আজ সকালে খুব ভোরে ঘুম ভাংলো।অনেক দিন দেশের খাবার খাইনা।দেশের খবর এবং খাবার এই দুটো জিনিস প্রবাস জীবনে খুব পীড়া দেয় আমাকে।
জাতিসংঘ যে খাবার Supply দেয়,তাতে বাঙ্গালীর মন এবং প্রান ভরে না।Internet এর দৌলতে খবরটা নিয়মিত পাই,খাবার তো পাইনা।Please আমাকে কেউ পেটুক ভেবে নিবেন না।সাত সকালে খাবার এর সাতকাহন কারো ভালো লাগার কথা না।কিন্ত বিশ্বাস করুন,এই মুহুতে্ আমার কাছে 'প্রাণ' এর এক প্যাকেট চানাচূর ছাড়া বাড়তি কোন খাবার নাই।
আমি এই চানাচুর,কোরবানি ঈদের সকালে খাব।আমার এই গোপন অভিলাষ পুরণ হবে, যদি না এই তথ্য ফাঁস হয়ে যায়।আপাতত এটা আপনার আর আমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকুক।
এবার রোজার ঈদ দেশের বাইরে প্রথম করলাম।সকালে নামাজ পড়লাম,বিশাল জামাত হল। আমরা বাংলাদেশী সৈনিক ছাড়া, স্থানীয় লাইবেরীয়ানরা ও এক ঈমামের পিছনে কাতার বাধঁল। নামাজ শেষে আন্তঃজাতিক কোলাকোলি হল । স্থানীয় লাইবেরীয়ানরা বাংলাদেশি বলতে অজ্ঞান। আমেরিকানরা এদের এতই নিগ্রহ করে যে আমাদের সামান্য আতেথিয়তাতেই তারা মুগ্ধ থাকে।
এই গরিব দেশটা সম্পর্কে যতোটা জানছি,ততই অবাক হচ্ছি।এসব কি ঘটছে এখানে?
সামান্য একটা তথ্য দেই।
BRIDGESTONE Tyre Company –এর নাম শুনেছেন?আমেরিকান কোম্পানি। এই কোম্পানির Sister company হলো “FIRESTONE.”
FireStone পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাবার প্রক্রিয়াজাত কোম্পানি।ফায়ারস্টোন লাইবেরিয়ার ৮০% ভুমি সরকারের কাছ থেকে ৯৯ বছরের জন্য লীজ নিয়েছে।তাতে আপনার আমার সমস্যা কোথায়?
সমস্যা হল তারা প্রতি একর জমি লীজ নিয়েছে ২৬ সেন্ট হিসাবে প্রতি বছর।বাংলাদেশি টাকায় ১৭ টাকা বছরে।আর এই এক একর জমি থেকে যে রাবার পাওয়া যায়,তাতে বোয়িং কোম্পনির বেশ কিছু উড়োজাহাজের চাকার বন্দোবস্ত হয়ে যায়। পুরো লাইবেরিয়ার জাতীয় বাজেট হল ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর BRIDGESTONE শূধুমাত্র ইউরোপ থেকে ২০০৬ সালে আয় করে Euro 2.67 Billion। আপনার আমার কি বলার থাকতে পারে?
আজকের লেখাটা সাংবাদিকদের মত হয়ে গেল। আমি তো সামান্য সৈনিক মাত্র ।
শেষ একটা তথ্য দেই,ফায়ারস্টোন কোম্পানী তার শ্রমিকদের বাধ্য করে শিশু সন্তানকে কাজে লাগাতে।তারা এমন একটা নিয়ম করে দিয়েছে যে,প্রতি শ্রমিক প্রতিদিন নিরদিস্ট পরিমান রাবার উত্তোলন করতে না পারলে চাকুরি হারায়।এই ভয়ে শ্রমিকরা তাদের স্ত্রী,পুত্র,জায়া,জননী,সবাইকে রাবার বাগানে কাজ করায়।আমার কথা বিশাস হলনা? ইন্টারনেট এ একটা সাইট আছে শুধু,এদের এই দূ্রবৃত্তপনার বিরুদ্ধে বিশবস,জনমত সৃস্টি করার জন্য
http://www.laborrights.org/stop-child-labor/stop-firestone
একবার ক্লিক করে ঘুরে আসুন।দেখুন কি হচ্ছে।
মন্তব্য
কী সর্বনাশ! এতো দিনে-দুপুরে কড়া রোদে ডাকাতি; লাইবেরিয়ানরা কি এতটাই বোকা? নাকি, এখানেও মীর জাফর, জগৎশেঠরা আছে?
