আজ আপনাদের লাইবেরিয়া এবং লাইবেরিয়ান সমন্ধে কিছু তথ্য জানাবো।
লাইবেরিয়া বাংলাদেশ থেকে একটু ছোট আয়াতনের একটা দেশ।(৪৩০০০ বর্গ মাইল) জনসংখ্যা মাত্র ৩৩ লক্ষ। সুতরাং বুঝতেই পারছেন দেশটি বিরান ভুমির মতো। রাজধানী এবং কিছু শহর ব্যতিত লোকালয় খুব কম।
আমি প্রথম যেদিন এই দেশে আসলাম, গাড়ী দিয়ে আসার সময় প্রায় পুরোটা রাস্তা দেখতে দেখতে আসলাম তারা কি করে।রাস্তার পাশে প্রতিটা বাড়ির আঙ্গিনাই ছোট ছোট শিশুরা খেলা করছিল এবং বড়রা রোদ পোহাচ্ছিল। ছয়মাস এদের সাথে থেকে বুঝতে পারলাম, রোদ পোহানো এদের প্রধান কাজ।হাজার হাজার একর খালি কৃষি জমি পড়ে আছে, কিন্তু কেউ চাষ-বাস করেনা।খুবই উর্বর জমি।কোন কিছু লাগানোর সাথে সাথে তর তর করে বেড়ে উঠে।কিন্তু এরা কর্মবিমুখ জাতি।কাজ করেনা।স্রষ্ঠা তাদের এতো সম্পদ দিয়েছেন, বিদেশীরা লুটে খাচ্ছে, কিন্তু তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই।
লাইবেরিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম রাবার উৎপাদক দেশ, যে রাবার বাগানের মালিক আমেরিকানরা। অনেকগুলো হীরা খনি রয়েছে, যেগুলো আমেরিকানদের দখলে। Yakapa তে পৃথিবীর দিতীয় বৃহত্তম লৌহখনির পাহাড়, যে পাহাড় কেটে শতশত বছরেও লোহা তোলা শেষ করা যাবেনা।সেই লৌহ খনির মালিক পৃথিবীর বৃহত্তম ইস্পাত কোম্পানী ARCENAL MITTAL। যারা নিয়মিত খবরের কাগজ পড়েন তারা জানেন, এই কোম্পানীর মালিক একজন ভারতীয়। তার নাম লক্ষী মিত্তাল। এই মুহুর্তে সবচেয়ে ধনী বাক্তি।কিন্তু যে দেশের উদর খালি করে এই বিত্ত বৈভব, সেই দেশের মানুষরা পৃথিবীর দরিদ্রতম মানুষ। এই দেশের Per Capita ১৩৫ ডলার। যেখানে বাংলাদেশের Per Capita ১৪০০ ডলার।
আমি প্রথম কয়েকদিন এসে হতভম্ভ হয়ে বসেছিলাম যে মানুষ এত গরিব কি করে হতে পারে? শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন এর আকাঁ চিত্রকর্ম মানসপটে ভাসছিল।আমাদের ক্যাম্পের সামনে খোলা আকাশের নিচে কিছু মানুষ নামের প্রানী বাস করে, যাদের দেখলে মনে হয়, আমি এখন একটা প্লেন নিয়ে WHITE HOUSE এর ছাদে আত্নাহুতি দেই। পৃথিবীতে এক বেলা খাবারের জন্য মানুষ একদিকে মরছে, আর অন্য দিকে কোটি কোটি, বিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে মানুষ মারার নিত্য নতুন ফন্দি ফিকির হচ্ছে। মানবসভ্যতার ইতিহাস হচ্ছে খুনোখুনির ইতিহাস। একজন মানুষ মরলে হয় খুন, আর হাজার মানুষ মরলে হয় যুদ্ধ। পৃথিবীর কোন প্রানী আছে যারা সজাতি কে এত ঘৃণা করে? আমরাই করি, আমরা মানুষ, আমরা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব “আশরাফুল মাখলুকাত”।
এসব চিন্তা করলে খুব খারাপ লাগে। নিজেকে সভ্য মানুষ বলে দাবী করতে পারিনা। আমি নিজেও একজন মানুষ মারার নিপুন শিকারী। যাইহোক, অনেক বড় বড় কথা বলে ফেললাম।লেটার ফ্রম লাইবেরিয়া আমার দিনপঞ্জি। আমার একান্ত অনুভুতি।
