আমি যখন ছোট ছিলাম, স্কুলে পড়ি, তখন একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম, চোর ধরার স্বপ্ন। আমরা চিরকাল বেশ বড় বড় বাড়িতে বড় হয়েছি, গাছপালা বাগানআলা বাড়ি ছিল বেশিরভাগ সময়েই। তার মধ্যে যে বাড়িতে সবচেয়ে দীর্ঘদিন থেকেছি সেই বাড়িটা ছিল বিশাল, আর আশেপাশে তখন অন্যান্য বাড়িঘর কম ছিল, রাস্তাটা মেইন রোড হলেও ট্রাফিক অনেক কম ছিল, আর ছিল চোরের উপদ্রব। দেখা গেল পেছনের পাঁচিল টপকে ঢুকে বাগানে টাঙানো ধোয়া কাপড় টেনে নিয়ে সটান মেইন গেইট খুলে বের হয়ে গেল কেউ, মূহুর্তের মাঝে, “এই, এই, কে রে!” বলে তেড়ে যাবো কি, বুঝে উঠবার আগেই! সে এক অবস্থা!
স্বপ্নের শুরুতে তুমুল সাসপেন্স ছিল, ভয়ে আতঙ্কে ঘামছিলাম পুরা, কী হবে, কী হবে চিন্তায়। চোর ধরার পরে ব্যাপক আনন্দ হলো। পুরাই একটা রহস্য রোমাঞ্চ স্বপ্ন। সে এক দারুণ অবস্থা! এই স্বপ্নটা আমার বেশ মনে আছে। এমনটা প্রায়ই হতো আসলে... মানে, আমি কখনো ভয়ের বা দুঃস্বপ্ন দেখলে, ভয়ের তীব্রতার একটা পর্যায়ে টের পেতাম যে এইটা দুঃস্বপ্ন। তখন আমি করতাম কি, স্বপ্নটার শেষ দেখে ছাড়তাম, মানে স্বপ্নই তো, কত আর খারাপ হবে, আর ভাবছি তো আমিই, তাহলে আমিই এইটার এন্ডিং সিন নির্ধারণ করি না কেন নিজের মতন করে! এতে করে ঘুম ভাঙার পরে আমার মাঝে আতঙ্কটা আর থাকতো না, তার বদলে থাকতো একধরনের পরিতৃপ্তি, যেন আমি একটা সমস্যার সমাধান করেছি, দুষ্টদেরকে শাস্তি দিয়েছি।
নাইন-টেনে পড়তে একবার দেখলাম আমরা স্কুল থেকে একটা শিক্ষা সফরে গিয়েছি, সমুদ্রতীরে একটা স্কুলে একটা বিজ্ঞানমেলা মতন হচ্ছে। আমাদের সাথে গিয়েছেন কেমিস্ট্রির পরান স্যার আর হারান স্যার (যুক্তিযুক্ত কারণেই আসল নাম উল্লেখ করা হলো না)। সেখানে আমি দেখলাম, কী জানি একটা ঘাপলা। কাজের সময়ে হারান মিয়াকে কোথাও পাওয়া যায় না, তাকে আবার আমাদের কয়েকজন দেখলো অপরিচিত কাদের কাদের সাথে কথা বলতে। আমরা ফলো করা শুরু করলাম, গিয়ে পৌঁছুলাম এক গুদাম ঘরে। সেখানে রাখা আছে গুপ্ত পথে আনা চোরাই জিনিসপত্র! বুঝলাম এই তাহলে ঘটনা, হারান তাইলে স্মাগলার!! এদিকে হারান আমাদেরকে দেখে ফেললো, বন্দী হয়ে গেলাম আমরা। তারপর নিজেরা বুদ্ধি খাটিয়ে বের হলাম, হারান ও গ্যাং-কে ধরিয়ে দিলাম। ঘুম ভাঙার পরে সকালে কেমিস্ট্রি ল্যাবে গিয়ে একটু অপ্রস্তুত হয়েছিলাম কোন সন্দেহ নাই, হতে পারে হারানকে আমরা কেউ সহ্য করতে পারতাম না, তাই বলে স্মাগলার!! আজকে সেই পুরানো বাগানআলা বাড়িটারই দোতলায় বসে ল্যাপিতে এইটা টাইপ করতে করতে প্রচণ্ড হাসি পাচ্ছে মনে করে।
আসলে সেই সময়ে সাহস ছিল অনেক। কোন কিছুকেই ভয় পেতাম না। সব কিছু করে ফেলার, সব বাধা অতিক্রম করার একটা দুর্দান্ত মনোবল ছিল। এখন যেন ক্রমান্বয়ে কমে আসছে সেটা। নিজের স্বপ্ন পূরণের, সততা আঁকড়ে থাকার, নির্ভেজাল সত্যটা স্পষ্ট করে বলার যে দৃঢ়তা ছোটকালে ছিল, এখন যেন তা ধীরে ধীরে মিইয়ে যাচ্ছে...
