ধ্যার মতোই বিমর্ষ মুখ ওর। বাতাসটা ঠাণ্ডা। বসন্ত এলেও প্রকৃতি শীতের কথা ভুলিয়ে দিতে অনাগ্রহী। ঢাকার শীত কিছুই না, উত্তরবঙ্গে প্রায় শূন্যের কাছে নেমে যাওয়া মাঘের শীতে শুধু ছেঁড়া কাঁথা গায়ে ঘুমায় কত মানুষ, নিজের হিম ভাবটা কাটাতে অন্য চিন্তার চেষ্টা করে। তবুও অভাব বোধ করে উষ্ণতার।

সাঁঝের ফিকে হয়ে আসা আলো ছাপিয়ে আশে পাশের দোকান আর বহুতল ভবনের আলোর বন্যা ভাসিয়ে দিচ্ছে কৃত্রিম যান্ত্রিক নগরীকে। ঐ আলোজ্বলা দোকানগুলো এমনিতে ভালোই লাগে মৃত্তিকার, সেখানে নতুনত্ব আছে, হরেকরকম মানুষের ভিড় আছে। এই শহরের নিজের একটা ছন্দ আছে, একেক অংশের একেক রকম তাল আছে, যারা নতুন আসে তারাও একসময়ে সেই ছন্দে মিশে যায়, শিখে যায় তাল মিলিয়ে শহরের বিভিন্ন অংশের লয়ে হারিয়ে যেতে।

শীত করছে, একটা হালকা শাল রাখতে হতো সাথে, জ্বর জ্বর লাগছে। বনানীর কাছে পৌঁছে দিন শেষে ফিরতি এক ঝাঁক তরুণ-তরুণীর একটা ফাস্টফুডের দোকানে হল্লা করে ঢুকে যাওয়া দেখে। ওরকম মৃত্তিকারাও যায়, ব্যস্ত দিন শেষে আড্ডা হয়, হাসি হয়, তাজা হয়ে ওঠে সবাই। আজকে সারাদিন ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে হয়েছে ইউনিভার্সিটিতে, আজকে শুধু মৃত্তিকার নিজেকে বড় ক্লান্ত লাগছে। একটা কিছুর আজকে বড় অভাব ছিল এত কিছুর মাঝেও। স্বাভাবিক আরেকটা দিনের পরেও, হাসি ঠাট্টার মাঝেও তাই আজকে মুখোশ ছিল, সবার ভিড়ে হই হল্লায়, পড়া লেখা ছাড়াও আরো নানান কর্মকাণ্ডে মেতে থাকা আর দশটা ছেলেমেয়ের মতোই সাধারণ একটা দিনের পরেও আজকে একটা ভীতি গ্রাস করে রেখেছিল ওর অবচেতন মনকে। ফাঁকা জায়গাটা প্রকট হয়ে ওঠার ভয়। ভিড়ের মাঝেও একা হয়ে যাবার ভয়।

বাড়ির উল্টোদিকের বড় রাস্তার কাছে এসে ঘ্যাঁচ করে ব্রেক কষে রিকশা, প্রায় ছিটকে পড়তে পড়তে সামলে নেয় মৃত্তিকা। বিরক্ত হয়ে রিকশাওয়ালা ছেলেটার দিকে তাকায়, আর চোখের কোণে জমে থাকা জলবিন্দুগুলো তপ্ত গাল বেয়ে ঝরে পড়ে।
রিকশাচালক ছেলেটা থতমত খেয়ে তাকিয়ে থাকে, “আফা, ব্যথা পাইসেন? বুঝতে পারি নাই!” নিজের দোষ মনে করে অপ্রস্তুত হয়।
এত কষ্ট করে ধরে রাখা চোখের পানির এহেন হেলায় খুব রাগ লাগে মৃত্তিকার, প্রয়োজনের চাইতে জোরে চেঁচিয়ে উঠে বলে, “কী, পেয়েছ কী? তখন থেকে বাজে চালাচ্ছ, আর এখন আরেকটু হলে ছিটকে ফেলে দিয়ে মেরেই ফেলছিলে!”
শুধু শুধুই অপ্রস্তুত ছোট ছেলেটার সাথে অন্যায় রূঢ় ব্যবহার করা হচ্ছে টের পেয়েও না বোঝার ভান করে তিনটা ১০ টাকার নোট অনেকটা ছুঁড়ে দিতে দিতে নেমে যায় রিকশা থেকে।

