খুব ছোটবেলায় বাংলাদেশ প্রবাসী এক নরওয়েজিয়ান পরিবারের আমার বয়সী এক পিচ্চি মেয়ের ডল-হাউজ দেখে খুব শখ হয়েছিলো আমারও একটা ওরকম থাকা দরকার। পুতুলের জন্যে ঠিক তার নিজের বিছানার মতো কাঁথা-বালিশ-বেডকভার সহ রট-আয়রনের ডিজাইন করা খাটও ছিলো। দুই বালিকার ভাষা এক ছিলো না, কিন্তু খেলতে সমস্যা হয়নি। শুধু রাতে নিজের বিছানায় ঘুমাবার সময়ে বাবা-মাকে ঐরকমের পুতুলের ঘর দেয়া যাবে কিনা, খাট সহ, জানতে চেয়েছিলাম। খুব বেশি ক্লান্ত থাকায় সেরাতে বা পরবর্তীতে ব্যাপারটা নিয়ে আর ঘ্যান ঘ্যান করার সুযোগ হয়নি। আর একটু বড় হলে খেয়াল করতে পারতাম, যে আমার বাবা-মা নিজেদের মাঝে দৃষ্টি বিনিময় করছেন, ওরকম দামী খেলনা দেয়ার সাধ্য তাদের নাই ভেবে।
এই পুতুলের গল্পটা শুনে মনে হতে পারে আর দশটা মেয়ের মতোই আমার পুতুল খেলার শখ ছিলো প্রচণ্ড। কিন্তু আদতে ঘটনা তা নয়। হতে পারে বড় ভাই বেশি থাকার জন্যেই হোক, বা আমার নিজের চরিত্রটাই খানিকটা মারদাঙ্গা ছিলো বলে ‘হাঁড়ি-পাতিল’ বা ‘পুতুল খেলা’র ব্যাপারটা আমার মাঝে ঠিক ছিলো না। মেয়ে বন্ধুও কম ছিলো আমার ছোটবেলায়, ছেলেদের সাথে বন্ধুত্বও হতো দ্রুত, সিনেমা, গান, বই নিয়ে গল্প করা যেত আরাম করে। শখ করে আম্মুর বানিয়ে দেয়া কাপড়ের পুতুল ছিলো না, তা নয়, তবে পুতুলের থেকে বেশি ছিলো গাড়ি, বন্দুক, ট্রেইন জাতীয় খেলনা। কিন্তু মনে রাখতে হবে আশির দশকে এখনকার মতো এত খেলনা পাওয়া যেত না। বরং আমরা ছোট থাকতে নিয়ম করে আমাদেরকে মেলায় নিয়ে যেত বাবা। ঘোরার খুব শখ ছিলো তার, এখনো আছে, সুযোগ পেলেই পু্রো পরিবার টেনে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন, আগে বেশি ঘোরা হতো, এখন সবার সময় মেলে না। যাই হোক, মেলা থেকে কেনা মাটির দোয়েল-বাঁশি, দড়ি দিয়ে টানা ঝাঁটার খিলের বাড়ি লাগা খটাখট আওয়াজের টানা-গাড়ি, এসব খেলনা আমাদের প্রচুর থাকতো। আমি মনে হয় মনোপলি নামের গেইমটা অনেক বড় হয়ে প্রথম দেখেছিলাম, তখন হয়তো ক্লাস নাইনে পড়ি, ততদিনে অনেক বড় হয়ে গেছি, ছেলেদের সামনে খেলতে জানি না বলতে লজ্জা করছিলো, বলেছিলাম অনেকদিন খেলি নাই তাই ভুলে গেছি। কোন কিছু আমার জানা নাই, পারি না, এইটা বলতে এখনো খানিক লজ্জা লাগে, সব কিছু জানা থাকবে তা নয়, সেটা এখন মেনে নিতে পারি অবশ্য। লেগো সেট প্রথম দেখেছিলাম প্রায় ৯-১০ বছর বয়সে, ঢাকায় কারও বাড়িতে, ওরকম আমার এখনো নাই। সেদিন বসুন্ধরা সিটির এক দোকানে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ ধরে লেগো দেখলাম... এখনো যদি কেউ ওরকম একটা সেট আমাকে দিতো, হয়তো আমার ছোটবেলার শখ কিছুটা মিটতো।