আমার ধারনা ছিল পৃথিবীতে বাংলাদেশের চেয়ে গরিব দেশ কম আছে।কিন্তু একটা দেশ কত গরিব হতে পারে তার কোন ধারনা ছিলনা।একটা উদাহরন দিলে বুঝতে পারবেন। লাইবেরিয়াতে কোন বিদ্দুত উৎপন্ন হয়না।পুরো দেশ অন্ধকারে ঢেকে যায় অন্ধকার হওয়ার সাথে সাথে।কোন এক কালে এইদেশে জলবিদ্দুত উৎপন্ন হত।কিন্তু যুদ্ধের ফলে সব কিছুর মত বিদ্দুত ব্যবস্থাও ধংস হয়ে পড়ে।গত ১৮/১৯ বছর ধরে সাধারন লাইবেরিয়ানদের ঘরে বিদ্দুত নেই।আমরা অথা্ৎ জাতিসংঘ বাহিনী জেনারেটরের উপর ভর করে বেচেঁ আছি।দিনরাত ২৪ ঘন্টা জেনারেটর চলে।
বিশুদ্ধ খাবার পানির বড়ই অভাব।খাবার পানি তারা খাল-বিল থেকে সংগ্রহ করে। গোসল করে দল বেধেঁ নালা-নরদমার পাশে।
গ্যাস নেই কোথাও।এলপি সিলিন্ডার অল্প কিছু মানুষ ব্যবহার করে।
চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা বলে আপনাদেরকে শিউরে তুলতে চাইনা। আরেকদিন তুলব,আজ থাক।
শেষটা করি, একটু সুন্দর অনুভুতি দিয়ে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইউনিফরম, প্রতিটি লাইবেরিয়ানদের কাছে পরিচিত।এমনকি মায়ের কোলের শিশুও বলে BANGLADESH.আমরা যখন রাস্তা দিয়ে যাই, তখন লাইবেরিয়ান শিশুরা দল বেধেঁ চিৎকার করে, BANGLADESH JINDABAD, GIVE US CHO CHO. চো চো মানে হলো খাবার।আমরা তখন আমাদের সাথে যে খাবার থাকে তা শিশুদেরকে দিয়ে দেই।আর কে না জানে, শিশুদের মুখের হাসির চেয়ে পবিত্র আর সুন্দর কিছু পৃথিবীতে নাই।
মন্তব্য
শিউরে উঠার মত!
জ্বলে পুড়ে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয় |
শেষটা অসাধারণ |
অভিনন্দন সহ
আমি সেখানে গিয়া বর্গাচাষী হইতে চাই। বুদ্ধি বাতলান!
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
চলে আসেন।আসার সময় ভাল দেখে বীজ আর ইউরিয়া সার নিয়ে আসবেন।বাংলাদেশ সে্নাদল লাইবেরিয়া, আপনাকে সবাত্ততক সহায়তা প্রদান করবে।
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
এইটা কিভাবে হয়? অন্তত মন্ত্রী-মিনিস্টার আর জেনারেলদের বাড়িতে দেওয়ার জন্যও তো বিদ্যুত থাকা লাগে নাকি?
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
আমার জানামতে, খুব অল্প পরিমানে রাজধানী মনরোভিয়াতে বিদ্দুত উৎপন্ন হয়,যা দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাসভবন ,দুতাবাস এলাকা এবং কিছু রাস্তা আলোকিত হয়।এছাড়া যে আলো দেখা যায়, সবই ব্যক্তিগত জেনারেটরের আলো।
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
বলতে ভুলে গেছি, সিরিজটা খুব ভালো হচ্ছে তারেক জিয়া ভাই
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
মন্তব্যে বিপ্লব !!!
"তারেক জিয়া ভাই - মন্তব্যে বিপ্লব !!! "
ভাই সব, অই যুবরাজ এর সাথে মিলায়েন না, দেশে যাওয়া আর হবেনা আমার, লাইবেরিয়াতেই শেষে থাকতে হবে!!
