গুলশান 'আড়ং'টা দেখেছেন তো আপনারা, তাই না? এই শুক্রবার সকালে টিপটিপানি বৃষ্টি শুরুর আগে দিয়ে সামনের উইন্ডোর মাঝখানের ম্যানিকিনটাকে আমরা একটু নজরে আনতে চাই। হুঁ, ঠিক ধরেছেন, গুলশান অ্যাভিনিউ থেকে তেজগাঁও ঢুকবার সময়ে আড়ং-এর এই আউটলেটের রাস্তার দিকে যে বড় বড় কাচের জানালা পড়ে, তার বাঁয়েরটায় রাখা চারটা ম্যানিকিনের দুই নম্বরটা... কী বলছেন, বাইরে থেকে ভালো দেখা যায় না পেছন ফেরানো ম্যানিকিনগুলো! আচ্ছা, সেভাবে বোঝা না গেলে আসুন আমরা একটু ভেতর থেকে চেষ্টা করি এবার। হুম, বৃষ্টিটাও শুরু হয়ে গেছে এতক্ষণে... দারুণ। ব্যাপারটা এমন, ভেতরে, শাড়ির সেকশন এটা। এখানে জানালার কাছের উঁচু জায়গাটায় চারটে ম্যানিকিন আছে, প্রতিটায় আড়ং-এর কালেকশনের সেরা চারটে শাড়ি পরানো থাকে। এখানে আয়নাটার দিক থেকে দুই নম্বর ম্যানিকিনটায় ফোকাস করবো আমরা... রাইট, এই তো বুঝেছেন এবার! এই ম্যানিকিনের সামনেই গভীর আগ্রহ ভরা চোখে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের আজকের শুক্রবারের এই বৃষ্টি ভেজা সকালের গল্পের নায়িকা... রওনক।
আসুন, আমরা এবার রওনকের দিকে দৃষ্টি ফেরাই...
রওনক খুব মনোযোগ দিয়ে শাড়ির সেকশনের বড় আয়নাটার পাশের দ্বিতীয় ম্যানিকিনে পরানো শাড়িটা দেখছিলো। আজকে ছুটির দিনে সকালে ঘুম বাদ দিয়ে নিজের অনেক কষ্টে আয় করা টাকাগুলোর একটা বড় অ্যামাউন্ট ব্যাংকের এটিএম মেশিন থেকে উঠিয়ে সে 'আড়ং' এসেছে একটা বিশেষ কাজে, আসাদ গেটের আড়ংটা বাড়ির কাছে হলেও, তিন/চার ফ্লোর মিলিয়ে ছোটাছুটি করে জিনিস কিনতে গিয়ে কেমন যেন খেই হারিয়ে ফেলে দেখে গুলশানে ছুটে আসা। এই আড়ংটা বেশ, একটা বড় ফ্লোরেই সব। শাড়ি দেখতে দেখতে গিয়েই পিচ্চিদের জামা দেখে আসা যায়, আবার সেখান থেকেই ছেলেদের সেকশনেও একটা ঢুঁ মারা যায়... আজকে অবশ্য একটা বিশেষ কারণে সে শাড়ির সেকশনে প্রথমেই ঢুকেছে... মামাতো ছোট বোনের বিয়ে সামনে, চাকুরে বড় বোন হিসেবে তার একটা সুন্দর দেখে কিছু দেয়া উচিত মনে হয়েছে রওনকের। নিশি শাড়ি ভালবাসে, তাই শাড়িই দেয়া ঠিক করেছে। পাশাপাশি মায়ের অফিস করার মতো শাড়িও দেখবে, আর ঐযে, পিচ্চিদের সেকশন, ছেলেদের সেকশন, কামিজ সেকশনেও একটু ঘুরে আসবে, ঈদের অ্যাডভান্স শপিং কিছু করা যায় কিনা দেখবে।
কিন্তু দোকানে ঢুকে, হনহন করে শাড়ির সেকশনের দিকে এগিয়ে এসেই রওনক যেই জায়গাটায় আটকে গেছে সেটা বোনের উপহারের শাড়ির উপযুক্ত স্থান নয়, ম্যানিকিনে পরানো শাড়িগুলো ‘উপহার’ দেবার ক্ষমতা রওনকের কখনো হবে না মনে হয়... নিজের জন্যে কেনার ক্ষমতা নিয়েও সামান্য সন্দিহান আছে সে, তবে সুখের বিষয় পোশাক নিয়ে রওনকের বাহুল্য নেই অতটা।
কিন্তু... এই শাড়িটা অন্যরকম...
..................................................................................
আসুন আমরা এবার একটু শাড়িটার দিকে তাকাই...
শাড়িটা লাল রঙের ... আরে! এখনই হাঁ হাঁ করে ওঠার কিছুই নেই রে ভাই, বিস্তারিত বিবরণ পড়ুন আগে! যা বলছিলাম, আমাদের গল্পের রওনকের মনোযোগ কেড়ে নেয়া শাড়িটা লাল রঙের একটা কাতান সিল্ক। মানে ঠিক ক্যাটকেটে লাল নয়, খুব সুন্দর একটা গাঢ়, কালচে লাল, আমাদের বাংলাদেশের পতাকার বৃত্তের মতন লাল। অনেক আগে, মানে এই ধরুন বছর পনের আগে এই রকমের সাটিন সিল্ক কাতানের চল হয়েছিলো, খুব ফ্যাশন ছিলো তখন এই জিনিসের। তারপরে এই তুলনামূলক ভাবে সামান্য ভারী কাতানগুলোর ফ্যাশন চলে যায়, বোঝাই যাচ্ছে 'আড়ং' আবার নতুন করে এই ফ্যাশন শুরু করতে যাচ্ছে।
তবে এই কাতানটা কিন্তু সত্যিই বেশ আকর্ষণীয়। পেটানো লাল সাটিন সুতোয় সার্কুলার প্যাটার্নের কাজ করা পুরোটা শাড়ি, পাড়গুলো বেশ আনকমন একটা প্যাটার্নের, সোনালি জড়ির সুতোর কাজ করা, আঁচলটা আরও সুন্দর ডিজাইনের সোনালি জড়ির পেটানো কাজ। পুরো জিনিসটা খুব সাধারণ, মানে তাতে যাকে বলে জমকালো ভাব, সেটা নেই একেবারেই। কিন্তু উপর থেকে বিশেষভাবে ফেলা আলোতে আর সবকিছু ছাপিয়ে এই সিম্পল কিন্তু অত্যন্ত চমৎকার কাতানটা দোকানের সব মহিলা খদ্দেররই দৃষ্টি আকর্ষণ করছে খুব এফেক্টিভভাবে।
..................................................................................
“এইটা কিনতে তো আসোনি মেয়ে!” নিজেকে মৃদু ধমক লাগায় রওনক, মনেমনে। নিজেই উত্তর দেয়, “কিন্তু দেখতে কী অসুবিধা!”
উঁচু জায়গাটায় উঠে গিয়ে হাত দিয়ে নেড়ে ম্যানিকিনে পরানো কাতানটা দেখে রওনক। হাসিমুখে সেলস গার্লটা এগিয়ে আসে, দাম জানতে চায় এবার রওনক... মাত্র দশ হাজার টাকা!
খানিকটা চমকে ফিরে আসে বাস্তবে, উঁচু জায়গাটা থেকে নেমে আসলেও দৃষ্টি ফেরে না ওর।
‘অনেক ভারী হবে... ‘, নিজেকে বুঝ দেয় রওনক।
তাছাড়া এত দামী শাড়ি কোথায় পরবে, যদি শখ করেও কেনে একটা!
'আরে আজকে তো অত টাকাই আনিনি!'
কিন্তু এটিএম থেকে তুলে আনা যায়... এমন শখ তো রোজ রোজ করে না।
নাহ! এটা একদিন কোথাও পরলেও, পরে কী হবে? একটা অতিরিক্ত দামী শাড়ি সবখানে পরা যায় না। কারও বিয়েতে পরা হলে সবাই দেখে, ব্যস। তারপরে সেটা অন্য কোথায় বা আর পরবে, আর বারবার সবার বিয়েতেই একই শাড়ি পরাও যায় না, দেখেছে সে। যারা খেয়াল করে সুন্দর বলবে, তারা মনেও রাখবে, বলবে "রওনক, একটা নতুন কিছু পরতে।"
এক যদি নিজের কোন বিশেষ দিন হয়, একটা নতুন শাড়ি সে শখ করে পরতেই পারে, তেমন কিছু জামা-কাপড় থাকে সবসময়েই, প্রিয় কোন স্মৃতির সাথে জড়ানো, যেটা বারবার পরতে ভালো লাগে, যে কোন উপলক্ষেই...
