রাজশাহীনামা-০২

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: শুক্র, ১১/০৩/২০১১ - ৬:৪০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আয় বৃষ্টি ঝেঁপে

আমাদের শহরে আজকাল আর বৃষ্টি হয় না।

গত বছর ঠিক কত মিলি বৃষ্টি হয়েছে তার খবর খুঁজতে ইচ্ছা করছে না, শুধু জানি হাতে গোনা পাঁচদিন বা তারো কম ঝমঝমিয়ে রাস্তা-ঘাট ভিজিয়ে দেয়া দাবদাহে ক্লান্ত মানুষকে এক পশলা শান্তির হাওয়ায় ভিজিয়ে দিয়ে গিয়েছিল বারিধারা।

বরাবরের মতোই এবারো পৌষের শেষে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছিল তাপমাত্রা, ৯-১০ তো ছিলোই দুই মাস আগেও। আর এখন মার্চের শুরুতেই খরা শুরু হয়ে গেছে। গাছগুলোতে পাতা ঝরে যাবার পরে বসন্তের কচি সবুজ কিশলয়ের সাক্ষাত মেলা দূরে থাক রাবি চত্বরের চিরসবুজ ঘাসগুলোও মরে গেছে দেখলাম।

আজকে ছুটির দিনে বেলা করে উঠে পিসি ছেড়ে বসেই জাপানের সুনামির খবর দেখলাম। টিভি ছেড়ে প্রকৃতির রুদ্রমূর্তি দেখতে দেখতে ভাবছিলাম অন্যকথা, আনপ্রেডিক্টেবল বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আজকে নতুন কোন অঘটনের খেলা দেখবো, এমন সময় মনে পড়লো আজকে দুপুরে একটা দাওয়াত আছে।

শহর আর গ্রাম

জায়গার নাম মেহেরচণ্ডী। রাজশাহীর মূল শহরের অদূরেই। গাড়িতে মিনিট পনেরো লাগে যেতে। বাবু ভাইয়ের ছোট বোনের বিয়ে। বছর ত্রিশেক আগেও রাজশাহী শহরের আশেপাশের অজপাড়াগাঁ অঞ্চল ছিল মেহেরচণ্ডী, ছোট বনগাঁ, বড় বনগাঁ, ডিঙাডোবা। প্রায় বছর বিশেক আগে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনার পরে ধীরে ধীরে এই জায়গাগুলোর জঙ্গুলে বুনো পথ পালটে হয়েছে পাকা রাস্তা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে শিক্ষার সুযোগসুবিধা, কৃষি ছেড়ে চাকরির প্রতি আগ্রহ, পাড়ার হাতে গোনা কিছু বিত্তবান মানুষের বাড়ি ছাড়াও কাঁচা বাড়ি থেকে পাকা দালানের সংখ্যা গত দশ বছরে বেড়েছে অনেক। বাবু ভাই আমার কাছাকাছি বয়সের হবেন, অর্থাভাবে এইচএসসি দেবার আগেই পড়ালেখা ছেড়ে দিতে হয়, পরিচিত কারো মাধ্যমে বাবার কাছে এলে তার চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। সেই থেকে আমাদের সাথে চেনাজানা। শহরের ভদ্রা হয়ে রুয়েট আর রাবির পেছন দিয়ে মেহেরচণ্ডী পৌঁছে বাড়ির ঠিক লোকেশন বের করতে ফোন দিলে, এগিয়ে এসে দাঁড়িয়ে থাকেন রাস্তার উপর।

মনে আছে ছেলেবেলাতেও ছোট বনগাঁ বা বড় বনগাঁয়ের নাম শুনলে মনে হতো কী ঝক্কি যাবার! আজকের দাওয়াত পেয়েই ঠিক করেছিলাম, যাবো। রাজশাহী শহরের আশেপাশের এলাকাগুলোর ভেতর মেহেরচণ্ডীর মাঝে শহর-শহর ভাবটা এমনিতে আগে থেকেই অনেক বেশি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল ৩০৪ হেক্টর ক্যাম্পাসের পেছনে (উত্তরদিক) চারুকলার শেষ মাথা থেকেই আসলে এই এলাকার শুরু। এখান থেকে চারুকলার দিক দিয়ে রাবি ক্যাম্পাসে ঢোকা যায়। রাবির অনেক ছাত্রই হলে সিট না পাওয়া পর্যন্ত স্বল্প খরচে মেহেরচণ্ডীর ছাত্রাবাসে থাকতেন অনেক আগে থেকেই। আমরা ছোট থাকতে শহরে প্রাইভেট ছাত্রাবাসের অভাব ছিল। রাজনৈতিকভাবে এই এলাকার দ্রুত উত্তপ্ত হওয়াও তাই বিচিত্র না।

মেহেরচণ্ডী মনে হয় ‘শহরাইজেশন’ হয়েছে সবচেয়ে দ্রুত। রাবির অত কাছে হওয়াটা প্রধান কারণ। দেখলাম ঘনবসতিপূর্ণ বাড়িঘর। এক বাসার ভেতর দিয়েই আরেক বাসায় পৌঁছে যাওয়া যায় প্রায়। পাকা রাস্তা ছেড়ে ইঁট বেছানো পথ ধরে এবার পায়ে হেঁটে আরো ভেতরে ঢুকে পড়ি। কাঁচা-পাকা ঘড়বাড়ি, কলাবাগান, আমগাছ, পুকুর-ডোবা-দীঘি মিলিয়ে আধুনিক গ্রাম। হাসি
এই রকমটা আমার বরাবরই ভালো লাগে। আর এই রকমটা আর কোন দেশে মেলে না মনে হয়। মুরগি ঘুরছে পাকা বাড়ির উঠোনে, মা মুরগি আড়াল করে রাখছে ছানা-পোনাদের, হাঁস খুঁটছে গুগলি শামুক ডোবায়। মজা পুকুর। বাঁশঝাড়। মাটির বাড়ি, পাশেই একটা পাকা দালান।

Ducks & Hens

বিয়েবাড়ি!