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
হুমম। এই সিরিজটা যেন আরো অ-নে-ক লম্বা হয়।
আপনার এই লেটার পড়ার জন্য হা হয়ে বসে থাকি।দিনপঞ্জী কত সহজ,সরল এবং হৃদয়গ্রাহী হতে পারে, আপনার লেখা তার উৎকৃ্ষ্ট উদাহরন।লেখা চালিয়ে যান, আমরা আছি আপনাদের সাথে।
- বেঁচে থাকুক লাইবেরিয়া, চলতে থাকুক লেটার ফ্রম লাইবেরিয়া, আনন্দে থাকুক এর লেখকের প্রাণ।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভাই শুভ, একজন আর্মী অফিসারের কাছ থেকে এই কথা শুনে আপনার মজা লাগায় কষ্ট পেলাম।একজন আর্মী অফিসারের মধ্যে কি মানবিকতাবোধ থাকতে পারেনা? সেও আপনার মত একজন সাধারন মানুষ।তার বোধ শক্তি আপনারই মত প্রবল।
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
সিরিজটা এমনিতেই দুর্দান্ত ।
সাথে কিছু প্রাসঙ্গিক ছবি জুড়ে দিলে আরো সমৃদ্ধ হতো ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
লাইবেরিয়ার শিক্ষাব্যাবস্থা কেমন?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
রানা মেহের, শিক্ষাব্যাবস্থা সম্প্ররকে জেনে আমি জানাব আপনাদের কে।
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
গত বেশ কয়েকদিন সচলায়তনে এসে এসেও ফিরে গিয়েছি "লেটার ফ্রম লাইবেরিয়া" না পেয়ে। আজ ৬ষ্ঠ পর্ব পেয়ে ভালো লাগল। আমার মতোন আরও অনেকেরই এই দেশটা সম্পর্কে জানার আগ্রহ পূরণ হবে বলে মনে করি।
অনেকদিন আগে বক্তৃতা নিয়ে একটা কথা শুনেছিলাম এইরকম (কবে, কোথায় মনে নেই) : "বক্তৃতার আকার হবে মিনি স্কার্টের মতোন। এটাতে প্রয়োজনীয় সবকিছুই ঢাকা পড়বে কিন্তু আরও একটু শোনার জন্য আগ্রহটাও চাঙ্গা থাকবে"।
যুবরাজের লেখা ঠিক সেই মিনি স্কার্টের মতোন - টুকটুক করে ঠিকই বেশ খানিকটা জানান দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু আরও বেশি জানার আগ্রহ থেকে যাচ্ছে।
ওয়েল ডান যুবরাজ।
মন্তব্যে (বিপ্লব)
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
মালিতে কিছুদিন থেকে আসা আমার এক বন্ধু ঐ দেশের মানুষ সম্পর্কেও এরকমই একটা কথা বলেছিলো। সাধারনতঃ আফ্রিকার মানুষ কায়িক শ্রম করতে খুবই সক্ষম এবং অভ্যস্ত বলেই তো জানতাম, তাহলে কি এই কর্মবিমুখতা বিচ্ছিন্নভাবে কিছু দেশের জন্য প্রযোজ্য? এটা কি স্বভাবজাত, নাকি কোন ধরনের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা বা ঔপনিবেশিকতার ফলাফল?
আমি যা জানি, লাইবেরিয়ায় চাষবাস করে কিছু চিনা। আর ব্যবসা করে ভারতীয় আর সিরিয়ানরা। বাকি দেশীয় জনগণ এরকমই। আপনার ব্যাখ্যা ঠিক হলে তাদের ওপরও একই রকম প্রভাব পড়ার কথা ...
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত আপনি সম্পুর্ণ সঠিক। লাইবেরিয়াতে ব্যবসা, এক চেটিয়া ব্যবসা করে যাচ্ছে সিরিয়ান,লেবানিজ আর ভারতীয়রা। যতো নির্মান সামগ্রী আছে, সব বিক্রী করে পাঞ্জাবী শেঠী ব্রাদার্স।শেঠী ব্রাদার্স, প্লাস্টিক চেয়ার আমাদের দেশ থেকে কিনে বিক্রী করে বহু বেশী দামে।
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
স্নিগ্ধা, ধন্যবাদ।চমৎকার একটা প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করার জন্য। এদের কে অলস করে ফেলা হয়েছে।যেসব দেশের প্রচুর সম্পদ রয়েছে, সে সব দেশে বিয়ার, মদ সহজ লভ্য এবং খুব সস্তা। নেশা, পানীয় এদের খাবারের অংশ। দিনে যে অল্প টাকা তারা রোজগার করে সব টাকা রাতে পানীয় পান, সুরা পান করে শেষ করে। দেশ নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা নাই।
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
হা পৃথিবী
মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। বাকি পর্ব গুলোও পড়ে ফেলবো।
যুবরাজ ভাই, চালিয়ে যান।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ঐ হাজার হাজার একর জমির মালিকানা কার তা না জেনে লোকগুলোকে কর্মবিমুখ বলতে পারছি না।
জমি আছে। কাজ করার লোক আছে । কিন্তু সেই লোক যদি ঐ জমির মালিক না হয় তাহলে সে সেখানে কী করে কৃষিকাজ করবে?
