বাংলাদেশ হুজুগে স্বাধীন হয়ছে!

নীল রোদ্দুর এর ছবি
লিখেছেন নীল রোদ্দুর [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ০৩/০৯/২০১০ - ৪:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:




একটি প্রজন্ম জন্মেছিল এই দেশে, যারা জন্মেই দেখেছিল, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংঘাতে বিপর্যস্ত তাদের জন্মভূমি। সেই প্রজন্মটা কেবল ছুটেছিল এক জাতীয়তাবোধ থেকে আরেক জাতীয়তা বোধের অনিবার্য রাস্তায়। এই উপমহাদেশে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে নানা জাত ধর্ম বর্ণের সহাবস্থান। একই মাটির কোলে, একই গ্রামে যুগ যুগ ধরে বেঁচেছে হিন্দু মুসলিম। একই ভূখন্ডের সীমারেখায় একিভূত হয়ে থেকেছে, বাঙ্গালী, গুজরাটি, তামিল, পাঞ্জাবী... আরো অনেকে। কি ছিল তাদের পরিচয়, ভারতীয়! তিন পুরুষ আগ পর্যন্ত, এই পরিচয় নিয়েই পৃথিবীতে এসেছিল আমার পূর্বপ্রজন্ম, মাটিতে মিশেও গেছে সেই পরিচয় নিয়েই। আমার দাদা, দেখেছে বৃটিশ শাসন, দেখেছে পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতা ভূখন্ড, দেখেছে বাংলাদেশ। তারকালে জন্মালে হয়ত আমিও হয়ে যেতাম আমার জাতীয়তাবোধ নিয়ে দ্বিধান্বিত। কি তবে তার জাতীয়তা বোধ? জন্মেছিল বৃটিশরাজের শাসনের অধীন ভারতীয় হিসেবে। যৌবনে দেখেছিল, বৃটিশের গ্রন্থি ছেদনে উন্মত্ত স্ব-জাতি গোষ্ঠীকে। মাঝে এলো পরজীবির মত এক উটকো শাষকদলের পেষন। সবশেষে এলো বাংলাদেশ, যে দেশের মানচিত্র আর পতাকার অধিকার অর্জন করে আনল তারই সন্তান এবং তার সহযোদ্ধারা। হ্যাঁ, আমি সেই যোদ্ধার গর্বিত সন্তান।


 

বলছি আমার বাবার কথা, বোধ সৃষ্টির পর থেকেই যে দেখেছে জন্মভূমির রাজনৈতিক আর সামাজিক সঙ্কট। সেইসময় পৃথিবীর কাছে তার পরিচয় ছিল, পাকিস্তান ভূখন্ডের নাগরিক তথা পাকিস্তানী। এ এমন এক পরিচয়, যে পরিচয়কে স্বীকৃতি দিতে চাই না তার মন। মানতে পারেনা পূর্ব-পাকিস্তানে পাকিস্তানীদের অন্যায় শাষন। নিজেকে আর ঐ দূরবর্তী পশ্চিম পাকিস্তানের অচেনা ভিন্নভাষী মানুষগুলোকে কোনভাবেই এক জাতিভুক্ত বলে ভাবতে পারে না কিছুতেই। এ এক চরম আত্মপরিচয়ের সঙ্কট। তার উপর মানবতাকে পায়ে পায়ে পিষে নির্মমভাবে শোষন করে চলেছে পশ্চিম পাকিস্থানীরা। উত্তাল পূর্ব পাকিস্তান। পয়ষট্টি, ছেষট্টি, উনসত্তুর, সত্তুর এই সবই দেখা স্কুল ছাত্রের নিজের চোখে। তারুণ্যের টগবগ রক্ত শরীরে। দেশ স্বাধীনের ডাক। ছুটে গেল ইন্ডিয়ান ক্যাম্পে প্রশিক্ষন নিতে। তারপর অস্ত্র হাতে ফিরে আসা আবার বাংলাদেশে। এই মাতৃভূমিকে যে মুক্ত করতে হবে। অবসরে রেডিওতে শোনা দেশের গানে  তাদের মনে যেন আগুন ছড়িয়ে যেতো। আর অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করত সেক্টর ৮ এর অধীনে কুষ্টিয়া অঞ্ছলে। মুক্তিযোদ্ধা দলের এক্সপ্লোসিভ একপার্ট ছিল সে। যেখানেই এক্সপ্লোসিভ সেট করা দরকার হত, ছুটে যেতে হত তাকে। গেরিলা যোদ্ধা এই দলের কখনোবা পাকিস্তানী আর্মির মুখোমুখিও পড়ে যেতে হত। এক বাড়িতে খাবার খেতে গিয়ে দেখে, বাড়ির মালিক পাকিস্তানী সেনবাহিনীর বাঙ্গালী সৈনিক। যুদ্ধের কারণে অস্ত্রসহ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা। অথচ যুদ্ধ না করে সযত্নে অস্ত্রটাকে অলস করে রেখেছে। তারা তাকে অনুরোধ করেছিল, আপনি তো নিজে যুদ্ধ করছেনই না, অস্ত্রটা অন্তত আমাদের দেন। দেয়নি সে। তারাও আর সেই বাড়ির অন্ন গ্রহন না করে চলে আসে। যে মানুষটার প্রতি বিরক্তি চলে এসেছে, তার দেয়া খাবার গলা দিয়ে নামবে না ভেবে। এই আমার বাবার তারুণ্য।

