আমার ধারনা কি জানেন? ২০২০ বা ২০৩০ সালের দিকে আমাদের দেশের পজিতিভ একটা পরিবর্তন আসবে। যারা এখন দেশের নেতৃত্ব বা নীতি নির্ধারনী অবস্থানে আছেন, আমরা তখন তাদের স্থান দখল করবো। এবং আমরা এই দেশটাকে অনেক সুন্দর ও সুশৃংখল ভাবে পরিচালিত করব। তখন যে ২/৪ জন মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে থাকবেন আমরা তাদের প্রাপ্য সম্মান দিব। যারা এখন দেশ চালাচ্ছেন তাদের থেকে আমাদের এই প্রজন্ম অনেক বেশী অনুভুতি সম্পন্ন। দেশকে অনেক বেশী ভালবাসার ক্ষমতা রাখি আমরা।
বলছিলাম আমার এই লেখাটি সম্পর্কে। গত সপ্তাহে সচলায়াতনে এবং আমার ফেস বুকে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে অসংখ্য মানুষ তাঁর সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। অনেকে সাহায্য করার আকুতি প্রকাশ করেছেন। এই লেখাটি আমি যখন লিখি তখন আমি কল্পনাও করতে পারি নাই এটা এত মানুষ পড়বে! আমি সত্যি অভিভুত।
উনি এখন চট্রগ্রাম সেনানিবাসে সিএমএইচ –এ চিকিৎসারত। আমার বউকে নিয়ে গিয়েছিলাম সেদিন। অনেকক্ষন বসে গল্প করলাম। আমি উনাকে আপনাদের সবার ভালবাসার কথা জানিয়ে এসেছি। ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে উনাকে ঢাকায় আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। প্রতি বছরের মত এবারো ঢাকা যাবেন। বিজয় দিবসে সবাই তাকে সম্মান জানাবেন, তাঁকে মনে করবেন।চকচকে জুতা আর সাদা-পাঞ্জাবী পরা মানুষরা তাঁকে সহানুভুতি জানাবেন, যাদের মধ্যে অনেকে থাকবেন একাত্তরের রাজাকার। যাদের গাড়ীতে জাতীয় পতাকা পত্ পত্ করে উড়ে। তিনি দিন শেষে সদরঘাট থেকে লঞ্চের তৃতীয় শ্রেণীতে করে বাড়ী ফিরবেন। তার পর ৩৬৪ দিন আমরা তাকে ভুলে যাব। আর এভাবে গত ৩৮ বছর পার হয়ে গেছে। বার বার বলছিলেন উনার কোন কষ্ট নাই। ভাল আছেন। আমি তো বুঝছিলাম উনি কি থাকার কথা আর কি রেখেছি আমরা তাকে। কেউ খবর ও নেয় না তার। অল্প কটা টাকা পান। তা নিয়ে আছেন বেঁচে। আশ্চর্য হলাম জেনে,বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হওয়ার জন্য পেনশন হিসাবে মাসে মাত্র ১৪০০ টাকা পান!!
এছাড়া মাসে যে ৪৫০০ টাকা মুক্তি্যোদ্ধা কল্যান ট্রাষ্ট হতে পান সে টাকা আবার তিনি (উনি ভোলায় থাকেন), শহীদ সিপাহী বীর শ্রেষ্ঠের স্ত্রী (যিনি খুলনায় থাকেন) এবং তার একমাত্র ছেলের বউ (ছেলে ক্যান্সার আক্ক্রান্ত হয়ে মারা যান) ৩ ভাগ হয়ে যায়।
সৈয়দ মুজতবা আলীর একটা লেখা সপ্তম শ্রেনীতে পড়েছিলাম।নন্দদুলাল বাজায় ঘন্টা। সাহেবের কুকুরের এক পায়ের পিছনে যে খরচ হয়,পন্ডিত মশায়ের আটজনের সংসার চলে সেই টাকায়। ঢাকায় কি অনেক কুকুর নেই যার পিছনে ১৪০০ টাকার বেশী খরচ হয় মাসে??
" আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।"
পরশু সন্ধ্যায় আমার ক্যামেরায় তাঁর ছবি।
মন্তব্য
উনাকে সাহায্য করতে চাইলে নিম্ন ঠিকানায় সরাসরি পাঠিয়ে দিবেন, যদিও উনি কো্ন প্রকার সাহায্য/ সহায়তা নিতে অনাগ্রহী। আমি বলেছি কেউ দিলে তাঁর ছেলে হিসেবে মা কে দিবে, লজ্জার কিছু নাই। নিচে ঠিকানা দিলাম।
মালেকা বেগম
বীরশ্রেষ্ট মোস্তফা কামাল পেনশন একাউন্ট
চলতি হিসাব নং - ৭৫৩৩
জনতা ব্যাংক
ভোলা সদর শাখা
ভোলা।
Maleka Begum
Bir Srestho Mosthofa Kamal Pension Account
Current Account NO. 7533
Janata Bank
Bhola Sadar Branch
Bhola
---------------------------------------------------------------------------- হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
কোন কুকুরের পেছনে ১৪০০ টাকা খরচ হয় কিনা ঠিক বলতে পারছিনা। নিজেকেই তো কুকুরের মতো লাগছে। আমি আগের লেখাতেও অনুরোধ করেছিলাম যে এই সচল থেকেই কোন সহযোগিতা করা যায় কিনা কিন্তু কারো উত্তর পাইনি। আবারো অনুরোধটা জানিয়ে গেলাম। যে কোন পদক্ষেপে পূর্ণ সাপোর্ট দেবো ইনশাল্লাহ।
-------------------------------------------------------
সকলই চলিয়া যায়,
সকলের যেতে হয় বলে।
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
প্রথম প্যারায় দ্বিমত। আমরা আমার মতে খুবই 'স্পয়েল্ড' জেনারেশন। আর যে লংকায় যায় সেই রাবণ! যে দেশের অর্ধেক লোক তারেক জিয়ার মত লোকের ফ্যান, সে দেশের ভবিষ্যত জেনারেশন নিয়ে আমি খুব বেশি আশা করিনা।
লেখার বাকি অংশের সাথে সহমত! আসলেই খুব রাগ হয় নিজের উপর...নিজেদের উপর। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ...আর মায়ের প্রতি একটাই কথা 'ক্ষমা কর জননী'!
হিমু ভাইয়ের কালজয়ী একটা লেখা আছে ( http://www.sachalayatan.com/himu/24902)...পড়ে দেখবেন!
-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
যুবরাজ, অনেক ধন্যবাদ ভাই। আমরা অবশ্যই কিছু একটা করার চেষ্টা করব।
বোঝাই যাচ্ছে পরাধীন আমল আর স্বাধীন দেশের রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক চরিত্র বিশেষ পালটায় নি, পাল্টাবার কথাও না। যতদিন পর্যন্ত না শাসন ব্যবস্থা ও নীতি নির্ধারণে মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহনকারী সাধারণ জনগোষ্ঠীর কার্যকর অংশগ্রহন নিশ্চিত করা যাবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের এমন সব গল্প শুনে যেতেই হবে।
একটা প্রশ্ন অনেকদিন ধরেই মাথায় ঘুরছে। মুক্তিযোদ্ধা কল্যান ট্রাস্টের আওতায় শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম নয়। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কত ভাগ মুক্তিযোদ্ধা বা তাঁদের পরিবারের সদস্য? স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যখন ট্রাস্ট গঠিত হয় তখন থেকে আজ পর্যন্ত ট্রাস্টের কার্যক্রমের স্বচ্ছ হিসেব কি কোথাও পাওয়া যেতে পারে? ট্রাস্টের কোন প্রতিষ্ঠান কি এর মধ্যে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে? ট্রাস্টের অনেক প্রতিষ্ঠানই নাকি এখন লোকসানী। এগুলো কিভাবে হচ্ছে?
আমার বিশ্বাস ট্রাস্ট চাইলে অনেক আগেই বিপুল সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার ভাগ্য পরিবর্তন করে ফেলতে পারতো। এক বৎসরে এক কোটি মুক্তিযোদ্ধাকে দশ টাকা করে ভিক্ষা না দিয়ে দশ হাজার জন মুক্তিযোদ্ধাকে এক লাখ টাকার অন্য ধরণের সাহায্য দিলে পরের বৎসরই তাঁর আর কোন সাহায্যের দরকার হত না। তবে আমরা জানি এও কখনো হবার নয়। তবু যুবরাজ কয়েক দশক পরের যে ছবির স্বপ্ন দেখেছেন সেই স্বপ্ন দেখে যেতে চাই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধ্ন্যবাদ যুবরাজ, স্বপ্ন দেখার জন্য। আর আমাদেরকে স্ত্যটা মনে করিয়ে দেবার জন্য। তবে ২০২০ বা ২০৩০ সালে অন্য কোন ইস্যু তৈরী হয়ে যাবে বিভক্ত হয়ে যাবার মত।
যুবরাজের স্বপ্নের কথা পড়ে হিমুর বিলুপ্তি গল্পটার কথা মনে পড়ে গেল।
হিমুর গল্পটা পড়লাম মাত্র। আমার স্বপ্ন অন্তঃসার শূ্ন্য হয়ে পড়ে এই গল্পের কাছে। কি বলব আমি? কি বা বলার থাকতে পারে আর?