লাইবেরিয়ার পিপিপি হিসাবে ৪০০ ডলার মত মাথাপিছু আয়(বাংলাদেশের ১৪০০)।
লোহার ব্যাপারটা ভারতেও একইরকম। কিছুদিন আগে অবধি লোহা তুলে জাপানে বিক্রি করা হত, আর জাপান থেকে ইস্পাত কেনা হত। তাতেও সস্তা পড়ত। সুতরাং লোহা থাকলেই দেশের খুব কিছু লাভ হয় বলে মনে হয় না। মিত্তালকে লোহা বেচলে লোকসানের কিছু তো নেই ... নিজেদের দেশে ভাল ইস্পাত বানাতে পারলে অবশ্য তার চেয়ে ভাল কিছু হয় না।
তবে আফ্রিকা থেকে আপনার লেখার প্রতিটা শব্দ আমি উপভোগ করছি ... চালিয়ে যান।
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দুটো বিষয়ঃ এক, নিজের দেশের সম্পদ নিজেদের ব্যবহার
এবং দুই, সম্পদ তথা কাঁচামাল বিক্রয়।
সম্পদ ব্যবহার করতে পারলে- কাঁচামাল থেকে ফাইন প্রোডাক্ট উৎপাদন করতে পারলে সেটা গুনোত্তর হারে ভ্যালু এ্যাড করতে পারে- ফলে এটা অধিক লাভজনক; আবার কাঁচামাল উপযুক্ত দামে ও লাভে বিক্রয় করতে পারলে সেখান থেকেও বেশ আয় হতে পারে।
কিন্তু- এদেশগুলোর অভিজ্ঞতাটা কি?
লোহার খনি দিয়েই আলোচনাটা শুরু করি-----
প্রথমত, দেখাই যাচ্ছে যে, এরা নিজেরা লোহার খনি থেকে লোহা উৎপাদন করে না, এবং সে লোহা দিয়ে ইস্পাত তৈরী করে না।
সুতরাং, প্রথম বিষয়টি অর্থাৎ নিজেদের সম্পদ নিজেরা ব্যবহার করা- এদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাহলে কি হচ্ছে? বলা যেতে পারে, এরা লোহা বিক্রয় করে। যেখান থেকে দিগন্ত'র প্রশ্নঃ "মিত্তালকে লোহা বেচলে লোকসানের কিছু তো নেই____"।
লোকসান বা ক্ষতিকে আমরা কোন অর্থে ধরবো, সে বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়েছে, দিগন্তর সে আলোচনায় লোকসানের অর্থ অনেকটা এমন হতে পারেঃ "লোহার খনি ফেলে রেখে কিছু অর্জন না করার চেয়ে- যতটুকু যে দামে মিত্তাল কিনছে- তাতে তো কোন লোকসান নেই- বরং যে দাম পাওয়া যাচ্ছে- সেটাই লাভ"।
যদি এটাই দিগন্তের বক্তব্যের সারকথা হয়, তবে আমি সেটিকে সমর্থন করিনা। কেননা, এই দৃষ্টিভঙ্গীটিই হচ্ছে যেকোন উপনিবেশেই ঔপনিবেশিক প্রভুদের প্রচারিত দৃষ্টিভঙ্গী, আজকের দুনিয়ায় সাম্রাজ্যবাদীরাও এধরণের দৃষ্টিভঙ্গী তাদের সাম্রাজ্যবাদ প্রসারে ও সাম্রাজ্যবাদী লুন্ঠনের কারণে প্রচার করে। সে দৃষ্টিভঙ্গীটি নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়____
যেকোন জিনিস বা সম্পদের ব্যবহারিক মূল্য ও বিনিময় মূল্য বিদ্যমান। পুঁজিবাদী দুনিয়াতে লাভ-লোকসান এসবকে বিনিময় মূল্যের হিসেবে পরিমাপ করা হয়- এর সাথে বাজার খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি ও বাজারে প্রভাব তথা ভোক্তার উপর প্রভাব খাটানোর বিষয়টিও তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরণের ব্যবস্থার অন্তসারশূন্যতা এখানে আপাতত আনছি না, তবে শুধু এটুকু বলা যায়- এক্ষেত্রে পুঁজিবাদী দুনিয়ার কথিত এথিকস অনুযায়ীও সেটাকে লোকসান বলতে হবে বৈকি।
লোকসান বা ক্ষতি কি দিয়ে নির্ধারিত করবো, প্রথমে সে প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ। একটা উদাহরণ দিয়ে আমার কথাটি বলি,----
দুই ভাই, যারা যথেস্টই বাচ্চা, বাবার কিনে দেয়া দামী খেলনা (ধরেন বাবার ক্রয়কৃত মূল্য ১০০০ টাকা, এটা বিনিময় মূল্য) দিয়ে খেলছিল। এমন সময় সেই বাচ্চাদুটোর চেয়ে আরেকটু বড় এক ছেলে এসে- খুব লোভনীয় ও আকর্ষণীয় একটি আইসক্রিম দেখিয়ে (যেটি ঐ ছেলেটি ক্রয় করেছে ২০ টাকা দিয়ে) খেলনাটি নিয়ে নেয়, বিনিময়ে আইসক্রিম তাদের হাতে তুলে দেয়। এখানে কি বলবো? বাচ্চাদুটোর কি হয়েছে? লোকসান নাকি লাভ? ব্যবহারিক মূল্যের হিসাব করলে হয়তো বাচ্চাদের কাছে ঐ মুহুর্তে আইসক্রিম নেয়াটা লাভজনক ঠিকই, কিন্তু আসলে বিনিময় মূল্যের হিসাবে কি লাভ?