 

  আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্ম নেয়া এক অতি ভাগ্যবান শিশু, যে গর্ব করে বলতে পারে, তার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার বাবা যে অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগেছে, সেই সঙ্কটে তার সন্তানদের পড়তে দেয় নি। তাদের জন্য একটা অনন্য আত্মপরিচয়ের স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। আমাদের জন্য তার শ্রেষ্ঠ অবদান, উপহার বাংলাদেশের পতাকা। আমি গর্ব করে বলি, আমি বাংলাদেশী, মাতৃভাষা বাংলা আমার। আমি সেই শিশু, ছোট্ট বেলায় যখন চারপাশের আর দশটা বাচ্চা ভূত-প্রেতের, পরীর গল্প শুনে বড় হয়েছে, আমি তখন শুনেছি মুক্তিযুদ্ধের গল্প। বাবা খুব দারুন করে গল্প বলত, বলত , “এক ছিলো মুক্তিযোদ্ধা, সেই মুক্তিযোদ্ধা যখন কলেজে পড়ত, তখন দেশে বেধে গেল যুদ্ধ। তার মা তো তাকে কিছুইতেই যুদ্ধে যেতে দেবে না, ছেলে যদি আর ফিরে না আসে, ছেলে বাবা-মা কাউকে কিছু না বলে পালিয়ে চলে গেল যুদ্ধ করতে...” চলত তার গল্পের পর গল্প। আমি ঘুমিয়ে না পড়া পর্যন্ত, যতক্ষন জেগে থাকতাম, ততক্ষন মাঝে মাঝেই বলে উঠতাম, তারপর কি হল আব্বু? এইভাবে বাবার কোলে বসে যুদ্ধের গল্প শুনেই কেটেছে আমার অতিশৈশব, তারপর সেই একই গল্প শুনেছে আমার ছোট ভাই, আমি তখনও চুপ করে গিয়ে বাবার পাশে বসে থাকতাম, বহুবার শোনা সেই গল্পগুলো বারবার শুনেও যেন কিছুতেই আশ মিটতো না আমার। এইভাবেই ছোট্ট চারাগাছ থেকে ধীরে ধীরে বিশাল গাছের প্রকান্ড ডালপালার মত ছড়িয়ে গেছে আমার মধ্যে দেশাত্মবোধের সবকটা ডালপালা। এটা আমার কাছে কোন প্রক্রিয়া না, এক স্বতঃস্ফূর্ততা!

 

 এই আমিই আজ ঘুরে বেড়াই অনেক মানুষের মাঝে, অনেক মানুষেতে আমার পরিচয়। গড়ে উঠেছে এক নিজস্ব জগত। প্রতিদিন মনে হয়, আমার বাবা তো এই দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে, আমি কি করেছি, কবে পারব বাবার মত কিছু করতে?... একটা অস্থিরতা আমাকে অশান্ত করে তোলে।

 

আমার ডায়রীর পুরনো কিছু লেখায় চোখ বুলাতে বুলাতে একটা লেখা আবার আমাকে সেই অস্থিরতায় ফেলে দিল। লেখাটি ১৮ই ডিসেম্বর, ২০০৬ এর। সেদিনের লেখাটি তুলে দিলাম এইখানে।

 

 ১৮ই ডিসেম্বর, ২০০৬। ব্যক্তিগত দিনলিপি।

যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ মুক্তিসেনা

সে মাটি আমার অঙ্গে মাখিয়ে দে না ...

 ১৫ই ডিসেম্বর, ২০০৬, রাতে এই গানটা গাইতে গাইতে আবেগ আপ্লুত হয়ে গিয়েছিল ক্লোজআপ ওয়ান এর মুহিন।  জানিনা, ওর চোখের জল কে কিভাবে নিয়েছিল, হয়ত কেউ ভেবেছিল, এটা দর্শককে বিমোহিত করার একটা কৌশল, আবার হয়ত কেউ  ওরই মত আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েছিল, কিন্তু আমি এসব নিয়ে ভাবার মত কোনো অবসরই পাইনি। আমার সেই মুহূর্তটা ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল আরেকটি  ভয়াবহ কথার আঘাতে!!!