ম্যানিকিনের সামনে থেকে সরে এবার রওনক বোনের উপহারের জন্যে শাড়ি বাছাইয়ে মন দেয়। বেশ কয়েকটা দেখবার পরে একটা গোল্ডেন অরেঞ্জ কম্বিনেশনের চোষা কাতান পছন্দ করে ফেলে, দামটাও ওর বাজেটের মাঝেই। খুশি মনে এবার অন্যান্য জিনিস দেখায়, মানে মূলত উইন্ডো শপিং-এ মন দেয় রওনক। বড় ভাইয়ার মেয়েটা যে কি কিউট হয়েছে! ওর জন্যে একটা জামা পেলে হতো মনে করে ছোটদের সেকশনের দিকে এগোয়।
..................................................................................
কিন্তু আমাদের এই গল্পে আজকে রওনকের জন্যে স্বাভাবিক ঘটনাবলী লেখা নেই। বাচ্চাদের জামার সেকশনের পাশেই ছেলেদের পোশাক, শাড়ির সেকশনের কোনাকুনি তাকালে দেখা যাবে ছেলেদের সেকশন। উঁহু, না! তাকালে দেখতে পাবেন না... মাঝের ডেকোরেশনের সেকশন, জুতোর সেকশন, ইত্যাদি আড়াল করে রেখেছে। তবে কিনা নিয়মিত গুলশানের আড়ং-এ হাজির হওয়া এই আমি বলছি কাজেই মেনে নিন, ঠিক শাড়ির সেকশনের কোনাকুনি বরাবরই আছে ছেলেদের পাঞ্জাবির সেকশন, আর ঠিক ঐ শাড়ি পরানো ম্যানিকিনগুলো যে উত্তর-পশ্চিম কোণে আছে, সেই বরাবর দোকানের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একটা সরলরেখা টানলেই আছে আরও একটা উঁচু স্টেজের মতো জায়গায় রাখা ছেলেদের পোশাকে আর এক সেট ম্যানিকিন। আর এই শুক্রবার সকালে রওনকের জন্যে এখানটাতেই আছে আমাদের গল্পের দ্বিতীয় টুইস্ট।
..................................................................................
ছেলেদের ম্যানিকিনগুলোর কাছে এসেই থমকে যায় রওনক, ডান থেকে দুই নম্বর ম্যানিকিনটায় একটা সূতীর নীল পাঞ্জাবি পরানো আছে, মোটা খাদির কাপড়ের ফেডেড আকাশী পাঞ্জাবি, খুব সিম্পল। রাজীব যদি এইটা পরে, খুব চমৎকার লাগবে তাকে, পাঞ্জাবিটা দেখে প্রথমেই এইটা খেয়াল হয় রওনকের। খাদির পাঞ্জাবির দাম খুব বেশি হবে না, কিনে ফেলা যায় চাইলেই। কিন্তু পরক্ষণেই চিন্তাটা বাদ দেয়, রাজীবের ঠিকানাটা জানে না সে এখনো... দেবে কীভাবে!
তবে পাঞ্জাবিটায় ওকে খুব মানাবে... যদি ইউনিভার্সিটিতে দেখা করে ওরা, রাজীবকে বলতে পারে সে, ঐটা পরে আসতে...
যদি কখনো দেশে ফেরে রাজীব...
দেশের টানে ফিরতেও পারে হয়তো কখনো, কিন্তু শুধু তার জন্যে ফেরার মতো শক্তিশালী ভাবে কখনো রাজীবকে আটকাতে পারেনি ও, জানে সেটা রওনক... চায়ওনি হয়তো, কাওকে ভালবাসলে তাকে বেঁধে রাখাটা অর্থহীন তাই না..?
আর রাজীব না এলে, যদি কখনো রাজীবের কাছে যায় রওনক, তখন তো পাঞ্জাবিটা নিজের হাতেই দিতে পারবে...
অথবা... সে যদি আগেই পাঠিয়ে দেয় ওটা? তাহলে রাজীব সেটা পরে ওকে রিসিভ করতে আসতে পারে।
উমম... যেদিন ওদের দেখা হবে, সেদিন তাহলে রওনক কী পরে থাকবে? আকাশীর সাথে গাঢ় লাল মানাবে নিশ্চয়ই... শাড়িটা তাহলে ওকেই বললে হয় কিনে দিতে, মুচকি হাসে রওনক।
ধুর! ওখান থেকে কী করে কিনবে রাজীব! তার থেকে ও-ই কিনবে, ও তো অ্যাফোর্ড করতে পারবে এই শাড়িটা, আর একটু কম দাম হলে ভালো হতো অবশ্য... কিন্তু ওদের যখন আবার দেখা হবে, সেটা কী দারুণ একটা ইভেন্ট হবে, না? সারাজীবনের জন্যে স্মরণীয় একটা দিন, সেইইই রকমের একটা বিশেষ দিন...!
রওনকের কল্পনায় ওদের দেখা হবে পড়ন্ত বিকেলে, একটা সরু পাহাড়ি ঝরনায় সুন্দর একটা পথচারী পারাপার ব্রিজের উপরে.. নীল পাঞ্জাবিটা পরে রাজীব পিঠে হেলান দেবে ব্রিজের রেলিঙের গায়ে, মুখ ফিরিয়ে ওর উড়ে যাওয়া চুল আর চোখের দিকে তাকিয়ে গল্প করবে ওর সাথে আনমনে... আর রওনক পানির দিকে সামান্য ঝুঁকে, ব্রিজের রেলিঙে কনুই ঠেকিয়ে হাতের তালুতে গাল রেখে শুনবে ওর গল্প... রওনকও অনেক গল্প করবে... ওরা ছোটবেলার গল্প করবে, যাত্রাপথের গল্প করবে, এ কয়দিনের গল্প করবে, পুরাতন দিনের গল্প করবে, বর্তমানের গল্প করবে, ভবিষ্যতের গল্প করবে... ওদের দেখা হবে, আর তারপর দুইজনে অনেক গল্প করবে।
গল্প করতে করতে সাঁঝ গড়াবে, তাও ওদের গল্প ফুরাবে না...
..................................................................................
সুপ্রিয় পাঠক, ভেবেন না রওনক যখন এইসব সাত-পাঁচ ভাবছে, তখনো সে হাঁ করে ম্যানিকিনের সামনে দাঁড়িয়ে পাঞ্জাবি দেখছে! ততক্ষণে অন্যান্য হাজারটা জিনিস দেখতে দেখতে সে ডেকোরেশন আর ঘরের আসবাবের জায়গা হয়ে আবার শাড়ির সেকশনে চলে এসেছে... আলতো হাতে সূতী ব্লক আর টাঙাইল তাঁত দেখছে, মায়ের অফিস করার উপযোগী শাড়ি খুঁজতে। এদিকে তার চোখ কিন্তু অজান্তেই লাল কাতান পরানো ম্যানিকিনটার উপর থেকে ঘুরে আসছে।
..................................................................................
‘আচ্ছা... কাতানটা না কিনলেও একটু গায়ে ধরে দেখতে তো বাধা নেই!’, ভাবে রওনক।
সেলস গার্লদের একজনকে জানালে মেয়েটা দুঃখ প্রকাশ করে জানায় শাড়িটা এক পিসই আছে, তার পছন্দ হলে ম্যানিকিন থেকে খুলে দিতে পারে।
‘না, থাক।‘ ওখান থেকে সরে আসে রওনক।
আচ্ছা, যদি ও রিকশায় ঐ লাল শাড়িটা পরে সাবধানে হুড ধরে বসে যায়, ধরা যাক দুপুর বেলার আগারগাঁও-এর ফাঁকা রাস্তা ধরে...
আর যদি রাজীব দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তার ধারে কোথাও...
“এই! এই! থামো! থামো!”
রিকশা থামাতেই চট করে উঠে পড়ে ওর পাশে, নীল খাদির পাঞ্জাবিটা গায়ে...
যদি সেদিন রওনকের চোখে অনেক খুশি থাকে, আর রাজীবের মুখে একটা অদ্ভুত হাসি! যদি ওরা বিয়ে করে ফেলে সেদিন, তাহলে?