দৃষ্টি মাটিতে নামিয়ে আনতেই আরো ক’ফোঁটা পানি ঝরে পড়ে গালে। হাত তুলে মোছে না মৃত্তিকা। কী যায় আসে? কে দেখবে, দেখলেই বা কী? হেরে গেছে নিজের কাছেই নিজে। ভারি অভিমান হয় ওর, মনে হয় সব দোষ ঐ শীর্ণ দেহের ছেঁড়া শার্টের ছেলেটার! আজকে অত জোরে রিকশা না চালালে, ঐভাবে হু হু হাওয়ায় মাথাটা আউলে না গেলে, আশেপাশের মানুষদের আনন্দ কোলাহল দেখে কখনোই এমন হিংসা হতো না ওর।
আজকে ঐ রিকশাচালক ছেলেটার কারণেই শুধু পরাজিত মৃত্তিকা, পরাজিত অরণ্যের স্মৃতির কাছে।


মন্তব্য

ফাহিম হাসান এর ছবি

পোস্ট দেখে আমি ভাবলাম ছবি পোস্ট দিসেন। তাড়াতাড়ি খুলে দেখি গল্প।

লেখা ভালো লাগলো।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হে হে, ফাঁকিবাজি পোস্ট দিলাম আরকি। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সুপ্রিয় দেব শান্ত (অতিথি) এর ছবি

লেখা ভালো লেগেছে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

সময়টা এক নয়-
এর ওর তার ।
সময় দিয়ে তাই
বৃথা চেষ্টা জীবন কে মাপবার ।

লেখা পড়ে খুব ভালো লাগলো । কোন গল্প ছাড়াও প্রতিটি উপলব্ধি এক একট গল্পেরই মতন ।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

"রোদসী" মানে কী?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমি জানতাম 'রোদসী' অর্থ 'ক্রন্দসী'। আজ ভোরে বুনোর সাথে গল্প করার সময়ে জানলাম রোদসী-র আরেকটা অর্থ - 'পৃথিবী ও স্বর্গ', খুব ভালো লাগলো এই অর্থটা, তাই নাম হিসেবে ওটাই রেখে দিলাম, বুনোকে ধন্যবাদ।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

লেখা পড়ে এখনকার ঢাকার ছবি দেখতে পেলাম। ভালো বর্ণনা!

--------------------------------------------------------------------------------

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো আপু। অনেক ধন্যবাদ।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

চলুক

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

দারুণ!
রিকশায় হু হু ভ্রমন মানে শুধুই ভ্রমন নয়... চলুক
একটা মুখোশ দরকার...

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ধন্যবাদ আপু।

সবারই মুখোশ আছে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সুরঞ্জনা এর ছবি

হুমম..
চিন্তিত
সন্দেহ ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে,
দিকে দিকে রহস্যের জট পাকাচ্ছে... চিন্তিত
শীঘ্রই , অতি শীঘ্রই, রহস্যের সুরেলা সমাধানে সকলে তন্ময় হয়ে বুদ্ধিবৃত্তির শৈল্পিক চর্চা অবলোকন করতে পারবে...
দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

অ! চিন্তিত

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হে হে, ফাঁকিবাজি পোস্ট দিলাম আরকি। হাসি মন্তব্য ভুল জায়গায় হয়েছে

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ভালো লেগেছে।

...........................
Every Picture Tells a Story

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

ঢাকায় এদ্দিন হইহল্লা করে এসে এরকম দুঃখুদুঃখু গল্প দিলা? চিন্তিত

আহারে মাইয়াটা, কেবল কান্দে, কাছেপিঠে থাকলে একটু হাতটাত বুলিয়ে আদর করে দিতুমনে... খাইছে

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

তারচে চক্কেট দাও বরং! চাল্লু

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

আপ্নের মতলব কী, অ্যা!! চিন্তিত

কৌস্তুভ এর ছবি

চোখ টিপি

"বুঝ লোক যে জান সন্ধান"...

ওডিন এর ছবি

শহরের বর্ণনাটা দারুণ! আর গল্পটাও সুন্দর, কিনতু ওইযে কৌস্তভ'দা যা বললেন, একটু দুঃখুদুঃখু মন খারাপ

কৌস্তুভ এর ছবি

আমি 'দা নই গো ওডিন্দা, আপ্নাদের আদর ভালুবাসা আর চক্কেটপ্রার্থী একখান ছুডুভাই... দেঁতো হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

কৌদা দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

ওঁয়া ওঁয়া

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হুম! মুখোশের আড়ালে কখন যে স্বর্গের আনন্দ আর পৃথিবীর বেদনা লুকিয়ে থাকে তা বলা মুশকিল আসলে।

থেঙ্কু। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ওডিন এর ছবি

আদুরভালুবাসাআশির্বাদ সব ঠিকাছে, কিন্তু চক্কেটটা বাদ রাখতে হবে যে। দেঁতো হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

হেঁহেঁ... সেদিন যাযাদি'কে বলছিলাম, যে এইবার শীতে বাড়ি ফেরার সময়, অন্যান্যবার যেমন নিয়ে যাই এবার তার ডবল পরিমাণ সুইস চকলেট নিয়ে গেছিলুম। কেন, সে বলাই বাহুল্য। কিন্তু হৃদয়হীন ব্যাটারা ভিসা না দেওয়ায় আত্মীয়পরিজনদের মধ্যেই বেশি বেশি করে বিলিয়ে দিতে হল...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আরে বোকা, কথাতো শুনলেনা। ঐ এক্টট্রা চক্কেটগুলো আত্মীয়পরিজনদেরকে না দিয়ে বরং ভিসা অফিসে বিলিয়ে ওদেরকে হাত করে ভিসাটা বাগিয়ে নিয়ে সোজা আমাদের বাড়িতে চলে এসে বাকি চক্কেটগুলো শুধু একা আমাকে দিয়ে দিতে হতো বুদ্ধিটা বাতলে দিয়েছি বলে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে... এইটা তো শুরু-শুরুতেই বলতে হয়! চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে, কিন্তু চোরটা তো পালিয়েই গেল?

যাহোক এইটা ভাল আইডিয়া... তোমার হাতে সব বমাল সমর্পণ করব, তারপর ওডিন্দা এবং বাকি সবাই নিজের নিজের বখরা বুঝিয়া লইবে তোমার থেকে...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

বুঝায়ে দিলে না...! শয়তানী হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সজল এর ছবি

গল্প ভালো লাগলো। পোস্টে চকলেট সংক্রান্ত আলোচনা দেখে মনে পড়লো, আজকে দুপুরেই তিন ধরনের চকলেট কিনে এনেছি, এবার এগুলোর ব্যবস্থা করা যাক।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

তাহলে, 'চকলেট কী এবং কেন ও কয় প্রকার' শীর্ষক একটা পোস্ট দেবার দাবি জানালাম!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

একা একা চকলেটের ব্যবস্থা করার ঘোষণা দেয়ায় দিক্কার!
আর এমনিতে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বেড়ে লিখেচেন আপু! হাসি

এত কষ্ট করে ধরে রাখা চোখের পানির এহেন হেলায় খুব রাগ লাগে মৃত্তিকার, প্রয়োজনের চাইতে জোরে চেঁচিয়ে উঠে বলে, “কী, পেয়েছ কী? তখন থেকে বাজে চালাচ্ছ, আর এখন আরেকটু হলে ছিটকে ফেলে দিয়ে মেরেই ফেলছিলে!” শুধু শুধুই অপ্রস্তুত ছোট ছেলেটার সাথে অন্যায় রূঢ় ব্যবহার করা হচ্ছে টের পেয়েও না বোঝার ভান করে তিনটা ১০ টাকার নোট অনেকটা ছুঁড়ে দিতে দিতে নেমে যায় রিকশা থেকে।

মন খারাপ

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

চকলেট শুধু নারী;এর ভাগে পড়বে কেন জানতে মন চায়। আমরা আর কতকাল নিজের টাকায় চকলেট কিনে খাবো আর বিলাবো!!! ওঁয়া ওঁয়া

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

কিনে খাচ্ছেন সেটা তো বলছেনই, আবার বিলুচ্ছেনও নাকি!! কী সর্বনাশ! ব্যঞ্চাই!!! কস্কি মমিন!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

না, মানে, আমার আবার কোমল মন কি না, নারীদের দুষ্ক সৈতারি না ইয়েস বাঘ মামা, ইয়েস!!!

