সাম্প্রতিক টিভি কমার্শিয়ালগুলো দেখেছেন নিশ্চয়ই সবাই? টিভি ছাড়লেই তো হরেক রকমের মোবাইল ফোনের রকমারী অফারের বিজ্ঞাপনে মূল অনুষ্ঠান দেখাই দায় হয়ে দাঁড়ায়, এক টক-শো বাদে! তা বাঙালী কথা বলে বটে! কিন্তু এই কথা বলার হাজারো তরিকার মাঝে চিপাচুপা দিয়ে যে মেসেজগুলো পাচ্ছি, তা দিয়ে শিখছি অনেককিছুই, হিন্দি সিরিয়ালের মতো করে নাচনাগানা, যেখানে খুশি সেখানেই ইন্টারনেট ব্যবহার, ইত্যাদি কত্তকিছু!
তবে সবথেকে ভালো লাগে যখন মাঝেমাঝেই গ্রামীণফোন অগ্রদূত হয়ে এসে শিখিয়ে যায় কেমন করে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হবে সেই তরিকা থেকে শুরু করে পড়ালেখা না করেই শিক্ষকের পিছে পিছে ঘুরে, তার কন্যার (ক্ষেত্রবিশেষে পুত্রও হতেই পারে!) পতন রক্ষা করে কীভাবে পরীক্ষার নম্বর বাড়িয়ে নিতে হবে সেই তরিকা!
সেকি! এখন দেখেননি নাকি এই অসামান্য বিজ্ঞাপন?! ছি! ছি! পিছিয়ে পড়লেন দাদা। দেখুন, দেখুন - এই তো নিচে জুড়ে দিচ্ছি, দেখে নিন, শিখে নিন! দেখুন, শিখুন, এগিয়ে থাকুন!
যেখানে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে উচ্চশিক্ষার্জনের স্বপ্ন নিয়ে একেকটা ইউনিটে গড়পরতা ২০০ আসনের এগেইন্সটে পরীক্ষা দেয় আনুমানিক ২০,০০০ শিক্ষার্থী, আর ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্টে ১ম স্থান অধিকারকারী ও ১০০ তম স্থান অধিকারীর মাঝে নম্বরের তফাৎ হয় মাত্র o.5, 0.75 এরকম, সেখানে শিক্ষকদের কথা বাদ থাক, এই বিজ্ঞাপন শিক্ষার্থীদের প্রতিই চরমভাবে অপমানজনক!
আমার জানা মতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের খাতা দুই বা ততোধিক শিক্ষক নীরিক্ষণ করেন, সিলগালা নম্বরপত্র কন্ট্রোলারের কাছে যাবার পরে টেবুলেশন, স্ক্রটিনাইজেশনের সময়ে সেই দুই নম্বরের পার্থক্য একটা নির্দিষ্ট শতাংশের বেশি হলে খাতা থার্ড এক্সামিনার হয়, মানে আরেকজন নিরীক্ষক নির্ধারিত হন। স্কুল-কলেজের কথায় যদি যাই, SSC ও HSC এবং এখনকার নতুন GSC ও প্রাইমারির খাতা তো আলাদা করে কোডিং হয়ে যায়, কোন শিক্ষার্থীর খাতা কারও পক্ষে আইডেন্টিফাই করাই বেসম্ভব ব্যপার!
তাহলে মনে হচ্ছে হাস্যরস করতে গিয়ে কোন্ বিষয় কীভাবে উপস্থাপন করা উচিত নয় সেটা গ্রামীণফোনের মার্কেটিং শাখায় যারা আছেন তাদেরকে হাতে ধরে শেখানোর প্রয়োজন আছে কিনা ভাবা উচিত, তাদেরই কেউ এভাবে স্যারের পতোন্মুখ সন্তানকে রক্ষা করে এক নম্বর বাড়িয়ে নিয়ে ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন কিনা তলিয়ে দেখা দরকার!