আমি সবসময়ে বেশ একটু বড়াই করেই বলে বেড়াই, যে আমি তেমন একটা স্বপ্ন দেখি না, বা আসলে দেখলেও মনে থাকে না। যেগুলো মনে থাকে আবছা আবছা তা হলো দুঃস্বপ্ন। আর দুঃস্বপ্ন আমি দেখি অতিরিক্ত কাজের চাপে থাকলে, বা সামনে কোন ডেডলাইন মিস করার সম্ভাবনা থাকলে। এসব ক্ষেত্রে যা হয় তা হলো, আমি যে যে বিষয় নিয়ে চিন্তিত, যা যা বইতে পড়েছি, বা টিভিতে/সিনেমায় দেখেছি, যা আমার মনে প্রভাব ফেলেছে, অবচেতন মন সেইটা নিয়ে কাজ করে, আর আমার স্বপ্নেও আমি সেগুলো মিলিয়ে একটা খিচুরি পাকিয়ে ফেলি।
এরকম একবার হলো বছর দুয়েক আগে – দেখলাম একটা ইন্টারগ্যালাকটিক সাই-ফাই অ্যাকশন থ্রিলার স্বপ্ন। প্রথমে আমি পৃথিবীতেই ছিলাম, খালি আমাকে কারা যেন তাড়া করে ফিরছিলো, শেষে আমি একটা স্পেশশিপে করে অন্য একটা গ্যালাক্সির একটা ছোট সৌরজগতে চলে গেলাম। আবিষ্কার হলো আমি একটা ফ্যামিলি ফিউডে জড়িয়ে পড়েছি, যা চলে আসছে সেইইইইই কয়েক বিলিয়ন বছর ধরে। অবশেষে অনেক ছুটাছুটিতে ক্লান্ত হয়ে আমি সবাইকে একটা রাম ধমক দিয়ে, স্থির করে বসিয়ে সমস্যার সমাধান করে দিলাম। আসলে ভোর হয়ে আসছিলো, আমার অফিসে দৌড়ুতে হতো, তাই আন্তঃমহাজাগতিক চেইজটা আমি বেশ উপভোগ করলেও, স্বপ্নের ইতি টানা জরুরি ছিল।
এর কয়েক মাস আগে-পিছে আরেকটা স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেটার কোনই মাথামুন্ডু ছিল না... দেখলাম আমার বড় বোনের বিয়ে হচ্ছে, আমাদের বাসায় অনেক মানুষ, সবাই বিশাল ব্যস্ত। আমি চিরকালই একটু আরামপ্রিয় মানুষ, নিজের ইচ্ছা না হলে কোন কাজে হাত লাগাই না। বিশেষ করে কেউ কিছু করতে বললে তো হয়েই গেল, আমার সেই কাজ করার যেটুকু বা আগ্রহ ছিল সব খতম! তো আমি দেখছি সবাই ছোটাছুটি করছে, আমার মা, একা হাতে মূল কাজগুলো সামাল দিচ্ছে, বাসা ভর্তি অতিথিদের যত্ন আত্তিও করছে। কিন্তু আমি টের পাচ্ছি তার প্রচণ্ড মন খারাপ, তার ইচ্ছা করছে কেউ তাকে একটু জড়িয়ে ধরে দুইটা ভালো-মন্দ কথা বলুক। আর সেই জন্যেই আমি তার সামনে পড়তে চাচ্ছি না, পালিয়ে বেড়াচ্ছি। স্বপ্নের এই দিকগুলা খুবই রিয়ালিস্টিক ছিল। মনে হচ্ছিল সব আমার সামনেই ঘটছে, সত্যি সত্যি... কিন্তু স্বপ্ন তো আসলে কখনো এরকম হয় না, সেখানে অদ্ভুত কিছু ব্যাপার থাকে যেইটা থেকে টের পাওয়া যায় যে এইটা স্বপ্ন, সত্যি না। আমার স্বপ্নে এই দিকগুলান কীরকম ছিল বলি –
১। আমাদের বাড়িটা ছিল বি-শা-ল, চীনের ফরবিডেন প্যালেসের ছবি দেখেছেন কেউ? সেখানে যেমন চাতাল, চাতাল করে ভাগ করা, বড় বিশাল বিশাল ফাঁকা চত্ত্বর, সেইরকম অনেকটা।
২। আরো বড় ব্যাপার হলো – আমার কোন বড় বোন নাই!! আমি বড় হয়েছি ভাইদের মাঝে, আমি ভাইদের আদরের ছোট বোন। ছোট থেকে পুতুল খেলা বা রান্না-বাড়ি টাইপ পুতুপুতু ব্যাপার আমার মাঝে ছিলো না। আমার বই পড়া, খেলাধূলা, সিনেমা দেখা, গানশোনা সব কিছুর রুচিই আমার ভাইদের মাধ্যমে গড়ে ওঠা, এবং অনেক অনেক বেশি প্রভাবিত তাদের দ্বারা। যে দুই-একজন কাজিন বড় বোন আছে, তারাও আমাকে অনেক আদর করলেও, তাদের সাথে আমার বন্ডিংটা সেইরকমভাবে গড়ে ওঠেনি।
৩। সবচেয়ে হাস্যকর দিক স্বপ্নের – আমার বড় বোন হলো বলিউডের ঐশ্বরিয়া রায়!!
মজার ব্যাপার হলো, এইটা স্বপ্নটা দেখার সময়ে মোটেও আজব লাগে নাই, বরং খুবই স্বাভাবিক লাগছিলো। কিন্তু এটাও ঠিক, স্বপ্নে আমার বোন ঐশ্বরিয়া হলেও, সে ‘বলিউড স্টার অ্যাশ’ ছিল না, স্রেফ আমার বড় বোনই ছিল...