বাবা-মারা মিলে, হই চই, উৎসব হয় না... হবেও না হয়তো কখনোই... সেভাবে কখনো ভাবেওনি ব্যাপারটা নিয়ে রওনক বুঝতে পারে হুট করে...
যদি ওরা প্রবাসী হয়ে যায়, তাহলে হয়তো এমনটাই করতে হবে, তখন কেউ থাকবে না ওর পাশে... একা একা ওরা... তখন অবশ্য রিকশাও থাকবে না সেদিনটায়, হেসে ফেলে রওনক মন খারাপ করতে গিয়েও। কেন যেন মনে হয় রাজীব আর ওর আর ফিরে আসা হবে না এইখানে, এই শহরে... এ কারণেই হয়তো ভাবতে চায় না রওনক রাজীবের কাছে চলে যাবার কথা...
..................................................................................
এদিকে কী হয়েছে দেখুন, রওনক যখন এই সব আকাশ-পাতাল ভাবছে, দক্ষিণ-পূর্ব কোণের ম্যানিকিন থেকে নীল পাঞ্জাবিটা ব্যস্ত হয়ে খোলাচ্ছে ধানমন্ডির মিশু। ম্যানিকিনে পরানো সাইজটা ওর ভাইয়ের জন্যে একদম পারফেক্ট! আজকে ছোট ভাইটার জন্মদিন, আসাদ গেটের 'আড়ং' শুক্রবারে খোলা থাকলেও গত সন্ধ্যায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ওদের ইউনিভার্সিটির প্রোগ্রাম সেরে, রাতে নিকেতনে বান্ধবীর বাড়িতে থেকে গিয়েছিলো মিশু। সকালে বেড়িয়েই এখানে এসেছে একটা পাঞ্জাবি কিনে নিয়ে ফিরবে বাড়িতে, ভাইকে সারপ্রাইজ দেয়া হবে।
..................................................................................
রাজীবের সাথে ওর গল্পের কথা ভাবতে ভাবতে মেয়েদের কামিজের সেকশন ঘোরে রওনক, দু’টো জামা পছন্দ হয়, একটা নেবে ঠিক করে কাউন্টারে বোনের জন্যে কেনা শাড়িটার সাথে রাখতে পাঠিয়ে দেয়। পায়ে পায়ে আবার পাঞ্জাবির সেকশনে হাজির হয়ে আপন মনে ম্যানিকিনটায় চোখ পড়তেই খানিকটা চমকে ওঠে রওনক, একটা ফুল-স্লিভ ফর্মাল শার্ট পরানো এখন ম্যানিকিনটায়। সেলসম্যানদের একজনকে জিজ্ঞেস করতেই জানে খানিক আগেই নীল পাঞ্জাবিটা এক ম্যাডাম কিনে নিয়েছেন, সরি, আর নেই আপাতত ঐ মাপের আর একটা ওদের স্টোরে, অন্য মাপের চাইলে নিতে পারে রওনক।
‘না, না, দরকার নেই...।‘ জাতীয় কিছু একটা বলে দ্রুত রেহাই পেতে চায় রওনক সেলসম্যানের ওকে খুশি করার তৎপরতার হাত থেকে...
দ্রুত পায়ে বেড কাভারের তুলনামূলক কম ভিড়ের সেকশনে এসে একটু হাঁফ ছেড়ে আনমনে ভাবে রওনক, ইচ্ছা করলে ঐ পাঞ্জাবি আজকেই আসাদ গেটের আড়ং-এ গিয়ে কিনে রাখা যায়, সেটা অনেক বড় আউটলেট, সাইজ থাকে সাধারণত। কিন্তু... হয়তো ওর আসলে কেনারই কথা না এটা... একারণে মাত্র ২০ মিনিটের ব্যবধানেই বিক্রি হয়ে গেল পাঞ্জাবিটা! আশ্চর্য তো!
..................................................................................
বেড কাভারের অঞ্চলে রওনক যখন ভ্রু কুঁচকে পাঞ্জাবির ব্যাপারটা কী ঘটলো বুঝতে চেষ্টা করছে, ঠিক সেসময়েই সামনের দরজা দিয়ে বেড়িয়ে বৃষ্টি থেকে নিজের মাথা আর আকাশী পাঞ্জাবিভরা লাল রঙের আড়ং-এর প্যাকেটটা বাঁচাতে ব্যস্ত মিশু প্রায় দ্বিগুণ ভাড়ায় একটা সিনএনজিতে উঠছে।
আষাঢ়ের আজকের এই শুক্রবারের টিপটিপ বৃষ্টির দিনটায় রওনকের জন্যে আরও খানিকটা চমক অপেক্ষা করছে আমাদের এই আড়ঙায়িত গল্পে দুঃখজনকভাবে...
যখন রওনক অন্যমনস্কভাবে বেড কাভার দেখার ভান করতে করতে, মনে মনে রাজীব আর নীল পাঞ্জাবির কথা ভাবছে, আর ঐদিকে মিশু সিএনজিতে উঠছে ধানমন্ডিতে বাড়ি ফিরবে বলে, ঠিক এই সময়টায়, উত্তরার রাফিদ তার সহধর্মিণী তানির জন্যে লাল রঙের কাতানটা সেলসগার্লকে গিফট-র্যাপ করে দিতে বলছে।
আজকে রাফিদ আর তানির সপ্তম বিবাহবার্ষিকী, তানিকে সকালে মাসকট প্লাজার কাছে নামিয়ে দিয়ে যেন খুব জরুরি একটা মিটিং এই ছুটির দিনে পড়ে গেছে এই ভান করে গুলশান চলে এসেছে রাফিদ। তানি রীতিমতো ফুঁসছে সকাল থেকে, গতকাল রাতেও রাফিদের একটা বিজনেস ডিল সেরে ফিরতে গভীর রাত হয়েছে। আজকে ছেলে তমালেরও স্কুল ছুটি তাই আজকে ওদের সবার একসাথে সময় কাটাবার কথা ছিলো। রাফিদ ধুনফুন বুঝিয়েছে বউকে, রাতে খাবার সময়ে খুব চেষ্টা করবে যে করে হোক সময় ম্যানেজ করতে, এইসব বলেছে। তানি দুই তিনবার হিন্টস দেবার চেষ্টা করেছে আজকে যে একটা বিশেষ দিন সেটা বোঝাতে, রাফিদ যেন শুনতেই পায়নি এমন একটা ভাব করে খুব তাড়াহুড়ার ভান করে তানিকে দোকানে নামিয়ে দিয়েই গুলশানে চলে এসেছে ড্রাইভ করে। সারাটা পথ মুচকি মুচকি হেসেছে রাফিদ, দুপুরে লাঞ্চের ঠিক আগে ফিরে গিয়ে বউকে কেমন চমকে দেবে ভেবে। আড়ঙে ঢুকে শাড়ির সেকশনে এসেই এই লাল-সোনালি কাতানটা খুব পছন্দ হয়ে গেছে ওর। একটাই আছে শুনে আরও খুশি, তানি আনকমন জিনিস পছন্দ করে। তবে আরও দামী কিছু দিতে চাইছিলো সে বউকে, আচ্ছা, নাহয় জুয়েলারি সেকশনেও একটা ঢুঁ মেরে যাবে বের হবার আগে।
হা হা হা! তানি যে আজকে ধরাটা খাবে। নিশ্চয়ই এতক্ষণে ওর সাথে কী, কী বলে ঝগড়া করবে রাতে বাসায় ফিরলে তার ফিরিস্তি করছে!
একা একা হেসে ফেলে রাফিদ।
কাউন্টারে গিফট-র্যাপরত মেয়েটা একটু অবাক হয়ে তাকায় সুগঠনের এই শেষ তিরিশের তরুণের দিকে, তার মুখেও হাসি ফুটে।
মেয়েটা তাকে দেখে হাসছে দেখে চোখ মটকে, “অ্যানিভার্সারি গিফট”, বলে রাফিদ।
“খুব সুন্দর শাড়ি স্যার, আপনার চয়েস ভালো, ম্যা’ম খুশি হবেন।“ হেসে জবাব দেয় মেয়েটা, গিফট র্যাপ করতে করতে।
..................................................................................