১০০% বোনাস দেয়া হবে এমন একটা অফারের সাথে এই বিজ্ঞাপনটির সম্পর্কটা কী সেটা ব্যক্তিগতভাবে আমি বুঝতে ব্যর্থ। হাস্যরস করতে গিয়ে শিক্ষাব্যবস্থার মতো জরুরী জিনিসকে নিয়ে বালখিল্যতা গ্রামীণফোনকে এর আগেও করতে দেখেছি যতদূর মনে পড়ে, ধাড়ি ধাড়ি স্কুল-শিক্ষার্থী সাজিয়ে তাদেরকে শিক্ষক পড়া ধরছেন কোন অফারে কী সুবিধা তা নিয়ে একটা বিজ্ঞাপন ছিলো, সেটা গ্রামী্ণফোনের না হলে কেউ শুধরে দেবেন, একইরকমের আপত্তিকর ছিলো সেটাও, যাদেরই বিজ্ঞাপন হোক তা, এ মুহূর্তে খুঁজে পেলাম না অ্যাডটা।
আপাতত এই বিজ্ঞাপনটায় আপত্তি জানালাম। শিক্ষকদের, শিক্ষার্থীদের এবং বাংলাদেশের সচেতন শিক্ষিত নাগরিকদের তরফ থেকে। এটা শিক্ষক, জাতি, এবং সর্বোপরি একজন শিক্ষার্থীর জন্যে অপমানজনক। এই বিজ্ঞাপন মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়কে প্রশ্রয় দেয়ার নামান্তর।
মন্তব্য
এছাড়া্ও মনে পড়ছে-অ্যাটম চুইংগামের অ্যাড যেখানে চাপার জোর বাড়াও বলে অর্গানাইজড মিথ্যা বলতে বলা হচ্ছে।
আমার মনে হয় খাতা-কলম নিয়ে টেলিভিশনের সামনে বসলে বেশ কিছু বিজ্ঞাপন পাওয়া যাবে,যেগুলো এমন বিভ্রান্তি ও নোংরামি ছড়াচ্ছে।
-রিয়াজ
এইসব বিজ্ঞাপনের জ্বালায় সত্যিই খুব অস্থির লাগে। পণ্যকে আকর্ষনীয় করে তুলতে এরা যেসব উৎকট যুক্তি দাঁড় করায়, মনে হয় যেন আমরা গ্রাহকরা সবাই ঘাস খাই, তাদের ফন্দি ফিকির বুঝার সাধ্য আমাদের নাই! অবশ্য মাঝে মাঝে উচ্চমার্গীয় কিছু এডও চোখে পড়ে যেগুলো মাথার দুইহাত উপর দিয়েই চলে যায়!
গান্ধর্বী
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
অ্যাডটা দেখেছি। ভালো লাগেনি। এটা নিয়ে গুছিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আজকের সমকালে চিঠিপত্র বিভাগে আরেকটি লেখা আছে এ বিষয়ে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
টিভি খুব একটা দেখিনা,তাও যেটুকু দেখি তার মাঝে দেখতে হয়েছে এই জগন্য এ্যাডটি।তবে শুধু গ্রামীন ফোন নয় সব মোবাইল কোম্পানিই এমন অবমাননামূলক এ্যাড প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতা করেই করে যাচ্ছে।ফেয়ার এন্ড লাভলী নারীদেরকে অবমাননা করে যা বানিয়ে চলছে তার কোন জবাব নেই।৯০র দশকে মাকসুদ তার সামাজিক কোষ্ঠকাঠিন্য গানটিতে এ নিয়ে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করেছেন।কিন্তু যুগ যুগ ধরে এভাবেই চলছে,কেউ নেই এইসব দেখার।এভাবেই হয়তো চলবে আরো দীর্ঘ কাল।
মাসুদ সজীব
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
কপি রাইটারদের হিউমার এবং ছাগলামির মধ্যে পার্থক্য বোঝার ক্ষমতা না থাকলে মুশকিল। জিপি তো অনেক ভাল অ্যাড ফার্ম থেকেই অ্যাড বানায় নিশ্চই। সেখানেও যদি এমন ছাগল পালে টাকা দিয়ে তাহলে কেমনে কি???