 

আমি টেলিভিশন দেখি খুব কম, বলতে গেলে দেখিই না, সেদিন হাতে সময় ছিল, ভাবলাম যাই টিভি দেখি। হলের টিভি রুম, শেষের সারিতে একটা ফাঁকা চেয়ারে বসে পড়লাম, পাশে বসে ছিল কয়েকজন জুনিয়র মেয়ে, মুহিনের গান শেষ হতে না হতেই এক জুনিয়র বলে উঠল,  এসব কি? কান্না কাটির আর জায়গা পায় না?? বাংলাদেশ হুজুগে স্বাধীন হয়ছে... এর জন্য আবার কান্নাকাটি!

 

কথাটা শোনা মাত্র, আমার হৃদয়টা গুমরে উঠেছিল কষ্টে, যন্ত্রনায়। এই মেয়েটির পাশে বসে আছি,  ঘৃনায় নিজেকে অশুচি মনে হচ্ছিল, হয়ত এটা আমার আবেগের বাড়াবাড়ি ছিল। আমি মেয়েটির দিকে তাকালাম, মেয়েটিও আমার দিকে তাকাল, কিন্তু আমি ওকে কিছু বলতে পারছিলাম না, রুচিতে বাঁধছিল। আমি কাউকে বোঝাতে পারব না, আমার সেই মুহূর্তের অবস্থা। সব অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমার পক্ষে কথাটাকে হাল্কা ভাবে নেয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়।।

 

কোন মতে সেই রাতটা হলে কাঁটিয়েছি, রুমমেট জানতে চেয়েছিল, আপু কি হয়েছে, ক্রোধে কষ্টে কিছুই বলতে পারিনি। পরদিন বাসায় চলে আসলাম, আব্বু কে বলেছিলাম কথাটা, আব্বু বড় আক্ষেপ করে বলেছিল, এই হল বর্তমান প্রজন্ম! আমাদের দেশ প্রেম, সময়ের প্রয়োজন এইসবই ছিল হুজুগ? টগর ভাই(আব্বুর সহযোদ্ধা) এর আত্মত্যাগ  ছিল হুজুগ? টগর ভাই এর লাশ পাকিস্তানিরা চারতলা বিল্ডিং এর ছাদ থেকে ঝুলিয়ে রেখেছিল, সাধারন মানুষকে কে দেখানোর জন্য, কি হতে পারে পাকিস্তান বিরোধীতার পরিনতি! উনার পরিবারের ওপর চালিয়েছিল অবর্ননীয় অত্যাচার, শেষ পর্যন্ত টগর ভাই এর বাবা জীবন বাঁচানোর তাগিদে অস্বীকার করেছিলেন সন্তান টগরকে, টগর তার ছেলে নয়! এসব ছিল হুজুগ? বলতে বলতে আব্বু উত্তেজিত হয়ে পড়ছিলেন, আব্বুর চোখে ছিল অপিরিসীম কস্ট, আব্বু উচ্চ রক্তচাপের রোগী, আমি আব্বুকে শান্ত করার জন্য চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু আব্বু শান্ত হতে পারছিলেন না কিছুতেই, আমার ভয় করতে শুরু করল, আব্বু বলে যাচ্ছিলেন, কতদিন অ্যাম্বুশ  এর মুখে পড়ে জীবন ফিরে পাওয়াই অবাক হয়েছি, নির্ভয়ে এক গ্লাস পানি খাওয়ার জন্য মাইল এর পর মাইল দৌড়েছি, কানের পাশ দিয়ে গুলি ছুটে গেছে, কতদিন পাকিস্তানিদের পিছু হটিয়ে দিয়ে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে  আনন্দে উল্লসিত হয়েছি! এইসব ছিল হুজুগ!

 