বাবু ভাই আমাদেরকে তাঁদের ছোট্ট বাড়িটার উঠোনে নিয়ে যান। তার আগে, অন্য দুটো বাড়ির মাঝে একটা বেবি আইসক্রিম ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। ছোট ছোট পোলাপান বিয়ে বাসার খাওয়াদাওয়া শেষে লম্বা 'ওভালটিন আইসক্রিম' আর কমলা 'কাঠি ললি' চুষছে। হাসি
আজকে ক্যামেরা ফেলে এসেছি বাড়িতে, আফসোস হয়।

উঠোনে টেবিল পাতা হয়েছে। পাড়া-প্রতিবেশীদের সমাজ বসেছেন খেতে। এখানে সবাই সবার কাজে হাত বাড়িয়ে দেয়। আমাদের শহুরে জীবনের অ্যাপার্টমেন্ট ভ্যালুজ, দিন শেষে বাড়ি ফিরে লিফটের কাছে দেখা হওয়ায় চারতলার ভাবির মেকি হাসি, বা সাত তলার চাচাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাবার ভাবটা, শহরের কাছের টেকনিকালি শহর এইসব এলাকায়, এখনো হানা দিতে পারেনি। পাড়া-প্রতিবেশী মিলেই সমাজ। সেই সমাজের সবার বাড়ি মিলেই একেকটা জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে। পাড়ার সবাই সাহায্য করেন সামাজিকতায়। এর বাড়ির দাওয়াতের খানাদানা তত্ত্বাবধান করে দেন অন্য বাড়ির বড় ভাই, জামাই। বরযাত্রীদের বসবার আয়োজন হয়েছে কি না খেয়াল করেন আরেক বাড়ির মুরুব্বি।

বাবু ভাই আমাদেরকে এক চিলতে উঠোনটা পেরিয়ে নিয়ে গিয়ে বসতে দেন তাঁর ঘরে। বাঁশের গায়ে কাদালেপা মাটির ঘর, টিনের চাল, ভেতরে চাটাই-ছনের ছাত করা, শীতল, আরামদায়ক। খাবার আয়োজন অনেক! মুরগির কোরমা, গরুর মাংস, খাসির মাংস, বুটের ডাল, সালাদ, দই-মিষ্টি। পেতে রাখা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে যাই হাত ধুয়ে।

বাবু ভাইয়ের বৌ আমাদের আপ্যায়ন করেন, পাশের পাড়ার মেয়ে। ওঁদের তিন বছরের বাচ্চা মেয়েটা সারাদিন ছোটাছুটি করে ক্লান্ত, ঘুমিয়ে যায় খানিকক্ষণের মাঝেই। বাবু ভাইয়ের বাবা-মা, বড় বোন, আমাদের খাওয়া-দাওয়া তদারকি করেন।

আপ্যায়ন

বরযাত্রী

খানিক্ষণের মাঝেই বরযাত্রী আসে। তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে ব্যস্ত হয় এবার সবাই। বর আর তাঁর সাথে আসা মুরুব্বিদের বসার স্থান করা হয়েছে সামনের বাড়ির পাকা বারান্দায়। এই পাড়াতেই আবার আমাদের পরিচিত আরো কিছু মানুষ থাকেন। তাঁদের একজন, আমার কর্মক্ষেত্রের সাত্তার ভাই ডালের বাটি নিয়ে তদারকি করছিলেন বরযাত্রীদের খাওয়া দাওয়া। আমাকে দেখে অবাক হন প্রথমে, পরক্ষণেই বাবু ভাইকে চিনি মনে করতে পেরে হেসে ফেলেন। খেয়েছি কিনা খোঁজ নেন। তাঁকে ব্যস্ত হতে নিষেধ করে আমি বেরিয়ে আসি উঠোন থেকে। গন্তব্য দুই বাড়ি পরে বৌকে যেখানে লুকিয়ে রাখা হয়েছে! এটা নাকি একটা রীতি এই অঞ্চলের। বরপক্ষ এলে, তাঁদেরকে আপ্যায়ন করা হয়। বৌকে লুকিয়ে রাখা হয় অন্য কোথাও। বরের বাড়ির লোকজন যখন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন, নতুন বৌয়ের জন্যে আনা জিনিস দিয়ে তাকে সাজিয়ে দিতে চান, তখন একটা নজরানার বিনিময়ে রফা হয় বৌ-এর হদিস দেবার।

হোসনে আরা আপু পাশের প্রতিবেশীর বাসায় সুন্দর একটা সূতি হলুদ-লাল পেড়ে শাড়ি পরে অপেক্ষা করছেন চুপ করে। আমরা শুভেচ্ছা জানাতে গেলে উঠে আসেন, ঘরের দোরেই দাঁড়িয়ে থাকেন। মিতভাষী। ঘর থেকে বেরুন না।
বরের বাড়ি তানোর। জমিজমা আছে। ধরাবাঁধা কোনো কাজ করেন না। অবস্থাপন্ন মনে হলো শুনে।

এই পিচ্চিগুলো উপহার দেখাশোনা করছিল মন দিয়ে।
Gifts & us!

বেড়াতে আসা পিচ্চিপাচ্চি
Yo!