এবারে আসি- লোহা খনিতে।
লোহা খনি পড়ে ছিল, এবং সেটার ব্যবহারিক মূল্য সে মুহুর্তে লাইবেরিয়ানদের কাছে শূণ্য। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে কিন্তু লোহার একটি বিনিময় মূল্য বর্তমান- যেটিও সম্ভবত মূর্খ-অশিক্ষিত লাইবেরিয়ান জাতি ঐ বাচ্চার মতই জানতো না। ফলে, যখন নামমাত্র মূল্যে বা লোহা উত্তোলনের আকাশচুম্বি খরচ দেখিয়ে মিত্তাল বা অন্যান্য ঔপনিবেশিক তথা সাম্রাজ্যবাদী প্রভুরা উত্তোলন করে যায়- ব্যবহারিক মূল্যের বিচারে- সেই সামান্য অর্থ তাদের জন্য লাভজনক- কিন্তু আসলেই কি বিনিময় মূল্যের বিচারে তা লাভজনক?
মজার বিষয় হচ্ছে- এভাবেই প্রতিটি ঔপনিবেশিক জাতিকে রাষ্ট্রকে ঠকানো হয়েছে, হচ্ছে- আজো সাম্রাজ্যবাদীরা একই যুক্তি করে।
আমাদের বাংলাদেশেও এশিয়া এনার্জী এসে আমাদের কয়লা তুলার মজুরি বাবদ প্রায় পুরো কয়লাই নিয়ে যেতে চায়, মাত্র পাঁচ-ছয় ভাগ দয়া(!) করে দিয়ে যেতে চায়; আমাদের গ্যাস আমরা তুলে দিয়েছি যে পিএসসি চুক্তিতে তাতে আমাদের ভাগে থাকে মাত্র ২১ ভাগ!! আর সেই সাম্রাজ্যবাদীদের-ঔপনিবেশিক প্রভুদের শোনানো যুক্তি- শেখানো বুলিতে আমাদের অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, "মাটির নীচে থাকলে খনিজ সম্পদের কোন দাম নেই!"
আপনার বিশ্লেষণমূলক লেখা খুব মিস করি। আপনার "হায়রে কৃষি!!!!!!!!!! (উৎসর্গঃ সুবিনয় মুস্তফি)" লেখাটাকে আমি মাঝে মাঝেই রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করি।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
কিন্তু কোনো দ্রব্যের প্রকৃত দাম কি ভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব? দরাদরি করে যে দামে পাওয়া যায় সেটাই দাম।
এবার কিছু জটিল বিষয়ে যাওয়া যাক। আকরিক লোহার দাম নির্ভর করে কত সহজে তা থেকে লোহা নিষ্কাশন হয় তার ওপর। শুধু তাই নয়, কত সহজে উত্তোলন করা যায়, আর কত সহজে তা বয়ে বাজারে নিয়ে যাওয়া যায় তাও গুরুত্বপূর্ণ।
লাইবেরিয়াতে যেমন অস্থিতি চলছিল, তাতে কারো পক্ষেই ওখান থেকে আকরিক তোলার ঝুঁকি নেওয়া শক্ত ছিল, স্বভাবতই দামও এ কারণেই কম পাওয়া যাচ্ছিল (ইন্সুরেন্সের প্রিমিয়াম বেশী)। আর বাজার তো সেই ইউরোপ ... লোহা তুলে না নিতে পারলে দাম কি ভাবে আসবে?