টিনটিনের একটা কমিকসে এরকম দেখেছিলাম। হায়রে বাস্তব! 'প্রান' মিশনের সাফল্য কামনা করছি।
অবাক এবং বিষ্মিত , আপনার লেখার কথা গুলো পড়ে ।
খুব স্ট্রাগল করছেন বাংলা লিখতে । বেশ বুঝতে পারছি । অথচ পড়তে এক্টুও খারাপ লাগেনি । লেখা ভালো লাগলে যে কোন কিছুই মেনে নেয়া যায় । আস্তে আস্তে নিশ্চই সব ঠিক হয়ে যাবে । আর লেখা থামাবেন না । অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী'র জন্য ...
--------------------------------------------------------
কারা যেন চলে গেছে দূরে...বহুদূরে..আর ফিরবে না জানি । কোন কারন ছাড়াই , কোন যুক্তি ছাড়াই চুপচাপ হয়ে গেছে সারিবদ্ধ প্রাণ গুলো । জানি , আমাকেও আসতে হবে এই বিষন্ন নগরীতে..একদিন.. কোনদিন --মলাগোফরুমা
---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
যুবরাজ,
দিল্লী (কোরবানীর ঈদ) কতদূর,,,,,,,,,,??
সুখপাঠ্য। ভালো লাগছে।
চালিয়ে যান।
লাইবেরিয়ার অবস্থা তো ভয়ংকর দেখছি ।
...কত রংগ দেখি দুনিয়ায়...
=============================
তু লাল পাহাড়ীর দেশে যা!
রাঙ্গা মাটির দেশে যা!
ইতাক তুরে মানাইছে না গ!
ইক্কেবারে মানাইসে না গ!
এই তো অবস্থা!
কি আর বলি!
দীর্ঘমেয়াদী গৃহযুদ্ধের এই তাহলে মুলসুত্র!
যুদ্ধ করে মরতে থাক লাইবেরিয়ানরা আর বছরে ২৬ সেন্ট দিয়ে দেশ দখল করে রাখুক মহান আমেরিকানরা ।
আপনাকে আবারো ধন্যবাদ ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আফ্রিকার সব দেশগুলোতেই এই অবস্থা। পড়লে বুকে আগুন জ্বলে ওঠে। আপনার লেখা খুব ভালো হচ্ছে। নিয়মিত দিয়ে যান।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
ব্লগের লেখনী অনেক কাঁচের দেয়াল ভেঙ্গে দেবে বলে আশা করি। আপনার লেখা সেই আশাই দেয়।
লাইবেরিয়ার কোন বাংলাদেশী অসামরিক স্থাপনা, দোকনপাট ইত্যাদির যদি অবস্থান থাকে তবে রোজনামচার সাথে ছবি তুলে যুড়ে দিতে পারেন। আমি জানিনা কর্তৃপক্ষের আইনের ধারার বাইরে যায় কিনা, তবে আপনার অনুমতিক্রমে সেরকম ছবি আসলে এখানে ব্যাবহার করতে চাই।
আশ্চর্য।
আপনার লেখার ভঙ্গি সুন্দর। সচলায়তনে স্বাগতম!
এখনও কেন দুঃখিত বা হতাশ হই জানিনা, তবে ফায়ারস্টোনের কৃতিত্বে/কীর্তিতে আবারো হলাম!