বৃষ্টি দিয়ে ঘর বানাবো
মেঘ করেছে আকাশে, সকালের গুমোট কাটিয়ে ঝড়ো হাওয়া দেয়। আমরা বাড়ি ফেরার জন্যে বিদায় নেই। শুনেছি বৃষ্টি নাকি ভালো লক্ষণ। Good Omen। হোসনে আরা আপুর বিয়েতে বৃষ্টি হোক, সুন্দর হোক তাঁর নতুন জীবন মনে মনে সেই শুভেচ্ছা জানাই। বাংলাদেশ আজকে ভালো খেলুক সেই প্রত্যাশা করি। এবার আমাদের শহরে বৃষ্টি হোক সেই ছেলেবেলার মতোন, সে প্রার্থনা করি।

Cloudy

জোরে হাওয়া হয়, ধুলো আর ঝরা পাতা উড়ে আসে আমাদের হেঁটে ফেরার পথে। বাঁশঝাড়ের মাথায় ঘন কালো মেঘ। ফিরতি পথে খোলা প্রান্তরে দেখা যায় দূরে দিগন্তের কাছে সাদা হয়ে আছে আকাশ, বৃষ্টি হচ্ছে ঐসব জায়গায়, বুধপাড়ার দিকে। আমাদের শহরে হয় না। গল্পে জেনেছিলাম ঐদিকটা মানে বুধপাড়ার শুরু বাবু ভাইদের পাড়ার বড় যে দীঘিটা, সেটার পর থেকেই। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আম্মারা ওখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রথম। তখন কী গহীন পথ ছিলো! মনে হতো নাকি শহর ছেড়ে কত দূরে চলে এসেছি! বাঘা হাজি বড় নানা, তাঁর ছেলে পিস কমিটির চেয়ারম্যান সাত্তার নানা, জিপ লুকিয়ে রাখা নিয়ে নানুর বিপদের কথা, মায়ের মুখে বহুবার শোনা এই গল্পগুলো পুরানো হয় না কখনো। খালি স্মৃতিরাই ঝাপসা হয়ে আসে হয়তো। লিখে রাখা দরকার সেসব কথা। খোলা জানালা দিয়ে এসে পড়া একটা দলছুট বৃষ্টির ফোঁটা আচমকা এসে মুখে পড়লে, চোখ বন্ধ করে অপেক্ষা করি পরের ফোঁটাটা আদৌ আসে কিনা তার জন্যে।

আমাদের পোড়া শহরে বৃষ্টি হয় না।

শহরের বড় রাস্তায় পড়বার পরে বছরের প্রথম বৃষ্টির ভেজানো, সোঁদা মাটির ঘ্রাণ ভেসে আসে।

বিকেল ৪:৩০
১১ মার্চ, ২০১১

টুকিটাকি: ছবিগুলো LG Cookie মোবাইলের 3MP ক্যামেরায় তোলা, পিকাসায় একটুখানি ঘষামাজা করা।
আর কিছুতেই এই গানটা এম্বেড করে দিতে পারলাম না। লিঙ্ক দিচ্ছি - Amar Sathe Chol - Fuad.mp3


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

অসম্ভব ভালো লেগেছে লেখাটা, মনে হলো আমিও ঘুরে এলাম। ঢাকাতেও একটু আগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেলো।

...........................
Every Picture Tells a Story

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই। আপনাকে ভালো লাগাতে পেরে আমার নিজেরই অনেক বেশি ভালো লাগছে। আমি মনে হয় এমন লেখাগুলোই ভালো লিখি, যেখানে বেড়াবার কথা বলি, নিজের অনুভূতিগুলো মিশে যায়।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

তাসনীম এর ছবি

দুর্দান্ত।

আমিও বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করি সবসময়েই।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া। আমার মনে হয় বাংলাদেশের মতোন এমন ঝুম বৃষ্টি না দেখতে পেলে খুবই খারাপ লাগবে। আপনার বৃষ্টি নিয়ে পোস্টটা পড়ে আপনার জন্যে খারাপ লাগছিল তাই। ঝুম বৃষ্টি ছাড়া বর্ষা যে কী কষ্টের!

গুগলে বৃষ্টির ছবি সার্চ করে এটা পেলাম -

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সন্ধ্যায় আজ ঢাকাতেও কালবৈশাখীর দেখা পাওয়া গেল। গতকাল মেঘলা আকাশ ছিল। খুব তাড়াতাড়ি বৃষ্টির দেখাও হয়ত পাওয়া যাবে।

লেখাটা ভালো লাগলো। এরকম লেখা পড়তে ভালো লাগে। হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ধন্যবাদ অপ্র।
আমাদের বৃষ্টিটা খুব দ্রুতই শেষ হয়ে গেল। তৃষিত মাটি ভিজতে না ভিজতেই আবার শুকনো খটখটে। আর তৃষিত মানুষগুলো প্রহর গুনছে স্নিগ্ধ একটা বছরের।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ওডিন এর ছবি

কি চমৎকার একটা লেখা!!!! শেষ অংশটুকু পড়ে পুরা স্তব্ধ হয়ে বসে থাকলাম!