----------------------
সুবোধ অবোধ
মেসেজ বাদ দিলেও এড্টা এমন কিছু পদের না। যাই হোক, মডেল আফায় কেডা?
কিছুকে হাস্যকর বানাতে গিয়ে ফালতু জিনিসে পরিণত করে ফেলা খুবই কমন একটা ঘটনা।
বিজ্ঞাপনটা খুব একটা ভালো হয় নি। এটা শিক্ষক, ছাত্র -সবার জন্যই অপমানজনক।
তবে, আমাদের একটা জিনিস মাথায় রাখা দরকার: মোবাইল কম্পানি নিজে বিজ্ঞাপন বানায় খুব কম, বেশিরভাগই অ্যাড ফার্মের মাধ্যমে হয়। মোবাইল কম্পানির সব এমপ্লয়ি প্রত্যেকটা নতুন অ্যাড দেখে অনুমোদন দেন সেটাও কিন্তু না। বিজনেস স্ট্র্যাটেজির কারণে অনেকসময়ই এসব পরিকল্পনা খুব কম মানুষের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে। অ্যাড ফার্ম বিজ্ঞাপন বানানোর পর সেটাকে ক'জন অনুমোদন দেন সেটা ঠিক না জানলেও, এটা খুব বেশি নয়।
আমি বলছি না যে গ্রামীণের কোন দায় নেই, তাদেরকে অ্যাড ফার্ম যা তা বানিয়ে দিলেই তারা সেটা প্রচার করবে সেটা দায়িত্বহীন। তবে, অ্যাডফার্মকে পুরো দৃশ্য থেকে সরিয়ে দিতেও আমি রাজি না। তাদেরও সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে, কপিরাইটাররাও সমাজের বাসিন্দা। আমি ব্যক্তিগতভাবে ক্লায়েন্টের ৮৫% আর অ্যাডফার্মের ১৫% দায়িত্ব আছে বলে মনে করি।
কাজেই, এখানে গ্রামীণের পাশাপাশি অ্যাডফার্মের লোকজনের দায় আছে।
[ক্লিপের শুরুতে অ্যাডফার্ম গ্রে আর পরিচালক হিসেবে আদনান আল রাজিব বলে একজনের নাম আছে]
পুনশ্চ: ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকতে পারে যে, আমি গ্রামীণের সাফাই গাইছি। আসলে, তা নয়। আমি বলতে চেয়েছি ক্লায়েন্টের সাথে সাথে অ্যাডফার্মেরও দায় আছে -এবং আমরা প্রাই সেটা ভুলে যাই।
সবাইকে শুভেচ্ছা
কোন একটা অ্যাড ফার্মে কর্মরত এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিলো, জানালো, 'চার্ন' ক্যাটেগরির অ্যাড ইয়ং পোলাপানকে টার্গেট করে করা হয়, যার মূল এলিমেন্ট হয় ফাতরামি। চার্ন হোক আর অন্য যাইই হোক না কেন, অ্যাড-এজেন্সির কাজ অ্যাডের নানানরকমের আইডিয়া ক্লায়েন্টকে দেখানো। ক্লায়েন্ট অনুমোদন না করলে সেটা ব্রডকাস্ট হওয়ার কোন সুযোগ নাই। তো গ্রে এইটা তৈরি করেছে বটে, কিন্তু তাদের ক্লায়েন্ট জিপিও এইটা অনুমোদন করেছে অবশ্যই!
মার্কেটিং আমার ফিল্ড নয়। কিন্তু দর্শক হিসেবে বলতে পারি যে একই বিজ্ঞাপন নির্মাতাদের কাছ থেকেই ভালো মন্দ দুইরকমের বিজ্ঞাপনই তৈরি ও প্রচার হয়। বাংলাদেশে ভালো বিজ্ঞাপন নাই, তৈরি হয়নি এমনটা না। যারা বিজ্ঞাপন তৈরি করে তাদের দায়বদ্ধতা তো অবশ্যই থাকে, ভালো আইডিয়া ক্লায়েন্টকে গেলাতে না পারলে মুশকিল। তবে ক্লায়েন্টই পয়সা দিচ্ছে তাদেরকে বিজ্ঞাপন নির্মাণে, কাজেই ক্লায়েন্ট কেন বাজে আইডিয়া গিলবে?
