• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

নষ্ট সময়-১২

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি
লিখেছেন জুলিয়ান সিদ্দিকী (তারিখ: মঙ্গল, ১২/০৮/২০০৮ - ৪:৪১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সকালে সাগরের ঘুম ভাঙল টুনির মিষ্টি দুষ্টুমিতে।

হঠাৎ কানের ভেতর কেমন ফড়-ফড় শব্দ পেয়ে ভয় পেয়ে লাফিয়ে উঠে বসেছিলো বিছানায়। ভেবেছিল কানের ভেতর কোনো পোকা-মাকড় ঢুকেছে বুঝি। কিন্তু দরজার পাশে দাঁড়িয়ে টুনিকে হাসতে দেখে বুঝতে পারল যে, এটা তারই কাজ।

সঙ্গেসঙ্গে তার মনে পড়ে গেল ছোটো বেলা এভাবে কতবার তার ঘুম ভেঙে দিয়েছে টুনি। দিনের বেলা এমন অত্যাচারে সে অনেক দিন ঘুমুতে পারেনি। তাই একদিন রাগের মাথায় প্রচন্ড এক লাথি কষেছিল। আর সেই লাথি লেগেছিল টুনির হাঁটুতে। ব্যাথায় কেঁদে উঠেছিল টুনি। বেশ ক'দিন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হয়েছিল তাকে। আর সে কথা মনে আছে বলেই এখন বেশ কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে।

সাগর টুনির দিকে তাকিয়ে মাথা দোলাতে দোলাতে বলল, 'তাইলে মনে আছে সবই?'

'মাইয়া মাইনষে অত সহজে কিছু ভুলতে পারে না! তোমার কারখানায় যাওনের সময় অইয়া গেছে। তাড়াতাড়ি উইঠ্যা পড়!'

সাগর হাতের কাছেই টুথব্রাশ, পেস্ট পেয়ে বলে, 'আমি অন্যের বেরাশ দিয়া দাঁত মাজি না!'

কথা শুনে টুনির রাগ হয়। যথারীতি তা সামলাতে না পেরে বলে ফেলল, 'তুমি খাটাশ দেইখ্যা কি দুনিয়াডারেই তেমন মনে কর নাকি? এত কষ্ট কইরা, বিপদ মাতায় লইয়া বিয়ান বেলা দোকান থেইক্যা কিন্যা আনলাম আর কয় কিনা অন্যের!

তারপর ফের চোখ-মুখ কেমন করে বলে উঠলো, 'খবিস কোহানকার!'

সাগর তার ভুল বুঝতে পেরে বলে, 'তইলে আমি সরি আর তোমারে থাঙ্কু!'

সাথে সাথেই টুনির রাগ পড়ে যায়। বলে, হুঁ। তাইলে খাঁটি ভদ্দর লোক!'

সাগর সশব্দে হেসে উঠে ব্রাশ-পেস্ট হাতে নেয়।

টুনি সেই হাসির দমকে কোথায় পালিয়ে যায় কিছুক্ষণের জন্যে।

সাগর আস্তে-ধিরে দাঁত মাজা শেষ করে চুল আঁচড়িয়ে তৈরি হয়। টুনির খোঁজে এদিক ওদিক তাকায়। আর তখনই টুনি দু'হাতে দু'টো বাটি নিয়ে ঘরে ঢোকে। দরজায় থাকতেই জানান দেয় সে, 'নাস্তা নিয়া আইলাম!'

সাগর মনেমনে খুশি হলেও বলে, 'ক্যান, বাইরেই তো খাইতে পারতাম!'

টুনি বাটি দু'টো মেঝেতে রাখবার সময় বলে, 'বাইরেরডা আর ঘরেরডা এক অইলো?'

সাগরের চোখ দু'টো আবার কেমন জ্বালা করে উঠল। আজ কতটা বছর পর কেউ তার জন্যে এভাবে নাস্তা বানিয়ে নিয়ে এল। টুনির মাঝে এ ব্যাপারটা দেখে নিজকে খুবই ভাগ্যবান মনে হয় তার। বেঁচে থাকবার একটা অর্থ খুঁজে পায় যেন।

মামুলি রুটি আর আলু ভাঁজি। কিন্তু মুখে দিয়ে মনে হল অপূর্ব! এই প্রথম সে উপলব্ধি করতে পারে যে, মানুষ কেন ঘর বাঁধে! কেন সংসার পাতে! আর শত অভাবেও কেন একজন ছেড়ে যায় না অন্যজনকে। আত্মীয়-রক্তের সম্পর্কহীন দু'টো মানুষ সারাটা জীবন পার করে দেয় একই সঙ্গে। কিসের মোহে? সাগর কিছুটা হলেও অনুভব করতে পারছে।