কবে যে বৃষ্টি হবে মন খারাপ

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

প্রিয় লিখিয়েকে স্তব্ধ করে ফেলার মতোন লিখতে পেরেছি জেনে ধেই ধেই নাচতে ইচ্ছা করছে খানিক। দাঁড়াও বুনোর মতো আমিও নাচের ইমো খুঁজে আনি একটা!
এইযে পেয়েছি -

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নাশতারান এর ছবি

খুব ভালো লাগলো। রাজশাহীনামার কথা মনে হয়েছিলো কদিন আগে। অনেকদিন পর লিখলে!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমিও অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম, কিন্তু লেখা হয়ে উঠছিল না। এরকম একেকটা দিন একেকটা বিষয় নিয়ে লেখার ইচ্ছা আসলে, শহরের দিনরাত্রি, আর সেই সাথে পুরানো কথা, নতুন কথা, এইসব মিলিয়ে হাবিজাবি পাঁচমিশেলি সিরিজ হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু লিখতে গেলে কিছু তথ্য লাগে, সেগুলো ঠিকঠিক না দিলে মন খুঁতখুঁত করে। বাবার সংগ্রহ থেকে রাজশাহীর উপরে কিছু বই খুঁজে বের করেছি, সেগুলো আরাম করে ঘাঁটা হয়ে উঠছে না। তবে মনে হয় পরবর্তী পর্ব দ্রুত আসবে।

তোমার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

লেখাটা পড়ে খুব ভাল লাগল, পুরো লেখা জুড়ে একটা মেঘের ছায়া ছিল।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

এই নাও ফ্রেশ আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- বাড়ির বাগান থেকে। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

অসাধারণ লাগলো যাযাবর আপু। কতদিন হয়ে গেলো একটু বাংলাদেশের বৃষ্টিতে ভিজি না। মনটাকেও একটু ভেজানো হয় না। এবার দেশে ফিরবোই, বেশি আর দেরী নেই। চাকরিও একটা জুটিয়ে ফেলেছি। এবার ঠিকই শখ মিটিয়ে বৃষ্টিতে ভিজবো, জ্বর হলে হবে।

পিচ্চিটার ছবিটা জোস হয়েছে আপু। আমার নষ্ট মনে একটা দুষ্টু কমেন্ট চলে আসলো-

he luks drunk!

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ফাহিম হাসান এর ছবি

যাযাবর আপু ??? ???
অ্যাঁ

ফাহিম হাসান এর ছবি

হায় হায় আপনি আপু হয়ে গেলেন? মন খারাপ

আমার খুব প্রিয় একজন ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারের নামের শেষে স্বামী দেখে ভেবেছিলাম ভাইয়া। পরে ফেইসবুকে অ্যাড করতে গিয়ে দেখি পৌরুষের পরাকাষ্ঠা। নাইকন ৬০০মিমি + এক্সটেন্ডার লাগায় হ্যান্ডহেল্ড ছবি তুলেন! সত্যি বলতে আমি ঐ লেন্স ঠিকমত আলগাতেই পারি না।

শেষ ছবিটা কী সুন্দর! আর আপনার প্রতিবেশীর ছবি কই???

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আহেম! কেন, কৌদা (কৌস্তুভ) এখনো ছুটে এসে বিস্তারিত বিবরণ দেয় নাই নাকি আমার নিক আর আপু বিষয়ে?! চিন্তিত
জাস্ট কিডিং। কোনই অসুবিধা নাই, নামে কী বা আসে যায়? হাসি

শুধু শেষেরটা না, সব ছবিই আমার মোবাইল ফোনের পচা ক্যামেরায় তোলা! সাথে করে আমার ক্যাননের পয়েন্ট এন্ড শুটটা না নিয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির কোন ছবি তোলা হয় নাই। প্রতিবেশীদের ছবি তুলতে গেলে অসীম ধৈর্য্য লাগবে রে ভাই! পরশুরাতে একটা বেশ মোটাতাজা মাকড়শা পেয়েছিলুম, কিন্তু আমার আবার তেনাদেরকে ভারি ভয় করে কিনা, শতহস্ত দূর থেকে স্বল্পালোকে গরীবি ক্যামেরায় আর কীভাবে ভালো ছবি ওঠে বলেন? তার চেয়ে বর্ষার দোয়া করেন, এবার ঠিকমতো বৃষ্টি হলে আশা করি শামুক, গুগলি, ফড়িং, ব্যাঙ, শুঁয়োপোকা সবের ছবিই তুলে ফেলতে পারবো! দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

দ্যাখো! ঝড়ে কাক মরলেও দোষ হয় ফকিরের!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

উঁহু, ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে। চোখ টিপি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হা হা হা! পিচ্চিটা এমনিতে হাসছিল খালি, কিন্তু ছবি তুলতে গেলেই চোখমুখ অমন করে ফেলছিল! দেঁতো হাসি আসলে বেশি পিচ্চি তো, মনে হয় চোখের ফোকাসিং ঠিকমতো অ্যাডজাস্ট করতে পারছে না এখনো, আলো পড়ছিল বলে অমন এক্সপ্রেশন। হাসি

অসময়ের বৃষ্টিতে ভিজলেই আমার ঠাণ্ডা লেগে যায়। কিন্তু বর্ষার ঝুম বৃষ্টির উপরে কিছুই হয় না আসলে! সেটা যে কী মজার তা যে না ভিজেছে সে জানবে না। আর বৃষ্টির সময়ে বারান্দা থেকে বৃষ্টি দেখতে দেখতে গরম ধোঁয়া ওঠা চা, আর মুড়ি মাখানো সাথে গরম গরম পেঁয়াজি আর রাস্তার মানুষ দেখা আর গল্পগুজব সবাই মিলে! আমাদের দেশের বৃষ্টির তুলনা হয় না আসলেই! চলে আসুন দেশে, আরাম করে বৃষ্টি উপভোগ করতে। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

মে মাসে চলে আসছি আপু। তখন যেনো বৃষ্টি থাকে। ধন্যবাদ।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

অসাধারণত্বে একঝলক মনে করিয়ে দেয় আবু বকর সিদ্দিকের 'খরাদাহ' উপন্যাসটির কথা। তিনি তো রাজশাহীর মানুষ ছিলেন, তাই না?

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

রাবির আবু বকর সিদ্দিক? উনি তো রাজশাহীরই জানি । আমার অবশ্য 'খরাদাহ' পড়া হয়নি, মাথায় থাকলো, অবশ্যই পড়ে দেখতে হবে। প্রশংসার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

উনি আমার আম্মার শিক্ষক। অরিজিন্যালি কোথাকার মানুষ আমি ঠিক জানিনা তবে বহুকাল আগে বাগেরহাট সরকারী পিসি কলেজে শিক্ষকতা করতেন। উনার বড় মেয়ে আর আমি একসাথে বাগেরহাটে প্রাইমারীতে পড়েছি। আর মেঝো মেয়েটাকে লেজেহোমো বিয়ে করেছিলো।

খরাদাহের চরিত্রগুলোর কথা বহুকাল পরে মনে পড়ে গেলো, মসিদ খাঁ, ভাল্লা, ভাল্লার মোষটা-কালীবাউশ। অসাধারণ একটা উপন্যাস, কালজয়ী।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কৌস্তুভ এর ছবি

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

জন্মভূমির উপরে আসলেই দেশ নাই রে ভাই। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

একজন পাঠক(রাসেল আশরাফ) এর ছবি

কাল বাসাতে ফোন দেয়ার পর ছোটভাই বলছিলো বৃষ্টি হচ্ছে।মনটা তখনই উদাস হয়েছিলো।আর এখন এই লেখা পড়ে পুরাটাই উদাস হলো।

মন উদাস করার জন্য আপনারে মাইনাস আর এতো সুন্দর করে লেখার জন্য (গুড়) ।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

বাহ্‌! আপনাদের বাড়ি রাজশাহী শহরে বুঝি? কালকে বৃষ্টি হয়েছে বিকেলে। তাও যেমনটা হলে মন ভরতো তেমনটা না আসলে, পরে সন্ধ্যা-রাতেও হয়েছে খানিকটা। আমাদের শহরটা একদম মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে। ইদানীং ঘুরে ফিরে খালি এই কথাটাই মনে হয়। মন খারাপ

আশা করি এতক্ষণে মন ভালো হয়ে গেছে। যেখানে আছেন সেখানে স্নিগ্ধ বৃষ্টির শুভেচ্ছা রইল। আর গুড়ের জন্যে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

শেষ ছবিটায় কি জানি আছে। ছোট্ট ছবিটায় আম গাছের বোল সাথে পেছনের ব্যাকগ্রাউন্ডে কালো মেঘের ঘনঘটায় মনটা উদাস হলো হঠাৎ করে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

সত্যি সত্যি দেখতে আরো অনেক দারুণ লাগছিল। এবার অবশ্য ঠিক সময়ে বৃষ্টি না হবার কারণে সব জায়গায় আমের মুকুল আসেনি অন্যবারের মতোন। দেখা যাক কেমন ফলন হয়।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সাফি এর ছবি

প্রিয় রাজশাহী, আচ্ছা শহরজুড়ে কি এখনও আগের মতন পুকুর আছে? রাস্তার কোনায় কোনায় যে পানির ডাব্বা জাতীয় স্থাপনাগুলো ছিল ওগুলো আছে? রাবির আমবাগান?

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

বাহ! আপনিও রাজশাহীর নাকি?!
পুকুর আসলেই আর বেশি নাই। ইন ফ্যাক্ট পুকুরগুলো নিয়ে একটা পর্ব দেবার ইচ্ছা আছে। পানির ডাব্বা মানে ঢপকল তো? এটাও মাথায় আছে। এখনো বেশ অনেকগুলোই অক্ষত এবং কার্যকর আছে।
আর রাবির আমবাগান ভালোই আছে বেঁচেবর্তে। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সাফি এর ছবি

নানাবাড়ি রাজশাহী। ঢপকল আর পুকুরগুলো নিয়ে লেখা চাই

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

খুব ক্যাজুয়াল ভঙ্গির এই লেখাটা অন্যরকম একটা আমেজ ছড়ালো মনে। আরেকটু পড়তে ইচ্ছে করছিলো।
ভীষণ ভীষণ ভালো যে লাগলো, বলাই বাহুল্য। হাসি
বৃষ্টি দিয়ে ঘর বানাবো...

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হ! আমিও বৃষ্টি দিয়ে ঘর বানাবো!! হাসি
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

তিথীডোর এর ছবি

একমাত্র ভাই পড়ছে রাবিতে, তবে আমার এখনো যাওয়া হয়নি এ শহরে.........
লেখা ভাল্লাগলো, গানটাও খুব ভাল্লাগে!

চাঁটগাঁয় বৃষ্টি হচ্ছে না কেনু কেনু??? ওঁয়া ওঁয়া

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

বাপ্রে! চাটগাঁ থেকে রাবিতে পড়ছে এসে?! বেশ তো! হাসি
একবার সবাই এসে বেড়িয়ে যেতে পারো ভাই পাঠরত থাকাকালীনই। ভালো লাগবে আশা করছি।

ধন্যবাদ তোমাকে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অদ্রোহ এর ছবি

উত্তরবঙ্গে সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর অবধি বারকয়েক ঢুঁ মারা হয়েছে, কিন্তু রাজশাহী প্রতিবারই কীভাবে যেন বাদ পড়ে গেছে।

আর না বললেও চলে, রাজশাহীনামা শাহী হয়েছে যাযাবরাপু হাসি

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

দিনাজপুর চলে গিয়েছ, আর রাজশাহী আসো নাই?!
এইবার চলে আসো। হাসি
আর আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- তোমাকে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