যে ক্যাটেগরির বিজ্ঞাপনই হোক না কেন, ফাতরামির লেভেল বন্ধুদের আড্ডায় যা থাকে, গণমাধ্যমে প্রচারের সময়ে তা একই মাত্রায় তুল্য হতে পারে না।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ডিগ্রি থাকলেই যে তাকে শিক্ষিত বলতে হবে কথাটা ঠিক না। এই অরুচিকর বিজ্ঞাপনের সাথে যারা জড়িত সবাই অশিক্ষিত, স্থুল বুদ্ধি সম্পন্ন, মূর্খ।
...........................
Every Picture Tells a Story
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
একমত।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
----ঘ্যাচাং---
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামীণফোনের অধিকাংশ বিজ্ঞাপনই কুরুচিপূর্ণ এবং মূল্যবোধের সাথে ঠিক যায় না। এর আগে "ক্লিয়ারকাট কথা" সিরিজে যে বিজ্ঞাপনগুলো ছিল, সেগুলো আমার কাছে প্রচারের অযোগ্য খুব নিম্নমানের বিজ্ঞাপন মনে হয়েছিল। নায়ক অনন্তকে নিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করার বিজ্ঞাপনটাই যা ভালো লেগেছে কিছুটা। যাই হোক, খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ।
facebook
অ্যাডটা ভালো লাগে নাই। হিউমারটাও নিম্নমানের।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
একমত
____________________________
শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটির সুযোগ নিয়ে এবং ডিগ্রীধারী মানুষের শিক্ষার অভাবই এ জাতীয় অশালীন অ্যাডের জন্মের কারণ। গ্রামীণ ফোন মোটামুটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দোসর। নাম্বারটা কাজের কারণে পাল্টাতে পারছি না বলে খারাপ লাগে। এবার পালটে ফেলব।
শুধু এই অ্যাড না, তাদের বেশ কিছু অ্যাড আপত্তিকর, এর মধ্যে ওয়েলকাম টিউন এর অ্যাডটা নিয়ে আমার নিজের বিশেষ আপত্তি আছে। এবং যেই অ্যাড বানিয়ে দিক না কেন এধরনের নিচু মানের অ্যাড বানানোর দায় গ্রামীণ ফোনের উপরও বর্তায়।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
একমত।
আররে চেতেন কেলা? শিখাইতেছে, শিখতে থাকেন, তারা তিরিশ কোটি বাংগালীরে বাংলা না শিখাইলে কি আজকে এই লেখা লেখতারতেন? জাতীয় সংগীত কেমনে গাইতে হয় এইটা যদি না শিখাইত তাইলে কি আমগো খেলোয়াড়রা আবেগের সাথে যার যার বুকে হাত দিয়া জাতীয় সংগীত গাইতারতো? কেম্নে অয়েল্কামটুন দিয়া প্রেম নিবেদন করতে হয় এইটা যদি না শিখাইত, তাইলে কি পোলাপান প্রেম করতারতো? এখন কোই গরীব নাদান পোলাপানরে সহজ উপায়ে একটা দুইটা নমবর পাওয়ার সিস্টেম শিখাইতেছে, তাতে আপ্নেগো ভাল্লাগে না। নাহ, বাংগালীরে কিচ্ছু শিখান যাইব না।
-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------
এই গ্রামীনফোন গোষ্ঠী আর ফারুকী গোষ্ঠী বাঙ্গালীর রুচি সেন্স অব হিউমার সবকিছুকে বলাৎকার করার পণ নিয়ে মাঠে নামছে কেন কে জানে!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
গতকাল সন্ধ্যা থেকে এই বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ রয়েছে। দেশের কোন চ্যানেলে আমার অন্তত এই বিজ্ঞাপনটি চোখে পড়েনি।