 আব্বুর কাছে এই গল্পগুলো বহুবার শুনেছি, তবু বারবার শুনতে চেয়েছি, আর প্রত্যেক বার অনুভব করেছি, কত কষ্টের বিনিময়ে আমরা এই দেশ পেয়েছি। একজন মুক্তিযোদ্ধার  মেয়ে হিসেবে গর্বে আমার হৃদয় ভরে যায়, মাঝে মাঝে আফসোস হয় , আমি কি আমার বাবার মত এ দেশকে কিছু দিতে পারব? কোনদিন কি পারব নিজেকে এমন ভাবে উসর্গ করতে? কোনদিন কি পারব এমনভাবে দেশকে ভালবাসতে!!! আমার বাবা আমার গর্ব, বাংলাদেশ আমার অহঙ্কার! আমি বাংলাদেশী, পুরোপুরি বাঙ্গালী এক মেয়ে, এটা বিশ্ববাসীর কাছে আমার গর্বিত পরিচয়, কষ্ট শুধু একটাই,  ভেবেছিলাম ১৯৭১ এর পর হয়ত আস্তে আস্তে এদেশ থেকে পাকিস্তানি দালাল গুলো নিঃশেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আমার ধারনা ভুল, ওরা এই প্রজন্মের মাঝেও বিঃশ্বাসঘাতকতার বীজ ছড়িয়ে দিয়েছে! স্বাধীনতার ৩৬ বছর পরেও ওই কীট-পতঙ্গ গুলোর অস্তিত্ব আমাদের মেনে নিতে হচ্ছে!

 

 

 

 

 


মন্তব্য

জাহামজেদ এর ছবি

এই প্রজন্মের মাঝেও বিঃশ্বাসঘাতকতার বীজ ছড়িয়ে দিয়েছে! স্বাধীনতার ৩৬ বছর পরেও ওই কীট-পতঙ্গ গুলোর অস্তিত্ব আমাদের মেনে নিতে হচ্ছে!

যারা বাংলাদেশ চায়নি, তারাও এখন বাংলাদেশের হাওয়া বাতাস খেয়ে বাঁচে, আর তাদের সন্তানরাও এই হাওয়া বাতাসেই বড় হচ্ছে। তাদেরকে আমরা পারিনি আমাদের মতো গড়ে নিতে, আমরা অন্তরে দেশকে ধারণ করেছি, তারা করেনি, কারণ, তারা জন্মের পর থেকেই শুনে আসছে বাংলাদেশের প্রতি প্রতি বিষোদগার, আমরা ঘরের ভিতরেই শত্রু পুষছি, আর নষ্ট বীজ থেকে খুব কম সময়ই ভালো ফসল হয় !

এসব কি? কান্না কাটির আর জায়গা পায় না?? বাংলাদেশ হুজুগে স্বাধীন হয়ছে... এর জন্য আবার কান্নাকাটি!

মুহিন ছেলেটার গান কোনোদিন দেখিনি, কারণ এইসব স্টার হান্টিং প্রোগ্রামগুলো কমই দেখা হয়। তারপরও বলতে হচ্ছে, এই ছেলেটার কান্না হয়তো সেদিন ছড়িয়ে গেছে অনেকের মনে, হয়তো আপনার মনেও, তাই ডায়েরীতে লিখে রেখেছিলেন। এই আবেগটা এভাবেই মুহিনের কাছ থেকে আপনার কাছে, আপনার থেকে আমাদের কাছে, একটা নষ্ট বীজ কি করে রুখবে লাখো সন্তানের কান্না ?

সুযোগ নাই, থাকলে পোস্টে পাঁচতারা দিতাম।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

পাশের মেয়েটাকে ধরে একটা বামচটকানা দেয়া উচিৎ ছিলো
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

হাসিব এর ছবি

পোস্ট ঠিকাছে। তবে, পোস্টে আত্মপরিচয়ের যে সংকটের কথা একাধিকবার বললেন সে বিষয়ে ভিন্নমত রাখি। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ আত্মপরিচয় বিষয়ে ওয়াকিবহাল ছিলো বলেই বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র আজকে।

নীল রোদ্দুর এর ছবি

আমাদের বাঙ্গালীত্ব বোধ চিরদিনই ছিল। এই খানে আমাদের সাথে আমাদের পূর্বপুরুষদের কোন তফাত নেই। কিন্তু যে অখন্ড বাংলায় বাঙ্গালী সংস্কৃতি ছিল, একি ভাষায় কথা বলা, একই রকম পোষাক পরা, একই গানে উচ্ছসিত হওয়া, এইসব ছিল, সেই অখন্ড বাংলা ৪৭ এই স্যার সিরিল র‌্যাডক্লিফের কসাইখানায় দুইটুকরো হয়ে গিয়েছিল। আর সেই সুযোগেই পাকিস্তানীরা বাংলা প্রদেশের এই খন্ডাংশে জোর করে পাকিস্তানী জাতীয়তা বোধ আরোপ করতে চেয়েছিল। আজন্ম আদ্যোপান্ত বাঙ্গালীদের কোনভাবে সেই পথে নিতে পারেনি বলেই, সমগ্র ভারতে কেবল মাত্র আমরাই আমাদের নিজস্ব জাতীয় পরিচয় অর্জন করে নিতে পেরেছি। বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ ছাড়াও আরো কয়েকজায়গায় প্রচলিত থাকলেও আমরাই রক্ত দিয়ে এই ভাষায় কথা বলার দাবী প্রতিষ্ঠিত করেছি। আজ সারা বিশ্বের কারোর আমাদের দেশ, আমাদের ভাষা, আমাদের সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার সুযোগ নেই। আমরা অনুন্নত হতে পারি, কিন্তু বাংলা ভাষা আমাদের, বাংলাদেশ আমাদের। আমরা কেবল আমাদের স্বকীয় পরিচয়েই পরিচিত। আফসোস শুধু এটুকুই, বিশাল বাংলা প্রদেশের একাংশ, আমাদের মত বাঙ্গালীত্ব বোধের গৌরবে এমন স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার পায়নি। তারা ভারতের আরও অনেক জাতির মত, প্রদেশের মত একটা অংশ হয়েই থাকার অধিকার পেয়েছে কেবল।