বেশ ছায়ায় মায়ায় ঘেরা একটা লেখা। পড়তে গিয়ে গানটা মনে এলো, " আমার শহরে শুকিয়ে যাচ্ছে জল। আস্তে আস্তে লুকিয়ে যাচ্ছে জল। ফুরিয়ে আসছে স্নান করবার দিনগুলি.....অন্যকোথাও চল...." যেহারে পুকুর ভরাটের মচ্ছব চলছে, গান সত্যি হতে দেরি নেই খুব! বৃষ্টিই তাই ভরসা। যদিও বৃষ্টি আমার মন খারাপ করে দেয় ভীষণ। কিন্তু অন্যদের আনন্দ দেখে সেটা বেশিক্ষণ স্হায়ীও হয় না। ছবির পিচ্চি দু'জন কেমন দায়িত্ব নিয়ে উপহার সামলাচ্ছে, দেখে খুব মজা পেলাম! ছবি আর শব্দে এক টুকরো রাজশাহী উপহার দেবার জন্য ধন্যবাদ আপু।

অতিথি লেখক এর ছবি

নাম লেখতে ভুলে গেছি খাইছে কী যে ঝকমারি না এসব!

৩৭নং মন্তব্য - আয়নামতি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ধন্যবাদ আয়নামতি। রাজশাহীতে থাকেন বা থাকতেন এমন সচল সংখ্যা দেখা যাচ্ছে মন্দ নয়। হাসি
পুকুরগুলো এভাবে এত দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে বলেই হয়তো আরো বৃষ্টি কম হচ্ছে। এমনিতেই শহর থেকে নদী সরিয়ে দেয়া হয়েছে দূরে, আর সেই নদীতে বর্ষা ছাড়া পানির দেখা মেলাই ভার। গানটার লিঙ্ক খুঁজে পেলে দেবেন প্লিজ।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারণ বর্ণনা আপু। আপনি এরকম আর দুই একটা লেখলে মেঘ না থাকলেও বৃষ্টি চলে আসবে নিশ্চিত আপনার লেখার মায়ায়। গুরু গুরু

গ্রামের বিয়ের পরিবেশের আবহটাই অন্যরকম। আর বিয়েবাড়িতে বরযাত্রীদের মুরব্বীগোছের কিছু পাবলিক আসে যাদের ভাব দেখলে হাসি পায়। এমন ভাব করে ঘুরে বেড়ায় যেন তারাই মোড়ল। আর কনে বাড়ির সবকিছুতেই খুঁত বের করার চেষ্টা করতে থাকে। দেঁতো হাসি

এখন মনে হচ্ছে আগে জানলে আপনাকে আমার কাজিনের বিয়েতে নিয়ে গেলে আরও ভালো হত। সেইটা নিয়ে একটা ফাটাফাটি লেখা দিতে পারতেন। আমার দ্বারা টাইপ হয়, লেখা হয় না ওঁয়া ওঁয়া

ওহ, বলতে ভুলে যাচ্ছিলাম, বাই বর্ন, আমি কিন্তু রাজশাহীর এক নদীতীরের গ্রাম্য ছেলে। দেঁতো হাসি

অতীত

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

রাজশাহী নদীতীরের গ্রাম্য ভাই অতীত, মজার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ। তবে বৃষ্টি যদি আমার এত প্রশংসা শুনে না আসে তাহলে কিন্তু বিপদে পড়ে যাবো। লইজ্জা লাগে
চিন্তা নাই, লিখতে থাকুন। আমি তো টাইপই করতে থাকি, লেখা-টেখা হয় কিনা কইতারিনা। দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

শাহনামা। কে লিখেছিলেন? ফেরদৌসী! শাহনামা থেকেই শাহীনামা; আর সেখান থেকেই বোধকরি রাজ-শাহীনামা! পুরা রাজরাজাদের কারবারসারবার সব। প্রজানামা'র সিস্টেম থাকলে ভালো হতো আমাদের জন্য। কোলন খিক

আজকাল 'মেহের' নাম দেখলেই দিলটা কেমন জানি উদাস হয়ে যায়! সাথে 'জান' থাকুক বা 'চণ্ডী'— কী এসে যায় তাতে!

হাঁস-মুরগীর ফটুকের পরেই বিবাহের কথা থাকার কারণে ধরে নিয়েছিলাম বুঝি অত্যাধুনিক বিয়ের দাওয়াতে গেছেন। 'হাঁসমুরগীর নিকাহ; ফিকহ শাস্ত্রের অনুশাসনের আলোকে' শীর্ষক অনুষ্ঠানের দাওয়াত কি-না! পরে দেখলাম, না এইটা স্বাভাবিক প্রথাগত বিয়ের দাওয়াতই।

গ্রামের বিয়েগুলো, বিয়ে বাড়িগুলো খুবই অন্যরকম হয়। যেগুলো আধুনিক শহুরে ধাচের বিয়েতে খুঁজতে যাওয়া বোকামী। এই লেখাটা পড়তে পড়তেই ঠিক করে ফেললাম, দেশে গেলে যে করেই হোক গ্রামের কোনো বিয়েতে যেতেই হবে! নিজের বিয়েতে যাই আর না যাই, এইটা করাই লাগবে, মাস্ট।

বর বাহাদুরের সাথে একটা ফটুক তুলতেন! এরকম চান্স কেউ মিস করে? আমি এইটাও ঠিক করে ফেলছি। যে বিয়ে বাড়িতে যাবো, সেই বাড়িতে গিয়ে বর/কনের সাথে দাঁত কেলায়ে পোজ দিয়ে একটা ফটুকও তুলবো! নিজের বিয়েতে ফটুক তুলি আর না তুলি, এইটাও করতে হবে, মাস্ট।

গুলটু গালটু পিচ্চিটারে দেখে ব্যাপক ভালো লাগলো। আবার আপনার দিকে তাকায়া আছেও ক্যামনে! রহিম-রূপবান কেস নাকি!