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দরাদরি করেই কি 'প্রকৃত' দাম নির্ধারিত হয়? না সেটাকে 'প্রকৃত' দাম বলা যায় না। দরাদরি করে যে দাম নির্ধারিত হয় সেটা প্রকৃত দাম হতেও পারে, নাও হতে পারে- যদি সেটি প্রকৃত দামের চেয়ে কম হয় তবে সেটাকে বলা হয় লোকসান আর যদি সেটা প্রকৃত দামের চেয়ে বেশি হয়- তবে সেটাকে বলা হয় লাভ।
তাহলে প্রকৃত দাম কিভাবে নিরূপিত হয়? পুঁজিবাদী-সম্রাজ্যবাদী দুনিয়ায় আজকে এসে- সেটা পুরোটাই বাজার নির্ভর, এই বাজার নির্ভর দামকে ধরে নিলেও তো দেখতে হবে- লোহার আন্তর্জাতিক দর সেখানে কি ছিল?
যেকোন পণ্যের মূল্য নির্ধারণ আসলে এগুলোর উপরে ভিত্তি করেই হওয়ার কথা। উৎপাদন যন্ত্র- ফিক্সড ও ভ্যারিয়েবল কস্ট এবং শ্রম ঘন্টা এর সমন্বয়েই সেটির দাম নির্ধারিত করার কথা। কিন্তু মুনাফাকেন্দ্রিক উৎপাদন ব্যবস্থায়- সেটিকে অস্বীকার করা হয়- আসে বাজার প্রশ্ন, যে বাজার সম্পূর্ণভাবেই উৎপাদন যন্ত্রের মালিকদের নিয়ন্ত্রণে। ফলে, আপনি যে জটিল বিষয়টির উপস্থাপন করেছেন- সেটি আসলে এই মালিক শ্রেণীর জন্য সবসময়ই প্রযোজ্য নয়।
কিন্তু, টেকনোলজিতে এগিয়ে থাকার দরুন- তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে তারা সেটা নিয়ে আসে এবং সেটার উচ্চমূল্যের কথা শুনিয়ে দাম কমানোর চেস্টা করে যায়।
বাংলাদেশের দিকে তাকালেও দেখি, এরা যখন আসে তখন প্রচার করা হয়- আমাদের প্রযুক্তি নাই, আমাদের সামর্থ্য নাই, আমরা আমাদের খনিজ তুলতে পারবো না- ফলে সেই সব বিদেশী কোম্পানীর উপর নির্ভরশীল হতেই হবে। এর পরে- যখন দাম নির্ধারণের প্রশ্ন আসে- তখন জানানো হলো- সেই সব উচ্চ প্রযুক্তির উচ্চ খরচের কথা, যার ফল হচ্ছে, যে চুক্তি হলো- তাতে আমাদের সম্পদ উত্তোলনের খরচ বাবদ সম্পদের অধিকাংশটাই তারা দাবি করে বসলো! গ্যাসের কথাই বলি- চুক্তি এমন যে, উত্তোলিত গ্যাসের ৭৯ ভাগই তারা নিবে। এখানেই শেষ নয়, তারা যে গ্যাস উত্তোলন করে- সেটা আমাদের অভ্যন্তরীন কনজাম্পশনেই লেগে যায়- ফলে তাদের গ্যাসের ক্রেতা আমরাই। চুক্তি এখানে কিন্তু উত্তোলন খরচ বা এ ধরণের কোন কিছুর সাথে সম্পর্কিত নয়। সেটা পুরোটাই সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে। গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ি গ্যাসের দাম আমাদের পরিশোধ করতে হবে এবং সেটা করতে হবে ডলারে।