সেদিন রিমোট কন্ট্রোলড হেলিকপ্টারও দেখলাম মন দিয়ে। বছর চারেক আগে একজনের সাথে আলাপে জেনেছিলাম কী প্রচণ্ড শখ ছিলো তার ছোটবেলায় একটা ঐরকম রিমোট-ওয়ালা উড়ন্ত ফড়িং-এর। আমি বেশ মজা পেয়েছিলাম নিজের ছোটবেলার অপূর্ণ খেলনার ইচ্ছার সাথে তার ইচ্ছার মিল দেখে। এখন আমরা দুইজনেই হাজার মাইল দুরের ভিন্ন ভিন্ন দেশে দাঁড়িয়ে খেলনার দোকানে একই বিস্ময় নিয়ে একই খেলনা দেখি। এখন আমাদের দুইজনেরই সামর্থ আছে ঐ ফড়িং কেনার, এত বড় বেলায় তা উড়াচ্ছি বলে লোকে হাসলে পরোয়া না করার মনটাও আছে, কিন্তু এখন আর আমরা কিনি না সেসব। শুধু তাকিয়ে দেখে ছোটবেলার অপূর্ণ খেলনার স্মৃতি রোমন্থন করি। ফড়িং দেখতে দেখতে মনে হলো তার কথা, ফোনে হাত দিতে গিয়েও দিলাম না, ব্যস্ত মানুষদেরকে বিরক্ত করার কী দরকার, ফোন না ধরলে আমার মন খারাপ হবে হুদাই! হয়তো তার মনেও নাই আমিও বলেছিলাম, আরে! আমারও তো একই ইচ্ছা ছিলো! ক’দিন আগেই তার জন্মদিন গেছে, আমার জন্মদিনে সেও ফোন দেবে না হয়তো, ব্যস্ত মানুষদের এত কিছু মনে থাকে না। থাক... আমিই বরং আমার জন্মদিনেই এবার একটা যান্ত্রিক ফড়িং ওড়াবো দুইজনের হয়েই।
আরেকবার ঢাকাতেই আমাদের থেকে বেশ অবস্থাপন্ন কোন এক পরিবারে এক ছেলের জন্মদিন খেতে গিয়েছিলাম। ছেলে বলছি, কারণ তার সাথে আমার মনে হয় না তার জন্মদিনের পরে আর কখনো দেখা হয়েছে, মনেও নাই কে ছিলো সেটা। যাই হোক, আমি চুপচাপ বসে থাকতে পারি না ছোট থেকেই, সাজানো গোছানো টিপটপ বাসার এদিক সেদিক ঘুরে দেখতে লাগলাম। আমার মা খুব টিপটপ মানুষ, চিরকাল আয়ের মাঝে থেকে গুছিয়ে রেখেছেন বাড়ি-ঘর, তার ব্যাপারস্যাপার সব খুব রুচিসম্মত। কিন্তু এই বাসার জৌলুস অন্যরকমের। ঘুরতে ঘুরতে একটা ঘরে গিয়ে নতুন একটা জিনিস দেখে চোখ গোল গোল করে দাঁড়িয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। একটা বিশাল বড় ভালুক! মানে সত্যিকারের ভালুক নয়, এখন সেটা অতি পরিচিত একটি খেলনা, স্ট্যাফড টেডি বিয়ার। কিন্তু আমি তো ভালুক দেখেছি শুধু ছবির বইতে আর আমাদের ছোট শহরের চিড়িয়াখানায়, এরকম অদ্ভুত কিছু তো দেখিনি! খানিক পরে আমাকে খুঁজতে আমার বাবা হাজির হলে ঐটা দেখায়ে আমি জিজ্ঞেস করলাম, এইটা কী? আব্বু সব জানে, অগাধ বিশ্বাস আমার। বাবা জানালো এইটা হলো – “ডগি”। আমি জানালাম, এরকম একটা কেনা যাবে কিনা? তখন একটু বড় হয়েছি, কাজেই এটাও জিজ্ঞেস করলাম যে খুব বেশি দাম কিনা? আব্বু জানালো, খুঁজে দেখবে।
ভুলেই গিয়েছিলাম ডগির কথা, বেশ অনেকদিন পরে আরেকবার ঢাকা থেকে বাবা ফিরলো একটা ভালুক হাতে নিয়ে, আকারে তা সেই ছেলেটার বড় ভালুকের সমান ছিলো না সত্যি, রং-ও ওইরকম ছিলো না মোটেও, কিন্তু আমার খুশি তাতে কম ছিলো না। আর আমি বাজি ধরে বলতে পারি আমার ভালুক নিয়ে আমি খেলেছি ওই ছেলেটার চেয়ে ঢের বেশি! তবে এ বেচারাও হিংসার উদ্রেক করলো অনেক পিচ্চিরই। প্রাপ্তির প্রথম দিকেই আমার মনে হলো একে নিয়ে যাওয়া দরকার বাবা-মার সাথে বিকালের এক চা-চক্রে, দুই ছোট হাতে আমি মোটে আঁকড়ে ধরে থাকতে পারি ডগিকে। সেখানে উপস্থিত অন্য ধুরন্ধর পিচ্চিদের হাতে না দিলেও তারা ভালুক কী খায়, কী করে ইত্যাদি জিজ্ঞাসার পাশাপাশি আমাকে উপদেশ দিলো, ভালুক ময়লা হয়েছে, গোসল করানো উচিত আমার। আমি তাদের কথা মতো বাগানে বৃষ্টির পানি জমে থাকা চৌবাচ্চায় দিলাম চুবিয়ে ডগি-কে। এরপরে ভেতরের স্পঞ্জ ভারি হয়ে গেলো, মুহূর্তে কালো ভালুক আরও কালো হয়ে গেল পানি শুষে! আঁতকে উঠে পানি থেকে তোলার চেষ্টা করতে গিয়ে আরেকটু হলে নিজেই পড়ে যেতাম পানিতে, ভালুকের কষ্টের উপরে যোগ হলো মা এর তরফ থেকে পিঠে মার, আর বাবার অগ্নি দৃষ্টি, সবার সামনে বেয়াদবি হাউকাউ শুরু করায়। (এই জিনিস অবশ্য আমার জন্যে খুবই ডাল-ভাত ছিলো, এখন পুরানো লোকজন দেখা হয়ে গেলে, ছোটবেলায় আমি কি ‘শান্ত’ ছিলাম তার বিবরণ দেয়া শুরু করেন ভালো মনেই, আমি এদিকে মানে মানে কেটে পড়তে পারলে বেঁচে যাই!)
যাই হোক, ভালুক রোদে দেয়া হল, বাদলা দিনে তার শুকাতে লাগলো বেশ কয়েকদিন। সিন্থেটিক পশমের সেই নতুন জেল্লা আর ঠিক আগের মতো ফিরে এলো না, ভেতরের স্পঞ্জ খানিক এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় শক্তও হয়ে থাকলো কিছুটা। তবে আমার ভাইয়ের জন্মের পরে সেও ডগিকে নিয়ে খেলেছে, সে সময়ে আরও কয়েকটা ডগি যোগ হয়েছিলো আমাদের খেলার লিস্টে, তারা আমাদের প্রথম ডগির থেকে আরো ছোট ছিলো। আমার ভাইয়ের ক্রিয়েটিভ ব্রেইন নাম দিয়েছিল সবার, তার নিজের কাল্পনিক ফ্রেন্ড কঙ্কাল রাহালের নামও তার দেয়া! আমার ডগির নাম ছিলো – দয়। মানে কীরে? মানে নাই, শুধু ‘দয়’, জবাব ছিলো তার। দয় এখনো আছে, দাদাবাড়ির একটা প্যাসেজের দেয়ালের তাকে রাখা দয়কে কিছুদিন আগে একবার দেখলাম, ধুলো জমেছে, হাত দিলে ডাস্ট এলার্জিপ্রেমী আমার হ্যাঁচ্চো শুরু হবে ভয়ে আর হাত দেয়া হয়নি, তবে আসল চোখ হারাবার পরে আম্মুর লাগিয়ে দেয়া বোতাম ওয়ালা চোখেরও এক চোখ হারিয়ে খুব একটা মন্দ নাই সে। বয়স হয়েছে, আমার মতোই, এই যা। আমি বুড়িয়ে গেলেও তার মনটা ছোটবেলার মতোই রঙিন আছে আশা করি।
মন্তব্য
অনেকদিন পরে লিখলে মনে হয়, খুব ভালো লাগলো। আমার বেশি খেলনা ছিল না, একটা ফুটবল আর একটা ম্যাচ বক্স কার দিয়ে পুরো শৈশব পার করেছি। কিন্তু এর পরও আমার জীবনের অন্যান্য সময় শৈশবের তুলনায় বর্নহীন। সেটার সাথে অবশ্য খেলনা থাকা অথবা না-থাকার কোন সংযোগ নেই।
আমার আম্মা তাঁর ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণে একটা পুতুলের কথা লিখেছিলেন। তাঁর ছোটবোন সেই পুতুলটা ভেঙ্গে ফেলেছিল, খুব অল্পদিনের মাথায়। প্ল্যাস্টিকের পুতুলের আগের যুগ, গাটাপার্চা দিয়ে তৈরি। ওইগুলোকে আলুর পুতুল বলতো লোকে। আমি ছাত্রবস্থায় একবার একটা খুব দামী দোকানে আলুর পুতুল দেখেছিলাম। সম্ভবত কালেক্টরস আইটেম। আম্মার জন্য কিনব ভেবেছিলাম। কিন্তু দাম দেখে আর কেনার সাহস হয় নি। পরে সেই কথা আর মনে ছিল না। তবে এর পরে আম্মাকে আমার এক ভাই বিশাল একটা পুতুল উপহার দিয়েছিল, শৈশবের বেদনা ৭০ বছর পরে ভুলানোর জন্য।
আমার ছোট কন্যা টেডি বিয়ার টাইপের খেলনা খুব পছন্দ করে। ওর বিছানাতে সারি সারি কুকুর, বিড়াল, হাতি, নেকড়ে ইত্যাদি থাকে। রাতে সবাইকে গুড নাইট বলে শোয়। বড় জনের এইগুলোতে প্রীতি নেই। খেলনা পছন্দের ধরন দেখে সাইকোলজি বোঝার কোন উপায় আছে কিনা জানি না, তবে সব পছন্দ-অপছন্দের পেছনে কিছু হয়ত জেনেটিক মেকাপ থাকে।
লেখালেখি চলুক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
হুম, অনেকদিন পরেই লেখা হলো। লিখতে চেয়েছিলাম অবশ্য অন্য কিছু, কয়েকবার কিবোর্ড টিপে আবার মুছে দিয়ে, ওয়ার্ড বন্ধ করে আবার খুলে তারপর দেখি অন্য কী সব লিখে ফেলেছি। লেখার আগ্রহই কেমন যেন মিইয়ে গিয়েছিলো বলা যায়। এটা লিখতে গিয়ে আরও কিছু জিনিস মনে পড়লো, টুকে রাখলাম মনের খাতায়, আবার ইচ্ছা করলে লেখা যাবে, যদি না হারিয়ে যায়। তবে বরাবরই মাথা আউলায়ে গেলে চিন্তাভাবনা পরিষ্কার করতে লিখি আমি, বেশিরভাগ লেখাই যদিও মাথাতেই লিখে ওখান থেকেই হারিয়ে যায়, তা হোক ভালো গল্পের প্লট বা ব্লগরব্লগর।
আমার ছোট ভাইয়ের সমবয়সী আর এক ভাইয়ের অনেক খেলনা ছিলো। তার বাবার পক্ষে সম্ভব ছিলো কিছু নতুন এলেই কিনে দেয়া, দরকার থাক বা না থাক অনেক খরচ করতেন। নব্বইয়ের দশকে একরকমের কর্ডলেস-মাথার উপরে লম্বা কালো অ্যান্টেনা ওয়ালা প্রথম যুগের মোবাইল ফোনের খেলনা ভার্শন বাজারে এলো, বোতামগুলো চাপলে তার থেকে নানান গোলাগুলি, ফোনের ডায়ালটোনের আওয়াজ বেরুতো। আমার ছোট ভাই ওদের বাসায় এই খেলনা দেখলো, খেললোও, পরে বাসায় এসে একটার ভেতরে আরেকটা খালি ম্যাচ-বাক্স পুরে নিজের জন্যে বানিয়ে নিলো ওয়্যারলেস সেট। আব্বুকে বলেনি ওর লাগবে ঐরকমের। কয়েকদিন ধরে দেখে পরে আব্বু জিজ্ঞেস করলো কী এটা, ফোন তোমার? এত বড় কেন? পরে পুরো ব্যাপারটা জানতে পেরে কিনে দিয়েছিলো। আছে সেটা এখনো। যারটা দেখেছিলো তারটা ভেঙে গুঁড়োগুঁড়ো হয়ে আবার আরও কয়েক সেট কেনার পরেও ওরটা টিকে ছিলো। একবার ভেঙে গেলে সহজে আরেকটা পাবে না বুঝতো সে। অবশ্য আমরা দুই ভাইবোনই আমাদের প্রায় সব খেলনাই রেখে দিয়েছি, যেগুলো একদম ভেঙে টুকরো হয়ে গেছে, তাদেরও কিছু কঙ্কাল জীবিত আছে।
ইংল্যান্ডে স্কুলে ওপেন ডে টাইপের একটা অনুষ্ঠান হতো কয়েক মাস পরপর, সেখান থেকে ক্লাস সিক্সে পড়া আমি পুরাতন বই কিনেছিলাম একগাদা, আর আমার ভাই কিনেছিল ভাঙা খেলনার টুকরা - নানান খেলনার টুকরো জোড়া দিয়ে ভিন্ন ধরনের নতুন খেলনা তৈরি করে নিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু সেগুলো আসলে আমার ভাইয়ের গল্প, সে কখনো বলতে চাইলে বলবে, তাই লিখিনি। আপনার ম্যাচ-বাক্স থেকে মনে পড়লো আবার।
আমার বাবাদেরকে সামান্য সাইকেলের চাকার শক্তিতে চলা ডায়নামো দিয়ে আলোকিত সাইকেলের লাইট আকৃষ্ট করতো ছেলেবেলায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাইকেলের চাকা ঘুরিয়ে ঐ লাইট জ্বলা পর্যবেক্ষণ করেছে গল্প শুনেছি। তাদের সবথেকে বড় বিনোদন ছিল উন্মুক্ত খেলার মাঠ, নদীর বাঁধ ধরে ভোরের হাঁটা পথ আর প্রকৃতি। আমরা বিস্মিত হতাম সামান্য একটা স্টাফড টয় দেখে। এখনকার শিশুরা এত বেশি সহজে এত দ্রুত প্রযুক্তি, প্রকৃতি, জ্ঞান হাতের মুঠোয় পায়, আক্ষরিকই, যে হয়তো তাদেরকে বিস্মিত করার পর্যায়টা অনেক উঁচুতে সেট হয়ে গেছে। আমি জানি না আসলেই আমার ভাগ্নে-ভাগ্নীদেরকে ঠিক কী বা কোন্ জিনিসটা অতটা বিস্ময় এনে দিতে পারে, অতটা খুশি দিতে পারে যতটা আমি সামান্য একটা ডগি পেয়ে হয়েছিলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
পিচ্চিকালের গল্পগুলো ভারী সুন্দর। অন্যের সাথে নিজের গল্পও কিছুটা মিলে যায় কেমন!
ছোটবেলার প্রিয় পুতুলটা এখনো আমার রুমেই থাকে আমার সাথেই ওর নাম আরাত্রিকা!
অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়ে ভালু লাগলো রে আপু!
ধন্যবাদ আপনাকে। লেখার সময় পাইনা বলাটা অতটা সত্যি হবে না, বলা ভালো লেখার ইচ্ছাটা কেন জানি হয় না ইদানীং। অনেক বেশি কাজের চাপ, অনেক বেশি মনের চাপ, অনেক বেশি বাজে যেন চারিদিকে সবকিছুই। স্থবিরতা আছে কাজে, মনে, জীবনে। নতুনত্ব নাই, পরিবর্তন নাই, ভালো নাই বলেই হয়ত ছোটবেলার কথা বের হলো লিখতে গিয়ে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমার বাসা ভর্তি ছোটবেলায় কিনতে না পারা সব খেলনা। লেগো, হেলিকপ্টার, টেডি বিয়ার কি নাই। সত্যি কথা বলতে আমার বাসায় শো-পিস নাই, শো-পিস বলতে যা সাজানো সবই খেলনা। জামাই আর আমি জন্মদিনে সাধারণত ছোটবেলায় না পাওয়া অধরা কোন খেলনা গিফট করি বুড়া বেলার খেলনাও উপহার দেয়া হয়। আর এখন একটা পিচ্চি থাকায় আরও সুবিধা হয়েছে, ওকে ছুতো দেখিয়ে যা মনে চায় কিনি। নেক্সট টার্গেট একটা বাজ লাইটইয়ার কেনা।
নিজের ছোটবেলায় পাওয়া খেলনার মধ্যেও মনে হয় আব্বার না পাওয়া খেলনাগুলো ছিল। আব্বা নিজে খেলতে চায় এমন জিনিষই কিনে দিত। ব্যাটারিতে চলা খেলনা গাড়ি ভেঙ্গে ভিতরের মোটর আর গিয়ার দিয়ে আরও হাবিজাবি বানানো আব্বা আর আমাদের একটা খেলা ছিল। এই খেলাটাই ইঞ্জিনিয়ারিং এ আগ্রহের শুরু।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
তোমাদের আর টিউলিপদের এই জিনিসটা আমার ভালো লাগে, মজার। এই যে তোমরা একেকজন অন্যকে সেসব খেলনা বা বই উপহার দাও যা ছোটবেলায় হয়তো যোগাড় করা সম্ভব হয়নি। তোমরা লাকি।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ছোটবেলার অপূর্ণ শখের ব্যাপারটা হাড়ে হাড়ে সত্যি। আমি পুত্রধনের শখের নাম করে নিজের শখ মেটাই খেলনা কিনে।
যান্ত্রিক ফড়িং কিনে ফেলেন একটা। লোকে হাসাহাসি করার ব্যাপারটা পুরোপুরি অমূলক। আমি যে মুল্লুকেই গেছি দেখি ইয়া দামড়া লোকজন অহরহ সেগুলো দিয়ে খেলে, আপনি তো সেই তুলনায় শিশু। লেক জেনেভায় একজন প্রায় চারফুট সাইজের একটা সীপ্লেন নিয়ে এসেছিলো। শখ দেখে আমাদের আক্কেল গুড়ুম। সেই প্লেনখানা আধ ঘণ্টাখানেক পানিতে ভেসে আর আকাশে উড়ে বেড়ালো। লোকটাও ব্যাপক উপভোগ করছিলো জনতার মুগ্ধ দৃষ্টি ।
বেশি উপভোগের ফল অবশ্য ফলেছে। পানিতেই সেটার ব্যাটারি ডাউন হয়ে গেছিলো। মাঝারি ধরণের হাড় কাঁপানো শীতে শখমানব হাফপ্যান্ট পরে লেকের পানিতে ঝাঁপ দিলেন সেটা উদ্ধার করতে। এই ব্যাপারটা মাথায় রাখতে পারেন। ফড়িং গাছে আটকে গেলে যেন গাছ বেয়ে উঠে যেতে পারেন তার ট্রেনিং নিয়ে নিলেন.............
হা হা হা হা! এইটা ভালো বলেছেন। গাছে চড়তে পারি না, শেখা হয়নি কখনো।
তবে হ্যাঁ, দেখি এবার নিজেই নিজেকে একটা হেলিকপ্টার উপহার দিয়ে দেবো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ভালো লাগল খুব।
আপনার লেখা পড়ে, লেখায় মন্তব্যগুলো পড়ে কত যে স্মৃতি ভীড় করে এল ধূসর (নাকি এখন আরে তেমন ধূসর নেই, ফিকে হয়ে এসেছে, কে জানে!) কোষগুলোতে। অর্দ্ধশতাব্দীরও আগের সেই দিনগুলি এখন আর কোথাও নেই, আমাদের স্মৃতিতে ছাড়া।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ। লিখে ফেলেন নিজের গল্পগুলো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
________________________
সরীসৃপ
আচ্ছা, আপনার নাম সরীসৃপ কেন? সরীসৃপ পছন্দ করেন বলে?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমার ছোটবেলায় পাওয়া খেলনার সংখ্যা সীমিত হলেও মোটামুটি সবই আছে এখনো। লেখা ভালু পাইসি।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এই বিকেলবেলায় পড়েছি বলে কিনা জানিনা লেখাটা পড়ে অনেকক্ষন চুপ করে ভাবছিলাম। এখন মন্তব্য করতে গিয়ে মনে হল লিখতে গেলে আসলে সেটা এত বেশি বড় হবে আরেকটা ব্লগ লেখাই হয়ে যাবে এবং আজ এখন সেটা লেখার সময় নেই আমার।
ভাল থাকুন
পরে সময় নিয়ে বড় করেই লিখেন। ছোটবেলার গল্প পড়তে ভালো লাগে বরাবরই।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
লেখা পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমার কখনোই তেমন খেলনার শখ ছিল না। তারচেয়ে আমি গল্প শুনতেই বেশী পছন্দ করতাম। তারপর একটু যখন বড় হলাম তখন মামার এনে দেয়া ভিডিও গেমস খেলতাম। আর সত্যি কথা বলতে কি আমরা দুই ভাই বোন খেলার তেমন একটা সুযোগই পেতাম না। স্কুল, টিচার, গানের স্কুল করেই দিন চলে যেত। আমার আব্বু আম্মুদের ছেলেবেলার গল্প শুনলে হিংসা হয়। কিন্তু আমার বা আমাদের মত অনেকের ছেলেবেলাই মধুর ছিল না। অথবা হয়ত বলা যায় আমাদের কোন ছেলেবেলাই ছিল না।
ফাহিমা দিলশাদ
এই কথাটাই আরেকজন বললেন... শুনে একটু কষ্টই পেলাম। আমার কাছে ছোটবেলার দিনগুলো খুব কেয়ার-ফ্রি দিন ছিলো। সবকিছুর সোজা সহজ উত্তর ছিলো, সবকিছু সমাধান করার মানসিকতা ছিলো, অনেক সাহস ছিলো, সত্যি যেটা ভাবছি তা বলতে, যা ইচ্ছা করছে, তা করতে দুইবার চিন্তা করার দরকার ছিলো না, আমাকে ভালোবাসার, আগলে রাখার মানুষের অভাব ছিলো না। হয়তো অনেক দিক থেকেই আমি আসলে 'বড়' হয়ে উঠতে পারিনি এখনো। কিন্তু ঠিক কবে যে সেই দৃঢ় আত্মবিশ্বাসটা কিছুটা হলেও হারিয়ে গেছে তা বুঝতে পারি না, আর তখনই মনে হয় 'বড়' হয়ে গেছি না চেয়েও।
লেখা ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মন খারাপ করেন কেন? কোন দামী খেলনা ভেঙে ফেলায় বাবা-মার মাইর খাওয়ার কথা মনে পড়েছে নাকি?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
নাহ, আমি আর আব্বা একলগে বইসা খেলনা গুলার পোস্টমর্টেম করতাম... তাপ্পর মন খারাপ হয়ে গেলে আব্বা আবার ওই ভাঙ্গাচুরা গুলা রিসাইকেল কইরা নতুন খেলনা বানায়া দিত... পুরান কথা মনে পইড়া গেল...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আহা!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আপনার লেখা পড়ে আমার পুতুল খেলার দিনগুলি মনে পড়ছে খুব। পুতুল খেলা ছিল নেশার মত, শেষবার পুতুল বিয়ে দিলাম এইচ এস সি পরীক্ষার পর। আমার পরীক্ষার জন্য বেচারির বিয়েটা আটকে ছিল। একটা বারবি ডলের খুব শখ ছিল কিন্তু পাই নি। এখন ভাবি নিজেই কিনে নেব!
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
পুতুল খেলাটা আমার হয়ে ওঠেনি কখনোই। আমার সমবয়সী মেয়েদের কোন দল ছিলো না স্কুলের বাইরে, কাজেই সেভাবে খেলা হয়নি। আর বারবি পুতুল প্রথম দেখি এগার বছর বয়সে, তার আগে এটার নামও তেমন শুনি নাই। এগার-তে এসে আমার আগ্রহ পুতুলের ধারে কাছেও ছিলো না। খুব ছোটতেই আমার বই পড়ার নেশার কারণে সব রকমের উপহার হতো বই। এছাড়া সিনেমা, কার্টুন, বেড়ানো, ইত্যাদি অনেক বিষয়ে ততদিনে আগ্রহ বিভক্ত হয়ে যাওয়ায় বারবি পুতুল সেভাবে দাগ কাটেনি মনে। তবে পুতুলগুলো বেশ সুন্দর লেগেছিলো দেখতে।
মজার ব্যাপার হলো বিদেশে ঐ এগার বছর বয়সেই আরেকরকমের খেলনা পুতুলের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম। ছোট্ট ছোট্ট মিনিয়েচার প্লাস্টিক কুকুরের সেট পাওয়া যেত, সেটার বিজ্ঞাপন দেখাতো টিভিতে। ঐটা দেখে খুবই মজা পেয়েছিলাম, আর নিজের একটা সেটের শখ ছিলো। কিন্তু এই বেহুদা খেলনার পেছনে বেহুদা খরচ বাবা-মা করতে দেয়নি, বলাই বাহুল্য।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ভাল লেগেছে!
মনে পড়ছে, আমার বোনেরা কি সুন্দর একটি সংসার গড়ে তুলেছিল জুতোর বাক্সে! এমনকি তারা বড় আপুদের কাছ থেকে পুতুলের শাড়িও কিনত, অবশ্য এ জন্য দাদুর কাছ থেকে কিছু টাকা চেয়ে নিতে হত তাদের!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
যেমন লিখেছি, আম্মু কিছু কাপড়ের পুতুল তৈরি করে দিয়েছিলো, সেটা মনে হয় মেয়েকে নিজেদের ছোটবেলা আর ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই। জুতোর বাক্সে পুতুলের সংসারের গল্প আর পুতুলের বিয়ের কথা আমি মূলত গল্পেই পড়েছি! তবে পুতুলের বাসা দেখলে আমার এখনো মজা লাগে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
খেলনা দিয়ে খেলিনি তেমন একটা। বারবি থেকে শুরু করে টয়হাউস, কোনটারই শখ ছিল না।
পুতুল কিনেছি জীবনে সব মিলিয়ে দুটো কি তিনটে, ফোরে পড়ুয়া বড়বোন হয়েও ছোটবোনের জন্যেই।
একটা ফিশিং গেম ছিল, এক বড়লোক আত্মীয়ের বাড়িতে দেখে দুই ভাইবোন পয়সা জমিয়ে কিনেছিলাম। আছে এখনো।
একটা ডগহাউস ছিল, বোতাম টিপলে কুকুর বের হয়ে আসতো। মামি কিনে দিয়েছিলেন।
একটা খেলনা ডুবুরি ছিল, পানির বালতিতে ছেড়ে দিলে দিব্যি গড়গড় করে সাঁতার কাটতো।
একটা ক্যামেরা ছিল, নানাভাই এনেছিলেন বাইরে থেকে। সেও এখনো তোফা আছে।
কিন্তু অতো আল্লাদ বা আফসোস হয়নি কখনো আসলে শৌখিন গাড়ি, দামি পুতুল বা রঙচঙা হেলিকপ্টার নিয়ে।
নেশা ছিল কেবল বইয়ের, ঐ একটাই নেশা।
হ্যাঁ, প্রিয় ছিল তুলোর ভালুক। সাদা আর বাদামিরঙা পশমি ভালুক। এখনো প্রিয়! আর্চিস গ্যালারিতে গিয়ে লোভ সামলাতে পারতাম না। তাও সামলাতে হতো।
শেষমেশ এই বুড়ো বয়সে এসে লোকলজ্জার খেতা পুড়িয়ে বিশাল সাইজের এক ভোটকা টেডিবিয়ার কিনেছি। জাপটে ধরে ঘুমাই।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আরে আমাদেরও একটা ফিশিং গেইম ছিলো, মানে আছে এখনো, তবে পরের দিকে আর ঠিকমতো চলতো না সবসময়ে। কেউ মনে হয় এটা আমার ভাইয়ের কোন একটা জন্মদিনে উপহার দিয়েছিলো। আর একটা স্পিডবোট ছিলো তার, সেটাও গামলা ভরা পানিতে ছেড়ে দিলে গোল হয়ে ঘুরতো। এইটা অবশ্য নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো, খোলটা আছে এখনো। মজার খেলনা ছিলো একটা plastic-এর তৈরি একটা নরওয়েজিয়ান পুতুল - একটা ছোট দুষ্টু ছেলে সবুজ একটা base-এর উপরে দাঁড়ানো, base-টায় পানি ভরা যেত, আর ছেলেটার স্প্রিং লাগানো প্লাস্টিকের আলগা প্যান্ট ধরে টেনে নিচে নামিয়ে দিলে হিসু করে দিতো সে!
(এ বেচারার প্যান্টের স্প্রিং নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো পরে)।
ভালুক কেনা থেকে মনে পড়লো, আমার এক ছোট ভাই বৈদেশে আমার জন্যে নাকি একটা বিশাল টেডিবিয়ার কিনে রেখেছে। আমার 'ডগি' দয়ের গল্প না শুনেই কী থেকে তার মনে হয়েছে সে একটা টেডিবিয়ার রেখেছে আমার জন্যে। তার নাম লুলুবুলু, এবং তার গলায় একটা চকলেট রঙের বো বাঁধা আছে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ছেলেবেলার খেলনা বলতেই মনে ভেসে ওঠে সাইকেলের একটা টায়ার আর তার সাথে একটা গাছের চিকন ডাল, যা দিয়ে বাড়ি মেরে মেরে ঐ টায়ারটাকে দাবড়ে বেড়াতাম পাড়াময়!! পরে চাচার এনে দেয়া একটা খেলনা গাড়ী পেয়ে সেটাতে সুতো বেঁধে দৌড়ে বেড়াতাম, জানতামই না যে ওটাতে ব্যাটারী লাগালে সে একা একাই দৌড়ে বেড়ায়।
স্মৃতিচারণ খুব ভালো লেগেছে আপু।
____________________________
হা হা হা হা! গাড়ির রহস্য পরে উদ্ঘাটন করলেন কেমন করে?
সাইকেলের চাকা আর ডান্ডির ঐ খেলাটার কথা আর মনে করিয়ে দিয়েন না! পাড়ার ছেলেদের প্রত্যেকের একটা করে ছিলো, আমি মেয়ে বলে আমাকে দেয়া হয়নি! আমার এখনো শখ আছে এইটা একবার খেলার। কাজটা সহজ মনে হলেও বেশ কঠিন আছে, একটা পরিমাপের আন্দাজ লাগে ঠিক ঠাক গড়াতে হলে। হেলিকপ্টার দেখতে গিয়ে যার কথা মনে পড়লো বলেছি, তাকে আমার এইটা খেলার শখ আছে, সেটাও বলেছিলাম, আমি শিওর মনে নাই তার। কিন্তু আবারও বলি এখনকার বাচ্চারা আসলে ঠিক কোন্ খেলনায় সম্মোহিত হয়? প্লে-স্টেশন, এক্স-বক্স, Wii? আমি সেদিন বহুদিন পরে রাস্তার ধারে একটা শিশুকে চাকার খেলনা নিয়ে দৌড়াতে দেখলাম, এই জিনিস এখন পথশিশুদের হাতেও দেখি না আর!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
নতুন মন্তব্য করুন