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

ভাল্লাগ্লু ... গপ্প তো তুমি ভালু লেখ ... !!! চোখ টিপি

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হে হে হে, রিকশায় করে হাওয়া খেলেই দু'চারটা ব্লগরব্লগর আইডিয়া পাওয়া যায় আরকি। হাসি
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা পছন্দ হয়েছে।
আমার জীবনে হু হু করে ছোটা রিক্সা মানেই এক্সিডেন্ট...

বন্দনা

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমার পরিচিত বহুজনের হাত-পা ভাঙা থেকে বেশ বড়সর অ্যাক্সিডেন্ট এই রিকশাকেন্দ্রিক। কোন রকম নিয়ম না জেনে এই বাহনটা চালান আমাদের রিকশাচালকেরা। তবুও ইদানীংকার ইলেক্ট্রিক বা ব্যাটারি চার্জিত ছোট তিনচাকার গাড়িগুলোর (ঢাকায় পাবেন না, তবে ছোট শহরগুলো ছেয়ে গেছে প্রায়) চালকদের থেকে এঁরা মনে হয় তাও কিছু নিয়মকানুন জানেন!

রিকশা নিয়ে আমার নিজের অ্যাক্সিডেন্টও কম নয়, তবে হাত-পা ভাঙার সৌভাগ্য হয় নাই এখনো! কিন্তু রিকশা আমার অতি পছন্দের যান। তা সে দিন ভালো যাক আর বাজে, দরকারে হোক আর অদরকারে, মন ভালো থাকুক বা খারাপ, বাড়ি ফেরার সময়ে হোক আর কাজে যাবার (নাহ, এ সময়ে তাড়া বেশি থাকে, রিকশাভ্রমণে আনন্দ পুরোটা হয় না আরকি), আমার দারুণ লাগে রিকশায় চড়তে। রিকশার চেয়ে ভালো করে রাস্তা-ঘাট, পথচারী আর অন্যান্য বাহনে ব্যাস্ত-অলস নানান যাত্রীদেরকে অবজার্ভ করা যায় না মোটেও অন্য কিছু থেকে। হাসি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

রোদসী নামের অর্থটা জানতাম না। শেষ লাইনে এসে মনে হচ্ছিলো, নামটা "মৃত্তিকারণ্য" হলে কেমন হতো!

বহুবছর আগে এক সিনিয়র ভাই তাঁর বাসার ফোনের ওয়েলকাম টোনে আবছা, মার্জিত একটা যন্ত্রসঙ্গীতের সাথে আংরেজীর পাশাপাশি বেশ সুন্দর, স্পষ্ট বাংলায় বলতেন, "সোমাকাশে আপনাকে স্বাগতম..."। আকাশ ভাই সচলায়তন পড়েন কি-না জানি না, কিন্তু সচলায়তনে এই লেখাটা পড়ার পর মন্তব্য লিখতে গিয়ে আজকে ধুম করে তাঁর কথা মনে পড়ে গেলো। আমার করা সব নেতিবাচক কাজকেই তিনি নেতিবাচকতার সীমানা ছাড়িয়ে প্রবল বেগে ইতিবাচকতার কোর্টে নিয়ে ফেলতেন। সবকিছুরই যে ইতিবাচক একটা দিক আছে, সেটা বোধ'য় দেখাতে চাইতেন আকাশ ভাই। ঠিক নটর ডেম কলেজের ফাদার পিশোতো'র মতোন। যিনি নবীন বরণে বলেছিলেন, "তোমাদের এই বয়সে দুষ্টুমী তোমরা করবেই। নটর ডেম তোমাদের দুষ্টুমী সাদরে গ্রহণ করবে, কেননা এই দুষ্টুমীর ভেতর দিয়েই প্রকাশ পাবে তোমাদের প্রতিভা..."।

রিক্সার বর্ণনায় আরও একটা ব্যাপার হঠাৎ মনে পড়ে গেলো। "...শীতের ভেজা বাতাসের ঝাপ্টা!" প্রায় শতবর্ষ আগে গোটা গোটা হরফের একটা চিঠিতে এরকম একটা বাক্য পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো।

ধান ভানতে শীবের গীত গাওয়া হলো, এবারে ঢেঁকিতে পাড় দেই...
গল্পের সংজ্ঞা বা ব্যুৎপুত্তিতে যাচ্ছি না। তবে, "রোদসী" গল্প কম, ব্লগরব্লগর বেশি মনে হয়েছে আমার কাছে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

মজার ব্যাপার হলো ঘুরে ফিরে রঙীন ভাইয়ের মন্তব্যগুলো ইন্টারেস্টিং হয়। আর যেটা ভাবছিলাম সেটার সাথে মেলেও।

নামটা "মৃত্তিকারণ্য" হলে কেমন হতো!

বুনোর মতে এটা ক্লিশে হতো। একটা সিনেমা দেখেছিল নাকি, 'পাতা-বাহার' নায়িকার নাম পাতা, নায়কের নাম বাহার, অমন আর কি। আমার কিন্তু মনে হয়েছিল অসুবিধা ছিল না মোটেও। 'মৃত্তিকার অরণ্য' হতেই পারতো, বেশ একটা অদ্ভুত আঁতেল ভাব ছিল নামটায়, যেন ঠিক জিওফিজিক্স নিয়ে সাহিত্যিক প্রবন্ধ লিখেছে কেউ! কিন্তু মনে হলো অরণ্যের কথাটা সবার শেষে আসাই ভালো, নাহলে রহস্য থাকবে না একদমই। আর মৃত্তিকা নিজের কাছে নিজেই লুকিয়ে রাখতে চাচ্ছিলো যেহেতু। তবে আসল কথা হলো নাম নিয়ে বিস্তর গবেষণা শেষে 'পৃথিবী আর স্বর্গের' রেফারেন্সটা আমাকে খানিকটা বিস্মিত করে দিলো, একটা মাত্র শব্দে যে এত সুন্দর করে একই সাথে স্বর্গ-মর্ত্য প্রকাশ করা যেতে পারে তা জানা ছিল না, আর ওডিনদার জবাবে বলা কথাটা মাথায় ঘুরছিল-

মুখোশের আড়ালে কখন যে স্বর্গের আনন্দ আর পৃথিবীর বেদনা লুকিয়ে থাকে তা বলা মুশকিল আসলে।

হাসি

'সোমাকাশে' শুনে চমৎকৃত হলাম। বেশ কাব্যিক মানুষ মনে হচ্ছে। কিন্তু এখন কী আর তাঁদের বাসায় ফোন করা যায় না? নাকি এই আন্সারিং মেসেজ নাই? অনেকদিন পরে আপনার মনে পড়েছে যখন, তাঁদেরকে ফোন দিয়ে নিজের ইদানীংকার অপকর্মের জমে থাকা গপ্প শোনানো অবশ্য কর্তব্য মনে হচ্ছে! আফটার অল সব কিছুর পেছনেই একটা কারণ থাকে। চিন্তিত

চিঠির হরফ কার লেখা, কী বৃত্তান্ত জানতে চেয়ে আর বিপদে ফেলবো না! দেঁতো হাসি
তবে রিকশায় চড়লেই আমার মাথায় আইডিয়া গিজগিজ করা শুরু করে। তারই একটা হয়ে গেছে 'রোদসী'। এখন মাথায় তিনটা তিন রকম প্লট আছে, মুশকিল হলো এগুলো রিকশায় চড়লেই ডাল-পালা মেলে ঠিকই, কিন্তু রিকশা থেকে নেমে টেবিলের কাছে এলে হাওয়া হয়ে যায়! মন খারাপ

তবে, "রোদসী" গল্প কম, ব্লগরব্লগর বেশি মনে হয়েছে আমার কাছে।

হেন্স দ্যা ট্যাগিং! এটাতো রিকশায় বসে ভাবা ব্লগরব্লগরই আসলে। আর আমি ঠিক গল্প লিখিয়ে নই, ব্যাকপাক নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় ক্যাম্নে সেই লেখাতেই তুলনামূলক বেশি পারদর্শী মনে হয়। হাসি

আপনার রিভিউয়ের জন্যে এই অ্যাত্ত আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

শিরোনামটা দারুণ। ঢাকা শহরে রিকশা চড়া মুশকিল। যানজট ছাড়াও বিধিনিষেধের ভিআইপি ফ্যাকড়া। ২০ বছর আগের দিনগুলি মিস করি। মৃত্তিকার সাথে রিকশাভ্রমনটা ফাও পাওনা হলো হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমার মাথায় রিকশা চেপে যে গল্পটা এসেছিল তার কিছুই গুছিয়ে লিখতে পারিনি আসলে। ঐ যে, লেখার সময়ে দেখি গপ্প সব হাওয়া, বললাম যে! তাই চোখ বুঁজে ঐ পথে গেলে কী কী চোখে পড়ে, তা ভাবার চেষ্টা করলাম আবার। ব্যস এইটুকুই, পথের বর্ণনাই আসলে, তেমন কিছু বাড়তি নয়। হাসি
পড়বার জন্যে আর মন্তব্য করার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