এজায়গাটিতে আমরা লোকসানের পরিমাণ আরো ভালো করে হিসাব করতে পারছি- কারণ লাইবেরিয়ার সাথে আমাদের কিছু পার্থক্য আছে। আমাদের পেট্রোবাংলা তথা বাপেক্স আগে নিজেই গ্যাস অনুসন্ধান- কুপ খনন ও গ্যাস উত্তোলন করতো এবং এখনও তাদের কিছু কুপ আছে। ফলে, আমরা কম্পেয়ার করতে পারছি। সেই তুলনা থেকে আমরা দেখেছি যে, আমাদের অনুসন্ধানের খরচ অনেক গুণে কম, আমাদের উত্তোলন খরচ আরো কম- আমাদের অনুসন্ধানে সাক্সেস রেট অনেক বেশি এবং আমাদের দুর্ঘটনায় সম্পদ ধ্বংস নেই। আমাদের উত্তোলন খরচ কম হওয়ায় ইন্টারন্যাল গ্যাসের দাম অনেক কম। তাদের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক বাজার দর অনুযায়ি উচ্চমূল্যে গ্যাস কিনে অভ্যন্তরীন বাজারে অনেক কম দামে গ্যাস বিক্রির প্রতিবছরই সরকারকে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। ফলে এই যে ওদের হাতে সম্পদ উত্তোলনের ভার দেয়া- পুরোটাই লোকসানের খাতায়।
যাহোক- যেটা বলছিলাম, ওরা কেনার সময় এ ধরণের খরচের কথা বলবে এবং বিক্রয়ের সময় আন্তর্জাতিক বাজার দেখাবে। লাইবেরিয়া যদি ওদের কাছ থেকে লোহা কিনতে চাইতো- নিশ্চয় তাদেরকেও আন্তর্জাতিক বাজারই দেখানো হতো। যেমন আফ্রিকার অন্য দেশগুলো, ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোকে দেখানো হয়েছে। সর্বত্রই একই চিত্র পাবেন। আর এভাবে লুটে পুটে শুষে খাওয়ার কারণেই নাইজেরিয়া থেকে শুরু করে সমস্ত আফ্রিকান-ল্যাটিন আমেরিকান দেশগুলোর অর্থনীতির বারোটা বেজে গেছে (ল্যাটিন আমেরিকা অবশ্য এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেস্টা করছে- এবং তা ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই)। নাইজেরিয়ার খনিজ উত্তোলনের আগের অর্থনীতির কণ্ডিশন এবং তার পরের কণ্ডিশন দেখেন এবং পাশাপাশি মিলিয়ে দেখুন- অনেক কিছুই হয়তো পরিষ্কার হবে।
এই দাম কি এই মুহুর্তেই লাইবেরিয়ার জন্য জরুরি ছিল? তারা কি স্বেচ্ছায় চেয়েছিল? এখনই দাম পেতে হবে, সেটা যতই খর্বিত ও তুচ্ছ হোক না কেন- এমনটা কেন মনে হচ্ছে? ইউ এস এ র তেল-কয়লা- লোহার খনিগুলো তাহলে কেন বছরের পর বছর ফেলে রাখা হয়েছে? কেন তারা আগামির মজুদকে নিশ্চিত করছে? কেন তারা সেগুলো তুলে দাম পেতে চাচ্ছে না?
আর, অস্থিতির কথা যে বললেন- সেটাও ভেবে দেখার মত। কেন অস্থিতি? কেন এতদিনেও তারা এমন অশিক্ষিত-মূর্খ, পিছিয়ে পড়া এক জাতি? কেন ? এতে কাদের লাভ? কাদের পক্ষে যায় আপনার এসব যুক্তি?
অদ্ভুত তো !
পেটের তাগিদেও তো ওরা কিছু কাজ করতে পারে, বা করা উচিত। খুব প্রানবন্ত আপনার এই দিনপন্জি ভীষন ভালো লাগছে, যুবরাজ।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ঐ দেশটা দখল কইরা ফালান তো... আমরা একটু হাত পা ছড়ায়া চাষ বাস করি... এত ঘিঞ্জি আর ভাললাগে না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
"মানবসভ্যতার ইতিহাস হচ্ছে খুনোখুনির ইতিহাস। একজন মানুষ মরলে হয় খুন, আর হাজার মানুষ মরলে হয় যুদ্ধ।"
কঠিন সত্য! পুরো সিরিজটাই পড়ছি। হজ্জের কী হল? শেষ পর্যন্ত ওমরাহ পাল হলনা না?
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
যথারীতি ভাল লাগল ।
নিবিড়
যত পড়ছি তত অবাক হচ্ছি!