বেড কভারের রিজিওনে ছুটির দিনের খদ্দেরদের ভিড় থেকে দূরে দাঁড়িয়ে থেকে নিজের চিন্তার সুতোগুলোর লাগাম টানে রওনক। ঠিক করে এখান থেকে এখন সোজা শাড়ির কাউন্টারের দিকে গিয়ে নিজের জামাটা আর বোনের শাড়িটার দাম দিয়ে বেড়িয়ে পড়বে। লাল-সোনালি কাতানটা সুন্দর হতে পারে, কিন্তু নিজের কষ্ট করে জমানো টাকা খরচের জন্যে এখন উপযুক্ত নয়। তার আর রাজীবের কখনো আবার দেখা হলে, তারা কী পরেছে তাতে কিছুই যায় আসেনা... অমন একটা আকাশী খাদির পাঞ্জাবি রওনক কখনো আবার দেখলে কিনে রাখবে রাজীবের জন্যে, দেখা হোক বা না হোক... আর লাল-সোনালি শাড়িটা ওকে মানিয়েছে দেখে অবাক হয়ে রাজীব তার দিকে তাকিয়ে থাকবে মুগ্ধতা নিয়ে এমনই যদি হয়, তাকে ভালবাসলে এমনিতেই তার চেয়ে অনেক বেশি খুশি নিয়ে দেখবে রওনককে, যে কোন প্রেক্ষিতেই, তাই না?
এখন দোকানে দাঁড়িয়ে এগুলো ভেবে লাভ কী!
পায়ে পায়ে শাড়ির কাউন্টারে এগিয়ে এসে নিজের জিনিসগুলোর বিল করতে বলে রওনক। তাকাবে না, তাকাবে না করেও, আড়চোখে ম্যানিকিনটার দিকে চোখ চলে যায় আবার।
এবার চমকায় না রওনক, বিস্ময় নিয়ে হেসে ফেলে...
লাল-সোনালি কাতানটা নেই আর ম্যানিকিনের গায়ে।
সেখানে এখন কালো একটা রাজশাহী সিল্ক, সুতোর কাজ করা। এই শাড়িটাও সুন্দর, এবং সম্ভবত আরও দামী।
কিন্তু গত দুই ঘণ্টা ধরে স্বপ্ন বুনে যাওয়া ওদের বিয়ের লাল-সোনালি কাতানটা চিরকালের জন্যে হারিয়ে গেছে অন্য কারও কাছে...
..................................................................................
বাইরে কিন্তু এখন আষাঢ়ের বাদল পুরো ধারায় নেমেছে... শুক্রবারের ফাঁকা রাস্তা আরও ফাঁকা হয়ে গেছে... একটা ঝরঝরে মারুতি ৮০০ কালো ট্যাক্সি থেমেছে রওনকের পাশে। ট্যাক্সি ড্রাইভার বেশ খানিকক্ষণ ধরে রওনককে ডেকে বলছে, “আপা যাবেন? এখন আর কিছু পাবেন না, উঠে পড়েন, নাহয় মিটারেই যাবোনি, ৪০টাকা বেশি দিয়েন।”
কিন্তু তার কথা রওনক শুনতে পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।
ট্যাক্সিটা চলে যাচ্ছে রওনককে রেখে।
মুখ তুলে বৃষ্টির ধারায় ভিজছে এখন রওনক... ভুলে গেছে হাতে ধরা নতুন জামা আর বোনের জন্যে কেনা নতুন চোষা কাতানের প্যাকেট যে ভিজে যাচ্ছে সে কথা।
রওনক কী ভাবছে বলি আপনাদেরকে, স্বপ্নবাজ রওনক তখন ভাবছে,
“আচ্ছা, এমন যদি হয়, ম্যানিকিনে পরানো লাল-সোনালি শাড়িটা একটা তরুণ কিনেছে তার প্রেমিকার জন্যে, অনেক কষ্ট করে জমানো ওর প্রথম চাকরির প্রথম বেতনটা দিয়ে... আর বিশাল দোকানটার অন্য কোনায় আরেকটা ম্যানিকিনে পরানো পাঞ্জাবিটা কিনেছে তরুণটির প্রেমিকা... কথা ছিলো আজকের দিনে ওরা একে অপরের জন্যে শাড়ি আর পাঞ্জাবি কিনবে... আজকে খুব বিশেষ একটা দিন ওদের জন্যে... এই দিনটার জন্যে দুইজনে অপেক্ষা করছিলো অনেকদিন ধরে...”
কোন একটা বিচিত্র কারণে রওনকের চোখ বেয়ে নেমে আসা তপ্ত অশ্রু, ধুয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির ঠাণ্ডা পানিতে। কেউ যে ওর চোখের পানি জানতে পারছে না, এটা বুঝতে পেরে একই সাথে হাসছেও সে।
আর ঠিক সেই সময়ে একটা সিএনজিতে ম্যানিকিনের নীল পাঞ্জাবিটা, আর একটা কালো ফোর্ডে অন্য ম্যানিকিনের লাল-সোনালি কাতানটা ছুটে চলেছে শহরের দুই প্রান্তের দিকে।
মন্তব্য
ভালো লাগলো।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমাকে কেউ কিছু কিনে দেয়না
...........................
Every Picture Tells a Story
আমাকেও না!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আড়ঙ বা এই জাতীয় দোকানে যে জিনিসটা পছন্দ হয়, কিনি বা না কিনি সেটা হাতে বা কার্টে নিয়ে ঘোরাই উত্তম। এই ব্যাপারে আমার জীবনে রওনকের মতো ঠগ্ খাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে বহু বার। তাই এই সিদ্ধান্তে আসা।
একটা শাড়ির গল্প বলি। মগবাজার আড়ঙে দিশা একদিন একটা সোনালী-সাদা শাড়ি (কী শাড়ি নাম বলতে পারবো না) দেখে পছন্দ করেছে। তার পর দিন আমাকে নিয়ে গেছে কেনার জন্য। আমি শাড়িটা দেখে বগলদাবা করতে চাইলে সে তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গীতে ওই শাড়িটার কিছু ত্রুটি নির্দেশ করে একদিকে সরিয়ে রেখে অন্য সব শাড়ি দেখতে থাকে। এই অবসরে আমার মতো এক বেকুব লোক শাড়িটা দেখে কোন সাত-পাঁচ না ভেবে শাড়িটা নিয়ে সোজা ক্যাশ কাউন্টারের দিকে হাঁটা দেয়। তার কিছুক্ষণ পরে দিশা শাড়িটার আবার খোঁজ করলে যখন শোনে যে শাড়িটা আর নেই তখন তার বিলাপ শুরু হয়ে যায়। ঐ দিন সেই বিলাপ সাময়িকভাবে প্রশমণের জন্য আমাকে কী কিনতে হয়েছে সেটা আর বললাম না। এখনো কখনো তার ঐ শাড়িটার কথা মনে পড়লে বিলাপ চলতে থাকে। বলুন তো গোটা ঘটনার জন্য কে দায়ী? নিঃসন্দেহে আমি। আমার কথা আপনার বিশ্বাস না হলে দিশাকে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আর কইয়েন না, মেয়েরা মনে হয় এরকমই। পছন্দ হইলেও সেইটা না নিয়া ৩-৪ ঘন্টা ধরে অন্য জিনিস হাতাহাতি করার মানে কি আমি বুঝিনা। পরে না পাইলে ঠোঁট উল্টায়া আহাজারি! কোন মানে হয়?
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
হা হা হা হা! দিশা'দিকে বোঝাতে হবে কার্টে নিয়ে ঘোরাই উত্তম পন্থা, পরদিন পর্যন্ত যে ছিলো সেটা কি কম!