খেকশিয়াল এর ছবি

গল্প ভালৈছে, দুঃখ করা ভাল ,আরো বেশি বেশি কইরা দুঃখ করবা হাসি

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ধইন্যা! আর ব্রেশ ত্রবে ঠ্রিকাছে খ্রেকুদা। টিস্যু বক্স লাগবে কিন্তু একখান, দুক্কু করতে করতে না, ঠাণ্ডা লাগায় সব টিস্যু নাক ঝেড়ে শেষ করে দিয়েছি! দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

"অবশ্য যাদেরকে সত্যি অনেক ভালোবাসা যায়, মাঝে মাঝে হয়তো শুধু তাদের জন্যেই সত্যিটা গোপন করতে হয় তাদের মুখ চেয়েই, দূরে সরে যেতে হয় তাদের জন্যেই, সেটাই হয়তো ঠিক... দূরে ঠেলে দেয়া পছন্দের মানুষটাকে, তার জন্যে, হয়ত কিছুটা নিজের জন্যেও। আর হয়তো নিজের আচরণের জবাবদিহি তখন তাদেরকে না দেয়াই ভালো, বা কখনোই। অথবা তাদেরকে ইচ্ছা করেই মিথ্যা বলা বা ভাব করা যে তার কথাটুকু তার আকাঙ্ক্ষাটুকু বুঝতে পারছিনা, হেসে উড়িয়ে দেয়া, হয়ত তার অনেক সাহস সঞ্চয় করে দীর্ঘদিনের নিজের সাথে বিতর্ক করে জয়ী হয়ে বলা কথাটুকুকে।" - গল্পের রোদসীই কি একদিন তার প্রিয় মানুষটাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল, বাধ‌্য হয়ে???
আপনার লেখা সত্যিই অনেক সুন্দর, তাই না চাইতেও প্রশ্নটা চলে আসলো.......

- সু. র.

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হতে পারে যে প্রিন্সেস এন্ড দ্যা ফ্রগের আলোচনায় রাজপুত্রই অন্তর্দ্বন্দ্বে পরাজিত হয়ে নিজেই ফিরে যায়। আবার রোদসী-র মৃত্তিকাও অন্তর্দ্বন্দ্বে জয়ী হয়ে যে কথা বলে অরণ্যই তা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়, এমনও হতেই পারে। সবই তো আসলে জীবনের গল্প, ঘুরে ফিরে হয়তো তাই সব গল্পই আসলে এক!
ধন্যবাদ পড়বার আর মন্তব্য করবার জন্যে। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আচ্ছা, আজকেই সৈয়দ মুজতবা আলীর 'মুসাফির' পড়তে পড়তে এক জায়গায় এই 'রোদসী' আর 'ক্রন্দসী' শব্দ দুইটা নিয়ে তাঁর একটা ইন্টারেস্টিং আলাপ পড়লাম। আঠারশ'র মধ্যভাগে জার্মানিতে যখন গ্যোটে, ম্যাকসমুলার হয়ে সংস্কৃত সাহিত্যচর্চার প্রভাবের তুঙ্গে জার্মান সাহিত্য সে সময়ে ব্যোট্‌লিঙ্ক-রোটে'র তৈরি করা সংস্কৃত-জার্মান অভিধানের প্রশংসা করেছেন এখানে আলী সাহেব। 'রোদসী' শব্দটা আর এর অর্থ আমার এতই ভালো লেগেছে যে অংশটা কোট করতে আজকে আবার এই পোস্টে লগ-ইন করলাম।

........................
কাজ তখন এত এগিয়ে গিয়েছে যে একখানা সর্বাঙ্গসুন্দর সংস্কৃত জর্মন অভিধান না হলে আর চলে না। দুই জর্মন পণ্ডিত ব্যোট্‌লিঙ্ক ও রেটা্‌ তখন যে অভিধান প্রস্তুত করলেন সেটি প্রকাশিত হলো রুশ সম্রাটের অর্থসাহায্যে সাত ভল্যুমে, ১৮৫২-৭৫ খ্রিস্টাব্দে।