তো ঘুম ভাঙার পরে আমি খানিকক্ষণ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে থাকলাম, অফিস থেকে ফিরে সন্ধ্যাবেলা ঘুমাচ্ছিলাম সম্ভবত, ঘর অন্ধকার, আর আমি বুঝতে পারছি না আমি কে, কোথায় আছি...!! আমার ধারণা, অনেক জরুরি জিনিস মনে না থাকলেও এই স্বপ্নটা মনে থাকার কারণ, যত গাঁজাখুড়িই হোক, স্বপ্নে আমার মায়ের কষ্টটা, আর আমার নিজের সেইটার উপলব্ধিটা খুবই বাস্তব ছিল, আর ঠিক একই কারণে এইটা আমার কাছে একটা ‘দুঃস্বপ্ন’।
আরেকটা দুঃস্বপ্ন আছে, এটা গতবছর দেখেছিলাম, বেশ রিসেন্ট সেই হিসেবে। দেখেছিলাম আমার ছোট ভাই একটা লম্বা জায়গায় উঠেছে, জিনিসটা অনেকটা একটা মেলায় পায়ে দড়ি বেঁধে বাঞ্জি জাম্পিং করার মতন। সেখান থেকে সে লাফাবে। আমি হঠাৎ করে তাকে দেখতে পেলাম, এবং আতঙ্কে আমার হাত-পা জমে গেল। আমার পরপরই বাবা দেখতে পেল। আমরা এত দূরে যে তার কাছে না গেলে চিৎকার করে থামতে বলে কোন লাভ হবেনা। তবুও দুইজনেই ছুটলাম, কাছাকাছি পৌঁছুবার আগেই সে লাফ দিল। সাকসেসফুল একটা বাঞ্জি জাম্পের পরে সে তুমুল এক্সাইটেড হয়ে গেল। আবার টাওয়ারের উপরে উঠে গেল, আবার লাফাবে। এবার বাবা পৌঁছে গেছে, আর তাকে বাধা দিয়ে লাভ নাই দেখে, নিজেও টাওয়ারে উঠছে, হেল্প করবে বলে। আমি তখনো নিচে, তখনো ছুটছি, কিন্তু অতদূর থেকে সিনেমার মতন জুম ইন করে, ক্লোজ-আপে আমি স্পষ্ট দেখলাম প্রয়োজনীয় সেইফটি কেবলগুলো ঠিক করে লাগানো হয়নি তার কোমরে, পায়ে... আমি চিৎকার করে তাকে মানা করতে গেলাম, কিন্তু আমার গলায় আওয়াজ আটকে গেল, লাফিয়ে পড়েছে সে ততক্ষণে...
এই স্বপ্নের পরে ফোঁপাতে ফোঁপাতে ঘুম ভেঙেছিল মনে আছে... আমি হাতমুখ ধুয়ে ঠাণ্ডা হয়ে ভাইকে ফোন দিয়েছিলাম, কলেজের ডর্মে অসময়ে ফোন ধরে খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, কী হয়েছে? আমি কিছু না বলে খালি জিজ্ঞেস করছিলাম সব ঠিক আছে কিনা... এইটা এতই শকিং ছিল যে আমি আমার বন্ধু মহলের অনেককেই এই স্বপ্নের কথাটা বলেছি, হয়তো সবাইকে এইটা বলে গুরুত্বটা কমাতে চেয়েছি আমার অমূলক ভীতির।
তবে ভালো স্বপ্নের কথা যে আমার মনে থাকে না, এইটা আসলে পুরোটা ঠিক না। অনেক অনেক আগে আমি একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম... একটা ছুটির দিনের ভোর, সেই ভোরে আমি হাঁটছি... খালিপায়ে... একা একা...
আমার আশেপাশে কেউ নেই... আমি হাঁটছি একটা সবুজ মাঠের মধ্য দিয়ে... দিগন্ত জোড়া সবুজ মাঠ...
মনে হয় হেমন্তকাল, কারণ আকাশটা নীল, তাতে সূর্য থাকলেও রোদের খরতাপ নেই, গরম নেই চিটপিটে, আর আমি হাঁটছি... হাঁটছি...
তারপর একসময়ে আমি একটা নদীর তীরে পৌঁছুলাম, আমাদের যেমন নদীতীরে সাধারণত পলি, বালু থাকে, তেমন না, এই নদীর একদম কিনারায় এসে আমার সেইইই সবুজ মাঠটা শেষ হয়েছে... নদীর তীরেও তাই সেই সবুজ ঘাস, পানির কিনারা পর্যন্ত... আর নদীর তীরে আছে গাছ, বড়-বড় ছায়া-ছায়া, গম্ভীর সব গাছ... আবার হালকা-পাতলা, ঝিরিঝিরি পাতার হাসিখুশি গাছ... ছড়িয়ে ছিটিয়ে... আমি দাঁড়িয়ে আছি, অবাক হয়ে দেখছি...
হাঁটার সময়ে আমি যেন ছিলাম গন্তব্যহীন... এখন আমি জানি, আমি ঠিক এই নদীতীরে পৌঁছুবার জন্যেই হাঁটছিলাম।
সেখানে পানিটা কী স্বচ্ছ... হাঁটুপানি... ঐ অনেক দূরে একটা দুইটা নৌকা আছে, কি নাই... আমি অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম... স্বপ্ন তো, সময়ের কোন অভাব নাই, টাইম ডাইমেনশনটাই নাই হয়তো...!