অনেকদিন পরে একটা কমেন্ট করছি। খুব ভালো লাগলো এইরকম অন দ্য স্পট ব্লগিং। আপনাকে সচলায়তনে স্বাগতম।
খুব অবাক হইনি লাইবেরিয়ায় কর্পোরেট আগ্রাসনের কথায়।
দখলের এই ইতিহাস তো ঘুরেফিরেই আসে।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমাদের দেশ দখল করেছিলো নীল, আফিম চাষের জন্যে।
এই মুহূর্তে একই ঘটনা পৃথিবীর অনেক প্রান্তে ঘটছে। আমাজনে বন উড়িয়ে দিয়ে তৈরি হচ্ছে কর্পোরেটদের নতুন বিনিয়োগ ক্ষেত্র - জৈব-জ্বালানির জন্যে বানানো হচ্ছে জমি।
গড ব্লেস আমেরিকা।
বিষ্মিত হলাম!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গ বাণী
সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।
হুম ..................... এটাতো পুরা ডাকাতি । এদের গৃহ যুদ্ধের কারণ আপনার কোন লেখায় নিয়ে আসলে ভাল হয় । ভাল থাকবেন ।
নিবিড়
আমি বিস্মিত অবাকিত কোনোটাই হই নাই... এই না হইলে আমেরিকা?
আমেরিকা জিন্দাবাদ...
আর কিছু বলার নাই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমি বিস্মিত অবাকিত কোনোটাই হই নাই... এই না হইলে আমেরিকা?
আমেরিকা জিন্দাবাদ...
আর কিছু বলার নাই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আশ্চর্য!
আমি নিজেও এই কু... বা...দের দোসরদের দেশে থাকি। আমরা এদের চেহারা যতোটা দেখতে পাই, আসলে চেহারা তার চেয়েও ভয়াবহ। ঘৃণা হয়। কিন্তু অবাক হই না। কারণ এদেরকে চিনি।
ব্যাতিক্রমধর্মী লেখার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
কী ভয়ঙ্কর কথা !
আমেরিকা যার বন্ধু, তার শত্রুর দরকার হয় না। কথাটা সম্ভবত ফিডেল ক্যাস্ট্রোর। মানবতা শব্দটা যে শুধুই একটা রাজনৈতিক বুলি তা কি আর বলতে হয় !
অনেক ধন্যবাদ আপনার এরকম পোস্টের জন্য। নিয়মিত লিখবেন। অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
চালিয়ে যান যুবরাজ
কর্পোরেট হাউজ গুলোর জুচ্চুরির বিরুদ্দে কড়া প্রতিবাদ.......
আমরাও কি এরইরকম দিয়ে দিচ্ছি না লাউয়াছড়া...
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
ধন্যবাদ আপনার লেখনির জন্য...খুব সুন্দর ভাবে বাস্তব চিত্রটা তুলে ধরেছেন।
আমি শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করার সূত্রে অনেকদিন ধরে ফায়ারষ্টোন ক্যাম্পেইন এর সাথে জড়িত আছি।
কল্পনা
...........................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
ইস্টইন্ডিয়া নামের একটা কোম্পানি আমাদের দেশ শাসন করেছে এক শ' বছর।
পশ্চিমাদের শোষণ-নির্যাতনের পুরনো পদ্ধতি এখনও বহাল আছে, শুধু তারা সরে গেছে একটু পশ্চাতপদ লোকালয়ে।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
আমেরিকার দক্ষিণের বাইবেল বেল্টে তুলা চাষের জন্য ক্রীতদাস প্রয়োজন, লাইবেরিয়া ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল থেকেই অপহরণ করা হয়েছিলো কালোদের। এখনও বাটপার মনরোর নামেই লাইবেরিয়ার রাজধানীর নাম মনরোভিয়া। কনফেডারেশন গৃহযুদ্ধে হেরে গেলেও নিশ্চিহ্ন হয়নি, কর্পোরেট আমেরিকা সেই দাসমালিকদের চারিত্র্যই বহন করছে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
- এই লেখাটাও ভালো লাগলো।
মায়বাপ দুনিয়ার সব মাথাগুলোই ওৎ পেতে থাকে পশ্চাৎপদ দেশগুলোতে নিজের হিংস্র থাবা মেলে ধরবার খায়েশে। আধুনিক রাজনৈতিক কামড়া কামড়িতে যে জিতবে সেই তো ডিপজল টাইপের নোংরা হাসি দিতে দিতে এগিয়ে যাবে অসহায় দেশটির শ্লীলতার আবরণ উন্মোচনে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
শুওরের বাচ্চারাই সভ্যতার নামে জিতে গেলো খুব!
---
চলুক@ যুবরাজ।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
নতুন মন্তব্য করুন