এ অভিধান অতুলনীয়। কিয়দ্দিন পূর্বে পরলোকগত পণ্ডিতবর হরিচরণ বন্দোপাধ্যায় মহাশয়ই আমার জানামতে একমাত্র বাঙলা আভিধানিক যিনি তাঁর 'বঙ্গীয় শব্দকোষ' রচনাকালে এর পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছেন।

"ওই শুন দিশে দিশে তোমা লাগি
কাঁদেছি ক্রন্দসী"

এস্থলে 'ক্রন্দসী' শব্দের অর্থ কি? ভাসা-ভাসাভাবে অনেকেই ভাবেন, 'ঐ চতুর্দিকে "কান্নাকাটি" হচ্ছে, আর কি?' অন্যায়টাই বা কি? স্বয়ং নজরুল ইসলাম লিখেছেন, 'কাঁদে কোন ক্রন্দসী কারবালা ফোরাতে।' জ্ঞানেন্দ্রমোহনের কোষ অনবদ্য। তাতেও দেখবেন, 'সংস্কৃত অভিধানে পাই নাই, কিন্তু "রোদসী" পাইয়াছি। তার অনুকরণে অনুপ্রাসানুরোধে (!) 'ক্রন্দসী'। কবিবর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক উদ্ভাবিত (!) এবং বাংলায় প্রথম ব্যবহৃত। কিন্তু এতখানি বলার পর জ্ঞানেন্দ্রমোহন প্রকৃত কোষকারের ন্যায় অর্থটি দিয়েছেন ঠিক। 'আকাশ ও পৃথিবী; স্বর্গমর্ত্ত্য।'

ব্যোট্‌লিঙ্ক-রোটের সংস্কৃত-জ্ররমন অভিধানখানার প্রসঙ্গ উঠেছে বলেই এ উদাহরণটির প্রয়োজন হল। এ অভিধান জর্মন দেশ ও বাঙালার যোগসেতু।
একটু ব্যক্তিগত হয়ে গেলে পাঠক অপরাধ নেবেন না।

ছেলেবেলায় আমার মনে ধোঁকা লাগে 'ক্রন্দসী' শব্দ নিয়ে। সবে শান্তিনিকেতনে এসেছি। দূর থেকে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেছি। শুনে ভয় পেয়েছি, তিনি নাকি বিশ বছর ধরে একখানা বাঙলা অভিধান লিখছেন। বিশ বছর ধরে বাঙলা - সংস্কৃত নয়, গ্রীক নয়, বাঙলা অভিধান - বি...শ বছর ধরে। তখনো জানতুম না তারপরও তিনি আরো প্রায় বিশ বছর খাটবেন।

তাঁকে গিয়ে শুধাতে তিনি বড় আনন্দিত হলেন - আমি ভয় পেয়েছিলুম, তিনি বিরক্ত হতে পারেন। একাধিক বাঙলা অভিধান দেখালীন যাতে শব্দটা নেই। তারপর ব্যোট্‌লিঙ্ক-রোট পড়তে পড়তে বললেন, 'এইবার দেখো, জর্মনরা কি বলে।' তাতে দেখি, ডি টোবেণ্ডেন শ্লাখট্‌রাইয়েন, অর্থাৎ যে 'দুই সৈন্যবাহিনী হুঙ্কার করছে।' হরিহরবাবু বললেন, 'ঠিক, অর্থাৎ "দুই পক্ষ" - তার মানে উর্বশীর জন্য দু'পক্ষই কাঁদছে। কিন্তু তার পরেও এগোতে হয়। ঋগ্বেদের এই ২,১২,৮-এর টীকা দিতে গিয়ে সায়ণাচার্য "ক্রন্দসী" শব্দের অর্থ করেছেন "স্বর্গমর্ত্ত্য।'
উর্বশী কবিতায় রবীন্দ্রনাথও ক্রন্দসী শব্দ 'স্বর্গ ও মর্ত্য' এই মর্মে ব্যবহার করেছেন। কারণ স্বর্গে দেবতা এবং মর্তের মানব দুই-ই যে তাঁর প্রেমাকাঙ্ক্ষী, তার বর্ণনা তিনি এ কবিতায় দিয়েছেন।
....................

'মুসাফির' - সৈয়দ মুজতবা আলী

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।