তারপর এক সময়ে আমি পা ডুবালাম সেই স্বচ্ছ পানিতে, ঠাণ্ডা, আরামের স্পর্শ... হঠাৎ খেয়াল হলো আমার হাতে একটা বই... আমি বইটা নিরিবিলিতে বসে পড়বো বলেই বের হয়েছিলাম আসলে... এই যে এই মাঠ পেরিয়ে, এই নদীতীরে এসে... আমি দাঁড়িয়ে থাকি সেভাবেই আরো বহুক্ষণ... আমাকে ডাকবার কেউ নেই, খুঁজবার কেউ নেই, কোন ভয় নেই, কোন দুশ্চিন্তা নেই, কোন তাড়া নেই... সব কিছু শান্ত, সবকিছু চুপচাপ... যেন এমনটাই স্বাভাবিক, জীবনটা এমনই হবার কথা... আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকি, আর অবাক হয়ে দেখতে থাকি... নিজের অস্তিত্বকে ভুলে যাবার আগ মূহুর্তে আমার মনে হয় এখন চুপ করে বসি, ঐ গাছের ছায়ায়, এখন বইটা খুলি... পড়তে আরম্ভ করি... পড়তেই থাকি...
এই দিনটা তো শেষ হবে না...
এর শেষ নেই...
বইটা খুলে বসার খানিকক্ষণের মাঝেই অবশ্য কেউ আমাকে ডাকে, ঘুম ভেঙে যায়, আমি ক্লাশে যাবার জন্যে তৈরি হই... তবে এইটা আমার অন্যতম স্মরণীয় স্বপ্ন... এত ডিটেইলে, এত স্পষ্ট আর বাস্তব যে, অন্য কোন কিছু আমার মনে নাই...
এই মাঠটা আমি খুঁজি,... মাঠের শেষের নদীটা খুঁজি... শান্ত ঐ গাছগুলো খুঁজি আমি... হয়তো চিরকাল খুঁজে যাবো...
সচলায়তনে আমার সিগ্নেচারে যে কথাটা লেখা আছে, সেটা আমি অনুবাদ করেছিলাম আমার চলার পথে হঠাৎ পাওয়া এক ছোট বোনের ফেসবুক স্ট্যাটাসের একটা কোট থেকে - Dr. A.P.J. Abdulkalam এর -
“Dream is not that you see in sleep. Dream is the thing which does not allow you to sleep.”
“ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না, স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে...”
অনেক সময়েই আমি স্ট্যাটাস বা সিগ্নেচার সেট করি আমি কী করছি, কী ভাবছি তা অন্যকে জানান দিতে নয়, বরং নিজের নাকের ডগায় ঝুলিয়ে রেখে, নিজেকে নিজেই মনে করিয়ে দিতে... কী করা দরকার, কী করতে চেয়েছি, সেগুলো ...
প্রত্যেকটা মানুষের কমবেশি অ্যাম্বিশন থাকে, জীবনে কিছু করার থাকে, কিছু কমিটমেন্টস থাকে... নিজের কাছে, অন্যের কাছে। আমার স্বপ্ন গুলো বি-শা-ল, কিন্তু সেগুলোর সবকিছুতেই আমি নাই, বরং আমার দেশটা আর তার মানুষগুলো আছে। আমি খুব বেশি পরিমাণ আশাবাদী বলে গালাগাল করে আমার বন্ধুরা, আমি হাসি। বেশ তো আমার স্বপ্ন, আমার আশা-আকাঙ্ক্ষা তোমরা বিশ্বাস নাই করলে, আমি তো বিশ্বাস করি, তাহলেই হবে! তারা বলে, কী করে হবে? কী এমন করতে পারি আমি? আমার জবাবটা খুব সাধারণ হয়, আমার নিজের কাজ, আমার দায়িত্বটুকু যদি আমি সততার সাথে করতে পারি, আরো দুইএকজন যদি অনুপ্রাণিত হয় আমাকে দেখে, তাদের কাজগুলো নিষ্ঠার সাথে করার, সেভাবেই হবে। আমার সামর্থ অনুযায়ী আমি আমার স্বপ্নগুলো পূরণের চেষ্টা করে যাবো যতদিন পারি, এখনো সেই ইচ্ছাটা আছে...
গত কয়েকদিন ধরে খুব ক্লান্ত লাগছে... কাজের চাপে না, ব্যাক্তিগত ঝামেলায় না, দুঃস্বপ্ন দেখে না... একের পর এক ভয়াবহ নৃশংস সব ঘটনা দেখে... মীরসরাইয়ে নিহত স্কুলপড়ুয়া ছেলেরা, ঘরের কাছের একজন আদিবাসী নারী, দেশের নামকরা এক স্কুলের একজন অসহায় ছাত্রী... একের পর এক নিরুপায়, নিঃসহায়, নিরপরাধ মানুষের অসহায়ত্ব দেখে আমার মনে হচ্ছে আমি নিজেই খুব হীন একজন মানুষ, যে নিজের কথা রাখতে পারছি না...
আমার ভয় হচ্ছে... আমার আতঙ্ক লাগছে... আমার সেই সবুজ ঘাসের দিগন্ত জোড়া মাঠ... সেই স্বচ্ছ পানির ছোট নদী... আর সেই শান্ত ছুটির দিন... দীনতা-হীনতা-কলুষতামুক্ত নির্বিবাদ সকাল... আর কখনো আসবে না...
আমি ক্রমশ তার থেকে দূরে, বহুদূরে, নির্লিপ্ত, মোহময়, র্যাটরেসে ব্যস্ত এক অন্ধকূপে নির্বাসিত হচ্ছি...
মন্তব্য
নাঃ, কই ভাবলাম স্বপ্ন মানুষ কেন দেখে সেই সাইকোলজি নিয়ে কিছুমিছু আলোচনা আসবে...