অটঃ আপনার ফেসবুক একাউন্ট কি ডিঅ্যাকটিভেটেড নাকি পাণ্ডব'দা?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
অটঃ হ্যাঁ, অনেক দিন হয় ফেসবুক ডিঅ্যাকটিভেটেড অবস্থায় আছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গল্পটা ভালো লেগেছে। উত্তরা আড়ঙ্গে বাসার জন্যে পর্দা কিনতে কয়েকবার গিয়ে মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে। পছন্দ হলে পরিমান হয়না আর যেগুলোর স্টক আছে সেগুলো ভালো লাগেনা। আমি অবশ্য স্ত্রীর ব্যাগবাহক হিসেবেই থাকি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
উত্তরার আউটলেট তো বি-শা-আ-ল বানিয়েছে! আমার সিঁড়ির কাছের ওয়াল-ডেকোর খুব ভালো লেগেছে। শপিং আমার অপছন্দের কাজ, আড়ঙে ঢুকলে একখানেই অনেকরকমের জিনিস পাওয়া যায় বলে ঘুরে ফিরে ওখানে যাওয়া বেশি পড়ে, আর সাধারণত আমার বাজেটে ভালো জিনিস মিলে যায়, তবে সমসময়ে না। ঈদ আর অকেশনে সাইজ আর সংখ্যা মেলা খুব দুষ্কর হয় দেখেছি, অন্য সময়ে অত ভুগি নাই।
আপনারা পর্দার জন্যে বনানীর 'যাত্রা' ট্রাই করতে পারেন, গুলশান ৫০ নম্বরের ব্রিজের পরেই 'অরণ্য' আর 'যাত্রা' একই বিল্ডিঙ্গে। 'যাত্রা'য় সেল চলছে, এমনিতে বেশি দাম এমন কিছু জিনিস অর্ধেক দামে পাওয়া যাচ্ছে, ওদের পর্দা আর বেড কাভার ভালো হয়। আমিও পর্দা দেখছিলাম সেদিন, কিন্তু পার্সের অবস্থা সঙ্গীন বিধায় কেনা হয়নি।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
যাত্রা তো শুনেছি অনেক এক্সপেন্সিভ!!! শিল্পী আনুশেহর দোকান। ভালোই হবে, একদিন ট্রাই করতে হবে। কদাচিত যাই ওখানে, বুনোর স্টুডিওতে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
এই জন্যেই তো 'সেল' চলছে বললাম না?! অর্ধেক দামে ঠিক প্রাইসে নেমে এসেছে এবার!
আনুশেহ-র দোকান কিনা তাতো জানি না। আমার ওদের ডিজাইন ভালো লাগে, নতুনত্ব আছে। দোকানটাও সুন্দর! আরাম করে ঘুরে ফিরে দেখার জন্যে মজার কিছু জিনিস আছে, বিশেষ করে কাগজের ল্যাম্পের সেকশনটা আমার পছন্দ, কিন্তু কিনিনি কখনো কিছু, বানিয়ে নিলে অনেক কম খরচ পড়বে মনে হয়েছে।
আচ্ছা, আপনাকে প্রথম মন্তব্যে ধন্যবাদ দেয়া হয়নি। দেশে ফিরে কি আপনার লেখালেখিতে ভাঁটা পড়ে গেছে? আর আফ্রিকা আর বেড়াবার পোস্ট দেখছি না যেন...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ওই দালানটা আনুশেহর শ্বসুরের, মানে বুনোর বাবার। ওখানেই আনুশেহর দোকান আর বুনোর স্টুডিও। আমাকে বুনোর বন্ধুরা বলেছে এগুলো।
গত কয়েকমাস ধরে খুবই কাজের চাপের মধ্যে আছি যশোর-সাতক্ষীরার একটা প্রজেক্ট নিয়ে। একেবারে দম ফেলার সময় পাচ্ছিনা। তার উপর নিয়মিত বিদেশযাত্রার তো মাফ নেই। এই যেমন এখন আফগানিস্তানে আছি। কাজের চাপ একটু কমলে লেখালিখির সময় বাড়াতে হবে। আপনাকেও যেনো ইদানিং বেশ কম দেখা যাচ্ছে!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আমারও একই অবস্থা, মানে ব্যস্ততা... লিখতে ইচ্ছা করে না তা বলবো না... তবে বেড়াবার কথা লিখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। কিন্তু তাতে ছবি না দিলে ভালো হয় না, আর ছবি সামান্য হলেও ঘষামাজা করা লাগে, আপাতে হয় কোথাও। ফ্লিকারে একটা নতুন একাউন্ট করা দরকার বা পিকাসায় সুইচ করবো কিনা ভাবছি, এইসব নিয়ে আর পোস্ট দেয়া হয় না, আলস্য আমার একটা বড় গুণ কিনা! এটা স্রেফ ধুমধাম লেখা হলো, পোস্টিয়ে দিলাম এমন আরকি, দেখি ফিরে আসা যায় কিনা পূর্ণোদ্দমে।
টের পাচ্ছি অনেকদিন পড়াও হয়নি সচলায়তন সেভাবে, আজকে অনেকদিন পরে লগ-ইন করে পুরাতন পোস্ট পড়ছি, আপনারও একটা দেখলাম আফগানিস্তান নিয়ে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
পছন্দের জিনিস ফেলে আসতে নাই। জীবনে একাধিকবার ছ্যাঁকা খেয়েছি এমন দোনোমনো করার কারণে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
সে এক কাহিনি আছে, তখন মনে হয় কলেজে পড়ি, নিজের আয় নাই, যা কিনি বাবা-মার কাছে হাত পাততে হয়। বিলাসিতা আমাদের পক্ষে সম্ভব না তা ছোটকালেই শিখেছি, কাজেই ঐটা করি না। কিন্তু মীনাবাজারের এক আউটলেটে (কোন্টা তা আর মনে নাই, সে সময়ে ঢাকার রাস্তা আর এলাকা সম্পর্কে আমি বিশেষভাবে অজ্ঞ ছিলাম), একটা হাত-ঘড়ি এমন পছন্দ হলো আর বলার নয়! এমনিতেই তো আমার হাতঘড়ির শখ আছে। জুয়েলারির কথা মনে থাকে না, কিন্তু হাতঘড়ি পরে না বেরুলে অস্বস্তি হয়। আমার সংগ্রহের নানাবিধ হাতঘড়ির সবথেকে পুরাতনটা ক্লাস সেভেনের। মীনাবাজারে যেটা পছন্দ হয়েছিলো সেটা লাল-সাদা পোর্সেলিনের ছোট ছোট হার্ট শেপের চেইন দিয়ে তৈরি, খেয়াল কইরা, বলেছি পোর্সেলিনের! মানে চিনামাটির ছোট্ট ছোট্ট টুকরো!! তার উপরে সুন্দর করে আঁকা নকশী লতাপাতা-ফুলের ডিজাইন, এই টুকরোগুলো আবার জোড়া দিয়ে দিয়ে ঘড়ির চেইনটা, আর মূল ডায়ালটাও সিরামিকেরই একটা বেসের উপরে বসানো!
ভাইরে ভাই! সে আমলের সাড়ে আট'শ টাকা দামের সেই ঘড়িটা বাবা-মায়ের থেকে জোর করে আদায় করিনি বটে... জীবনে নিজের টাকায় এবং উপহারে আরও সুন্দর সুন্দর ঘড়িও জুটেছে নিশ্চিতভাবেই... কিন্তু আজও চোখ বন্ধ করে ভাবলে সেই ঘড়িটা জ্বলজ্বল করে দেখতে পাই! আজতক এইটাই আমার সর্বোচ্চ ছ্যাঁকা বলতে হবে... তবে শুক্রবারের শাড়িটা সুন্দর ছিলো হে!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
যাত্রা সবসময় চোখে পড়ে, ইভেন উন্যুভার্সিটি খোনে থাকার পরো কখনো ঢুকি নাই যাত্রাতে কি ২বছরের বাচ্চাদের জন্যে কিছু পাওয়া যায়? আড়ং ভালো লাগে না, হয়তো আমার পকেটের সাথে তাল মিলাতে পারি না তাই!! তবে বাচ্চার জন্যে দুনিয়াও কিনতে পারবো।
লেখা সুন্দর হয়েছে। ভেলো লাগলো পড়ে। আমি ভাবছিলাম যাযাবর ব্যাকপ্যাকার মনে হয় কোন বট (bot), কেন মনে হইছে সেটার কারন জানি না
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
'যাত্রা' 'আড়ং'-এর থেকে এক্সপেনসিভ মনে হয়েছে। ডিজাইন একেবারেই ভিন্নরকমের, সকলের পছন্দ নাও হতে পারে। ছোটদের খুব মজার কিছু জামা পাওয়া যাবে 'দেশাল'-এ।
বট- মনে করার জন্যে না, লেখা ভালো লেগেছে জানাবার জন্যে ধন্যবাদ আপনাকে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমার অবশ্য এমন ও হয়েছে মেলা পছন্দ করে কিনে এনে আর পরতে ভালো লাগেনা। পছন্দের জিনিস না কিনে বাসায় এলে মনে হয় কি বিরাট জিনিস না জানি মিস করলাম। কিনে আনার পর মনে হয় আর ও একটু দেখে শুনে কিনলে ও হত বুঝি।
শপিং আমার পছন্দের কাজ নয়, বহুদিন ধরে জমিয়ে জমিয়ে, একবারে বিশাল একটা লিস্ট বানিয়ে, একদিন সময় খরচ করে সব কিনে ফেলি। যেহেতু এই কাজটা আমার অপছন্দের আর ভালো পারি বলে বড়াই করতে পারছি না, তাই এইটা আমি ধীরে সুস্থ, মনোযোগ দিয়ে করার চেষ্টা করি। এর মাঝে যদি কোন কারণে ক্ষুধা-তৃষ্ণা লেগে যায় তো কাজ শেষ! আমার সব গুবলেট হয়ে যাবে! (এই কারণে আড়ঙ সেইফ জায়গা গ্রাস রুটে ঢুকে পড়া যায়! আর নিউমার্কেট-চাঁদনী চকে ফুচকা আর লাস্যি! )। আর গায়ের মধ্যে ঠেসাঠেসি, হুড়োহুড়ি, ঠেলাঠেলি ভিড় ভালো লাগে না, যে কারণে চাঁদনি-চক, গাউসিয়া, মৌচাক যেতে আমার বেশ ভালো রকমের অনীহা থাকে। ইদের সময়ে আড়ঙ টাইপ বড় দোকানে যেতেও ভালো লাগেনা, লোকে কেমন যেন কম্পিটিশন দিয়ে জিনিস কেনে!