বৃষ্টি নিয়ে বাপ্পার একটা গান আছে। 'বৃষ্টি পড়ে'। ঐটা শুনতে শুনতে পঁচায়া ফেলছিলাম একেবারে। বৃষ্টি নামলেই জাতীয় সঙ্গীত ছিলো ঐটা। এখন আর শোনা হয় না, বৃষ্টি কই! তবে, এখন মনেহয় বাপ্পার আরেকটা গান শুনতে হবে, 'ফিরে এসো'। তাতেও যদি হারানো সেই বৃষ্টিগুলো ফিরে আসে!

ও, এই পর্যায়ে এসে মনে মনে ঠিক করলাম। দেশে গেলে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে। রোদে পুড়ি আর না পুড়ি, বৃষ্টিতে ভেজা মাস্ট।

আরে, আসল জিনিসই তো বাদ পড়ে গেলো। ওভালটিন আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে করছে, ভ্যানগারি থেকে কিনে। এইটা তো বলাই হয় নাই!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হ। ব্যাপার নাহ্‌, আপনি লেখা শুরু করে দেন।

হ!

হ, সব স্বাভাবিক, অস্বাভাবিক কিছুই নাই, আপ্সুস।

হ, তবে নিজের বিয়েতে যান আর না-ই যান, আমাদেরকে দাওয়াত দিতে হপে।

হ, তবে নিজের বিয়েতে একটা ফটুক তুইলেন নিজের বউয়ের সাথে দাঁত কেলায়ে। আর আরেকটা আমাদেরকে তুলতে দিয়েন আপনাদের দুইজনার সাথে দাঁত কেলায়ে, এই যে, অ্যাম্নে - দেঁতো হাসি

হ, পিচ্চি মনে হয় ছবি তোলায় ইন্টারেস্ট পাচ্ছিল না, চক্কেট-টক্কেট দিতে হতো। চিন্তিত

হ, যে গানের লিঙ্ক দিয়েছি সেটা অনেক পিরিয় গান, এইটাতেও বাপ্পা আছে, বাপ্পা এন্ড দ্যা রকার্স। তবে বাপ্পা আমার পছন্দের গাতক না, কম শুনা হয়, সে জন্যে আপনি যে গান দু্টার কথা বুইললেন শুন্যাছি কিনা মনে করতারছিনা। লিঙ্ক দিয়েন, শুনবোহেনি।

হ, বৃষ্টিতে না ভিজলে আর ক্যাম্নে কী?! কিন্তু 'আপনার দেশে আসা' ঘটতে ঘটতে পুরা পৃথিবীর আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে জম্মন দেশেই বৃষ্টি আর বাংলাদেশেই তুষারপাত শুরু হয়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি জোরালো মনে হচ্ছে!

হ, এইটা এখন আমারো ইচ্ছা করছে, আবার গরম, আবার খরা। মন খারাপ

আর এইযে লন, আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- চাটনি। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

দেঁতো হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

মেহেরচণ্ডি! সালমা ছাত্রাবাস কি এখনো আছে?
হলগুলোর পেছনে রেল স্টেশন পার হয়ে যে রাস্তাটা মেহেরচণ্ডিতে ঢুকে পড়েছে, সেটা ধরে একটু আগালেই ছিল মেসটি। খুবই সাদামাটা সেটা। কিন্তু স্মৃতিতে গেঁথে আছে যে! কতগুলো রাত পার হয়েছে এর পিচ্চিতোষ ঘরে। আর বিকেল হলেই স্টেশনে আড্ডা। ঝুপ করে সন্ধ্যা নামার পর মাথায় চাঁদটাকে নিয়ে মেসে ফেরা! অল্প কয়েকটা দিন। ভুলি নাই তা!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আয়হায় পান্থদা! আপনার কি বলতে চান, আমি রাবির আশেপাশের ছাত্রাবাসগুলোর খোঁজ খবর রেখে বেড়াতাম!! অ্যাঁ
কিডিং। দেঁতো হাসি

আপনি তো অনেকদিন ধরেই রাজশাহী আসবো, রাজশাহী আসবো করছেন! চলে আসুন এবার, ছুটি তো আছে সামনেই একটা।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

হুম! আসবো একদিন। আন্ত:নগর পদ্মায় 'খুকু আয়, খুকু আয়' গানটা শুনতে শুনতে। আর জানালা গলিয়ে দেখবো চলনবিল সবুজে সবুজে হয়ে আছে। ঈশ্বরদী গিয়ে ট্রেনের ইঞ্জিন ঘুরে গেলে মনে হবে, আয়হায়, এত আবার পিছন দিকে যাত্রা! তারপর ঝুপ করে সন্ধ্যা নামলে রাজশাহী স্টেশন। তারপর ছায়াঘেরা পথ ধরে এগিয়ে গিয়ে বাঁধ। আচ্ছা, সিপাহীপাড়া জানি কোনদিকে? সেখানেই বোধহয় জনৈকা বালিকা ছিল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট ৯৯-২০০০ ব্যাচ। এইবার মুখে কুলুপ আঁটি! হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ওরে! কেউ পপকর্ন আন, কোকের বোতলটা আন, আমি বসলাম আরাম করে গল্প শুনতে! দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার ভালো হয়েছে। ভালো লাগলো। অনেক পুরনো কথা মনে পরে গেলো। আমিও রাজশাহীর মেয়ে জানো তো। ৮৩ এর প্রথম দিকে কিছুদিন রাজশাহীতে ছিলাম। তখনও বৃষ্টি হতো না। পদ্মার পাড়ে বেড়াতে গেলে মন খারাপ হয়ে যেত। এক চিলতে খাল - শুধু বালু আর বালু। সেই সংগে ধূলি ঝড়! একমাথা বালু নিয়ে ঘরে ফিরতাম। ওখানকার কলের পানিতে কিছু একটা ছিলো। চুল আঠা হয়ে যেত। তাই আমরা পুকুরের পানি দিয়ে চুল ধুতাম। " ছননধা বেলা বাবাশে করে ইনভারশিটিতে গিয়েয়েছিলাম" এই বলে নজুচাচাকে ক্ষ্যপাতাম।