জ্ঞানীগুণী পোস্ট লেখার কাজ তো তোমার... (দিব্যচোখে দেখছি, কৌ এক্ষুণি দৌড়ে গিয়ে মাউস-কী বোর্ড নিয়ে বসে পড়ছে স্বপ্ন দেখার টেকনোলজি আলোচনা লিখতে! )
তা আপাতত তোমার দুঃস্বপ্নগুলো দু'চারটা বলে ফেল দেখি এই বেলা, এইখানে...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ছি ছি! এসব কী! গুরুজনদের কেউ এভাবে ভেঙায়! শাস্তিস্বরূপ নিজের সবচেয়ে জটিল (মানে ফাটাফাটি) স্বপ্নটা এখানে বয়ান করো, এখনি!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমার এই জিভ ভ্যাঙাতেই আনন্দ...
স্বপ্নটপ্ন তো আমার মনেই থাকে না বেশিদিন... মাঝে কয়েকদিন কিছু ভালো ভালো স্বপ্ন দেখছিলাম, ঠিক কী দেখেছিলাম তা মনে নেই কিন্তু ওটার সম্বন্ধে লোককে গল্প করতাম তাই সেটুকু মনে আছে... একটা পুরো সিনেমা, একটা অশরীরী আত্মা যেটার প্রধান ক্যারেকটার... প্লটে আরো অনেক কিছু ছিল, বড়লোকের বনেদী বাড়ি, ফ্যামিলি, ঈর্ষা, ক্রাইম, হ্যান ত্যান... টিপ্যিকাল সিনেমার মতই প্লটের মধ্যে খুব বেশি যুক্তি ছিল না যদিও। কিন্তু গ্রাফিক্স আর স্পেশাল এফেক্টস যে কী চমৎকার ছিল, তা আর কি বলব!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আর বলি হচ্ছেটাকি? খালি আমাকে দিয়েই এতগুলো মন্তব্য করানো!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
হ!
কিন্তু আপনার স্বপ্নবাজির বিবরণ কো?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আপু স্বপ্ন আমায় পছন্দ করে না, ঘুমাইলে তো একদমি না , শেষ স্বপ্ন কবে দেখেছি/কী দেখেছি মনে করতে পারলাম না, ১০ বছর আগেও হতে পারে বা তারো আগে..... .....তবে জেগে স্বপ্ন দেখি অনেক, যেমন আপনি বললেন এরকমও দেখি>
নিরস জীবনে বন্দী হয়ে গেছি, স্বপ্নহীন এক ঘুমে সকাল হয়, মাঝে মাঝে ভাবি স্বপ্ন না দেখা কী কোন অস্বাভাবিকতা? আমি কী অস্বাভাবিক? তবে অনেকেই আছেন আমার মতো! চাই মাঝে মাঝে স্বপ্নগুলো ফিরে আসুক, আলোড়িত করুক-প্রকম্পিত করুক........শৈশবডানায় চড়ে আসুক............
আপনার স্বপ্নগুলো সুন্দর..................
স্বপ্ন দেখা ভুলে গেলে তো বেঁচে থাকাই অসার ...
অটঃ পোয়েট অফ ডিমাইজ থেকে মৃত্যুকবি নাম নিলে কেমন হয়? নিজে মরাও হলো না, আবার বেশ ডার্ক ডার্ক ভাবজটাও থাকলো?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
স্বপ্ন ফিরে আসবে আবার নিঝুম কোন ঘুমে, অচেনা দিনে.............
ইস্ এতসুন্দর সাজেশনটা যদি আগে দিতেনগো আপু, বড্ড ভালো হইতো, কয়দিন আগে কর্তৃপক্ষকে মেইল করে বলছি আগের কবি বাদ দিয়ে পরে ঈষৎ যোগ করতে, এবং এরপর বিরক্ত করেই গেছি আরো দুই মেইল দিয়ে- পরিবর্তনটা পাকা করতে!!! এখন যদি 'মৃত্যুকবি' দিতে বলি তবে না পুরা আমাকেই বাতিল ঘোষণা করে বসে!!!
তবে মৃত্যুকবি থেকেও কবিটা বাদ দিলে ভালো হইতো, অ-কবিতা লিখে 'কবি' নামক শ্রদ্ধাস্পদ শব্দ আমার মতো অযোগ্যের ব্যবহার করা এতদিন উচিৎ হয় নাই!!! তবে মৃত্যুকবিতে আসলেই "ডার্ক ডার্ক ভাবটা" আছে!!!
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল, ভালো থাকবেন খুব রঙিন স্বপ্নের মত!!!!
আচ্ছা, গানটা শোনা যায়? আমি একবার দেখলাম প্লেয়ারটা আছে, আরেকবার দেখি নাই!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমিও একবার দেখলাম আছে আর একবার নেই। এখন যাচ্ছে।
এরকম বোধ করি সবারই হয়। কিন্তু আপনার সাথে একমত, বাস্তবে যা দেখছি তা মানুষ দুঃস্বপ্নেও দেখতে চায়না। লেখায়
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
সেটাই রা.স্ম.'দা...
আর ধন্যবাদ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এরকম বোধ করি সবারই হয়। কিন্তু আপনার সাথে একমত, বাস্তবে যা দেখছি তা মানুষ দুঃস্বপ্নেও দেখতে চায়না। লেখায়
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
হ্যাঁরে, কে আচিস, চট করে একখানা খাবনামা নিয়ে আয় দিকি! হুম!!! অন্ধকূপের প্রান্তদেশে ঐতো একফালি শুভ্র আলো দেকতে পাচ্চি!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
সুলেমানী খ্বোয়বনামা দিমু বস?