আর আরেকটা আফসোস, আমাদের মাঝে সেই কীট-পতঙ্গ গুলো এবং তাদের সন্তানেরা, যাদের আমরা আমাদের মত করে বাংলাদেশের উত্তরাধিকার বলে ভাবতে শেখাতে পারিনি, তাদের সাথে নিয়েই আমাদের বাস করতে হয়। তারাও আমাদের মাঝেই নিঃশ্বাস নিচ্ছে, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নাগরিক সুবিধা নিচ্ছে, কিন্তু এখনও বিহারীদের মত এদেশকে আপন বলে ভাবতে পারে না। .
--------------------------------------------------------
শিশির ভেজা ঘাষ, ভোর বেলা যার ডগায় জমে থাকে একবিন্দু মুক্তো, হাসে মুক্তোটা, ঠিক শিশুর মত করে...

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

আবির [অতিথি] এর ছবি

আজ ফেসবুকে এক পাকিস্তান ভক্ত তার প্রিয় পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ডিফেন্ড করতে গিয়ে ১৯৭১ সম্পর্কে অবলীলায় লিখে দিলো "আমার জন্মের আগে যা হয়েছে তা নিয়ে আমার ভাবার দরকার বা ইচ্ছা কোনটাই নেই".......এসব দেখতে দেখতে আজ আর অবাকও হতে পারি না; কেবল ভাবি, এ কাদের সাথে বাস করছি আমরা!!!!

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম্‌ম্‌, ফেসবুকে "ডিসলাইক" বাটনের সাথে একটা "থাপ্পড়" বাটন এর জন্যও দাবি জানান দরকার।

-হিমিকা/শিশিরকণা- (@মডু- নিক বদলাইতে চাই চোখ টিপি
(amihimi@gmail.com)

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

ভালো লাগলো্

তারা দেবার সুযোগ নেই। এখানে পাঁচতারা দিয়ে গেলাম।

*****

অম্লান অভি এর ছবি

@নীল রোদ্দুর ফেসবুকে লেখাটার লিংক দিলাম।

@জাহামজেদ ধন্যবাদ আমরা সেইসব কীট বেশষ্টিত হয়ে আছি

@সিমন কার্যকরণে সম্ভব হয় না এমন প্রতিউত্তর দেয়ার। কারণ আমরা ইতি মধ্যে পার করেছি অনেক সময় প্রতিবাদের যখন প্রতিবাদ হয়নি। হয়তো সেই সব না প্রতিবাদি মানুষ গুলো যাকে সহনশীলতা মনে করেছে আজ তাই অসহনীয় হয়ে গেছে।
আমার ছোটবেলার শহর। দিনাজপুর। সম্প্রীতি আর সহবস্থানের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। স্থান শহীদ মিনারের মোড়, বালুবাড়ী সন সম্ভবত: ৮৭-৮৮ হবে। প্রাত: ভ্রমণ সেরে মাঝ বয়সি মানুষ গুলো চায়ে ওম নিতে নিতে গল্প করছে। নতুন যোগ দেয়া একজন ভ্রমণকারী তিনি বৃহত্তর নোয়াখালীর হবে। চাকরী সূত্রে নতুন বদলী হয়ে এসেছেন। সেই আসরে সম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধ কটাক্ষ করে কথা বলেছিলেন। শীতের প্রথম সকালে অন্য একজন ভ্রমণকারী সজোড়ে তাকে একটি চড় বসিয়ে ক্ষান্ত হননি শুনেছি তাকে বদলিও করেছিলেন। (যিনি মেরেছিলেন তিনি একজন শহীদ এর ভাইছিলেন।)
সকালের সেই ঘটনাটি খেলার মাঠে আবু ভাই আর খোকন ভাই আমাদের শুনিয়েছিল। সেই সব প্রতিবাদ আর সততা উচ্চারণ শুনেও বড় হয়ে আমরা এখন আপোস করতে করতে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েছি। তাই প্রতিবাদ করা সম্ভব হয় না তার চেয়ে স্থান ত্যাগ করেই নিজেকে বাঁচাই কষ্টের হাত থেকে। প্রতিবাদ করলে আমাদের অসহিষ্ঞু আখ্যা দেয়া হবে। হায়!

