• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

ঢাকা-চেংগ্নী-নাদেংকল-বিরিশিরি-ঢাকাঃ বাউণ্ডুলের তীর্থযাত্রা - দ্বিতীয় কিস্তি

জুয়েল বিন জহির এর ছবি
লিখেছেন জুয়েল বিন জহির [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৩/১০/২০০৮ - ৭:২৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শেরেনজিং -ওয়ালজানদের খপ্পর থেকে বেরুতে বেরুতে সকালে একটু বেশিই সময় লাগল। পরাগ আমার অনেক আগে ওঠেই বারান্দায় বসে বসে বাড়ির লোকজনদের সাথে আলাপ জমিয়ে ফেলেছে। বিছানা ছেড়ে আমরা তিনজন চলে গেলাম চেংগ্নী গাঙে। উহ! নো ম্যানস ল্যান্ডে পা রাখতেই উত্তরের বিশাল পাহাড়রাজির সুপ্রভাত সম্ভাষণ ভাষায় প্রকাশ করবার মতন নয়। মুগ্ধতার ঘোর নিয়েই আস্তে আস্তে ছড়ায় নেমে এলাম। মনে মনে বেশ হিংসে হচ্ছিল-এত সুন্দর পাহাড়গুলো কেন বাংলাদেশ সীমানায় পড়ল না! বিএসএফ ক্যাম্পে সীমান্ত রক্ষীদের আনাগোনা চোখে পড়ছে। কিন্তু সেটা মনের মধ্যে বিন্দুমাত্র ভয়ের কিছু তৈরি করছে না। প্রকৃতির এমন সুন্দর হাতছানিতে বুলেট হজম যেন একেবারেই নস্যি একটা ব্যাপার। পাহাড়ি ঝরনার স্বচ্ছ-শীতল পানিতে একেবারে বাচ্চাদের মত লুটোপুটি খেলাম। গাঙের পূর্ব পাশে মেসোকে(সোহেল-র শ্বশুড়) দেখলাম শীতকালীন সবজি লাগানোর জন্য মাটিতে কোদাল চালাচ্ছেন। গোসল সেরে নাস্তা করা হলো মিচেং খাড়ি আর নাখাম ভর্তা দিয়ে। সোহেল জানাল-সুপ্তির তৈরি নাখাম ভর্তার স্বাদের কোন তুলনা হয় না। জিভে নেওয়ার পর ওর কথাটা এতটুকুও মিথ্যে মনে হলো না। সুপ্তির দিকে তাকিয়ে বললাম‌-‘সত্যিই ননো (ছোট বোন), অসাধারণ!’ সুপ্তির মুখে লাজুক-নিষ্পাপ হাসি। ভোজন পর্ব খতম হলে আমরা বেরিয়ে পড়লাম রোদের তেজ উপেক্ষা করেই। সুপ্তি রাকসামদের পারিবারিক সূত্রে পাওয়া পাহাড় ডিঙিয়ে হাটতে হাটতে পূর্ব দিকে ছড়ার পার ধরে এগুতো লাগলাম। পাহাড়ি ঝরনার স্রোতধারায় দুই মান্দি তরুনী কুনি জালে মাছ ধরায় ব্যস্ত। চোখে চোখ পড়তেই বয়সে বড় তরুনীটি যেন কিছুটা লজ্জা পেল। পরাগের দিকে তাকালাম মুচকি হাসি দিয়ে। ইস্! পরাগ ছড়ায় নেমে সুকৃতির সাথে যদি ঐ অসাধারণ রেরে-টা গাইতে পারত এখন-

পরাগ: খাউই সাৎনা রে’এংআ
মাংশা মান্না লাউয়া না
ওয়াল জাসেং গিজানিন
জাংগি সারা কাউয়ানা...

[ খাউই হিচতাম গিয়া আমি / পাইলাম এক রাউগ্যা মাছ / বিয়ানবেলার আগেই পাতলাম / কাউয়ার লাগি জাংগি গাছ]

সুকৃতি: ওয়াল জাসেং গিজানিন
জাংগি সারা কাউয়ানা
চিংঙেই রেরে মান্নাখো
রন’জা মাইজা নাংসনা

[বিয়ানবেলার আগেই পাতছ / কাউয়ার লাগি জাংগি খান / আমার জানা রেরে গুলান / কিয়ের লাইগা বিলাইতাম।]

পরাগ: রেরে খালনা হখাত্তা
সা হন্না বাইগ্য খো
রেবাবত্তে সেইফাংছা
খালবো আংনুং রেরে খো

[ রেরে গাওনের লাইগা আইছ / এমুন ভাগ্য দিল কে / আরো কাছে আইয়ো না
রেরে গাইবাম তোর লগে]

আমি আর সোহেল না হয় প্রতিবার হারেরে...হারেরে বলে দোহার দিতাম। যাক,সোহেল বলল-ওটা সুপ্তির বড় বোন সুকৃতি। সুকৃতির বিয়ে হয়নি। গতরাতে বা আজ সকালে সুকৃতির সাথে বাড়িতে কোন আলাপ-পরিচয় হয়নি। ধান ক্ষেতের আইল ধরে এক সময় চলে এলাম চপলা মাসির বাড়িতে। পরাগের মোবাইলটা নিতে হবে। বাড়ির বাইরে তিন-চার বা তারও বেশিদিনের জন্য কোথাও বের হলে মোবাইল নিয়ে আমার তেমন কোন আগ্রহ থাকে না। তাছাড়া মোবাইলে ব্যালান্স শেষ হয়ে গিয়েছিল গত রাতেই, চার্জও নেই। সোহেল জানাল লেংগুড়া বাজার ছাড়া আলাপ কার্ড পাওয়া যাবে না। দশ কিমি হেটে কার্ড কেনার তেমন কোন জরুরত খুজে পেলাম না। যদিও রিমি কিছুক্ষণ পরপরই সোহেলের মোবাইলে কল দিয়ে আমার খোজখবর নিচ্ছিল। আমাদের দেখেই চপলা মাসি চা বানানোতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। এই বিশাল বাড়িতে মাসি একা। মেসো মারা গেছেন বছর খানেক হয়। মাসি স্কুল শিক্ষক, মেসোও তাই ছিলেন। আশপাশের বাড়ির সকল জোয়ান-বুড়োদের সার্বক্ষণিক আনাগোনায় নিঃসন্তান মাসির সময় মন্দ কাটেনা। মাসির আন্তরিকতার কাছে পরাস্ত হয়ে কিছুক্ষণ বসতে হলো। পরাগ রিছিলের এক মামা জয়রামকুড়া থেকে এই বাড়িতে জামাই এসেছেন। উনি আমাদের আলাপের সঙ্গী হলেন। মাসির বারান্দাতে ঝোলানো আছে পি এ সাংমার একটা বাধাই করা পোস্টার। পোস্টারে পি এ সাংমার হাস্যজ্জ্বোল একটা ছবি, পাশে তার নির্বাচনী প্রতীক ‘হাত’, একেবারে নীচে লেখা তার দল- ‘ন্যাশনাল কংগ্রেস’। মান্দিদের মধ্যে উনিই প্রথম ভারতের স্পিকার নির্বাচিত হয়েছিলেন। পি এ সাংমা বর্তমানে মেঘালয়ের এমএলএ আর উনার ২০ বছরের মেয়ে এমপি। বাংলাদেশের মান্দিরাও পি এ সাংমাকে সম্মানের চোখে দেখে থাকেন; তিনি যে হাবিমারই সন্তান ছিলেন। দেশ স্বাধীনের পূর্বেই পি এ সাংমার পরিবার মধুপুরের কামারচালা এলাকা থেকে গারো হিলসে পাড়ি জমিয়েছিলেন। সে যাই হোক, মাসির হাতের চা খেয়ে আমরা দক্ষিণের পথ ধরে চলে এলাম মিন্টু চাম্বুগংদের বাড়ি। মিন্টু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। ছুটিতে বাড়িতেই আছে। ঘরে সবাই ঈদের অনুষ্ঠান দেখছে বিটিভিতে। ওর মা-বোন সবার সাথে পরিচিত হলাম। ওদের বাড়িতে আড্ডা মেরে আবার বেরিয়ে পড়লাম। সোহেলই সব ঠিক করে দিচ্ছে আজ আমরা কোথায় কোথায় যাব। এখানে আসার আগে সোহেল বারবার তাগাদা দিয়েছে যাতে কোন গবেষণা-ফবেষণা বা কাজ-টাজ নিয়ে ওর এখানে না যাই; ওর এখানে যেন আসি শুধু বেড়াতে। আমরাও অনেকটা সেরকম চিন্তা করেই এসেছি।

দুপুরে ফইট্টার (খরেগাশ) মাংস দিয়ে ভাত খেয়ে ক্ষাণিক বিশ্রামের পর আবার বেরিয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ আগে খটখটা রোদ থাকলেও এখন আকাশ মেঘলা। আমাদের সাথে এবার সুপ্তির এক দাদাও বেরিয়েছেন। বাংলাদেশ সীমানা পার হয়ে আমরা চেংগ্নী গাঙে নেমে পড়লাম প্যান্ট গুটিয়ে। বাম পাশের খাড়া পাহাড়ের গন্ধ গায়ে মাখতে মাখতে গাঙ দিয়ে পনের-বিশ মিনিট দক্ষিণে হেটে আমরা আবার বাংলাদেশ সীমানায় কুনকোনা এলাকাতে প্রবেশ করলাম। কুনকোনায় পৌছাতেই হালকা বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। আমরা যাচ্ছি গোপালবাড়ি। হাটতে হবে সোজা পূবে-প্রায় ৪/৫ কিমি। হালকা বৃষ্টির তাড়া খেয়ে আমরা চলার গতি বাড়িয়ে দিলাম। খাড়া পাহাড়ের গা ঘেষে আমরা কখনো বাংলাদেশ, কখনো ভারতে সীমানা দিয়ে ঝুম বৃষ্টির আগেই পৌছে গেলাম সেখানে। ঝুম বৃষ্টির বাগড়া খেয়ে হাজং পাড়ায় রুহিদাস হাজং এর বারান্দার লম্বা টুলে বসে পড়লাম। বাড়ির কর্তা বাজারে। গিন্নী মহারানী হাজং(৬৫) আমাদের দেখে চলে এলেন সামনে। সোহেলের এক বন্ধু আছে এ পাড়াতে। মহারানী হাজংই জানালেন সে বাড়িতে নেই। বৃষ্টির তেজ আছে বেশ ভালোই। হাজং বাড়ির নিকোনো উঠোন, বৃষ্টি, তুলসীতলা, কুয়োতলায় হাজং বধুদের ব্যস্ততা সবমিলিয়ে এক শান্ত-সৌম্য পরিবেশে মহারানী তার অসাধারণ কারুকার্যময় পানের বাটা নিয়ে এলেন আমাদের সামনে। জাতা হাতে বসে গেলেন সুপারি কাটতে। পানের রসে মহারানীর সাথে ভাব বেশ ভালোই জমলো আমাদের। বৃষ্টি একটু কমে এলে সোহেলের তাড়ায় হাটতে হাটতে এবার চলে এলাম নাদেংকল। গোপাল বাড়ির একেবারে লাগোয়া এই এলাকাটা মান্দি অধূষ্যিত। সুরেন্দ্র নকরেক এর বাড়িতে পৌছানো মাত্র আবারো বৃষ্টি। সোহেল জানাল এই বাড়িতেই সে চু রান্না করে রেখেছে আমাদের জন্য। সুরেন্দ্র বাবু ব্যস্ত হয়ে পড়লেন এন্তেজামে। গোপালবাড়ি থেকে কেনা শেখ সিগারেট ফুকতে ফুকতে একসময় বৃষ্টি পড়া বন্ধ হয়ে গেল। পরাগ, সোহেল, আমি বেরিয়ে পড়লাম সেবাস্টিন রেমার বাড়িতে। মান্দিদের অহংকার সেবাস্টিন রেমা এখন কিশোরগঞ্জের থানা নির্বাহী অফিসার। বেশি দূর হাটতে হলো না। উত্তরে একটু আগালেই উনার বাড়ি। বাড়ির ঠিক পূর্ব দিকে খাড়া পাহাড়ে বিএসএফ ক্যাম্প। দুইজন রক্ষী ছাউনীতে ডিউটি দিচ্ছে। সেবাস্টিন রেমার বাবা-মা দুজনেই মারা গেছেন। ভাইয়েরা কেউই বাড়িতে থাকেন না। একমাত্র ছোটবোন অর্পা রেমা একা একাই থাকেন এই বিশাল বাড়িতে। অর্পার বয়স খুব বেশি হলে ২০/২২ হবে। মেয়েটাকে বেশ সাহসী বলেই মনে মনে খাতির করছি। অর্পা আমাদের জন্য পানি আনতে ভেতরে গেলে আমি ও সোহেল দু’জনেই পরাগকে খোচা দিলাম, বললাম এটাই হতে পারে পরাগের জন্য উপযুক্ত ঠিকানা। পরাগ মুচকি হাসছে। এই মনোরম-নিরিবিলি পরিবেশতো একজন কবির ভালো না লাগার কোনো কারণ থাকতেই পারে না। অর্পার বাড়িতে বেশ কিছুক্ষণ কাটিয়ে সন্ধ্যার দিকে চলে এলাম সুরেন্দ্র বাবুর বাড়িতে। চু ছাকা শেষ। আমরা বসা মাত্রই পান পর্ব শুরু হয়ে গেল। প্রথমেই দুইগ্লাস করে বিচ্চি। তারপরে ছাকাটা। চু বেশ ভালো হয়েছে। পরিমানও অনেক। প্রায় আধমন চালেরতো হবেই-তিনটা বড় বড় বগনা। সোহেল আমাদের জন্য এতবড় আয়োজন করে রাখবে তা আমরা চিন্তাই করিনি। পানপর্বের মাঝামাঝিতে দেখে দো এর খাজিও চলে এসেছে। খাজি পেয়ে পান করার গতি বেড়ে গেল। ইতোমধ্যে আশপাশের দু’চারজন আসরে যোগ দিয়েছেন। সুপ্তির বড় ভাইও এসেছেন। উনি পাশের বাড়িতেই থাকেন। জামাই এসেছেন এই গ্রামে। নেশা একটু বেশি হলেও আমরা তিনটি বগনা শেষ করে তবেই চেংগ্নীর পথে পা বাড়ালাম। তবে এবার পাহাড় ঘেষে নয়, নাদেংকল থেকে চেংগ্নী বাজার পর্যন্ত প্রায় দ্বিগুন দূরত্বের রাস্তা ধরে হাজার হাজার জোনাকী পোকার আলোকে পূজি করে চেংগ্নী বাজার হয়ে গ্রামে ঢুকে পড়লাম। সুপ্তি আমাদের জন্য বসে আছে তাই তাড়াতাড়া ভাত খেয়ে নিলাম। রাত অনেক হয়ে গেছে-বাড়ির সবাই ঘুমে; আমরা বারান্দায় বসে বসে আরো দুই-তিন ঘন্টা গ্যাজানোর পরে সুকৃতির সাথে পরিচিত হতে না পারার আফসোস নিয়ে বিছানায় চলে গেলাম।


মন্তব্য

মুজিব মেহদী এর ছবি

জুয়েল আপনার লেখার দুটো পর্ব পড়ে অনেক পুরানো কথা মনে পড়ে গেল।

বিরিশিরিতে প্রথম যাই ১৯৯১/১৯৯২ সালে। হাফিজ রশিদ খানের অনুরোধে তাঁর সম্পাদিত বাংলাদেশের উপজাতি ও আদিবাসী : অংশীদারিত্বের নতুন দিগন্ত-এর জন্য হাজং সম্প্রদায় সম্পর্কে একখানি নিবন্ধ রচনার মালমশলা যোগাড় করতে। এখানে বলে রাখা দরকার যে, অত কাঁচা বয়সে, এ ধরনের গবেষণার রীতিপ্রকৃতি সম্পর্কে যখন কিছুই জানি না প্রায়, তখনকার লেজেগোবরে মেথডোলজি ব্যবহার করে তৈরি ওই লেখাটা পড়লে এখন রীতিমতো লজ্জা হয়। আমার নিজের বিবেচনায় অত বড়ো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনায় আমার লেখাটিই ছিল সর্বাপেক্ষা দুর্বল। হাফিজ ভাই ওটা ছেপেছিলেন হয়ত এই বিবেচনায় যে, তাতে একটি সম্প্রদায় বেশি কাভার হয়।

যাহোক, সেবার সোমেশ্বরী পেরিয়ে ওপারে বিজয়পুর ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামে যাবার সুযোগ হয়েছিল। মতিলাল হাজং মহাশয় বেশ খাতির দেখিয়েছিলেন। তাঁর বাড়িতে আপ্যায়ন তো বটেই সোমেশ্বরী তীরের উঁচু টিলায় অবস্থিত রাণিখং মিশনে দু'রাত থাকবার ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন। ওই ভ্রমণ আমার জন্য এতই রোমাঞ্চকর হয়েছিল যে, তিনদিনে আমি মূল কাজের বাইরে নানারকম লেখায় একটা নোট খাতার প্রায় আধাআধি ভরিয়ে ফেলেছিলাম। আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অনুভূতি ধরা পড়েছিল এদিক সেদিক বন্ধুদের কাছে রাণিখং ডাকঘর থেকে পাঠানো গোটাকয় পোস্টকার্ডে।

পরে আরো বেশ কয়েকবার বিরিশিরি যাওয়া হয়েছে একা ও সবান্ধব। রফিক ভাইয়ের (রফিক আজাদ) সৌজন্যে গলাঅব্দি চু-ও হয়েছে। কিন্তু রাণিখং যেতে পেরেছিলাম আর মাত্র একবার। প্রতিবারই মেঘালয়-অধ্যুষিত গারোপাহাড় হাত ইশারায় ডেকেছে, এখন তো ভাবতে গেলেই ডাকের অনুভূতি টের পাই। কবে যে যেতে পারব আরো ভিতরে, উপরে।

পরাগ রিছিল তো আমন্ত্রণই জানায় না, কেমনে কী!

..................................................................................
দেশ সমস্যা অনুসারে
ভিন্ন বিধান হতে পারে
লালন বলে তাই জানিলে
পাপ পুণ্যের নাই বালাই।

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

জুয়েল বিন জহির এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ কিছু বিষয় শেয়ার করার জন্য। ইস্! আগে জানলে আপনাকেও সঙ্গী করার সুযোগ থাকত, তাহলে গারো পাহাড়ের ডাকে এবার অন্তত সাড়া দিতে পারতেন। পরাগতো গারো হিলসে থেকে আসতেই চাইছিল না। এক নমুলকে বেশ পছন্দ করে ফেলেছিল...আগামী কিস্তিগুলোতে সে বিষয়ে লিখব আশা করছি।

আর পরাগ রিছিল কাউকে কখনো আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছে বলে আমার জানা নেই। ওর আমন্ত্রণের অপেক্ষা না করে আপনিই উদ্যোগী হয়ে যান না। তাতে মন্দ হবে না।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বিরিশিরিতে আমার খুব সুখের সময় গেছে। বেশ কয়েকবার গেছি। প্রথম গেছিলাম বোধহয় ৯৫/৯৬-এ।

তবে আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে বিরিশিরির কিছুই দেখা হয়নি... কিছুই জানা হয়নি আমার। প্রতিবারই আমি থেকেছি বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির গেস্ট হাউজে... সারারাত অবশ্য রফিক আজাদের সঙ্গে গলা অব্দি পানেই পার হয়েছে। তবে রফিক ভাই মেঘালয়ের জিনিস আনাতেন... চু কখনো খাইনি তার সাথে। চু খাইয়েছে তারই সার্বক্ষণিক সঙ্গি আর্ণিশ মান্দা।

নাহ্... আপনার লেখা পড়ে বিরাট ঝামেলা হচ্ছে... কবে যে যাবো বিরিশিরিতে... (মনখারাপ)

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

জুয়েল বিন জহির এর ছবি

আমি এখনোতো বিরিশিরি প্রসঙ্গে কিছু লিখিনি। এই দুই পর্বেতো কেবল নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা থানাধীন চেংগ্নী ও নাদেংকল গ্রামের কথাই বলেছি। বিরিশিরির প্রসঙ্গটা শেষ কিস্তিতে থাকবে আশা রাখছি। তবে এটাও ঠিক চেংগ্নী-নাদেংকল ঘুরে আসার পর বিরিশিরি আমার মনে তেমন গভীর ভাবে দাগ কাটতে পারিনি। আগামী পর্বগুলোতে সেগুলো শেয়ার করব।

আর কালচারাল একাডেমির আর্নেশ মান্দা খুবই মজার ও ভালো মানুষ। অনেক মানুষই ওনার কথা অনেকদিন স্বরণ রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

আপনার লেখাটা মনযোগের সঙ্গে পড়ছি জহির । ভালো লাগছে ।
---------------------------------------------------------

'...এইসব লিখি আর নাই লিখি অধিক
পাতার তবু তো প্রবাহেরই প্রতিক...'

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

জুয়েল বিন জহির এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ। ভাবছিলাম পরের কিস্তিগুলা পোস্ট করব কি করব না; এখন সাহস পাচ্ছি।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

পরের পর্ব কই? মুগ্ধ পাঠকেরা অপেক্ষায় আছে...
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জুয়েল বিন জহির এর ছবি

কি যে বলেন!

আকতার আহমেদ এর ছবি

আপনার দুটি কিস্তিই পড়েছি মুগ্ধতা নিয়ে । তাড়াহুড়োর জন্য এই পর্বে মন্তব্য করা হয়নি । "পরের কিস্তিগুলা পোস্ট করব কি করব না" এই ধরনের দ্বিধার দরকার নেই । মোরশেদ ভাই যেমন বললেন - মুগ্ধ পাঠকেরা অপেক্ষায় আছে.. আসলেই !

জুয়েল বিন জহির এর ছবি

আজকেই সাহস করে পোস্ট করে দিলাম।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।