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধুগোদাদা নাকি একটা লিখবেন স্থির করেছেন। আমি সেটার ফ্ল্যাপ লিখে দেব বলেছি!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আপনাদের কথোপকথনতো দেখি ভালোই চলছে, মজা পেলাম। আবার তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে আপনাদের দুইজনের অজানা ভেজালের মধ্যে জড়াতেও চাচ্ছিনা
যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর লেখা, পড়তে যেয়ে দেখলাম ঘুমের ভেতরও বিরাট ঘুরোঘুরি করা হয় , ব্যাকপ্যাকার নামকরনের সার্থকতা এমনকি কল্পলোকের দেশেও মজুদ।
আপনার আগামী দিনগুলো ভালো কাটুক। আাপনার লেখা আমার ভালো লাগে, শুভেচ্ছা,
আমার আর কৌ-এর কথা কন? এই কৌ ছেলেটা মস্ত পাজি, আমার সব পোস্ট ফ্লাডিং করে দেয় দেখবেন খেয়াল করে... ( )
হা হা হা হা হা! আমার পোস্টের সেরা কমেন্ট এইটা নির্ঘাত! অনেক মজা পেলাম পড়ে।
অনেক ধন্যবাদ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এতগুলো স্বপ্নের বর্ণনা পড়ে কিছুদিন আগে নিজের দেখা একখানা স্বপ্ন মনে পড়ে গেলো। এমনিতে আমি অবশ্য সু বা দু কোন স্বপ্নই দেখি না, কালেভদ্রে একটা দুইটা দেখা যায়, এটাও সেরকমই একটা।
দেখলাম যে আমি এক জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যেতে যেতে পেলাম একটা ভাঙাচোরা মন্দির। সেটার মধ্যে গিয়ে দেখি চারদিকে প্রচুর রত্নটত্ন গড়াগড়ি খাচ্ছে কিন্তু সব বড্ড নোংরা। সেই সাথে অনেক লোকজন - এ পর্যন্ত যত দেবদেবীর বর্ণনা পড়েছি সবই সেখানে আছে। গণেশ কার্তিক লক্ষ্মী তো আছেই, একদিকে দেখলাম শিব আর পসাইডন কার ত্রিশূল বড় সেটা নিয়ে তর্ক করছে আর ফ্রেয়া একটা বিড়াল কোলে নিয়ে ওডিনের দিকে তাকিয়ে আছে। এর মধ্যে লাঠি ভর দিয়ে লুঙ্গি পরা এক থুত্থুরে বুড়ো এসে বললেন "খবরদার, কিছু ধরবি তো অভিশাপ লাগবে"। কেমনে জানি বুঝলাম ইনিই ইন্দ্র। আমি হেসে ফেললাম, দেখে ইন্দ্র আরো চটে গিয়ে লাঠি ঠুকে বললেন, "তবে রে পামর, তুই কি ভেবেছিস বুড়ো হয়েছি বলে অভিশাপে তেজ নেই?" আমি বললাম, "তা কেন হবে দাদু? কিন্তু দেখুন আপনার সব ধনরত্ন - ময়লা মেখে তো যাচ্ছেতাই অবস্থা, তুলুন তো দেখি এই হীরেখানা"। ইন্দ্র একটা হীরে তুলে ধরলেন, বেশ বড় সাইজ, ময়লা মেখে কালো হয়ে আছে। আমি সেটার উপরে খানিকটা গ্লাস ক্লিনার স্প্রে করে দিতেই ময়লা কেটে গিয়ে ঝলমল করে উঠলো। ইন্দ্র বললেন, "দেখেছো! আধুনিক বিজ্ঞান কোথায় এগিয়ে গেছে! আমরা তো স্বর্গে থেকে বিজ্ঞানের কোন সুফলই ভোগ করতে পারলাম না..."।
এই পর্যন্ত দেখেই ঘুমটা ভেঙে গেলো...
ঠিক দেখেছিলেন তো? ওটাই হীরেই ছিলো? কোন খাবার নয় রাশি রাশি, ভাড়া ভাড়া, খাওয়া দাওয়া হলো সাড়া' টাইপ স্বপ্ন দেখেন না ভাইয়া? সামনে রোজা আসছে আপনার কী যে হবে ভাবনাই হচ্ছে কিন্তু
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
রোজা আসছে তো কী হলো? আজকে দিনের দৈর্ঘ্য ষোল ঘন্টা একুশ মিনিট - এই সাইজের রোজা রাখা আমার কম্ম নয়।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
মন্তব্য লাফাং___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ইস!! একেবারে ইন্দ্রপ্রসথসহযোগ!! সাধু সাধু!!
বাপ্রে যাযাদি, স্বপ্নগুলো এত নিখুঁতভাবে মনে রাখতে পারেন! আমি তেমন করে মনে রাখতে পারিনা, আসলে আমি সেরকমভাবে স্বপ্ন দেখিনা খুব একটা। যেসব গুলো দেখি সব মোটামুটি দুঃখজনক...দেখি ভাইয়া আমার মাথায় চাটি মেরে বলছেন, 'সাধে কী তোকে গাধা বলি!' আমি রেগে গিয়ে বলছি, 'গাধা নয়, আমি গাধী হবো তো'! ...আরেকটা দেখি পরীক্ষা হলে বসে লিখছি, শেষ ঘন্টা বেজে গেছে কিন্তু আমি লেখা শেষই করতে পারিনি
চোর ধরা আর ঐশ্বরিয়ার স্বপ্নটা মজারু কিন্তু
@কৌস্ত্তভ, স্বপ্ন কী? স্বপ্ন মানুষ কেন দেখে? স্বপ্ন দেখাকালীন সময়ে সেটা নিয়ন্ত্রণে মানুষের কোন হাত থাকে কিনা...ইত্যাদি নিয়ে বেশ একটা পোষ্ট দিয়ে ফেলুন তো দাদামশাই
আরে নিখুঁতভাবে আর যাই হোক, স্বপ্ন মনে থাকে না ভাই! ঐ খোলা প্রান্তর আর নদী তীরের স্বপ্নটা ছাড়া বাকিগুলোর তেমন কোন ডিটেইলস মনে নেই, তাই লেখার স্বার্থে কিছু জুড়েটুড়ে দিতেও হলো আরকি...