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

অতিথি লেখক এর ছবি

লাইক!

আমরা বড় বেশি ভদ্র। সব জায়গায় এইরকম চড় খাইতে থাকলে এরা একসময় রাস্তা মাপবে। নতুন আরেকটা ভেক ধরবে। আফটার অল , এরা তো সুবিধাবাদী ছাড়া কিছু না।
- হিমিকা-
(amihimi@gmail.com)

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

মিস নীলরোদ্দুর আপনার লেখার সঙ্গে সহমত।

শিরোনামটি বেদনাদায়ক। সূর্যসেন-প্রীতিলতা-সিধু-কানু-শেরইবাংলা-রফিক-জব্বার-বরকত-সালাম-ভাসানী-সোরোয়ার্দী-মুজিব-তাজউদ্দীন এরা কেউ হুজুগে লোক ছিলেন না, এরা বাংলার মানুষকে মুক্ত করতে চেয়েছেন,সুভাষবোস-চিত্তরঞ্জন-সোরোয়ার্দীর চেষ্টা ব্যর্থ হ ওয়ায় পশ্চিম বঙ্গের বাঙ্গালীরা কলকাতায় হিন্দী বণিকদের উপনিবেশে নিজভূমে পরবাসী,সেই তুলনায় ঢাকায় বাঙ্গালী সংস্কৃতি অনেক মুক্ত। কারণ হাজার বছরের মুক্তিসংগ্রামের ফিনিশিং দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু,তার সতীর্থ খেলোয়াড়দের নিয়ে। আমজনতা থেকে নজরুল-মনসুর-কামরুজ্জামান হয়ে তাজউদ্দীনের পাস থেকে গোল করলেন অধিনায়ক মুজিব। ম্যারাডোনা গোল দিয়েছিলেন ঈশরের হাত দিয়ে,মুজিব দিয়েছিলেন মুক্তির অমর কবিতা দিয়ে,৭ইমার্চ-বাঙ্গালীর মুক্তির আগুনমুখো শব্দগুলো এক বিদ্রোহী কবির মুখ থেকে মুক্তির আগুণ হয়ে ছড়িয়ে যায় অযুত আমবাঙ্গালীর শরীরে,তখন পতাকা আর মানচিত্র ছিনিয়ে নেবার জন্য দরকার ছিল,তিরিশলাখ রক্ত। তারপরেও বলবেন এটা হুজুগে পাওয়া মুক্তি। যদি হুজুগ হয়েও থাকে, আরেকবার সেই মুজিবীয় মুক্তির হুজুগ দরকার,তাজীয় ঋজুতা দরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে বাংলাদেশকে সাপ এবং শাপমুক্ত করতে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনি বলেছেন,

সুভাষবোস-চিত্তরঞ্জন-সোরোয়ার্দীর চেষ্টা ব্যর্থ হ ওয়ায় পশ্চিম বঙ্গের বাঙ্গালীরা কলকাতায় হিন্দী বণিকদের উপনিবেশে নিজভূমে পরবাসী,

বাংলাভাগ ঠেকানোর শেষ চেষ্টা করেছিলেন শরৎবোস আর আবুল হাশিম।



অজ্ঞাতবাস

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

আমি যাদের কথা লিখেছি এঁরা ভারতীয় রাজনীতিতে শক্তি না হারালে রাডলিফ গায়ের জো্রে বাংলা ভাগ করতে পারতেন না। পশ্চিম বঙ্গ ফেডারেল সরকার হিসেবে দিল্লীর চেয়ে ঢাকার সঙ্গে ভালো থাকতে পারত। যাইহোক পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে আমরা ভালো আছি। আপনি আরো স্পষ্ট করতে পারেন ব্যাপারটা কারণ সবিতো পড়ে বা শুনে জানা।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

সাবিহ ওমর এর ছবি

উলটা, পাকিস্তানই হয়েছিল হুজুগে, বাংলাদেশ না। বাংলাদেশ তো বহুত পুরান 'দেশ'। সেদিন আলেক্সান্ডার ডুমার ব্ল্যাক টিউলিপ পড়ছিলাম, সেখানে নায়ক সিংহল আর বাংলার টিউলিপ নিয়ে ফ্যান্টাসাইজ করছিল। পাকিস্তান বরং শিকড়ছাড়া, হুজুগে তৈরি নেশন। চাচা কাহিনীতে মুজতবা আলি লিখেছিলেন, "বাংলা প্রদেশ না, বাংলা দেশ দেশ।" সেজন্য আমাদের আর পাঁচটা প্রদেশের সাথে মিলে ইন্ডিয়ান নেশন বা পাকি নেশন বানানোর কোন দরকার ছিল না। কিন্তু ঐ যে, হুজুগ... মুসলিম নেশন...আরে বাবা এতই যদি মুসলিম নেশন বানাতে হয়, তাহলে সৌদি আরবের সঙ্গে মার্জ হয়ে যাও না কেন? ইস্ট আরব, ওয়েস্ট আরব, কেমন মজা?