তারপর নাস্তা সেরে বেশ হৃষ্ট মনে টুনির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। প্রথমেই তার মনে পড়ে কমলার কথা। তার মোবাইলে যোগাযোগ করতে হবে। জানাতে হবে সব কাহিনী।

নীলক্ষেত মোড়ে এসে একটা দোকানে ঢুকে মোবাইলে কানেকশনের জন্যে সে দোকানির সামনে কমলার দেয়া নাম্বারটা মেলে ধরে।

দোকানি বলল, 'খরচ বেশি পড়বো কিন্তু!'

সাগর বলল, হেই চিন্তা তোমার না! তোমার কাম তুমি কর!'

দোকানি দেখতে ভদ্রলোক বলেই মনে হল সাগরের কাছে। কেননা তার শক্ত কথা শুনে কেমন মিইয়ে গেল। তারপর মোবাইলে নাম্বার টিপে সাগরের হাতে দিয়ে বলল, 'রিং হচ্ছে!'

সাগর কানে ফোন লাগিয়ে টু-উ-উ-ৎ টু-উ-উ-ৎ শব্দ পেল। এর আগে সে কখনোই ফোন ব্যবহার করেনি। এখন কি করতে হবে সে বুঝতে পারছিল না। হঠাৎ সে শুনতে পেল ফোনের ও-প্রান্ত থেকে কেউ হ্যালো-হ্যালো করছে। কমলার কন্ঠস্বর চিনতে পেরে তার কেমন কাঁপুনি হতে থাকে। তবুও কোনোক্রমে বলল, 'আমি সাগর!'

ও প্রান্তের কন্ঠে ধ্বনিত হল, 'হ্যালো সাগর, কি খবর?'

সাগর উত্তেজনার বশে খুব জোরে চেঁচিয়ে বলতে লাগল, 'ভালা! আমার লগে দ্যাহা করছিল। আমি সব কইছি ! হেয় রাজি অইছে!'

কমলা জানতে চাইল, 'কাগজ-পত্র ঠিক হইছে?'

'অহন তরি অয় নাই! তয় আমার কাছে দিয়া যাইবো কইছে!'

'কোন সময়?'

'হেইডা কয় নাই!'

'কোই থাকে খবর পাইছো?'

'জিগাইছিলাম, কয় নাই!'

'বাদলের লগে আমার কথা হইছে। টুনির উপরে হ্যার কোনো দাবী নাই। তুমি খবরটা দিয়া দিও!'

'আইচ্ছা। আবার দ্যাহা অইলে কমুনে!'

'শোন, কাগজ-পাতি সঙ্গে নিয়া আইলে তোমার কাছে তার ট্যাকা দিমুনে কেমন?'

সাগর মাথা দোলায়।

ও প্রান্তে কমলা চেঁচায়, 'কি মিয়া হুনতাছো তো?'

সাগর বলে, 'হুনতাছি!'

'তুমি তাড়াতাড়ি কাজটা করো! এখন রাখি!'

তারপরই সাগর টুট-টুট-টু-উ-ট শব্দ শুনতে পেল। কোনো কথা শোনা যাচ্ছে না। কিন্তু সে শব্দটার উৎস খুঁজে পেল না।
কান থেকে ফোন আলগা করে দোকানির দিকে তাকাতেই দেখতে পেল, লোকটা কেমন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। পাশ ফিরতেই দেখলো দোকানশুদ্ধো মানুষ তার দিকে তাকিয়ে আছে।

এবার সে নিজেই খানিকটা লজ্জা পেয়ে গেল। বলল, 'ভাই, আগে কোনোদিন ফোনে কতা কই নাই! কিছু অসুবিদা করলাম?'

দোকানি বলল, 'এত জোরে জোরে কথা বলছিলেন কেন?'

'খেয়াল করি নাই! জীবনের পয়লা ফোনে কতা কইলাম তো, তাই মনে অয় এমুন অইছে!'

কেউ কোনো মন্তব্য করল না। সে দোকানির দিকে তাকিয়ে বলল, 'আমার বিল কত অইছে ভাই?'

দোকানি তার স্টপ-ওয়াচ দেখে বলল, 'দশ টাকা।'

সাগর ওয়ালেট খুলে টাকা দিয়ে বেরিয়ে এলো দোকান থেকে।
(চলবে..)


মন্তব্য

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

চলুক...

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

পড়তে হয় লিখতেও হয়। আপনের লেখা কই?
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।