পরীক্ষার স্বপ্নটা ক্লাসিক... এইটা মনে হয় কম-বেশি সবাই দেখে! আমার তো আবার সত্যিও হয়ে যেত মাঝে মাঝে... পরীক্ষা দিতে ভালো লাগতো না কিনা... আমি খুব ধীরে ধীরে লিখতাম, বেশ অনিচ্ছা নিয়েই..
একবার ক্লাশ ফোরে পড়ি মনে হয় তখন, সমাজ বিজ্ঞান পরীক্ষার আগের রাতে ঘুমের মাঝে নাকি বলছিলাম - 'পরিবেশ বলতে বোঝায়...' এই নিয়ে বেশ অনেকদিন পচানো হয়েছে আমাকে বাড়িতে...
কৌ-কে কেউ কিছু লিখতে বললে সে কিন্তু না করতে পারে না, এক্ষুণি ছুটবে টাইপ করতে বললাম, হুঁ! কাজেই ভাবিয়া লিখিতে বলুন!
(ফিস্ফিস করে, তাকে বইলেন না এইটা, তবে সে কিন্তু লেখে ভালোই...শশ্শশ্!)
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সাধে কী বলি...
আরো অনেকগুলা আজগুবি স্বপ্নের কথা মনে করায় দিলা ভাই...
ছুডুবেলায় একবার দেখলাম আমি আর আমার ভাই একটা গুপ্তধনের ম্যাপ পেয়েছি। সেই ম্যাপ ধরে চলে গেছি পেরুর ঘন জঙ্গলে, খাদের উপর দিয়ে দড়ি বেয়ে বেয়ে অন্য পারে পৌঁছে জংলীদের তাড়া খেয়ে নদীর পারে এসে দেখি কুমিরে ভর্তি। ম্যাপ বলছে নদীর উৎসমুখে যেতে হবে গুপ্তধনের খোঁজে, তখন আমরা দুই অ্যাডভেঞ্চারার দড়ি দিয়ে কুমিরের মুখ বেধে ওগুলোর পিঠে দাঁড়িয়ে গেলাম আর সেগুলা পাহাড়ি নদীর স্রোতের উল্টোদিকে আমাদের নিয়ে যেতে লাগলো। শেষটা মনে নাই, তবে ভাইকে বলার পর আমরা মহা উৎসাহে এই স্বপ্ন বেজড কার্টুন/ কমিক স্ট্রিপ আঁকতে বসে গেলাম। দুই পাতা আঁকার পর উৎসাহ মিইয়ে গেল... নাহলে টিনটিন কে বুড়া আঙ্গুল দেখানো টাইপ একটা কমিক্স হইত।
আরেকবার দেখলাম এইটা ১৯৭১ সাল, ভীষণ যুদ্ধ চলছে ঢাকায়,চারদিকে বোমা পড়ছে, গোলাগুলি... এক মুক্তিযোদ্ধা এসে আমাদের বাসায় খাটের নিচে লুকিয়েছে, তবে সেই মুক্তিযোদ্ধা আবার বাংলাদেশী, সাউথ আফ্রিকান অল-রাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস। সে বাংলাদেশের হয়ে লুঙ্গি গামছা পড়ে যুদ্ধ করছে আমি এতেই মুগ্ধ...পারলে তার সঙ্গে যুদ্ধে চলে যাই এখনি এইরকম ভাবছি... এটারও শেষ মনে নাই...
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আরেহ! ট্রেজার ম্যাপ নিয়ে অ্যাডভেঞ্চার আমাদের ছোটবেলার একটা অন্যতম খেলা ছিল। আমি তো পালের গোদা, ম্যাপ তৈরি, কোর্স সেট করা সব আমার মাথা থেকে বেরুতো, আর অন্যরা হতো আমার ফলোয়ার। মনে পড়লো সেসব কথা...
তোমাদের তৈরি কমিক তো পুরাই হিট জিনিস মনে হচ্ছে...!!
কিন্তু এইখানে এসে হাসতে হাসতে বিষম খেয়ে গেলাম পুরা -
যুদ্ধের স্বপ্ন আমিও দেখেছি, মনে নাই সেভাবে বিস্তারিত।
আমার ভাইকে পড়তে বসাতে ব্যাপক কসরত করতে হতো, তো একবার রান্না করতে করতে, খাবার টেবিলে তাকে বই দিয়ে বসিয়ে, আম্মু তাকে বাংলা পড়াচ্ছে, বীরশ্রেষ্ট নূর মোহাম্মদ-এর সম্পর্কে পড়ছে সে... হঠাৎ দেখা গেল যে নাই! কই রে, খোঁজ খোঁজ চারিদিকে... খানিক পরে টেবিলের নিচ থেকে বেরিয়ে বলে - পাক বাহিনি মেরে আসলাম কয়টা!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
স্বপ্নের কথা যারা বলতে পারে তাদের আমি খুব ঈর্ষা করি। আমি অনেক দিন হল স্বপ্ন দেখি না। ছোট থাকতে দেখতাম এইটে মনে আছে। কে জানে বয়েস হলে হয়ত মানুষের স্বপ্ন দেখাও বন্ধ হয়। কোথায় জানি পড়েছিলাম, বুড়ো হবার সবচেয়ে বড় অসুবিধাটা হল এই যে, তাদের ভবিষ্যত বলে কিছু থাকে না। এখন মনে হল, কথাটার সাথে এইটাও জুড়ে দেয়া জরুরি--বুড়ো হলেন তারাই যারা আর স্বপ্নবাজীতে অংশ নিতে পারেন না।
তোমার লেখা খুব চমৎকার, নির্ভার, নির্মেদ।
তোমার ভাবনাগুলো তারচেয়েও ভাল, আর ভীষন রকম সৎ!
প্রার্থনা করি তোমার স্বপ্ন দেখা যেন কখনো বন্ধ হয় না। তোমার দুঃস্বপ্নেরা সব দূরে যাক---
শুভেচ্ছা নিরন্তর
You are only as young as you THINK... বা অন্যভাবে বললে - You are only as old as you FEEL ...
অনেক ধন্যবাদ অনিকেত'দা... যেন তাই থাকে চিরকাল...
আপনাকেও শুভেচ্ছা...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
বারেবা, এখানেতো দেখি সপ্নের মচ্ছব বসে গেছে!
আমি একটা সপ্ন প্রায়ই দেখি - নিযামী-সাইদী-কাশেম-কাদের-গোআযম নাম ধরে ধরে পাছায় ছিল-ছাপ্পর-ষ্টিকার লাগানো কিছু বিশেষ প্রজাতির পশুপাখীকে খাচায় ঢোকানো হচ্ছে এবং লাইন ধরে ধরে মানুষ দাড়িয়ে আছে দিনের পর দিন - কখন তার সময় আসে বাশ ঢুকাবার!
দ্বিতীয় সপ্নটা আমি প্রায়ই দেখি, ঘুমের ভেতর আমার ক্ষয়ে যাওয়া দুইটি দাত সহ বাকি সবকটি দাত একটা অসহনীয় সুখে হাসতে থাকে, মুগাম্বুর এক্কেরে পেরতেকটা পরতে পরতে একটা বেলাজ বেশরম আনন্দ খেলা করতে থাকে!! আমি ঘুমের ভেতরই আবার শ্লোগান শুনতে পাই, আমাদের ধমনীতে লাখো শহীদের রক্ত ......!!!
এই স্বপ্ন আমরা অনেকেই দেখি...
এই স্বপ্ন যেন সত্যি হয়।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আহা ইন্টারগ্যালাকটিক স্বপ্নটা ফাটাফাটি!
কয়েক বিলিয়ন বছরের ডিসপিউট এক ধমকে সলভ করে দিলে!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হ! দেখেন না তুলিদি, এমনিতেই তো দুনিয়াজুড়া পচুর গিয়াঞ্জাম, তার উপরে আবার লোকে হুদাই ক্যাচাল করে, তাই আবার কয়েক বিলিয়ন বছর ধরে!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমার নিজেরও স্বপ্ন খুব একটা মনে থাকে না। কিন্তু ভয়াবহ দুঃস্বপ্নগুলো চেতনার সবটুকু কাঁপিয়ে দিয়ে যায়। আমার ঘুমের কোন ঠিক-ঠিকানা নেই। টি.এ. হিসেবে এক অতি অমায়িক খচ্চরের অধীনে কাজ করতাম। মাঝে মাঝে স্বপ্নে তার ইমেইল তাগিদের কথা ভেসে আসে।
এখন মূলত দীর্ঘস্থায়ী এক দুঃস্বপ্নের মাঝেই আছি। দৈনন্দিন জীবনের হাজারো সমস্যার মাঝে পত্রিকার হেডলাইনগুলো যে কোন হরর ছবিকে টেক্কা দিবে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আমার এক ফিচকে বন্ধু ঘাড়ের উপর উঁকি মেরে বলল,"এইটা লিখলি না- রাত পোহাবার কত দেরী পাঞ্জেরী?"
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
হা হা হা!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
খাইসে! বহুমূখী স্বপ্ন!! কোনো সেক্টর তো বাদ রাখো নাই দেখি!!!
তোমার নদীর ধারের স্বপ্নটা আমার ভেতরটাও ভীষণ ছুঁয়ে দিলো।
ভয়ংকর স্বপ্নেরা সব দূরে থাকুক, সত্যি হয়ে উঠুক তোমার সুন্দর স্বপ্নগুলো।
লেখা ভীষণ ভীষণ ভালো লাগলো।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপনি নিজে কিন্তু ইদানীং একদমই লিখছেন না ...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
দারুন লেখা...কিন্তু এত ডিটেল স্বপ্ন ?! আমি তো ল্যাজা মুড়া মিশিয়ে ফেলি। মাঝে মধ্যে অবশ্য অন্যরকম হয়। সেইগুলো নিয়ে আমার একটা লেখার খাতাও ছিল। পড়লে মন ভালো হয়ে যেত
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
বাহ! তা সেসব থেকে আমাদেরকেও দুই-চারটা শোনানো যায় কি?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
নাহ, আর যায়না, কবেই সেই খাতা ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছি।
গত শরতে পদ্মার চরে আদি অন্তবিহীন কাশফুলের মচ্ছব দেখে মাথা খারাপের মত হয়ে গেছল। এবারের শরতে রাজশাহী নামায় ওই কাশফুলের মেলার একটা ফটু ব্লগ দিয়ে দিন না। আরেকবার মাথা খারাপ করি মনের সুখে...
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
নতুন মন্তব্য করুন