কয়েকদিন আগে সচলায়তনের সার্ভার পরিবর্তনের পর, সবসময় ব্যবহৃত অনেক অপশন না পেয়ে গুতাগুতি করতে করতে দেখলাম "হিটখোর সচল"দের একটা তালিকা। ওতে "যুবরাজ" তখন এমাসের সর্বাধিক হিটখোর।
কিন্তু নামের লিংকগুলো সেখানে কাজ করে না ... তাই আর আপনার ব্লগে ঢোকা হয়নি।
লেটার ফ্রম লাইবেরিয়া সিরিজটা আগে চোখে পড়লেও যুবরাজ নামটা ঠিক চোখে পড়েনি। আজ হঠাৎ করে মূলপাতায় লাইবেরিয়ার বর্ণনা দেখে পড়তে আসলাম।
লেখার কথা কী আর বলবো! এটা পড়ে আর কোন চিন্তা না করে আপনার সবগুলো লেখা পড়ে ফেললাম। অন্যদের তুলনায় নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে ... কারণ একটা লেখা পড়েই পরেরটাতে ক্লিক করতে পারছি ... অন্যদের একটা পড়ে আরেকটার জন্য ব্যাকুল ভাবে অপেক্ষা করতে হয়েছে সেটা খুবই স্বাভাবিক।
খুব ক্লান্ত লাগছিল .... সৌদি এম্বেসির কাহিনী পড়ে এখন শরীরে রক্ত চলাচল বেড়ে গেছে ... ঝরঝরে লাগছে। রেসিজমের স্বীকার হতে যে কী খারাপ লাগে সেটা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝবে না .... জাপানের মত সভ্য জায়গাতেও যেটা দেখেছি, সৌদি আরবের মত ইতর/অসভ্য জায়গায় কী হতে পারে সেটা অনুমেয়। হঠাৎ করেই মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বাংলাদেশীদের জন্য খুব খারাপ লাগছে।
আর এই পর্বটা পড়ে আফ্রিকায় শোষণ বিষয়ে আরো কয়েকটা লেখার লিংক সকলকে মনে করিয়ে দেয়ার লোভ জাগলো ...
আফ্রিকায় নয়া ঔপনিবেশিকতার থাবা - ষষ্ঠ পান্ডব
পর্ব-২
পর্ব-৩
পরিচিত অনেকেই সেনাবাহিনীতে আছেন। কিছুদিন আগেই একজন UN মিশন থেকে ফিরে এসে অনেক ছবি দেখালেন। আপনার লেখা পড়ে ওনার গল্পগুলোর কথাও মনে পড়ে গেল।
আপনার লেখাগুলোতে (বিপ্লব)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
চমৎকার । রোদ পোহানো ভালো অভ্যাস । যে জাতি যেমন থাকতে চায়, তেমনই থাকে , কিছুই করার নেই ।
ইনশাল্লাহ , সামনে আমাদেরও নির্বাচন আসছে , আমরাও আবার পূর্ণ গনতন্ত্রে যাচ্ছি , ভাইয়ার চিকিৎসা হচ্ছে , বুবু হিল্লীদিল্লীতে কানের জন্য ছুটোছুটি করছেন , খালাম্মা আজীবন চেয়ারপারসন হচ্ছেন ....
...এমন দিন বাকী নেই যেদিন আমাদের এখানেও শান্তিরক্ষী বাহিনী আসবে , আমাদের সন্তানরাও পেট চো চো করলে , ভিনদেশীর দিকে চো চো বলে দৌড়াবে ।
শুধু নেতার অভাবে যে কতো জাতির কতো কিছু হলো না । হায় !
বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় কি ১৪০০ ডলার? আমার জনামতে, ৪০০-৫০০ ডলারের মধ্যে।
লেখাটা খুবই ভাল হইতেছে। আমার মনেহয়, লাইবেরিয়ার সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকার দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। এতে দুইপক্ষেরই লাভ হতে পারে।
সুন্দর লেখা, আপনার পোষ্টের জন্য প্রতিদিন অপেক্ষায়
থাকি, লেটার ফ্রম লাইবেরিয়া সিরিজের
দীঘায়ু কামন করছি।
।। ।
দেশের ভিতরে এক অবিশ্বাস্য নাটকের পর আপনি আবার অবিশ্বাস্য কাহিনী বলা শুরু করলেন বাহে !
ওই দেশেও কি মুজাহিদ আছে ?
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আপনার মন্তব্য বুঝতে পারিনি।দেশেতো এতো বেশী অবিশাস্য ঘটনা ঘটছে যে কোনটার কথা বলছেন বুঝতে পারছিনা।
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
"আমরা যখন রাস্তা দিয়ে যাই, তখন লাইবেরিয়ান শিশুরা দল বেধেঁ চিৎকার করে, BANGLADESH JINDABAD, GIVE US CHO CHO. "
কিছু মনে করেন না। আপনার কাছে একটা বিনীত জিজ্ঞাসা - জিন্দাবাদের স্লোগান তারা কার কাছ থেকে শিখেছে?
লাইবেরিয়াতে বাংলাদেশের প্রায় ছয় বছর হয়ে গেছে।এর মধ্যে প্রথম দিকের সেনা দল এর কাছ থেকে এই স্লোগান টা তারা রপ্ত করেছে।এখন সবাই জানে।
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
নতুন মন্তব্য করুন