--------------------------------------------------------------------------------

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আরেহ! আপনিও রাজশাহীতে ছিলেন? কই আনিস মামা বলে নাই কিছু। তবে মামার নাকি রাজশাহীর অভিজ্ঞতা ভালো নয়। সেটা শুনে ক্ষেপে গিয়ে আমি যেদিন থেকে দাওয়াত দিয়ে রেখেছি যে আসো, এবার আমি ঘুরিয়ে দেখাচ্ছি, দেখি কেমন করে খারাপ লাগে, তো ব্যস, এমনই ব্যস্ত হয়ে গেছে যে ঢাকায় গেলেও ঘন্টা খানেকের জন্যেও দেখা মেলে না এখন! মন খারাপ

রাজশাহীর পানিতে খনিজ পদার্থ বেশি, আয়রন বিশেষত। চুলের অবস্থা খারাপ হয়ে যায় ঠিক কথা। আম্মারাও ছোটবেলায় পুকুর বা কূয়োর পানি ব্যবহার করতেন। তবে এখন ঢাকার পানির অবস্থা আরো বেশি খারাপ মনে হয় আমার। রাজশাহীর ভাষা বেশ মজার। আমি ভালো পারি না, কিন্তু আঞ্চলিক টান চলে আসে মাঝে মাঝেই। হাসি

আপনি দেশে আসছেন কবে? রাজশাহী আসা বাধ্যতামূলক করা হলো আপনার জন্যে, আনিস মামা-মামীরটা দেখছি আমি কী করা যায়! চিন্তিত

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

পড়ুয়া এর ছবি

আপনার লেখা পড়ে তেরো বছর আগে ছেড়ে আসা রাবি'র অনেক কথা একবারে হুড়মুড়িয়ে মনে পড়লো। ক্যাম্পাস- প্যারিস রোড-ক্লাস রুম-হাহাহিহি-রোকেয়াহল-খালাআ আপনের কল আইস্যাছেএএ-হঠাৎ যুদ্ধ-মেহেরচণ্ডী-রামদা হাতে সেই লুংগি পরা লোকগুলো-ভ্যাকেন্ট.......জ্যাম লেগে গেছেগো....।
স্মৃতি জাগানিয়া লেখা, ধন্যবাদ।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

সে সময়টা ভয়ঙ্কর ছিল। আমরা ছোট ছিলাম। রোকেয়া হল? আপনার হল ছিল? চিন্তিত আপনার অভিজ্ঞতা লিখুন, পড়ি। আর এখানে রাবি নিয়ে একটা ছোট্ট লেখা ছিল, প্যারিস রোডের ছবি দিয়েছিলাম।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সাহেব বাজার, হরিয়ান, মেহেরচণ্ডী, কাজলা, বিনোদপুর, মতিহার, প্যারিস রোড এক একটা নাম আমার কাছে দূর স্বপ্নের এক একটা দেশ। তিরিশ বছর ধরে এই স্বপ্ন দেখছি, হয়তো বাকি জীবনেও ঐ জায়গাগুলোতে আর পৌঁছানো হবে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ধুত্তোর পাণ্ডবদা! ট্রেনে উঠবেন চলে আসবেন, এত হিসেবের কী আছে?! নাকি আমি আপনাকে আরেকবার ফিরিস্তি দেব কোন্‌দিক থেকে ক্যাম্নে কীভাবে বাসে, ট্রেনে রাজশাহী আসলে সুবিধা? দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

http://www.youtube.com/watch?v=01LbI0FrCfE গানের লিংকটা রেখে গেলাম আপি। শুনে বলবেন কিন্তু কেমন লাগলো হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আহ! আয়নামতি বুঝি? নামটা একটু মনে করে লিখে দিলে ভালো হয় যে। হাসি
গানের লিঙ্কের জন্যে ধন্যবাদ। এটা যে শুনেছি তা ভুলে গিয়েছিলাম। আমার এক ভারতীয় বান্ধবী এটা শুনে মুগ্ধ হয়ে ফেসবুকে শেয়ার করেছিল, আমাকেও শুনিয়েছিল। সে বাংলা না বুঝলেও অর্থ জেনে নিয়েছে, আর সুরটাও নাকি তার খুব ভালো লেগেছে। হাসি
ভিডিওটা না দেখে চুপ করে শুনলে গানটার কথা আমাদের শহরের সাথে বিষন্নভাবে মিলে যায়।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ইঁচড়েপাকা  এর ছবি

রাবি তেই জন্ম, রাবিতেই বেড়ে উঠা ।আর এখন শিক্ষা কার্যে চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী যানজটের শহরে । প্রাণপ্রিয় রাজশাহী শহর বিশেষত খুব পরিচিত এলাকা নিয়ে লেখা খুব ভাল লাগলো । ভাল থাকবেন আপু হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো কাটুক ব্যস্ত মহানগরের জীবন, নিরাপদে থাকুন। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।