আজকে সন্ধ্যায় দেশ-টিভির সংবাদে দেখালো তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার উপরে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়েছেন, সেখানে এই বিজ্ঞাপনের মতো বিজ্ঞাপন নিয়েও আলাপ উঠে এসেছে দেখলাম। আগামী কালকের সংবাদপত্রগুলোতে সভার বিস্তারিত আশা করছি। তবে অক্টোবরের মাঝেই নীতিমালা চূড়ান্ত করার কথা আছে। নিউজটা শুনে ঠিক দুই বছর আগে লেখা নিজের জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে টুকটাক ভাবনা লেখাটার কথা মনে পড়লো, সেটা এক চক্কর ঘুরে এসে বুঝলাম অন্তত বছর দুয়েকে গণমাধ্যমে সম্প্রচারের কোন ভালো পরিবর্তন আসে নাই। সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া প্রকাশিত হয়ে থাকার কথা ইতিমধ্যেই, সেটা আমি এখনো পড়ে দেখিনি, খুঁজে দেখবো এবার। আশা করি তা আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার মতো অদ্ভুত কিছু হয়ে দাঁড়াবে না।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
টিভি দেখি না সাধারণত। নাটক দেখার অভ্যাস নষ্ট হয়ে গেছে, কদাচিৎ বসলে নূতন অ্যাডগুলোই চ্যানেল ঘুরিয়ে খুঁজি। মাঝেমাঝে অদ্ভুত সুন্দর কিছু কিছু অ্যাড চোখে পড়েও।
দু-পয়সার মার্কেটিং পড়েছিলাম একজীবনে। সেও অ-নেকদিন আগের কথা।
তবে মাঝেমাঝে মনে হয় দেশের সবচেয়ে স্টুপিড লোকগুলো বসে আছে বোধহয় এইচআর সেকশানগুলোতে, নয়তো তাবৎ কিছুতে মোটা মেয়ে, কাল মেয়ে কিংবা ডানাকাটা মেয়ে রেসিপি ঢুকিয়ে দেয়া এই মোটামাথার অরুচিকর নির্মাতারা কাজে নিয়োগ পায় কী করে?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
একটা সময় মোবাইল কোম্পানীর বেশ কিছু বিজ্ঞাপনের কাজে মুগ্ধ হয়েছিলাম। বিশেষ করে গ্রামীণফোনের। সেই গ্রামীনফোনের হাত দিয়ে এতটা অরুচিকর বিজ্ঞাপন বের হতে পারে ভাবা যায় না। মেধা শেষ হয়ে গেলে মগজ থেকে গোবরই বের হবে?
এবার মোবাইল কোম্পানীর ভিন্ন একটা অসভ্যতা বিষয়ে বলি।
কোন কোন মোবাইল কোম্পানী গ্রাহককে খামাকা উত্যক্ত করে। সম্ভবত এয়ারটেল বা রবির এই যন্ত্রনা আছে। আপনি জরুরী কোন কাজ করছেন, আপনার কাছে একটা কল এলো বোতাম টিপতেই শুনলেন এক গায়ক চিৎকার করছে "ও প্রিয়া ও প্রিয়া বলে"। কোন মানে আছে? আমি ফোন ব্যবহার করি কথা বলার জন্য। আমার যখন দরকার তখন আমি ফোন করে কথা বলবো। এখন আমার কানের মধ্যে এসে গান শোনাবার সার্ভিস তো আমি চাইনি। এই অত্যাচার কেন? এই্ মোবাইল টিজিং এর বিরুদ্ধে আমাদের কিছু করার থাকে না। কারণ এর জন্যও কোন আইন নেই।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এর পেছনে শুধুই মেধাশুন্যতা? নাকি সবাইকে আকর্ষন (আলুর মত) করার চেষ্টা? বিক্রেতার কাছে বিকৃতমনারাও ত ভোক্তা। হেড অফিসের ইশারা ছাড়াই এগুলো হয়, বিশ্বাস করা কষ্ট।
[মোবাইল টিজিং!!! ]
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এয়ারটেল ব্যবহার করি না, অবস্থা জানা নেই। তবে রবির এই টিজিং সার্ভিসের জ্বালায় ত্যক্ত হয়ে গেলাম।
পুরাই আজাইরা।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন