• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

নিখিলেশ বাবুর কি বাড়ি ফেরা হবে না?

ঝরাপাতা এর ছবি
লিখেছেন ঝরাপাতা (তারিখ: মঙ্গল, ০১/০৪/২০০৮ - ১০:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিখিলেশ বাবুকে নিয়ে আগেও অনেক গল্প লিখেছি। সেই গল্পগুলো কষ্টের, প্রবঞ্চনার, অমানবিকতার। যতবার লিখতে যাই ততবারই সুমনের গানের সেই কথাগুলি মনে পড়ে- "আমিও ভন্ড অনেকের মতো, গান দিয়ে ঢাকি জীবনের ক্ষত।"

খুব ইচ্ছে করে সেইসব মানুষদের গোপন-প্রকাশ্য কষ্টগুলোকে জানতে যাদের ঘাম আর রক্ত আমাদের আয়েস আর প্রাচুর্যকে নিশ্চিত করে। ইচ্ছে করে সেই কিশোর রিক্সাওয়ালা হতে যে গ্রীষ্মের প্রখর, তীব্র সূর্যকে উপেক্ষা করে আমাদের টেনে নিয়ে চলে দূর, বহুদূর, বহুদূর....। ইচ্ছে করে সেই ষ্টেশনের কুলি হতে যে সারাদিন বার্ধক্যের বোঝাকে অবহেলা করে যাত্রীদের বোঝাগুলিকে পৌঁছে দেয় গন্তব্যে। দিনশেষে ১০০ টাকা (কখনো'বা তার চেয়েও কম) নিয়ে ঘরে ফেরে যখন তার প্রতিদিন প্রয়োজন হয় ১২০টাকা। এই লেখাটিও কোন এক বঞ্চিত মানুষকে নিয়ে করা কষ্ট-বিলাস। হায় ঈশ্বর, এমনই হয়!!

১. প্রায় দু'ঘন্টা ধরে নিখিলেশ বাবু রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। আজ বৃহস্পতিবার। এইদিন লোকাল বাসে এতো ভীড় থাকে যে ওঠাই যায় না। নিখিলেশ বাবু ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকেন আর প্রতীক্ষা করতে থাকেন কখন ভীড় কমবে! তারপর তিনি বাড়ি ফিরে যাবেন! নিখিলেশ বাবুদের জীবনভর এরকম কত যে প্রতীক্ষা করতে হয় কেউ জানে না, সে প্রতীক্ষার প্রহর ফুরায় কিনা সে খবরও কেউ রাখে না . . . . .

২. যুদ্ধের পরপরই প্রাইমারী স্কুলে জয়েন করেছিলেন, আর এখন চাকরী-জীবনের প্রায় শেষ পর্যায়ে। শুরু করেছিলেন মাত্র ষাট টাকা বেতনে, সেই ষাটা টাকা বেড়ে এখন প্রায় সাড়ে সাত হাজার হয়েছে। অংকের জাদরেল টিচার হিসেবে পরিচিত নিখিলেশ বাবু এতো বছরে ও হিসেব মিলাতে পারেন না- কেন তখন ষাট টাকা দিয়ে ভালোভাবে খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকতে পারলেও এখন সাড়ে সাত হাজার টাকায় পারেন না? তাই নিখিলেশ বাবুর ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে চক্রবৃদ্ধি হারে।

৩. মা, দুই মেয়ে আর বউ নিয়ে পাঁচজনের সংসার নিখিলেশ বাবুর। মায়ের অনেক বয়েস হয়েছে, প্রায়ই অসুস্থ থাকেন। দুই মেয়ে জন্ম নেয়ার পরে অনেকেই বলেছেন আরেকটা বাচ্চা নেয়ার জন্য- না'হলে বংশের বাতি জ্বালাবে কে, শেষ বয়সে দেখ-ভাল করারও যে কেউ থাকবে না । সেই সব বংশ রক্ষায় উদ্বিগ্ন স্বজনদের কথায় তিনি একটু বিচলিত হননি। যিনি একজন শিক্ষক হিসেবে সবাইকে দুটি সন্তানের বেশি না নেয়ার জন্য আহ্বান জানান, তার পক্ষে আরেকটা সন্তান নেয়ার কথা কল্পনা করাও কষ্টকর। তার দু'মেয়ের একজন ভার্সিটিতে পড়ে, আরেকজন কলেজে। মেয়েদের জন্য তিনি তেমন কিছুই করতে পারেন না। তারা প্রায় প্রতিদিন বহু ব্যবহারে জীর্ণ বিবর্ণ জামা পড়ে ক্লাশ করতে যায়। টিফিন পিরিয়ডে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া রুটি-ভাজি খায়। বাবার কাছে তাদের কোন আব্দার নেই। শুধু তাদের প্রাইভেটের খরচ জোগাতে প্রতিমাসে হাজার আড়াই টাকা চলে যায়। পাঁচজন মানুষের খাবার, মায়ের চিকিৎসা, মেয়েদের পড়ার খরচ, যাতায়াত, আর সামাজিকতার দায় পালন করতে গিয়ে প্রতিমাসেই নিখিলেশ বাবুর বকেয়া খাতায় অংকের পরিমাণটা বেড়ে চলে। তিনি মৃদু হেসে পাওনদারকে আশ্বাস দেস, এই তো আর এক বছর, রিটায়ার্ড করলে তিন-চার লাখ টাকা পাবো, তখন সব একসাথে দিয়ে দিব।

৪. নিখিলেশ বাবুর স্কুল বাড়ি থেকে প্রায় সাত মাইল দূরে। এইটুকু পথ উনি প্রতিদিন লোকাল বাসে করে যাওয়া-আসা করেন। এখন অবশ্য লোকাল ট্যাক্সি, ম্যাক্সি এসবও চলে, তবে ভাড়া বেশি। লোকাল বাসের চেয়ে চার-পাঁচ টাকা বেশি। নিখিলেশ বাবু দরিদ্র স্কুল শিক্ষক, তার এতো বিলাসিতা মানায় না। তিনি কখনো হোটেলে বসে আয়েশ করে এক কাপ চা খেতে পারেন না, দুপুরের খাবারের পর কড়া জর্দা দিয়ে পান খেতে পারেন না, পরিবার নিয়ে সিনেমা হলে গিয়ে নতুন কোন ছবি দেখতে পারেন না, এরকম অনেক কিছুই তিনি পারেন না, সেসব চিন্তা করাও তার জন্য বিলাসিতা। প্রায় দু'মাস আগে ছোট মেয়ের ক্যালকুলেটরটা নষ্ট হয়ে গেছে, কিনে দিতে পারেননি। সরকার আশ্বাস দিয়েছে, বেসিকের ১০% বেতন বাড়বে, তাই নিখিলেশ বাবু অপেক্ষা করতে থাকেন . . . . . দু'তিনমাসের এই বাড়তি টাকাটা একসাথে করে মেয়েকে একটা ক্যালকুলেটর কিনে দেবেন।

৫. দীর্ঘ পয়ত্রিশ বছরের চাকুরী-জীবনে কখনো তিনি দেরী করে অফিসে পৌছেঁননি। স্কুল শেষ হয়ে যাওয়ার পরে সবাই চলে গেলে তিনি সব কিছু গুছিয়ে রেখে বের হয়ে আসেন একটা বালতি আর কোদাল হাতে নিয়ে তার নিজের হাতে লাগানো গাছগুলোর পরিচর্যা করতে। বৃহস্পতিবারে হাফ-ডে হওয়াতে সেদিন তিনি নিজে সবকিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে বাড়িতে ফেরেন। এসব করতেই বিকেল হয়ে যায়, তাই তার কখনো তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা হয় না। কেউ তার জন্য অপেক্ষা করেও থাকে না, শুধু বারান্দার কোণের নেড়ি কুকুরটা ছাড়া। সে-ই শুধু প্রতিদিন দৌড়ে গিয়ে নিখিলেশ বাবুর গা ঘেষে দাঁড়ায়, লেজ নেড়ে স্বাগত জানায়।

৬. আজকের দিনটাও প্রতিদিনকার মতো। নিখিলেশ বাবুর জীবনে নতুনত্ব বলে কিছু নেই। সবই গতানুগতিক। প্রতিটি দিন আগের দিনটির কার্বনকপি। প্রতিদিনের মতো আজো তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে লোকাল বাসের অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু আজ প্রচন্ড ভীড়, এই রকম ভীড় যে অন্য সময় হয় না তা কিন্তু নয়। তবে আজ ভীড় তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। এর অন্যতম কারণ হলো, শনিবারে ঈদ, তাই বাড়িমুখী মানুষের ঢল। এই ভীড় ঠেলে হ্যান্ডেল ধরে বানরঝোলা হয়ে যাওয়ার বয়েসও তিনি পার করে এসেছেন। এখন খুব অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তাই তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। এভাবে ঘন্টার পরে ঘন্টা কেটে যায়। নিখিলেশ বাবু ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকেন। অপেক্ষা করতে তার কোন ক্লান্তি লাগে না। তিনি ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেন লোকাল বাসের জন্য, তিনি অনন্তকাল অপেক্ষা করেন ১০% বেতন বৃদ্ধির জন্য।


মন্তব্য

পরিবর্তনশীল এর ছবি

নিখিলেশ বাবুদের জন্যই হয়ত পৃথিবীটা এখনো এত সুন্দর!!!
দারুণ লাগল পড়ে...
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

ঝরাপাতা এর ছবি

হ্যাঁ, গাহি তাহাদের জয়গান।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

অনিন্দিতা এর ছবি

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের প্রাণশক্তি অনেক বেশী বলেই বোধহয় নানা রকম যুদ্ধ করে টিকে থাকে। আর আমাদের ও টিকিয়ে রাখে।
ভাল লাগল।

ঝরাপাতা এর ছবি

ভালো লাগার জন্য ধন্যবাদ


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কোথাও না কোথাও আমরা সবাই এরকম অনন্ত অপেক্ষার বিবর্ণ নিখিলেশ...

ঝরাপাতা এর ছবি

ঠিক তাই। মধ্যবিত্তের হা-পিত্যেস নিয়েই মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলা প্রতিনিয়ত।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

সবজান্তা এর ছবি

০১

প্রশ্নটা আমার মাথায় এসেছিল গত জোট সরকারের আমলে। সে সময়কার কোন একটা ব্লগে আমি লিখেছিলামও ব্যাপারটা।

সাংসদদের বেতন ভাতা এবং সুবিধা বৃদ্ধি। যদি শুধু মাত্র কাগজে কলমে দেখি, তবুও সাংসদদের বেতন অগ্রহণযোগ্য কিছু না। আর কাগজের বাইরের হিসাব তো বলার দরকারই নেই। তবুও তাদের বেতন বাড়ানো চাই। আর বেচারা স্কুল শিক্ষকেরা, মানুষ গড়ার কারিগর নামের এক বোঝা ঘাড়ে নিয়ে প্রায় বিনামূল্যের কামলা খেটে চলেছেন সেই অনাদিকাল থেকেই।

সত্যি বড় মহান পেশা শিক্ষকতা !

০২

আমাদের দেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভাইয়েরা। উনাদের মর্যাদা খাটো করতে চাই না, তবুও না বলে পারি না। উনাদের বেতন ভাতা দেখে নিজেকে একজন দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক ছাড়া কিছুই মনে হয় না। নামমাত্র মূল্যে DOHS এ বাড়ি, শেভ করার জন্য টাকা। নিখিল বাবুতো কোন দূরের লোক, আমি নিজে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়ে, প্রকৌশলী হয়ে যখন তাঁর চেয়ে অনেকগুন বেশি বেতন পাবো, তখনও তো আমি তাদের সমান সুযোগ পাবো না রাষ্ট্র থেকে।

এ রাষ্ট্র জ্ঞানী, গুণীর পৃষ্ঠপোষকতা করতে জানে না, জানে শুধু বাহুবল আর অস্ত্রকেই সালাম করতে।

অসাধারণ !
---------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ

অমিত আহমেদ এর ছবি
ঝরাপাতা এর ছবি

হুম, তাদের বেতন বাড়াতে হয়, কারণ হিসেবে ভুঁইয়া বলেছিলো, বিদেশে এতো কম বেতনের কথা বলতে মন্ত্রীদের লজ্জা লাগে। নিখিলেশ বাবুদের জন্য কারো কোন লজ্জা হয় না, তারা তপ্ত সূর্যের নীচে বসে আমরণ অনশন করলেও আমাদের কোন লজ্জা হয় না। আমরা শরবত হাতে মিডিয়া কাভারেজ পাই আর পুলকিত হই।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

নিখিলেশ বাবুদের জীবনভর এরকম কত যে প্রতীক্ষা করতে হয় কেউ জানে না

কারণ এই যে নিখিলেশবাবুর মতো শিক্ষক প্রজাতির (এঁরা আসলেই ভিন্ন প্রজাতি, সর্বংসহা) মানুষরা সবচেয়ে নিরীহ, অসহায় ও প্রতিবাদহীন। এঁরা আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেন, এঁদের ভবিষ্যৎ কেন, বর্তমানও কেউ ভাবে না।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ঝরাপাতা এর ছবি

এঁরা আসলেই ভিন্ন প্রজাতির, এঁদের বুঝতে পারা আমাদের কাজ নয়।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

অতিথি লেখক এর ছবি

বহু বছর আগে হাতিরপুল বাজারের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। টেম্পোতে বসা অবস্থায় এক ঝলক দেখতে পেয়েছিলাম এক বৃদ্ধ মানুষকে। তার বয়স হবে সত্তুরের ওপর। মাথার সবগুলো চুল ধবধবে সাদা। পরনে আধময়লা একটা সাদা শার্ট, সেরকমই প্যান্ট। হাতে একটা কাগজপত্রের ফাইল, বেশ ভারী একটা বাজারের ব্যাগ, আর বগলে একটা লাউ। মানুষটাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে এগুলো বয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো সেরকম শারীরিক শক্তি তার নেই, চাকরি করার মতো বয়সই তার নেই, কিন্তু অফিস থেকে ফেরার পথে তাকে যেতেই হয়েছে বাজারে! এত কষ্ট সত্ত্বেও তার মুখে লেগে আছে একটা ক্লিষ্ট হাসি। সন্তানদের জন্য বাজার নিয়ে যেতে পারছেন ভেবেই হয়ত! তাঁর সারা মুখে কষ্ট, পরিশ্রমের ঘাম, হতাশা, তিক্ততা, লজ্জা, আবার একইসঙ্গে নিয়তিকে মেনে নেয়ার একটি কষ্টমাখা হাসি এমনভাবে মাখামাখি হয়ে আছে, যা একবার দেখলে ভোলা মুশকিল।
আমি দেখেছিলাম প্রায় বছর বারো আগে। এখনো ভুলতে পারি নি।

অনেক জায়গায়ই আমি এরকম দেখেছি, ষাটোর্দ্ধ হার্টের রোগী পিতা হাতে ব্যাগ নিয়ে বাজারে বেরোচ্ছেন, আর তার পাশাপাশি স্কিনটাইট জিনস আর টি-শার্ট পরে মাথায় জেল মেরে বাড়ির ২৬ বছর বয়সী ছেলেটি আড্ডা মারতে বেরোচ্ছে বন্ধুদের সাথে। মানুষ এত নির্মম হতে পারে কী করে ভাবতে পারেন?

আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, এটা আমার জীবনের একটা অভিশাপ, একটা সংবেদনশীল মন নিয়ে আমি জন্মেছিলাম!

মৃদুল আহমেদ

ঝরাপাতা এর ছবি

ধৈর্য্য ধরুন, দেখবেন একসময় অনুভূতিগুলোও ভোঁতা হয়ে গেছে, তখন আর কোন কষ্ট হবে না। শত শত নিখিলেশ মরে গেলেও না।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

শুধুই এক দীর্ঘশ্বাস...

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ঝরাপাতা এর ছবি

আর কিইবা করার আছে।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

নিখিলেশ গন্তব্যে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত।

লেখা ভালো হয়েছে, ঝরা।

ঝরাপাতা এর ছবি

ধন্যবাদ বস।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

ভীষণ কষ্ট লাগলো পড়ে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? :-?

ঝরাপাতা এর ছবি

হুম, মাঝে মাঝে কষ্টটাকেও বিলাসিতা মনে হয়।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

'তিনি বৃদ্ধ হলেন,বনস্পতির ছায়া দিলেন সারা জীবন'

আমাদের হাইস্কুলে বাংলা পড়াতেন পন্ডিত স্যার, মাইল ছয়েক দূরে্র এক গ্রামে সকাল বেলা নিজের হাতে লাংগল কষে তারপর আসতেন স্কুলে-বিকেল বেলা আমরা সাইকেল চালিয়ে বাড়ী ফিরতাম, সেই মাটি সংলগ্ন মানুষকে একা একা হেঁটে আরো ছয়মাইল ফিরতে দেখতাম ।

আমাদের এই হলো,সেই হলো-কতকিছু হলো, ফাঁকতালে এই মানুষগুলো বিরান হয়ে গেলো ।।

----------------------------------------
শমন,শেকল,ডানা

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ঝরাপাতা এর ছবি

তরুতলে বসি পান্থ শ্রান্তি করে দূর,
ফল আস্বাদনে পায় আনন্দ প্রচুর।
যাইবার কালে ডাল ভেঙে লয়,
তরু তবু অকাতর কিছু নাহি কয়।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

নিঘাত তিথি এর ছবি

অনেক কথা জমে গেলো মনের মধ্যে গল্পটা পড়ে। এটা আমার দেশের সবচেয়ে পরিচিত একটি স্বাভাবিক(!) জীবনের গল্প...।
লেখা অসম্ভব ভালো হয়েছে ঝরাপাতা। কাঁদালেন...
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

তিথীডোর এর ছবি

(গুরু)

আপনার সব পোস্ট আজ রাতেই পড়ে ফেলব..

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।