শপিং জিনিসটা সময়সাপেক্ষ কাজগুলোর অন্যতম বলবো আমি। তবে আপনি যদি জানেন ঠিক কোথায় কোনটা ভালো পাওয়া যায়, তাহলে কাজটা সহজ হয়ে যায়। বছর তিনেক আগেও আমি খুব গবেট মার্কা শপার ছিলাম। এই আমার দরকারের জিনিসগুলো কোথায় কোন্টা ভালো আর দরদাম কেমন এই জিনিসের বেশ অনেকখানি আমাকে হাতে কলমে শিখিয়েছেন আমার এক এক্স-কলিগ বড় আপু। এখন রিলেটিভলি দ্রুত সারতে পারি কাজ।
তবে নিজের কেনা জিনিস নিয়ে বড় ধরনের আফসোস এখনো হয়নি। একটা মজার ব্যাপার হলো, আমার শপিং করতে ভালো না লাগলেও দোকানে জিনিস দেখতে বেশ ভালো লাগে। খুব বেশি মন মেজাজ খারাপ থাকলে আমি নিউমার্কেট টাইপ কোথাও চলে যাই, ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন রকমের দোকানে নানান পদের মানুষ দেখি মূলত। এমনি এমনি তো মানুষকে হাঁ করে দেখা যায় না... তাই জিনিস দেখি, তার ফাঁকে ফাঁকে মা-মেয়ের শপিং খেয়াল করি, বাবা-ছেলের কেনাকাটা দেখি, ছাত্র-ছাত্রীদেরে দেখি, বন্ধুবান্ধবদেরকে দেখি, একেক জনের একেক রকমের চাহিদা আর স্টাইল দেখি, দোকানদাররাও বেশ ইন্টারেস্টিং মানুষ, এদেরকেও দেখি। আবার জিনিসও দেখি। ভালো লাগলে একেবারে দরকার নাই এমন কিছু জিনিসও কিনে ফেলি। তবে সব থেকে ভালো লাগে বইয়ের দোকান! হাতে টাকা থাকলেই আমি কেম্নে কেম্নে যেন বইয়ের দোকানে হাজির হয়ে যাই, আর সব টাকা শেষ করে ফেলতে এই ঘণ্টাখানেকও লাগে না!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ও আর একখান কথা আপনার এই গল্প পড়ে ব্রাসেলসে দেখে আসা এটা্র কথা মনে পড়ে গেল http://en.wikipedia.org/wiki/Manneken_Pis
হা হা হা! এইটা দেখে আমার মনে পড়ে গেলো আমার ভাইয়ের একটা নরোয়েজিয়ান খেলনা ছিলো, প্লাস্টিকের তৈরি একটা ছেলে, সেটার বেইজে পানি ভরে রাখা যেত, আর প্যান্ট টেনে নামালেই...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আপনি তো তাও কিছু পারতেন শপিং করতে! আমার ইন্যুভার্সিটি এর ২য় সেমিস্টারে গুলশান থেকে একটা সোয়েটার কিনতে গেছি! ট্রায়েল রুমে ঢুকে পরে ও দেখছি!! বদমাইস সেলস গার্ল (নাকি বয় মনে নাই) আমারে একবারো কয় নাই যে ওইটা মেয়েদের সোয়েটার!!!
ভাই অর্ধেক দামে পরে কোন বান্ধবির কাছে বেচছি!! ফ্রি দেই নাই, তখন সামান্য ১০০টাকাও অনেক বড় কিছু নগদে ৫০% লস .. আর মনে মনে ভাবি সেলস গার্ল/বয় কি মজাটা না পাইছে!!
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
হতে পারে সেলসপার্সনও বোঝে নাই ঐটা ছেলেদের নাকি মেয়েদের।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ওইটা ভাইবা মাঝে মাঝে সান্তনা পাই
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
একবার বড় বোনকে শাড়ি কিনে দেব বলে মানিক মিয়া এভিনিউ-এর আড়ং আর তার আশে পাশে প্রায় চার ঘন্টা ঘুরেছিলাম। একটা শাড়িও তার পছন্দ হয় নি।
বিয়ে করার মতো ভুল এই জীবনে করা যাবে না।
সম্পাদনা প্লাস: আরে, গল্পের জন্য (গুড়) দিতে ভুলে গেছি।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
গল্পটার মধ্যে স্নিগ্ধ একটা আমেজ খুঁজে পেলাম
বৃষ্টির দিন, বৃষ্টি মানেই স্নিগ্ধতা... (ঢাকার রাস্তায় ড্রেনের উপচানো গু-পানি বাদ দিলে আরকি!)
আপনাকে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
হুমম, এখন বুঝলাম। আসলে আপনি একদম ভালো লেখেন না, কেবল বৃষ্টির দিন বলে পাড় হয়ে গেলেন
শুধু বৃষ্টির দিন বলে কথা... ট্রেনের ভেতরে গভীর রাতে পাঁচ ঘণ্টা আটকা পড়ে ছিলাম, না পারছি ঘুমাতে, না হাত-পা ছড়িয়ে সিনেমা দেখতে, এদিকে চারপাশে সবাই ঘুমাচ্ছে কেমন চেয়ারে বসে বসে! এ কারণেই তো টাইম কিল করতে খসড়া আবোলতাবোল লেখা নামিয়ে দেয়া গেল!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এধরনের পরিস্থিতিতেই নায়ক-নায়িকার দেখা হয়। আর আপনি কিনা এই করলেন?!! বোঝা যাচ্ছে ট্রেনের কামড়ার লোকজন নিতান্তই সাদামাটা ছিল।
যাকগে যাক। আমরা সুন্দর এবং পাঠকপ্রিয় একটা গল্প পেয়ে গেলাম। বাংলাদেশ রেলওয়ে বেঁচে থাকুক
হা হা হা! আমি প্রচুর ট্রাভেল করি, বিশেষ করে ট্রেইনে। আপনাকে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি এতদিনে এক-আধজনও সেরকমের নায়কের দেখা পাইনি!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ভালো লেগেছে।
__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত
ধন্যবাদ শান্ত'দা। ভালো আছেন আশা করি। কোথায় আছেন এখন, সিলেট? বাসার সবাই ভালো? আপনাদের বাসায় একজন পিচ্চি আছে না? সে কেমন আছে? হাচলত্বের বিলেটেড শুভেচ্ছা।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
গল্পটি ভালো লেগেছে পড়ে। অনেক ছোট ছোট অনুভূতি খুব সুন্দর হয়ে উঠে এসেছে।
আমি একবার কে-ক্রাফট এর আজিজ মার্কেট শাখা থেকে পুতুলের (ম্যানিকিন) গায়ের পোশাক দেখে পাগল হয়ে সহকর্মীর কাছ থেকে টাকা ধার করে কিনে ফেললাম (ট্রায়াল না দিয়েই কারন তখন ওদের ট্রায়াল রুম ছিল না ), ঘরে এসে দেখি শুধু টাইট নয়, সুপার টাইট। পরে আর চেঞ্জ ও করতে পারলাম না, ওই ড্রেস নাকি একটাই ছিল, অন্য ড্রেস ও পছন্দ হয় না। এখনো লকার খুলে মাঝে মাঝে ড্রেসটি দেখি। সেইদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি পুতুলের গায়ে যাই থাকুক না কেন, নেভার, এভার, কিনব না।
কে-ক্রাফটের বড় সমস্যা সাইজ না মেলা।
আমি অবশ্য তিনদিন আগে আড়ঙের ম্যানিকিনের জামা কিনেছি!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সুন্দর গল্প
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
হ?!
বাউল ভাই।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ভাল্লাগছে
ব্যস? আমি ভাবলাম এই এত বড় লেখাটা পড়ার পরে আপনি আড়ঙ ও নিখিলবঙ্গ শপিং সমাজ এর জন্যে একটা টিউটোরিয়াল নামায়ে দিবেন, তা না... ভেবেছিলাম আপনার প্রো-পিকের দোস্ত আর আপনার জন্যে দুইটা কলা-প্রিন্ট টি-শার্ট পাই কিনা দেখবো, যান মিয়া!
সাথে দুইটা পাতা নিয়ে যায়েন।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
বেশ লাগল গল্পটা--
শুভেচ্ছা নিরন্তর!
ধন্যবাদ অনিকেত'দা। আপনার জন্যেও শুভেচ্ছা আর শুভকামনা রইলো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কানের মধ্যে ডায়ার স্ট্রেইটসের সো ফার অ্যাওয়ে শুনতে শুনতে, একধারে রাইন নদী আরেক পাশে পাহাড় রেখে ছুটে চলতে চলতে মাত্রই পড়লাম লেখাটা। পরিস্থিতির কারণেই হোক বা অন্য কারণে, গল্পটা ভালো লেগেছে- বলতেই লগইন করা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আচ্ছা, এইটা কি মন খারাপি লেখা ? পড়ে টরে আমার অস্থির লাগা শুরু করল কেন বুঝলাম না।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হা হা হা! আমার খুব পছন্দের তুখোড় সচল গল্পকারদের তুলনায় নিজের দায়সারা ব্লগরব্লগর পোস্ট করতে সংকোচ হয়। কিন্তু মাথার মাঝে গল্প ঘুরপাক খাওয়া বেশি অস্থির ব্যাপার!
ট্রেইনে বসে টাইম পাস লেখা এটা, বলেইছিতো! তাও যদি আপনার অস্থির লাগে... সেই যে! নিক কেইভ শোনেন -
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
বেশ লাগল। কিন্তু চমক আসবে, চমক আসছে, টুইস্ট আছে এইটা না বললেও হয়ত চলে যেত।
লেখা আসুক, আসুক রাজশাহীনামা
facebook
আচ্ছা...
রাজশাহীনামা লিখতে চাই, গুছিয়ে ওঠা হয় না। খাপছাড়া লেখাতে নিজেরই মন ভরেনা। প্রিয় শহরকে হেলা করছি মনে হয়।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
জামাকাপড়ের দোকানে আমার ঘুম পায়।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
মন্তব্য লাফাং!___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
হিহিহিহি.. সাবধান বস!! কথন ঘুমায়ে যাবেন, আর লোকে ডল ভেবে জামা কাপড় হাতাবে.. খুলে নিবে
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
আপাতঃবিচ্ছিন্ন দৃশ্য জোড়া দিয়ে সাজানো গল্প চমেতকার লাগল
আড়ং এর ক্যাশিয়ারগুলি ভারি গপ্পোবাজ, একদিন নিজেরা নিজেরা "ঝানিস না তো কি হয়েছে" ইত্যাদি গল্প করছিল আর আমি একটা জিনিস কোথায় পাওয়া যাবে জিজ্ঞেস করেছিলাম। গল্পের মাঝে বাধা পেয়ে ভারি বিরক্ত হয়ে মেয়েটি আকাশে দুইবার ফাঁকা হাত ঘুরিয়ে বলেছিল "ঐযে ওখানে পাবেন, নইলে ঐ ঐখানটায়"। আল্লাই মালুম কুনখানটায়
..................................................................
#Banshibir.
গুলশান আড়ং-এর সেলস্পার্সনরা রিলেটিভলি হেল্পফুল মনে হয় আমার, সবথেকে বাজে সার্ভিস আসাদ গেটেরটায়। তবে আমার বিরক্ত লাগে কাউন্টারে গিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে, অধিকাংশ সময়েই দৌড়ের উপরে থাকি, এতগুলো কাউন্টার থাকা সত্ত্বেও কেন আমাকে অতক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় কে জানে!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
শপিং নিয়া ই-বই লাগবো
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
শপিং ব্যাপারটা আমার কাছে বিরক্তিকর বিষয় হলেও আড়ং জাতীয় দোকানগুলোতে কিছুটা স্বস্তিবোধ করি। দামাদামির টেনশান নাই। কেনাকাটার পাশাপাশি মুফতে শিল্প প্রদর্শনী দেখা হয়, সাথে হালকা মিউজিক। কেবল একটা খানাপিনার সেকশান থাকলে ষোলকলা পূর্ন হতো।
পছন্দের জিনিস অন্য কেউ কিনে নেয়ার ব্যাপার আমার বউয়ের ক্ষেত্রে ঘটতে দেখেছি। অভিযোগ করলে কইছি, ওটা তোমার পাওনা শাস্তি। আমি একবার যেটা পছন্দ করি, একবারেই কিনে ফেলি। কিন্তু সে কোন একটা জিনিস পছন্দ করলেও আরো দশটা দেখবে যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় তার পছন্দ সঠিক আছে। এই করতে গিয়ে দেখা যায় পছন্দের জিনিস আরেকজন হাপিস করে দিয়েছে। ঈদের বাজারেই এই রিস্কটা সবচেয়ে বেশী
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
সেকি নীড়'দা, প্রায় প্রতিটা আড়ং-এর সাথে Grass Roots নামে ওদের একোটা মিনি রেস্টুরেন্ট আছে তো এখন। খাবার দিতে প্রচণ্ড দেরি করলেও ক্ষিদে মেটানো যায় মোটামুটি, আর বোর হয়ে গেলে রেস্টও নেয়া যায় একটু। মুফতে শিল্প প্রদর্শনী দেখার ব্যাপারটায় হাত মেলান!
আর মিউজিকের কথায় আরেকটা গল্পের প্লট চলে এলো মনে... হা হা হা! কোন একটা বিচিত্র কারণে গুলশানের প্লে-লিস্টের সাথে আমার নিজের পিসিতে বানানো প্লে-লিস্টের ভয়াবহ মিল পাই আমি অধিকাংশ আড়ং দিনেই! আমার ইচ্ছা আছে একবার ওদের গুলশান অফিসে ঢুকে পড়ে, গানগুলোর দায়িত্বে কে আছে তার সাথে আলাপ করে আসার!
একবার কৃষ্ণকলির এই গানটা প্রথম শুনেছিলাম এক ঈদের ভিড়ে... খুব অদ্ভুতভাবে আমার মনের অবস্থার সাথে মিলে গিয়েছিলো, আর কেনাকাটা বাদ দিয়ে আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এইটাই শুনছিলাম মন দিয়ে, এটা মনে আছে...
অডিও ভালো লিংক পাচ্ছি না, ইউটিউবের এইটা বেটার
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এই ভদ্রমহিলার গানগুলো শুনলেই কেমন যেন নাকে কাগজি লেবুর শরবত আর পিয়াজুর গন্ধ পাই। রমজান মাসের সন্ধ্যায় ইফতারি করতে করতে বি টি ভি'র হামদ ও না'ত শোনার এর কথা মনে হয়।
এমনটা মনে হবার পেছনে কি বাদ্যযন্ত্রহীন খালি গলার গান কাজ করে? কৃষ্ণকলির গলা চমৎকার রেওয়াজ করা মনে হয় আমার, এমন আওয়াজের খালি গলার গান শুনতে ভালো লাগে, দরাজ, খোলা গলার গান। চেপে রাখা নিচু আওয়াজের গান ভালো লাগে না, আর ইদানীং রেওয়াজ না করেই গান গাবার যে চল হয়েছে তাও শুনতে ভালো লাগে না। কৃষ্ণকলির গানের কথাও ভালো লাগে আমার।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ঠিক ধরেছেন। কৃষ্ণকলি আমার বন্ধু ওস্তাদ বাসুদেব বিশ্বাসের ছাত্রী। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে কৃষ্ণকলির বেশ ভালোই দখল।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ভালো লেগেছে গল্প।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
"রাজীব" সম্পর্কিত অনুভূতিটা পরিচিত।
মগবাজার আর উত্তরা আড়ং চেনা, বাকিগুলোয় যাইনি। খাদ্য দেখিনি আগে বেইলি স্টারে একটা দোকানে মিউজিক, খানাপিনা সব আছে। শুধু ড্রেসগুলো ভালো না
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ভাল লাগলো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কেনাকাতা ভালু পাই না, সব আম্মুর ঘাড়ে আউটসোর্স করে দিছি। আর নাহলে গিফট। বিলাতি কাপড়চোপড় কিনতে গেলে ক্রাইটেরিয়া সোজা আমার সাইজে কিছু পাওয়া গেলেই কিনে ফেলি ( যদি না জাস্টিন বিবার বা মাইলি সাইরাসের খোমা ছাপ মারা না থাকে)।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আমার আম্মা আমার মনমতো জিনিস কিনতে পারে না। ছোটথেকেই এতই খুঁতখুঁত করি আমি পোশাক নিয়ে যে অনেক ছোটকালেই আমার ঘাড়ে ছেড়ে দিয়েছে নিজের জিনিস কেনার ব্যাপারটা। গিফট নিয়েও সমস্যা হয় একারণে। আমি সোজাসাপ্টা সবাইকে বলে দেই, ভাই টেকা দেন!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমিও খুতখুত করি, ঘ্যান ঘ্যান করি, কিন্তু তারপরেও আমাকে কেনাকাটা করতে হচ্ছে না এই সুবিধার জন্য আমি এই ট্রেড-অফে যেতে রাজি আছি। সেদিন ৩টা ট-শার্ট কিঞ্ছি thinkgeek.com থেকে, কারন ক্লিয়ারেন্স সেলে দিচ্ছিল, সাইজ বলে দিলে র্যান্ডম ৩ টা টি-শার্ট পাঠায় দিবে, বাছাবাছির ঝামেলা নাই। কালকে হাতে পাইলাম, যা দিছে, ভালই দিছে, আলহামদুলিল্লাহ! আমাকে তো শপিং করা লাগে নাই, এতেই খুশি।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
তুমি পাগলা আছো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
মন্তব্য লাফাং ব্যাপারটা কি শুধু আমার সাথেই হয়?!___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
বেশ ভালো লেগেছে গল্পটা। লেখার ধরনে নতুনত্ব আছে। কাহিনিতে গতিও। সব মিলায়ে পড়তে দারুণ লাগল। মনে হলো মনোরম এই মনোটোনাস শহরে কয়েকজন যুবকযুবতীর অস্থিরতা-স্বপ্নপ্রবণতা-যান্ত্রিকতা-সিদ্ধান্তহীনতা-বিশ্বাস-ভালোবাসার এক অন্যরকম প্রামাণ্যচিত্র ফুটে উঠল! তবে ট্যাগটা পছন্দ হয় নি। এ ধরনের ট্যাগ দেখলে মনে হয় অতিরিক্ত বিনয় অথবা আত্মবিশ্বাসের অভাব, যার কোনোটাই তেমন একটা ভালো লাগে না দেখতে।
থ্যাঙ্কস অপ্র, ধরনটা আলাদা করতে চাইছিলাম, আর গতি ধরে রাখতে পেরেছি জেনে আসলেই ভালো লাগছে। অফলাইনে তুমি যেভাবে আরও খুঁটিয়ে মন্তব্য করেছো, ভালো লেগেছে। ট্যাগটা এবার ইচ্ছা করেই দিয়েছি... পাণ্ডব'দা, শিমুল ভাই, অমিতের (আরও অনেকে যাদের নাম নেয়া হলো না) মতো দুর্দান্ত সচল গল্পকারদের পাশে আমার এই এফোর্টগুলো নিতান্তই টাইমপাস বা অ্যামেচারিশ মনে হয় নিজের কাছে। পরে কখনো না হয় পরিবর্তন করে দেবোনি। ঠিক একই কারণে আমার গল্প যদি কারও ভালো লেগে থাকে জানান, আমার নিজের সত্যি খুব আনন্দ হয়। অনেক ধন্যবাদ তোমাকে সেই জন্যে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
গল্প ভাল লেগেছে।
মেয়েদের কিছু কেনার জন্য বাজারে গেলে আমি সচরাচর বই নিয়ে আশেপাশে কোথাও বসে পড়ি, গিন্নী নিজের কাপড় পছন্দ করতে থাকেন। এখন আমি আমার মেয়েকে নিয়ে বসে থাকি গিন্নী বাজার করেন। এরকম বাজার করতে বেশ লাগে
আপনাদের কন্যাকে আমার খুব্বই ভালো লেগেছে, কন্যা আর আপনার ছবিও দুর্দান্ত হয়েছে। পিচ্চিকে আমার তরফ থেকে একটা চিপা দিয়েন প্লিজ।
আর এই যে
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
গল্প অপচেষ্টা- ট্যাগটাকে লজ্জা দেয়ার মত ভাল গল্প হয়েছে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
বাহ, গল্প তো চমৎকার! এত যত্নসহকারে সাজানো ডিটেল...
জড়ি>জরি না?
চোষা কাতান নামটা কেমন জানি!
ডিটেলিং করার জন্যেই অনেকটা পরিচিত দোকান বেছে নেয়া, এটা মনে হয়েছে বলে ধন্যবাদ।
বানানটা শিওর না, বুনো বলতে পারবে।
শাড়ির নাম-কূল সম্পর্কে আমি বিশেষভাবে অজ্ঞ, এইটা সরাসরি একটা শাড়ির ট্যাগ থেকে মেরে দিয়েছি কারণ ঐ শাড়িটা দেখতে ভালো ছিলো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমারেও কেউ কিছু কিনে দেয় না।
হ! দ্রোহী ভাই, আমাকেও না। আসেন কান্দি হাত-পা ছড়ায়ে।
তবে আমাকে জামা-কাপড় দিলে সহজে পছন্দ হবে না, বই বা ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট দিলে খুশি!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
গল্পই পড়লাম।
আড়ং প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলাম ঃ)
সেক্ষেত্রে বলতে হবে, আঙুলগোণা আর কয়েকজন সহ, আপনি এই গল্পের আদর্শ পাঠক শিমুল ভাই।
এই যে ধনেপাতার চাটনি নেন।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
চিতই পিঠা মনে পড়ে গেল---
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
উপস্থাপনের এই ভঙ্গিটা ভাল্লাগেনি। মনে হচ্ছিলো, পাঠক হিসেবে সদর দরজাতেই দাঁড়িয়ে থাকতে বলা হচ্ছে, অন্দরে মানে গল্পের ভেতরে নিজেকেই কোন চরিত্র ভেবে পড়তে থাকার পথটাতে কেমন তালা সাঁটানো।
তবে, এই লেখার কিছু অংশ অনেক, অ-নেকদিন মনে থাকবে আমার।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমি কিন্তু ঠিক এইটাই করতে চাইছিলাম।
গল্প যে বলছে, সে পুরা জিনিসটা দেখছে ফ্রেমের বাইরে দাঁড়িয়ে... পাঠককেও ইনসিস্ট করছে, বাইরে থেকেই দেখেন মিয়ারা, ভেতরে ঢুইকেন না! রওনক কেন লাল শাড়িটা থেকে চোখ ফেরাতে পারছে না, কেন একটা আকাশী পাঞ্জাবি দেখে তার রাজীবের কথা মনে পড়ছে, এত কিছু তাদেরকে জিজ্ঞেস করতে না গিয়ে শুধু দূর থেকে অবজারভ করতে বলছে গল্প বলিয়ে, এবং পুরাটা, কখন কোনদিকে দৃষ্টি দিতে হবে এইটাও গল্প বলিয়ে ডিকটেট করছে। এই স্টাইলটাই ফুটিয়ে তুলবার ইচ্ছা ছিলো শুরু থেকে। আমার ইচ্ছা ছিলো মিশু বা রাফিদের গল্পে আরও বেশি নির্লিপ্ততা থাকবে, সেটুকু আরও যত্ন নিয়ে করা যেত মনে হয়েছে পরে।
এটুকুতেই লেখাটার আসল সার্থকতা। অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
নতুন মন্তব্য করুন