নীল রোদ্দুর এর ছবি

পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল জিন্নার ঘাড় ত্যাড়া হুজুগে। তাদের তো আসলেই কোন স্বতন্ত্র জাতীয়তা বোধ নেই। বাংলাদেশ বৃটিশের অধীনে থাকুক, ভারতের সীমান্ত বন্দী থাকুক আর অনাহুত পাকিস্তানীদের শোষনে থাকুক না কেন, বাঙ্গালী জাতি চিরকালই স্বতন্ত্র। ইতিহাস সাক্ষী!

সাবিহ, তোমার কমেন্টে হাজারবার লাইক মারতে ইচ্ছা করছে! এমন খাঁটি কথা, খুঁজে পাওয়া যায় না সহজে!.
--------------------------------------------------------
শিশির ভেজা ঘাষ, ভোর বেলা যার ডগায় জমে থাকে একবিন্দু মুক্তো, হাসে মুক্তোটা, ঠিক শিশুর মত করে...

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

জাহামজেদ এর ছবি

আরে বাবা এতই যদি মুসলিম নেশন বানাতে হয়, তাহলে সৌদি আরবের সঙ্গে মার্জ হয়ে যাও না কেন? ইস্ট আরব, ওয়েস্ট আরব

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

নাজনীন খলিল এর ছবি

ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।

শুভেচ্ছা।

অতিথি লেখক এর ছবি

আরে বাবা এতই যদি মুসলিম নেশন বানাতে হয়, তাহলে সৌদি আরবের সঙ্গে মার্জ হয়ে যাও না কেন? ইস্ট আরব, ওয়েস্ট আরব

একদম এক নম্বুরি একটা কথা!! পাকিস্তান দেশটা কবে সেলফ ডেস্ট্রাক্ট করবে সেই অপেক্ষায় আছি।

নীল রোদ্দুর,
চটকানা না হোক, মেয়েটাকে একটা শক্ত ঝাড়ি দেয়া উচিত ছিল। আপনার জায়গায় আমি থাকলেও হয়ত আপনি যা করেছেন তাই করতাম, কিন্তু সেটা ভুল হতো। আমরা যদি ঘৃণায় মাথা নিচু করে চলে যাই, এরা তখন মাথা উঁচু করে গলাবাজি করার সাহস পায়। যে যা ভাবে ভাবুক, সেদিন প্রতিবাদ করলে আজকে আত্মগ্লানিতে ভুগতাম না। আপনার লেখাটা পড়ার পর তাই প্রতিজ্ঞা করলাম, এরপর আমার সামনে কেউ এমন মন্তব্য করলে একেবারে ধুয়ে দিব, কোন ছাড়াছাড়ি নাই। তেলাপোকা ডিম থাকতে থাকতে ধ্বংস করা ভালো।

-শিশিরকণা-
(amihimi@gmail.com)

জাহামজেদ এর ছবি

তেলাপোকা ডিম থাকতে থাকতে ধ্বংস করা ভালো

কথাটা ভালোই বলেছেন। তবে এই নষ্ট বীজের ফসলেরা তেলাপোকার চাইতেও খারাপ ।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

শিমুল এর ছবি

পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল জিন্নার ঘাড় ত্যাড়া হুজুগে।

এই কথাটি ইতিহাসের এক পরিহাস।ভারতবিভাগে জিন্নার দায় যতটা, তার চেয়ে বেশি গান্ধী এবং নেহেরুর।

অমিত এর ছবি

আমি মোটামুটি এই ধরণের একটা কথাই বলতে চাচ্ছিলাম

অদ্রোহ এর ছবি

আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

কদিন আগে খোমাখাত্য এক অনুজের হকিকত,"পাকিস্তান সাপোর্ট করলেই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা হয়, এটা কোন ধরনের যুক্তি? খেলার সাথে রাজনীতির তো কোন সম্পর্ক নেই। "

সবচে বেশি লেগেছিল, যখন ঐ হকিকতে অনেক বীরপুঙ্গব লাইক মেরেছিল। আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ,দেওয়ার মত এর চেয়ে বড় পরিচয় আমার নেই, থাকবেওনা কখনো।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