এই লেখাটা পড়ে কেউ হা-হুতাশ না করে আমি অনুরোধ করবো পারলে আপনি কিছু ঋণ শোধ করুন, এটা সাহায্য নয়। এ আপনার ঋণ।
ঠিকানা দেয়া আছে, কারও জন্য অপেক্ষা নয়, এই মুহুর্তেই আপনি কিছু করতে পারেন, সুতরাং করুন।
---------------------------------------------------------------------------- হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা
হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------
আমারও ঠিক হিমুর গল্পটা মনে পড়ে গিয়েছিলো। ওই গল্পের শেষ মুক্তিযোদ্ধাকেও আমরা পাবো না যুবরাজ তথা আমাদের স্বপ্নের সময় আসতে আসতে।
তবে আমি কায়মনোবাক্যে কামনা করি আমার উপরের কথাগুলো ভুল প্রমাণীত হোক।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
কিছুক্ষন আগে তারামন বিবি বীর প্রতীক আমাদের মেস এ এসে পৌছালেন...আগামীকাল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে......
যাক, এবার একটু মাথাটা উঁচু করে তার সাথে কথা বলতে পারব, সেনাবাহিনীর তরফ থেকে নেয়া উদ্যোগে এবং পরবর্তীতে সরকারের কিছুটা সহায়তায় তাকে ২ টা ঘর করে দেয়া হয়েছে, একটা কুড়িগ্রাম সদরে, আর অন্যটি তার বাড়ি রাজিবপুরে......
আমরা পুরো জাতি ই তো তাদের কাছে দায়বদ্ধ...
তাও কিভাবে ভুলে আছি আজ ৩৮ টা বছর.....
মাঝে মাঝে নিজের উপরই ঘেন্না হয়...
যুবরাজ ভাই, যদি কিছু মনে না করেন তো একটা মতামত জানাই। বীর শ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের মা'কে দেখভাল করা উচিত রাষ্ট্রের। জনগনের তরফ থেকে এনাকে যেকোনপ্রকার সাহায্য করা তাঁকে অপমান করার মতো। আমি বুঝি যে কিছু সহায়তা বরং তাঁর উপকারেই আসবে, তবুও বিষয়টা মেনে নেয়া কঠিন।
ষষ্ঠ পাণ্ডবের মন্তব্য দ্রষ্ট্রব্য। আমি শুধু আমার ক্ষোভটা প্রকাশ করলাম, আপনার উদ্যোগ এবং অনুভূতির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রইল।
আশাবাদ খুবই ভালো জিনিস। আপনার প্রথম প্যারার মতো আমারো এরকম আশাবাদী হতে ইচ্ছা করে। দেখা যাক কী হয়।
আপনার এর আগের লেখাটাও পড়লাম। ভালো লাগলো, আপনার প্রচেষ্টা দেখে। ঠিকানা দেয়ার জন্যও ধন্যবাদ।
"ঢাকায় কি অনেক কুকুর নেই যার পিছনে ১৪০০ টাকার বেশী খরচ হয় মাসে??"
আছে,তবে তার চেয়ে মনুষ্য চর্মাবৃত কুকুরের সংখ্যা অনেক বেশি। মানুষ হওয়াটা আসলেই খুব কঠিন।
অরূপ তোমার বাণী ,
অঙ্গে আমার, চিত্ত আমার, মুক্তি দিক সে আনি
..............................
মায়ের জন্য প্রণতি কেবল...
(আর কিছু বলতে ইচ্ছে করেনা...কথাতো আর কম বললামনা....)
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কিছু বলার নাই।
জাতি-রাষ্ট্র যাই বলেন না কেন, আমরা অধমের পরিচয় দিয়েছি।
উনি এখন কেমন আছেন?
নতুন মন্তব্য করুন