অমিত এর ছবি

আপনার ঐ অনুজকে জিজ্ঞেস করেন তো বাংলাদেশ-ইন্ডিয়ার খেলায় কাকে সাপোর্ট করে।বুঝতেই পারছেন, খেলার সাথে রাজনীতি, অর্থনীতি, দেশ, জাতি কোনও কিছুর সম্পর্ক নাই।

কী কমু [অতিথি] এর ছবি

নিজের জন্মপরিচয় অস্বীকার করে কারা? যাদের নিজের জন্মপরিচয়ের ঠিক নেই। আমরা আবহমানকাল থেকেই বাঙালি, তা দেশের নাম ব্রিটিশ ভারত হোক, পাকিস্তান হোক আর বাংলাদেশ হোক। বাঙালি হয়েও যারা বাঙালির নিজস্ব দেশ বাংলাদেশ হওয়ায় মনোপীড়ায় ভোগে, এর জন্মপ্রক্রিয়া তথা মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে উল্টোপাল্টা বলে, তাদের খুব সম্ভবত জন্মের ঠিক নেই। তারা অবলীলায় এসব কথা বলতেই পারে। এসব কথার জবাব দেওয়ার দরকার নেই, শুধু নিশ্চিত জানবেন, এরা বেজন্মা। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে তাদের বেজন্মা পরিচয়টাও জানিয়ে দিতে পারেন।

আলমগীর এর ছবি

কথা ঠিক। আরেকটা হুজুগে কয়টারে দোলনায় চড়াইতে চাই এবার।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কথা ঠিক। আরেকটা হুজুগে কয়টারে দোলনায় চড়াইতে চাই এবার।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রণদীপম বসু এর ছবি

এটাই অসহ্য বাস্তবতা ! নিজের গালেই নিজেকে থাপড়াতে হয় অক্ষম যন্ত্রণায় !

কী আর করা, ওই মেয়েটি তো জানে না বা কেউ বলেনি যে ওর জন্ম হয়েছে হুজুগে, বিশ্বাস না করলে ওর বাবা-মাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারে। কিন্তু এই দেশটা হুজুগে স্বাধীন হয় নি।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

দেশ এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যাপক (!!!) চিন্তাভাবনা করে এই রকম লোকজন আছেন ২ শ্রেণীর। একদলের কথা নীল রোদ্দুর লিখেছেন। ইনারা যে দেশের আলো, হাওয়ায় বড় হয়েছেন, সেই দেশকে ভাবেন হুজুগের ফসল কিংবা আওয়ামী লীগ তথা শেখ মুজিবের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাসের পরিণতি। এরা একটি বার চিন্তা করেনা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের উত্থান কোন পীরের স্বপ্নে পাওয়া ঔষধ নয়। ১৯৪৭ এর পর থেকে একটু একটু করে এই জাতীয়তাবাদের উত্থান। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে শুরু করে শেখ মুজিব পর্যন্ত হাজারো দেশপ্রেমিক এই জাতীয়তাবাদের রুপকার। এতো বিশাল সময়ের পরিক্রমায় এবং হাজারো বাঙালীর রক্তে পাওয়া এই দেশ কিভাবে তাদের কাছে "হুজুগ" হয়ে যায় এটা একটা জটিল গবেষণার বিষয়। এই গোত্রের লোকজনই সম্ভবতঃ দেশের উন্নয়ন এবং হাজারো সমস্যার কথা বলে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে হইচই না করার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
অত্যন্ত সুন্দর লেখা। আপনার জুনিয়রটিকে একটি চড় মেরে বলে দিতেন "হুজুগে মেরে দিয়েছি ভাই, চড় মারার হুজুগ চলছে তো তাই।"
=======================
বালক ভুল করে নেমেছিল জলে

নীল রোদ্দুর এর ছবি

আমি আসলে এই ব্যাপারটা নিয়ে শঙ্কিত। যুদ্ধপরাধীদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অপরাধের হদিস আছে, আমরা তাদের চিহ্নিত করতে পারছি, বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবার জন্য আন্দোলন করতে পারছি। কিন্তু যারা আমাদের অস্তিত্বের মাঝে মিশে থেকে আমাদেরই এইভাবে আজ্ঞাত করে যাবে, জাতীয় ঐক্যে বিভেদ সৃষ্টি করবে, সেইসব নীরব ঘাতকদের আমরা সামলাবো কোন পথে? সচেতন হওয়ার সময় এখনি। .
--------------------------------------------------------
দেখা হবে সত্য, সুন্দর আর মুক্তচিন্তার আলোকে;
যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, দেখা হবে বিজয়ে।

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।